নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি পথ, আপনি চাইলে হেঁটে দেখতে পারেন....

জীয়ন আমাঞ্জা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !

জীয়ন আমাঞ্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্মৃতি সমাচার

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:১৫


মাদের মেমোরিগুলো কম্পিউটার ফোল্ডারের মতন! আপনি গরু চেনেন, অর্থাৎ গরু নামের একটা ফোল্ডার তৈরি হয়ে আছে আপনার মাথায়। এরপর গরু সংক্রান্ত যত তথ্য, যত কিছু আপনি জানবেন, শিখবেন, বুঝবেন সব ওই ফোল্ডারে যুক্ত হবে।

স্মৃতির বিষয়টাকে আমি এই ফোল্ডার হিসেবে দেখি। এতে একটা সুবিধা হয় আমার, আমি কী নিয়ে ভাববো তা খানিকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। আমি মনে করি, আমাদের স্মৃতিগুলোকে গুছিয়ে রাখা সম্ভব, এবং স্মৃতি আর কিছুই না, যা আমি মনে রাখতে চাইব সেটাই! একইভাবে কোন স্মৃতি চাইলেই মুছে ফেলা সম্ভব। হ্যাঁ, আপনি চাইলেই পারেন। কখনও এই স্মৃতি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটা নিয়ে ভেবেছেন কি?

আমদের জীবনে অনেক দুঃখের স্মৃতি বা ঘটনা থাকে, অনেক গ্লানির ব্যাপার থাকে যা পরবর্তীতে মনে পড়লে ময়ূরের পা দেখার মত কদর্য প্রতিক্রিয়া ঘটে।* আমার জীবনেও স্বাভাবিকভাবে এমন ঘটনা অনেক থাকার কথা, ছিলও হয়ত, কিন্তু আমার তার কিছুই মনে নেই। একটা ঘটনা মনে করতে পারি, টিউশন পাবার জন্য একজন টিচার আমাকে মিথ্যে বলতে শিখিয়ে দিয়েছিলেন গার্ডিয়ানের কাছে। উনি আমার সম্পর্কে গালগল্প করে রেখেছেন ওই পরিবারের কাছে যাতে আমি টিউশনটা পাই! এখন উনি তাঁদেরকে যেমন যেমন যোগ্যতা বলে রাজি করিয়েছেন, আমি তেমনটা না বললে উনাকেই ছোট করা হয়, উনি আমার উপকার করতে চাইলেন আর আমি সততার ঠেলায় উনাকে মিথ্যুক প্রমাণ করব অতখানি নীতি তখনও আমার ভেতর গজায়নি!

তো যাইহোক, গার্ডিয়ান নিজেই জিজ্ঞেস করলেন, তুমি অমুক কলেজে পড়?
বললাম, জী।
প্রশ্ন এল অমুককে চেন, তোমার বিভাগেই পড়ে!
তখন কেমনটা লাগে!
পরেরটুকু আর না বলি, খুব লজ্জা পেয়ে ফিরেছিলাম সেদিন!
ঘটনাটা আমি কখনও মনে করতে চাই না। এরকম লজ্জার স্মৃতি ভুলে যাওয়াই ভালো।

খেয়াল করে দেখুন, আমি কীভাবে ঘটনার বাকিটুকু মনে করা থেকে সরে গেলাম! আপনি ভুলতে চাইলে আপনার প্রাক্তনকে ভুলতে পারবেন না, যত ভুলে যেতে চাইবেন ততবেশিই মনে পড়বে, এজন্য এভাবে অপ্রিয় অসুখকর কোন চিন্তা মাথায় এলে স্কিপ করবেন, অন্য কোন সুন্দর চিন্তায় ডুবে যাবেন!
পারবেন না?

এবারে স্মৃতি মুছে ফেলার ব্যাপারটা বলি। বিষয়টা ব্যাখ্যা করতে হলে স্মৃতি রিনিউ করার ব্যাপার আগে উল্লেখ করা জরুরি। আমি আগে একবার বলেছিলাম, আমার জন্মের এক বছর পর আমার ছোট ভাইয়ের জন্ম হয়, এবং অবাক বিষয়, সেই দিনটার কথা আমার মনে আছে! যাকেই কথাটা বলতাম অবাক হত, এক বছর বয়সের স্মৃতি মনে রাখা কিভাবে সম্ভব!
আমিও ভেবে পেতাম না, কিভাবে সম্ভব!

