![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কারো মতন নয়ই, একান্তই আমার মতো। বন্ধু-বান্দব আর পারিবারিক সব সম্পখের ক্ষেএে ভীষণ আন্তরিক। হাসি-খুশি আর দলবল নিয়ে ২৪ ঘন্টাই আড্ডায় থাকতে ভালবাসি। ভালোবাসি সাদা গোলাপ আর প্রিয়তমাকে। আমি এক আল্লাহ্র ইবাদত করি আর হজরত মুঃ সাঃ কে অনুসরন করি। সৃজনশীল বিষয়ে আগ্রহ করি। রাজনীতি আমার রক্তের সাথে মিশে গেছে বা আছে। জিয়াকে মডেল করে সমাজের ভাল পরিবর্তনের চেষ্টায় আছি। বর্তমান পরিবেশে দেশে কিছু করার মুরোদ রাখিনা তাই পরবাসী আছি। দেশ ও দেশে বসবাস করা প্রিয় মানুষদের জন্য অনবরত হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। নিজের অনুভূতি,অস্তিত্ব আর ভালোলাগা গুলো পরে থাকে প্রিয় জয়পাড়ায় যেখানে আমার শৈশব আর কৈশোর কেটেছে। দুঃখ একটাই জীবনে কোথাও শ্রেস্ট হতে পারিনি। আমি লিখতে পারিনা,আর লিখা লিখি করার জন্যও আমি ব্লগে আসিনি। আমি পড়তে এসেছি। নিজেকে একজন ভাল পাঠক বলে দাবি করি।
আগামী ৬ ই জুলাই ২০১৩ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচন। সঙ্গত কারণেই এই নির্বাচনটি বিগত সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের চেয়ে একটু বেশি তাৎপর্য্যপূর্ণ। প্রথমত, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট, বরিশাল, রাজশাহী এবং খুলনা-এই চারটি সিটি কর্পোরেশনে বিএনপি’র প্রার্থীর কাছে গো-হারা হারার পর আওয়ামি লীগ ডিসিসি’র নির্বাচন দিবেনা কোনভাবেই। সুতরাং, ঢাকার সবচেয়ে নিকটবর্তী সিটি কর্পোরেশন গাজীপুর, এখানে আওয়ামিলীগের অবস্থান আগে থেকেই শক্ত। এখানে যেকোনমূল্যে আওয়ামিলীগকে জিততে হবে। সদ্য বিলুপ্ত গাজীপুর পৌরসভায় আওয়ামিলীগের প্রার্থী এ্যাডভোকেট আজমত উল্যা ১৭ বছর ধরে এই পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। উল্লেখ করা যেতে পারে, বিগত জোট সরকারের সময়ও জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামিলীগ ঢাকায় একটি আসনও পায়নি, কিন্তু গাজীপুর-৪ আসনটি পেয়েছিল। সেখানে আওয়ামি প্রার্থী ছিলেন প্রয়াত আহসান উল্ল্যাহ মাস্টার। বর্তমানে সেই আসনটিতে আছেন আহসান উল্ল্যাহ মাস্টারের ছেলে জাহিদ আহসান রাসেল। এই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আওয়ামিলীগের জন্য একটি এসিড টেস্ট। দলীয় ভরাডুবি যখন সর্বজনবিদিত ফ্যাসিস্ট সরকারের জনপ্রিয়তার পারদ যখন শূন্যের নিচে নেমে গেছে, সেই মুহুর্তে যেকোন মূল্যেই এই আসনে জিতে দলীয় ভাবমূর্তি রক্ষা করার জন্য মরিয়া আওয়ামিলীগ।
এই আসনে আওয়ামিলীগের বর্তমান প্রার্থী এ্যাডভোকেট আজমত উল্যাহ। পূর্বেই বলেছি, ১৭ বছর ধরে উনি এই পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু এত দীর্ঘ সময়েও গাজীপুরে খুব একটা উন্নয়ন করা হয়নি।
বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক এম.এ মান্নান। গাজীপুরে, বিশেষত গাজীপুর সদর, জয়দেবপুর, চৌরাস্তা, সালনা প্রভৃতি এলাকায় ওনার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে ক্লিন ইমেজের এই ভদ্রলোক সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতিতে একটু ঝিমিয়ে পড়েছেন বলে মনে করা হয়।
