![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নারী পুরুষের বিবাহ বন্ধন থেকেই পরিবারের উৎপত্তি। সমাজ জীবনের প্রথম ভিত্তিই হলো পরিবার। পরিবার বলতে স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্তুতি, ভাই-বোনদের সমন্বয়ে গড়ে উঠা একান্নভুক্ত পরিমন্ডলকে বুঝায়। সুন্দর সমাজ বির্নিমানে পরিবার ও পারিবারিক জীবনের গুরুত্ব অত্যাদিক। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে খরচ করার ব্যাপারটি পার্থিব মনে হলেও এতে আল্লাহ তা’আলা প্রতিদান দেবেন। অন্যদিকে পরিবারের ভরণ-পোষণ খরচ বহনের বিষয়টিও জাগতিক বিষয় মনে হলেও এটি একটি মহান দ্বীনি দায়িত্ব ও কর্তব্য। এর বিনিময়ে আল্লাহ আখেরাতে পুরস্কৃত করবেন।
অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগির চেয়ে কোরআন ও হাদীসে পরিবারের জন্য ব্যয়ের বিষয়টিকে কোনোভাবে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বরং নিজের ও পরিবারের জন্য বৈধ রিজিকের সন্ধান করা একজন মুসলিমের ফরজ বা অত্যাবশক দায়িত্ব। মুমিনের সব কাজই ইবাদত; যদি তা হয় আল্লাহর হুকুম এবং রাসূল (সাঃ)-এর সুন্নত মোতাবেক। একজন মানুষের জন্য নামাজ, রোজা যেমন ইবাদত, তেমনি সংসার করাও ইবাদত। পরিবারের লোকদের জন্য খরচ করাও ইবাদত।
পরিবারের জন্য খরচ করলে মহান আল্লাহ যেমন রিজিকে বরকত দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, তেমনি পরিবারের জন্য উপার্জনরত ব্যক্তিকেও তিনি দিয়েছেন মুজাহিদের মর্যাদা। সন্তান-সন্তুতির প্রতি অনুগ্রহ করলে জান্নাত লাভ হয় এবং জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যায়। ভরণ-পোষণের ব্যয়ভার দুটি কারণে বর্তায় : এক. বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে, দুই. আত্মীয়তার সম্পর্কে। শরিয়ত বিবাহের পর থেকেই স্বামীর ওপর স্ত্রীর জন্য যেসব অধিকার সাব্যস্ত করেছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো স্ত্রীর ব্যয়ভার গ্রহণ করা। ভরণ-পোষণের ব্যাপারে ইসলামী শরিয়ত পরিমাণ নির্ধারিত করে দেয়নি। বরং শরিয়তের ভাষায় স্ত্রীকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ভরণ-পোষণ দেওয়া স্বামীর কর্তব্য। এই পরিমাণ পরিবেশ-পরিস্থিতি ও স্বামীর সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে। পরিবারের জন্য সাধ্যমত খরচ করা আভিজাত্যের পরিচয় বহন করে। কৃপণতা করা সম্পূর্ণ অনুচিত। কৃপণতার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ার বাণী এসেছে। কোরআনে ও হাদীসে অনেকবার সতর্ক করা হয়েছে।
পরিবারের জন্য ব্যয়ের ব্যাপারে কুরআনের ভাষ্যঃ
১. আল্লাহ তা’আলা বলেন-‘হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেরা বাঁচ এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে রক্ষা কর। সেই অগ্নি থেকে যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর। যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে’। (তাহরিম : ৬)
২. মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘সন্তানের পিতার ওপর সন্তানের মায়ের জন্য অন্ন-বস্ত্রের উত্তম পন্থায় ব্যবস্থা করা একান্ত দায়িত্ব’ । (বাকার : ২৩৩)
৩. কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা স্ত্রীদের জন্য তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী নিজেদের ঘরে বাসস্থানের ব্যবস্থা করো’। (তালাক : ৬)
