নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চারিপাশে অবাক দুনিয়া

এত লেখালেখির কি আছে তাইতো বুঝলাম না!!

আদনান মোরশেদ

[email protected]

আদনান মোরশেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইচ্ছাপূরণ (ছোটগল্প)

০৮ ই মার্চ, ২০১০ সকাল ১১:৫২

১.

অনেক দিন থেকেই ভাবছি আত্মহত্যা করব।কোন কারণ নেই।জাস্ট হবি।মানুষেরতো কত রকম পাগলামি থাকে।এটাও সেরকম কিছু।কিন্তু আত্মহত্যা করলেইতো আর হবেনা।তার আগে অনেক কাজ করতে হবে।ভালমত গোসল করতে হবে,চুল আঁচড়াতে হবে,ভালমত সাজতে হবে,মুখে ক্রিম দিতে হবে।মেয়ে হয়ে জন্মানোর অনেক মজা।ভাগ্যিস আমি মেয়ে,নয়তো এত সাজগোজ করতেই পারতাম না।আচ্ছা সব মেয়ের হবিই কি সাজগোজ করা?আমি জানিনা।



খুব ছোটবেলায় আমদের স্কুলে "মাই হবি"-তে আমি লিখেছিলাম,আমার হবি হচ্ছে সাজগোজ করা।বাকি সবাই লিখেছিল-গার্ডেনিং,বই পড়া,স্ট্যাম্প কালেক্ট করা,এইসব হাবজাব।ম্যাডাম আমার লেখা পড়ে খুব অবাক চোখে আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন।ভাবটা এমন যে এই মেয়ের কি মাথায় ছিট্‌ আছে নাকি!!



হয়তোবা আছে....নইলে কি আমি আর আত্মহত্যা করতে যাচ্ছি??



২.

আমি এখন নীল একটা শাড়ি পরে আছি।এটা পরে আত্মহত্যা করা যাবেনা।কারণ নীলের মধ্যে রক্তের লাল রঙের ইফেক্টটা ঠিক ভালমত আসবেনা।গাঢ় সবুজ রঙের একটা শাড়ি পরতে হবে।সবুজের উপর লালের কারুকাজ হেব্বি জোস্‌ আসবে।অনেকটা বাংলাদেশের পতাকা টাইপ হবে।যে ক্যামেরাম্যান ছবি তুলতে আসবে সে বাইরে মন খারাপ একটা ভাব দেখালেও মনে মনে ভাববে,"আহা!কতদিন এরকম সুন্দর ইফেক্টের একটা ছবি তুলতে পারিনি,আজ আমার ছবি তোলার জীবন স্বার্থক।"



আরেকটা ব্যাপারে ট্রাই দিতে হবে।তা হল মৃত্যুর পর মুখে একটা হাসি হাসি ভাব ফুটিয়ে রাখা।এতে ছবিতে একটা অপার্থিব ভাব চলে আসবে।তবে এই ব্যপারটি করতে পারব কিনা জানিনা।হয়তোবা হাসি মুখেই মরার ট্রাই দিলাম,কিন্তু মৃত্যু বেদনায় সেই হাসি ঊঁধাও হয়ে গেল।



৩.

আরেকটি গুরূত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে।তা হল একটি চিরকুট লিখে যাওয়া।



মা-বাবা,

তোমরাতো তোমাদের মেয়েকে সেই ছোটবেলা হতেই চেনো।ছোটবেলা হতেই তোমরা আমার কোন ইচ্ছা অপূর্ণ রাখনি।নিঃসন্দেহে তোমরা পৃথিবীর সেরা বাবা-মা।সেরা বাবা-মাদের নোবেল পুরষ্কার দেবার নিয়ম নেই।নইলে তোমরাই প্রতিবছর সেই পুরষ্কার পেতে।আজ আমি আমার একটা ইচ্ছা পূরণ করব।তোমরাতো জানই আমার কোন ইচ্ছা দীর্ঘস্থায়ী হয় না।হয়তো এই ইচ্ছাটিও হবেনা।তবুও আমার ইচ্ছাতো পূরণ করতেই হবে।এটা যদি একটা গল্প হত তবে আমি এর নাম দিতাম "ইচ্ছাপূরণ"।

Bদায়



এভাবে Bদায় লিখে আমার অনেক মজা লাগল।ছোটবেলায় কোন এক উপন্যাসের পড়েছিলাম যে নায়িকা একটা সুইসাইড নোটে এভাবে Bদায় লিখে।উপন্যাসের নামটি মনে নেই।তবে এই ব্যপারটি স্পষ্ট মনে আছে।যাই হোক,লেখাটি শেষ করে আমার ভিতর খুব ফুরফুরে ভাব চলে এল।আমি একটা কফির মগ হাতে ছাদের দিকে পা বাড়ালাম।



৪.