এই আসনে এই দুজন ছাড়াও আরও একজন বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন। উনি হচ্ছেন ছাত্রলীগে নেতা জাহাঙ্গীর আলম। বয়সে তরুণ এই নেতা বিগত প্রায় দুই বছর ধলে গাজীপুরের সর্বত্র ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন। গাজীপুরের এমন কোন রাস্তা পাওয়া যাবেনা যেখানে এই ভদ্রলোকের প্রচারণামূলক ব্যানার-পোস্টার-ফেস্টুন পাওয়া যাবেনা।
প্রথম আলো থেকে জানতে পারলাম, মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে যাওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীরকে বসিয়ে দেয়ার জন্য স্বয়ং শেখ হাসিনা উদ্যোগী হয়ে আজমত উল্যাহ এবং জাহাঙ্গীরকে তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছেন। কিন্তু সরেজমিনে জানা যায়, গতকাল পর্যন্তও জাহাঙ্গীর তার পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে গেছেন। এখন আবার শোনা যাচ্ছে, জাহাঙ্গীর নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ানোয় তাকে অপরহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে ঘটনা যাই হোক, জাহাঙ্গীর আলম সরে দাঁড়ান বা না দাঁড়ান, ব্যালট পেপারে তার নাম থাকবে, কারণ সময় পেরিয়ে যাওয়ায় মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের আর কোন সুযোগ নেই।
এবার দেখে নিই, বিএনপি আর আওয়ামিলীগের সার্বিক অবস্থান:
সবারই জানার কথা, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ভোটাররা প্রার্থী দেখে ভোট দেন না। সাম্প্রতিক সময়ে পত্র-পত্রিকায়ও এ বিষয়টি বহুল আলোচিত হয়েছে। নির্বাচনে জাতীয় পরিস্থিতি এবং আওয়ামিলীগ সরকারের সামগ্রিক ব্যর্থতার চিত্রই প্রতিফলিত হচ্ছে। সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ এই সরকারের উপর গাজীপুরের সাধারণ মানুষও বীতশ্রদ্ধ। বিগত সময়ের জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপি এবং আওয়ামিলীগের প্রার্থীর ভোটের পার্থক্য বরাবরই সামান্য ছিল। কিন্তু গতকালকের কালীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনেই তা প্রমাণিত হয়েছে। গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী লুৎফর রহমান। নির্বাচনে চশমা প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ১৬ হাজার ২৪৪ ভোট। তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত আমজাদ হোসেন আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৮ হাজার ৪০৬ ভোট। অর্থাৎ ভোটের ব্যবধান প্রায় দ্বিগুণ
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মোট ভোটার দশ লক্ষ সাতাশ হাজার প্রায়। স্থানীয় জনগণ ছাড়াও এখানে প্রচুর বহিরাগত মানুষ রয়েছেন। বহিরাগতদের বেশিরভাগই বিএনপি সমর্থিত বলে ধারণা করা হয়। এছাড়াও রয়েছে প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক। পেটে লাথি খাওয়ার পর শ্রমিকরা নিশ্চই পূণারায় এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে ভোট দেবে বলে মনে হয়না। অপরদিকে, জয়-পরাজয় নির্ধারিত হবে মূলত বহিরাগত গাজীপুরের বাসিন্দা এবং শ্রমিকদের ভোটেই।
গাজীপুরের বিদ্যমান বর্তমান সমসাসমুহ:
জলাবদ্ধতা: জলাবদ্ধতা এখানকার নিত্য সমস্যা। দশ মিনিটের বৃষ্টিতেই টঙ্গী বাজার, কলেজ গেট, চেরাগ আলী মার্কেট, দত্তপাড়া, আউচপাড়া, বাস্তুহারা, আরিচপুরসহ অধিকাংশ এলাকাই কোমর পানির নিচে তলিয়ে যায়। সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু পানির নিচে তলিয়ে যায় টঙ্গীর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের নিচতলা।
