![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষের মত মানুষ হতে চাই , বাঁচার মত বাঁচতে চাই ।
(কোহিনূর ও তার ছোট মেয়ে শাদিয়া )
ছোটবেলার কথা তেমন কিছুই মনে করতে পারেন না একাত্তরের যুদ্ধশিশু নরওয়ের বিখ্যাত শিল্পী কোহিনূর। মা-বাবার নামও জানেন না তিনি। কী করতেন তাঁর মা, কোথায় থাকতেন কিছুই মনে নেই তাঁর। ঢাকার অলিগলি, ফুটপাত ও বস্তিতে তন্ন তন্ন করে খুঁজে চলেছেন তিনি! এখনো পাননি মায়ের সন্ধান। তবুও আশা ছাড়েননি। একবার হলেও তিনি দেখতে চান মায়ের মুখটি।
নরওয়েতে সবই আছে কোহিনূরের। অর্থ-বিত্ত, খ্যাতি, সম্মান সব! এর পরও একমাত্র নাড়ির টানে, মায়ের খোঁজে এ পর্যন্ত চারবার বাংলাদেশে এসেছেন তিনি। প্রতিবার খোঁজ করেছেন মাকে। কিন্তু কোনোবারই পাননি। বেঁচে আছেন, নাকি মরে গেছেন তাও জানেন না; তবুও তিনি বাংলাদেশের পথে-প্রান্তরে খুঁজে চলেছেন তাঁর মাকে।
অসহায়, দুস্থ, ছিন্নমূল মা ও শিশুদের দেখলে কোহিনূর ভেতর থেকে গভীর ভালোবাসা অনুভব করেন। বাংলাদেশে আসার পর তিনি গিয়েছিলেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরে। সেখানকার ''মৃত্তিকা'' নামের একটি স্কুল পরিদর্শন করেন তিনি। এ স্কুলের সব শিক্ষার্থীই অসহায়, দুস্থ ও ছিন্নমূল পরিবারের সন্তান। ওরা থাকে বস্তিতে, কেউ ফুটপাতে। ছিন্নমূল শিশুদের অক্ষরজ্ঞান শেখানোর জন্য গড়ে ওঠে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মৃত্তিকা। কোহিনূর এ স্কুলে পা দিয়ে যেন ফিরে গিয়েছিলেন তাঁর শৈশবে। এ স্কুলের শিশুরা যখন গান গাইছিল, নাচছিল কোহিনূরের হয়তো মনে পড়ে গিয়েছিল ছোটবেলার কথা। কৌতূহল নিয়ে তিনি বারবার দেখছিলেন মলিন মুখগুলো। এক পর্যায়ে মৃত্তিকায় ছিন্নমূল শিশুদের অক্ষরজ্ঞান শেখান কোহিনূর। সাদা বোর্ডে প্রথমেই তিনি লিখেন, ''উই লাভ বাংলাদেশ''।তখন প্রায় ৫০টি শিশু তাঁর সঙ্গে সুর করে বলে ওঠে উই লাভ বাংলাদেশ।
মৃত্তিকা স্কুলেই কোহিনূর তার নিজের সম্পর্কে সবকিছু খুলে বলেন । ছোটবেলার কথা জানতে চাইলে তাঁর চোখে ভর করে বিষাদের ছায়া। তিনি বলেন, ''তেমন কিছুই মনে নেই। তখন বয়স তিন হবে। একদিন রাস্তা থেকে একজন শ্বেতাঙ্গ ভদ্রলোক আমাকে তুলে নিয়ে গেলেন। নাম ছিল তাঁর ডা. জ্যাক। তিনি আমাকে নিয়ে যান মাদার তেরেসাঁর অনাথ আশ্রমে। বিশাল এক পরিবারের সদস্য হলাম আমি। ভালোই কাটছিল দিনগুলো। মনে পড়ে ওয়াজেদ ও লরা নামের দুজনের কথা। খুব যত্ন করতেন আমাদের। ডা. জ্যাকও খুব আদর করতেন।'' কিন্তু বিশাল ওই পরিবারে বেশি দিন থাকা হলো না কোহিনূরের। ছয় মাস বাদে একদিন ডা. জ্যাক এলেন তাঁর কাছে। জানতে চান নরওয়ে নামের এক দেশে তিনি যাবেন কি না। সেখানে গেলে মা-বাবাও পাবেন।
কিছুক্ষণ বিরতি নিয়ে কোহিনূর বলেন, ''মাদার তেরেসাঁর অনাথ আশ্রম আমার কাছে পরিবারের মতো হয়ে উঠেছিল। সবার মায়ায় পড়ে গিয়েছিলাম; কিন্তু শেষমেশ রাজি হতে হলো।'' এরপর সেই অনাথ আশ্রম ছেড়ে কোহিনূর নামের সেই ছোট্ট মেয়েটি সত্যি সত্যি একদিন নরওয়েতে চলে গেল। আমাদের সেই কোহিনূরই আজকের বিখ্যাত শিল্পী মারি কোহিনূর নোর্ডবার্গ। কোহিনূর নামেই তিনি সারা বিশ্বে পরিচিত।