ছাদে এসে মনটা অনেক ভাল হয়ে গেল।আমি একলাফে ছাদের রেলিং এ উঠে গেলাম।নীচে তাকিয়ে আমার আরও অনেক মজা লাগল।হঠাৎ নিজেই কিছু বুঝে উঠার আগে আমি লাফ দিলাম।তখন একটা খুব মজার ব্যপার ঘটল।



আমি নীচের দিকে না পরে ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠে গেলাম।এরকমতো হওয়ার কথা না।অভিকর্ষ বলের কারণে পৃথিবীর উচিত আমাকে তার নিজের দিকে টেনে নেওয়া।কিন্তু কোন একটা অদ্ভুত কারণে হয়তো পৃথিবী আমাকে তার নিজের দিকে টেনে নিতে চাচ্ছে না।দেখতে দেখতে আমি অনেক উপরে উঠে যাচ্ছি।উপরে......অনেক উপরে........।এত উপর হতে পৃথিবীকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে।আশেপাশের সবকিছু অনেক সুন্দর লাগছে।আমার আর মরতে ইচ্ছে করছে না।আমি বাঁচব।আমি বাঁচতে চাই।



ঠিক তখনই আমি অনেক দ্রুত নীচের দিকে পরা শুরু করলাম।কিন্তু আমি মরতে চাইনা।আমি বাঁচতে চাই।বাঁচতে চাই।আমি জানি,এখন আমি যতই চিৎকার করে গলা ফাটাইনা কেন,কিছুই হবেনা।আমি সামনে দেখতে পাচ্ছি অন্ধকার।নিকষ কাল অন্ধকার।আমি জানি পূরণ হতে যাচ্ছে আমার আরেকটি ইচ্ছা।এটাই হবে আমার সর্বশেষ ইচ্ছাপূরণ।

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৫/-১

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:০১

বদরুল খান বলেছেন: ভাল লাগলো।

০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:০৩

আদনান মোরশেদ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

২| ০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:০৩

স্পুতনিক বলেছেন: তাড়াতাড়ি কইরা ফ্যালেন! বাংলাদেশের জনসংখ্যা বহুত বাইড়াগেছে।

০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:০৬

আদনান মোরশেদ বলেছেন: বেচারী করেতো ফেললই ......... :(

৩| ০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:০৬

অতিথি পাখি বলেছেন: খুব চেনা চেনা লাগছে!

০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:০৭

আদনান মোরশেদ বলেছেন: কি চেনা চেনা লাগছে?

৪| ০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:২০

অতিথি পাখি বলেছেন: ভাষাটা..স্টাইলটা...

০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:২৭

আদনান মোরশেদ বলেছেন: অনেকদিন ধরেই লেখালেখি করি........আর লেখাগুলো সাধারণত আমার বন্ধুবান্ধবরাই পড়ে।আপনি কি আমার বন্ধুমহলের কেউ??তাহলে হয়তোবা চেনা চেনা লাগতে পারে ....... :)

৫| ০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:২২

সৈয়দ মোখাফফর আব্দুললা বলেছেন: কোন দিন যদি আত্মহত্যা করার ইচ্ছা থাকে তাহলে ইদুর মারার Medicine খান ঘুমের Medicine খাবেন না তাহলে মরবেন না শুধু doctor কিছু ফাও টাকা পাবে

০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:৩১

আদনান মোরশেদ বলেছেন: ভাই,আপনার এই মহা মূল্যবান এই সাজেশনের জন্য ধন্যবাদ।তবে মনে হয়না আমার এই সাজেশনটা লাগবে।তবে আমার কোন গল্পের ক্যারেক্টার যদি পরবর্তীতে সুইসাইড করতে চায়,তাকে আমি আপনার বুদ্ধিটা ধার দিব।দেখি গ্রহণ করে নাকি।বলা যায়না,আজকালকার গল্পের ক্যারেক্টারগুলো খুব পাজি।লেখকদের কথামত আর চলতে চায়না। :)

৬| ০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:২৫

যীশূ বলেছেন: শুরুটা ভালো লেগেছিলো

০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:৩৩

আদনান মোরশেদ বলেছেন: হা হা হা........আপনি আসলে খুব সূক্ষভাবে জানিয়ে দিলেন যে,গল্পের শেষটা আপনার ভালো লাগেনি।এজন্য আমি খুব দঃখিত ভাই।পরবর্তীতে চেষ্টা করব গল্পের শেষটাও যাতে আপনার ভাল লাগে :)

