![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভূমিকাঃ
আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁরই ইবাদত করার জন্য। আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন বলেছেন, ‘আমি জিন ও মানবজাতিকে একমাত্র আমারই ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছি।’ (জারিয়াত : ৫৬)। আল্লাহ তা’য়ালার একান্ত ইচ্ছা তাঁর প্রত্যেক বান্দা তাঁর ইবাদত সম্পন্ন করার মাধ্যমে ইহ ও পরকালীন জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলবে। ইবাদত মূলত দুই প্রকার। যথা- ১. ফরজ ইবাদতঃ যেমন- নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদি। ২. নফল ইবাদতঃ যেমন- নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ শরিফ, দান-খয়রাত, নফল রোজা রাখা ইত্যাদি। মানব জাতি মূলত তখনই মহান আল্লাহ তা‘য়ালার কাছে প্রকৃত সম্মানিত ও প্রিয় হবে, যখন তার প্রতিটি কাজ হবে একমাত্র আল্লাহ তা’য়ালারই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে। সবসময় সুখে-দুঃখে একমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে, তাঁকেই ভালো বাসবে। তাঁরই নৈকট্য লাভের চেষ্টায় সব সময় ব্যস্ত থাকবে। আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘যখন তুমি (ফরজ দায়িত্ব পালন থেকে) অবসর হবে, তখন (নফল ইবাদতের মাধ্যমে) তোমার রবের প্রতি মনোনিবেশ করো’ (আলাম নাশরাহ : ৭-৮)। ফরজ ইবাদত সুসম্পন্ন করার সঙ্গে সঙ্গে নফল ইবাদতে অধিক মনোযোগী হবে। নফল ইবাদতগুলোর মধ্যে নফল রোজা বান্দাকে অতি সহজেই মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছে দেয়। রামাদানের পরের মাস শাওয়াল। শাওয়াল হলো আরবি চান্দ্র বছরের দশম মাস। এটি হজ্বের তিন মাস-শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজের প্রথম মাস; এই মাসের প্রথম তারিখে
ঈদুল ফিতর বা রামাদানের ঈদ। পয়লা শাওয়াল সাদাকাতুল ফিতর বা ফিতরা আদায় করা এবং ঈদের নামাজ পড়া ওয়াজিব। এই মাসের সঙ্গে ঈদুল ফিতর, সাদাকা, জাকাত, রোজা ও হজ্বের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তাই এই মাস আমল ও ইবাদতের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
শাওয়ালের অর্থ ও তাৎপর্যঃ
‘শাওয়াল’ আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো উঁচু করা, উন্নতকরণ, উন্নত ভূমি, পূর্ণতা, ফলবতী, পাল্লা ভারী হওয়া, গৌরব করা, বিজয়ী হওয়া, প্রার্থনায় হস্ত উত্তোলন করা বা ভিক্ষায় হস্ত প্রসারিত করা, ইত্যাদি। এসব অর্থের প্রতিটির সঙ্গেই শাওয়ালের সুগভীর সম্পর্ক রয়েছে। এই মাসের আমলের দ্বারা উন্নতি লাভ হয়, পূর্ণতা ফল লাভ হয়, নেকির পাল্লা ভারী হয়, গৌরব অর্জন হয় ও সাফল্য আসে, ফলপ্রার্থী আল্লাহর কাছে হস্ত সম্প্রসারিত করে প্রার্থনা করে, পূর্ণ মাস রোজা পালনের পর আরও কয়েকটি রোজা রাখে, প্রাপ্তির আনন্দে বিভোর হয়, ফরজ রোজা পালন শেষে নফল রোজার প্রতি মনোনিবেশ করে, আত্মনিয়ন্ত্রণের শক্তি অর্জন করে, পরিপক্বতা ও স্থিতি লাভ করে। শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, ‘যারা রামাদানে রোজা পালন করবে এবং শাওয়ালে আরও ছয়টি রোজা রাখবে, তারা যেন সারা বছরই রোজা পালন করল’ (মুসলিম : ১১৬৪, আবু দাউদ : ২৪৩৩, তিরমিজি, নাসায়ি, ইবনে মাজাহ, সহীহ্-আলবানি)।
