নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাম্মদ আবুল হোসাইন চৌধুরী

মোহাম্মদ আবুল হোসাইন চৌধুরী

মোহাম্মদ আবুল হোসাইন চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কর্মক্ষেত্রে সুন্দর আচরণ সফলতার অন্যতম উপায়

২৯ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৫৭

সুন্দর আচরণ : সুন্দর আচরণ বলতে আমরা বুঝি কারও সাথে সুন্দর করে কথা বলা, দেখা হলে সালাম দেয়া, কুশলাদি জিজ্ঞেস করা, কর্কশ ভাষায় কথা না বলা, ঝগড়া-ফ্যাসাদে লিপ্ত না হওয়া, ধমক বা রাগের সুরে কথা না বলা, গীবত বা পরনিন্দা না করা, অপমান-অপদস্ত না করা, উচ্চ আওয়াজে কথা না বলা, গম্ভীর বা কালো মুখে কথা না বলা, সর্বদা হাসিমুখে কথা বলা, অন্যের সুখে সুখী হওয়া এবং অন্যের দুঃখে দুঃখী হওয়া, বিপদে দেখা করে সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রকাশ করা সুন্দর আচরণের অন্তর্ভুক্ত। সুন্দর আচরণ আমরা সবাই প্রত্যাশা করি, কিন্তু আমরা প্রায়ই অন্যের সাথে সুন্দর ব্যবহার করতে ভুলে যায়। সামান্য একটু অসতর্কতার কারণে আমাদের আচরণে একজন মানুষ অনেক কষ্ট পেতে পারে। তাই আমাদের সবসময় সচেতন থাকা উচিত- যাতে আমাদের আচরণে কেউ বিন্দুমাত্র কষ্ট না পায়। যার আচরণ যত বেশি সুন্দর সবাই তাকে তত বেশি ভালোবাসে, সম্মান ও শ্রদ্ধা করে। যার আচরণ ভালো নয় সবাই তাকে ঘৃণা করে ও এড়িয়ে চলে। সুন্দর ব্যবহার সুন্দরভাবে কথা বলা সুন্দর মনের পরিচয় বহন করে। কখনোই কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করবেন না। কাউকে এমন কোনো কথা বলবেন নাÑ যেন ঐ ব্যক্তি মনে কষ্ট পায়। মানুষের একটি ভালো কথা যেমন একজনের মন জয় করে নিতে পারে, তেমনি একটু খারাপ বা অশোভন আচরণ মানুষের মনে কষ্ট আসে! আমরা সবসময় যেন চেষ্টা করি মানুষের সাথে ভালো ও সুন্দরভাবে কথা বলতে। কারণ আমার একটি খারাপ কথাই হয়তো কারো মনে আঘাত দিতে পারে। মানুষের সুন্দর ব্যক্তিত্ব তার চেহারায়ই প্রকাশ পায়। সুন্দর ব্যবহারের কারণে যে মুখটি প্রিয় হয়, বিপরীতভাবে অসুন্দর ব্যবহার করায় একই মুখটি অপ্রিয় হয়ে যায়।

সুন্দর ব্যবহারের উদ্দেশ্য : সুন্দর আচরণের উদ্দেশ্য হলো অন্যকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করা এবং নিজের মহত্ব অন্যের অন্তরে প্রতিষ্ঠিত করা। কিন্তু ইসলামে যে উত্তম আখলাকের শিক্ষা দেয়া হয়েছে, তার উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে উত্তম আখলাকের কথা বলেছেন তার উদ্দেশ্য কখনোই নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য অন্যকে বশে আনা নয়; বরং ভালো একজন মুসলমান হিসেবে আপনার/আমার কর্তব্য, অন্যের সাথে সুন্দর আচরণ করা। এ দুই শিক্ষার মাঝে রয়েছে আসমান-জমিনের ব্যবধান। তাদের ভালো আচরণের উদ্দেশ্য- গ্রাহক আকৃষ্ট করা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে উন্নতি করা। পক্ষান্তরে আল্লাহ্ ও আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে উত্তম আখলাকের শিক্ষা দিয়েছেন তার উদ্দেশ্য পার্থিব স্বার্থ হাসিল করা নয়; বরং এজন্য যে একজন মুসলিম হিসেবে আমার কর্তব্য, অন্য মুসলিম ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে মিলিত হওয়া এবং ভালো আচরণ করা। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ্র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমরা একে-অপরের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করবে-এটিও সদকা।

ব্যবসায়িক স্বার্থে সুন্দর আচরণ : অনেকে পশ্চিমাদের প্রশংসা করে বলি, তাদের আচার-আচরণ অনেক উন্নত। এমনকি এ মুগ্ধতার কারণে কখনো কখনো তাদের ইসলাম ও মুসলমানদের চেয়েও শ্রেষ্ঠ মনে করেন। তাদের মধ্যে কিছু লোক হয়তো স্বভাবগতভাবেই ভদ্র ও সুশীল, কিন্তু সাধারণভাবে তাদের যে ভদ্রতা ও সৌজন্যতা ব্যবসায়িক। দোকানের সেলসম্যান যদি গ্রাহকদের সাথে হাসিমুখে কথা না বলে এবং ভদ্র ব্যবহার না করে তাহলে কেউ তার কাছে আসবে না। তাই সে নিজের ব্যবসায়িক স্বার্থে ভালো আচরণ করতে বাধ্য। কেন সেলসম্যানের ভদ্রতা ও সৌজন্যে মুগ্ধ হয়ে আপনি যদি মনে করেন সে পণ্যের মূল্যও আপনার কাছে কম রাখবে তাহলে ভুল করবেন। অনুরোধ করে দেখুন, সে আপনাকে সরি বলে ওখান থেকে সরে যাবে। কারণ তার সব ভদ্রতা ও সৌজন্য তো এজন্যই ছিল যে, কীভাবে সে আপনাকে আকৃষ্ট করতে পারে এবং আপনার কাছে অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে পারে।

