![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিদেশ যেতে ঢাকায় এসে বাস পোড়ানোর অভিযোগে কারাগারে।
বিদেশে গিয়ে ভাগ্য ফেরানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন তরুণ মিজানুর রহমান। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ তাঁর ওমানে থাকার কথা। কিন্তু অবরোধের মধ্যে ঢাকায় এসে কেনাকাটা করতে গিয়ে এখন কারাগারে দিন কাটছে তাঁর।
মিজানের (২৪) বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার নয়আনা মাঝপাড়া গ্রামে। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিজানের স্মার্টকার্ডের নিবন্ধন নম্বর বিওএম ২০১৪০৩৪৯০৯৪ জি। স্মার্টকার্ড নম্বর ২০১৩০৩৬০৫৫৯। ১৭ জানুয়ারি দুপুরে রওনা দিয়ে ১৮ জানুয়ারি ওমানের স্থানীয় সময় বেলা দুইটায় তাঁর ওমানের মাস্কাটে পৌঁছনোর কথা।
স্বজনেরা জানান, মিজানের পরিবার খুবই গরিব। ধারদেনা করে ছেলেকে বিদেশে পাঠাচ্ছিলেন বাবা শফিকুল ইসলাম। ১৩ জানুয়ারি মিজানের ওমান যাওয়ার টিকিট চূড়ান্ত হয়। ১৪ জানুয়ারি ঢাকার গুলিস্তানে যান শীতের কাপড় কিনতে। ওই দিন দুপুরে গুলিস্তানে দুর্বৃত্তরা একটি বাসে আগুন দেয় ও ককটেল হামলা চালায়। ওই সময় আশপাশের অন্যদের সঙ্গে মিজানও ভয়ে দৌড় দেন। তখন কয়েকজন লোক হামলাকারী সন্দেহে তাঁকে ধরে মারধর করে পুলিশে দেয়। পুলিশকে নিজের অবস্থান খুলে বললেন মিজান। তার পরও তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে তুলে দেয় পুলিশ। আদালত তাঁকে পাঁচ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
মিজানের চাচা সফুরউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিজানের বড় ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করে। ১৭ বছর বয়সে মিজান মালদ্বীপ যায়। পাঁচ বছর সে দেশে থাকলেও খুব কম বেতনের কারণে টাকাপয়সা তেমন একটা আয় করতে পারেনি। দেশে ফিরে ওমান যাওয়ার উদ্যোগ নেয়। ওমানে যাওয়ার জন্যই সে ঢাকায় এসেছিল।’
মিজানের গ্রামের ছেলে ঢাকার সংগীত কলেজের মাস্টার্সের ছাত্র আবদুল্লাহেল রাফি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিজানকে পল্টন থানায় নেওয়ার পর তার এক চাচা আমাকে খবর দেন। আমি দ্রুত থানায় যাই। গিয়ে দেখি, মিজান বসে আছে। আমি তখন রমনা থানায় আমার পরিচিত এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার কাছে গিয়ে জানাই, ওমানে যাওয়ার জন্য মিজান ঢাকায় এসেছিল। তার এ-বিষয়ক কাগজপত্রও আছে। সব শুনে তিনি বললেন, ওসিকে বলে দিচ্ছেন ছেড়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমি থানায় গিয়ে দেখি, ততক্ষণে মিজানকে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
পল্টন থানার ওসি মোর্শেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণ জনগণ আমাদের কাছে তাকে তুলে দিয়েছিল।’ মিজান বাসে আগুন দিয়েছিলেন কি না, তা যাচাই-বাছাই করেছেন কি না—জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘পাবলিকই বলেছিল সে আগুন ধরিয়েছে। অনেকে সাক্ষী দিয়েছেন।’ মিজান অপরাধ স্বীকার করেছেন কি না—জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘কেউ কী ভাই স্বীকার করে?’
মিজানের ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে বগুড়ার শিবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়ারেছ আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেটির পরিবার একেবারেই গরিব। বিদেশে যাওয়ার জন্যই সে ঢাকায় গিয়েছিল বলে আমি জানতে পেরেছি।’ একই রকম তথ্য জানান শিবগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশেই ছেলেটির বাড়ি। আমাকে দাদা বলে ডাকে। ছেলেটির বাবা রাজমিস্ত্রির সহযোগী। এভাবে ছেলেটির জেলে যাওয়া দুঃখজনক।’
আদালত ও আইনজীবী সূত্র জানায়, ভ্রাম্যমাণ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যায়। মিজানুর রহমান যদি আপিল করেন এবং নির্দোষ প্রমাণিত হন, তাহলে তিনি ছাড়া পেয়ে যাবেন।
মিজানের বাবা শফিকুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে গতকাল মঙ্গলবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাবা, আমরা খুব গরিব। ছেলেটা জেলে যাওয়ায় খুব বিপদে আছি। আমার নির্দোষ ছেলেটাকে একটু বাঁচান।’
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/430081/বিদà§à¦¶-যà§à¦¤à§-ঢাà¦à¦¾à§-à¦à¦¸à§-বাস-পà§à¦¾à§à¦¾à¦¨à§à¦¾à¦°-à¦
à¦à¦¿à¦¯à§à¦¾à¦à§
©somewhere in net ltd.