![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘোলা জল আর ঝরা পাতা মূল্যহীন। ঘোলা হওয়ার আগে বা ঝরে পড়ার আগেই কিছু একটা করা উচিত।
ছেলেটার ডাক নাম ফাহাদ। এ বছর দাখিল পরীক্ষায় ৪.৬৫ পেয়েছে। গ্রামের মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিয়ে। থানা সদর থেকে তাদের গ্রামের দুরত্ব সড়ক পথে ১৫ কিলোমিটার।
ওহ বলাই হয়নি, ছেলেটি আমার ছোট মামার ২য় সন্তান। আমার আর ফাহাদের চেহারা নাকি দেখতে একই রকম। তাই সবাই আমাদের দুজনকে আপন ভাই বলে ভুল করে। তো কথা হলো, ২০০৭-২০০৮ সালে তার বাত-জ্বর ধরা পড়ে। বাত-জ্বরের চিকিৎসায় মামার অনেক টাকা খরচ হয়। এক পর্যায়ে জমি বিক্রি করে চিকিৎসা করা হয়। ধরেই নেয়া হয় ফাহাদকে হয়তো বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। ইনজেকশান দিতে দিতে ওর প্রায় সারা শরীরই ছিদ্র হয়ে গেছে। দুই বছর পড়াশোনা বন্ধ থাকার পর কিছুটা সুস্থ্য হলে আবার সে স্কুলে যায়। লাগামহীনভাবে তার পড়াশোনা চলতে থাকে। তারপর মামা তাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেন, যদি আরবি পড়ার উছিলায় মহান অধিপতির কৃপা হয় এই আশায়।
এভাবেই সে ধীরে ধীরে এগুতে থাকে। মসজিদের ইমাম মামা কৃষিতে তেমন কোন প্রসার করতে পারেন না। কৃষি কাজের খরচ, কাজের লোকদের খরচ, কিছু বর্গা দেয়া জমির খরচ - এসব করে কোনভাবেই কুলিয়ে উঠতে পারেন না। জমি বিক্রি করে একমাত্র মেয়ের বিয়ে দেন এবং হাতে কিছু টাকা জমা থাকে। সংসারের অসচ্ছলতা ফাহাদের মনেও বিরুপ প্রভাব ফেলে। সে চিন্তা করতে থাকে কিভাবে এই অবস্থা থেকে উত্তরণ হওয়া যায়। গতবছর ফাহাদ যখন ক্লাশ নাইন থেকে টেনে উঠে তখন তাদের পারিবারিক পুকুর (আমার নানার ১০ কাঠা জমির পুকুর) যা আগে ইজারা দেয়া ছিলো তার মেয়াদ শেষ হয়। ফাহাদ আমার মামাদের সাথে আলাপ করে যে সে এটাতে মাছ চাষ করবে। সবাই তার প্রতি সহানুভুতিশীল হয়ে দুইবছরের জন্য দেয়। তারপর তাদের জমি বিক্রির টাকা দিয়ে পুকুর ঠিকঠাক করে, সার-গোবর-চুন দিয়ে মাছ চাষের উপযোগী করে তুলে।
সময়মতো মাছের শিং পোনা ছাড়ে পুকুরে। মাদ্রাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি সাংসারিক ছোট-খাট কাজ-কর্ম করে, মাছের পুকুর দেখাশোনা করে। দুই মাসেই তার হাতের টাকা সব শেষ হয়ে যায়। উপায় না দেখে আসে আমার আম্মার কাছে টাকার জন্য। আম্মা তাকে খুব খুব আদর করেন। মনে হয় আমার চেয়ে বেশি আদর করেন ওকে। আম্মা আমাকে জানায় ফাহাদকে একলাখ টাকা ধার দিতে হবে ছয় মাসের জন্য। নিতান্তই অনিচ্ছা সত্বেও মায়ের কথামতো তাকে ধার দিই টাকাটা এবং এটাকে চিরস্থায়ী খরচ হিসেবে ধরে রাখি। মা আমাকে বোঝায়, যদি ফাহাদ টাকা নষ্ট করে, না দিতে পারে তাহলে আমার আম্মা আমাকে এক কাঠা জমি আমাকে লিখে দিবেন। আমি এসব নিয়ে কিছু বলি না আম্মাকে। এসবের মাঝখানদিয়েই ওই ছেলে দাখিল পরীক্ষা দিলো। ৪.৬৫ পেয়ে পাশও করলো প্রত্যন্ত গ্রামের মাদ্রাসা থেকে। জুনমাসে যখন দেশে ছিলাম, বেড়াতে গেলাম নানা বাড়িতে, তখন ফাহাদ জাল ফেলে পুকুর থেকে মাছ ধরলো - শিং মাছ + আরো কিছু প্রতিবেশী মাছ। দেখলাম চাষের মাছ হিসেবে যতটুকু বড় আশা করার কথা, ততটুকু বড় হয় নাই। (আসলে শিং মাছ পুকুরের নিচু স্তরের মাছ, এগুলা জালে তেমন উঠে আসে না) ফিরে আসার সময় একপাতিল মাছ দিয়েও দিলো।
গত সপ্তাহে ফাহাদের মাছ বিক্রি হয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকার। ফাহাদের সর্বমোট খরচ হয়ে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা। ৮ মাসে ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছে ফাহাদের। সে খুউব খুশি।
দোয়া করবেন সবাই ছেলেটার জন্য।
২২ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৬
ভিটামিন সি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন আপনিও সবসময়।
২| ২২ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:১১
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: পরিশ্রমী ভাতে মরে না।
২৩ শে জুলাই, ২০১৪ ভোর ৬:৫৮
ভিটামিন সি বলেছেন: সুপার লাইক হবে এখানে।
৩| ২২ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৭
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ++++++ শুনে ভালো লাগলো ভাই । ওনার জন্য শুভকামনা রইলো
২৩ শে জুলাই, ২০১৪ ভোর ৬:৫৯
ভিটামিন সি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন আপনিও সবসময়।
৪| ৩১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৪৯
এহসান সাবির বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা রইল।
০১ লা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:০৬
ভিটামিন সি বলেছেন: ধন্যবাদ এবং আপনার জন্যও শুভেচ্ছা রইল।
৫| ০১ লা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:০০
কালের সময় বলেছেন: মহান আল্লাহু উনার সহায়ক হবেন ।
ঈদের শুভেচ্ছা নিবেন
ঈদমুবারক
০১ লা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:০৭
ভিটামিন সি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন। আপনাকেও ঈদ মোবারক।
৬| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৩
অঘটনঘটনপটীয়সী বলেছেন: দোয়া রইলো।
১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৪
ভিটামিন সি বলেছেন: পৌছাই দিমু নে।
৭| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৪২
ড. জেকিল বলেছেন: শুভকামনা রইলো তার জন্য!
১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৪
ভিটামিন সি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। আমার ওই ছোট ভাইটা ডিপ্লোমা-ইন-ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৪০
মদন বলেছেন: মাশা আল্লাহ।
আল্লাহ তার সহায় হোন।