সুন্দর আচরণ উন্নত ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক : ইসলাম মানুষের সাথে ভালো কথা বলা এবং সুন্দর আচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সুন্দর আচরণ উন্নত ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। ইসলামের পথে মানুষকে আহ্বানের সর্বোত্তম পন্থা। সুন্দর আচরণের মাধ্যমেই যুগে যুগে নবী-রাসূলগণ অন্ধকারে নিমজ্জিত, পথহারা, দিশেহারা, মানুষকে আলোর পথ দেখাতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই মহৎ গুণের অনুপ্রবেশ ঘটাতে হবে আমাদের চরিত্রে। বিশেষত আলেম-ওলামা, মসজিদের ইমামাদের এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। নবীর ওয়ারিশ হিসেবে, ধৈর্য ধারণপূর্বক মানুষকে সুন্দর আচরণের মাধ্যমে সত্য, ন্যায় ও সঠিক পথে চলতে উৎসাহিত করতে হবে। তবেই আমরা শান্তি ও সুখের ঠিকানা খুঁজে পাব।

সুন্দর আচরণ চারিত্রিক উৎকর্ষের মাপকাঠি : কোমল ব্যবহার মানুষ সামাজিক জীবন। সামাজিক পরিম-লে সবার মাঝে বেড়ে ওঠা মানুষের সহজাত প্রকৃতি। সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোনো মানুষ বাস করতে পারে না। সমাজে বাস করতে গিয়ে মানুষ পারস্পরিক লেনদেন ও আদান-প্রদান করে থাকে। একজনের প্রয়োজনে অন্যজন লাগে। একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক কায়েম করতে হয়। মানুষের সামাজিক এই জীবনাচারের মধ্যে তার মানবিক প্রকৃতি ফুটে ওঠে। সমাজ দর্পণে ভেসে ওঠে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। তার আচার-আচরণ সম্পর্কে অবগত হয় সমাজের প্রতিটি সদস্য। মানুষের আপন সত্তাকে পরিচিতি করে তোলার উপযুক্ত ক্ষেত্র এটাই। মানবচরিত্রের দু’টি দিক রয়েছে- ভালো ও মন্দ। মানুষের মধ্যে যার যে স্বভাবটি প্রাধান্য পায়, সে সেভাবেই খ্যাতি লাভ করে। যাদের চরিত্রে উত্তম গুণাবলীর সমাবেশ ঘটে সে হয় স্মরণীয় ও বরণীয়। আর যার চরিত্র মন্দ দোষে দুষ্ট হয় সে হয় ধিকৃত ও পরিত্যাজ্য। মানুষ তার আচরণের মাধ্যমেই স্থান করে নেয় সবার অন্তরে। তার কৃত আচরণ মৃত্যুপরবর্তী সময়েও তাকে তুলে আনে মানুষের স্মৃতিতে। এজন্য অনন্তকালের জন্য মানব মনে স্থান করে নিতে প্রয়োজন উত্তম আচরণ। কোমলতা উত্তম আচরণের অনন্য বৈশিষ্ট্য। স্বভাবে যে কোমল, আচরণে যে মার্জিত, সে হয় সবার কাছে সমানভাবে স্বীকৃত। স্বভাবের কোমলতা মানুষকে মহীয়ান করে। নম্র ও কোমল আচরণের মনুষকে সবাই ভালোবাসে, সমীহ করে। কোমল আচরণের দ্বারা মানুষের চারিত্রিক মাধুর্যতা প্রকাশ পায়। প্রকৃত ধর্ম ইসলামে মানুষের আচরণ মার্জিত ও ভদ্রোচিত হওয়ার প্রতি জোরালো তাগিদ করেছে। মানুষের সীমাবদ্ধতা ও অপারগতার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইসলাম মানুষকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। ইসলামের নবী মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে কোমল ও মার্জিত আচরণ করে এর শিক্ষা দিয়েছেন উম্মতকে। তাঁর চারিত্রিক মাধুর্যের কথা প্রবাদতুল্য। তবে তাঁর চরিত্রের অন্যতম বিশেষ ভূষণ ছিল কোমলতা। মানবতার শ্রেষ্ঠ আসনে আসীন হওয়া সত্ত্বেও তিনি তাঁর কথা, কাজ, ইশারা-ইঙ্গিত তথা আচরণের মাধ্যমে এমন কিছু প্রকাশ করেননি যাতে তাঁর বড়ত্ব প্রকাশ পায়। বরং নম্র, ভদ্র, মার্জিত, কোমল ও মায়াবী স্বভাবের দ্বারা তিনি সবার অন্তর জয় করে নেন। তিনি নিজেই তাঁর চরিত্রের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘আমি প্রেরিত হয়েছি চারিত্রিক উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে।’ এজন্য বাস্তব জীবনে চারিত্রিক শ্রেষ্ঠত্বের প্রয়োগ ঘটিয়ে তিনি মানবতাকে শিক্ষা দিয়েছেন চারিত্রিক উৎকর্ষ কী, চরিত্রের বঞ্চিত ধারা কোনটি? চারিত্রিক কোমলতার উদাহরণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বর্ণিল জীবন ভরপুর। তাঁর সিরাত পর্যালোচনা করলে অসংখ্য ঘটনার দ্বারা এ কথার প্রমাণ মেলে। হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু দীর্ঘ ১০ বছর পর্যন্ত নবীজীর খাদেম ছিলেন। তাঁর মুখের ভাষ্য হচ্ছে, ‘এই সুদীর্ঘ সময়ে কোনোদিন তিনি আমাকে অনুযোগের স্বরে এ কথা বলেননি যে, হে আনাস! তুমি এ কাজটি কেন করেছে বা কেন করনি?’ সবচেয়ে কাছে থেকে দেখা খাদেমের কথা থেকেই তাঁর মহান চরিত্রের কোমলতার পরিধি কিছুটা নির্ণিত হয়। পরিবার থেকে সমাজ পর্যন্ত সবই তাঁর কোমল আচরণে ছিল সন্তুষ্ট। তাঁর কোমল আচরণের কারণেই কর্কশ, বর্বর, অসভ্য, মরুবাসী আরব জাতির পাথরের মতো শক্ত হৃদয় মোমের ন্যায় গলে গিয়েছিল। তাঁর মহান চরিত্র শোভায় আসক্ত হয়ে ইসলামের আদর্শের কাছে মাথা নত করেছিল তারা। রাসূলের আদর্শের সৈনিক সাহাবায়ে ক্বেরাম প্রত্যেকেই ছিলেন এই চরিত্রের অধিকারী। ইসলাম দুর্বার গতিতে ছড়িয়ে পড়ে তলোয়ারের জোরে নয়, বরং চারিত্রিক উদারতা ও কোমলময় স্বভাবের কারণেই।

