নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আফনানের নিকেশ জগৎ.....।

আফনান আব্দুল্লাহ্

প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প তার আঙ্গুলের ছাপের মতই ভিন্ন। দূর থেকে এক মনে হলেও যতই তার গভীরে যাবে কেউ ততই বৈচিত্রময় বিভিন্নতা পাবে। নিজের জীবনের গল্পে চরে বেড়ানো মানুষগুলো সবাই’ই যার যার জগতে বন্ধী। সহস্র বছর বাঁচতে পারলে পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প আমি শুনতাম।নিজের দেখা জগৎ দেখা আদেখা মানুষদের জগতের সাথে গেঁথে নিতেই লিখি এবং আন্যের লিখা পড়ি। কেউ যদি মিথ্যুক বা ভন্ড না হয় তাহলে তার যে কোন ভিন্ন মতের কারন তার চার পাশের ভিন্ন জগৎ, ভিন্ন পরিবেশ, ভিন্ন শিক্ষা। তাই মানুষকে বুজতে হলে তার জগৎটাকে জানতে হবে, তার গল্পগুলো শুনতে হবে।আফনান আব্দুল্লাহ্

আফনান আব্দুল্লাহ্ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতপাত-পর্ব ০২

১৬ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:৪২

বংশের রক্ত শুদ্ধ রাখার দায়িত্ব কি বাবার নাকি মায়ের!
.
অতি প্রাচীন কিছু রাজ বংশ রক্তের শুদ্ধতার জন্যে বাবা এবং মা দুই জনকেই সমান গুরুত্ব দিতো। বিখ্যাত ফারাও রাজা তুতেন খামেন ছিলেন সম্রাট আখেনাত আর আখেনাত এর বোন এর সন্তান। আখেনাত সুন্দরী নেফার তিতিকে, এর পর নিজের বোন এবং তার পরে নিজের বড় দুই মেয়েকে বিয়ে করে বংশ রক্ষার চেষ্টা করেছেন। বোন এর গর্ভে তুতেনখামেন হলেও তার দুই মেয়েই মৃত সন্তান প্রসব করে। এর পর আখেনাত বিয়ে করেন ছোট মেয়ে আনখেসেনামুনকে। তার মৃত্যুর পর ছেলে তুতেন খামেন ক্ষমতা পান। সাথে পান বংশ রক্ষার দায়িত্ব। নয় বছর বয়সে তাই তাকে বিয়ে করতে হয় তের বছর বয়েসি সৎ বোন আনখেসেনামুনকে, যিনি ছিলেন একই সাথে তার সৎ মা ও।। বাবা মায়ের অজাচার সম্পর্কের কারনে তুতেনখামেন ক্লাবফুট বা খোঁড়া হয়ে জন্মান। সাথে থাকে আরো বহু জন্ম জটিলতা। এতে মাত্র বছর বিশেকের মাঝে তিনি মারা যান। মরার আগে তার এবং আনখেসেনামুন এর সংসার দুই বার গর্ভে মৃত সন্তানের দেখা পায়। এই দুই সন্তানের মমি পাওয়া যায় তুতেনখামেন এর সমাধীতে। যেগুলোতে জীনগত সমস্যার কারনে বিকলাঙ্গতা পেয়েছেন এই সময়ের গবেষকরা। সঠিক উত্তরাধিকার জন্মদেয়ার আগেই স্বামি হিসেবে পিতা এবং ভাই এর মৃত্যুর পর আনখেসেনামুনকে বিয়ে করতে হয় তার দাদা আই কে। এভাবে রক্তের এই শুদ্ধতা রক্ষার সংগ্রাম পুর রাজ পরিবারটিকে বিকলাঙ্গ করে দেয়। আর একসময় ক্ষমতা চলে যায় সেনাপ্রধান হোরেম হেব এর কাছে। দ্যা গ্রেট রামেসিস, মুসা ন‌বীর সম‌য়ের সম্রাট, ছি‌লেন এই হো‌রেম এর বং‌শের।
