![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বৃষ্টির শহর সিলেটে বৃষ্টিহীন কোন এক দুপুরে জন্ম হয় আমার।জাতীয় পরিচয় পত্রে নাম আবিদুল ইসলাম হলেও ভালোবাসার মানুষরা আদর করে ডাকেন রিমন ।কি আর করা!তাই লেখা লেখি করি আবিদুল ইসলাম রিমন নামে ।বর্তমানে বিবিএ নিয়ে পড়ছি মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি তে ।পাশাপাশি নিয়মিত রম্য গল্প এবং আইডিয়া লিখি দৈনিক কালের কন্ঠের ফান ম্যাগাজিন \'ঘোড়ার ডিম\' এ ।যদিও রম্য লেখার চেয়ে সিরিয়াস লেখাটা লিখতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। \n\nইচ্ছে আছে পৃথিবীতে এক হাঁজার বছর বেঁচে থাকার ।তবে সেটা মৃত্যুর আগে নয়,কর্মের মাধ্যমে মৃত্যুর পরে ।স্বপ্ন দেখি পড়া লেখার পাঠ চুকিয়ে লেখা-লেখিটা কে পেশা হিশেবে নেয়ার ।যদিও আমার কাছের মানুষরা বলে, সেটা করলে আমাকে নাকী না খেয়ে মরতে হবে ।দেখেন অবস্থা!
তরকারি কেনার জন্য জালাবাদের মোড়ে গিয়ে হকচকিয়ে গেলাম।কারণ,সেখানে যেয়ে দেখি আমার কলেজ লাইফের এক ফ্রেন্ড পিকেটিং করছে।তবে কারো ক্ষতি করছেনা।আপনারা হয়তো ভেবে বসেছেন,আমি তার পক্ষ নিচ্ছি!উহু,মোটেই না।তাহলে আসল কথা খুলেই বলি।
তরকারি কেনার জন্য যখন বিক্রেতার সাথে কথা বলছিলাম,ঠিক তখনি হঠাত বাম পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখি একটা ছেলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে।তার হাতে ইটের এক বড় টুকরো।যেকোন সময় সে সেই ইটের টুকরোটা কোন হতভাগার গাড়ীর উপর ছুঁড়ে মারবে।তার এক্সপ্রেশন দেখলেই যে কেউ এই ধারনা করতেই পারে।এতে অবাক হওয়ার কিছু নাই।আমি অবাক হয়নি।তবে খারাপ লাগছিলো এই ভেবে,ছেলেটা কলেজ লাইফে আমার দূর সম্পর্কের ফ্রেন্ড ছিল।একদিন সে আমাকে পাঁচ টাকার ঝালমুড়িও খাওয়াই ছিলো।অবশ্য যদিও বিলটা আমি দিতে চাইছিলাম!কিন্তু সে দিতে দেয় নি।আসলে এই যুগে এতো ডেটিকেটেড বন্ধু পাওয়া ওনেক টাফ!
প্রায় দুই মিনিট অপেক্ষা করার পর দেখি আমার বন্ধুটা কোন অঘটন ঘটায়নি।বরং সে হাসি মুখে খুব যতনে হাতের থাকা ইটের টুকরোটা রাস্তার দ্বারে রাখলো।ভাব এমন,সে বিশ পঁচিশটা গাড়ী ভাংচুর করছে।যাইহোক,আমি তার মানবতাবোধ দেখে খুশিতে আবেগ আপ্লুত হয়ে তাকে ডাক দিলাম,
-এই(নামটা রিয়েলি ভুলেগেছি।আমার ধারণা সেও আমার নামটা ভুলে গেছে)
পিছনে ফিরে আমার দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে অনেকটা দৌড়ে এসে আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো।ভাগ্য ভালো আমার পিছনে সবজি ওয়ালার ভ্যানগাড়ী টা ছিলো।না হলে এতক্ষণ হয়তো হসপিটেলেই থাকতাম।যাই হোক,নিজেকে কোন রকম সামলিয়ে তাকে বললাম,ভালো আছিস রে?
-তোর সাথে দেখা হয়ে ভালোই হলো।আমি তো মাম্মা ফ্রান্স চলে যাচ্ছি।
-ফ্রান্স যাবি ভালো কথা কিন্তু রাস্তায় দাঁড়িয়ে পিকেটিং করতেছিস ক্যান?অবশ্য কারো কোন ক্ষতি করিসনি,সেজন্য ধন্যবাদ।
এক গাল হেসে বললো,আরে পিকেটিং না।পিকেটারের অভিনয় করছি।এরপর আরো একটা ছেলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বললো,ও আমার ছবি তুলছে, দেখিস নাই!
আমি তার মতো একগাল হেসে বললাম,ও বুঝছি!তুই এই ছবি গুলা ম্যডামরে দেখাইয়া পদ পাইতি চাস!
-ধুর,টাইম আছে!শুনেছি ফ্রান্সে যেয়ে পলিটিক্যাল কেস করলে সেদেশে বৈধ ভাবে থাকার অনুমতি মেলে।তবে সেজন্য প্রমাণ করতে হবে তুমি আসলেই একজন রাজনীতিক।এবং তোমার নিজ দেশে থাকা নিরাপদ না।বলতে পারিস নিজেকে রাজনীতিক হিসেবে প্রমানের এটা একটা সিস্টেম!
যাইহোক,তরাকারি কেনার পর বাসায় রিকশা করে আসছিলাম।বন্ধুটি যাবার সময় বলছিলো তার জন্য যেনো দোয়া করি।হুম আমি দোয়া করেছি।তবে তার জন্য না।এদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা প্রতিভাবান পিকেটারদের জন্য।আল্লাহ পাক যেন আমার বন্ধুটির আইডিয়া তাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়।তারা যেনো পিকেটিংটা ফটোসেশন আর সেলফির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে।এটলিস্ট ফ্রান্সে বৈধ ভাবে থাকার জন্য না হোক,নিজ দেশে তো শান্তিতে থাকতে পারবে।
©somewhere in net ltd.