কোহিনূর তো আমাদেরই বোন। তাঁর মায়ের পরিচয় আমরা জানি না। আমরা জানি, তিনি যুদ্ধশিশু। কোহিনূর এ পরিচয় দিতে কখনোই কুণ্ঠাবোধ করেন না। গর্বের সঙ্গে তিনি বলেন তাঁর পরিচয়। সেই যুদ্ধশিশু কোহিনূর এখন অনেক বড়, বাংলাদেশের সমান বয়স তাঁর। থাকেন নরওয়েতে। ইউরোপের এ দেশটির এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় শিল্পী কোহিনূর। এরই মধ্যে পেয়েছেন নরওয়ের জাতীয় পুরস্কারও। সারা বছরই নানা দেশে গান গেয়ে বেড়ান তিনি।
খ্যাতি, অর্থবিত্ত, সম্মান সব পেয়েও একমাত্র নাড়ির টানে বাংলাদেশে আসেন কোহিনূর। পাঁচ বছরের একটি ফুটফুটে মেয়ে আছে তাঁর। নাম শাদিয়া। এবার শাদিয়াকে নিয়ে এসেছেন জন্মভূমিতে। মৃত্তিকা স্কুলে শাদিয়া বসেছিল মায়ের পাশাপাশি। চুপচাপ স্বভাবের মেয়ে। অবাক দৃষ্টিতে সে দেখছিল তার বসয়ী শিশুদের।
কথা প্রসঙ্গে কোহিনূর জানান, বাংলাদেশে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হওয়ায় খুবই খুশি তিনি। আর বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায়ের খবরও তাঁর জানা। তাঁর মতে, ওরা এত জঘন্য অপরাধ করেছে যে তাঁদের কোনোভাবেই ক্ষমা করা যায় না।
কোহিনূর আরো জানান, নরওয়েতে ১০০-র মতো বাংলাদেশি যুদ্ধশিশু আছেন, যাঁরা এখন নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। তিনি জানেন, মুক্তিযুদ্ধের পর পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে তাঁর মতো অনেক শিশুকে দত্তক হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেতে হয়েছে। কিন্তু প্রত্যেকেই তাঁরা ভালোবাসেন বাংলাদেশকে।
আলাপচারিতার শেষ পর্যায়ে কোহিনূরের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ''মাকে কী খুঁজে পাবেন?'' প্রশ্ন শুনে কোহিনূর তাঁর হাতটি বুকে রাখেন। দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বলেন, ''অবশ্যই খুঁজে পাব''। ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখে ঢাকা ছেড়ে নরওয়ের উদ্দেশে রওনা দেবেন কোহিনূর। নাড়ির টানে তিনি আবারও আসতে চান, বারবার আসতে চান বাংলাদেশে।
মূল খবরের লিংক -
একাত্তরের যুদ্ধ শিশু খুঁজছে বাবা-মা’কে
বাংলাদেশের একাত্তরের অনেক যুদ্ধশিশু বিভিন্নদেশে আশ্রয় পেলেও , আজও তাদের অনেকেই তাদের মা-বাবার খোজে ফিরে আসেন বাংলাদেশে । তাদের প্রত্যেকের হৃদয়েই রয়েছে , আমাদের সোনার বাংলাদেশের অপরীসীম ভালবাসার টান ।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:০৭
রুদ্র মানব বলেছেন: ভালবাসি , ভালবাসবো বাংলাদেশ আজীবন
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫১
এম আর ইকবাল বলেছেন: নাড়ির টান, এটা একটা আলাদা অনুভূতি ।
অসম্ভবে একটা ব্যাপার । তবু র্প্রাথনা করি, খুজে পাক সে তার আসল ঠিকানা ।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:১০
