নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাম্মদ আবুল হোসাইন চৌধুরী

মোহাম্মদ আবুল হোসাইন চৌধুরী

মোহাম্মদ আবুল হোসাইন চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

দোয়া কবুলের সময়

১৫ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:২৭

দোয়া ইসলামের অন্যতম ইবাদত। হাদীস শরিফে দোয়াকে ইবাদতের মগজ আখ্যায়িত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে দোয়ায় মত্ত হয়ে যেতেন। আল্লাহপাক দোয়া কবুল করতে ভালোবাসেন। তার কাছে চাইলে তিনি খুশি হন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যখন তোমার কাছে আমার বান্দা আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে (তখন বলে দাও যে) নিশ্চয়ই আমি তাদের কাছে। প্রার্থনাকারী যখন আমাকে ডাকে, তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিই। সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় ও ঈমান আনয়ন করে, আশা করা যায় তারা সফলকাম হবে।’ (বাকারা : ১৮৬) এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা ভয় এবং আশা নিয়ে আল্লাহকে ডাকো। নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (আরাফ : ৫৬)। আল্লাহ পাক কোরআনে বলেছেন-“এবং আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত থেকে কাফের সম্প্রদায় ব্যতীত অন্য কেউ নিরাশ হয় না।” (ইউসুফ : ৮৭) আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দার দোয়া সব সময় কবুল করে থাকেন। তারপরও প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুনির্দিষ্ট কিছু সময়ের কথা হাদীসে পাকে উল্লেখ করেছেন। যে সময়গুলো দোয়া করলে আল্লাহ তা’আলা নিশ্চিতভাবে বান্দার দোয়া কবুল করেন। তা নিম্মে পেশ করা হলো-
১. রাতের শেষ তৃতীয়াংশেঃ
শেষ রজনী দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্ত। এই সময় দোয়া কবুল হবার ব্যাপারে সহীহ হাদীসে অত্যন্ত জোরালো রেফারেন্স আছে। এটা প্রতিটি রাতের জন্যই প্রযোজ্য, শুধুমাত্র শবে বরাত, শবে মিরাজ বা কদর রাতে নয়। কেননা এ সময় আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন। হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “প্রত্যেকদিন রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আমাদের রব (আল্লাহ) সবচেয়ে নীচের আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, ‘কে আমাকে ডাকছো, আমি তোমার ডাকে সাড়া দেবো। কে আমার কাছে চাইছো, আমি তাকে তা দেবো। কে আছো আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী, যে আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেবো?” (বোখারী, মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “আল্লাহর কাছে তাঁর একজন উপাস্য সবচেয়ে নিকটতম যে সময়টাতে আসতে পারে তা হলো রাতের শেষ তৃতীয়াংশ। সুতরাং তোমরা যদি পারো তাহলে তোমরা তাদের একজন হও যারা সে সময় আল্লাহর স্মরণ করে”। (তিরমিজি, নাসায়ী, আল হাকিম-সহীহ)
২. শেষ রাতের যে কোন একটি সময়ঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “রাতে এমন একটি সময় আছে যে সময়টাতে কোন মুসলিমের এমনটা হয়না যে সে এই পৃথিবী কিংবা পরকালের জীবনের জন্য আল্লাহর কাছে কিছু চাইলো আর তাকে তা দেয়া হলো না। আর এটা প্রতিটি রাতেই ঘটে”। (মুসলিম)
২. আজানের সময়ঃ
