নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটি পথ, আপনি চাইলে হেঁটে দেখতে পারেন....

জীয়ন আমাঞ্জা

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দর্শন হল হিসাব বিজ্ঞানের ডেবিট এবং ক্রেডিট । সবসময় যতখানি ডেবিট, ঠিক ততখানিই ক্রেডিট হয় । পরকালের হিসেব যা-ই হোক, এই ইহকালে আমরা ঠিক যেভাবে শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি, সেভাবে শূন্য হাতেই পৃথিবী ছেড়ে যাব । এটাই পৃথিবীর আবর্তনিক নিয়ম । অনেকে আমরা এটা বুঝতে ব্যর্থ হই ।আপনি কারো ক্ষতি করবেন তো আজ অথবা কাল আপনার ক্ষতি হবেই হবে । ভালো করলেও তার ফল আপনি জীবদ্দশাতেই পাবেন ।অনেকে দেখবেন রাস্তাঘাটে অযথা হোঁচট খায়, অসুখে ভোগে- এসব এমনি এমনি নয়, হয় এর অতীত, নয়তো ভবিষ্যৎ প্রসারী কোন কারণ আছে । যদি আপনি কারো ক্ষতি না করেন, তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনার কোন ক্ষতি হবে না । কেউ চেষ্টা করলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না ।শুদ্ধ থাকুন, শুদ্ধতার শুভ্রতাকে উপভোগ করুন । জীবন সুন্দর হবে ।আমি সবার মতের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল।আশা করি আপনিও তাই।সৌজন্যবোধ ও মানবতার জয় হোক !

জীয়ন আমাঞ্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘর

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৩

পনার ক্লাসমেট আর আপনি একই অবস্থানে নেই কেন? ক্লাসে একটি ট্রিকি কোশ্চেন করা হলে আপনার ক্লাসমেট তড়িৎগতিতে উত্তর ধরে ফেলছে, কিন্তু আপনি সেভাবে পারছেন না, কেন?

আপনার কলিগ ৩৭টা প্রোডাক্টের দাম ইনস্ট্যান্ট মনে মনে গুণ করে বলে ফেলছে, আপনি ইনস্ট্যান্ট পারছেন না, কারণ কী?

দুটোরই কারণ আপনার মানসিক পরিস্থিতি। এই মানসিক পরিস্থিতির অনেকটাই আসে আমাদের পরিবার থেকে। পারিবারিক পরিবেশের ওপর নির্ভর করেই আপনার মানসিক গড়ন তৈরি হয়। আপনি অল্পতেই রিয়্যাক্ট করবেন, না কৌশলে উত্তর দেবেন তা আপনি পেয়েছেন আপনার পরিবারের আচার থেকে। এরপর যেটা পারেন, তা হল আত্মনিয়ন্ত্রণ! এ প্রসঙ্গে বলব আরেকদিন। আজ পারিবারিক পরিবেশ নিয়েই বলব শুধু। একটি পরিবারের কালচার কেমন তা দ্রুতই বোঝা যায় পরিবারের সদস্যদের একে অপরের প্রতি উত্তরের টোন দেখে। আপনার শৈশব গেল, সেখানে আপনি যা পেয়ে এসেছেন, তার সবটার ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেই, আপনি এখন প্রাপ্তবয়স্ক, আপনার এখন যে ঘর তার ওপর কি আপনার সবটুকু নিয়ন্ত্রণ আছে? তাও নেই।

একসময় বলা হত, সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে, বলা হত, প্রতিটি সফল পুরুষের পেছনে একজন নারীর অবদান রয়েছে। এখন অবশ্য বলতে হয় প্রতিটি সফল মানুষের পেছনেই তার পার্টনারের অবদান রয়েছে। শুধু নারীর অবদান বললে আবার তা কেবল পুরুষতান্ত্রিকতার কথা বোঝায়। অতএব, পার্টনারের কথাই বলি। আপনার অফিসে প্রেজেন্টেশন, আপনি ঘর থেকে বের হবার সময় পর্যন্ত যদি ঝগড়া করতে করতে বের হন, তাহলে অফিসে গিয়ে যে আপনি কী প্রেজেন্টেশন দেবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না! অর্থাৎ আপনার প্রাতিষ্ঠানিক বা ক্যারিয়ারের সাফল্যের অত্যন্ত বড় একটা নিয়ামক হল আপনার পারিবারিক সাপোর্ট। এখানে যদি আপনি দুস্থ হন, তাহলে আপনি ক্যারিয়ারে বেশি দূর আগাতে পারবেন না। যত মানুষ দেখবেন আপনারই যোগ্যতার অথচ আপনার চেয়ে উন্নতি করে যাচ্ছে তাদের সবার উন্নতির পেছনে কারণ তাদের পারিবারিক সাপোর্ট। আপনি খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। আপনি আপনার পার্টনারকে উন্নতি করতে কতটা সাপোর্ট দিচ্ছেন, ভেবে দেখবেন।

ঘর অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়! মানুষ ঘরে ফেরে শান্তির আশায়, আরামের জন্য, বিশ্রামের জন্য। সেই আরাম বিশ্রাম যদি নরকে পরিণত হয়, তাহলে ওই মানুষটা আর উন্নতি করতে পারে না। মানুষ অফিসে ক্লান্ত হয় না, কাজে ক্লান্ত হয় না সবচেয়ে বড় ক্লান্ত'টা হয় মানুষ তার নিজের ঘরে!