৭| ০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:৩০

অপলক বলেছেন: আমারও একবার এই রকম সাধ হল। রাতে পরিকল্পনা করে ঘুমালাম। সকালে ইচ্ছাপূরণ করব। স্বপ্নের ভেতর লাফ দিলাম। কিন্তু ব্যাপারটা আপনার লেখার মত হল। নিচে না নেমে উপরের দিকে উঠে গেলাম। তখন পৃথিবীকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছিল। সবুজের মধ্যে সবকিছু ছোট হয়ে আসছে। তারপরেই আসল ঘটনা। নিচে নামতে লাগলাম। প্রচন্ড বাতাস। চোখ খুলতে পাচ্ছিনা। পানি চলে আসছে। এদিকে দম বন্ধ হয়ে আসছে। হঠাৎ করেই ঘন অন্ধকার। এই সময় মনে হল যদি পাখির মত উড়তে পারতাম! ব্যস তারপর দেখি উড়তে পাচ্ছি। উড়তে উড়তে একটা বাড়ির কাছে চলে আসলাম। দেখি সবুজরে মাঝে নীল ফুল তোলা শাড়ি পড়া একটা মেয়ে ছাদ থেকে লাফ দিচ্ছে। লাফ দেয়া মাত্র তাকে উপরে তুলে নিয়ে গেলাম। মেয়েটাকে আমি চিনি না। কিন্তু সে ভয়ে আমার বুকের মধ্যে মুখ লুকাল। এক অজানা ভাল লাগায় আমি চোখ বন্ধ করলাম। তারপর আবার সব অন্ধকার। সেবার আমি কেন জানি ইচ্ছাপুরণ করতে পারলাম না। ইচ্ছে করল না।

সকালে উঠে দেখি মুখের কাছে টেবিল ফ্যান ফিক্সড হয়ে আছে। বাতাসের উৎস এবং চোখ না খুলতে পাবার কারণ বুঝতে পারলাম। কিন্তু সবুজ শাড়ি????

০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:৩৯

আদনান মোরশেদ বলেছেন: আমার এই লেখাটি আসলে অনেক আগের লেখা।আজকে আমি শুধু আমার পুরানো লেখাগুলো বের করে সেখান হতে একটি টাইপ করে দেই।আমার ধারণা আপনি যেই মেয়েটিকে বাঁচিয়ে নেন,কোন না কোনভাবে হয়তোবা সে আমার এই গল্পের নায়িকা।আর তাই যদি হয়,তবে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।আমি চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারছিলামনা বেচারীকে,কিন্তু আপনি ঠিকই স্বপ্নের মধ্যে হলেও বাঁচিয়ে দিলেন তাকে। :)

৮| ০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১:০১

গুরুজী বলেছেন: ভাল লেগেছে লেখাটা।

০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১:০৫

আদনান মোরশেদ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৯| ০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১:৪৮

ভাবসাধক বলেছেন: Bদায়

০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ২:০১

আদনান মোরশেদ বলেছেন: টা-টা :)

১০| ০৮ ই মার্চ, ২০১০ বিকাল ৩:০১

হাসান মাহবুব বলেছেন: পড়তে ভালো লেগেছে

০৮ ই মার্চ, ২০১০ বিকাল ৪:১৫

আদনান মোরশেদ বলেছেন: পড়তে ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম :)

১১| ০৮ ই মার্চ, ২০১০ বিকাল ৪:১৭

অপলক বলেছেন: আপনার লেখায় গতি আছে। আমার ভাল লেগেছে। আপনি থামবেন না প্লিজ। :) :-* :D ;) 8-|

০৮ ই মার্চ, ২০১০ বিকাল ৪:৪৮

আদনান মোরশেদ বলেছেন: ভাই,আজকাল আর শুধু গতি দিয়ে চিড়ে ভিজে না।ইন সুইং,আউট সুইং,রিভার্স সুইং ও আয়ত্তে থাকা লাগে।হাহাহা।:)
তবে চেষ্টা করব এগিয়ে চলার।

১২| ০৮ ই মার্চ, ২০১০ রাত ৮:০২

জেরী বলেছেন: এক চান্সে মরা এত সহজ না/:)

০৮ ই মার্চ, ২০১০ রাত ৮:১৬

আদনান মোরশেদ বলেছেন: হুম্‌ম্‌ তা যা বলেছেন......কিন্তু যাই হোক চান্সটা নেওয়াওতো সহজ ব্যপার না। :)

১৩| ০৯ ই মার্চ, ২০১০ রাত ১২:৫৭

তায়েফ আহমাদ বলেছেন: জীবন আর মরণ এমন অদ্ভুত দোটানা! ভাল লাগল।
:)

০৯ ই মার্চ, ২০১০ সকাল ৮:২৪

আদনান মোরশেদ বলেছেন: ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম। :)

১৪| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১:২২

নীরব 009 বলেছেন: খুব ভাল লিখেছেন।পড়ার সময় মনে হচ্ছিল হুমায়ূন আহমদ-এর কোনো উপন্যাস পড়ছি।

০৫ ই মার্চ, ২০১১ রাত ৮:১৫

আদনান মোরশেদ বলেছেন: স্যারের লেখা সবসময় পড়তে পড়তে হয়তো লেখার মধ্যেও স্যারের লেখার একটা আবেশ পরে গেছে। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.