নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আফনানের নিকেশ জগৎ.....।

আফনান আব্দুল্লাহ্

প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প তার আঙ্গুলের ছাপের মতই ভিন্ন। দূর থেকে এক মনে হলেও যতই তার গভীরে যাবে কেউ ততই বৈচিত্রময় বিভিন্নতা পাবে। নিজের জীবনের গল্পে চরে বেড়ানো মানুষগুলো সবাই’ই যার যার জগতে বন্ধী। সহস্র বছর বাঁচতে পারলে পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প আমি শুনতাম।নিজের দেখা জগৎ দেখা আদেখা মানুষদের জগতের সাথে গেঁথে নিতেই লিখি এবং আন্যের লিখা পড়ি। কেউ যদি মিথ্যুক বা ভন্ড না হয় তাহলে তার যে কোন ভিন্ন মতের কারন তার চার পাশের ভিন্ন জগৎ, ভিন্ন পরিবেশ, ভিন্ন শিক্ষা। তাই মানুষকে বুজতে হলে তার জগৎটাকে জানতে হবে, তার গল্পগুলো শুনতে হবে।আফনান আব্দুল্লাহ্

আফনান আব্দুল্লাহ্ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোহিঙ্গারা না ভোটার না মানুষ

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৫

বার্মার মোট ১৩৫ জাতের মানুষের সরকারী তালিকা করা হয় রোহীঙ্গাদের বাদ দিয়ে। যেহেতু তারা কোন জাতের মধ্যে পরেনা দেশের ১৯৮২ সালের নাগরীকত্ত্ব আইনানুযায়ী তারা দেশের নাগরীকের মধ্যেও পরলোনা। বৈষম্যের গোড়াতেই এই জনগোষ্ঠী কার্যকরী প্রতিবাদ করতে পারেনি। যেহেতু তারা আর ভোটার না তাই সূচি-মুচি ক্যাটাগরীর রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের কাছেও তারা অচ্ছূত হয়ে গেলো। যথারিতি, অবৈধ সংখা লঘুদের সম্পত্ত্বিতে গুরুদের চোখ পড়লো। মাটি আমার মানুষ তোমার নীতিতে গুরুরা শুরু করলো রাখাইন নিধন। যেহেতু নাগরিক না সেহেতু তারা মানুষই না। শেষমেষ ২০০৯ এর দিকে রাখাইনরা আরাকান আর্মী বানিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করতে লাগলো চাকু হাতে যুদ্ধে নামার মতো করে। মানে শুধুই আক্রমণের অস্ত্র আছে কিন্তু প্রতিরক্ষার কিছুই নেই। বাংলাদেশ আর থাইল্যান্ডের বর্ডার থেকে এগিয়ে গিয়ে বর্মিসেনা চৌকীতে হামলা করে আবার তারা নিজেদের ঢেরায় ফিরে। আর ‍সূচি বাহিনীর হাতে দিয়ে আসে খুন করার অযুহাত। নিজের স্বজাতিকে রেখে যায় শত্রুর বারুদের স্তুপে।
.
এই রোহীঙ্গারা যতক্ষণ ওপারে ছিলো আমাদের জন্যে কোন ব্যাপার ছিলো না। যেমন ছিলোনা ফিলিস্তিন, ভারত, বসনিয়ার মুসলিমদের উপর বর্বরতার ক্ষেত্রে। এটাও স্রেফ আরেকটা একই রকম ব্যাপার ধরে কিছু কান্নাকাটি আর জুমার পরে –‘আল্লাহ জালিমদের ধ্বংস করে দাও’ জাতিয় দোয়া মাহফিল করাই যথেষ্ট ছিলো। কিন্তু ঘটনা হলো রোহীঙ্গারা এপারে চলে আসছে। আর যখন আসছে তখন এপারে গরপরতা চালের কেজি অর্ধশত টাকা। প্রচুর মানুষ বন্যার পানির নিচে।
