![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আল্লাহ তাআলা রাতকে মানুষের বিশ্রামের জন্য নির্ধারিত করেছেন। দিনকে জীবিকা অর্জনের জন্য আর রাতের অন্ধকারকে মানুষের ঘুমের জন্য আচ্ছাদন হিসেবে তৈরি করেছেন বলে কুরআনুল কারিমের সূরা নাবায় ঘোষণা করেছেন। মানুষের এ ঘুম মৃত্যুর ন্যায়। ঘুমালে মানুষের জাগতিক চিন্তা চেতনা বা কোনো উপলব্ধি থাকে না। তাই ঘুমের সময় যাতে মানুষের কোনো বিশাল ক্ষতি বা পেরেশানি না হয় সেজন্য রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় বিশ্বনবী বেশকিছু আমল করতেন। যাতে ঘুম নিরাপদ ও প্রশান্তিদায়ক হয়। ঘুম সম্পর্কে হাদীসে একাধিক আমল করার কথা এসেছে। হাদীসের সেসব আমল থেকে কিছু আমল তুলে ধরা হলো-
১. ওজু করা :
ওজু করে শয়ন করা। হযরত বারা ইবনে আ’যেব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারা ইবনে আ’যেব (রাঃ)-কে বলেন, “যখন তুমি তোমার শয্যা গ্রহনের ইচ্ছা করবে, তখন নামাযের ন্যায় ওজু করে ডান কাত হয়ে শয়ন করবে।’’ (বুখারী, মুসলিম)
২. ডান কাতে কিবলামুখী হয়ে ঘুমানো
ঘুমানোর সময় ডান কাতে কিবলামুখী হয়ে শোয়া সুন্নাত। উপুড় হয়ে শয়ন করতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ এভাবে শয়ন করাকে আল্লাহ তা‘আলা পছন্দ করেন না। (বুখারী,সহীহ ইবনে হিব্বান)
৩. তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চেষ্টা করা :
ইশার নামাযের পর যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চেষ্টা করা, যাতে তাহাজ্জুদের জন্য উঠা সহজ হয়। (বুখারী)
বি.দ্র. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যমীন, চৌকি, কাপড়ের বিছানা, চাটাই, চামড়ার বিছানা ইত্যাদির উপর শয়ন করেছেন বলে হাদীসে বর্ণিত আছে। (বুখারী, তিরমিযী)
৪. বিছানা ভালভাবে ঝেড়ে নেয়া :
শোয়ার পূর্বে বিছানা ভালভাবে ঝেড়ে নেয়া। (বুখারী)
৫. ঘুমানোর দোয়া পড়া :
ডান কাতে শুয়ে ঘুমানো সুন্নত। ডান কাতে শুয়ে ঘুমানোর আগে এই দোয়া পড়তে হবে-
ক) হযরত হুজায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন রাতে শয্যাগ্রহণ করতেন তখন তিনি তাঁর হাত গালের নিচে রাখতেন। অতঃপর বলতেন- ‘আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুত ওয়া আহইয়া।’
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার নামে মৃত্যুবরণ করি এবং তোমার নামেই জীবিত হই।’ (বুখারী, মুসলিম ও মিশকাত)
খ) হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ বিছানায় ঘুমাতে যায়, তখন যেন সে বলে- ‘বিসমিকা রাব্বি ওয়াদাতু জাম্বি ওয়া বিকা আরফাউহু ইন আমসাকতা নাফসি ফারহামহা ওয়া ইন আরসালতাহা ফাহফাজহা বিমা তাহফাজু বিহি ইবাদাকাস সালিহিন।’
অর্থ : হে আমার প্রভু! তোমার নামে আমার পার্শ্ব রাখলাম এবং তোমার নামেই উঠব। যদি তুমি আমার আত্মাকে রেখে (মৃত্যু) দাও তবে তার প্রতি দয়া কর। আর যদি ফেরত (জাগিয়ে) দাও, তাহলে তার প্রতি লক্ষ্য রাখ। যেমনভাবে তুমি লক্ষ্য রাখ তোমার নেক বান্দাদের দিকে।’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত)
৬. ঘুমানোর পূর্বে তিনবার এসতেগফার পড়া:
ঘুমানোর পূর্বে তিনবার এসতেগফার ও কালেমায়ে তাইয়্যেবা পাঠ করবে। (তিরমিযী)
৭. শয়নের পূর্বে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে নিম্নে বর্ণিত কাজগুলো করা :
১. দরজা বন্ধ করা। ২. মশক বা পানির পাত্র এবং খাদ্য দ্রব্যের পাত্র ও অন্যান্য পাত্রসমূহ ঢেকে রাখা। যদি ঢাকার জন্য কোন বস্তু না পাওয়া যায়, তাহলে ‘বিসমিল্লাহ’ পড়ে তার মুখে একটি লাটি বা ছড়ি রেখ দেয়া, ৩. বাতি নিভানো। (বুখারী)
৮. শোয়ার সময় তাকবীর ও তাসবীহ পাঠ করা:
৩৩ বার তাসবীহ (সুবহা’নাল্লাহ), ৩৩ বার তাহ’মীদ (আলহা’মদুলিল্লাহ) ও ৩৪ বার তাকবীর (আল্লাহু আকবার) পাঠ করার ফযীলতঃ