৪. বিত্তশালী ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয় করবে। যে ব্যক্তি সীমিত পরিমাণে রিযিকপ্রাপ্ত, সে আল্লাহ যা দিয়েছেন তা থেকে ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যা দিয়েছেন, তদপেক্ষা বেশী ব্যয় করার আদেশ কাউকে করেন না। আল্লাহ কষ্টের পর সুখ দিবেন। (ত্বালাক্ব : ৭)
৫. আর যারা ঈমান এনেছে পরবর্তী পর্যায়ে এবং ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং তোমাদের সাথে সম্মিলিত হয়ে জেহাদ করেছে, তারাও তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত। বস্তুতঃ যারা আত্নীয়, আল্লাহর বিধান মতে তারা পরস্পর বেশী হকদার। নিশ্চয়ই আল্লাহ যাবতীয় বিষয়ে সক্ষম ও অবগত। (আনফাল : ৭৫)
৬. মহান আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, ‘আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, যার অসিলা দিয়ে তোমরা একে অপরের কাছে আত্মীয়তার অধিকার প্রার্থনা করো’। (নিসা : ১)
৭. বলুন, নিশ্চয় আমার রব তো তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছে রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং তার জন্য সীমিত করেন। আর তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে, তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা। (সাবা : ৩৯)
৮. আল্লাহ তা’আলা সিত্যকার বুদ্ধিমানদের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন,‘‘আর যারা আল্লাহ তা’আলা যে সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখেতে আদেশ করেছেন তা অক্ষুন্ন রাখে, ভয় করে তাদের প্রভুকে এবং ভয় করে কঠোর হিসাবকে।( রা’দ : ২১)
৯.আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন, ‘‘যারা আল্লাহ তা’আলাকে দেওয়া দৃঢ় অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, যে সর্ম্পক অক্ষুন্ন রাখতে আল্লাহ তা’আলা আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথীবিতে অশান্তি সৃষ্টি করে তাদের জন্য রয়েছে লা’নত ও অভিসম্পাত এবং তাদের জন্যই রয়েছে মন্দ আবাস। (রা’দ : ২৫)
১০. আল্লাহ তা’আলা বলেন, ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারলে সম্ভবত তোমরা পৃথীবিতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্নীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। আল্লাহ তা’আলা তাদেরকেই করেন অভিসম্পাত, বধির ও দৃষ্টিশক্তিহীণ। (মুহাম্মদ : ২২-২৩)
পরিবারের জন্য ব্যয়ের ব্যাপারে হাদীসের ভাষ্যঃ
১. হযরত আবু মাসউদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, সওয়াবের আশায় কোন মুসলিম যখন তার পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করে, তখন তা সাদাকাহহ হিসাবে গণ্য হয়’’। (বুখারী : ৫৫, ৪০০৬, ৫৩৫১, মুসলিম : ১০০২, তিরমিযি : ১৯৬৫, নাসায়ি : ২৫৪৫, আহমদ : ১৬৬৩৪, ১৬৬৬১, ২১৮৪২, দারেমি : ২৬৬৪)
২. হযরত আল মিকদাদ ইবন মাদি কারিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে নবী (সাঃ) বলেন, ‘তুমি নিজে যা খাবে তা তোমার জন্য সাদাকাহ। তুমি তোমার সন্তানকে যা খাওয়াবে তা তোমার জন্য সাদাকাহ। তুমি তোমার স্ত্রীকে যা খাওয়াবে তা তোমার জন্য সাদাকাহ। তুমি তোমার চাকরকে যা খাওয়াবে তা তোমার জন্য সাদাকাহ’। (মুসনাদু আহমাদ ইবন হাম্বাল : ১৭২১৮)
