নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবনের খেলাঘরে পাশাঘর পাশে রেখে। ভাঙ্গা টেবিলে বসেছি খাতা কলম নিয়েকিছু লিখব বলে।গল্প বা কবিতার ছলে।

আবদুল্লাহ আফফান

খুব সাধারণ একজন, ভালবাসি ঘুরতে আর পড়তে। মানুষ হতে চাই।

আবদুল্লাহ আফফান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট গল্প: ফিলিস্তিনের রাত

১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:১৩



রাত মানেই আধার, আধারে ক্ষীন আলো জ্বালিয়ে রাখে চাদঁ, তারারা। কিন্তু ফিলিস্তিনে রাতের আধারেও মাঝে মাঝে ফ্লাশ লাইট জ্বলে উঠে, দিনের মতো আলোকিত হয়ে ওঠে চারপাশ। চোখ ধাঁদিয়ে দেয় লাইটের আলো। আধারে আলোর পরশ কে’না চায়। কিন্তু ফিলিস্তিনের অধিবাসীরা আতংকিত হয় এ লাইটের আলোতে। এ লাইটের আলোতে তারা দেখে মৃত্যু, দেখে ধ্বংস, দেখে বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা। ট্যাংক, সাজোয়া যান, ইসরায়েলি বাহিনী দেখে। সকাল পর্যন্ত চলতে থাকে তাদের ধ্বংসলীলা। কখনো সকালেও শেষ হয় না। বরং নতুন মাত্রায় শুরু হয় ধ্বংসযজ্ঞ। মৃত্যু হয় নারী-পুরুষের, মৃত্যু হয় শিশুর, মৃত্যু হয় খোঁড়ার, মানবতার আর বিবেকের। ঘটনা পুনরাবৃত্তি হয়। একবার, দুইবার, বারবার।

ফিলিস্তিন এমনই একটি জনপদ। যেখানে জীবনের নিরাপত্তা নেই, নেই ইজ্জত-সম্ভ্রমের। শিশুদেরও লুকিয়ে রাখতে হয়, এখানে বাঁচার স্বাধীনতা নেই, নেই কথা বলার স্বাধীনতা।

* * * *

আয়েশার নয়নমনি আহমদ। তার সবকিছু আহমদকে ঘিরে। সবসময় আহমদকে চোখে চোখে রাখতে হয়, দুরন্ত আহমদ কখন কোথায় যায় তার ঠিক নেই। আহমদের ঘুম ভেঙ্গে গেছে। সবার চোখ মুখে উৎকণ্ঠা,ভয়। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে বাইয়ে বেড়িয়ে গেছে। বাইরে এসে দেখে চোখ ধাঁদানো তীব্র আলো। ইয়া বড় বড় গাড়ি দেখে সে অবাক। গাড়ির পাশে কয়েকজন হেটে যাচ্ছে। তাদের গায়ের পোশাকগুলোও যেন কেমন, হাতে বড় বড় বন্দুক। এগুলো আব্দুল্লাহর খেলনার চেয়েও বড়।

তার কাছেও গাড়ি, বন্দুক আছে। ওগুলো ছোট। বড় খেলনা দেখে তার চোখে মুখে বিস্ময়। এতো বড় খেলনাও আছে! আহমদ গলি থেকে বের হয়ে দৌড়ে একজন সৈনের হাত ধরে বলল, এটা আমাকে দিন,আমি খেলব।

লোকটা হাতে থাকা শর্টগানের অংশের সাথে ধাক্কায় সে পড়ে গেল। মাথায় ব্যাথা পেয়ে চোখে অন্ধকার দেখছে। তার মায়ের কথা মনে পড়ছে। আব্দুল্লাহর কথা মনে পড়ছে। সেই কবে আম্মু ছোট্ট খেলনা কিনে দিয়েছে, কত্তবার বলেছে বড় খেলনা কিনে দেবার জন্য। কিনে দেয় নি। আব্দুল্লাহর বড় বড় খেলনা। তাকে সেগুলো ধরতে দিতো না। এতে তার রাগ হতো। এসব কথা এক এক মনে মনে পড়ে যাচ্ছে।

ছোট্ট মনের তর সয় না, খালি বড় খেলনা পেতে চায়। খেলনাই তো সে চেয়ে ছিল। ইসরায়েলি জাওয়ান ছোট্ট শিশুকেও ছেড়ে দেয় নি, শর্টগানের বুলেট তার ছোট্ট বুকে বিধিঁয়ে দিল। ফিলিস্তিনের বালু আরেক শিশুর রক্ত শুষে নিল।

* * * *
আয়েশা নিচের ঘরে লুকিয়ে আছে। চিন্তায় অস্থির সে, আহমদ তাদের সাথে নেই। কখন বাইরে বেরিয়ে গেছে তা কারো চোখে পড়ে নি। আয়েশা তখনই খুজবে বের হচ্ছিল। সবাই বাধা দিয়ে বলল, হয়তো আব্দুল্লাহর বাসায় গেছে। সারাদিনই তো আব্দুল্লাহর সাথে থাকে। ওরা চলে গেলে নিয়ে এসো, এখন বের হলে বিপদ হতে পারে।

তার মন মানছিল না। বিপদের আশঙ্কা মনে হানা দিচ্ছে। বারবার নিজেকে বুঝানোর চেষ্টা করেছে আহমদ নিরাপদ আছে। কিন্তু মায়ের অশান্ত মন শান্ত হয় না। অবশেষে ইসরায়েলি জাওয়ানরা ধ্বংসলীলা চালিয়ে চলে যায়।

আব্দুল্লাহর ঘরে যাওয়ার জন্য আয়েশা দৌড়ে বের হয় তার পিছনে অন্যরা কিন্তু তাদের গলির মুখে রক্তাক্ত অবস্থায় পরে থাকতে দেখে আহমদকে। আয়েশা দৌড়ে তুলে নেয় আহমদের নিথর দেহ। অবলার মত জড়িয়ে ধরে আছে আহমদের নিথর দেহ। আয়েশার চোখের পানি পরিনত হয়েছে গলিত লাল লাভায়। ইহুদীরা কেড়ে নিয়েছে তার বাবাকে, স্বামীকে আজ নিল ছেলেকে। একটি মানুষ কত কষ্ট সহ্য করতে পারে। কত!

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: আহারে----

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.