ক. কারো একজন দাস থাকলে দিনে-রাতে যে সেবা-যত্ন ও সাহায্য করতো তার থেকেও বেশি উপকার পাওয়া যাবে এই আমল করলে।
হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু আনহা আমার কাছে আটা পেষার দরুন তার হাতে ফোসকা পড়ে যাওয়ার অভিযোগ করলেন। আমি বললাম তোমার পিতা (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে গিয়ে যদি একটা খাদেমের আবদার জানাতে। (ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে খাদেম দেওয়ার কথা বললেন তখন) তিনি (রাসূল) বললেনঃ তোমার জন্য কি খাদেমের চাইতে উত্তম কোন কিছু বলব না? (তা হল) তোমরা যখন তোমাদের শয্যাগ্রহণ করবে তখন আলহা’মদু লিল্লাহ ৩৩ বার, সুবহা’নাল্লাহ ৩৩ বার এবং আল্লাহু আকবার ৩৪ বার পড়বে। এটা তোমাদের চাকরের চেয়েও উত্তম।” (বুখারী, মুসলিম, সুনানে আত-তিরমিজি)
খ. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- “যখন শয্যাগ্রহণ করবে তখন সুবহানাল্লাহ, আল্লাহু আকবার এবং আলহামদু লিল্লাহ পাঠ করবে একশত বার। এটা তোমাদের যবানে তো হল একশ, কিন্তু মীযানের পাল্লায় হবে এক হাজার (নেকী)। (সুনানে আত-তিরমিজি)
৯. ঘুমে দুঃস্বপ্ন দেখলে :
দুঃস্বপ্ন দেখলে তিনবার ‘আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানীর রাজীম’ পড়ে বাম দিকে থুথু ফেলে পার্শ্ব পরিবর্তন করে শোয়ে নিম্নের দোয়াটি পড়বে। আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন শাররী হাজিহীর রুঈয়া।
১০. দরূদ শরীফ পাঠ করা :
ঘুমানোর পূর্বে কয়েকবার দরূদ শরীফ পাঠ করা এবং তাসবীহে ফাতেমী অর্থাৎ ৩৩ বার সূবাহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়া। (বুখারী)
১১. কুরআন তেলাওয়াত করা :
ঘুমানোর পূর্বে কিছু পরিমাণ কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা। যথা : আলহামদু শরীফ, সূরা কাফিরূন, আয়াতুল কুরসী, আমানার রসূল থেকে সূরা বাক্বারার শেষ পর্যন্ত, সূরা মূলক, আলিফ লাম মীম সিজদাহ ইত্যাদি তিলাওয়াত করা বেশি পড়া সম্ভব না হলে কমপক্ষে ছোট ২/ ৩ টি সূরা পড়ে নেয়া। (তাবারানী কাবীর,আল আদাবুল মুফরাদ, বুখারী)
১২. সূরা ইখলাস পাঠ করা (৩ বার) :
সূরা ইখলাস ৩ পাঠ করলে এক কুরআন খতম করার সমান ছাওয়াব পাওয়া যায় এবং ১০ বার পাঠ করলে তার জন্য জান্নাতে একটা বাড়ি বানানো হয়। (বুখারী, নাসায়ী, আবু দাউদ)
১৩. সূরা কাফিরুন পাঠ করা (১ বার) :
সূরা কাফিরুন শিরক থেকে বাচতে সাহায্য করবে।
ক) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “(কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরুন বা সূরা কাফিরুন), এই সূরাটিতে শিরক থেকে বাঁচার শিক্ষা রয়েছে।” আবু দাউদ, তিরমিযি, সহীহ তারগীব, আহমাদ, ইমাম ইবেন হাজার আসকালানী ও শায়খ আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।
খ) হযরত ফরওয়া ইবন নাওফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি নবী (সাঃ) এর কাছে এসে বললেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ (সঃ)! আমাকে এমন কিছু শিখিয়ে দিন যা আমি আমার শয্যা গ্রহণের সময় বলতে পারি। তিনি বললেন: ক্কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরুন সূরাটি পাঠ করবে। কেননা এটি হল শিরকের সাথে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা।
১৪. সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করা:
১. হযরত আবু মাসউদ আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে কেউ রাতে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত (২৮৫+২৮৬) পাঠ করবে। তার জন্য আয়াত দুটি যথেষ্ট হবে।’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত)
সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করার ফযিলত
ক. রাত জেগে তাহাজ্জুদ নামায পড়ার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে।
খ. বালা-মুসিবত ও যে কোনো ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ঠ হবে।
গ. জিন ও শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ঠ হবে।
ঘ. আয়াতগুলো পড়ে শেষ ‘আমিন’ বললে আয়াতগুলোতে যেই দোয়া রয়েছে সেইগুলো আল্লাহ তাআ’লা কবুল করে নেন।
২. উক্ত দুই আয়াতের এ ফযিলতের কারণেই হযরত আলী (রাঃ) বলেন- “আমার মতে যার সামান্যও বুদ্ধিজ্ঞান আছে, সে যেন এ দুটি আয়াত পাঠ করা ছাড়া নিদ্রা না যায়।”
৩. বিখ্যাত হাদীস গ্রন্থ “রিয়াদুস সালেহীন” এর লেখক ও সহীহ মুসলিমের ভাষ্যকার, ইমাম আন-নববী (রহঃ) বলেন, “এর অর্থ কেউ বলেছেন: কিয়ামুল লাইল বা তাহাজ্জুদ নামাযের জন্য যথেষ্ট হবে। কেউ বলেছেন: শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ট হবে। কেউ বলেছেন: বালা-মুসিবত থেকে নিরাপত্তা পাওয়া যাবে। তবে সবগুলো অর্থ সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
(সহীহ মুসলিম)।
৪. সহীহ বুখারীর ভাষ্যকার, আমিরুল মুমিনিন ফিল হাদিস, ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ) এই অভিমত সমর্থন করে বলেন, উপরের সবগুলো অর্থ নেওয়া সঠিক। আল্লাহ ভালো জানেন। প্রথম অর্থটি (তাহাজ্জুদের সমান সওয়াব পাওয়া) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউ’দ (রাঃ) থেকে একটি মারফু হাদীসে স্পষ্ট উল্লেখ আছে। (ফাতহুল বারী)
১৫. আয়াতুল কুরসি পাঠ করা :
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যদি কেউ ঘুমানোর সময় আয়াতুল কুরসি পাঠ করে, তাহলে শয়তান তার কাছে আসতে পারে না।’ সকাল পর্যন্ত তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন হেফাজতকারী ফিরিশতা তাকে নিরাপত্তা দেবে। এবং ভোর পর্যন্ত শয়তান তার ধারে-কাছেও আসতে পারবে না। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত)
১৬. সূরা মূলক পড়া :
ক) প্রতিদিন (দিনে বা রাতে যেকোনো এক সময়) সূরা মূলক মূলক তেলাওয়াত করা গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত : “রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আলিফ লাম মীম তানজিলুল কিতাব (সূরা আস-সাজদা) ও তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলকু (সূরা মূলক) তেলাওয়াত না করে কোনদিন ঘুমাতেন না”। (সুনানে আত-তিরমিযী, মুসনাদে আহমাদ)
খ) এই সূরাটি নিয়মিত প্রতিদিন তেলাওয়াত করলে কবরের আজাব থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতের বেলা সূরা মূলক তেলাওয়াত করবে আল্লাহ তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন। (তিরমিজি, সুনানে আন-নাসায়ী)
গ) এই সূরা প্রত্যেকদিন রাতের বেলা তেলাওয়াত করলে কিয়ামতের দিন শাফায়াত করে জান্নাতে নিয়ে যাবে ইন শা’আল্লাহ।
ঘ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ “কুরআনে এমন একটা সূরা আছে যার মধ্যে ৩০টা আয়াত রয়েছে যেটা একজন ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করবে এবং তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর সেটা হলো সূরা মূলক।
১৭.ঘুমের পূর্বে সূরা নাস, ফালাক ও ইখলাস পড়া :
হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন রাতে বিছানায় (ঘুমাতে) যেতেন, তখন তার দু’হাত একত্রিত করে হাতের তালুতে ফুঁ দিতেন এবং সূরা নাস, সূরা ফালাক্ব ও সূরা ইখলাছ পড়তেন। অতঃপর (এ তিন সূরা পড়ে হাতের তালুতে ফুঁ দিয়ে) দু’হাত দ্বারা যত দূর সম্ভব শরীর মুছে ফেলতেন। মাথা, মুখ ও শরীরের সম্মুখভাগ মুছতেন। এরূপ তিনবার করতেন।’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত)
