![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হজ্জ আল্লাহর প্রেম ও বিশ্ব মুসলিমের ভ্রাতৃত্ববন্ধনের অন্যতম পথ। আর্থিক ও শারীরিকভাবে সামর্থ্যবানদের ওপর হজ্জ অবশ্য পালনীয় একটি বিধান। বস্তুত হজ্জ ইসলামি শরিয়তের অন্যতম একটি স্তম্ভ ও রুকন। সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত প্রসিদ্ধ হাদীসে রয়েছে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, পাঁচটি স্তম্ভের ওপর ইসলামের ভিত্তিঃ শাহাদত বা আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল- একথার সাক্ষ্য দেয়া, নামাজ কায়েম করা, জাকাত আদায় করা, রমজানের রোজা রাখা এবং সামর্থ্য থাকলে বায়তুল্লাহর হজ্জ করা। (সহীহ বোখারীঃ ৮, সহীহ মুসলিমঃ ১৯) প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একাধিক হাদীসে আমাদের হজ্জের গুরুত্ব, সওয়াব ও উপকারিতা বুঝিয়েছেন। সাহাবি আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবীজি বলেন, "জান্নাতই হচ্ছে মকবুল হজ্জের একমাত্র প্রতিদান।" (সহীহ বোখারীঃ ১৭৭৩, সহীহ মুসলিমঃ ৪৩৭)
তবে যাদের হজ্জে অথবা ওমরায় যাওয়ার সামর্থ্য ও সক্ষমত নেই, তাদের জন্যও দয়াবান আল্লাহ এমন কিছু পথ বের করে দিয়েছেন; যেগুলো দ্বারা দুর্বল বান্দারা মকবুল হজ্জের অথবা ওমরাহর সওয়াব পেয়ে যেতে পারে। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সেসব রকমারি পথ বা আমল বাতলিয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন হাদিসে। সেসব হাদিসের কোনোটা সহীহ বোখারী, সহীহ মুসলিম, সুনানে তিরমিজি কিংবা অন্য কোনো হাদীস গ্রন্থে অকাট্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে আবার কোনোটা ওই মানের না হলেও জয়িফ কিংবা মওজু নয়, পারিভাষিক দৃষ্টিকোণ থেকে যেগুলোকে হাসান বলা হয়। অতএব আমরা যদি বিশ্বাস এবং সওয়াবের দৃঢ় আশ্বাস নিয়ে এসব আমল করতে পারি, তবে ইনশাআল্লাহ অনেক বিরাট প্রতিদানের অধিকারী হতে পারবো।
১. হজ্জের সওয়াবঃ
হজ্জের সওয়াব সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ্জ করে এবং অশ্লীল ও গুনাহর কাজ থেকে বেঁচে থাকে, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। আর মকবুল হজের পুরস্কার জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুই নয়। (বুখারী, খণ্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ২০৬)
২. জামাতে নামাজ আদায়ঃ
মসজিদে নামাজের জামাতে হাজির হওয়া। আবু উমামা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায় করলো, সে যেন হজ্জ করে আসলো। আর যে ব্যক্তি নফল নামাজ আদায় করতে মসজিদে গেলো, সে যেন ওমরাহ করে আসলো। ’ (তাবারানিঃ ৭৫৭৮)
৩. ফরজ নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাওয়াঃ
আবু উমামা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ফরজ নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে নিজের ঘর থেকে ওজু করে (মসজিদের দিকে) বের হয়, সেই ব্যক্তির সওয়াব ইহরাম বাঁধা হাজির মতো হয়। ’ (আহমাদ, খণ্ডঃ ২, পৃষ্ঠাঃ ২১২; আবু দাউদঃ ৫৫৮; তারগিবঃ ৩২০)
৪. ইলমে দ্বীন (দ্বীনের জ্ঞান) শেখা বা শেখানো উদ্দেশ্যে মসজিদে যাওয়ারঃ
দ্বীন শিখা বা শিখানোর উদ্দেশ্যে মসজিদে যাওয়া। এটা অনেক বড় সওয়াবের একটা কাজ। হযরত আবু উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "যে ব্যক্তি মসজিদে গেল কোনো ভালো কথা শিখা বা শিখানোর উদ্দেশ্যে, সে পরিপূর্ণরূপে হজ্জ আদায়কারী একজন ব্যক্তির ন্যায় সওয়াব লাভ করবে।" (তাবারানিঃ ৭৪৭৩) আল্লামা নুরুদ্দিন হায়সামি (রহ.) বলেন, এর সনদ সহীহ। (মাজমাউয যাওয়াইদ, ১/১২৩, হাদীসঃ ৪৯৯, তাবারানিঃ ৭৪৭৩)
৫. ইশরাকের নামাজ পড়াঃ