.
অজাচারে রাজ বংশ বিলুপ্ত হয়ে গেলেও এর সাথে ইনচেষ্ট এর সম্পর্ক মিশরীয়রা খুঁজে পায়নি। রক্তের এলিটনেসই তাদের কাছে মূখ্য থেকে যায়। তাই আনখেসেনামুন এর হাজার বছর পরের টলেমিক রাজ গোষ্ঠীর ক্লিওপেট্রাকেও বিয়ে করতে হয়েছিলো তার দুই পিচ্ছি ভাই কে। যাদের একজনকে তার প্রেমিক সিজার চুবিয়ে মারে। বাকি জনকে সে নিজে বিষ খাইয়ে মারে।
.
রক্তের শুদ্ধতা রক্ষার এই রাজকীয় ইনচেস্ট এ অভ্যস্ত ছিলো স্পেন এর হ্যাবসবার্গ রাজগোষ্ঠীও। আর একই রকম বিকলাঙ্গ উত্তরসূরীর স্তুপ গড়তে থাকে তারাও। বুঝা যাচ্ছে মানুষ মূলত যত বেশি ছড়াবে আর অন্য জাতের সাথে ব্রীড করবে তত বেশি উৎকৃষ্ট উত্তরাধিকার পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। ব্যপারটা এভাবেই ডিজাইন করা। তো মানুষ যখন বুঝলো ইনচেস্ট পদ্ধতিতে রক্তের বিশুদ্ধতা ধরে রাখতে গেলে ঘটনা উল্টো দিকে যাচ্ছে তখন সিদ্ধান্ত নেয় কুল রক্ষায় পিতৃ পরিচয়ই হবে মূখ্য। আর তখনই বৌদের উপর দায়িত্ব আসে শুদ্ধতা ধরে রাখার। রানী সত্যিকারে রাজার পুত্রই গর্ভে নিলো কিনা সেটা হয়ে দাঁড়ালো বড় মাথা ব্যাথা। আসলো হেরেম, বসলো পাহারা। রাজার একশো উপ পত্নী থাকলেও পত্নীদের পতি হবে শুধুই রাজা।
.
এভাবে সম্রাট আকবর বা সুলতান সুলেমান হীন্দু কিংবা খ্রিস্টান রানীর গর্ভে উত্তরাধিকার জন্ম দিলেও সেই উত্তরাধিকার ইতিহাসের দুই প্রতাপশালী মুসলিম সম্রাজ্যেরই ধারক হয় (এই আলাপ আগের পোষ্ট এ আছে। লিঙ্ক কমেন্টএ দিছি)। উল্ট ভাবে মানে মেয়েদের মাধ্যমে বংশ রক্ষার সিদ্ধান্ত নিলে কিন্তু হিসেব অনেক সহজ হতো। হাজার উপ পতি থাকলেও গর্ভ যেহেতু কণ্যার তাই সন্তানও অবশ্যই রাজ বংশীয়ই হতো। ওতে পাহারার দরকার পরতোনা। ব্রিটিশ রাজ পরিবার এই সহজ পথে হাঁটে।

#জাতপাত
#Afnan_Abdullah

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুলাই, ২০২২ দুপুর ২:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: জাতপাত নিয়ে এখন মানুষ ভাবে না। ভুল ভাবনা থেকে মানুষ বের হয়ে আসতে পেরেছে এটাই বড় কথা।

২| ১৮ ই জুলাই, ২০২২ দুপুর ২:১৫

বিটপি বলেছেন: বিশ্রী ব্যাপার। হযরত ইয়াহিয়া (আ) জীবন দিয়েছিলেন এরকম একটি অজাচারমূলক বিবাহ ঠেকাতে গিয়ে। পিতা যাকারিয়ার ৭৬ বছর বয়েসে জন্ম নেয়া এই পুত্রকে তাঁর সামনেই হত্যা করা হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.