নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি পথ, আপনি চাইলে হেঁটে দেখতে পারেন....

জীয়ন আমাঞ্জা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !

জীয়ন আমাঞ্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

এভাবে চলবে কতদিন ?

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৬



¯¯¯¯¯¯¯¯¯¯¯¯¯¯¯¯¯¯¯¯¯

এ উপমহাদেশে ইসলাম প্রচার শুরু হয়েছিল সেই ১০০০ সালের মাঝের দিক হতে । এর পরে তা প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে । অবশ্য সে ইতিহাস নিয়ে আজ বিস্তারিত কিছু বলতে যাচ্ছি না ।



ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলেও ইসলামের শিক্ষা প্রচারের মতো মানুষ বা আলেমের অভাব সেই গোড়ার দিক হতে অদ্যাবধিও বিদ্যমান ! প্রায় নব্বুই বছর আগের কথা, সারা গাঁয়ে একজনও আলেম নেই মসজিদে নামাজ পড়ানোর মতো ।

গাঁয়ে গাঁয়ে মোল্লা বলতে ছিল নোয়াখালী থেকে আসা কিছু দাড়িওয়ালা ব্যক্তি । বাংলাদেশের পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ এমনকি ওপারের কলকাতায়ও হুজুর বলতে এই নোয়াখালির মোল্লাদেরই বেশি আধিক্য ছিল ।



আমাদের গাঁয়ের সবচেয়ে প্রবীণ হুজুর হচ্ছেন গনি মোল্লা । সেই ছোটবেলা হতে আজ অবধি গনি হুজুরের সেই একই হুলিয়া দেখে আসছি । সেই সফেদ দাড়ি, ইয়া সুঠাম দেহ, আর সেই একই ধরনের আলখাল্লা । ইদানিং তাঁর বার্ধক্যটা কিঞ্চিত টের পাওয়া যায় । বয়স একশ ছুঁয়েছে বোধ করি । শেষ বিয়েটি করেছেন আজ হতে চৌদ্দ বছর আগে । মোট বিয়ের সংখ্যা কত তা স্বয়ং গনি হুজুরও হিসেব করে বলতে পারেন কিনা প্রতীতি আছে ।



যাকগে, বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড় হয়ে যাচ্ছে, ভাতের চেয়ে ডাল হয়ে উঠছে উঁচু, আমি গনি হুজুরেরও আগের সময়ের কথা বলছি, যখন নোয়াখালী থেকে মুসাফিররূপী হুজুররা এসে গাঁয়ে গাঁয়ে ঠাই নিতেন, আর মক্তব খুলে মিলাদ- ফাতেহা ইত্যাদি পড়িয়ে দান-সদকা ও মুষ্টির চাল উঠিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন ।



এমনই এক হুজুর একবার এসে গাঁয়ে ঠাঁই নিলেন । মক্তব খুলে বসেছেন বাচ্চা বাচ্চা বিদ্যার্থী নিয়ে । এখানে একটু ঘাপলা আছে, ঐ যে শুরুতেই বলেছিলাম, এদেশে ইসলাম শিক্ষা প্রচারকের চিরন্তন অভাব, তা এই হুজুরও সেই গোত্রের পাণ্ডা । তাঁর আরবি বিদ্যের জোর ছিল

আলিফ (ا), বা (ب), তা (ت) এবং ছা (ث)

—কেবল এই চার হরফ পর্যন্তই !



একই আলিফ -বা, আর তা-ছা কয়দিন পড়ানো যায় ?

তাই হুজুর একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পড়াচ্ছিলেন । ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো হত বোল দিয়ে সুর করে করে । শেষে পড়ানোর বোলটা দাঁড়াল এরকম—



"আলিপ ছিনছিন,

বা ছিনছিন,

তা ছিনছিন,

ছা ছিনছিন" !