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা’য়ালা শাওয়াল মাসের ৬ দিনে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি এই মাসে ৬ দিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক সৃষ্ট জীবের সংখ্যা হিসাবে তার আমলনামায় নেকি লিখে দেবেন, সমপরিমাণ গুনাহ মুছে দেবেন এবং পরকালে তার দরজা বুলন্দ করে দেবেন।’
শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলতঃ
শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত সম্পর্কে হযরত আবু আইয়ুব আনসারি (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রসূল (সাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রামাদানের রোজা রাখল, অতঃপর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল।’ (সহীহ মুসলিমঃ ৮২২)। অপর বর্ণনায় আছে, যে ব্যক্তি রামাদানের রোজা শেষ করে ছয় দিন রোজা রাখবে, সেটা তার জন্য পুরো বছর রোজা রাখার সমতুল্য। (মুসনাদে আহমাদ)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো ইরশাদ করেন, যারা পবিত্র রামাদানের রোজা রাখার পর শাওয়ালের আরো ছয়টি রোজা রাখবে তারা সেই ব্যক্তির মতো হয়ে যাবে যে ব্যক্তি সদ্য তার মায়ের পেট থেকে দুনিয়াতে আগমন করেছে। অর্থাৎ সে শিশু যেভাবে পুত-পবিত্র তথা নিষ্পাপ, তার কোনো গুনাহ নেই, যারা শাওয়ালের ছয় রোজা রাখবে তারাও সেই নিষ্পাপ শিশুর মতো হয়ে যাবে। (তিরমিজ)
হযরত উবাইদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রসুলুল্লাহ (সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ইয়া রসুলুল্লাহ, আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব?’ তখন রসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, ‘তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে। কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রামাদানের রোজা রাখ এবং রামাদান-পরবর্তী শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখ, তাতেই সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে। ’ (তিরমিজি শরিফ, খ- ১ পৃ. ১৫৭)। হাদীস শরিফে আছে, কিয়ামতের দিনে হাশরের ময়দানে কোনো আদমসন্তান পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এককদমও নড়তে-চড়তে পারবে না। প্রশ্ন পাঁচটি হলো: জীবন, যৌবন, আয়, ব্যয় ও জ্ঞান। (তিরমিজি: ২/ ৬৭; আরবাইন, নববি: ১৯, ২০ ও ২১)। এখানে দেখা যাচ্ছে সর্বশেষ ও চূড়ান্ত প্রশ্ন হলো জ্ঞান বা বিবেকের সঠিক ব্যবহার বা প্রয়োগ ও তার অনুসরণ করা হয়েছে কি না। অতএব বিবেক বা জ্ঞানের সীমা লঙ্ঘন করা মুমিন বা মুসলিমের কাজ নয়। রামাদান চলে যাওয়ার পরও বান্দা যেন সিয়াম সাধনা অব্যাহত রাখেন সে জন্য প্রতি চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজা, শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা, আশুরার রোজা, ৯ জিলহজ আরাফার দিনের রোজা, ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) এর রোজাসহ অন্যান্য নফল রোজার বিধান দিয়েছেন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ)। ফরজ নামাজের কমতিগুলো পূরণ করতে যেমন নফল নামাজ রয়েছে তেমনি ফরজ রোজার পরও শাওয়ালের সুন্নত রোজা রয়েছে রামাদানের পূর্ণতা প্রদান করতে। শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজার মাধ্যমে রামাদানের রোজার শুকরিয়া আদায় করা হয়। সুতরাং এ রোজাগুলো রাখতে পারা রামাদানের রোজা কবুল হওয়ার লক্ষণও বটে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজে এ রোজা রাখতেন এবং সাহাবায়ে কেরামদের রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন। একজন মানুষ ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি অধিকহারে নফল ইবাদত-রিয়াজত করতে করতে আল্লাহর বান্দা হতে বন্ধুতে পরিণত হয়ে যায়। নফল ইবাদত করার মাধ্যমে আল্লাহ নৈকট্য লাভ করা যায়। কুরআনুল কারীমে এসেছে, “আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবেন না” (ইউনুসঃ ৬২)।
