![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছু বিশ্লেষণধর্মী লেখা। নিতান্তই নিজের মন থেকে লেখা হয়েছে, কাউকে উদ্দেশ্য করে নয়। সমালোচক সমালোচক একটা ভাব দেখা যেতে পারে :)
এমিল আর মাহদি, কলেজ ছাত্র, রাস্তা পার হবার জন্য অপেক্ষা করছে। খানিক বাদে যখন তারা রাস্তা পার হবার জন্য উদ্যত হল তখনি সিগন্যাল দিলো ছেড়ে। কি করা! কোন মতে প্রাণ বাঁচিয়ে এদিক ওদিক করে রাস্তা পার হওয়া। উফ!!! জোর বাঁচা বাঁচা গেলো!
রমজান আলী, মুদি দোকানদার, সুপ্রভাত লোকাল সার্ভিসে উঠেছেন। নামবেন বাঁশ তলা (নতুন বাজার সংলগ্ন) কিন্তু রাস্তায় যানবাহনের জটলার জন্য গাড়ির ড্রাইভার একটু সামনে এগিয়ে গাড়ি থামালেন। এই যা!!!!!!! রমজান সাহেবের যে হাজার টাকার লোকসান হয়ে গেলো!!!!!! এখন উপায়!!!!!! মনের জ্বালা মেটালেন ড্রাইভারের মা বোনকে.................... বাস ড্রাইভারও কম যাননি। রমজান আলীর গালে, নাকে, চড় থাপ্পড়ের বর্ষণ করলেন। বাস যাত্রীরাও বলল, ‘ঠিকই তো আছে। ব্যাটা, ফাও ফাও মা বন নিয়ে গালাগাল করবে ক্যান? আরও তো ওনারই দোষ।‘
রামপুরা থেকে ফাল্গুনে উঠলো ফাহাদ, ভার্সিটি স্টুডেন্ট, বাস জ্যামে থেমে ছিল, তো বাসের হেল্পারের হাত পা ধরে বাসে উঠলো, বলল, ‘মামা, এমন করো ক্যান? ভাড়া দিমু তো?’ বেচারা হেল্পার কিছু উপড়ির লোভে উঠিয়ে নিলো ফাহাদকে। কিন্তু বিপত্তিটা বাধল ভাড়া চাইতে গেলে। তখন, আমাদের এই ছাত্র ফাহাদের মনেই নেই যে তিনি টিকেট কেটে বাসে চড়েন নি। উল্টা হুঙ্কার, ‘ওই ব্যাটা, মানুষ চিনস!!!!!!!! থাপ্রায়া কান ছিরা দিমু!!!!!’ খানিক বাদে তার মতো আরেকজন টিকেট বাসে উঠলে আবার হুঙ্কার, ‘ওই ব্যাটা, লোকাল পাইসস???? ট্যাকা দিয়া সিটিং গাড়িতে উঠলাম। হালারা এইডারেও লোকাল বানাইসে!!’
প্রথম ঘটনাটা আমি আর আমার এক বন্ধুর সাথে হয় যখন আমরা কলেজ এ পরি। আর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ঘটনা যুগল নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করা। আসলে চলতি পথের অতি সাধারণ দুটি ঘটনা এগুলো। বাঁচা মরার সংগ্রামে নেমে আমরা যেন অনেক কিছুই ভুলে যাই। ভুলে যাই ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার না করলে কি হতে পারে, রাস্তার মাঝে বাস থেকে নামলে কি হতে পারে, দৌড়ে বাসে উঠতে গেলে কি বিপদ হতে পারে, ভুলে যাই আরও অনেক কিছু। এই যখন আমাদের অবস্থা, তো রাস্তা ঘাটে আমরা মরবো নাকি ইউরোপ, আমেরিকার লোকেরা মরবে!!!!!!!!! ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার, উল্টা পাল্টা কথা বলা, বাসের ভাড়া না দিয়ে কেটে পরা (শুধু তাই নয়, উল্টা গলা বাজি, ওই ব্যাটা কয় বার ভাড়া লইবি????) এগুলো কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। হর হামেশাই এমন ঘটনা ঘটছে রাস্তা ঘাটে, চলতি পথে।
আমাদের উচিত আরও সচেতন হওয়া, দায়িত্বশীলতার সাথে যাতায়াত করা, নতুবা এমন ঘটনা বাড়বে বই কমবে না।
আর ছাত্রদের প্রতি আবেদন, আমরা যারা ভার্সিটিতে পড়ছি, আমাদের কাছে জাতি অনেক কিছু আশা করে। শুধু লেখাপড়া করেই যদি ভালো মানুষ হওয়া যেত তাহলে তো হতোই। শুধু ছাত্র নয় বাসে উঠে ভাড়া না দেয়া আর উল্টা ফাঁপর অনেকেই নিয়ে থাকেন। কিন্তু ছাত্রদেরকে বলছি, আগে কেউ ম্যাট্রিক পাশ করলে দশ গ্রামের লোক দেখতে আসতো, আর এখন এম.এ, বি.এ পাশ ছেলে মেয়েদের কেউ দাম দেয় না কেন, জানেন? অনেকে হয়তো বলবেন, এখন তো অনেক বেশি পাশ করে। আসল কারণ হল, আগে একটা ছাত্রের আচরণ মুগ্ধ করতো তার চারপাশের মানুষের মন, আর এখন......... থাক না বললেও সবাই বুঝে গেছেন আশা করি।
©somewhere in net ltd.