নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ওয়াফিক ফারূক

ওয়াফিক ফারূক › বিস্তারিত পোস্টঃ

নাই খানমতম নামক যোদ্ধার কাহিনী ও আধুনিক থাইল্যান্ড

০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ৮:৪৫

১৭৬৭ সালে বর্মী সেনারা (প্রাচীন বার্মা, বর্তমান মায়ানমার) থাইল্যান্ড আক্রমন করে এবং তৎকালীন রাজধানী Ayuthya থেকে হাজার হাজার মানুষকে বন্দী হিসেবে বার্মা নিয়ে যায় । বন্দীদের মধ্যে কয়েকজন থাই কুস্তিগীর ছিল । ১৭৭৪ সালে বার্মার রাজা হিসিনবাই ওশিন (Hsinbyushin) তার সভাসদকে একটি সাত দিন, সাত রাতের ধমীয় উৎসবের আয়োজন করতে বললেন। উৎসবের এক পর্যায়ে নাই খানমতম (Nai Khanomtom) নামে একজন থাইবন্দী Burmese Boxing প্রতিযোগিতায় ( যা পরবর্তীতে kick boxing নামে পরিচিত হয়েছে) অংশগ্রহনের ইচ্ছা প্রকাশ করল ।



রাজার সিংহাসনের সামনে বক্সিং রিং স্থাপন করা ছিল। রাজা হিসিনবাই ওশিন নাই খানমতমকে অনুমতি দিলেন অংশগ্রহন করার কিন্তু শর্ত দিলেন যে তাকে এক বর্মী চ্যাম্পিয়ানের সাথে লড়াই করতে হবে । নাই খানমতম রাজি হলো। লড়াইয়ের আগে, নাই খানমতম তার শিক্ষক ও পূর্ব-পুরূষদের সন্মানে উদ্দেশ্যে একটি প্রাক-লড়াই নৃত্য পরিবেশন করলো। যখন লড়াই শুরু হলো তখন নাই খানমতম তার প্রতিদ্বন্ধীকে শক্তিশালী আঘাত, ঘুসি ও লাথির দ্বারা ছিটকে ফেলে দিল। বর্মী চ্যাম্পিয়ান কোন প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারল না।



বর্মী রেফারি নাই খানমতমের তুখোড় কৌশল দেখে হতভম্ব হয়ে পরেছিলেন এবং এই জয়কে অবৈধ ঘোষনা করলেন এই বলে যে নাই খানমতমের নাচ বর্মী চ্যাম্পিয়নকে বিভ্রান্ত করেছে। রাজা হিসিনবাই ওশিন নিজেও কিছুটা ধাক্কা খেলেছিলেন এবং বললেন যদি নাই খানমতম নিজেকে প্রমাণ করতে চায় তবে তাকে আরও নয়জন বর্মী চ্যাম্পিয়ানের সাথে লড়াই করতে হবে। নাই খানমতম রাজী হল এবং সকলের সঙ্গে লড়াই করল ।একজনের পর আরেকজনের সাথে সে লড়াই করল কোন বিশ্রাম না নিয়ে । রাজা হিসিনবাইওশিন প্রচন্ড মুগ্ধ হলেন এবং জিঞ্জাসা করলেন সে কি চায়। নাই খানমতম মুক্তি চাইলো ।রাজা তাকে সম্পদ দিতে চেয়েলেন । নাই খানমতম নম্রভাবে তা প্রত্যাখান করল এবং বললো সম্পদ সহজেই খুজেঁ পাওয়া যাবে তাই তার সহযোগী থাই বন্দীদের মুক্তি চায় সে।



নাই খানমতম তার সাথীদের নিয়ে দেশে ফেতর আসলো। সেই থেকে থাইল্যান্ডে কিক বক্সিং বেশ জনপ্রিয়। এই সহিংস খেলার প্রতি তাদের ভালবাসা থাকা সত্ত্বেও থাইল্যান্ডের মানুষ আসলে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ, শান্তীপ্রিয় এবং অতিথি পরায়ন। বিশ্ব অথনৈতিক ফোরামের মতে থাইল্যান্ড বিশ্বের ১৩তম বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ । এই কারনে এবং আরও কিছু অন্যান্য কারনে Global Destinations Cities Index আনুযায়ী থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক বিশ্বের সবাধিক ভ্রমনকৃত শহর, এমনকি লন্ডনের থেকেও এগিয়ে।



থাইল্যান্ড এমন একটি দেশ যেখানে ভ্রমন খরচ খুব কম, খাবার সুস্বাদু আর বিনোদন অসামান্য। থাই রান্না বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত রান্নাগুলোর মধ্যে অন্যতম ।অনেকের ধারনা থাই খাবার খুব মসলাযুক্ত হয় । আসলে এটি সত্যি নয় । আনেক মসলাবিহীন খাবারও আছে কিন্তু বিদেশী পর্যটকের কাছে তা খুব কমই পরিবেশন করাহয়। যদিও যেকোন পর্যটকের মসলাবিহীন খাবার নেওয়ার রয়েছে পূর্ণ স্বাধীনতা । স্বাধীনতা নিয়ে যখন কথা আসলোই, তখন উল্লেখ করতে হয় যে থাইল্যান্ড নামের অর্থ হচ্ছে “The Land of the Free”। এই নামের অর্থ পুরোপুরি ঠিক কারণ দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে থাইল্যান্ড কখনো ইউরোপের কোন জাতী দ্বারা অধ্যষিত ছিল না । কোন ইউরোপিয়ান জাতী থাইল্যান্ডে উপনিবেশ স্থাপন করতে পারেনি। থাইল্যান্ড দক্ষিন পূর্ব এশিয়া অংশে একটি buffer রাষ্ট্র হিসেবে কাজ করেছে। ব্যংককের শাসকগন বুদ্ধিমত্তার সাথে দরকষাকষি এবং চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ব্রিটেন , ফ্রান্স, পর্তুগাল এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে। ফলশ্রুতিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে দেশটির অথনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে।



বাংলাদেশের মধ্য আয়ের মানুষদের জন্য থাইল্যান্ডই ইউরোপ, আমেরিকা। ব্যাংককে সরকার বিরোধী আন্দোলনের থেকেও ঢাকাবাসীর শেখার আছে কিছু। আবার বাংলাদেশের সরকারী দলের কাছেও থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক দলগুলোর শেখার আছে আনেক। ইতিমধ্যে শেখেছেও তারা কিছু কিছু।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:৫৭

ডাবলার বলেছেন: Dhonnobad vai.. Share korar jonno .

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.