কোমল স্বভাব মানব চরিত্রের অপরিহার্য গুণ : কোমল স্বভাবের দ্বারা মানবজীবনের অনেক কঠিক ধাপ সহজেই পেরিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। কোমল স্বভাবের লোকদের সবাই আপন করে নেয়। তাদের শত্রু থাকে কম। ঘোর শত্রুও তার উদারতা ও কোমলতার কাছে হার মানতে বাধ্য হয়। যাদের জগৎ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তারা প্রত্যেকেই ছিলেন এই গুণে গুণান্বিত। এজন্য মানবমনের মুকুরে স্থান করে নেয়ার প্রধান উপায় হচ্ছে কোমল আচরণ। ভদ্র, মার্জিত ও কোমল আচরণ মানবতা বিকাশের অনুপম ভূষণ। একজন মুসলমান হিসেবে প্রত্যেকের উচিত ইসলামের দাবি অনুযায়ী তার চরিত্রে কোমলতা আনয়ন করা। আল্লাহর ঘোষণা হচ্ছে, যে ব্যক্তি আমার জন্য নিচু হবে, লোকদের সঙ্গে কোমল ব্যবহার করবে, তাকে আমি উঁচু করে দেব; শ্রেষ্ঠত্ব দান করবো।

সুন্দর ব্যবহার এবং আচার-আচরণের পুরস্কার : আমাদের সবার সাথে সুন্দর আচরণ ও সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। সুন্দর আচরণের মাধ্যমে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জন করে পরকালে জান্নাতে যেতে হবে।

১. রাসূল (সা:) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন মুমিনের আমলনামায় সুন্দর আচরণের চেয়ে অধিক ভারী আমল আর কিছুই হবে না। যে ব্যক্তি অশ্লীল ও কটু কথা বলে বা অশোভন আচরণ করে, তাকে মহান আল্লাহ্ তায়ালা ঘৃণা করেন। আর যার ব্যবহার সুন্দর, সে তাঁর ব্যবহারের কারণে নফল রোজা ও তাহাজ্জুদের সাওয়াব লাভ করবে।’ [সুনানে তিরমিযী]

২. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘সবচেয়ে বেশি যা মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে তা হলো- মহান আল্লাহ্ তায়ালার ভয় সুন্দর আচরণ। আর সবচেয়ে বেশি যা মানুষকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবে তা হলো- (মানুষের) মুখ এবং লজ্জাস্থান।’ [সুনানে তিরমিযী, হাকিম আল মুসতাদরাক]

৩. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সুন্দর আচরণই নেক আমল।’ [সহীহ্ মুসলিম]

৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যার আচার-ব্যবহার সুন্দর, সে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন সে আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে।’ [সুনানে তিরমিযী]

৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘অশোভন-অশ্লীল কথা ও আচরণের সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। আর যার আচরণ যত সুন্দর তার ইসলাম তত সুন্দর।’ [মুসনাদে আহমদ]

৬. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘যার আচার-ব্যবহার সুন্দর, আমি তার জন্য সর্বোচ্চ জান্নাতে একটি বাড়ির নিশ্চয়তা প্রদান করছি।’ [আবু দাউদ]

৭. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘যদি কেউ বিনম্রতা ও নম্র আচরণ লাভ করে, তাহলে সে দুনিয়া ও আখেরাতের পাওনা সব কল্যাণই লাভ করল। আর রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়-স্বজনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং সুন্দর আচরণ বাড়িঘর ও জনপদে বরকত দেয় এবং আয়ু বৃদ্ধি করে।’ [আহমদ]

সুন্দর আচরণ অতি বড় নেক আমল : ইসলামের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে আল্লাহ্র খাঁটি বান্দাহ হিসেবে গড়ে তোলা। ইবাদত-বন্দেগী একমাত্র আল্লাহ্র জন্য নিবেদিত করা এবং তার পাশাপাশি উন্নত নৈতিক চরিত্র গঠন ও উত্তম আচার-ব্যবহার অবলম্বনে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে ঈমানের উচ্চতর পর্যায়ে উপনীত করার জন্যই আমাদের মাঝে আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর প্রিয় নবীকে প্রেরণ করেছেন।

কেউ কেউ আবার বলবেন, শালীনতা ও ভদ্রতার আচরণ এবং উত্তম নৈতিক চরিত্র অনেকটা স্বভাবগতভাবে হয়ে থাকে। চাইলেই সবাই তা অর্জন করতে পারে না। স্বভাবগতভাবেই আল্লাহ্ অনেককে তা দান করে থাকেন- এটাও যেমন সত্য, তেমনি কষ্ট ও সাধনা করে মানুষের স্বভাব চরিত্রে কোনো পরিবর্তন সাধন করা একেবারেই অসম্ভব, এ কথাও ঠিক নয়। এ ব্যাপারে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছন, ‘শিখতে শিখতেই ইলম হাসিল করা সম্ভব। আর সাধ্য সাধনার পরাকাষ্ঠার মাধ্যমেই ধৈর্য ও কষ্ট স্বীকার আয়ত্ত করা সম্ভব। যে ব্যক্তি কষ্ট সাধন করে কল্যাণ অর্জনে ব্রতী হয়, সে কল্যাণপ্রাপ্ত হয়। আর যে ব্যক্তি অকল্যাণ থেকে বাঁচার জন্য সচেষ্ট থাকে, সে অমঙ্গল থেকে বেঁচে যায়।’ উত্তম চরিত্র ও আচার-আচরণ অর্জনের জন্য আল্লাহ্র কাছে দোয়া করতেও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের শিখিয়ে গেছেন। দোয়া করতে উৎসাহিত করে যাওয়াই প্রমাণ করে চরিত্র ও আচার-ব্যবহারকে ক্রমাগতভাবে উন্নত করার সুযোগ রয়েছে। তিনি যে দোয়া করেছেন তার মর্মার্থ হচ্ছে- ‘হে আমার প্রভু! আমাকে উত্তম চরিত্রের পথে ধাবিত করুন। আপনি ছাড়া আর কেউ সেদিকে ধাবিত করার নেই। আর আমাকে অসৎ চরিত্র ও আচরণ থেকে দূরে সরিয়ে রাখুন। আপনি ছাড়া তা থেকে দূরে সরানোর আর কেউ নেই।’

