নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

to do something which is always good

আমরা সেরা

আমরা সেরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বায়োনিক পা- প্রযুক্তির এক অবাক বিস্ময় !!!!!!

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৪২

বিশ্বব্যাপী লাখো মানুষ বিভিন্ন ধরনের পক্ষাঘাতে আক্রান্ত। আমরা জানি
প্যারাপ্লেজিয়া রোগীর নিম্নাঙ্গ অসাড়-অবশ থাকে। ফলে তারা হাঁটতে পারেন না।
অবশ্য এমন রোগীদের অনেকেই কোনোমতে পারেন না, পা বাড়িয়ে হাঁটা তো দূরের কথা ।
তাদের জন্যই বিজ্ঞানের নতুন চমক বায়োনিক পা, যার সাহায্যে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত
ব্যক্তিরা শরীরের ভারসাম্য ঠিক রেখে হাঁটতে পারবেন। গবেষকরা এটিকে বায়োনিক
এক্সোস্কেলেটন বলছেন। এটি একটি কৃত্রিম রোবট পা। এতে ব্যবহার করা হয়েছে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, যার মাধ্যমে এ পা পরিধানকারীর বাহুর ইশারা পাঠ করা যায়
কয়েকটি ক্র্যাচের মাধ্যমে। ফলে এর মাধ্যমে মানুষের হাঁটার শক্তিকে পুনরায়
উজ্জীবিত করা যায়।
প্রচলিত কৃত্রিম পায়ে টেনে টেনে চলতে হয়। নতুন বায়োনিক পায়ে সেই সমস্যা নেই।
কম্পিউটার, সেন্সর, ইলেকট্রিক মোটর ও ব্যাটারি প্রযুক্তির সর্বশেষ অগ্রগতিকে
কাজে লাগিয়ে নতুন পায়ে এই বায়োনিক ক্ষমতা এনে দেয়া হয়েছে।
এ হলো প্রথম রোবটিক পা, যার শক্তিচালিত হাঁটু ও গোঁড়ালির গাঁট একই ছন্দে চলে।
এই বায়োনিক এক্সোস্কেলেটনটি মূলত



হাঁটাচলার ক্ষেত্রে প্রচলিত কৃত্রিম পা ও বায়োনিক পায়ের মধ্যে আকাশ-পাতাল
পার্থক্য। যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যানভারবিল্ট সেন্টার ফর ইন্টালিজেন্ট এর
যন্ত্রকৌশলের অধ্যাপক মাইকেল গোল্ডফার্মের নির্দেশনায় ৭ বছর ধরে গবেষণার
পরিণতিতে এই বায়োনিক পা উদ্ভাবিত হয়েছে। গোল্ডফার্ম বলেন, "সর্বশেষ মডেলটির
মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের এই অনুমানের সত্যতা প্রমাণ করতে পেরেছি যে, শক্তিচালিত
হাঁটু ও গোঁড়ালির গাঁটসহ কৃত্রিম পা তৈরি করার সঠিক প্রযুক্তি আমাদের হাতে
আছে। মানুষ ও মেশিনকে সমন্বিত করার কাজে আমরা যে অগ্রগতি অর্জন করেছি এই
যন্ত্রটিই তার প্রমাণ মাত্র ।"
হাঁটতে অসমর্থ লোকদের সহায়তার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সো বায়োনিক কোম্পানি
সম্প্রতি পরিধানযোগ্য এই রোবটটি তৈরি করে। এক্সো স্কেলেটন রোবটটি চিকিৎসার
কাজে ২০১২ সালে প্রথম ব্যবহৃত হয়; উত্তর আমেরিকায়। এর দাম প্রায় ১০০,০০০
ডলার যা ব্যাপটিস্ট হেলথ ফাউন্ডেশন থেকে অনুদান নিয়ে কেনা হয়েছিল।প্রযুক্তির
সাম্প্রতিক অগ্রগতির বদৌলতে প্রকৌশলীরা যে বায়োনিক পা উদ্ভাবন করেছেন তার
ওজন প্রায় ৯ পাউন্ড অর্থাৎ অধিকাংশ মানুষের পায়ের নিম্নাংশের ওজনের তুলনায়
কম।এর ব্যাটারী একবার চার্জ দিয়ে তিন দিন স্বাভাবিক হাঁটাচলার কাজ করা যায়
কিংবা একটানা ১৩ থেকে ১৪ কিলোমিটার হাঁটা যায়।
এক্সো বায়োনিক্স-এর নির্মাতাদের মতে যাদের দেহের নিম্নাঙ্গে দুর্বলতা
আছে,দাঁড়াতে ও হাঁটতে সমস্যা হয় এবং যাদের মেরুদন্ডে গুরুতর আঘাত রয়েছে তাদের
জন্য এটি অত্যন্ত সহায়ক হবে , তাছাড়া অন্যান্য রোগী যারা বিশেষত মস্তিষ্কের
আঘাত, একাধিক স্ক্লেরোসিস এবং সেরিব্রাল পালসি রোগে ভুগছেন তাদের জন্য ও এটি
অত্যন্ত উপকারী।



