নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প তার আঙ্গুলের ছাপের মতই ভিন্ন। দূর থেকে এক মনে হলেও যতই তার গভীরে যাবে কেউ ততই বৈচিত্রময় বিভিন্নতা পাবে। নিজের জীবনের গল্পে চরে বেড়ানো মানুষগুলো সবাই’ই যার যার জগতে বন্ধী। সহস্র বছর বাঁচতে পারলে পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প আমি শুনতাম।নিজের দেখা জগৎ দেখা আদেখা মানুষদের জগতের সাথে গেঁথে নিতেই লিখি এবং আন্যের লিখা পড়ি। কেউ যদি মিথ্যুক বা ভন্ড না হয় তাহলে তার যে কোন ভিন্ন মতের কারন তার চার পাশের ভিন্ন জগৎ, ভিন্ন পরিবেশ, ভিন্ন শিক্ষা। তাই মানুষকে বুজতে হলে তার জগৎটাকে জানতে হবে, তার গল্পগুলো শুনতে হবে।আফনান আব্দুল্লাহ্
আফ্রিকার দাহোমি সম্রাজ্য (বর্তমান বেনিন) ইউরোপিয়ানদের কাছে দাস বিক্রি করে ১৭৫০ এর দিকে আয় করে প্রায় আড়াই লাখ পাউন্ড। বর্তমান সময়ের প্রায় এক হাজার কোটি টাকার মত। এইভাবে আরব আর ইউরোপ এ দাস বিক্রি করে ফুলে ফেঁপে উঠেছিলো সেখানকার আশান্তি সম্রাজ্যের (বর্তমান ঘানা) মত বিভিন্ন সম্রাজ্য।
.
.
দাস সংগ্রহের জন্যে এইসব সম্রাটরা নিয়মিত যুদ্ধ বাধাতো। পরাজিতদের জমি, ফসল থেকে অনেক বেশি মূল্যবান ছিলো সকল যুদ্ধ-বন্দী। চিনির চাহিদা বাড়লে ব্রাজীল, ক্যারেবিয়ান আর আমেরিকার আঁখ ক্ষেত এ আরো শ্রমীক এর দরকার হতো। আর আফ্রিকায় দরকার পরতো আরো যুদ্ধের। যত যুদ্ধ, তত যুদ্ধ বন্দী। তত দাস। তাতেও চাহিদা না মিটলে, শক্তিশালী আফ্রিকান সম্রাটদের রক্ষীরা গ্রামের পর গ্রাম এ রেইড দিতো দাস শিকার করতে। হঠাৎ ঘীরে ধরে গ্রাম শুদ্ধ লোক বন্দী করে নিয়ে আসতো। সার বেঁধে এনে রাজ বাহিনী তাদের বেচে দিতো মার্চেন্টদের কাছে। এই মিডলম্যানরা দাসদের নিয়ে যেতো আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে পর্তুগীজদের তৈরী এ্যালমিনা ক্যাসেল এর মত বন্দর গুলোতে। সেখানে ইউরোপীয়ান বণিকদের কাছে দাস বেচে দিয়ে বিনিময়ে নিতো কাপড়, তামাক, মদ আর অস্ত্রশস্ত্র। এই সব বাণিজ্যে আফ্রিকান ধনীক শ্রেণী আরো ধনী হয়ে উঠতো। বাড়তি ক্ষমতা দিয়ে বাড়তি দাস সংগ্রহ করতে পারতো তারা। পালতে হতো শক্তিশালী দাস শিকারী বাহিনী।
.
এই বর্ণনা থেকে বুঝা যায় যে দাস বানিজ্যে ইউরোপীয়ানদের দীর্ঘ্য মেয়াদী লাভের সাথে সাথে দাসদেরই প্রতিবেশী আফ্রীকান শাসক আর তাদের ভাই ব্রাদাররাও স্বল্প মেয়াদে বিপুল বিলাসের জীবন পায়। ভয়ঙ্কর দুর্ভোগে পড়তো শুধু দাসরাই। বিদেশের মাটিতে তাদের শ্রম, ঘাম, রক্ত, জান, সম্মান সব কিছুরই মূল্য ভোগ করতো তাদেরই স্বজাতি রাজ আর রাজঘনিষ্ঠ বণিক গোষ্ঠী। দাসদের ১০% থেকে ১৫% যাত্রা পথে সাগরে মরতো। পরে কেউ কাজের চাপে, কেউবা মালিকের খেয়ালে খুন হতো। আর অনেকে করতো আত্মহত্যা। সারা জীবনের জন্যে দিয়ে যেতো পেট চুক্তির শ্রম। এই শ্রমের মুজুরি তাদেরকে নিজ দেশে রেমিট বা হুন্ডি কোনটাই করতে হতো না। যেহেতু তাদের পুর জীবনের মুজুরী এক কালীন, অগ্রীম নিয়ে নিতো তাদের রাজামশাইরা। আর তাদের দাহোমি বা আশান্তি সম্রাটদের লেজুড়দেরকেও এই সব শ্রমীকের মুজুরীর টাকা দিয়ে ইউরোপিয়ানদের কাছ থেকেই বাড়তি দাম দেখিয়ে এটা ওটা কিনে চুরি চামারি করা লাগতো না। যা হতো খোলাখুলি, মুখোমুখি। সম্রাজ্যগুলো ধ্বংসও হয়েছে বেশ খোলখুলি ভাবে। নিজের মানুষদের চিবিয়ে খাওয়া রাজা আর তার বণিক শ্রেনী শত বছর আগে বিদায় নিয়েছে বিদেশীদের হাতেই। বিষয় হলো, শ্রমদাসদের চুষে খাওয়া সেই উন্নত রাজা-বাদশাদের অর্থনীতির ঘানি তাদের মানুষকে টানতে হচ্ছে এখনো। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বৈষম্যের ব্যবচ্ছেদ করেই যেতে হয়।
সূত্র:
১। Origins of the Slave Trade
Written by: Mark Christensen, Assumption College
২। Implications of the slave trade for African societies: Roles played by leaders of African societies। BBC
২| ২৯ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৩:৩৬
কামাল১৮ বলেছেন: প্রথম দিকে মুসলিম বাদশাদের প্রধান ব্যবসাই ছিলো দাস ব্যবসা।এই দাস তারা সংগ্রহ করতো ভারত থেকে।যে যত বেশি দাস সংগ্রহ করতে পারতে সে তত বড় সেনা পতি।মোগলরা আসার পর কিছুটা বন্ধ হয়।
আমাদের দেশের নারীরা দাসী হয়েই আরবে যায়।ইসলামে দাস প্রথা জায়েজ।
০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৯
আফনান আব্দুল্লাহ্ বলেছেন: ইসলাম পুরো পুরি প্রতিষ্ঠার পর দাস প্রথা, দাসী ভোগ সবই বন্ধ হয়।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:৫১
শাহিন-৯৯ বলেছেন:
ভারতের এক ইউটিবারের মাধ্যমে দারুস সালামে দাসদের জন্য বাজারে ঘর দেখেছিলাম, এত খারাপ লেগেছিল বলে বোঝানো যাবে না।