.
আমাদের যারা আইন বানায় এবং নীতি নির্ধারনের কর্তা তাঁরাও ব্যাপারটা গুরুত্ত্বের সাথে নিয়েছেন। এবং দৃশ্যত সর্বউচ্চ চেষ্টা দিয়ে রোহীঙ্গা প্রবেশ ঠেকানোর কথা অন্তত অন্তর্জাতিক ভাবে বলে চলছেন। সরকারের সিমান্তে রোহীঙ্গা ঠেকানোর আন্তরীকতা অবশ্য একই সীমান্ত দিয়ে ‘ইয়াবা’ (যা ‘বাবা’ ‘আব্বা’ বা ‘শ্বশুর আব্বা’ এজাতীয় নামে পরিচিত।) প্রবেশের সময় আমরা দেখিনা। তবু রোহীঙ্গা ঢুকছে যেমনটা অতীতেও ঢুকেছিলো। এক দুই বা শত হাজার নয়। লক্ষ লক্ষ রোহীঙ্গা ঢুকছে। তারা ভোটার আইডি পাচ্ছে, এদেশি পাসপোর্টে বিদেশ যাচ্ছে! কিভাবে!
.
আমরা রোহীঙ্গাদের ঢুকতে দিচ্ছিনা- এটি মূলত একটি প্রচারনা। এতে যারা ঢুকছে তারা তালিকা ভুক্ত হচ্ছেনা। তখন তাদের ভোটার বানিয়ে ভোট ব্যাংক ভারী করা যাচ্ছে। এই ব্যাংকের বোঝা দেশের বাকিদের জন্যে যতই ভারী হোক। বিভিন্ন অপরাধে তাদের ব্যবহার করা সহজ হচ্ছে।
.
এদিকে, রোহীঙ্গা ঢুকতে দিবো আর ঢুকতে দিবো না- এ নিয়ে স্বভাবতই পুর দেশ নিজেদের পশ্চাৎ দেশের মতই বিভক্ত। এক দল চায় এক্ষুনি দৌড়ে গিয়ে মায়ানমারের সাথে যুদ্ধ করে ওদের বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বুদ্ধু ভিক্ষুক বানিয়ে দিতে। তাদের কথা- যে দেশের মানুষ গোড়াতেই রিফুজী হয়ে প্রতিবেশী ভারতে পড়ে ছিলো ১৯৭১ এ, তারা কেন আজ আরেক প্রতিবেশীর রিফুজীকে আশ্রয় দিচ্ছেনা! আরেক দল বলছে –‘রোহীঙ্গা পালতে হলে দুইটা করে নিজের ঘরে নিয়ে পালেন। ৭১ এর রিফুজীর সাথে রোহীঙ্গা রিফুজী এক করা যাবে না।’ কেন এক করা যাবে না সেটা বুজা যাচ্ছে না। হ্যাঁ, ৭১ এ ভারতের সরাসরী রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্বার্থ ছিলো। এখানে আমাদের তা ঐভাবে নেই। ভারতের তখন তেজ ছিলো যা এখনো আছে পাকিস্তানকে সামরীক এবং রাজনৈতিক ভাবে শানানি দেয়ার। তাই তারা জানতো যে ৭১ এর রিফুজী সমস্যা সাময়ীক। মানবিক বিপর্যয় এবং প্রেক্ষাপট এ্কই রকম হলেও রোহীঙ্গা সমস্যা কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদী।
.
বাংলাদেশ সামরীক বা রাজনৈতিক ভাবে মিয়ানমারকে দমানোর ক্ষমতা রাখেনা। এবং আমাদের তেমন কোন তর্জন গর্জনও নেই। মেরুদন্ডের দূর্বলতা বুজা যায় যখন সিমান্তের এপারে বর্মী আর্মির চপার ঘুরে বেড়ায়! আর আমাদের আধুনিক, দেশের অর্থ সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় যথেষ্ট ব্যায় বহুল, দেশের ভেতরে লাঠিয়াল বহিনীর মত প্রচুর চোটপাট করা সামরীক বা আধা সামরীক বাহীনি সেই কপ্টারের ব্লেডের বাতাস খায়। যেহেতু বার্মিজ আর্মির হেলিকপ্টারে জামাত শিবির থাকেনা সেহেতু ঐ দিকে সরকার কোন গুলি বারুদ খরচ করতে রাজি না। যাই হোক, এই বিপুল রিফুজী কাঁধে নিয়ে মায়ানমার সরকারকে ঠান্ডা করে তাদের আবার ফেরত পাঠানোর ক্ষমতা, দক্ষতা বাংলাদেশের দৃশ্যত নেই মনে হচ্ছে। তবু রোহীঙ্গারা আসছে।