তখন বিষয়টা মাথায় এল, আপনি গত মঙ্গলবার দুপুরে কী দিয়ে ভাত খেয়েছিলেন মনে করতে পারবেন?
পারবেন না। কারণ জিনিসটা আপনি মনে রাখার দরকার মনে করেননি। অথচ তিন বছর আগে আপনার কোন আত্মীয়ের বাড়িতে বা বিয়েতে কী খেয়েছিলেন তা ঠিকই মনে করতে পারছেন! আরো সহজ করে বললে ঘটনাটা ঘটার পর আপনি দ্বিতীয়বার সেটা কখনও স্মরণ করার চেষ্টা করেছিলেন কিনা তার ওপন নির্ভর করে স্মৃতিতে স্থায়ী হওয়া! আমরা যত যা প্রত্যক্ষ করি তার সবই আমাদের স্মৃতিতে আছে, আসলে আমরা কোনটাই ভুলি না। তবে সহজেই মনে করতে পারি সেগুলো- যা আমরা বারবার স্মৃতিতে আউড়াই বা যা আমাদের মনে কোন তীব্র আবেদনের কারণে দাগ কাটে। আমি ছেলেবেলায় ভাবুক ছিলাম, কল্পনাপ্রবণ ছিলাম, তাই হয়ত যা যা দেখেছি তা মনে মনে আউড়াতে গিয়ে কিছু স্মৃতি মনে স্থায়ী হয়ে গেছে!

এখানে আরেকটি ব্যাপার আমি খেয়াল করেছি, আমরা যখন কোন পুরনো ঘটনা স্মৃতিতে রোমন্থন করি, তখন স্মৃতিটার নতুন একটা ভার্শন মস্তিষ্কে আপডেটেড হয় এবং পুরনো স্মৃতিটা রিসাইকেল বিনে চলে যায়। পরে আবার যখন ঘটনাটা স্মরণ করতে যাবেন তখন ওই গতবারের আপডেটে যা যা মনে করেছিলেন, সেগুলোই মনে আসবে প্রথমে। ওই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত যেসব প্রসঙ্গ চাপা পড়ে গেছে তা যদি পরবর্তী কয়েকবার ঘটনাটা মনে করার সময় একইভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয় তাহলে সে প্রসঙ্গগুলো প্রায় পুরোপুরি তলিয়ে যায় স্মৃতি হতে (আগেই বলেছি, কিছুই হারায় না, চাপা পড়ে যায় বড়জোর)।

অনেক জগাখিচুড়ি টাইপ কথাবার্তা লিখলাম এতক্ষণ, উদ্দেশ্য এটাই ছিল, যাতে আমরা টেনশন রিগ্রেশন ডিপ্রেশন ইত্যাদি থেকে কিছুটা হলেও বেরিয়ে আসতে পারি! আমি অনেকগুলো প্রসঙ্গ লিখেছি একের পর এক আশা করি মূল ট্রিকটা আপনারা কাজে লাগাতে পারবেন। কোন আঘাত বা কোন কিছুতেই আত্মহত্যা করার চেয়ে মাথাটাকে অন্য কিছুতে খাটান, সমস্যার সাধান করতে না পারলে সমস্যাটাকে উপেক্ষা করুন, তবু ভালো থাকুন, নিজেকে ভালো রাখুন!

* ময়ূরের কদর্য পা- কেমন উপমা? কেমন বাগধারা?
আগে একটা কবিতায় কথাবটা ব্যবহার করেছিলাম। কেউ তখনও জিজ্ঞেস করেনি ঘটনা কী?
এই ঘটনা বলতে হলে আরেকটা পোস্ট লিখতে হবে!

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:২৬

শেরজা তপন বলেছেন: ভাল লেগেছে, তবে আপনিও জানেন কিছু কিছু বিষয় আপনিও নিশ্চিত নন।
আমি প্রায়শই দিনলিপি লিখি;
আমি ২০ বছরের পুরনো একটা ডায়েরির চমকপ্রদ কিছু ঘটনা কোন ভাবেই স্মরণ করতে পারছিলাম না। শুধু মনে হচ্ছিল এসব আমার জীবনে ঘটেনি।
আবার তার আগে পরের অনেক তুচ্ছ ঘটনা মনে আছে।
।এর ব্যাখ্যা কি দিবেন?

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:০৯

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: আমি আপনাকে এরচেয়েও মোক্ষম একটা উদাহরণ বলতে পারি, ধরুন, আপনি একটি নতুন গান শুনলেন, খুবই ভালো লাগল আপনার, আপনি গানটি মনে রাখতে চাইলেন এবং পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে আপনি গানটি শুনতে লাগলেন। রিপিট করে দশ বারো বার শুনে ফেললেন, এবং কিছুক্ষণ পরেই খেয়াল করলেন সুর বা কথা কিছুই ঠিকঠাক মনে করতে পারছেন না!
অদ্ভুত না?
কারণ এর বিভিন্ন হতে পারে, হুট করে বলা মুশকিল, তবে এটা নিশ্চিত বলা যায় যে এখন গানটি মনে করতে না পারলেও কয়েকদিন পর আপনি গানটি শোনামাত্রই সম্পূর্ণ সুর এবং কথা সাথে সাথে স্মরণ করতে পারবেন!

