নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ওয়াফিক ফারূক

ওয়াফিক ফারূক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদ্যুৎ-শক্তি বিভ্রাট এবং মানুষের ভোগান্তি

৩০ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:১৭

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এই আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, খুব তাড়াতাড়ি দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে, কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি আসলে আকাঙ্ক্ষিত পর্যায়ের হয়নি। দেশব্যাপী হালকা গরমের ছোঁয়া আসলেই শহর এবং গ্রামাঞ্চল উভয় শ্রেণীর মানুষকেই তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হয়। আর এর কারন হচ্ছে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট।

বস্তুত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারনে জীবনযাপন দুরূহ হয়ে পরছে। শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকাতেই না, বরং সারাদেশেকেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এবং স্বাভাবিক জীবন কষ্টকর হয়ে উঠছে। নগরবাসী সবচেয়ে বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার হচ্ছে। এছাড়াও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারনে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতেও উৎপাদনের হার কমে গিয়েছে। কারন এসব শিল্প-প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বিদ্যুৎ শক্তি ছাড়া অচল। রাজধানীতে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সবচেয়ে চরম শিকার হল ইলেক্ট্রনিক দোকান, প্রকৌশলী কর্মশালা এবং সাইবার ক্যাফেগুলো। টানা কয়েক ঘণ্টার জন্য ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঢাকার বেশির ভাগ পরিবারের স্বাভাবিক জীবন মারাত্মক কষ্টকর করে তুলেছে।

এর মধ্যেও কেউ কেউ দাবী করছেন বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে; আবার কেউ কেউ ফিরিস্তি দিচ্ছেন বাংলাদেশের শীর্ষ দশ গ্রুপ অফ কোম্পানি কিভাবে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিচ্ছে। এগিয়ে তো যাচ্ছে কিন্তু কিভাবে তা এক বিস্ময়।

কিছু কিছু এলাকায় প্রতিদিনের স্বাভাবিক সময় ছাড়াও গভীর রাতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিচ্ছে। দিনের বেলায় তীব্র তাপের পরে রাতেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট সেখানকার তাপমাত্রা যেন আরও বারিয়ে দিচ্ছে। ফলে সেখানকার ঝলসানো তাপমাত্রা অনেক বেশি মাত্রায় অসহনীয় হয়ে উঠছে। অনেক গ্রামাঞ্চলে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ছয় থেকে সাতবার পর্যন্তও বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিচ্ছে এবং সেসব এলাকার মানুষজনকে এসবের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, প্রতিবার বিদ্যুৎ যাওয়ার পর কমপক্ষে এক থেকে তিন ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ আসছে। এসময়ের তীব্র আদ্রতা এবং গরমের মধ্যে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিভ্রাট মানুষের ভোগান্তিগুলো আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কিছু কারন দেখিয়েছে যেগুলোর ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বণ্টনের ক্ষেত্রে এতো বেশি ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই কারনগুলো হল একটি বিদ্যুৎ টাওয়ারের পতন, ১০ টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একত্রে রক্ষণাবেক্ষণ এবং গ্যাসের স্বল্পতা। তাদের মতে দেশে বিদ্যুৎ ঘাটতির পিছনে এগুলোই মূল কারন হিসেবে কাজ করছে।

ঢাকা শহর একাই দেশের মোট উৎপাদিত বিদ্যুৎ শক্তির এক-চতুর্থাংশ ব্যাবহার বা খরচ করছে। বিভিন্ন দোকানপাট এবং শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন যে, তারা খুব বেশি হলে দৈনিক সর্বোচ্চ চার ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ পাচ্ছে, কিন্তু সেটাও টানা সময়ের জন্য না। সাইবার ক্যাফেগুলোও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারনে তীব্র সমস্যায় ভুগছে, কেননা তাদের কার্যকলাপ বিদ্যুৎ শক্তি ছাড়া অচল। ফলে সাইবার ক্যাফেগুলোতে যারা বিভিন্ন কাজ করতে আসে তারা ঠিকভাবে টাকা দিতে চায় না, কারন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারনে তাদের কাজে অনেক ব্যাঘাত ঘটে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারনে পেট্রোল-পাম্পগুলোতেও সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস বা সিএনজি-এর মারাত্মক সংকট দেখা দিচ্ছে। বর্তমান সময়ে নগরীতে সিএনজি চালিত যানবাহনগুলোর বিরাট লাইন করে গ্যাস এর জন্য অপেক্ষা করা একটি নিত্যদিনের দৃশে পরিণত হয়েছে।

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের উন্নতির জন্য ব্যাপক ভাবে বৈদেশিক ঋনের উপর নির্ভরশীলতা এবং এরই সাথে সাথে উৎপাদন পদ্ধতির অনেক প্রতিবন্ধকতা, দুর্বল ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা দিন দিন আরও ধসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ শক্তির সরবরাহের অবসস্থা পুনরায় ভাল করার জন্য এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়ানোর জন্য কিছু পুরাতন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নতুন করে বসিয়ে কার্যক্ষম করার কথা ছিল। কিন্তু, এই প্রক্রিয়াটি অনেক বেশি সময় নিচ্ছে এবং জনসাধারন এতো সময়ের ঝুকি নিতে রাজি না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.