মুসলমানদের প্রধানতম সংস্কৃতি আজান। আজানের মাধ্যমে ইসলামের আহ্বান ভেসে যায় পৃথিবীর পাড়া মহল্লায়। আজানের পবিত্র শব্দে পুলকিত হয় মানব হৃদয়। আজানের শব্দে শয়তান এবং তার অনুসারীরা দূর হয়। আজানের সময় দোয়া কবুল হয়। রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘যখন মুয়াজ্জিন আজান দেয় আসমানের দোয়ার খুলে যায় ও দোয়া কবুল হয়’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ) সাহল ইবন সা’দ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “দুই সময়ের দোয়া ফেরানো হয়না। আযানের সময়ের দোয়া আর বৃষ্টি পড়ার সময়কার দোয়া”। (আবু দাউদ)
৩. আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়েঃ
আজান-ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া কবুল হয়। মক্কা কিংবা মদীনার নামাজের জামায়াত শুরু হবার মাঝখানে অনেক মুসলিমকে দেখা যায় নামাজ শুরুর আগে হাত তুলে দোয়া করতে। এ সময়টা দোয়া কবুল হবার গুরুত্বপূর্ণ সময়। হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “আযান ও ইকামাতের মধ্যবর্তি সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয়না”। (আবু দাউদ, তিরমিজি)
৪. জুম্মার দিন যে কোন একটি সময়েঃ
জুম্মার দিনে এমন অসাধারণ একটি নিয়ামাতের সময় আছে যে সময়টাতে দোয়া কবুল হবার বিশুদ্ধ বর্ণনা রাসূল (সাঃ) থেকে এসেছে। জুমার দিন ইমাম খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বরে বসা থেকে নিয়ে নামাজ আদায় পর্যন্ত সময়ে দোয়া কবুল হয়। এভাবে আসরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় দোয়া কবুল হয়। হযরত আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের একদিন শুক্রবার নিয়ে আলোচনা করলেন এবং বললেন, ‘জুম্মার দিনে একটি সময় আছে যে সময়টা কোন মুসলিম সালাত আদায়রত অবস্থায় পায় এবং আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ অবশ্যই তার সে চাহিদা মেটাবেন’, এবং তিনি রাসূল (সাঃ) তাঁর হাত দিয়ে ইশারা করে সে সময়টা সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন”। (সহীহ বুখারী)। ওলামায়ে কেরাম এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এই বিশেষ মুহূর্ত থেকে উপকৃত হতে মুমিন ব্যক্তির উচিত মাগরিবের আগে বেশি বেশি দোয়া ও ইস্তেগফার করা। কোন কোন স্কলার সে সময়টার ব্যপারে বলেছেন, তা হলো-ইমাম যখন মসজিদে প্রবেশ করেন সে সময় থেকে সালাত শেষ হবার সময় পর্যন্ত, কেউ বলেছেন দুই খুতবার মাঝখানে, কেউ আবার জোর দিয়ে বলেছেন তা হলো আসর থেকে মাঘরিব পর্যন্ত সময়টা।
৫. জমজমের পানি পান করার সময়ঃ
হযরত জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “জমজম পানি হলো তার জন্য, যার জন্য এটি পান করা হয়”। (ইবন মাজাহ, আহমাদ)। অর্থাৎ, জমজমের পানি খাবার সময় আল্লাহর কাছে যা চাওয়া হয়, তা পাবার সম্ভাবনা আছে।
৬. সেজদার সময়ের দোয়া
সিজদা আল্লাহর কাছে প্রিয় আমল। বান্দার গোলামির প্রকাশ। নতজানুর নমুনা। সিজদা বান্দাকে আল্লার একবারে কাছে পৌঁছিয়ে দেয়। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, বান্দা যখন সিজদা অবস্থায় থাকে আল্লাহ তা’য়ালার সর্বাধিক নিকটবর্তী হয় ‘যে সময়টাতে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে কাছে চলে যায়, তাহলো সেজদার সময়। অতএব, তোমরা অধিক মাত্রায় (ঐ অবস্থায়) দোয়া করো। (মুসলিম, নাসায়ী, আবু দাউদ, আহমাদ)।
৭. ফরজ নামাজের পরের দোয়াঃ
হযরত আবু উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একবার রাসূল (সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! কোন সময়ের দোয়া দ্রুত কবুল হয়? তিনি উত্তর দিলেন, রাতের শেষ সময়ে এবং ফরজ নামাজের পর। (তিরমিজি, মুসলিম)
৮. কদরের রাতের দোয়াঃ
