নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাম্মদ আবুল হোসাইন চৌধুরী

মোহাম্মদ আবুল হোসাইন চৌধুরী

মোহাম্মদ আবুল হোসাইন চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

শবে বরাতের ফযিলত ও আমল

২৮ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৮:২৩

শবে বরাতঃ
বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে মুসলিম সমাজে মাসের মধ্যে ৪টি মাস, দিনের মধ্যে ৪টি দিন, রাতের মধ্যে ছয়টি রাত ও সময়ে মধ্যে কিছু উত্তম সময়ের প্রতি অধিক গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি হাদীসে এসেছে। এসব মাস, এসব দিন, এসব রাত ও এসব মুহূর্তর এবাদাতের প্রতি যত্নবান হলে, বাকী মাস, দিন, রাত ও সময়ে এবাদাত করা সহজ হয়। আর এসব মাস, দিন রাত ও সাময়ে গুনাহ থেকে বেচেঁ থাকলে অন্য মাস, দিন, রাত ও সাময়ে গুনাহ থেকে বেচেঁ থাকা সহজ হয়। রাতগুলো মধ্যে হলো, জুমার রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, দুই ঈদের রাত ও শবে কদরের রাত ও শাবান মাসের মধ্যরজনী বা শবে বরাতের রাত । শবে কদর সম্বন্ধে পবিত্র কোরআনে পূর্ণাঙ্গ একটি সূরা রয়েছে। অবশিষ্ট রাতগুলো সম্পর্কে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) এক হাদীসে স্পষ্ট বিবরণ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পাঁচটি রাত এমন আছে যাতে কোনো দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। সে রাতগুলো হলো, জুমার রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, শবে বরাতের রাত, দুই ঈদের রাত ও শাবান মাসের মধ্যরাত (শবে বরাত)। (মুসান্নেফে আব্দুর রাজ্জাক, শুআবুল ঈমান, ফাজাইলুল আওকাত, তারতিবুল আমালি) ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ রাতের মধ্যে শাবানের মধ্য রজনী বা শবে বরাত অন্যতম।
কুরআন এবং হাদীসে এ রাতের এ নাম কোথাও আসেনি। এ রাতের নাম হাদীসের ভাষায় লায়লাতুল নিসফ মিন শা’বান বা শা’বানের মধ্য রাত। আমাদের দেশে এ রাতটি শবেবরাত নামে অধিক পরিচিত। শবেবরাত শব্দটি ফারসি। শব অর্থ রাত, বরাত অর্থ মুক্তি; শবেবরাত অর্থ মুক্তির রজনী।
হাদীসের কিতাবসমূহে শবে বরাতঃ
(১) বোখারী শরীফ, (২) সহীহে মুসলিম শরীফ, (৩) সুনানে আবু দাউদ, (৪) সুনানে নাসায়ী, (৫) সুনানে তিরমিযী ও (৬) সুনানে ইবনে মাজাহ। এ ছয় কিতাবের মধ্যে চার কিতাবে লাইলাতুল বরাত সম্পর্কে কোন আলোচনা আসেনি। অর্থাৎ বিশুদ্ধতার দিক হতে প্রথম শ্রেণীর চার গ্রন্থ যথা- বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসায়ী এসব কিতাবে ১৫ শা’বানের রাত সম্পর্কে কোন বর্ণনা খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ শরীফে এ রাত সম্পর্কে হাদীস উদ্বৃত হয়েছে। ছয় গ্রন্থের বাইরেও হাদীসের অন্যান্য কিছু কিতাবে এ রাতের আলোচনা এসেছে। তম্মধ্যে বিশুদ্ধ একটি কিতাবের নাম হল সহীহ ইবনে হাব্বান। যাতে ইমাম ইবনে হাব্বান বিশুদ্ধ সব হাদীস চয়ন করেছেন। এ কিতাবে এ রাত সম্পর্কে আলোচনা এসেছে। চারজন বিখ্যাত ফেকাহর ইমামদের মধ্যে একজন হচ্ছেন ইমাম আহমদ (রহ.)। তিনি হাদীসের যে গ্রন্থ সঙ্কলন করেছেন তার নাম হল ‘মুসনদ’। সেই কিতাবে এ রাত সম্পর্কে হাদীসে এসেছে। এ রাতের নফল ইবাদত ও তওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমে অতীত জীবনের পাপ মোচন হয় এবং জাহান্নাম থেকে নিস্তার লাভ করা যায় বলেই রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবায়ে কেরামকে ১৫ শাবান রাতে (শবে বরাতে) রাত জেগে নফল ইবাদত করতে বলেছেন এবং দিনে নফল রোজা রাখতে বলেছেন।