৩. হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘‘এক দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) তুমি আল্লাহর পথে ব্যয় কর, এক দীনার ক্রীতদাস মুক্ত করার কাজে ব্যয় কর, এক দীনার কোন মিসকীনকে সাদাকাহহ কর এবং এক দীনার তুমি পরিবার পরিজনের জন্য ব্যয় কর। এ সবের মধ্যে ঐ দীনারের বেশী নেকী রয়েছে যেটি তুমি পরিবার-পরিজনের উপর ব্যয় করবে’’। (মুসলিম : ২৩৫৮)
৪. হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেন, উত্তম সাদাকাহ হল যা দান করার পরেও মানুষ অমুখাপেক্ষী থাকে। উপরের হাত নীচের হাতের চাইতে শ্রেষ্ঠ। যাদের ভরন-পোষণ তোমার যিম্মায় তাদের আগে দাও। (কেননা) স্ত্রী বলবে, হয় আমাকে খাবার দাও, নতুবা তালাক দাও। গোলাম বলবে, খাবার দাও এবং কাজ করাও। ছেলে বলবে, আমাকে খাবার দাও, আমাকে তুমি কার কাছে রেখে যাচ্ছ? লোকেরা জিজ্ঞাসা করলঃ হে আবূ হুরায়রা আপনি কি এ হাদীস রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে শুনেছেন? তিনি উত্তরে বললেনঃ এটি আবূ হুরায়রা জামবিলের নয় (বরং নবী (সাঃ) থেকে)। (বুখারী : ৪৯৬৪ ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫. হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, খরচ কর, হে, আদম সন্তান আমিও খরচ করবো তোমার প্রতি। (বুখারী : ৪৯৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৬. হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, উত্তম দান তাই, যা দিয়ে মানুষ অভাবমুক্ত থাকে। যাদের ভরণ-পোষণ তোমার দায়িত্ব তাদের থেকে আরম্ভ কর। (বুখারী : ৪৯৬৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৭. হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (সাঃ) বলেছেন, যদি কোন মহিলা স্বামীর উপার্জন থেকে বিনা হুকুমে দান করে, তবে সে তার অর্ধেক সাওয়াব পাবে। (বুখারী : ৪৯৬৯ ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৮. হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেন, বিধবা ও মিসকিনের জন্য খাদ্য জোগাড় করতে চেষ্টারত ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের মতো অথবা রাতে সালাতে দণ্ডায়মান এবং দিনে সিয়ামকারীর মতো। (বুখারী, হাদীস : ৫৩৫৩)
৯. হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নবী (সাঃ) এর নিকট এক ব্যক্তি এলো এবং বললো আমি ধংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ কেন? সে বললোঃ রামাদান মাসে আমি (দিবসে) স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ একটি দাস মুক্ত করে দাও। সে বললোঃ আমার কাছে কিছুই নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে একাধারে দু-মাস রোযা রাখ। সে বললঃ সে ক্ষমতাও আমার নেই। তিনি বলেনঃ তবে ষাটজন মিসকীনকে আহার করাও। সে বললোঃ সে সামর্থ্যও আমার নেই।
এ সময় নবী (সাঃ) এর কাছে এক বস্তা খেজুর এল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ প্রশ্নকারী কোথায়? লোকটি বললোঃ আমি এখানে। তিনি বললেনঃ এগুলো দিয়ে সাদাকাহহ কর। সে বললোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের চেয়ে অভাবগ্রস্তকে দিব? সেই সত্তার শপথ। যিনি আপনাকে সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন, মদিনার প্রস্তরময় দু-পার্শ্বের মধ্যে আমাদের চেয়ে অভাবগ্রস্ত কোন পরিবার লেই। তখন নবী (সাঃ) হাসলেন এমন কি তার চোয়ালের দাত মোবারক পর্যন্ত দেখা গিয়েছিল এবং বললেনঃ তবে তোমাদেরই অনুমতি দেওয়া হল। (বুখারী : ৪৯৭৭ ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১০. হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন, ‘‘প্রতিদিন সকালে দু’জন ফিরিশতা অবতরণ করেন। তাঁদের একজন বলেন, ‘হে আল্লাহ! দাতাকে তার দানের বিনিময় দিন।’ আর অপরজন বলেন, ‘হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস দিন’’। (বুখারী : ১৪৪২, মুসলিম : ২৩৮৩)
১১. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর স্বাধীনকৃত গোলাম আবূ আব্দুল্লাহ মতান্তরে আবু আব্দুর রহমান সাওবান ইবনে বুজদুদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘‘(সওয়াবের দিক দিয়ে) সর্বশ্রেষ্ঠ দীনার সেইটি, যে দীনারটি মানুষ নিজ সন্তান-সন্ততির উপর ব্যয় করে, যে দীনারটি আল্লাহর রাস্তায় তার সওয়ারীর উপর ব্যয় করে এবং সেই দীনারটি যেটি আল্লাহর পথে তার সঙ্গীদের পিছনে খরচ করে’’। (মুসলিম : ২৩৫৭)
১২. হযরত উম্মে সালামাহ্ (রাঃ) বলেন, একদা আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি যদি (আমার প্রথম স্বামী) আবূ সালামাহর সন্তান-সন্ততির উপর ব্যয় করি, তাতে কি আমি নেকী পাব? আমি তো তাদেরকে এভাবে ছেড়ে দিতে পারছি না, তারা তো আমারই সন্তান।’ তিনি বললেন, ‘‘হ্যাঁ, তুমি তাদের উপর ব্যয় করার দরুন নেকী পাবে।’’ (বুখারী: ১৪৬৭, ৫৩৬৯, মুসলিম: ২৩৬৭) উক্ত অর্থ সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘মানুষের পাপী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে যার খাদ্যের মালিক, তার খাদ্য সে আটকে রাখে’’। (মুসলিম : ২৩৫৯)
১৩. হযরত সা’দ ইবনে আবী অক্কাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি তাঁর দীর্ঘ হাদীসে বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তাঁকে বলেছেন, ‘‘আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে তুমি যা ব্যয় করবে, তোমাকে তার বিনিময় দেওয়া হবে। এমনকি তুমি যে গ্রাস তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দাও তারও বিনিময় তুমি পাবে! ”। (বুখারী : ১২৯৫, মুসলিম : ৪২৯৬)
১৪. মহানবী (সাঃ) বিদায় হজের ভাষণে দীর্ঘ বয়ানের একপর্যায়ে বলেছিলেন-'অতএব, তোমরা স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করো, কেননা তোমরা তাদের আল্লাহর আমানত ও প্রতিশ্রুতির ওপর গ্রহণ করেছ এবং তোমরা আল্লাহর হুকুমেই তাদের লজ্জাস্থান হালাল হিসেবে পেয়েছ। তাদের ওপর তোমাদের অধিকার হলো, তারা তোমাদের অপছন্দ হয় এমন লোককে তোমাদের বিছানায় আসতে দেবে না। যদি তারা এ অন্যায় কাজ করে, তাহলে তাদের হালকা প্রহার করতে পারবে, যাতে শরীরে কোনো জখম বা আঘাত না হয়। আর তোমাদের ওপর তাদের অধিকার হলো, তাদের জন্য প্রয়োজন অনুপাতে খাবার ও পোশাকের ব্যবস্থা করো'। (সহীহ মুসলিম : ১২১৮)
১৫. হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, একদা ফাতিমা (রাঃ) যাতা ব্যবহারে তার হাতে যে কষ্ট পেতেন তার অভিযোগ নিয়ে নবী (সাঃ) এর কাছে আসলেন। তার কাছে নবী (সাঃ) এর নিকট দাস আসার খবর পৌছেছিল। কিন্তু তিনি নবী (সাঃ) কে পেলেন না। তখন তিনি তার অভিযোগ আয়েশার কাছে বললেন। রাসূল (সাঃ) ঘরে আসলে আয়েশা (রাঃ) তাকে জানালেন। আলী (রাঃ) বলেনঃ রাতে আমরা যখন শুয়ে পড়েছিলাম, তখন তিনি আমাদের কাছে আসলেন।
