নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেঘলা আকাশ, ঝড়ো বাতাস বইছে। লৌহযবনিকার ভেতর কিসের যেন ভয়ভয় রহস্য, চাপা উত্তেজনা। সবাই নেমে আসছে, সবার পিছে আসছে অস্থির প্রকৃতির দুর্দান্ত সাহসী এক যুবক। চেহারা বা পোশাকে-আশাকে তেমন কোন পরিচয় নেই, যেন অতি সাধারণ এক যুবক।

নির্জন সৈকত

গল্প লিখতে খুব ভালো লাগে আমার।

নির্জন সৈকত › বিস্তারিত পোস্টঃ

হঠাৎ বৃষ্টি

১৪ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:০২

বাসে বসে আছে নাদিম । মেজাজ গরম । সকালে তাড়াতাড়ি উঠে এত দূরে পড়তে আসতে হয়েছে । সকালে আবার তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে করে না নাদিমের । তার উপর আজকে স্যারের কাছ থেকে গালি শুনেছে । সব মিলিয়ে মেজাজ চরমে ।



বাসের কন্টাক্টরের সাথে এক পাল্টা ঝগড়া হয়ে গেছে কিছুক্ষণ আগে । বেশি শয়তান ওরা । পাঁচ টাকার ভাড়া, নেয় সাত টাকা । বাসের সবাই ওর দিকে কানাচোখে তাকাচ্ছে । তাতে কোন মাথাব্যাথা নেই নাদিমের । ছোটবেলা থেকেই ও একটু ওরকম । রাগলে কেউ ওর সাথে কথা বলতে পারেনা ।



অবশেষে বাস গন্তব্যস্থলে এসে পৌছালো । নাদিম নামতে যাবে হঠাৎ একটা মেয়েকেও নামার জন্য উঠতে দেখল । মেয়েটিকে দেখে খুব ভাল লাগল । জীবনে এই প্রথম একটা মেয়েকে দেখে ভাল লাগল নাদিমের । এগুলো চিন্তা করতে করতে বাস থেকে নেমে গেল । মেয়েটি তার পিছে নামছে ।



হঠাৎ বাসটি স্টার্ট দিল । মেয়েটি খুব ভয় পেয়ে গেল । নাদিম তাড়াতাড়ি গিয়ে ওর হাত ধরল । চলন্ত বাস থেকে নামতে গিয়ে মেয়েটি তার গায়ে এসে পড়ল । পড়তে পড়তেও নিজেকে সামলে নিল নাদিম । মেয়েটি খুব লজ্জা পেয়ে গেল । সাথে নাদিমও ।



রাস্তার সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে ছিল । মেয়েটি ওকে ছোট্ট করে ধন্যবাদ দিয়ে মাথা নিচু করে যেতে লাগল । নাদিম কিছু বলতে পারল না । সে খুব অবাক হয়ে গেল । আজ সে প্রথম একটা মেয়ের হাত ধরেছে । তারপর এই ঘটনা । স্তম্ভিত ফিরে পেয়ে সেও হাঁটতে লাগল ।



বাসায় যাবার জন্য একটা রিকশা ঠিক করে দোকান থেকে কিছু জিনিস কিনতে লাগল নাদিম । কিনে রিকশায় ওঠার সময় দেখল ওরসাথে আরেকজন রিকশায় উঠছে । সেই মেয়েটা। নাদিম অবাক হয়ে নেমে গেল । মেয়েটিও নেমে গেল । রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলে সে নিজেই অবাক হয়ে যায় । সে মনে করেছে, নাদিম রিকশায় উঠবে না ।



এটা শুনে নাদিম মেয়েটিকে রিকশায় চলে যেতে বলে । ওখানে আর কোন রিকশা না থাকায় সে হাঁটা শুরু করে । হঠাৎ মেয়েটি ওকে তার সাথে রিকশায় উঠতে বলে । নাদিম প্রথমে রাজি হয়নি । কিন্তু মেয়েটির জোরাজুরিতে উঠতেই হল নাদিমকে।



যেতে যেতে পরিচয় হল ওদের । মেয়েটির নাম নয়না । নাদিমের চেয়ে এক বছরের জুনিয়র । ওদের এখানেই থাকে । নতুন এসেছে । এরপর থেকে প্রতিদিন ওদের কথা হতো । দুজন দুজনকে খুব ভালবাসে মনে মনে । কিন্তু এখনো কাউকে বলা হয়নি কারোরই । দুজনই অপেক্ষায় আছে কে কাকে আগে বলবে । কেউ কাউকে না দেখে থাকতে পারতো না । আজকে নাদিম হলে কাল নয়না । দুজনেই দুজনকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে একটা সুন্দর ভবিষ্যতের ।



৭-৮ বছর পরের কথা । অফিসে যাওয়ার জন্য রেডী হচ্ছে নাদিম । রান্নাঘরে ওর জন্য নাস্তা বানাচ্ছে তার স্ত্রী । নয়না । সেদিন শেষপর্যন্ত নাদিমই নয়নাকে প্রপোজ করে বসে । আর নয়না?? নয়নার তো এখানে কোন আপত্তি ছিল না । যা হবার তাই হল । শুরু হল ভালবাসা । তারপর প্রেম । সেই প্রেম থেকে বিয়ে । দুজনের পরিবারই ওদের সম্পর্ক মেনে নেয় । না নেয়ারও কিছু ছিলনা । কারণ কেউ কাউকে ফেলার মত না । যাই হোক এরপর নয়না এসে ওকে নাস্তা দিয়ে যায় । নাদিমের টাঁইটা ঠিক করে দেয় ।



গাড়ি থাকা সত্ত্বেও গাড়িতে যেতে পছন্দ করে না নাদিম । সে বাসেই যায় । কারণ বাসেই নয়নার সাথে তার দেখা । কিন্তু নয়নার কড়া নির্দেশ দেয় আজ বাসে যাওয়া যাবে না । তাই বাধ্য হয়েই আজ গাড়িতে যেতে হচ্ছে । নয়নার কথা না শুনলে তার কপালে দুঃখ আছে ।



গাড়িতে যেতে যেতে নয়নার কথাই চিন্তা করছে আর হাসছে নাদিম । আজ সে অনেক সুখী । হঠাৎ বৃষ্টির মত নয়নার দেখা নাদিমের জীবনটাকে পুরো পাল্টে দিয়েছে। তাদের জীবন আজ সত্যিই অনেক ভালভাবে চলছে ......♥

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:১৩

মাক্স বলেছেন: এত দ্রুতগতিতে আগাইয়া গেল?

২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৩৪

নির্জন সৈকত বলেছেন: বুঝিনাই...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.