শবে বরাতের গুরুত্ব ও ফযিলতঃ
১. হযরত আবূ মূসা আশয়ারী (রাঃ) রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান- মধ্য শাবানের রাত্রিতে আল্লাহ পাক রহমতের তাজাল্লী ফরমান এবং তার সমস্ত বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু মুশরিক বা শত্রুতা পোষণকারী ব্যক্তিকে ক্ষমা করেন না। (ইবনে মাজাহ, মিশকাত শরীফ)
২. হযরত মুআজ ইবনে জাবাল (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেন, অর্ধ শাবানের রাতে অর্থাৎ শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে মহান আল্লাহতা‘য়ালা সৃষ্টিকুলের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও হিংসুক-বিদ্বেষী লোক ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, সহীহ ইবনে হিব্বান)
৩. হযরত উম্মুল মোমেনীন হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা (রাঃ) হতে বর্ণিত: তিনি বলেন- এক রজনীতে আমি দয়াল নবী রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিছানায় পেলাম না। এই জন্য তাঁর সন্ধানে বেরিয়ে পড়লাম। তারপর আমি জান্নাতুল বাকীতে গিয়ে নবীজিকে আকাশের দিকে মাথা উঠানো অবস্থায় দেখতে পেলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, হে আয়েশা! তুমি কি এ ধারণা করছ যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার উপর অবিচার করেছেন? হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বললেন; আমি এমন ধারণা করিনি, ভেবেছিলাম আপনি আপনার অন্য কোন বিবির নিকট গমন করেছেন। তখন নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমালেন নিশ্চয় আল্লাহ পাক শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত্রে প্রথম আকাশে তাজাল্লী ফরমান- অত:পর তিনি (আল্লাহ জাল্লাশানুহু) বনী কালব গোত্রের মেষের পশম সমূহের চেয়েও বেশী লোকের গুনাহ ক্ষমা করেন।” উল্লেখ্য যে, এই বনী কালব এর মেষের সংখ্যা ছিল ৩০,০০০। (তিরমিজি, মুসনাদে আহম্মদ) রাসূল (সাঃ) চুপিসারে একাকী জান্নাতুল বাকিতে কবর জিয়ারত করেছেন। আয়েশা সিদ্দিকাকে (রাঃ) নিদ্রা থেকে জাগ্রত করেননি।
৪. হযরত আলা ইবনুল হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সাঃ) রাতে নামাজে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সেজদা করেন যে, আমার ধারণা হলো তিনি হয়ত মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তার বৃদ্ধঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা তোমার কি এই আশঙ্কা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না-ইয়া রাসূলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার এই আশঙ্কা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। তখন নবী (সাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জান এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভালো জানেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তখন এরশাদ করলেন, ‘এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত (শবে বরাত)। আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে তার বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহপ্রাার্থীদের অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই। (বায়হাকি)
