![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চেহারাহীন মানুষ আমি। আর যেটা ছবির আদলে দেখছেন সেটা আমার মুখ। খুব সম্ভবত জন্মেছিলাম মায়ের বাড়িতে। প্রিয় অনুষঙ্গ মা, মাটি ও মানুষ। মা আমাকে অন্ধকার রাজ্যে পাহারা দিয়েছেন দশ মাস। আমার জীবনের প্রথম পাণ্ডুলিপিকার তিনি। খুব ভালোবাসি বাবাকে। তিনি আমার বিরহের পাটিগণিত। আমার ভালো লাগে কষ্টের নোনা চোখ, গুমোট আকাশ, মুখ মুছে রেখে যাওয়া গামছা, বই ও মানুষের ঘ্রাণ। আর এখনো একা স্বপ্ন দেখছি। আমার প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'পৃথিবীর কোথাও রাস্তা দেখি না'।
মেয়েটির ভীষণ কুয়াশা কুড়াতে ইচ্ছে করত। যতবার বলতাম, মেঘ হয়েও যাও। সে হাসত। বলত, 'না, এ আমি পারব না বাপু।' আমি বলতাম, 'কেনো, কেনো পারবে না তুমি?' সে বলত, 'দেখো, মেঘ হলে নির্ঘাত বৃষ্টি হয়ে ঝরতে হবে।' আমি বলতাম, 'তাহলেও তো ভালো, আমি সেই বৃষ্টিতে ভিজে শুদ্ধ হতে পারব।' সে রাগ করত। আমিও আদতে চাইতাম না সে একদিন বৃষ্টি হয়ে ঝরে যাক। বরং চাইতাম সে একটা গোলাপ হোক, বকুলের মতো সুবাস থাকুক তার। নিজের বলতে একটা গন্ধ থাকুক। পায়ের শব্দের মতোন নিজস্ব একটা গন্ধ। এমন গন্ধ যে গন্ধটার নাগাল পেলে--হাঁটলে, ঘরে ফিরলে কিংবা কোথাও গেলে আমি যাতে পাগল হয়ে উঠতে পারি।
বলতাম, 'বুঝলে, নারীর চোখে ছেলেদের পাগল হওয়ার মধ্যে একটা বিষয় আছে।' সে বলত, 'সেটা আবার কী?' আমি বলতাম, 'বুঝলে না; পাগল হওয়া মানেই তো নারীর ভেতর একটা আসন পাওয়া।' সে বলত, 'পাগল, তুমি আসলেই পাগল।' হ্যাঁ, আমি সেই থেকে পাগল হয়ে আছি। তার দুইটা চুল নিয়ে তাবিজ বানিয়ে গলায় ঝুলিয়ে রেখেছি। অনেকেই বলে, 'এটা কীসের তাবিজ?' আমি বলি, 'এটা কুয়াশার তাবিজ। যদি কেউ এটা পরে তবে তার বুকটা কুয়াশায় সিক্ত থাকে।'
হ্যাঁ, ভীষণ সিক্ত আছি আমি। প্রতিদিন কুয়াশায় আমার বুক ভিজে যায়। আমার তার কথা মনে পড়ে। তার জন্য বুকের কোথায় যেনো একটা কষ্টের সুর বাজে। তাকে ভীষণ মনে পড়লে আমি বাতিটা নিভিয়ে দিই। তারপর অন্ধকারের ভেতর চুপচাপ বসে থাকি। আমার বুক তখন আরও ভিজে যায়। আমি কুয়াশায় সিক্ত হতে হতে বলি, 'মেয়েটির ভীষণ কুয়াশা কুড়াতে ইচ্ছে করত।'
©somewhere in net ltd.