নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের পথে নিরন্তর ছুটে চলা

টার্বো মেডিসিন

সত্যের সন্ধানী।

টার্বো মেডিসিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা কবিতার ছন্দ

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:১৯

আসুন ছন্দ শিখি(৪র্থ কিস্তি)
★★★★★★★★★★★★★★

মাত্রাবৃত্ত ছন্দ বাংলা কাব্যে ব্যবহূত অন্যতম প্রাচীন ছন্দ। অক্ষরবৃত্তের প্রভাব থেকে রবীন্দ্রনাথ একে মুক্ত করে এতে এক নতুন রীতি প্রবর্তন করেন, যে কারণে মাত্রাবৃত্তকে কেউ কেউ রবীন্দ্রনাথেরই সৃষ্টি বলে মনে করেন। এ ছন্দ চর্যাপদে প্রথম লক্ষিত হয়। মূলত মাত্রাবৃত্ত একটি সর্বভারতীয় ছন্দ এবং সংস্কৃত ও প্রাকৃতের সময় থেকেই এটি ভারতবর্ষে প্রচলিত। বাংলা ভাষায় এটি প্রবেশ করেছে প্রাকৃত ও অপভ্রংশ কবিতা এবং সংস্কৃত কাব্য গীতগোবিন্দম্-এর মাধ্যমে। রবীন্দ্রনাথও স্বীকার করেছেন যে, এ ছন্দের সৃষ্টি হয়েছে সংস্কৃত ছন্দকে বাংলায় ভেঙে নিয়ে।

অন্যান্য বাংলা ছন্দের তুলনায় মাত্রাবৃত্ত একটি দুর্বল ছন্দ; কেননা পর্বদৈর্ঘ্য অনুযায়ী চার, পাঁচ, ছয় বা সাত মাত্রার এ ছন্দে স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল উচ্চারণভঙ্গি ফুটে ওঠে এবং এতে শক্তি বা সুরের স্বাভাবিক প্রকাশ না হয়ে কেবল মাত্রারই প্রাধান্য প্রতিফলিত হয়। এজন্যই এ ছন্দকে মাত্রাবৃত্ত ছন্দ বলা হয়। বাংলা সাহিত্যে এ ছন্দকে ধ্বনিপ্রধান, বিস্তারপ্রধান, সরল কলামাত্রিক ইত্যাদি নামেও অভিহিত করা হয়।

চর্যাপদে মাত্রাবৃত্ত ছন্দের প্রথম প্রকাশ পরিলক্ষিত হলেও সেখানে তা একেবারেই সাধারণ ও প্রাথমিক পর্যায়ের। এতে কেবল চার মাত্রার পর্বই ব্যবহূত হয়েছে; পাঁচ, ছয় বা সাত মাত্রার পর্ব অনুপস্থিত। আবার পর্বের দৈর্ঘ্য পূরণের জন্য যেহেতু চর্যাপদের মাত্রাবৃত্ত ছন্দে স্বরান্ত অক্ষরকেও দু মাত্রায় প্রসারিত করা হয়েছে, সেজন্য এ ছন্দকে স্বরপ্রসারক মাত্রাবৃত্তও বলা হয়।

চর্যাপদের পরে ব্রজবুলিতে রচিত বিভিন্ন বৈষ্ণবপদে মাত্রাবৃত্ত ছন্দের সার্থক প্রয়োগ ঘটেছে। চর্যাপদের বিভিন্ন পদে এ ছন্দের যে সীমাবদ্ধতা ও অসম্পূর্ণতা ছিল, তা যেমন ব্রজবুলির ছন্দে বিদূরিত হয়েছে, তেমনি এতে চারমাত্রার পর্বের পাশাপাশি পাঁচ, ছয় ও সাত মাত্রার পর্বেরও বহুল প্রয়োগ লক্ষণীয়। গোবিন্দদাস, বলরামদাস, শশিশেখর প্রমুখ বৈষ্ণব কবির বিভিন্ন পদে এ ধরনের সার্থক প্রয়োগবৈচিত্র্য পরিলক্ষিত হয়। এ ছাড়া চরণশেষে খন্ডপর্বের ব্যাপক ব্যবহারের মাধ্যমেও ব্রজবুলির বিভিন্ন পদ মাত্রাবৃত্ত ছন্দে একই সঙ্গে বৈচিত্র্য ও সার্থকতা আনয়ন করেছে।