এক বছরের সমান হয় যেভাবেঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক বছরের সমান হওয়ার বিষয়টিও ব্যাখ্যা করেছেন।
হযরত সাওবান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “রামাদানের রোজা দশ মাসের আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দু’মাসের রোজার সমান, সব মিলিয়ে এক বছরের রোজা” (নাসায়ী শরিফ)। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, “রামাদান মাসের রোজা হচ্ছে ১০ মাসের সমান। আর ছয় দিনের রোজা হচ্ছে দুই মাসের সমান। এভাবে এক বছরের রোজা হয়ে গেল” (সহীহ ইবনে খুজাইমা,নাসায়ি শরিফ, ২য় খন্ড,পৃষ্ঠা. ১৬২) এ হিসেবে রামাদানের ৩০টি রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা যুক্ত হলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬টি। আর প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে কোরআনুল কারিমে। সূরা আনআমের ১৬০ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি একটি সৎ কাজ করল সে ১০ গুণ সওয়াব পাবে।’ এ হিসাবে যে ব্যক্তি রামাদানের এক মাস রোজা রাখল সে ১০ মাস রোজা রাখার সওয়াব পাবে। আর ছয়টি রোজার ১০ গুণ ৬০ দিন। অর্থাৎ দুই মাস। আর এ দুই মাস মিলে ১২ মাস রোজার সওয়াব। তাহলে ৩৬টি রোজার ১০ গুণ হলে ৩৬০টি রোজার সমান (এটি পুরস্কারের দিক থেকে)। অর্থাৎ সারা বছর রোজার সমান সওয়াব হবে।’ আর কোনো রামাদান মাস যদি ২৯ দিন হয়, তাহলেও আল্লাহ তায়ালা রোজাদারকে ৩০ দিনেরই সওয়াব দান করেন।
শাওয়াল মাসের ছয়টি সুন্নত রোজাঃ
এই মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখা সুন্নত। রাসূল (সাঃ) বলেন: যারা রামাদানে রোজা পালন করবে এবং শাওয়ালে আরও ছয়টি রোজা রাখবে; তারা যেন সারা বছরই রোজা পালন করল। (মুসলিম, : ১১৬৪; আবু দাউদ: ২৪৩৩; তিরমিজি, নাসায়ি, ইবনে মাজাহ, সহিহ-আলবানি)। শাওয়াল মাসের এ ছয়টি রোজা মূলত সুন্নত। যেহেতু রাসূল (সাঃ) নিজে তা আমল করেছেন এবং আমল করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু পরিভাষায় এগুলোকে নফল রোজা বলা হয়। কারণ, এগুলো ফরজ ও ওয়াজিব নয়, অতিরিক্ত তথা নফল।
কাজা রোজা ও সুন্নত বা নফল রোজাঃ
রামাদান মাসের কাজা রোজা সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা’য়ালা কোরআনে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ থাকবে কিংবা সফরে থাকবে সে (রামাদানের পরে) অন্য দিনগুলোতে রোজা রাখতে পারবে।’ (বাকারা: ১৮৪)। তাই যাঁরা সফরের ক্লান্তির কারণে কিংবা অসুস্থ থাকার কারণে রামাদানে পূর্ণ রোজা রাখতে পারেননি, তাঁরা সেগুলো রামাদানের পর অন্য সময়ে আদায় করে নেবেন। আর ওই অসুস্থতার মধ্যে মহিলাদের ঋতুমতী হওয়াও শামিল। এ বিষয়ে মা হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (সাঃ)-এর যুগে ঋতুমতী হতাম। তখন আমাদের এই রোজা পরে কাজা আদায় করার নির্দেশ দেওয়া হতো; কিন্তু নামাজ কাজা আদায় করার কথা বলা হতো না। (অর্থাৎ ওই অবস্থায় নামাজ মাফ, কিন্তু রোজা মাফ নয়। তা পরে আদায় করে নিতে হবে)। (বুখারী ও মুসলিম; মিশকাত: ২০৩২)।