সুন্দর আচরণের গুরুত্ব : ইসলামে সুন্দর আচরণের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত পরিষ্কার। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের মাধ্যমে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সুন্দর আচরণ শিক্ষা দিয়েছেন। নবী সুন্দর আচরণের মাধ্যমেই পথহারা, দিশাহারা মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরিয়ে এনেছেন। তাদেরও শিক্ষা দিয়েছেন উত্তম আচরণ। রাসূল (সা:) উত্তম চরিত্র ও আচার-ব্যবহারকে সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। কিন্তু মুশকিল হলো যে, আমরা নামায-রোজার ন্যায় উত্তম চরিত্র ও আচার-ব্যবহারকেও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেক আমল হিসেবে তেমন গুরুত্ব দিই না। আচার-ব্যবহার সে তো একটু শালীনতা মাত্র। কাজেই সময় সময় আমরা একটু নফল ইবাদতের চেষ্টা চালালেও উত্তম আচার-ব্যবহার অর্জনের চেষ্টায় তেমন তৎপর নই। দুর্ব্যবহার ও অশালীন আচরণ দূর করে ভদ্রতা-নম্রতা অর্জনের চেষ্ট করি না। ভালো কথা, ভালো ব্যবহার, সুন্দর আচরণের মাধ্যমেই একজন ব্যক্তির সার্বিক পরিচয় ফুটে উঠে, তার উন্নত ব্যক্তিত্বের প্রমাণ মেলে। সুন্দর আচরণের মাধ্যমেই একজন ব্যক্তি কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়। যারা সবসময় মানুষের সাথে ভালো কথা বলে, সুন্দর আচরণ করে তাদের সমাজের, দেশের সবাই অত্যন্ত পছন্দ করে, ভালোবাসে, সম্মান ও শ্রদ্ধা করে। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনও তাদের অত্যন্ত পছন্দ করেন। একটি ভালো কথা, সুন্দর আচরণ একটি ভালো গাছের মতো। সুন্দর আচরণকারীর সামনে-পেছনে মানুষ তার প্রশংসা করে। তার জন্য মন খুলে দোয়া করে। ফলে আল্লাহ এবং আসমান-জমিনের ফেরেশতারাও তাকে অত্যন্ত পছন্দ করে। অপরদিকে খারাপ ব্যবহারে সম্পর্ক বিনষ্ট হয়। অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। সমাজের মানুষ তাকে অবহেলা, অবজ্ঞা ও ঘৃণার চোখে দেখে। তার কথার কোনো দাম দেয় না। আমাদের নবী ছিলেন সদা-সত্যভাষী, হিতভাষী, শুদ্ধভাষী, সুভাষী এবং মানুষের সাথে সুন্দর আচরণকারী। তাই তিনি ছিলেন সব মানুষের সেরা। কারো সাথে মুচকি হেসে কথা বলাই উত্তম আখলাক নয়। হ্যাঁ, এটাও উত্তম আখলাকের একটি অংশ। কিন্তু যদি এমন হয় যে, ওপরে ওপরে মুচকি হেসে কথা বলল, আর মন বিদ্বেষে পরিপূর্ণ থাকল তাহলে সেটা হবে কৃত্রিমতা। এর মাঝে ইখলাস নেই এবং এটা মুমিনের শান নয়। সুন্দর আচরণ আর ভালো কথা এমন একটি শিল্প যার কোনো ক্ষয় নেই। এখন সময় এসেছে মুসলমানদের এই শিল্পকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার। মুসলমানদের আবার বিশ্বের বুকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে সমাসীন হতে হলে, হৃত গৌরব ফিরে পেতে হলে সবারই উচিত ধনী-গরীব, রাজা-প্রজা, আমীর-উমরা, জাতি, ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী নির্বিশেষে সবার সাথে সুন্দর আচরণ করা।

প্রচুর সংখ্যক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তম নৈতিক চরিত্রের ফজিলত মর্যাদা এবং আরও অনেক হাদীসে উন্নত নৈতিক চরিত্র অর্জন ও খারাপ চরিত্র বর্জনের জন্য উম্মতকে উৎসাহিত করেছেন। ঈমানের উচ্চ আসনে আসীন হওয়ার জন্য উন্নত নৈতিক চরিত্র ও আচার ব্যবহারের ন্যায় আর কোনো আমল নেই।

আল কুরআনের দৃষ্টিতে সুন্দর আচরণ : আল্লাহর নবী ছিলেন সুন্দর আচরণের মূর্তপ্রতীক। মানুষের সাথে তিনি কখনও কর্কশ ভাষায় কথা বলেননি। তিনি ছিলেন কোমল হৃদয়ের অধিকারী।

১. আল্লাহ্পাক বলেন, হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল। (আহযাব-৭০)।

২. আল্লাহ্ বলেন, আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন, পক্ষান্তরে আপনি যদি রূঢ় ও কঠিন হৃদয় হতেন, তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করেন। (আল-ইমরান-১৫৯)।

৩. আল্লাহ্ বলেন, মুমিনদের জন্য আপনি আপনার ডানা অবনমিত করুন অর্থাৎ কোমল আচরণ করুন। (হিজর-৮৮)