পবিত্র রমজান মাস অতি বরকতময়। রহমত, নাজাত ও মাগফিরাতোর মাস। এ মাসে রয়েছে মহিমান্বিত কদর রজনী। এ রাত হাজার রাত থেকে উত্তম। বরকতময় এ রাতে ফেরেশতারা বান্দার দোয়া আল্লাহর দরবারে নিয়ে যান। রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তার আগের (জীবনের) সব গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ ( বুখারী, সুনানে আবু দাউদ)
৯. বৃষ্টি হওয়ার সময়ের দোয়া
বৃষ্টির সময় মহানবী (সাঃ) বেশি বেশি দোয়া করতেন। সাহল ইবন সা’দ থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘দুই সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। আজানের সময়ের দোয়া ও বৃষ্টি বর্ষণের সময়ের দোয়া।’ (সুনানে আবু দাউদ, সহিহুল জামি)
১০. আরাফাতের দিনের দোয়াঃ
বছরের শ্রেষ্ঠ রাত (সূর্যাস্ত থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত) হলো লাইলাতুল কাদর বা কদরের রাত, যা রমজান মাসের শেষ দশ রাতের যেকোনো একটি বেজোড় রাত। অন্য দিকে, বছরের শ্রেষ্ঠ দিন (বিশেষ করে জোহরের সময় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত) হলো জিলহজ মাসের ৯ তারিখ যা ইয়াওমু আরাফাত বা আরাফাতের দিন। এ দিনকে ইয়াওমুল ‘ইতকি মিনান নার বা জাহান্নাম থেকে মুক্তির দিনও বলা হয়। হাদীসে বর্ণিত যে, আরাফাতের দিনের চেয়ে আর কোনো দিন এমন নেই যেদিন আল্লাহ বান্দাদেরকে জাহান্নাম থেকে সর্বাধিক সংখ্যায় মুক্তি দেন; তিনি সেদিন নিকটবর্তী হন অতঃপর তিনি তাঁর ফেরেশতাদের সাথে গর্ব প্রকাশ করেন এবং বলেন, তারা কী চায়? (সহীহ মুসলিম) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দোয়ার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো আরাফাতের দিনের দোয়া।’ (তিরমিজি) সে ব্যক্তির চেয়ে শ্রেষ্ঠ আমল নিয়ে কিয়ামতে আর অন্য কেউ উপস্থিত হতে পারবে না। অবশ্য যদি কেউ তারই অনুরূপ অথবা তার চেয়ে অধিকবার ঐ যিকির বলে থাকে তবে সে পারবে”। (নাসাই সুনানে কুবরা)
১১.জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের দোয়াঃ
হজ্জের মৌসুম তথা জিলহজ্জের প্রথম দশকে দোয়া কবুল হয়। প্রিয়নবী (সাঃ) বলেন, ‘জিলহজের এ দশকে সম্পাদিত আমল থেকে আল্লাহর কাছে উত্তম কোনো আমল নেই। সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করেন, তাহলে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও কি নয়? তিনি বলেন, না, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে কোনো ব্যক্তি যদি জান-মাল নিয়ে আল্লাহর পথে বের হয় অতঃপর জিহাদের ময়দান থেকে কিছুই নিয়ে না ফিরে।’ (অর্থাৎ শহীদ হয়ে যায়, তাহলে সে ব্যক্তি ব্যতিক্রম) (বুখারী, মুসনাদে আবি ইয়ালা)
১২. ইফতারের সময়ের দোয়াঃ
ইফতারের সময় দোয়া করা উত্তম। এসময়টা রোজাদারের জন্য মহান আল্লাহর রহমত স্বরুপ।
এসময়ে রোজা পালনকারীর দোয়া কবুল হয়। কারণ ইফতারের সময়টা হল বিনয় ও আল্লাহর জন্য ধৈর্য ধারণের মুহূর্ত। দুনিয়ার সমস্ত উপলক্ষ ছেড়ে মানুষ তখন কেবলই আল্লাহর জন্য অপেক্ষা করে। অপেক্ষা করে তার রহমতের। তার কবুলিয়তের। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘৩ ব্যক্তির দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেয়া হয় না। যখন রোজাদার ব্যক্তি ইফতার করে (অন্য বর্ণনায় এসেছে, রোজাদার ব্যক্তি যতক্ষণ ইফতার না করে), । ন্যায় পরায়ন শাসক। নির্যাতিত ব্যক্তির দোয়া।’ (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিজি)
১৩. রাতের বেলা ঘুম থেকে জেগে উঠলেঃ