ফজরের নামাজ আদায়ের পর মসজিদে সূর্যোদয় পর্যন্ত অবস্থান করা। আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করে সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদে বসে আল্লাহর জিকির করলো, এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করলো, সে ব্যক্তি হজ্জ ও ওমরাহর সওয়াব নিয়ে ফিরলো। ’ (তিরমিজিঃ ৫৮৬) হাদীসটি হাসান।
৬. পিতা-মাতার সেবা ও তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহারঃ
মাতা-পিতার সেবা এবং তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা। হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেন, জনৈক ব্যক্তি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলল, আমি জিহাদে অংশগ্রহণ করতে চাই, কিন্তু আমার সেই সামর্থ্য ও সক্ষমতা নেই। নবীজি প্রশ্ন করলেন, তোমার মাতা-পিতার কেউ কি জীবিত আছেন? লোকটি বলল, আমার মা জীবিত। প্রত্যুত্তরে নবীজি বললেন, তাহলে মায়ের সেবা করে আল্লাহর নিকট জিহাদে যেতে না পারার অপারগতা বা ওজর পেশ কর। এভাবে যদি করতে পার এবং তোমার মা সন্তুষ্ট থাকেন তবে তুমি হজ্জ, ওমরাহ এবং জিহাদের সওয়াব পেয়ে যাবে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর এবং মায়ের সেবা কর।" (মাজমাউয যাওয়াইদঃ ১৩৩৯৯) হায়সামি (রহ.) বলেন, হাদীসটি সহীহ।
৭. রমজানে ওমরাহ পালন করাঃ
রমজানে ওমরাহ পালন করা। সাহাবি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, "রমজানে ওমরাহ আদায় করলে আমার সঙ্গে হজ্জ আদায়ের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে।" (সহীহ বোখারীঃ ১৭৮২, সহীহ মুসলিমঃ ২২২)
৮. সকাল-সন্ধ্যার জিকিরঃ
নামাজের পর আল্লাহর জিকির করা। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, দরিদ্র লোকেরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলল, সম্পদশালী ব্যক্তিরা বেশি সওয়াব এবং জান্নাত নিয়ে যাচ্ছে! আমরা যেমন নামাজ পড়ি; তারাও পড়ে! আমরা যেমন রোজা রাখি; তারাও রাখে! উপরন্তু তাদের রয়েছে অতিরিক্ত সম্পদ; ফলে তারা হজ্জ করতে পারে, ওমরাহ করতে পারে, জিহাদে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সদকাও দিতে পারে! নবীজি তাদেরকে বললেন, আমি কি তোমাদের এমন একটি আমল শিখিয়ে দিব না; যা করতে পারলে তোমরা অগ্রগামীদের স্তরে পৌঁছে যাবে এবং যারা তোমাদের পেছনে তারা তোমাদের স্তরে পৌঁছতে পারবে না, তোমরা হবে শ্রেষ্ঠতম মানব, তবে অন্য কেউ এটি করলে সেও তোমাদের মতো হয়ে যাবে। আমলটি হলো, প্রত্যেক নামাজের পর তেত্রিশবার করে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার পাঠ করবে।" (সহীহ বোখারীঃ ৮০৭, সহীহ মুসলিমঃ ১৬৭৪)
আবুদ্দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, আমরা একবার রাসূল (সাঃ)-কে বলি, হে আল্লাহর রাসূল! ধনী ব্যক্তিরা সওয়াবের ক্ষেত্রে আমাদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তারা হজ্জ করেন, আমরা হজ্জ করি না। তারা সংগ্রাম-যুদ্ধে শরিক হন, আমরা শরিক হতে পারি না। আরো আরো...। তখন রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন আমালের কথা বলবো যেটা তোমরা করলে তোমরা তারা যে আমল করে তারচেয়ে বেশি সওয়াব পাবে? আর সেটা হলো- প্রতি নামাজের পর তোমরা ৩৪ বার আল্লাহু আকবার, ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ ও ৩৩ আলহামদুল্লিাহ পড়ো। ’ (মুসনাদে আহমদঃ ১১১৫৪)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম এর অন্যতম একজন সাহাবী বর্ণনা করেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে ১০০ বার এবং সন্ধ্যায় ১০০ বার সুবহানাল্লাহ এর যিকির করবে সে যেন ১০০ বার হজ্জ আদায় করল!