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমার ওপর রামাদানের যে কাজা রোজা বাকি থাকত, তা পরবর্তী শাবান মাস ব্যতীত আমি আদায় করতে পারতাম না। (বুখারী: ১৯৫০; মুসলিম: ১১৪৬)। এই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়, রামাদানের ছুটে যাওয়া কাজা রোজা পরবর্তী রামাদান মাস আসার আগে যেকোনো সময় আদায় করা যাবে। রামাদানের কাজা রোজা রাখার জন্য সময় সংকীর্ণ না হলে তার আগে নফল রোজা রাখা বৈধ ও শুদ্ধ। অতএব সময় যথেষ্ট থাকলে ফরজ রোজা কাজা করার আগে নফল রোজা রাখতে পারবেন। যেমন, ফরজ নামাজ আদায় করার আগে সময় থাকলে নফল নামাজ আদায় করতে পারেন। তাই শাওয়ালের ছয়টি সুন্নত রোজা রামাদানের কাজা রোজা আদায়ের আগেও রাখা যাবে। যেমন, হযরত আয়েশা (রাঃ) আমল করতেন। তবে সম্ভব হলে আগে ফরজ রোজার কাজা আদায় করাই উত্তম। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ১৬৬)।
শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার নিয়মঃ
ঈদুল ফিতরের দিন ছাড়া মাসের যেকোনো সময় এই রোজা আদায় করা যায়। ধারাবাহিকভাবে বা মাঝেমধ্যে বিরতি দিয়েও আদায় করা যায় কিংবা পৃথকভাবেও আদায় করা যায়। তবে শাওয়ালের প্রথম দিকে একসঙ্গে ছয়টি রোজা রাখাই উত্তম। যাদের রামাদানের রোজার কাজা আছে, তারা আগে কাজা আদায় করবে। অতঃপর শাওয়ালের রোজা পালন করবে। উল্লেখ্য যে, শাওয়ালের ছয় রোজার সওয়াব তারা পাবে, যারা রামাদানের রোজা সঠিকভাবে পালন করেছে। কারণ রামাদানের রোজা হচ্ছে ফরজ আর শাওয়ালের রোজা হলো মুস্তাহাব। মুস্তাহাবের সওয়াব তখনই পাওয়া যায় যখন ফরজ পালন করা হবে। তাছাড়া নফলসমূহ ফরজের ত্রুটিগুলোর ক্ষতিপূরণ করে। অনুরূপভাবে শাওয়ালের ছয় রোজা রামাদানের ফরজ রোজার অসম্পূর্ণতাকে সম্পূর্ণ করে এবং তাতে কোনো ত্রুটি থাকলে তাও দূর করে। লক্ষণীয় বিষয় হলো, কেউ নফল রোজা রেখে ভেঙে ফেললে তার কাজা আদায় করা ওয়াজিব।
শাওয়াল মাসে রোজা রাখার নিয়তঃ
উল্লেখ্য, রামাদান মাসে ফরজ রোজা ছাড়া অন্য সব রোজার নিয়ত সাহারীর সময়ের মধ্যেই করতে হবে। ঘুমানোর আগে বা তারও আগে যদি এই দিনের রোজার পাক্কা ইচ্ছা বা দৃঢ় সংকল্প থাকে, তাহলে নতুন নিয়ত না হলেও চলবে এবং সাহারী না খেতে পারলেও রোজা হবে। (ফাতাওয়া শামি)।
ইফতার
রামাদানে যেহেতু ফরজ রোজা সবাইকে রাখতে হয়, তাই সবার সুবিধার্থে ইফতারের পরে একটু বিলম্বে জামায়াত হয়। রামাদান ছাড়া অন্য সময় বিভিন্ন রোজাগুলো যেহেতু ব্যাপকভাবে সবাই একসঙ্গে রাখেন না, তাই মাগরিবের জামায়াতের ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে; দীর্ঘ ইফতারের জন্য যেন জামায়াত ছুটে না যায়। বরং এসব ক্ষেত্রে মসজিদে পানি বা সামান্য কিছু দিয়ে ইফতার করে মাগরিবের নামাজ জামায়াতে আদায় করে পরে খাওয়াদাওয়া করা বাঞ্ছনীয়। মনে রাখতে হবে, জামায়াতে নামাজ আদায় করা অন্য সুন্নত নফল অপেক্ষা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ।
আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের সকলকেই তাঁর নির্দেশিত ও রাসূল (সাঃ) এর প্রর্দশিত পথে চলার সাথে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখার তাওফিক দিন।
২| ২২ শে মে, ২০২১ দুপুর ১২:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: সব মাসই সমান। জোর করে কোনো কোনো মাসকে কেন মহত্ব দেওয়া হবে?