চট্টগ্রাম ২ নং গেইট এলাকার পার্কটিতে আমি অনেক মানুষ দেখতে পাই যাদের অফিস ছুটি হয়েছে পাঁচটায়, তারা রাত দশটা পর্যন্ত ওখানে বসে আড্ডা দিচ্ছে, কাঁধে অফিসের ভারী ব্যাগ নিয়ে! ঘরে ফেরার চেয়ে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বাইরে চার পাঁচ ঘণ্টা কষ্ট করে দাঁড়িয়ে থাকাকে মানুষ কোন দুরবস্থায় গেলে যে বেটার মনে করে তা বলাই বাহুল্য!

মানুষ ঘর বাঁধে সংসার করে বছরের পর বছর সহাবস্থান করে কীসের ভিত্তিতে?
স্বামী স্ত্রী দিয়েই তো সংসারের ভিত্তি, এই স্বামী স্ত্রীর সহাবস্থানেরই বা মূলে কী? প্রেম? যৌনতা? মায়া?
হ্যাঁ, এসব জরুরি। এসবের চেয়েও জরুরি বিষয় হল কথা বলার শান্তি! যেটা আসে আন্ডারস্ট্যান্ডিং থেকে! আমরা যখন যা বলি তার কজ এ্যান্ড ইফেক্ট সম্পর্কে আমরা যদি সচেতন হয়ে কথা বলি তাহলে আর অশান্তি থাকে না। আমাদের পরিচয় তৈরি হয় কথার পিঠে কথা দিয়ে, পরিচয় নষ্টও হয় কথার পিঠে কথার কারণেই! একটি ভালো কথার উত্তরে আরেকটি ভালো কথা আসে, একটি বাঁকা কথার উত্তরে একটা ভালো কথাও তার আন্তরিকতা হারিয়ে ফেলে বাকিটা বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে। এর খুব সহজ একটন উদাহরণ হল, আপনি যদি একই ছাদের নিচে বসে অনেক মনোমালিন্য অশান্তির পর আপনার পার্টনারকে প্রশ্ন করেন, এখনও ভালোবাসো আমায়?
একটু সময় নিয়ে হলেও নিজেকে প্রবোধ দিয়ে হলেও উত্তরটা আসবে, বাসি।
আবার একই অবস্থায় আপনার প্রশ্নটা যদি এমন হত, আর কি আমাকে ভালোবাসো না?
তাহলে উত্তর আসবে কি তা নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখে না।
অর্থাৎ আপনিই নির্ধারণ করে দিচ্ছেন আপনার কথার স্রোত এরপর কোনদিকে নেবেন!

একসাথে থাকার, একসাথে বাঁচার সবচেয়ে বড় আনন্দ হল এই কথা বলার আনন্দ, ভালো খাওয়া, ভালো ঘোরা, ভালো রোমান্স, কোন কিছুই এতটা জরুরি না যতটা আপনি উঠতে বসতে কথা বলার বেলায় বোধ করবেন। যেখানে কথা বলেই সুখ নাই, সেখানে রুহের শান্তি হয় না। তখনই মানুষ সুখ খুঁজতে এদিক ওদিক তাকায়। এটাই যে পরকীয়ার একমাত্র কারণ তা বলছি না, তবে এটা অনেক বড় একটা কারণ তাতে সন্দেহ নেই। আপনি আপনার মানুষকে অইটুকু কম্ফোর্ট দিতে না পারলে সে ব্যর্থতা আপনারও আছে! আর বিষয়টা কেবল এখানেই শেষ হয় না, একটা মানুষ ঘর থেকে ভেঙে গেলেই প্রকৃত অর্থে ভেঙে যায়। এরপর তার আর উন্নতি হয় না। সক্রেটিসের নিজেরও উন্নতি হয় নাই। যাহোক আপনার পার্টনার ভালো থাকলে আপনার সংসারেরই উন্নতি হবে, এটুকু বুঝে আপনার পার্টনারের প্রতি সাপোর্টিভ হোন, ইন্সপায়ানিং হোন, উঠতে বসতে ঘ্যানঘ্যান করে শুধু পরিবেশটাই নরক হয়, তর্কে দূরত্ব বাড়ে, আর কিছু লাভ হয় না।

ছুটির পর পার্কে দাঁড়িয়ে থাকা সকল নারী পুরুষ আশা নিয়ে ঘরে ফিরে যাক, এই কামনাই রইল।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:২৪

মিরোরডডল বলেছেন:




শুধু পার্টনার না, একজন মানুষের মানসিক শান্তি এবং ক্যারিয়ারে সাফল্য, অথবা অন্য কোন প্যাশন অনেকটাই নির্ভর করে পরিবারের সাপোর্টের ওপর। সেটা হতে পারে হাজব্যান্ড বা ওয়াইফ, হতে পারে বাবা মা ভাই বোন। পরিবার থেকে সাপোর্ট বা উৎসাহ দিলে যে কোন কাজ অনেক সহজ হয়ে উঠে। ফ্যামিলি মেম্বারদের মাঝে ভালো বোঝাপড়া না থাকলে, টক্সিক সম্পর্ক হলে মানসিক শান্তিটা থাকে না। আর মানসিক শান্তি না থাকলে কোন কাজে মোটিভেশন কাজ করেনা।

২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:২৯

সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ বলেছেন: সামান্য একটু সাপোর্ট যে মানুষকে কোথায় থেকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, যে পাইনি সেই উপলব্ধি করতে পারে। রুয়েটের একটা ফ্রেন্ড অনেক চেষ্টা করে ও দুই বছর ধরে ও জি আরই এক্সামটা দিতে পারে নাই। বিয়ের পর সব মিলিয়ে বোধহয় ১৩ মাস লাগছে, দুইজন একসাথে ফুল ফান্ড নিয়ে আমেরিকা ফ্লাই করছে। ছেলেটা যদি সাপোর্টিভ না হত ও হয়তো ওখানেই আটকে থাকতো।

৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৫৭

এইচ এন নার্গিস বলেছেন: ভালো আলোচনা ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.