৪. আল্লাহ্ বলেন, কেউ যখন তোমাকে সৌজন্যমূলক সম্ভাষণ জানাবে প্রতি উত্তরে তুমি তাকে তার চাইতে সুন্দর ধরনের সম্ভাষণ জানাও, কিংবা অন্তত ততটুকুই জানাও। (নিসা-৮৬)।

৫. আল্লাহ্ বলেন, তোমরা আল্লাহ্ ছাড়া কারও উপাসনা করবে না, পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম ও দরিদ্রদের সাথে সদ্ব্যবহার তথা সুন্দর আচরণ করবে এবং মানুষকে সুন্দর কথা বলবে। (বাকারা-৮৩)

৬. মহান আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেছেন, আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহ্বান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন উত্তম পন্থায়। (নাহল-১২৫)

৭. ইসলামের পথে যে ব্যক্তি মানুষকে আহ্বান করে সেই ব্যক্তি ও তার কথাই হচ্ছে সর্বোত্তম। এরশাদ হচ্ছে, যে আল্লাহ্র পথে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে আমি একজন আজ্ঞাবহ, তার কথা অপেক্ষা ভালো কথা বা উত্তম কথা কার? (হা-মীম সিজদাহ্-৩৩)

৮. মহান আল্লাহ্ বলেন, তোমরা তোমাদের পিতা-মাতা, নিকটাত্মীয়, এতিম, দরিদ্র, প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, পথিক এবং যারা তোমাদের অধিকারে এসেছে, সবার সাথে সুন্দর আচরণ কর। (নিসা-৩৬)।

৯. নবী প্রেরণের সে মহান উদ্দেশ্য উল্লেখ করতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘আল্লাহ ঈমানদারদের ওপর বড়ই অনুগ্রহ করেছেন যে, তিনি তাদের প্রতি তাদের মধ্য থেকে একজন রাসূল পাঠিয়েছেন। তিনি তাদের প্রতি তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করে শোনান, তাদের পরিশুদ্ধ করেন। তাদের কিতাব ও হিকমতের কথা শিক্ষা দেন। বস্তুত তারা ছিল এর পূর্বে পথভ্রষ্ট’। (আল-ইমরান)

১০. কথাবার্তা ও মৌখিক আচরণে একজন মুমিনকে কীভাবে শালীন হতে হবে সে ব্যাপারে আল্লাহ্ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘মানুষের সাথে সুন্দরভাবে কথাবার্তা বলো।’ (বাকারা : ৮৩)

১১. আল-কুরআনে ইরশাদ হচ্ছ, পৃথিবীতে দম্ভভরে পদচারণা করো না। নিশ্চয় তুমি তো ভূপৃষ্ঠকে কখনোই বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনোই পর্বত সমান হতে পারবে না। এসবের মধ্যে যেগুলো মন্দ কাজ সেগুলো তোমার পালনকর্তার কাছে অপছন্দনীয়। (বনী ইসরাইল-৩৮, ৩৯)

১২. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং ছিলেন উত্তম নৈতিক চরিত্রের সর্বোক্তম উদাহরণ। এর সভ্যতায় আল্লাহ্ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই আপনি উত্তম নৈতিক চরিত্রের ওপর প্রতিষ্ঠিত’। (আল-কালাম)

সুন্নাহ্র দৃষ্টিতে সুন্দর আচরণ : পবিত্র কুরআনের পাশাপাশি হাদিসেও সবার সাথে সুন্দর আচরণ করতে এবং দয়া, সহানুভূতি ও কোমলভাবে কথা বলতে বলা হয়েছে। সুন্দর আচরণের ফলে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। প্রেম-প্রীতি সুদৃঢ় হয় এবং অনেক সময় চিরশত্রু বন্ধু হয়ে যায়। সুন্দর আচরণের ফলে পিতা-মাতা, ভাই-বোন, উস্তাদ, পাড়া-প্রতিবেশী এমনকি সবাই তাকে ভালোবাসে। তার আগমনে মানুষ খুশি হয়।

১. হযরত আবদুল্লাহ ইব্নে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, মুমিন ব্যক্তি কখনও অভিশাপকারী, তিরষ্কারকারী হতে পারে না। অশ্লীল বাক্য ব্যয়ী ও অহেতুক বাক্য ব্যয়ীও হয় না। [তিরমিযী]।

২. হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, উত্তম কথা বা ভালো কথাও একটি সাদকা। (বুখারী ও মুসলিম)।

৩. প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, সদকা বা দান-খয়রাত মানুষকে শোচনীয় মৃত্যু হতে রক্ষা করে আর সুন্দর আচরণ আয়ুবর্ধক হয়। সুন্দর আচরণকারীকে আল্লাহ্ ভালোবাসেন।

৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ্ কোমল ব্যবহার করেন, তাই সব ব্যাপারে তিনি কোমল আচরণ পছন্দ করেন। [বুখারী ও মুসলিম]

৫. যে ব্যক্তি সুন্দর আচরণ থেকে বঞ্চিত সে কল্যাণ থেকেও সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত। [মুসলিম]

৭. হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, পরিপূর্ণ মুমিন সে নয়, যে উপহাস করে, অভিশাপ দেয়, মন্দ ভাষায় কথা বলে এবং যে বাঁচাল।

৮. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুমিন হয় উত্তম চরিত্রের অধিকারী। অর্থাৎ সে বদমেজাজী, বিদ্বেষ ভাবাপন্ন ও মানুষের সাথে রুক্ষ আচরণকারী হয় না। এটা মুমিনের শান নয়। মুসলমান তো অন্যের সাথে নম্র আচরণ করবে, রুক্ষ আচরণ করবে না।

৯. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সুন্দর আচরণই নেক আমল।’ [সহীহ মুসলিম]

১০. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যার আচার-ব্যবহার সুন্দর, সে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন সে আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে।’ [সুনানে তিরমিযী]

