নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দাহ কালের প্রণয়

মনিরুল ইসলাম রানা

কিছু বলার নাই

মনিরুল ইসলাম রানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষা ‘মানহীন মানদন্ডে দণ্ডায়মান’ !

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩৩

কাঠামোগত শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিখ্যাত মানুষ দ্বিমত পোষণ করেছেন, কেউ কেউ আবার জেল খেটেছেন, বব মারলে শিক্ষিতদের কর্মযজ্ঞ দেখে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়েছেন “ থ্যাক গড আই অ্যাম নট এ্যাডুকেটেড “ অথবা পিঙ্ক ফ্ললয়েড চিৎকার করে সারা পৃথিবীকে বলেছে ‘লিভ দেম কিডস এ্যালন’। তবুও কাঠামোগত শিক্ষা ব্যবস্থার সামনে দাড়িয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে বন্ধ করে দিতে পারে নাই দুনিয়ার কোন স্কুল কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থা আর প্রথাবিরোধীদের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধটা এমন প্রাচীন যে কোন সভ্যতার মত পুরোন, তর্ক যুদ্ধ চলে সভা-সমাবেশে আর্টিকেলে ।
বহুকাল ধরে পুরষ্কার প্রাপ্ত সিনেমা গুলোর গল্পের উপাদান ছিলো প্রথাগত স্কুলিংয়ের ফলে শৈশব হারানো শিশুর কথা, তিরস্কারের কথা, শৈশবের পারিবারিক দুরত্ব আর তারপর আত্নহত্যার কথা। আমরা কি শুধু এমনটা সিনেমায় দেখেছি ? আমাদের জীবনেও এমন গল্প মিশে আছে; কেউ বাড়ি থেকে চলে গিয়ে আর ফিরে আসেনি, কেউ ফাঁস দিয়েছে।
সে এক সময় ছিল; বোর্ডস্ট্যান্ড, স্টার মার্ক, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় আর সব শেষে ফেল, অজস্র শিক্ষার্থী ঝড়ে পরার পর যে শিক্ষার্থী পাশ কিংবা ফেলের দোদ্যুলমন নিয়ে পরীক্ষা দিলো তার কৃত্বিত’কে কাঠামোগত পদ্ধতি অস্বীকার করে, সেখানে পাশ করা একমাত্র আক্ষরিক অর্জন। মানবিক মানদন্ডে যে যায়ই বলুক কাঠামো তার নির্ধারিত ফলাফলের প্যারামিটারে বিশ্বাস করে, সেই বিশ্বাস কারো জন্য বুল্ডোজার আবার কারো জন্য ঈশ্বরের আশীর্বাদ।
তবে খবর হল; আমাদের শিক্ষানীতি বদলে গেছে, প্রান্তিক শিক্ষানীতি, প্রাইভেট শিক্ষানীতি, বহুমুখী শিক্ষানীতি সবই এখন একই মানের, ফেলের হার কমতে কমতে শূন্যের কোঠায় চলে আসতে শুরু করেছে, কোথাও এখন ফেল করে আত্নহত্যার খবর পাওয়া যায় না। সন্তানদের সাথে বাবা মায়ের নিবিড় সম্পর্ক, পড়াশুনা নিয়ে আর পারিবারিক টানপরান হয়না। কোন বাচ্চা ছেলে আর স্কুলের ভয়ে বাড়ি থেকে চিরতরে পালিয়ে যায় না, স্কুল শিক্ষক কিংবা পরীক্ষা কিছুকেই ভয় পায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পর্যন্ত সকল পর্যায়ে দৃশ্যমান যে মানহীন মানদণ্ড দাঁড়িয়েছে তার ফলাফল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল। জাতি হিসেবে আমরা সম্ভবত সবচেয়ে নির্লজ্জ সময় পার করছি; ফাঁস হয়ে যাচ্ছে সব। যে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার কথা আমরা চিন্তা করি ভাবি এবং দেখতে চাই তা যেমন অতীতের ন্যায় আত্নঘাতী হওয়ার প্রবণতা’কে বারিয়ে দিবে না, আবার ঠিক প্রকাশ্যে বাচ্চা ছেলের হাতে বাবা কিংবা শিক্ষক আগের রাতে প্রশ্নপত্র তুলে দেবার মতন উদারও নয় ।
বাদ দিলাম রাষ্ট্রের কথা, মন্ত্রির কর্মযজ্ঞ কিংবা মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং একজন বাবা তার সন্তানের হাতে তুলে দিচ্ছেন ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র। মূল্যবোধহীন সময়ের নির্লজ্জ যাপিত জীবন। দৃশ্যমান ক্ষতির পরেও রাষ্ট্রপক্ষের স্বপক্ষ সাফাই, কলমের ক্ষয় করে লিখে যাচ্ছেন সবাই তবুও দৃশ্যপট পাল্টায়নি।
শিক্ষার এই মানহীন হাইব্রিড ফলনের আসল ফলাফল আমরা হয়ত আরো এক দশক পরে দেখতে পাবো, হয়ত চাকুরীর জন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের থেকে কোন আমলে পাশ করেছেন অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে, এই সময়ের পাশ করা স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য আফসোস হচ্ছে। উচ্চতর বিদেশি ডিগ্রী আমাদের জন্য দুর্লভ হয়ে যাবে, ভালো ডাক্তার বের হবে না, নতুন কোন পাইলট হবে, আমাদের সন্তানরা আমাদের দেশে কর্মচারী হবে আর বিদেশ থেকে আসবে তাদের কর্মকর্তা। নিয়তির কি নির্মম পরিহাস।
কেউ কেউ বলছেন এ ক্ষমতাশীলদের দুরভিসন্ধি, অজ্ঞ ও অক্ষম’কে চিরদিন শোষণের পায়তারা, কেউ বলছেন মন্ত্রির অক্ষমতা, সাধারণ মানুষ এত কিছু কি জানে ? জানতে চায় ? ছেলেটা কিংবা মেয়েটা সুশিক্ষা পাক, ভালো কিছু করুক এই তো চায়। ভবিষতের বাতিঘরে চিরস্থায়ী আমানিশ, এ দায় কি আমরা কেউ এড়িয়ে যেতে পারি ?