৩| ২৩ শে মে, ২০২১ সকাল ১০:৫০
মোহাম্মদ আবুল হোসাইন চৌধুরী বলেছেন: মাক্কি ও মাদানি সূরার বৈশিষ্ট্য:
আল-কুরানের সূরাসমূহকে ২ভাগে ভাগ করা হয়েছে
১. মাক্কি সূরা
২. মাদানি সূরা
মাক্কি সূরা : যে সমস্ত সূরা রাসূল সাঃ এর মাক্কি জীবনে অর্থাৎ হিজরতের পূর্বে নাজিল হয়েছে ।
মাদানি সূরা : যে সমস্ত সূরা রাসূল সাঃ এর মাদানি জীবনে অর্থাৎ হিজরতের পরে নাজিল হয়েছে।
মাক্কি সূরার বৈশিষ্ট
১. সাধারণত সূরা ও আয়াতগুলো ছোট ছোট ও ছন্দময়।
২. তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাত সংক্রান্ত আলোচনা।
৩. অধিকাংশ ক্ষেত্রে يَا اَيُّهَا اَلنَّاسُ (হে মানবজাতি) বলে সম্বোধন।
৪. মাক্কি সূরা ব্যক্তিগঠনে হিদায়াতপূর্ণ
৫. আল-কুরআন সত্যতার প্রমাণ ও ঈমান আকিদার আলোচনা।
৬. মানুষের ঘুমন্ত বিবেক ও নৈতিকতাবোধ জাগ্রত করে চিন্তাশক্তিকে সত্য গ্রহণে উদ্ধুদ্ধ করা।
৭.ভবিষ্যতকালিন ক্রিয়ার শুরুতে س ও سوف শব্দের ব্যবহার বেশি।
মাদানি সূরার বৈশিষ্ট্য
১. সাধারণত সূরা ও আয়াতগুলো বড় ও গদ্যময়।
২. অধিকাংশ ক্ষেত্রে يَا اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا (হে ঈমানদারগণ) বলে সম্বোধন।
৩. সামাজিক বিধি-বিধান, ফৌজদারি আইন, উত্তরাধিকারী আইন, বিয়ে তালাক ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা।
৪. যুদ্ধ, সন্ধি, গনিমত, জিজিয়া ইত্যাদির বিবরণ।
৫. ইবাদত, আহকামে শরিয়ত ও হালাল-হারামের বর্ণনা।
৬. মুনাফিক ও কাফিরদের সাথে আচরণ সংক্রান্ত আলোচনা।
৭. জাকাত ও ওশরের নিয়ম-কানুন আলোচনা।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে মে, ২০২১ সকাল ১১:৪৯
রানার ব্লগ বলেছেন: আচ্ছা আমার একটা প্রশ্ন আছে যদিও আপ্রাসঙ্গিক তা হলো মাদানী সুরা আর মাক্কি সুরার মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য দেখা যায় কেনো?