১১. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘অশোভন-অশ্লীল কথা ও আচরণের সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। আর যার আচরণ যত সুন্দর তার ইসলাম তত সুন্দর।’ [মুসনাদে আহমদ]

১২. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘যার আচার-ব্যবহার সুন্দর, আমি তার জন্য সর্বোচ্চ জান্নাতে একটি বাড়ির নিশ্চয়তা প্রদান করছি।’ [আবু দাউ]

১৩. স্বীয় উম্মতকে উন্নত নৈতিক চরিত্রের পথে ধাবিত করার মহাদায়িত্ব সম্পর্কে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ সচেতন। তিনি এরশাদ করেন, ‘আমাকে তো প্রেরণ করা হয়েছে উত্তম নৈতিক চরিত্রকে পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে।’ [আহমাদ/হাকেম]

১৪. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, ‘তোমার ভাইয়ের সাথে মুচকি হাসির বিনিময় করাও সদকার সওয়াব হয়ে যায়।’ [তিরমিযী]

১৫. তিনি এরশাদ করেন, ‘সর্বোত্তম ঈমানদার হচ্ছে ঐ লোক যার চরিত্র সর্বোত্তম। আর তোমাদের মধ্যে সে লোকগুলো সর্বোত্তম যারা তাদের স্ত্রী-পরিবারের প্রতি উত্তম আচরণে অভ্যস্ত।’ [আহমদ/তিরমিযী]

১৬. আরেকটি হাদীস তিনি বলেছেন, ‘নেক আমল তো হচ্ছে উত্তম চরিত্র।’ [মুসলিম]

১৭. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার জিজ্ঞাসিত হয়েছিলেন কোন আমল মানুষকে বেশি বেশি করে জান্নাতে নিয়ে যাবে? তিনি বললেন, ‘আল্লাহ্ ভীতি ও উত্তম চরিত্র।’ আবার তিনি জিজ্ঞাসিত হলেন- কোন আমল মানুষকে বেশি বেশি করে জাহান্নামে নিয়ে যাবে? তিনি বললেন, ‘মুখ (বচন) ও গোপন অঙ্গ (যিনা/ব্যাভিচার)।’ [তিরমিযী]

১৮. শুধু তাই নয়, উত্তম চরিত্র ও আচার-ব্যবহার এত উত্তম আমল যে, চরিত্রবান মুমিনরাই পরকালে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একান্ত সান্নিধ্যে থাকার সুযোগ পাবেন। তিনি এরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে ঐসব লোকেরাই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন আমার অতি নিকটে আসন পাবে, যাদের চরিত্র ও আচার-ব্যবহার উত্তম।’ [তিরমিযী]

১৯. আরেকটি হাদিসে তিনি বলেন, ‘মুমিন উত্তম চিরত্র ও আচার ব্যবহার দ্বারা নফল নামায রোজায় অনবরত ব্যস্ত আবেদের (ইবাদতকারীর) মর্যাদায় পৌঁছে যায়।’ [আবু দাউদ]

২০. অন্য হাদীসে এসেছে, ‘উত্তম নৈতিক চরিত্র ও আচার-ব্যবহারের ন্যায় নেকীর পাল্লা ভারী করতে আর দ্বিতীয় কোনো আমল নেই। আর আল্লাহ্ অশ্রাব্য গালমন্দ ও কটুকথা বলে এমন ব্যক্তিকে খুবই ঘৃণা করেন।’ [তিরমিযী/আবু দাউদ]

২১. আরেকটি হাদিসে এক সাহাবীর মাধ্যমে উম্মতকে অছিয়ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘তুমি যেখানে যে অবস্থায়ই থাকো না কেন, আল্লাহকে ভয় করে চলো। গুনাহ হয়ে গেলে সাথে সাথেই নেক আমল নিয়ে এগিয়ে আস, তা পাপ মোচনের কারণ হয়ে যাবে। আর মানুষের সাথে উত্তম আচরণ কর।’ [তিরমিযী]

২২. অহঙ্কার প্রকৃতপক্ষে মানুষের অন্তরের এটি কবীরা গোনাহ। মানুষের ব্যবহার ও চলাচলের যেসব বিষয় থেকে অহঙ্কার ফুটে ওঠে সেগুলোও অবৈধ। হাদীসে এর জন্য কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছেন যে, নম্রতা ও হেয়তা অবলম্বন করো। কেউ যেন অন্যের ওপর গর্ব ও অহঙ্কারের পথ অবলম্বন না করে এবং কেউ যেন কারো ওপর জুলুম না করে।’ [মুসলিম]

উত্তম আখলাকের অধিকারী কীভাবে হওয়া যাবে : উত্তম আখলাক কীভাবে পয়দা হবে। গোটা তাসাউফ এবং তাসাউফের সব মেহনতের উদ্দেশ্য উত্তম আখলাকের অধিকারী হওয়া। উত্তম আখলাখের মূল চাবিকাঠি হচ্ছে ‘তাওয়াযু’ বা বিনয়। এটিই উত্তম আখলাকের মূল। যার মধ্যে তাওয়াযু আছে সে কখনো বদ আখলাক ও দুর্ব্যবহারকারী হতে পারে না। এ কারণে আখলাকবিরোধী কোনো আচরণ প্রকাশ পাওয়ার অর্থই হচ্ছে আপনার মধ্যে তাকাববুর এসেছে। তাওয়াযু অর্থ অন্যকে নিজের থেকে বড় মনে করা এবং নিজেকে ছোট মনে করা। যদি আপনার অন্তরে এ কথা বসে যায় যে, আপনি ছোট আর সবাই আপনার চেয়ে বড় তাহলে আর কিছুর দরকার নেই। হয়তো বয়স ও ইলমের দিক থেকে বড় নয়, কিন্তু আল্লাহ্র কাছে মাকবুলিয়ত ও তাকওয়ার দিক থেকে বড়। হয়তো এই মুহূর্তে বড় নয়, কিন্তু ভবিষ্যতে আপনার চেয়ে বড় হতে পারে।