৫. হযরত আলী (রাঃ) হতে মারফু মুত্তাছিল সনদে রেওয়ায়েত করেন- যে, আল্লাহর হাবীব নবী করিম (সাঃ) এরশাদ ফরমান- যখন শাবানের ১৫ তারিখের রাত্র আগমন করে তখন তোমরা রাত্র জাগরণ করতঃ মহান আল্লাহ তা‘য়ালার এবাদত বন্দেগী কর এবং এর পূর্ববর্তী দিনে (১৫ তারিখে) রোজা পালন কর। কেননা চৌদ্দ তারিখের সূর্য অস্থ যাওয়া তথা ১৫ তারিখের রাত্র আরম্ভ হওয়ায় সাথে সাথে মহান আল্লাহ তা‘য়ালা দুনিয়ার আসমানে স্বীয় তাজাল্লী প্রকাশ ফরমান। অর্থাৎ দুনিয়া বাসীর প্রতি বিশেষ রহমতের দৃষ্টি দান করতঃ দয়াপূর্ণ কুদরতী আওয়াজে আহ্বান করে থাকেন। আমার বান্দাদের মধ্যে কেউ আজকের এ পবিত্র রাত্রে আমি আল্লাহর দরবারে নিজের কৃত পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছ কি? আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। রুজি-রিজিক চাওয়ার আছ কি? আমি তোমাদের চাহিদা অনুপাতে রিজিক দানের ফয়সালা করে দিব। কোন বিপদগ্রস্থ লোক বিপদ মুক্তির জন্য প্রার্থনাকারী আছ কি? আমি তোমাদের বিপদ দূরীভূত করে দিব। এমন আরো বিষয়ে কেউ প্রার্থনাকারী আছ কি? আমি তা সবই তোমাদেরকে দান করব। মহান আল্লাহ তা‘য়ালার এরূপ করুনাপূর্ণ ঘোষনা সুবহে সাদিক পর্যন্ত চলতে থাকে। (ইবনে মাজাহ)
সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফে হাদীসটি এভাবে এসছে- হযরত আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ প্রতি রাত্রে শেষ তৃতীয়াংশে আমাদের মর্যাদাবান বারাকাতপূর্ণ রব দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, আমাকে ডাকার কেউ আছ কি? আমি তার ডাকে সাড়া দিব। আমার কাছে চাওয়ার কেউ আছ কি? আমি তাকে প্রদান করব। আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার কেউ আছ কি? আমি তাকে ক্ষমা করব। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
৬. হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, শাবানের মধ্যবর্তী রাত তথা শবে বরাত যখন আগমন করে তখন মহান আল্লাহ তা‘য়ালা রহমতের তাজাল্লী ফরমান এবং তিনি তার সমস্ত বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু মুশরিক বা মুসলমান ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষপোষণকারীকে ক্ষমা করেন না। (বায়হাকী)
৭. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন, শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাতে মহান আল্লাহ রহমতের ভান্ডার নিয়ে তার সকল সৃষ্টির প্রতি এক বিশেষ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন এবং এ রাতে হিংসুক ও হত্যাকারী ব্যক্তি ছাড়া সকলকে ক্ষমা করে দেয়া হয়। (মুসনাদে আহমদ)
৮. হযরত আসিম ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আবি বকর তার পিতার সনদে দাদা হযরত আবু বকর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল ((সাঃ)) এরশাদ করেন, আল্লাহ তা‘য়ালা শাবানের ১৫তম রাতে দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং সব পাপীকে (যারা ক্ষমা প্রাার্থনা করে) ক্ষমা করে দেন। তবে মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া। (বায়হাকি)।