১৮. বিশেষ করে ঘুম না আসলে বিশ্বনবী এ দোয়া পড়তে বলেছেন-
হযরত সুলাইমান ইবনে বুরাইদা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, হযরত খালেদ ইবনে ওয়ালিদ আল-মাখজুমি রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে অভিযোগ দায়ের করে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! দুঃশ্চিন্তা ও মানসিক চাপের কারণে আমি রাতে ঘুমাতে পারি না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, যখন তুমি বিছানায় ঘুমাতে যাও তখন বলো- আল্লাহুম্মা রাব্বাস সামাওয়াতিস সাবয়ি ওয়া মা আজাল্লাত ওয়া রাব্বাল আরদিনা ওয়া মা আকাল্লাত ওয়া রাব্বাশ শায়াত্বিনি ওয়া মা আদাল্লাত কুন লি ঝারাম মিন শাররি খালক্বিকা কুল্লিহিম ঝামিআ। আইঁইয়াফরুত্বা আলাইয়্যা আহাদুম মিনহুম আও আইঁইয়াবগিয়া আলাইয়্যা আয্যা ও ঝাল্লা ছানাউকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা ও লা ইলাহা ইল্লা আংতা।’ (মুসলিম, মিশকাত)
অর্থ : “হে আল্লাহ! সাত আকাশের প্রভু এবং যার ওপর তা ছায়া বিস্তার করেছে, সাত জমিনের প্রভু এবং যা কিছু তা উত্থাপন করেছেন, আর শয়তানদের প্রতিপালক এবং এরা যাদেরকে বিপথগামী করেছে! তুমি আমাকে তোমার সব সৃষ্টিকুলের অনিষ্টতা থেকে রক্ষার জন্য আমার প্রতিবেশী হয়ে যাও, যাতে সেগুলোর কোনোটি আমার ওপর বাড়াবাড়ি করতে না পারে অথবা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে না পারে। সম্মানিত তোমার প্রতিবেশী, সুমহান তোমার প্রশংসা। তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তুমি ব্যতিত আর কোনো মাবুদ নেই।’
১৯. রাত্রে ঘুম ভেঙ্গে গেলে তার দোয়া :
হযরত উবাদা ইবনে সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ উবাদা ইবনে সামিত (রাঃ) নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি রাত্রে নিদ্রা ভঙ্গ হলে বলে, (লা-ইলাহা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা-শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া সুবহানাল্লাহ আল্লাহু আকবার ওয়ালা হাউলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।) অর্থাৎ, আল্লাহ্ ছাড়া সত্যিকার কোন উপাস্য নেই। তিনি এক ও একক। তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব ও সমস্ত প্রশংসা তাঁরই। তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাশীল। আল্লাহ্রই সমস্ত প্রশংসা। তিনি পূত-পবিত্র ও মহান। তাঁর সাহায্য ব্যতীত কারো ভাল কাজ করার ও মন্দ কাজ থেকে বেঁচে থাকার শক্তি নেই। তারপর সে যদি আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে, “হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা করে দাও, অথবা অন্য দোয়া করে, তাহলে তার দোয়া কবুল হয়।” (বুখারী)
২০. নিদ্রা থেকে জাগ্রত হয়ে পড়ার দোয়া :
ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর তিনবার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ এবং কালেমায়ে তাইয়্যেবা পড়ার পর
ক) আলহা’মদু লিল্লা-হিল্লাযী আহ্ইয়া-না- বাঅ’দা মা- আমা-তানা- ওয়া ইলাইহিন্-নুশুর।
অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি (নিদ্রারূপ) মৃত্যুর পর আমাদেরকে পুনরায় জীবিত করেছেন, আর আমরা সবাই তাঁরই কাছে ফিরে যাবো। (সহীহ বুখারী, হাদীসটি ইমাম বুখারী হুযায়ফা ইবনে ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।)
মুমিন মুসলমানের উচিত, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশিত আমল ও দোয়াগুলো যথাযথভাবে মেনে চলা। রাতের যাবতীয় অনিষ্টতা থেকে হেফাজত থাকা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আমলগুলো নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: আমলের ফযিলত কি আপনি কখনও পেয়েছেন?