তাওয়াযু ও বিনয় : অন্তরে যেন নিজের বড়ত্বের চিন্তা না থাকে। বরং ভাবুন, আপনার যা কিছু আছে সব আল্লাহ্র দান। যখন ইচ্ছা করেন তিনি তা ছিনিয়েও নিতে পারেন। আপনার নিজস্ব কোনো গুণ নেই। আল্লাহ তায়ালা অন্যদের অনেক গুণ ও বৈশিষ্ট্য দান করেছেন। তাই তাদের অনেক কোমলতা ও যোগ্যতা রয়েছে। এভাবে নিজেকে বড় মনে না করার নামই তাওয়াযু বা বিনয়। যখন কারো অন্তরে তাওয়াযু থাকবে এবং সে বিশ্বাস করবে যে, আমি ছোট, অন্য সবাই বড় তাহলে সে কি কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করতে পারবে? পারবে না। বড়র সাথে কেউ খারাপ ব্যবহার করে না। মানুষ খারাপ আচরণ করে তখনই, যখন সে নিজেকে বড় মনে করে এবং অন্যকে ছোট ও তুচ্ছ মনে করে। সে চিন্তা করে যে, আমি তো বড়, সবার কর্তব্য আমার সম্মান করা ও অনুগত থাকা। কিন্তু ঐ লোকটা আপনার যথাযথ সম্মান করেনি। সুতরাং সে অন্যায় করেছে। সে আমার ভালো আচরণ পাওয়ার যোগ্য নয়। তো তাকাববুর ও অহঙ্কারই হচ্ছে সব মন্দ আচরণের মূল।

তাওয়াযু দ্বারা মর্যাদা বৃদ্ধি পায় : তাওয়াযু পয়দা হলে বদ-আখলাকী হয় না। এজন্যই আমি বলি, সুন্দর ব্যবহারের মূল হচ্ছে তাওয়াযু ও বিনয়। পক্ষান্তরে বদ আখলাক ও দুর্ব্যবহারের জড় হলো তাকাববুর ও অহঙ্কার। কেউ যদি উজব (আত্মমুগ্ধতা) ও তাকাববুর (অহঙ্কার) এ দুই প্রবণতার চিকিৎসা করে এবং তাওয়াযু হাসিলের চেষ্টা করে; কোনো আল্লাহওয়ালার সোহবতে থেকে তাওয়াযু অর্জন করে তাহলে ইনশাআল্লাহ্ দুর্ব্যবহারের ব্যাধি তার কাছেও আসতে পারবে না।

নিজের হাকীকত সম্পর্কে চিন্তা করুন : তাওয়াযু হাসিলের জন্য আপনাকে সবার আগে নিজের হাকীকত সম্পর্কে চিন্তা করতে হবে। আপনি কী? কীভাবে আপনার সৃষ্টি? কুরআন মজিদে আল্লাহ্ তায়ালা দুই শব্দে মানুষের হাকীকত বলে দিয়েছেন। যদি মানুষ এটুকু চিন্তা করে যে, তাকে কী থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে তাহলে তার সব অহঙ্কার দূর হয়ে যাবে। তার সৃষ্টির মূলে এক ফোঁটা বীর্য। অন্য আয়াতে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, আমি কি তোমাদের এক নিকৃষ্ট ও গান্দা পানি থেকে সৃষ্টি করিনি? যদি মানুষ তার মূল সম্পর্কে চিন্তা করে তাহলে তার মস্তিষ্কে অহঙ্কার আসতে পারে না। তেমনি যদি তার শেষ পরিণতি নিয়ে ভাবে যে, যখন তার মৃত্যু হবে, তখন তার প্রিয়জনরাও তাকে ঘরে রাখবে না। কারণ ঘরে রাখলে পচে যাবে এবং দুর্গন্ধ বের হবে। সুতরাং কবরে দাফন করে আসবে। তো এই যখন তোমার শুরু ও শেষ তাহলে কীসের তাকাববুর? কী নিয়ে অহঙ্কার?

বিনয় : নিজকে বড় মনে না করে ছোট মনে করাই বিনয়। উত্তম আখলাকের মূল চাবিকাঠি হচ্ছে বিনয়। এটা উত্তম আখলাকের মূল। হাদীস শরীফে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, অর্থাৎ যে আল্লাহ্র (সন্তুষ্টির) জন্য নিজেকে নিচু করে আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন। [মুসনাদে আহমদ]

শৌচাগার থেকেও শিখতে পারি : থানভী (রাহ.) বলতেন, কখনো যদি নিজেকে বড় মনে হয় তাহলে বাইতুল খালায় (পায়খানায়) আপনার যে অবস্থা হয় তা নিয়ে একটু চিন্তা করেন। ঐ অবস্থায় কেউ যদি আপনাকে দেখে তাহলে কেমন হবে? ঘৃণায় চোখমুখ কুঁচকে যাবে এবং দ্রুত সে ঐ স্থান ত্যাগ করবে! আল্লাহ্ তায়ালা দেহের ওপর চামড়ার আবরণ দিয়ে দিয়েছেন। তা যদি সরিয়ে ফেলা হয় তাহলে তো ভেতরে শুধু নাপাকি আর নাপাকি। কোথাও রক্ত, কোথাও পুঁজ, কোথাও পেসাব, কোথাও পায়খানা। আল্লাহ্র দেয়া চামড়ার আবরণ তোমার সব নাপাকি ঢেকে রেখেছে। এই তো আপনার হাকীকত! অথচ আপনি অহঙ্কার করেন, আমি এই, আমি সেই। আমি এই করব, সেই করব। আল্লাহ যদি তোমার মাথার স্ক্রুটা একটু ঢিলা করে দেন তাহলেই সব শেষ, আপনার সব হম্বিতম্বি খতম। এরপরও কি নিজেকে বড় মনে করা যায়? অহঙ্কার হচ্ছে শয়তানের ধোঁকা। শয়তান আপনাকে আপনার প্রকৃত অবস্থা ভুলিয়ে দিয়েছে। সুতরাং নিজের হাকীকত নিয়ে চিন্তা করুন ও ফিরে আসুন।