৯.এছাড়াও হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী (রঃ) তদ্বীয় কিতাব “মুকাশাফাতুল কুলুব” এ উল্লেখ করেন-উক্ত শবে বরাতের রাত্রে বান্দার সারা বৎসরের গুনাহ মাফের বদলা হয়ে যায়। শুক্রবার রাত্রের ইবাদত সাপ্তাহিক গুনাহ মাফের বদলা এবং শবে ক্বদরের রাত্রের ইবাদত সারা জিন্দেগীর গুনাহ মাফের বদলা হয়ে যায়। এই জন্যই এ রাত্রসমূহে আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় জাগ্রত থেকে ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে গুনাহ মাফের উছিলা হয়ে যায়। তাই এ রাত্র সমূহকে গুনাহ মাফের উছিলা বলা হয়।

শবে বরাতে কি কি আমল করবঃ
১. ফরজ নামাজ জামায়াত আদায় করাঃ
সেহরী খেয়ে ফজরের নামায মসজিদে এসে জামাত আদায় করার চেষ্টা করর, কারণ হাদীসে এসেছে- ক) হযরত উসমান ইবনে আফ্‌ফান রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, “যে ব্যক্তি জামায়াতের সাথে এশার নামাজ আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত পর্যন্ত কিয়াম (ইবাদত) করল। আর যে ফজরের নামাজ জামায়াতসহ আদায় করল, সে যেন সারা রাত নামাজ পড়ল।” তিরমিযির বর্ণনায় উসমান ইবনে আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি এশার নামাজের জামায়াতে হাযির হবে, তার জন্য অর্ধ-রাত পর্যন্ত কিয়াম করার নেকি হবে। আর যে এশাসহ ফজরের নামাজ জামায়াতে পড়বে, তার জন্য সারা রাত ব্যাপী কিয়াম করার সমান নেকি হবে।” (মুসলিম, তিরমিযি, আবু দাউদ, আহমদ, মুওয়াত্তা মালিক)
আবু উমামা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায় করলো, সে যেন হজ্জ করে আসলো। আর যে ব্যক্তি নফল নামাজ আদায় করতে মসজিদে গেলো, সে যেন ওমরাহ করে আসলো।’ (তাবারানি) কাজেই এশা এবং ফজরের নামাযকে প্রথম তাকবীরের সাথে আদায় করার চেষ্টা করতে হবে।
২. আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করাঃ
আমরা এ রাতে ঘরে কিংবা মসজিদে নীরব জায়াগায় আল্লাহ দরবারে কান্নার চেষ্টা করব। কারণ এ রাত হচ্ছে কান্নার রাত, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ রাতে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষকে ক্ষমা করবেন। আর আমি যেন এ লক্ষ মানুষের বাইরে না থাকি। আল্লাহ রহমতের চাদরে যেন আমি অন্তর্ভূক্ত থাকি। চাদরের বাইরে যেন আমার স্থান না হয়। এ জন্য আল্লাহর দরবারে ফুঁপিয়ে কাঁদতে হবে। বুক ফেটে কাঁদতে হবে। যার চোখ দিয়ে এক ফোটা অশ্রু বের হবে একমাত্র আল্লাহকে রাযি করার জন্য, কাউকে দেখানোর জন্য নয়। হাদীসে আছে মশার ডানা পরিমান অর্থাৎ এক কণা চোখ দিয়ে যদি পানি বের হয়ে ঝরে পড়ে যায় তাহলে সে চোখকে কখনো জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না। অর্থাৎ সে লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেবেন। আসুন আমরা কাঁদি আল্লাহর দরবারে কাঁদি, হে আল্লাহ তুমি আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও, তুমি যদি মাফ না কর তাহলে মাফের কোন উপায় নেই।
৩. ইস্তেগফার করাঃ
হে আল্লাহ অনেক গোনাহ করেছি, সে গোনাহ থেকে আমরা ক্ষমা চাই এটাকে বলা হয় ‘ইস্তেগফার’। বার বার করতে থাকব। কারণ এটা তাওবার রাত, গোনাহ মাফ চাওয়ার রাত।
