![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আসুন ছন্দ শিখি(২য় কিস্তি)
গতপর্বে আমরা স্বর নিয়ে আলোচনা করেছি।আমরা বুঝেছি স্বর কি?শব্দ থেকে কী ভাবে স্বর আলাদা করতে হয়।মুক্তস্বর কী আর বন্ধস্বর কী।
আজ আমরা ছন্দ শেখার আগে আরো কয়েকটি বিষয়ের উপর আলোচনা করব।
প্রথমেই পর্বঃ
কবিতার প্রতিটি চরণ এক বা একাধিক পর্ব দ্বারা গঠিত হয়।আর ছন্দের উপর নির্ভর করে পর্বে মাত্রার সংখ্যা।
সাধারণত পর্ব বলতে বোঝায়,কবিতার চরণে এক বা একাধিক শব্দের সামান্য অর্থ প্রকাশ কে,যা আবৃতিকালে আপনা আপনিই শ্বাসঘাত পড়ে।
মানে হলো,সুশৃঙ্খল এক বা একাধিক শব্দের মিলিত আংশিক অর্থ প্রকাশ যা আবৃতি কালে শ্বাসঘাত পড়ে,তাই পর্ব।
আমরা বিষয়টা কে আরো ক্লিয়ার করতে উদাহরণ এর প্রয়োগ দেখি।এবং পর্ব বিন্যাস এর জন্যে(/) এই চিহ্নটি ব্যবহার করি।
উদাহরণঃ
সুন্দর তুমি সুন্দর ওগো
বিশ্বনাথের প্রভা,
বিশ্রীটাও সুন্দর লাগে
ফুটলে হৃদে জবা।
এখানে দুটি চরণ।পর্ব ভাগ করে দেখি এবার।
সুন্দর তুমি/সুন্দর ওগো/
বিশ্বনাথের/প্রভা
বিশ্রীটাও /সুন্দর লাগে/
ফুটলে হৃদে/জবা।
আমরা প্রতি চরণে তিনটি করে পূর্ণ পর্ব পেলাম।আর চরণের শেষে,একটি করে অপূর্ণ পর্ব পেলাম।
একটু খেয়াল করে দেখুন,কবিতা আবৃতি কালে যেখানে পর্ব নির্দেশিত(/) টি আছে,সেখানে অটোমেটিক শ্বাসঘাত পড়ছে।
আরো দুটি উদাহরণ দিয়ে বুঝার চেষ্টা করি।
এইখানে তোর/দাদীর কবর/ডালিম গাছের/তলে
তিরিশ বছর/ভিজায়ে রেখেছি/দুই নয়ণের/জলে।
আবার,
বেদনার রঙ যদি ল/হতো ঠিক নীল,
মানুষ না হয়ে আমি/হতুম গাংচিল।
আশাকরি পর্ব কি আর কিভাবে পর্ব আলাদা করব বা বুঝব,তা জেনেছি।
অপূর্ণপর্বঃচরণের শেষে অনেক সময় একটি অপূর্ণ পর্ব দেখা যায়।যা, পর্বের থেকে ছোট হয়।আবার কখনো তা নাও থাকতে পারে।
আধুনিক কবিতায় অনেক সময় শুরুতেও অপূর্ণপর্ব দেখা যায়।তবে,যাই হোক চরণের শুরুতে বা শেষে থাকতে পারে,কিন্তু মাঝখানে কিছুতেই থাকবেনা।
আপনাদের জন্যে অনুশীলনের জন্যে(পর্ব ভাগের জন্যে)নিচে দুটি কবিতা দিলাম।
অনুশীলন করুন।আর,যে কোন প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন ইনবক্সে করতে পারেন।আমরা আজ ধীরেধীরে শিখি,অনুশীলন করি,এতে ভালো করেই বুঝতে পারব।
অনুশীলন ১ঃ
আঁধারের মায়া
আনিয়ন বিন হায়দার(মাসঊদ)
একবার যদি তার দেখি চাঁদ মুখ,
এরপর ধরে যাক মরণ অসুখ!
তবু যে শীতল প্রাণ
মানি না তো অভিধান
দু'জনার অভিমান
হৃদে ধুকধুক;
তার মুখ দেখে হিয়া খুঁজে নিক সুখ!!
কেন সে যে বারেবারে রয় অগোচরে,
বুকের ভেতর ব্যথা আর্তনাদে মরে
ভাবনায় সে বিরাজ
বুঝতে তবু নারাজ
ভুলে যাই সব কাজ
বুঝি অবসরে;
বেঁচে আছি যেন এক বেদনার চরে।
কত নিশি পার হয় তারে ভেবে ভেবে
আমার আকাশ ভরা ঘন কালো মেঘে
সুখেরা যেন বিমুখ
ব্যথা ভরা এই বুক
বুঝিনা এ কি অসুখ
আলাতুল লেগে;
নিশাচর হয়ে গেছি নিশি জেগে জেগে।
জানি সে তো কোন দিন দিবেনা গো দেখা
স্মৃতি লালন করব তকদীরে লেখা,
তবুও সে বেঁচে থাক
ধরাতে আলো বিলাক
মোহ সবি দূরে যাক
হয়ে যাই একা;
হয়ে যাক সবাকার অতি প্রিয় কেকা।
তার সুখ তার দুঃখ সবি যেন মোর,
তার সাহসেই বুকে পাই খুব জোর
তার সাথে দেখা হলে
বাহুর পেশীরা ফোলে
ভাবনা দুয়ার খোলে
প্রাণে জাগে শোর;
তার মাঝে হতে চাই একান্ত বিভোর।
যত দূরে থাক সে যে তবু মনে হয়,
তার বসতের ঘর আমার হৃদয়
সারাটি জীবন ধরে
সবাকার অগোচরে
রেখে দিব আমি তারে
যতনে সদয়;
করে যাক সে যে তার মত অভিনয়!!!
অনুশীলনঃ২
©somewhere in net ltd.