মানব মন অনেক জটিল বিষয়, আর আমরা এই জটিলতার যেখানেই আটকে যাই, সেখানেই বিজ্ঞের মত দোষ দিয়ে বসি অবচেতন মনের! যাইহোক, আপনি যে ঘটনা সম্পর্কে বললেন, ওই ঘটনায় হয়ত এমন কোন ব্যক্তি বা অবস্থান বা সময়ের সংযোগ ঘটেছে যার কারণে আপনার মন বিষয়টিকে মনে রাখতে চায়নি। আর হ্যাঁ, আমরা বিশ বছর ধরে যদি ডায়েরি লিখতে থাকি তবে পাঁচ বছরের মাথায়ই দেখা যাবে প্রতিদিনের ঘটনা লেখা থাকলেও আমরা সব হুবহু মনে করতে পারছি না! সবটা দরকার নেই বলেই মন মনে রাখে না। আপনিও দরকার মনে করেননি বলে রোজকারটা প্রতিদিন একবার কর মনে করার চেষ্টা করেনওনি। সিম্পল।

২| ৩১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:০০

রাজীব নুর বলেছেন: এজন্য আমাদের সব কিছু লিখে রাখা দরকার।

৩| ৩১ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:৩২

পদ্মপুকুর বলেছেন: বেশ মৌলিক চিন্তা মনে হলো। সুন্দর গুছিয়ে বলেছেন।

মানব মন বেশ জটিল বিষয়, হুমায়ুন আহমেদ আত্মজৈবনিক একটা লেখায় উনি লিখেছিলেন- হয়তো আপনার এমন কোনো স্মৃতি আছে, খুব স্পষ্ট অলঙ্ঘনীয় স্মৃতি। কিন্তু আদতে ওরকম কিছু হয়ই নি কখনও...... আমারও মনে হয়- এটা ঠিক।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫৯

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: অনুপ্রেরণা বোধ করছি। আমি সাধারণত নিজের চিন্তা থেকে লিখি, রেফারেন্সের সাহায্য নিই না! এই গোয়ার্তমির কারণে অনেক সময় ভুল ধারণাও লিখে পোস্ট করে ফেলি হয়ত। তবু অন্যের কাছ থেকে ধার করে লিখতে ইচ্ছে করে না। আমি মনে করি মাথা খাটাতে খাটাতেই অভিনব কিছু বের করে ফেলা সম্ভব। অন্যের বই বা রেফারেন্স থেকে সাহায্য নিতে গেলে উত্তর সহজেই মেলে বলে মাথা আর খাটানো হয় না!

৪| ৩১ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:৩২

পদ্মপুকুর বলেছেন: লেখায় প্লাস।

৫| ৩১ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৩৬

আমি সাজিদ বলেছেন: Eternal Sunshine of the Spotless Mind মুভিটা দেখেছেন? স্মৃতি মুছে ফেলা নিয়ে মজার একটা সিনেমা ।

চমৎকার ভাবনা ও লেখা।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫৫

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, মুভ্যিটি দেখিনি, সন্ধান দিয়ে উপকৃত করলেন ❤️

৬| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২২

আখেনাটেন বলেছেন: সহজ সাধারণভাবেই অসাধারণ লিখেছেন। শেখার আছে অনেক। খামাখা পাণ্ডিত্য ফলাতে যান নি দেখে ভালো লাগল। এর আগেও আপনার কিছু লেখা মনে হয় পড়েছিলাম। বেশ ভালো লিখেন আপনি কিন্তু ভীষণ অনিয়মিত লেখেন। :D


আর স্মৃতি নিয়ে যা লিখেছেন তা ঠিকই......আমরা চাইলেই কোন কিছুকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে জমা করতে পারি, আবার তা মুছেও ফেলতে পারি.......গরু ফোল্ডার উদাহরণটা মারভেলাস...... :)






১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩৪

জীয়ন আমাঞ্জা বলেছেন: নিয়মিত লিখছি না এটা সত্যি, ভাই!
একটু এলোমেলো সময় পার করছি, উঠে দাঁড়াব শীঘ্রই!
ধন্যবাদ, অনুপ্রেরণার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.