ব্রজবুলির পরবর্তী সময় থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত কালপরিসরে ব্যাপক মাত্রায় মাত্রাবৃত্ত ছন্দে কাব্য সৃষ্টি হলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই প্রথম এ ছন্দে নতুনত্ব আনেন। তিনি তাঁর মানসী কাব্যের বিভিন্ন কবিতায় মাত্রাবৃত্ত ছন্দে হলন্ত অক্ষরকে দ্বিমাত্রিক হিসেব করে যেমন এক বিশিষ্ট রীতি উদ্ভাবন করেন, তেমনি অক্ষরবৃত্তের প্রভাব থেকে মাত্রাবৃত্তকে উদ্ধার করে এর স্বাতন্ত্র্য ও বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করেন। তাঁর পূর্বে সকল কবিই লঘু ত্রিপদী, লঘু চৌপদী, একাবলী প্রভৃতি ছয় মাত্রার ছন্দকে অক্ষরবৃত্ত বলে প্রতিপন্ন করলেও রবীন্দ্রনাথই প্রথম নিশ্চিত করেন যে, ধ্বনিধর্মে এগুলি মাত্রাবৃত্ত ছন্দোভুক্ত। ছন্দের ক্ষেত্রে এটি রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ অবদান।

মাত্রাবৃত্ত ছন্দের বৈশিষ্ট্যঃ
১)এটি মাত্রা প্রধান ছন্দ।
২)মুক্তস্বর ১ মাত্রা আর বদ্ধস্বর ২ মাত্রা(শব্দের যেখানেই বদ্ধস্বরের অবস্থান হোক)।
৩)এর প্রধান চাল ৬ মাত্রার।কিন্তু,৪/৫/৬/৭ ও হতে পারে।
৪)পূর্ণপর্বের পাশাপাশি অপূর্ণপর্ব ও থাকতে পারে।যার মাত্রা পূর্ণপর্বের চেয়ে কম হবে।
৫)এটির লয় স্বরবৃত্তের চেয়ে ধীর আর অক্ষরবৃত্তের চেয়ে দ্রুত।
৬)এটি যেহেতু দুর্বল ছন্দ,তাই পর্বের মিল রাখলে অনেকাংশে দুর্বলতা ঢেকে যায়।
৭)এটি গদ্য কবিতার জন্যে বেশ উপযোগী।

আসুন,এবার উদাহরণ এর মাধ্যমে পর্ব ও মাত্রা নির্ণয় দেখি।
উদাহারণঃ১
সুকান্ততের "আঠারো বছর বয়স"
আ+ঠা‌+রো৩, ব+ছর৩ |বয়+অস৪ কী১, দুঃ১ | স+হ২=(৬/৬/২)
স্পর২+ধায়২,নেয়২ | মা+থা২, তোল+বার৪| ঝুঁ‌+কি২=(৬/৬/২)
আ+ঠা‌+রো৩, ব+ছর৩ | বয়+সই৪ অ+হ২ | র+হ২=(৬+৬+২)
‌ বি+রাট৩,দুস+সা৩ | হ‌+সের৩, দেয়+ যে৩| উঁ+কি।=(৬+৬+২)
আ+ঠা‌+রো৩,ব+ছর৩| বয়‌+সের৪ নে+ই২ | ভয়৩=(৬+৬+২)
প+দা+ঘা‌+তে৪, চায়২ | ভাঙ+তে৩‌ পা+থর৩ | বা+ধা২,=(৬+৬+২)
এ১,বয়‌+সে৩,কেউ২ | মা+থা২,নো+য়া+বার৪ | নয়২=(৬+৬+২)
আ+ঠা‌+রো৩,ব+ছর৩| ব+য়স৩, জা‌+নে২,না১ | কাঁ+দা২।(৬+৬+২)
এখানে দেখা যায়,প্রতি চরণে দুটি পূর্ণপর্ব আর শেষে একটি অপূর্ণপর্ব আছে।প্রতিটি পূর্ণপর্বে ৬ মাত্রা আর অপূর্ণপর্ব ২মাত্রার।

উদাহরণঃ২
এবার,কবি জসিম উদ্দীনের বিখ্যাত "কবর" কবিতার,দুটি চরণ দেখা যাক।
এই+খা+নে৪ তোর২/দা+দীর৩ ক+বর৩ /ডা+লিম৩ গা+ছের৩/ তহলে২//
তি+রিশ৩ ব+ছর৩/ভি+জা+য়ে৩ রে+খে+ছি৩/দুই২ নয়+নের৪/ জ+লে২।//
এখানে আমরা দেখছি,৬ মাত্রার তিনটি পূর্ণপর্ব আর ২মাত্রার একটি অপূর্ণপর্ব।