একটা ছোট গল্প দিয়ে শেষ করছি; গ্রামের মস্তান টাইপ ছেলেটি বিকেলে পরীক্ষার ফলাফল পেয়ে রাতের বেলায় মিষ্টি নিয়ে ইংরেজি শিক্ষকের বাড়ি গিয়েছে, দরজায় কড়া নাড়তেই স্যারের গলা ছাত্রের পরিচয় পাওয়ার পর শিক্ষক মহাদয় আর দরজা খুলছেন না। ছাত্র নিজের দোহাই বাবা মায়ের দোহাই দিয়ে স্যারকে বলছে স্যার আমি এ গ্রেড পেয়েছি, স্যার আরো ভয় পেলেন এই ছেলে আমাকে মারতে এসেছে যার পাশ করারই কথা না সে এ গ্রেড পেয়েছে ! পরীক্ষা হলে এই ছেলের খাতা ১০ মিনিটের জন্য শাস্তি হিসেবে স্যার নিয়েছিলেন, মনে মনে স্যার আর ভয় পেলেন, ছেলেটা চিৎকার করে বলছে স্যার আমি এ গ্রেড পেয়েছি, স্যার বাধ্য হয়ে ছেলেকে বললেন কাল স্কুলে আসো বাবা মিষ্টি খাবো আজ দরজা খুলবো না।
১০ মিনিট এর জন্য ছাত্রের খাতা নেওয়ার পর স্যারের পরীক্ষা ডিউটি কেন জানি বন্ধ হয়ে যায়, আর সেই সেন্টারের ওই বছর এই ছিল সর্বোচ্চ শাস্তি ।
জানতে মন চায় মানহীন এই মানদণ্ড দিয়ে কি হবে ? কোথায় দাড়বে এই সব ছেলে মেয়ে, জীবন যুদ্ধে হেরে গিয়ে ওরা যদি ফাঁস দেয় তবে এইসব ফাঁসকারী কি দায় নিবে ?
আলোকিত বাংলাদেশে প্রকাশিত কলামের লিঙ্ক : Click This Link

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪৬

খেলাঘর বলেছেন:


এটা সমস্যা, আসল সমস্যা নয়; আসল সমস্যার কথা বলুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.