হযরত উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে কেউ রাতের বেলা ঘুম থেকে জাগে আর বলে-‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হা’মদু ওয়াহুয়া আ’লা কিল্লি শায়্যিন কা’দির, আলহামদুলিল্লাহি ওয়া সুবহানাল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ এবং এরপর বলে ‘আল্লাহুম মাগফিরলি (আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন) এবং আল্লাহর কাছে চায়, তাহলে তার ডাকে সাড়া দেয়া হবে এবং সে যদি অজু করে সালাত আদায় করা, তাহলে তার সালাত কবুল করা হবে”। (সহীহ বুখারী)
১৪. মোরগ ডাকলেঃ
যখন তোমরা মোরগের ডাক শুনবে, তখন তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ চাইবে, কেননা সে একটি ফেরেশতা দেখেছে। আর যখন তোমরা কোনো গাধার স্বর শুনবে, তখন শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবে, কেননা সে শয়তান দেখেছে। (বুখারী, মুসলিম)।
১৫. জমজমের পানি পান করার সময়েরঃ
জমজমের পানি পান করার সময়ের দোয়া করা হলে তা কবুল হয়- রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘জমজম পানি যে নিয়তে পান করা হবে, তা কবুল হবে।’ অর্থাৎ এই পানি পান করার সময় যে দোয়া করা হবে, ইনশাআল্লাহ তা অবশ্যই কবুল হবে। (ইবনে মাজাহ)
১৬. জোহরের আগমুহূর্তেঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- নিশ্চয়ই আসমানের দুয়ারসমূহ খুলে দেয়া হয় সূর্য মধ্যাকাশ থেকে পশ্চিমাকাশের দিকে হেলে পড়ার সময়। এরপর জোহরের সালাত পর্যন্ত তা আর বন্ধ হয় না। আমি চাই সেই সময়ে আমার কোন ভালো কাজ ওপরে উঠুক। (সহিহুল জামি)
১৭. মজলুম ও নির্যাতিত ব্যক্তিঃ
মজলুমের দোয়া এবং বদ দোয়া দুটোই আল্লাহর কাছে কবুল হবার সম্ভাবনা শতভাগ। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মুয়াজকে বলেছেন, “মজলুমের দোয়া থেকে সবসময় সতর্ক থেকো, কেননা মজলুমের দোয়া ও আল্লাহর মধ্যে কোন পর্দা বা আশ্রয় থাকে না”। (সহীহ বুখারী)
১৮. মুসাফিরের দোয়াঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তিনটি দোয়া (আল্লাহর দ্বারা) ফিরিয়ে দেয়া হয়না। সন্তানের জন্য পিতামাতার দোয়া, রোজাদার ব্যক্তির দোয়া, মুসাফিরের দোয়া”। (বায়হাকি, তিরমিজি)
১৯. অনুপস্থিত মুসলিম ভাই বা বোনের জন্য অন্তর থেকে উৎচ্চারিত দোয়াঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “এমন কোন বিশ্বাসী বান্দা নেই, যে তার অনুপস্থিত কোন ভাইয়ের জন্য দোয়া করে আর ফেরেশতারা বলে না ‘তোমার জন্যও তা হোক’”। (মুসলিম)
২০. রোজাদার ব্যক্তির দোয়াঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তিনটি দোয়া (আল্লাহর দ্বারা) ফিরিয়ে দেয়া হয়না। সন্তানের জন্য পিতামাতার দোয়া, রোজাদার ব্যক্তির দোয়া, মুসাফিরের দোয়া”। (বায়হাকি, তিরমিজি)
এছাড়া সমস্ত রমজান মাসই হলো আল্লাহর কাছে চাইবার শ্রেষ্ঠ সময়। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “রমজান মাসে করুণার দরজা খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়”। (সহীহ বুখারী ১৮৯৯)
২১. এক নামাজের পর অন্য নামাজের জন্য অপেক্ষার সময়ঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- শুভ সংবাদ! তোমাদের রব আসমানের দুয়ার খুলে দিয়েছেন এবং তোমাদের নিয়ে ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করে বলছেন- ‘আমার বান্দারা আমার আরোপিত ফরজ (নামাজ) আদায়ের পর আরেক ফরজের জন্য অপেক্ষা করছে।’ (ইবনে মাজা)
২২. সন্তানের জন্য পিতামাতার দোয়াঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তিনটি দোয়া (আল্লাহর দ্বারা) ফিরিয়ে দেয়া হয়না। সন্তানের জন্য পিতামাতার দোয়া, রোজাদার ব্যক্তির দোয়া, মুসাফিরের দোয়া”। (বায়হাকি, তিরমিজি)