উদাহরণঃ৩
এবার দেখি,গদ্য কবিতায় এর সফল প্রয়োগ;
স্বাধীনতা তুমি
শামসুর রহমান

স্বাধীনতা তুমি(৬)/
রবি ঠাকুরের(৬)/অঝর কবিতা(৬)/ অবিনাশী গান(৬)।
স্বাধীনতা তুমি(৬)/
কাজী নজরুল(৬)/ঝঁকড়া চুলের(৬)/বাবরি দোলানো(৬)/ মহান পুরুষ;(৬)/সৃষ্টি সুখের(৬)/ উল্লাসে কাঁপা-(৬)
স্বাধীনতা তুমি(৬)/
শহীদ মিনারে(৬)/অমর একুশে(৬)/ ফেব্রুয়ারির(৬) /উজ্জ্বল সভা(৬)
স্বাধীনতা তুমি(৬)/
পাতাকা-শোভিত(৬)/ শ্লোগান মুখর(৬)/ ঝাঁঝলো মিছিল(৬)
স্বাধীনতা তুমি(৬)/
ফসলের মাঠে(৬) /কৃষকের হাসি।(৬)
স্বাধীনতা তুমি(৬)/
রোদেলা দুপুরে(৬)/মধ্যপুকুরে(৬)/ গ্রাম্য মেয়ের(৬)/অবাধ সাঁতার।(৬)
এ গদ্য কবিতায় আমরা দেখলাম কবি প্রতিটি পর্বে ৬ মাত্রার চাল ব্যবহার করেছেন।কোন চরণে দুই কোন চরণে তিন কোন চরণে চারটি বা তার অধিক পর্ব ব্যবহার করেছেনে।এটি কবির স্বাধীনতা। কিন্তু,ছন্দ ও মাত্রার চাল ঠিক রেখেছেন।

উদাহারণঃ৪
এবার দেখব আমরা,পর্বমিল রাখলে কিভাবে দুর্বলতা ঘুঁচে যায়।

এক যুগের প্রেম(চার)
আনিয়ন বিন হায়দার(মাসঊদ)

তারে ছেড়ে হায় /আমি অসহায় /দিন যায়না তো /আর,
যেন তারে ছাড়া /হই দিশেহারা/ ভুলেই গেছি আ/হার!
মনে খটখট /বুকে ছটপট/ মাথা ঝটপট/ খোলে,
কি দারুণ ফল/ আঁখিপাতে জল /আঁখি ঘর যেন /ফোলে।
ইশকুলে যাবে /দেখবার লাভে /রাস্তায় গিয়ে/ "বই",
দেখা যায় দূরে /আসছে সে ঘুরে /সাথে নিয়ে দুই /সই।
কাছাকাছি আসি/ প্রাণ জুড়ে হাসি/ বলে,"কেমন আ/ছেন?"
এত দিন ধরে/ কেন এত দূরে/ কেমন করে বাঁ/চেন?"
জবাবের আর/ নেই দরকার /চলে গেলো তাড়া/তাড়ি,
বুকের ব্যথায়/ দাঁগে কলিজায় /ফিরে আসলাম /বাড়ি।
মনের কথারা/ দিচ্ছেগো নাড়া /কইতে পারিনি/ কিছু,
তার কাছে গেলে/ একি কৌশলে/ মাথা হয়ে যায় /নিচু।
মুখেতে আসেনা/ হৃদয়ে হাসেনা /কথা একদম /চুপ;
বুক ধড়পড় /দেহে গড়গড় /কাল করে বিদ/রুপ।
খাইতে গেলাম/ খিদের সেলাম /পেট যেন খুব /ফুলা;
শুইতে গেলাম/ ঘুমের নিলাম/ যায়নি যে তারে /ভুলা।
শুয়ে ছটফট /জানালায় খটখট/ মা ডাকছে "বাবা/ আয়"
তোর ভাই ডাকে/ এ নদীর বাঁকে /পানি যে দিবে "জা/লায়"।"
খুব বেশি রেগে /বাতাসের বেগে /চলে যাই তেজী/ "ঢকে",
মাও খুব বেশি/ হয় বিদ্বেষী/ যাচ্ছেন খুব /বকে।
সকাল গড়াই/ বিকেল বড়াই /মনে হলো স্কুল /ছুটি,
সে আসবে একা /হবে আজ দেখা /স্বপ্নরা মুঠি/মুঠি।
চলে যাই ত্বরা /বুকে নিয়ে ক্ষরা /তার ফেরার সে /পথে,
একা একা আসে/ আমার পাশে বসে /বলে যায় কোন/ মতে।
"এত গুলো দিন /আমারে বিহীন /কেমনে আছেন /দূরে?
আপনাকে আমি /মেনে নিছি স্বামী /রেখেছি অন্ত/পুরে!
কি করে ও জান /এতোটা পাষাণ /ভাবতে অবাক/ হই,
প্রতিটি বিকেল /এখনো যে আমি /আপনার আশে/ রই।
জানালায় উঁকি /নীলাকাশ দেখি /আম পাতাদের /গুণি,
অপেক্ষা থাকে /সে পথের বাঁকে /আপনার গলা/ শুনি!
কেন জানি আজ /হিয়াতে বিরাজ /আপনার সোনা /মুখ,
ভাবনায় জুড়ে /কেশরাশি উড়ে/ সুখে ভরে যায় /বুক।
বলুন এবার /কথা আপনার /রাস্তায় কেন/ বসে?"
দুষ্টুমি করে /নাকটাকে ধরে /দিলাম হালকা/ ঘঁষে।
এখানে আমরা দেখতে পাই,প্রথম দুই পর্বের মিল আছে কবিতাটি জুড়ে।এতে যেমনি কবিতায় সুরের ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হয়েছে,তেমনি কবিতার দুর্বলতাগুলো একদম ঢেকে গেছে।
এখানে প্রতিটি চরণে তিনটি পর্ব ৬ মাত্রার আর চরণের শেষে একটি অপূর্ণপর্ব ২মাত্রার।