মাদক: টঙ্গী বাজার, আরিচপুর কলেজগেইট, চেরাগ আলী, মিলগেট, স্টেশান রোড, গাজীপুর চৌরাস্তা, সাইনবোর্ড, বোর্ড বাজার, জয়দেবপুর, শিববাড়ী, শালনা, জয়দেবপুর-টঙ্গী রেলস্টেশানসহ গাজীপুরের সর্বত্রই মাদকের ছড়াছড়ি। রয়েছে ভাসমান পতিতাবৃত্তি।
ছিনতাই/চাঁদাবাজি: ছিনতাই চাঁদাবাজি একটি নিত্য-নৈমিত্তিক সমস্যা। রাতে তো বটেই, দিনের আলোতেই এখানে প্রকাশ্যে ছিনতাই হয়। সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই খারাপ।
ইভটিজিং: টংগী, কলেজগেট, জয়দেবপুরে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ইভটিজিং মাত্রা দিন দিন শুধু বাড়ছে।ই
জ্যাম: গাজীপুরের উপর দিয়েই গেছে ঢাকা-ময়মনসিং মহা সড়ক, যেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা আপনাকে জ্যামে আঁটকে থাকতে হবে। গার্মেন্টস সহ শিল্প অধ্যুষিত এই এলাকায় জ্যাম এড়াতে সিটি কর্পোরেশন কোন ভূমিকাই পালন করতে পারেন।
অন্যান্য: গাজীপুরে অন্যান্য নাগরিক সুবিধা যেমন: গ্যাস-বিদ্যুৎ, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন প্রভৃতি বরবরই উপেক্ষিত ছিল এবং আছে।
সুতরাং সুস্পষ্টই প্রতীয়মান হচ্ছে যে, এই আসনেও বর্তমানে বিএনপির অবস্থা আওয়ামিলীগের চেয়ে অনেক বেশি শক্ত।
এদিকে গাজীপুরের সর্বত্রই চলছে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের প্রকাশ্য মহড়া। শোনা যাচ্ছে, নির্বাচন কমিশন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় ইলেকশান ইন্জিনিয়ারিং এর ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
গাজীপুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আওয়ামিলীগের ভোট আছে। তবে শ্রমিক-অধ্যুষিত গাজীপুরে এই আওয়ামি ভোট খুব একটা কাজে আসবে বলে মনে হচ্ছেনা। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ের তাজরিন ফ্যাশন্স এবং সর্বশেষ সাভার ট্রাজেডীর পর শ্রমিকদের ভোট লীগের বাক্সে যাওয়ার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। এমতাবস্থায় শ্রমিক এবং বহিরাগত গাজীপুরের বাসিন্দাদের ভোটই নির্ধারণ করবে জয় পরাজয়। সুতরাং, বাস্তব পরিসংখ্যান বলছে, এই আসনেও বিএনপি’র জয় এক প্রকার নিশ্চিত। আর এই নিশ্চিত জয় যাতে ছিনতাই না হয় সেজন্য কি করতে হবে?
- ছাত্রদল-যুবদল সহ বিএনপিসহ ১৮ দলের প্রতিটি কর্মীকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।
- জানা গেছে, বিএনপি প্রার্থী এমএ মান্নানের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক হলেন হাসান সরকার, হাসান সরকারের জনপ্রিয়তা এবং প্রভাব গাজীপুরে সর্বজনবিদিত। তাঁর নেতৃত্বে নির্বাচনের দিন প্রতিটি কেন্দ্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন পূর্বক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।
- সর্বোপরি, আওয়ামি দুঃশাসনের বিষয়ে জনগণকে ব্যাপকভাবে সচেতন করতে হবে।
তবেই গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ইতিহাসে নতুন এক যুগের সূচনা হবে। সেই সাথে আওয়ামিলীগের কফিনে যুক্ত হবে আরও একটি পেরেক
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে জুন, ২০১৩ রাত ২:৪৪
মাজহারুল হুসাইন বলেছেন: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ইতিহাসে নতুন এক যুগের সূচনা হবে । সেই সাথে আওয়ামিলীগের কফিনে যুক্ত হবে আরও একটি পেরেক । ইনশাআল্লাহ ।