![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছু বিশ্লেষণধর্মী লেখা। নিতান্তই নিজের মন থেকে লেখা হয়েছে, কাউকে উদ্দেশ্য করে নয়। সমালোচক সমালোচক একটা ভাব দেখা যেতে পারে :)
এইচ.এস.সি পরীক্ষার পরে সবাই প্রিপারেশন নেয় পাবলিক ভার্সিটিতে ভর্তি হবার। যারা চ্যান্স পায় তারা পাবলিকে ভর্তি হয়, যারা চ্যান্স পায় না তারা দুইভাগে বিভক্ত। একভাগ ধনিক শ্রেণীর অন্তর্ভূত হওয়ায় প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তি হয় (বাপের টাকা না থাকলে, প্রাইভেটে পড়া যায় না) আর আরেক ভাগ, দ্বিতীয়বার ট্রাই করে (এই শ্রেণীর মধ্যে ধনী, মধ্যবিত্ত এবং গরীর, তিন শ্রেণীর শিক্ষার্থী বিদ্যমান) এই দ্বিতীয়বার ট্রাই করার পরেও যারা পারে না, তাদের মধ্যে মধ্যবিত্ত আর গরীব ঘরের ছেলে পুলে যায় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ নতুবা ডিগ্রী কলেজে। আর ধনীর সন্তানেরা আসে প্রাইভেটে। [যদিও এমনো অনেক মেধাবী আছে যারা প্রাইভেটকে প্রথম পছন্দ হিসেবে ধরে নেয়, কিন্তু তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয়]
এর মানে দেশের পাবলিক ভার্সিটিগুলোতে মেধাবীর সংখ্যা নিঃসন্দেহে বেশি, শুধু বেশি নয় অনেক বেশি। এখন প্রাইভেটে পড়া কিন্তু স্টুডেন্ট আছে যারা পাবলিকদের খ্যাঁত বলে থাকে, সমানভাবে পাবলিকে পড়া অনেকেই প্রাইভেট ভার্সিটির স্টুডেন্ট শুনলে নাক শিঁটকায়। কারণ যাই হোক না কেন এই দুই ধরণের ঘটনাই ঘটে যা সত্যিকার অর্থে অনাকাঙ্ক্ষিত। এই সমস্যা না কাটাতে পারলে ভবিষ্যতে আরো বড় সমস্যা অপেক্ষা করছে। আসলে এই সমস্যার পিছনে বেশ কিছু সূক্ষ কারণ আছে।
# প্রধান কারণ, ইগো। শুনতে হাস্যকর লাগলেও এটাই সত্যি। ভার্সিটি পড়ুয়া স্টুডেন্টদের মাঝে এই রোগটা এতো ভয়াবহ আর ছোঁয়াচে তা আমরা এখনো আঁচ করতে পারছি না।
# পৃথিবীতে কেউই পরিপূর্ণ নয় এই সত্যটা মানতে অনীহা। আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে সব সময় সবাই সব সুবিধা পায় না। যেমন পাবলিকের বন্ধুরা ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক জীবন যাপন করে কিন্তু প্রাইভেটের বন্ধুরা এটা পারে না। আবার প্রাইভেটের বন্ধুরা নানান ধরণের অনুষ্ঠান উপভোগ করে থাকে যেটা পাবলিকের বন্ধুরা পারে না।
# এরকম আরো অনেক কথা আছে। পাবলিকের বন্ধুরা প্রায়ই বলে থাকেন, শুধু টাকার জোরে প্রাইভেটে পড়া যায়। (এতে ভাই আপনার সমস্যাটা কোথায়? তাদের বাবারা কি আপনার, বক্তার, কাছ থেকে টাকা ধার করে ছেলে পড়াচ্ছেন??)
# প্রাইভেটে গরু গাধারাও ভালো রেজাল্ট করে। (একজন মানুষকে আপনি তার অতীত দিয়ে বিবেচনা না করে এখন কেমন আছে সেটা দেখুন)
# প্রাইভেটের স্টুডেন্টরা দেশীয় কালচার বুঝে না। (কালচার বলতে এখানে তারা কি বুঝান সেটা অনেকেই বুঝে না)
# প্রাইভেটের স্টুডেন্টরা বাবার টাকার জোরে জব পায়। (মানে কি ভাই, যোগ্যতা না থাকলে প্রাইভেট ফার্মের জব এক সপ্তাহও টিকে না; প্রাইভেট ভার্সিটির অধিকাংশ স্টুডেন্ট প্রাইভেট ফার্মে জব করে থাকে)
একই ভাবে প্রাইভেটের বন্ধুদের অনেকেই এমন বলে থাকেন
# টাকা নাই বলে পাবলিকে পড়ে। (ভাই আপনিও তো এক্সাম দিয়েছিলেন, চ্যান্স পেলে তো আপনিও পড়তেন)
# পাবলিকে সব আঁতেলরা পড়ে। (একটা স্টুডেন্টের প্রধান কাজ স্ট্যাডি করা, যে আসল কাজ করে তাকেই গালি!!)
# পাবলিকে সব খ্যাঁতরা পড়ে। (হ্যাঁ, আমাদের দেশের গর্ব যারা সবাই খ্যাঁত)
পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করা আসলে অশিক্ষিতদের মানায়। বিনা কারণে কথা কাটাকাটি। অহেতুক বাক আক্রমণ কখনোই শিক্ষিত মানুষের লক্ষণ হতে পারে না। শেষে এসে একটা কথা না বলে পারছি না, পাবলিকের সেই সব বন্ধুরাই প্রাইভেট নিয়ে কটুক্তি করে যারা প্রাইভেট ভার্সিটির লাইফটা অনেক বেশি পেতে চায়, একই কথা প্রাইভেট ভার্সিটির সেই সব বন্ধুদের কেও, আঙ্গুর ফল আসলেই টক হয়। কিন্তু যা আমার নেই তা আমার নেই। এটা নিয়ে ভেবে, যার আছে তাকে আঘাত করে কি লাভ। জীবনটা অনেক বড়, ভার্সিটি লাইফ তো সবে সেই আসল জীবনের শুরু, এখনো অনেক পথ পারি দিতে হবে। সেই দিকে লক্ষ্য রাখাই বরং কাজে দিবে।
©somewhere in net ltd.