৯. মসজিদে কুবায় নামাজ আদায়ঃ
মসজিদে কুবায় নামাজ আদায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, "যে ব্যক্তি নিজ ঘরে পবিত্রতা অর্জন করল, তারপর মসজিদে কুবায় এসে কোনো নামাজ আদায় করল, সে ওমরাহর সওয়াব হাসিল করল।" (সুনানে ইবনে মাজাহঃ ১৪১২) হাদীস বিশারদগণ বলেন, হাদীসটি সহীহ
১০. জুমার নামাজ আদায় করাঃ
আবু উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের ঘর থেকে উত্তমরূপে অজু করে ফরজ নামাজের উদ্দেশ্যে বের হয়, সে ইহরাম বেঁধে হজে গমনকারীর মতো সওয়াব লাভ করে। আর যে ব্যক্তি শুধু সালাতুদ্দুহা (পূর্বাহ্নের নামাজ) আদায়ের উদ্দেশ্যে কষ্ট করে বের হয়, সে ওমরাহ আদায়কারীর মতো সওয়াব লাভ করবে। ’ (আবু দাউদঃ ৫৫৮) সাঈদ ইবনে মুসাইয়িব (রহঃ) বলতেন যে, “জুমআর নামাজ আদায় করা আমার কাছে নফল হজ্জের চেয়ে বেশি প্রিয়”।
১১. ঈদের নামাজ আদায় করাঃ
বিভিন্ন বর্ণনায় সাহাবায়ে কিরাম বলেছেন, ‘ঈদুল ফিতরের নামাজ ওমরার সমতুল্য এবং ঈদুল আজহার নামাজ হজের সমতুল্য।
১২. মুসলমানের প্রয়োজন মেটানোঃ
হাসান আল-বসরি (রহ.) বলেন, ‘তোমার ভাইয়ের প্রয়োজন মেটানো তোমার বারবার হজ্জ করার থেকে উত্তম। ’
আল্লাহ তাআলা এই কাজগুলোর মাধ্যমে হজের সমপরিমাণ নেকি অর্জনের পাশাপাশি আমাদের সবাইকে হজ্জ করার তাওফিক দান করুন।
১৩. ইশা ও ফজর নামাজ জামাতে আদায় করায় রয়েছে হজ্জের সওয়াবঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ কি তোমাদেরকে ইশার নামাজ জামাতে আদায়ের জন্য n‡¾র সমান এবং ফজরের নামাজ জামাতে আদায়ের জন্য ওমরাহ এর সমান সওয়াব বর্ণনা করেননি? (মুসলিম)
১৪. নাজায়েজ-হারাম কাজ থেকে বিরত থাকাঃ
সালাফদের (নেককার পূর্বসূরী) মধ্য থেকে কেউ একজন বলেছেনঃ “নাজায়েজ কাজ থেকে বিরত থাকা পাঁচশো (নফল) হজ্জের চেয়ে উত্তম।”
২| ১০ ই মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:৫১
মোহাম্মদ আবুল হোসাইন চৌধুরী বলেছেন: বেশি বেশি এবাদাত করলে আল্লাহ রাজী খুশি হন। তাই আমাদের উচিৎ বেশি বেশি এবাদাত করা।
৩| ১০ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৯:০৪
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আমার এক আত্মীয় কিছু মোল্লার পাল্লায় পড়ে জমি বিক্রি করে গেল হজ্ব করতে,এখন সে ভিক্ষা করে।ছেলে মেয়েরাও তাকে দেখে না।তারা অনেক নিষেধ করেছিল।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: সোয়াবের আমার দরকার নাই।
সোয়াব দিয়ে কি হয়? মৃত্যুর পরে সুবিধা পাওয়া যায়? দরকার নেই আমার মৃত্যুর পরের সুবিধা।