রুদ্র মানব বলেছেন: নাড়ির টানেই এই সকল যুদ্ধশিশু আবার স্বদেশে আপন আত্না খুজতে এসেছে । খুজতে এসেছে নিজ মা , বাবাকে ।
৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৮
রিওমারে বলেছেন: বংলাদেশের সকল পত্রিকা টিভি মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিলে কোহিনুরের মায়ের কাছে হয়ত খবর পৌছাতে পারে।। মা মেয়েকে হয়ত ভুলে যাননি।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:১২
রুদ্র মানব বলেছেন: সঠিক ঠিকানা ও নাম না জানার কারণেই খুজে পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না । অনেক দিন ধরেই হন্য হয়ে মা , বাবাকে খুজে বেরাছেন । কিন্তু উনারা বেচে আছেন কিনা , তাই এখন প্রশ্ন ???
৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৩৬
স্বপনবাজ বলেছেন: রিওমারে বলেছেন: বংলাদেশের সকল পত্রিকা টিভি মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিলে কোহিনুরের মায়ের কাছে হয়ত খবর পৌছাতে পারে।। মা মেয়েকে হয়ত ভুলে যাননি।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪৮
রুদ্র মানব বলেছেন: সঠিক ঠিকানা ও নাম না জানার কারণে খুজে পাওয়া সম্ভব হুচ্ছে না ।
৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:২৩
বাংলার গাদ্দাফি বলেছেন: দোয়া করি কোহিনূর যেন মাকে ফিরে পান ।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩১
রুদ্র মানব বলেছেন: ইনশাল্লাহ , উনার মা জীবিত অবস্থায় থাকলে উনি উনার মাকে ফিরে পাবেন । এইসব যুদ্ধশিশুদেরকেও দেশের জন্য অনেক বড় আত্নত্যাগ করতে হয়েছে ।
৬| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০৬
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
স্বপনবাজ বলেছেন: রিওমারে বলেছেন: বংলাদেশের সকল পত্রিকা টিভি মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিলে কোহিনুরের মায়ের কাছে হয়ত খবর পৌছাতে পারে।। মা মেয়েকে হয়ত ভুলে যাননি।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৩০
রুদ্র মানব বলেছেন: বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে , কিন্তু সম্ভবত সকল পত্রিকায় দেওয়া হয় নাই । হয়তো উনি উনার মা'কে আবার খুজে পাবেন । সেইটাই কাম্য ।
৭| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৪০
বেলায়েত হােসেন ইমন বলেছেন: লেখক বলেছেন কোহিনুর হন্যে হয়ে তার বাবা মাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। প্রশ্ন হলো, মা’কে নাহয় খুঁজে পেল কিন্তু বাবাকে কোথায় খুঁজবে সে? তাছাড়া বাবাকে খোঁজার আদৌ প্রয়োজন আছে কি?
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৯
বিপদেআছি বলেছেন: সাদা বোর্ডে প্রথমেই তিনি লিখেন, ''উই লাভ বাংলাদেশ''। ৫০টি শিশু তাঁর সঙ্গে সুর করে বলে ওঠে উই লাভ বাংলাদেশ।
উই লাভ বাংলাদেশ, আমৃত্যু।