আমার পাঠকদের মধ্যে যাঁরা প্রবীণ আছেন, যাঁরা মক্তব সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত, তাঁরা স্মরণ করতে পারবেন, এসব মক্তব হত প্রধানতঃ রাস্তার পাশে পাশে । হুজুর ওদেরকে পড়তে দিয়ে বোধয় পাশেই কোথাও কোন ছোট্ট কাজে গিয়েছেন ।

তো আরেক হুজুর হেঁটে যাচ্ছিলেন ঐ মক্তবের পাশ দিয়ে । এই উদ্ভট ত্বরিকার পড়া শুনে তিনি থমকে দাঁড়ালেন । মক্তবে উঁকি দিয়ে ঢুকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এই তোরা কী পড়ছিস ?

বাচ্চারা সুর করে আবার পড়ে শোনাল ওই "আলিপ ছিনছিন" ত্বরিকা ।



হুজুর তখন অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এ পড়া তোরা কোথায় পেয়েছিস ?

ছাত্ররা বলল, কেন ? আমাদের হুজুর শিখিয়েছে ।



সমস্যাটা পথিক হুজুরের আর বুঝতে বাকি রইল না । তিনি তখন বললেন, শোন, এই পড়া তো তোরা অনেক পড়েছিস, এবার আমি একটা নতুন পড়া দেই, "আলিপ ছিনছিন" শেষ, এবার পড়— "এভাবে চলবে কতদিন ?"



বাচ্চারাও এবার সুর দিয়ে চিৎকার করে পড়া ধরল নতুন পাঠ—

"এভাবে চলবে কতদিন ?

এভাবে চলবে কতদিন ?"



মক্তবে নতুন পাঠ দিয়ে পথিক হুজুর তাঁর নিজের গন্তব্য ধরলেন । আর পুরনো হুজুর ফিরে এসে ছাত্রদের এই চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে "এভাবে চলবে কতদিন ?" জিজ্ঞাসা দেখে ভড়কে গেলেন ।



শ্লোগানরত ছাত্রদের তিনি থামিয়ে শেষমেশ আরেকটি নতুন পড়া দিয়ে লজ্জা থেকে বাঁচতে গ্রাম ছেড়ে সেই যে নিজের বাড়ির পথ ধরলেন আর ফেরেননি ।



তাঁর সে নতুন পড়ার বোল বা শ্লোগানটি ছিল—

"এভাবে চলে যতদিন !

এভাবে চলে যতদিন !"



পুনশ্চঃ— এটি সম্পূর্ণই একটি নীরস লেখা । #Zeonic প্যাঁচাল ।

যাঁরা ধৈর্য ধরে এখনও পড়ছেন তাঁদের ধন্যবাদ । গল্প শেষ । কিন্তু ম্যোরালটা শুনে যান, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি, প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের চোগলখোরী এবং দলগুলোর অন্ধ সমর্থকগোষ্ঠির গোয়ার্তুমি দেখে আমিও পথিক হুজুরটির মতো এখন হতাশ হয়ে জানতে চাই— এভাবে চলবে কতদিন ?



আপনারা প্লিজ, একটু সম্বিতে ফিরুন, ওই মূর্খ হুজুরের মতো আপনারাও আবার দয়া করে "এভাবে চলে যতদিন !" উত্তরটি দেবেন না যেন ।



আমি আশাবাদী । এখনও আমি আমার এই বাংলাদেশের সমৃদ্ধির স্বপ্ন দেখি ।

জয় বাংলা !

বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক !



Click This Link

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৭

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: মূল লেখাটি আছে এখানে Click This Link

২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৩

নুসরাতসুলতানা বলেছেন: আমি আশাবাদী । এখনও আমি আমার এই বাংলাদেশের সমৃদ্ধির স্বপ্ন দেখি ----- ভাল বলেছেন।

৩| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৯

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ।
আমি এখনও ব্লগের ফাংশান্স ভালো বুঝি না ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.