আমরা উঠতে চাইলাম, কিন্তু তিনি বললেনঃ তোমরা উভয়ে নিজ স্থানে থাক। তিনি এসে আমার ও ফাতেমার মাঝখানে বসলেন। এমনকি আমি আমার পেটে তার পায়ের শীতলতা অনুভব করেছিলাম। তারপর তিনি বললেনঃ তোমরা যা চেয়েছ তার চেয়ে কল্যাণকর বিষয় সম্বন্ধে তোমাদের অবহিত করব না? তোমরা যখন তোমাদের শয্যাস্থানে যাবে, অথবা বললেনঃ তোমরা যখন তোমাদের বিছানায় যাবে, তখন তেত্রিশবার সূবহানাল্লাহ, তেত্রিশবার আলহামদুলিল্লাহ এবং চৌত্রিশবার আল্লাহু আকবর পাঠ করবে। খাদেম অপেক্ষা ইহা তোমাদের জন্য অধিক কল্যাণকর।
(বুখারী : ৪৯৭০ ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১৬. হযরত হাকীম বিন হিযাম (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘উপরের (দাতা) হাত নিচের (গ্রহীতা) হাত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। যাদের ভরণপোষণ তোমার দায়িত্বে আছে তাদেরকে আগে দাও। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ থেকে সাদাকাহহ করা উত্তম। যে ব্যক্তি (হারাম ও ভিক্ষা করা থেকে) পবিত্র থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে পবিত্র রাখেন এবং যে পরমুখাপেক্ষিতা থেকে বেঁচে থাকতে চায়, আল্লাহ তাকে অভাবশূন্য করে দেন’’। (বুখারী : ১৪২৭)
১৭. হযরত আবু উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘অনিষ্টতা ও খারাপ থেকে বেঁচে থাকার জন্য যে ব্যক্তি নিজের জন্য কিছু খরচ করল তা তার জন্য সাদাকাহ এবং যে ব্যক্তি নিজ স্ত্রী, সন্তান-সন্তুতি ও পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য কিছু খরচ করল তা তার জন্য সাদাকাহ হিসেবে পরিগণিত হবে’। (মুজামুল আওসাত : ৩৮৯৭)
১৮. হযরত আবূ উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘‘হে আদম সন্তান! উদ্বৃত্ত মাল (আল্লাহর পথে) খরচ করা তোমার জন্য মঙ্গল এবং তা রুখে রাখা তোমার জন্য অমঙ্গল। আর দরকার মত মালে নিন্দিত হবে না। প্রথমে তাদেরকে দাও, যাদের ভরণপোষণ তোমার দায়িত্বে। আর উপরের হাত নিচের হাত অপেক্ষা উত্তম। (মুসলিম : ২৪৩৫, আহমাদ : ২২৬২১, তিরমিযী : ২৩৪৩)
১৯. হযরত আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘‘অবশ্যই আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে তার দায়িত্বাধীন ব্যক্তি ও বিষয় সম্পর্কে (কিয়ামতে) প্রশ্ন করবেন; ‘সে কি তার যথার্থ রক্ষণাবেক্ষণ করেছে, নাকি তার প্রতি অবহেলা করেছে?’ এমন কি গৃহকর্তার নিকট থেকে তার পরিবারের লোকেদের বিষয়েও কৈফিয়ত নেবেন।’’ (নাসাঈ, ইবনে হিব্বান : ৪৪৭৫, সহীহুল জামে : ১৭৭৪)
২০. হযরত আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা (আবূ সুফয়ানের স্ত্রী) মুআবিয়ার মা হিন্দ্ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বললেন যে, ‘আবূ সুফয়ান একজন কৃপণ লোক। আমি তার সম্পদ থেকে (তার অজান্তে) যা কিছু নিই, তা ছাড়া সে আমার ও আমার সন্তানকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খরচ দেয় না।’ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, ‘‘তোমার ও তোমার সন্তানের প্রয়োজন মোতাবেক খরচ (তার অজান্তে) নিতে পার।’’ (বুখারী : ২২১১, মুসলিম : ৪৫৭৪-৪৫৭৭)