২৩. জিহাদের মাঠে শত্রুর মুখোমুখি হলেঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “দুটি দোয়া কক্ষনো ফিরিয়ে দেয়া হয়না অথবা খুবই কম ফিরিয়ে দেয়া হয়। আযানের সমকার দোয়া আর সেই ভয়ংকর সময়কার দোয়া যখন দু’টি বাহিনী পরস্পর মুখোমুখি হয়”। (আবু দাউদ, ইবন মাজাহ)
২৪. অসুস্থ্য ব্যক্তিকে দেখতে যাবার পর সেই ব্যক্তির দোয়াঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যখন তোমরা কোন অসুস্থ্য ব্যক্তিকে দেখতে যাও, তখন ভালো কথা বলো (ভালো কিছু চাও), কেননা তোমরা তখন যাই বলো, তার সাথে সাথে ফেরেশতারা ‘আমিন’ বলে”। (মুসলিম)
২৫. এই দোয়া পাঠের সময়ঃ
একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে নামাজ পড়ছিলাম। সে সময় সমাগত লোকদের মাঝে হতে এক লোক বলল, ‘আল্লাহু আকবার কাবিরা, ওয়াল হামদু লিল্লাহি কাছিরা ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতান ওয়া আসিলা’ (অর্থাৎ, আল্লাহ মহান, অতি মহান, আল্লাহ তাআলার জন্য অনেক অনেক প্রশংসা এবং সকাল-সন্ধ্যা আমি আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন-এই এই কথা কে বলেছে? উপস্থিত লোকদের মাঝে এক লোক বলল, আমি হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেনঃ ‘এ দোয়ায় আমি খুব আশ্চর্য হয়েছি। এ বাক্যগুলোর জন্য আকাশের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে।’ ইবনে উমার রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে আমি এ কথা শোনার পর থেকে কখনো তা পাঠ করা পরিহার করিনি। (মুসলিম, তিরমিজি)
২৬. দোয়া ইউনূস পড়াঃ
যেকোনো প্রয়োজনে কোনো মুসলিম যদি দোয়া ইউনুস পড়ে, আল্লাহ তার দোয়া কবুল করবেন।’ (তিরমিযী, সহিহুল জামি)। অন্য হাদীস অনুযায়ী, দোয়া ইউনুস পড়লে আল্লাহ তার দুশ্চিন্তা দূর করে দেবেন। উচ্চারণ : লা ইলা-হা ইল্লা-আনতা, সুবহা’-নাকা ইন্নি কুনতু-মিনায-যোয়ালিমিন। অর্থ : ‘(হে আল্লাহ) তুমি ছাড়া আর কোনো মা’বুদ নাই, তুমি পবিত্র ও মহান! নিশ্চয়ই আমি জালেমদের অন্তর্ভুক্ত।’ (আম্বিয়া : ৮৭)
এছাড়াও জামাতের সুরা ফাতিহা পড়ার পর আমিন বলার সময়, মসজিদুল হারামের ভেতর কাবার সামনে, পিতামাতার জন্য সন্তানের দোয়া, হজ্জ্বের সময় কংকর নিক্ষেপের সময় এওম্ন আরো অনেক সময়ই দোয়া কবুলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে সহীহ হাদীসে এসেছে।
মুমিন মুসলমানের উচিত এ সময় বেশি বেশি তাওবা-ইসতেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। নিজের একান্ত চাহিদাগুলো পূরণে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:১২

রাজীব নুর বলেছেন: আসুন আমরা বেশী বেশী দোয়া করি।
আল্লাহ বলেছেন, আমার কাছে চাও, আমি দিবো।

২| ১৫ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:১৩

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: বাহ! সুন্দর পোস্ট ধন্যবাদ

৩| ১৫ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:২৪

জাহিদ হাসান বলেছেন: সব সময়ই দোয়া করা উচিত। উপযুক্ত সময়ের জন্য বসে থাকা ঠিক না।

৪| ১৫ ই মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:২১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: শুধুমাত্র আল্লাহই সবসময় তার কাছে চাওয়ার জন্য উৎসাহ দেন এবং তিনি চান তার বান্দা সবসময় এবং বেশী বেশী তার কাছে দোয়া করুন বা কিছু চাক।

আল্লাহ আমাদের সকলকে বেশী বেশী চাওয়ার তথা দোয়া করার তওফিক দান করুন এবং বিশেষ বিশেষ সময়েও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.