শারীরিক থেরাপিস্ট এবংনিউরোলজিক ক্লিনিকাল বিশেষজ্ঞ চারা রদ্রিগ্স এই
এক্সোস্কেলেটন কে পুনর্বাসন বিশ্বের মাসেরাতি বলে আখ্যায়িত করেছেন ।রড্রিগ্স
এর মতে " এই মেশিন শারীরিক দিক দিয়ে অক্ষমদের প্রধান প্রধান কিছু সুবিধা দিবে।
এর মাধ্যমে তারা খুব সহজে শরীরের ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে পারবেন। তিনি আরো
বলেন
. "মেশিনটি রোগীকে সঠিকভাবে চলাফেরার কিছু নির্দেশনা ও প্রদান করে ,যেমন
হাঁটার সময় কতটুক হাঁটু সরাতে হয়, কোমর কতটুক সরাতে হয়, দাঁড়ানোর ভঙ্গি কেমন
হবে ইত্যাদি।"
তবে এক্সো থেরাপির আগে রোগীদের অবশ্যই একজন ডাক্তার এর পরামর্শ ও সংশ্লিষ্ট
কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন। ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেম রোগীদের
সামর্থ্যের উপর ভিত্তি করে ঠিক করা হয়।

এই ডিভাইসের উপর প্রশিক্ষণ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একজন
শারীরিক থেরাপিস্ট জুইলেট্টা ডগলাস বলেন. ""যদি কারোর পেশীতে সামান্য পরিমান
শক্তিও থাকে তাহলে আমরা মেশিনটাকে এমন ভাবে সংযুক্ত করে দিব যাতে রোগীর পা
ফেলতে কোন সমস্যা না হয়।
আর যদি তা না হয় তাহলে মেশিনটি এমনভাবে সংযুক্ত করা হবে যাতে রোগী কোন
অসুবিধা ছাড়াই অত্যন্ত সাবলীলভাবে নিজের পায়ের উপর ভর করে দাঁড়াতে পারে ও
চলাফেরা করতে পারে। কিছু কিছু লোক আছে যারা কখন চিন্তা ও করতে পারেনি যে তারা
পুনরায় হাঁটতে পারবে, দৌড়াতে পারবে। কিন্তু প্রযুক্তির সুবাদে আজ সম্ভব ।
বিস্ময়কর এই প্রযুক্তি এখন আমাদের সমাজের চলাচলে অক্ষম ব্যাক্তিদের জন্য এক
স্বপ্নের দুয়ার উন্মোচন করবে। আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে ও একদিন এর প্রয়োগ ও
ব্যবহার সম্ভব হবে তারই অপেক্ষায় ......

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.