.
বাংলাদেশ ওদেরকে আন্তর্জাতিক ভাবে জানান দিয়ে আশ্রয় দিতে পারে। এতে আন্তর্জাতিক মহলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। এই ভাবমূর্তি কাজে লাগবে যে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে কাজ করছে তাদের কর্মপরিবেশ উন্নতিতে।
.
বিভিন্ন বিদেশি সাহায্য সংস্থা এগিয়ে আসবে যারা বার্মার রাখাইন রাজ্যে ঢুকতে পারছিলোনা এবং শুধু ‍সুযোগের অপেক্ষায় ছিলো। The UN Refugee Agency (UNHCR) নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ইতমধ্যে সীমান্তে রোহীঙ্গাদের সাহায্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। চমৎকৃত হতে হয় জেনে যে, এই সংস্থাটিকেই ২০১২ সালে বর্তমান সরকার বিশেষ সম্মাননা দেয় ১৯৭১ এ ভারতে যাওয়া বাংলাদেশী রিফিউজিদের সাহায্য করার জন্যে।
.
বিভিন্ন এন.জি.ওর মাধ্যমে বিদেশি সাহায্য পরিকল্পনা গুলো দেশীয় জনবল দিয়ে বাস্তবায়ন করতে গেলে সাময়িক ভাবে হলেও প্রচুর কর্ম সংস্থান হবে।
.
তালিকা ভুক্তির কারনে রোহীঙ্গারা ছড়িয়ে পরতে পারবে না। নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে মায়ানমার সরকারের উপর মানবিক চাপ তৈরী করা যাবে আন্তর্জাতিক মহল থেকে।
.
রোহীঙ্গারা মুসলীম অধ্যূসীত। তাই মুসলীম প্রধান দেশ গুলোর সাথে আঁতাত করে কূটনৈতিক এবং সামরীক জোট তৈরী করে মায়ানমারের উপর তীব্র চাপ তৈরী করা সম্ভব। এই ধরনের জোটের মাধ্যমে মায়ানমারের উপর অর্থনৈতিক অবরোধও আরোপ করা যাবে। এতে তারা অবশ্যই সোজা হতে সময় নিবে না। তখন তাদের সাথে আরাকান আর্মির সমজোতায় মধ্যস্থতা করা যেতে পারে।
.
এ ধরনের পক্ষ বিপক্ষ তর্ক হয়ত দিন শেষে স্রেফ-‘কিছু একটাতো কইলাম’ জাতিয় অত্মতুষ্টি ছাড়া আর কিছু না। এ দেশে স্কুল মাস্টার আধিকার আদায় করতে গিয়ে চোখে মরিচের ডলা খায়, বুকে পরে বুটের লাথ্থি। সেখানে বার্মিজ রোহীঙ্গাদের কি দেয়া যায় বা না যায় তা নিয়ে কথা বলা মূলতই মাকাল সময় খরচ। এর থেকে ভালো হয়তো দুটাকার বার্মিজ আচার চুষতে চুষতে ক্ল্যাশ অব ক্লেন খেলা।
.
আল্লাহ সবাইকে সকল বিপদ আপদ থেকে বেরিয়ে আসার তৌফিক দিন। আমীন।
.
০৯০৭২০১৭

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫২

সুফি ইবনুসসাবিল বলেছেন: اللهم آمين

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.