নিজেকে সেবক মনে করা

সব ঝগড়া-ফাসাদের মূল হলো আমরা নিজেকে মাখ্দুম মনে করি। আমরা চাই, সবাই আমার খাতির-তোয়াজ করুক, আমার খেদমত করুক। ভাই! নিজেকে মাখদুম নয়, খাদেম ও সেবক মনে করুন। আমি সবার খাদেম। ছোটরাও খাদেম, বড়রাও খাদেম। যদিও খেদমতের ধরন আলাদা আলাদা। তবে খাদেম আমি সবার। উস্তাদ যিনি ছাত্রকে পড়াচ্ছেন তিনি আসলে ছাত্রের খেদমত করছেন। এজন্য উস্তাদের উচিত নিজেকে তালিবুল ইলমের খাদেম মনে করা। তেমনি নিজেকে নিজের বিবি-বাচ্চার খাদেম মনে করুন। ভাই-বোন ও আত্মীয়-স্বজনের খাদেম মনে করুন। এভাবে সবার খাদেম হয়ে যান এবং যার সাথেই সাক্ষাৎ হয়, মনে করুন আপনি তার খাদেম।

পদমর্যাদার ক্ষেত্রে ভিন্ন আচরণ : কর্তা ও প্রতাপশালীর সামনে সবাই বিনয় প্রকাশ করে, তার আদেশ পালন করে। কিন্তু প্রকৃত বিনয় ও তাওয়াযু যা প্রশংসনীয় তা হলো, নিজের সমপর্যায়ের লোকদের সাথে এবং নিজের থেকে ছোটদের সাথে তাওয়াযুর আচরণ করা। এটা ঠিক যে, কখনো কখনো দায়িত্বের কারণে কাউকে শাসন করতে হয়, কখনো কখনো শাস্তিও দিতে হয়। যেমন উস্তাদ শাগরিদকে শাস্তি দেয়, পিতা সন্তানকে শাস্তি দেয়। এ শাসন ও শাস্তিও খেদমত। ওই সময়ও দায়িত্বশীলকে ভাবতে হবে যে, কর্তব্যের খাতিরে আমাকে এই কাজ করতে হচ্ছে। এজন্য নয় যে আমি বড়, সে ছোট। কারণ এমন তো হতে পারে, তার মর্যাদা আল্লাহ্র কাছে আমার চেয়ে বেশি।

তাওয়াযু আসে সোহবত দ্বারা : সোহবতের দ্বারা তাওয়াযু পয়দা হয়। বিনয়ীদের সোহবত ইখতিয়ার করুন আপনার মাঝে বিনয় আসবে। অহঙ্কারীর সংশ্রবে থাকলে আপনার মাঝেও অহঙ্কার আসবে। সুতরাং যাদের আল্লাহ তায়ালা তাওয়াযু দান করেছেন তাদের সোহবতে থাকুন এবং নিজের হাকীকত নিয়ে চিন্তা করুন এবং একথা ভালোভাবে হৃদয়ঙ্গম করুন যে, আখেরাতের পুরস্কার অহঙ্কারীর জন্য নয়। আখেরাতের পুরস্কার তারই প্রাপ্য, যে বিনয়ী, যে অবনতমস্তক, যে নিজেকে বড় মনে করে না। আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে তাকাববুর বা অহঙ্কার দূর করে সুন্দর ব্যবহারের অধিকারী বানিয়ে দিন। আমীন।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:৩৪

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: এগুলো মেনেই গত ৫বছর নির্যাতিত! ১২ বছরের জুনিয়রের কাজ আামাকে দিয়ে করিয়ে নেয় ম্যানেজার। এগুলোর মূল্য অন্তত ঢাকার কোন অফিসে নেই, আমার জানামতে, তেলবাজি আট দলবাজি চলছে হরদম! কাজ করা সৎ লোকেরা অপমানিত হয় প্রতি নিয়ত।

২| ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশের কোনো অফিসেই লোকজন আরামে কাজ করতে পারে না। অফিস পলিট্রিক্স বলে একটা কথা আছে। অফিস গুলোতে একটা গ্রুপিং হয়। এটা খুব খারাপ।

৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:১৪

একাল-সেকাল বলেছেন: অফিস পলিট্রিক্স এর নিচে চাপা পরে যায় ধর্মবানী

৪| ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১২

শেরজা তপন বলেছেন: কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: এগুলো মেনেই গত ৫বছর নির্যাতিত! ১২ বছরের জুনিয়রের কাজ আামাকে দিয়ে করিয়ে নেয় ম্যানেজার :)

আপনার কথাগুলো বেশ ভাল বলেছেন। কিন্তু এগুলো আদরে ভাল চাকর হবার মুল শর্ত!

৫| ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৩

শেরজা তপন বলেছেন: কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: এগুলো মেনেই গত ৫বছর নির্যাতিত! ১২ বছরের জুনিয়রের কাজ আামাকে দিয়ে করিয়ে নেয় ম্যানেজার :)

আপনার কথাগুলো বেশ ভাল বলেছেন। কিন্তু এগুলো আদরে ভাল চাকর হবার মুল শর্ত!

৬| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:০৮

ওমেরা বলেছেন: আমাদের, সবার সাথে উত্তম আচরন করতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্ঠির জন্য আর আমাদের উত্তম আচরনের জন্য দুনিয়াতেও কল্যাণ লাভ করতে পারি ।
অনেক সুন্দর লিখেছেন অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৭| ৩১ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৫২

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: @শেরজা তপন বলেছেন:

---হয়তো আপনার অভিজ্ঞতা আমার চেয়ে বেশি! --- আর আমি খাই সুজি.....তাই কম কম বুঝি!

৮| ৩১ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:১৭

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:




অনেক শিক্ষণীয় একটি পোস্ট। লেখককে অভিনন্দন!
সমাজে বা কর্মক্ষেত্রে ভালো না থাকার অনেক কারণ থাকতে পারে, কিন্তু ভালো থাকার (সুন্দর আচরণের) কোন বিকল্প নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.