২১. হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমার কাছে দুটি কন্যা সন্তানসহ এক মিসকিন এলো। আমি তাকে তিনটি খেজুর দিলাম। সে প্রত্যেককে একটি করে খেজুর দিলো এবং সে নিজে খাওয়ার জন্য একটি খেজুর মুখের দিকে উঠাল। কিন্তু তার কন্যাদ্বয় খেজুরটি খাওয়ার জন্য তার কাছে চাইল। ফলে সে যে খেজুরটি খেতে চেয়েছিল তা দুই ভাগে ভাগ করে দুইজনকে দিয়ে দিলো। তার বিষয়টি আমাকে বিস্মিত করল। সে যা করল আমি তা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে বর্ণনা করলাম। অতঃপর নবী (সাঃ) বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা এর বিনিময়ে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে দিয়েছেন। অথবা তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা এর বিনিময়ে জাহান্নামের আগুন থেকে তাকে মুক্তি দিয়েছেন’। (সহীহ মুসলিম : ৬৮৬৩)
২২. হযরত ইরবাদ ইবন সারিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে নবী (সাঃ) বলেন, ‘একজন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে পানি পান করালে সাওয়াব লাভ করবে। তিনি বলেন, এদশ্রবণে আমি আমার স্ত্রীর কাছে আসলাম, অতঃপর তাকে পানি পান করালাম এবং আমি যা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে শুনেছি তা বর্ণনা করলাম’ । (মুসনাদু আহমাদ ইবন হাম্বাল : ১৭১৯৫)
২৩. হযরত ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) একদা ‘আমর ইবন উমাইয়ার কাছে এলেন, তখন তিনি বাজারে রেশমি চাঁদরের দরদাম করছিলেন। তিনি বললেন হে আমর! রেশমি চাঁদর কী করা হবে? তিনি বললেন, আমি এটি ক্রয় করব, অতঃপর তা সাদাকাহ করব। তিনি বললেন, কাকে সাদাকাহ করবেন? তিনি বললেন, আমার সঙ্গিনীকে। তিনি বললেন-আপনার সঙ্গিনী কে? তিনি বললেন, আমার স্ত্রী। তিনি বললেন, আপনি আপনার স্ত্রীকে সাদাকাহ করবেন? তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে যা দেবে তাই তোমাদের জন্য সাদাকাহ হিসেবে পরিগণিত হবে। তিনি (হযরত উমার) বলেন, হে ‘আমর! আপনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর উপর মিথ্যা আরোপ করবেন না।
অতঃপর তিনি বললেন-আল্লাহর কসম! আপনি হযরত ‘আয়েশা (রাঃ)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস না করা পর্যন্ত আমি আপনাকে ছাড়ব না। বর্ণনাকারী বলেন, তারা উভয়েই গিয়ে হযরত ‘আয়েশা (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে উপস্থিত হলেন। অতঃপর তাকে ‘আমর বললেন, হে আম্মাজান! ইনি উমার। তিনি আমাকে বলছেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর উপর মিথ্যা আরোপ করবেন না। আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলি, আপনি কি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে এ কথা বলতে শুনেছেন যে, তিনি বলেন, তোমরা যা তাদেরকে (স্ত্রীদেরকে) দেবে তাই তোমাদের জন্য সাদাকাহ হিসেবে পরিগণিত হবে। তিনি বললেন, আল্লাহুম্মা! হ্যাঁ, আল্লাহুম্মা হ্যাঁ । (মারিফাতুস সুনান ওয়াল আছার : ২৫৫৮)
২৪. হযরত সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি মক্কায় রোগগ্রস্ত হলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমার শুশ্রূষার জন্য আসেন। আমি বললাম, আমার তো সম্পদ আছে। সেগুলো আমি অসিয়ত করে যাই? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তাহলে এক-তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন, এক-তৃতীয়াংশ করতে পারো। আর এক-তৃতীয়াংশই তো বেশি। ওয়ারিশদের মানুষের কাছে মুখাপেক্ষী অবস্থায় (মানুষের কাছে হাত পেতে পেতে ফিরবে) ছেড়ে যাওয়ার চেয়ে তাদের বিত্তবান অবস্থায় রেখে যাওয়া উত্তম। আর যা-ই তুমি খরচ করবে, তাই তোমার জন্য সাদাকাহহ হবে; এমনকি যে লোকমাটি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দেবে, সেটাও। সম্ভবত আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘজীবী করবেন। তোমার দ্বারা অনেক লোক উপকৃত হবে, আবার অন্যরা (কাফির সম্প্রদায়) ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (বুখারী : ৫৩৫৪)
২৫. হযরত মা'মার (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ সাওরী (রহঃ) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ কোন ব্যাক্তি তার পরিবারের জন্য বছরের বা বছরের কিছু অংশের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখা সম্পর্কে আপনি কোন হাদীস শুনেছেন কি? মা'মার বলেনঃ তখন আমার কোন হাদীস স্মরণ হলো না। পরে একটি হাদীসের কথা আমার মনে পড়ল, বা ইবনু শিহাব যুহরী (রহঃ) মালিক ইবনু আওসের সূত্রে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সাঃ) বনূ নাযীরের খেজুর বিক্রি করে ফেলতেন এবং পরিবারের জন্য এক বছরের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখতেন। (বুখারী : ৪৯৬৬ ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
২৬. হযরত সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, কোন ব্যক্তি যে সব দীনার (বা স্বর্ণমুদ্রা) ব্যয় করে থাকে এর মধ্যে ঐ দীনারটি উত্তম যা সে তার পরিবার-পরিজনের উদ্দেশে খরচ করে। অনুরূপভাবে আল্লাহর পথে (অর্থাৎ জিহাদের উদ্দেশে) তার আরোহণের জন্তুর জন্য সে যে দীনার ব্যয় করে তা উত্তম এবং আল্লাহর পথে তার সঙ্গীসাথীদের জন্য যে দীনার ব্যয় করে তা উত্তম। (মুসলিম : ৯৯৪)
২৭. আবূ কিলাবাহ বলেন, তিনি পরিবারের লোকজন দিয়ে শুরু করেছেন। অতঃপর আবূ কিলাবাহ (রাঃ) আরও বলেন, ঐ ব্যক্তির চেয়ে আর কে বেশী সাওয়াবের অধিকারী যে তার ছোট ছোট সন্তানদের জন্য খরচ করে এবং আল্লাহ তা'আলা এর বিনিময়ে তাদেরকে পবিত্র রাখেন, উপকৃত করেন এবং অভাব মুক্ত রাখেন। (সহীহ বুখারী, ইসলামী ফাউন্ডেশন : ২১৭৯, ইসলামীক সেন্টার : ২১৮১)
২৮. হযরত আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ বাদরী সাহাবী আবূ মাস‘উদ (রাঃ)-কে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করতে শুনেছেন, তিনি বলেন, স্বীয় আহলের (পরিবার পরিজনের) জন্য ব্যয় করাও সাদাক্বাহ। অর্থাৎ এতেও সে সাদাকাহর সওয়াব পাবে। (সহীহ বুখারী, আধুনিক প্রকাশনী : ৩৭০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন : ৩৭১৩)
২৯. হাকীম ইবনু মু‘আবিয়াহ আল-কুশাইরী (রহ.) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি বলি, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কারো উপর তার স্ত্রীর কি হক রয়েছে? তিনি বললেনঃ তুমি যখন আহার করবে তাকেও আহার করাবে। তুমি পোশাক পরিধান করলে তাকেও পোশাক দিবে। তার মুখমন্ডলে মারবে না, তাকে গালমন্দ করবে না এবং পৃথক রাখতে হলে ঘরের মধ্যেই রাখবে। (আবু দাউদ : ২১৪২)
৩০. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘‘একটি মানুষের পাপী হওয়ার জন্য এটা যথেষ্ট যে, সে তাদের (অধিকার) নষ্ট করবে (অর্থাৎ, তাদের ভরণপোষণে কার্পণ্য করবে) যাদের জীবিকার জন্য সে দায়িত্বশীল’’। (আহমাদ, আবূ দাউদ : ১৬৯২, হাকেম, বাইহাকী, সহীহুল জামে : ৪৪৮১)