মাত্রা নির্ণয় ও পর্ব ভাগ করার জন্যে নিচে অনুশীলনের জন্যে একটি কবিতা দেয়া হলো।
অনুশীলনঃ
ভাসমান স্মৃতি
আনিয়ন বিন হায়দার(মাসঊদ)

কতনা স্মৃতি ভাসিয়া উঠিছে নয়ণ ভারিয়া আজ,
কত হাসি খুশি কত বেদনায় বুক ভরা কারুকাজ।
কত দিন ধরি আপনার করি পেতে চাহিয়া তাহারে,
কত দিবানিশি আনমনে বসি ভাবিতাম অনাহারে।
একবার শুধু দেখিবার লাগি বেলা-অবেলায় ছুটি,
আমার ভাবনা আমরা ছিলাম সেকালের সেরা জুটি।
আমাদের মত এতখানি প্রেম এত মায়া এত টান,
কারো মাঝে দেখা যায়নি তো কভু দুরন্ত অভিমান।
সারা রাত ভর জাগিয়া জাগিয়া বুনিয়াছি কত জাল,
সব কিছু ভুল প্রেমে মশগুল বিরহে কাটিত সাল।
শুধু এক বার ছুঁইবার আশে কত বার যাই কাছে,
ধুরুধুরু বুক থরথর হাটু ভয়ে লাগে খুব পাছে।
কথা যে কহিব নেই সে সাহস কন্ঠ কাঁপিয়া উঠে,
তবু এ অধম বিশাল কপালী মিলন ললাটে জোটে!
সাধনার প্রেম বনে যাই শ্যাম মন ভরে যায় সুখে,
কে জানিত আর বুকে হাহাকার মরিব এমনি ধুকে।
ভাগ্যে সয়নি স্বর্গের সুখ ধরাতলে খুব একা,
রুখিব কেমনে মুঁছিব কেমনে তকদীরে যাহা লেখা।
তাহার লাগিয়া অন্তরে ব্যথা কই মোর প্রিয়তমা?
তাহার বিহনে বুকের ভিতরে ব্যথা হইয়াছে জমা।
সকাল বিকেল খুজিয়া বেড়াই মিলে যায় যদি ভুলে,
হিয়া তলে জমা বেদনার কথা বলিতাম সবি খুলে।
কোন অভিমানে এ কিসের টানে আমারে ছাড়িলো হায়,
যেই হাসি মুখ দেখি ভরে বুক নেই বসুন্ধরায়!
যেখানেতে থাক চিরসুখে থাক এই কামনাই করি,
এ নিশিতে বসে বেদনার বশে সে দিন গুলো স্মরি।

আজ আমরা জানলাম মাত্রাবৃত্ত ছন্দ সম্পর্কে।আসুন,অনুশীলন করুণ। আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন।প্রাসঙ্গিক যে কোন বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারেন।সকল জড়তা ঝেড়ে ফেলে দিন,শিখুন।
আমরা এর পর অক্ষরবৃত্ত ছন্দ নিয়ে আলোচনা করব।সবাই ভালোথাকুন।কবিতা তার দেহ ফিরে পাক এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আজ এখানেই ইতি টানছি।
শুভকামনা সকলের জন্যে।আল্লাহ হাফেজ।

★আলোচক★
আনিয়ন বিন হায়দার(মাসঊদ)
সূত্রঃকিছুটা ইন্টারনেট থেকে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.