কুরআনে করীম যদি আপনি পড়ে দেখেন বারবার আপনি পাবেন তওবার কথা। মানে হচ্ছে যারা তওবা করে, আল্লাহর দরবারে ফিরে আসে। হে আমার বান্দা আস ফিরে আস। অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি এ গোনাহ করেছি আর করবো না, (১) এ গোনাহর জন্য আমি অনুতপ্ত, (২) আমি বর্তমানে এ গোনাহকে ছেড়ে দিয়েছি, (৩) আমি ভবিষ্যতে আর এ গোনাহ করবো না। এটিকে বলা হয় তাওবা। এ তিন জিনিস যদি হয় তাহলে এটাই হবে খাঁটি তাওবা। এমন যদি হয়, আমি বলছি, হে আল্লাহ তুমি আমাকে মাফ করে দাও কিন্তু যে গুনাহ করলাম সে গোনাহের জন্য কোন অনুতপ্ত হলাম না, সে গোনাহ এখনো আমি করছি, ভবিষ্যতে ছাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এভাবে মানুষ যখন তাওবা করে তখন আল্লাহ ক্ষুদ্ধ হন।
খাঁটি তাওবাকে শয়তান ভয় করে
বর্ণিত আছে, এক বুযুর্গ স্বপ্নে শয়তানকে দেখলেন। শয়তান খুবই ব্যস্ত ও চিন্তিত। জিজ্ঞাসা করলেন, কি ব্যাপার তুমি এত চিন্তিত? সে বলল আমি আল্লাহর একজন বান্দাকে অনেক কষ্টের মাধ্যমে একটি পাপ করাই, করার পর সে অনুতপ্ত হয়, সে আবার তাওবা করে ফেলে। আমি এক সপ্তাহ চেষ্টা করে তার মাধ্যমে একটি গোনাহ করালাম, তাওবা করার মাধ্যমে সে যেন আমার কোমরে একটি লাথি দেয়। কারণ আমি তার মাধ্যমে যে গোনাহ করালাম তাওবার কারণে সে গোনাহ মাফ হয়ে গেল। এত কষ্ট নিমিষেই সে নষ্ট করে দিল। এ জন্য আমি চাই যে লোকেরা তাওবা না করুক।
৪. কোরআন শরীফ তিলাওয়াত করাঃ
হাদীস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘যদি কেউ আল্লাহর সঙ্গে বাক্যালাপ করার ইচ্ছা করে, তাহলে সে যেন আল-কোরআন তিলাওয়াত করে।’ নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআনের একটি অক্ষর পাঠ করে, সে একটি নেকি পায়, আর প্রত্যেকটি নেকি ১০টি নেকির সমান।’ (তিরমিজি)
শবে বরাতে সুন্দরভাবে শুদ্ধ করে কুরআন তেলওয়াত করতে হবে। বিশেষ করে সূরা ইয়াসিন তিনবার, সূরা দুখান তিনবার, সূরা আর-রাহমান, সূরা ওয়াকেয়া, সূরা মূলক ইত্যাদি তেলাওয়াত করতে পারেন। যখন জান্নাতের কথা আসবে ‘জান্নাত’ শব্দ আসবে তখন আল্লাহ তা’আলার কাছে ফরিয়াদ করব, হে আল্লাহ, তুমি আমাকে জান্নাতের অধিকারী করে দাও। আর যখন জাহান্নাম শব্দ আসবে তখনও আল্লাহর কাছে বলব, হে আল্লাহ তুমি আমাকে জাহান্নাম হতে পরিত্রাণ দাও। এভাবে কুরআন করীমের তেলাওয়াত করব।
৫. দিনে রোযা পালন করাঃ
শা’বান মাসের ১৫ তারিখের রোযার অনেক ফযিলত রয়েছে। যে কেউ এ রোযা রাখবে মহান রব তার পঞ্চাশ বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। রোযার ফযীলত রাসূল সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে শাবানে ১ দিন রোযা রেখেছে, তাকে আমার সাফা’য়াত হবে। আরো একটি হাদীস শরীফে আছে যে, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি শাবানের ১৫ তারিখে রোযা রাখবে, তাকে জাহান্নামের আগুন ছোঁবে না।
হযরত আলী (রাঃ) হতে মারফু মুত্তাছিল সনদে রেওয়ায়েত করেন- যে, আল্লাহর হাবীব নবী করিম (সাঃ) এরশাদ ফরমান- যখন শাবানের ১৫ তারিখের রাত্র আগমন করে তখন তোমরা রাত্র জাগরণ করতঃ মহান আল্লাহ তা‘য়ালার এবাদত বন্দেগী কর এবং এর পূর্ববর্তী দিনে (১৫ তারিখে) রোজা পালন কর। (ইবনে মাজাহ) শাবান মাসে আল্লাহর রাসূল সবচেয়ে বেশি রোযা রাখতেন, বিশেষ করে মধ্য শাবান ১৫ তারিখের রোজা রাখার কথা হাদীস দ্বারা প্রমানিত। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ছয় রাকাত নামাজ আদায় করবে; এসবের মাঝে কোনো মন্দ কথা না বলে, তার এই নামাজ ১২ বছরের ইবাদতের সমতুল্য গণ্য হবে। হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: যে ব্যক্তি মাগরিবের পর বিশ রাকাত নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন। (তিরমিজি, মিশকাত, ফয়জুল কালাম)।
৬. বেশী বেশী নফল নামাজ আদায় করাঃ
এ রজনিতে অধিক হারে নফল নামায আদায় করার জন্য চেষ্টা করব। দু’রাকাত নফল নামায যদি আল্লাহ তা’আলার দরবারে কবুল হয় আমরা জান্নাতে যাওয়ার জন্য সে দু’রাকাআতই যথেষ্ট হয়ে যাবে। বোখারী এবং মুসলিম শরীফের হাদীস-অর্থাৎ এমনভাবে তুমি এবাদত করবে আল্লাহকে যেন তুমি দেখছো। অতটুকু যেতে না পারলেও অন্তত মনে করবে যেন আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। আমি আল্লাহ তা’আলার দরবারে দাঁড়িয়েছি শুরু থেকে সালাম ফিরানো পর্যন্ত পুরা দু’রাকাআত নামাযে যদি আমার এ মনোভাব থাকে অবশ্যই তিনি আমাদের নামায কবুল করবেন। বৎসরের প্রতি রাতেইতো আমরা ঘুমাচ্ছি। অন্তত কয়েকটি রাত, শা’বানের মধ্য রাত, কদরের রাত এবং দু’ঈদের রাত জাগ্রত থেকে পূর্ণরাত এবাদত করে আল্লাহর দরবারে যদি কাটিয়ে দিই তাহলে আমাদের কোন ক্ষতি হবেনা। কাজেই পুরারাত আমরা এবাদত করার চেষ্টা করব।
৭. বেশী বেশী দরুদ শরীফ পড়াঃ
বেশি করে আল্লাহর নবীর ওপর দুরুদ শরীফ পাঠ করব। একবার যে ব্যক্তি আল্লাহর নবীর ওপর দুরুদ পাঠ করবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার ওপর দশটি রহমত নাযিল করবেন। যে দোয়ার শুরুতে আল্লাহর নবীর ওপর দুরুদ পড়া হয়না আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তা কবুল করেন না। এজন্য দোয়ার শুরুতেও দুরুদ পাঠ করতে হবে এবং শেষেও দুরুদ পাঠ করতে হবে।
৮. তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করাঃ
যারা অসুস্থ কিংবা দুর্বল পুরা রাত এবাদত করার সুযোগ হবেনা, তারা তাড়াতাড়ি শুয়ে ভোর রাতে উঠে যাবে। যাতে তাহজ্জুদ নামায আদায় করা যায়। কারণ তাহাজ্জুদের সময় দোয়া কবুলের উপযুক্ত সময়। বিশেষ করে মধ্য শাবানের এ রাতে তাহাজ্জুদ যেন কারো ছুটে না যায়। রাতে যখন পরিবারের সবাই জাগ্রত থাকবে এ রাতে যদি আমি তাহাজ্জুদ পড়তে না পারি আমার চেয়ে পোড়া কপাল আর কে হতে পারে। এজন্য দুর্ভাগা মানুষের তালিকায় যেন আমার নাম অন্তর্ভূক্ত না হয়।
৯. কবর জিয়ারত করাঃ
এ রাত্রে আপনজন যারা কবরে তাদের কবর যিয়ারত করবেন। এতে ফয়েজ ও বরকত হাসেল হয়। তবে হ্যাঁ কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সারা রাত্র ব্যয় করে দেওয়াটা বোকামী। যেহেতু সুন্নত আদায়ের লক্ষ্যে আয়ত্বের ভিতরে নিকটতম কবর জিয়ারত করলে আদায় হয়ে যায়। কেনান, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মা আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) শা’বানের ১৫ তারিখের রাতে জান্নাতুল বাকীতে মোনাজাতরত অবস্থায় পেয়েছেন। (জামে তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ)
১০. জিকির ও তাসবীহ-তাহলীল পড়া।