৩১. হাদীস শরিফে এসেছে, ‘হালাল রিজিকের সন্ধান করা অন্যান্য ফরজ ইবাদতের পর অন্যতম একটি ফরজ’। (আল মুজামুল কাবির : ৯৯৯৩)
৩২. হযরত জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘হে লোকেরা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং বৈধ উপায়ে জীবিকা অর্জন করো। কেননা কোনো প্রাণীই তার নির্ধারিত রিজিক পূর্ণ না করে মৃত্যুবরণ করবে না, যদিও কিছু বিলম্ব ঘটে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো এবং সৎভাবে জীবিকা অর্জন করো। যা হালাল তাই গ্রহণ করো এবং যা হারাম তা বর্জন করো।’ (ইবনে মাজাহ)
৩৩. হযরত আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, তার রিযিক বাড়িয়ে দেয়া হোক এবং তার শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পাক/আয়ু বৃদ্ধি পাক/অবদান রেখে যাক সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে। ( সহীহ বুখারী : ২০৬৭, মুসলিম : ২৫৫৭)
৩৪. হযরত জুবায়ের ইবনে মুত্বইম থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না’। (বুখারী : ৫৯৮৪, মুসলিম : ২৫৫৬, তিরমিযি : ১৯০৯)
৩৫. হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেন, আদম সন্তানের আমল সমূহ প্রতি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত্রিতে আল্লাহর তা’আলার নিকট উপস্থাপন করা হয়। তখন আত্নীয়তার বন্ধন বিছিন্নকারীর আমল গ্রহণ করা হয়না। (আহমদ : ১০২৭৭)
৩৬. হযরত আবু বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেন, দু’টিগুনাহ ছাড়া এমন কোনো গুনাহ নেই যে গুনাহগারের শাস্তি আল্লাহ তা’আলা দুনিয়াতেই দিবেন এবং তা দেওয়াই উচিৎ; উপরন্ত তার জন্য আখিরাতের শাস্তি তো আছেই। গুনাহ দু’টি হচ্ছে, অত্যাচার ও আত্নীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী। (আবু দাউদ : ৪৯০২,তিরিমিযি : ২৫১১, ইবনে মাজাহ : ৪২৮৬ আহমদ : ২০৩৯০,২০৩৯৬,২০৪১৪)
৩৭. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নবী (সাঃ) বলেন, অন্তত পক্ষে সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে হলেও তোমরা তোমাদের আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করো। (ব্যযার : ১৮৭৭)
৩৮. একদা রাসূল (সাঃ) মহিলাদেরকে সাদাকাহহ করার উপদেশ দিলে নিজ স্বামীদের কেও সাদাকাহহ করা যাবে কিনা সে ব্যাপারে দু’জন মহিলা সাহাবী বেলাল (রাঃ) এর মাধ্যমে রাসূল (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, (স্বামীদেরকে দিলেও চলবে) বরং তাতে দু’ইটি সাওয়াব রয়েছে, একটি আত্বীয়তার বন্ধন রক্ষা করার সাওয়াব এবং আরেকটি সাদাকাহর সাওয়াব। (সহীহ বুখারী : ১৪৬৬, মুসলিম : ১০০০)
আল্লাহ তা’আলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের নির্দেশনা ও হাদীসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন।
২| ০১ লা জুন, ২০২১ দুপুর ১২:১০
হেলাল নোাখালী বলেছেন: Nice post, thanks to writer.
৩| ০১ লা জুন, ২০২১ বিকাল ৩:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো।
৪| ০১ লা জুন, ২০২১ রাত ৯:৫৫
কামাল১৮ বলেছেন: যখন থেকে পরিবার প্রথা শুরু তখন থেকেই মানুষ পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জুন, ২০২১ সকাল ১০:০৪
রবিন.হুড বলেছেন: আল্লাহ তাওয়ালা সবাইকে পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিন।