![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশে সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে এ নিয়ে বড় ধরনের কোন বিতর্ক ছিল না। কারো কোনরকম দাবী ছাড়াই তৎকালীন এরশাদ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার সার্থে এদেশের বৃহত্তর ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠীর সহানুভুতি লাভের জন্যে জাতীয় সংসদে “রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম” বিল পাস করে। এটা ছিল এরশাদ সরকারের একটি সাহসি উদ্যোগ। তখন দেশের মূলধারার জনপ্রিয় কোন রাজনৈতিক দল এ সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেনি। অতি ক্ষুদ্র ও জনবিচ্ছিন্ন কিছু উগ্র ও সাম্প্রদায়িক শক্তিই শুধু এর বিরোধীতা করেছিল। যেহেতু রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানে একটি অলংকারিক বিষয়, এর কোন আইনী কার্যকারিতা নেই এবং এটি কারো কোন অধিকারও ক্ষুন্ন করে না, তাই নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে এবিষয়ে কখনো কোন তীব্র প্রতিবাদ হয়নি। তবে এদেশে যারা ইসলাম ও মুসলমানিত্ব বরদাশত করতে পারে না, সংবিধানে সিম্বলিকভাবেও ইসলামের নাম অবশিষ্ট থাকুক তারা তাও চাবে না, এটাই স্বাভাবিক।পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের মূলনীতি থেকে মহান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দিয়ে ধর্ম নিরপেক্ষতা সংযোজনের পর থেকেই মূলত ইসলামবিদ্বেষী চক্রটি রাষ্ট্রের সব জায়গা থেকে ইসলাম বিতাড়িত করতে উৎসাহী হয়ে ওঠে। সংবিধান থেকে যেদিন আল্লাহর উপর আস্থা বিদায় দেয়া হয়েছে, সেদিন থেকে নতুন করে এদেশের মুসলমানদের কপাল পোড়া শুরু হয়েছে। আমাদের দূর্ভাগ্য, আমরা তখন কার্যকর কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলাম না।তখন যদি ব্যাপক গণআন্দোলন গড়ে উঠতো তাহলে এখন রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের সাহস তারা করতো না।
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম- এর যদিও কোন আইনী কার্যকারিতা নেই কিন্তু এটি এখন এদেশের মুসলমানদের চেতনার অংশ।ধীরে ধীরে এদেশের মুসলমানদের অন্তর থেকে ইসলামের চেতনা মুছে ফেলার যে প্রক্রিয়া চলছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বিদায় করা সে প্রক্রিয়ারই অংশ। এতে তারা সফল হলে, পরবর্তী পদক্ষেপ হবে সংবিধান- এর শুরু থেকে বিসমিল্লাহ বিদায় করা। আমার মনে হয় না, শুধু কিছু ইসলামী সংগঠন বা মাদরাসার ছাত্রদের আন্দোলনে এই ভয়ংকর ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা যাবে। বরং সফল হতে হলে, তাবৎ মুসলমানের চেতনায় আগুন জ্বালিয়ে দিতে হবে।
এক্ষেত্রে আমার ব্যক্তিগত খেয়াল হলো, দল-মত, সংস্থা সংগঠনের উর্ধে ব্যাপকভিত্তিক একটি গণআন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন। যেটা একান্তই ধর্ম রক্ষা আন্দোলন।সব কালেমাগু মুসলমানকে এ আন্দোলনে শরিক করতে হবে।এলক্ষে সর্বত্র সর্বদলীয় কমিটি বা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা যেতে পারে। যেখানে শুধু ইসলামী সংগঠনই নয় বরং আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, তাবলীগ জামায়াত, আহলে হাদীস, ওহাবী,সুন্নী এক কথায় সব মুসলমানদেরকে আন্দোলনে শামিল করার কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।
পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এবং সব শ্রেণীর ছাত্রদের মাঝে এ আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে হবে।শুধু শহরকেন্দ্রিক আন্দোলন হলে চলবে না, বরং আন্দোলনকে গ্রামে গঞ্জে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে হবে।সব জায়গায় আলেমরাই এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিবেন, এমন নয় বরং স্থানীয় প্রভাবশালী যে কেউ নেতৃত্ব দিতে পারেন।শর্ত শুধু মুসলমান হওয়া। তার রাজনৈতিক পরিচয় যাই থাকুক।মনে রাখতে হবে, ইসলামী আন্দোলন আর মুলসমানদের আন্দোলন এক বিষয় নয়।এই ভারত উপমহাদেশে মুসলমানদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সবচেয়ে বড় আন্দোলনটি মুসলমানরা করেছে একজন শিয়া নেতার নেতৃত্বে।আর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম যার অবদানে সংবিধানের অংশ হয়েছে, তিনিও কতোটা পরহেজগার মুসলমান তাও আমরা জানি। এখন ইসলামই যে এদেশের সবচে বড় শক্তি, এটা ইসলামবিদ্বেষীদের মোকাবেলায় প্রমান করতে হবে।আমারতো মনে হয় সামান্য কিছু নাস্তিক ছাড়া এই ধর্মীয় আন্দোলনে সবাই সাড়া দিবে। আর এদেশে বিধর্মী ও নাস্তিকের সংখ্যা বিশ পার্সেন্ট - এর বেশি হবে না। বিশ ভাগ মানুষ আশি ভাগের ধর্মীয় অধিকার কেড়ে নিবে এটা মেনে নেয়া যায় না।
©somewhere in net ltd.