নামাজের পর আল্লাহর জিকির করা। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, দরিদ্র লোকেরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলল, সম্পদশালী ব্যক্তিরা বেশি সওয়াব এবং জান্নাত নিয়ে যাচ্ছে! আমরা যেমন নামাজ পড়ি; তারাও পড়ে! আমরা যেমন রোজা রাখি; তারাও রাখে! উপরন্তু তাদের রয়েছে অতিরিক্ত সম্পদ; ফলে তারা হজ্জ করতে পারে, ওমরাহ করতে পারে, জিহাদে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সদকাও দিতে পারে! নবীজি তাদেরকে বললেন, আমি কি তোমাদের এমন একটি আমল শিখিয়ে দিব না; যা করতে পারলে তোমরা অগ্রগামীদের স্তরে পৌঁছে যাবে এবং যারা তোমাদের পেছনে তারা তোমাদের স্তরে পৌঁছতে পারবে না, তোমরা হবে শ্রেষ্ঠতম মানব, তবে অন্য কেউ এটি করলে সেও তোমাদের মতো হয়ে যাবে। আমলটি হলো, প্রত্যেক নামাজের পর তেত্রিশবার করে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার পাঠ করবে।" (সহীহ বোখারী: ৮০৭, সহীহ মুসলিম: ১৬৭৪)
হযরত আবুদ্দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, আমরা একবার রাসূল (সাঃ)-কে বলি, হে আল্লাহর রাসূল! ধনী ব্যক্তিরা সওয়াবের ক্ষেত্রে আমাদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তারা হজ্জ করেন, আমরা হজ্জ করি না। তারা সংগ্রাম-যুদ্ধে শরিক হন, আমরা শরিক হতে পারি না। আরো আরো...। তখন রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন আমালের কথা বলবো যেটা তোমরা করলে তোমরা তারা যে আমল করে তারচেয়ে বেশি সওয়াব পাবে? আর সেটা হলো- প্রতি নামাজের পর তোমরা ৩৪ বার আল্লাহু আকবার, ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ ও ৩৩ আলহামদুল্লিাহ পড়ো।’ (মুসনাদে আহমদ : ১১১৫৪)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম এর অন্যতম একজন সাহাবী বর্ণনা করেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে ১০০ বার এবং সন্ধ্যায় ১০০ বার সুবহানাল্লাহ এর যিকির করবে সে যেন ১০০ বার হজ্জ আদায় করল!
শবে বরাতেও যাদের পাপ ক্ষমা হবে নাঃ
দু’শ্রেণীর লোককে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না : ১) শিরককারী ও ২) আত্মীয়তা নষ্টকারী।
শিরককারীঃ
প্রথম ব্যক্তি হল ‘মুশরিক’। তাকে আল্লাহ আজ রাতে রহমত দিয়ে আচ্ছাদিত করবেন না। আল্লাহর নামের সাথে শিরক করে, আল্লাহ ইবাদতে শিরক করে, আল্লাহ সিজদার মধ্যে শিরক করে এবং শিরকের যত প্রকার হতে পারে ছোট, বড়, প্রকাশ্য, অপ্রকাশ্য সব ধরনের শিরককারীকে মুশরিক বলা হয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আজকের রাত্রে তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। কাজেই অন্তর থেকে শিরক ও যাবতীয় কুসংস্কারকে দূর করতে হবে। আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তিনিই আমার সিজদা পাওয়ার উপযুক্ত। আল্লাহই দোয়া শুনবেন। আল্লাহই আমার দোয়া কবুল করবেন। আল্লাহই বান্দাকে রহমত করতে পারেন। রিজিক (জীবনোপকরণ) দেন, শুধুমাত্র আল্লাহই মানুষকে সন্তান দিতে পারেন। এ পূর্ণ বিশ্বাসের নাম হচ্ছে ঈমান, তাওহীদ ও একত্ববাদ। আর এর বিপরীতের নাম শিরক।
আত্মীয়তা নষ্টকারীঃ
দ্বিতীয় ব্যক্তি যার গোনাহ আল্লাহ মাফ করবেন না, যার তাওবা কবুল করবেন না, তাকে রহমত করবেন না, যে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছেদকারী। যাদের সাথে কোন ভাইয়ের সম্পর্ক, বোনের সম্পর্ক নেই, মা-বাবার সাথে খারাপ আচরণ করেছে, অন্যায় করেছে, ফুফুর সাথে সম্পর্ক নেই, খালার সাথে সম্পর্ক নেই, মামার সাথে সম্পর্ক নেই, রক্তের আত্মীয়-স্বজনের সাথে যাদের সম্পর্ক নেই, সম্পর্ক নষ্ট করেছে, আজকের এ রাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁদের গোনাহকে মাফ করবেন না। তাদের দোয়া কবুল করবেন না। তাদেরকে রহমত করবেন না। কারো ভাইয়ের সাথে যদি সম্পর্ক নষ্ট থাকে, বোনের সাথে যদি সম্পর্ক নষ্ট থাকে, মা-বাবার সাথে যদি কখনো বেয়াদবি হয়ে থাকে, তাহলে এখনই ক্ষমা চেয়ে তার পর আল্লাহর রহমত চাইতে হবে, এর আগে যদি আল্লাহর রহমত চাওয়া হয় আল্লাহ রহমত করবেন না। বিশেষ করে মা-বাবার ব্যাপারেও হাদীসে বিশেষ সতর্ক বাণী উচ্চারিত হয়েছে। অন্য হাদীসে আছে, এ রাতে যারা মা-বাবার সাথে কোন বেয়াদবি করেছে মা-বাবার অন্তরে আঘাত দিয়েছে, কথায় কষ্ট দিয়েছে, কাজে কষ্ট দিয়েছে, সামর্থ থাকা সত্তেও মা-বাবার জন্য ব্যয় করেনি, মা-বাবার অসুস্থ থাকা অবস্থায় তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আজকের রাতে তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। যাদের মা-বাবা এখন দুনিয়াতে নেই, ক্ষমা চাওয়ার মত উপায় নেই তাদের পরিত্রানের উপায় হল তাদের কবর যিয়ারত করা, তাদের জন্য আল্লাহর দরবারে তাওবা এবং দোয়া করা।
বর্জনীয় কাজসমূহঃ
এই রাকত যে সব কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে- পটকা ফুটানো, আতশ বাজি, বোমাবাজি, গোলাবারুদ ইত্যাদি। এই সমস্ত কাজ ইসলামী শরীয়তে সম্পূর্ণ হারাম, এর থেকে মুসলিম উম্মাহকে বিরত থাকতে হবে।
মহিমান্বিত রজনীতে আমাদের সবার উচিত নিজের যাবতীয় গোনাহের জন্য তাওবা করে রাব্বুল আলামিনের দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করা। মনের নেক আশা-আকাঙ্খা পূরণে ও মৃতদের মাগফেরাতের জন্য বেশি বেশি দোয়া করা। দান-সদকাসহ নফল আমলের মাধ্যমে ভেজা চোখে মোনাজাতে রাত কাটানো। মনে রাখা দরকার, সারারাত জাগ্রত থেকে ইবাদত করা সুন্নত; ওয়াজিব বা ফরজ কোনো আমল নয়। তাই অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে যে, রাতভর নফল ইবাদত করে ফজরের নামাজ যেন কাজা না হয়। ইবাদতে প্রশান্ত হওয়ার রাতটি ভেজা চোখে মোনাজাতে কাটাতে পারলে আল্লাহতা‘য়ালার রহমতের ধারা নেমে আসবে ইনশাআল্লাহ।


মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:১১

এমেরিকা বলেছেন: শবে বরাত বলে কিছু নেই। এগুলো মসজিদের ইমাম আর ওয়াজিনদের সৃষ্টি।

২| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: ফিজিলত আর আমল শব্দ দুইটা আমার অপছন্দ।

৩| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:২১

রে-ইসম্যান বলেছেন: @ এমেরিকা আপনার সাথে একমত নই ভাইজান !!!
@ রাজীব নুর ভাই আরবিতে যেটা আমল , বাংলায় সেটা কাজ আর কাজের ফলাফলটাই আরবিতে ফজিলত বুঝায়।
কাজ যেমন দুই রকম ভালো আর মন্দ আবার কাজের ফলাফলেরও রকমসমক ভিন্ন।
সেই দৃষ্টিকোন থেকে আমরা সকলেই কম বেশি কাজ বা আমল আমাদের নিত্য দিনে করেই থাকি।
আমল বলতে আলাদা কোন টার্ম নাই ভাই । আর ফজিলত বলতেও না।
আসলে কাজ আর কাজের ফলাফল বা ক্রেডিট। ভালোবাসা নিবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.