নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আফনানের নিকেশ জগৎ.....।

আফনান আব্দুল্লাহ্

প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প তার আঙ্গুলের ছাপের মতই ভিন্ন। দূর থেকে এক মনে হলেও যতই তার গভীরে যাবে কেউ ততই বৈচিত্রময় বিভিন্নতা পাবে। নিজের জীবনের গল্পে চরে বেড়ানো মানুষগুলো সবাই’ই যার যার জগতে বন্ধী। সহস্র বছর বাঁচতে পারলে পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প আমি শুনতাম।নিজের দেখা জগৎ দেখা আদেখা মানুষদের জগতের সাথে গেঁথে নিতেই লিখি এবং আন্যের লিখা পড়ি। কেউ যদি মিথ্যুক বা ভন্ড না হয় তাহলে তার যে কোন ভিন্ন মতের কারন তার চার পাশের ভিন্ন জগৎ, ভিন্ন পরিবেশ, ভিন্ন শিক্ষা। তাই মানুষকে বুজতে হলে তার জগৎটাকে জানতে হবে, তার গল্পগুলো শুনতে হবে।আফনান আব্দুল্লাহ্

আফনান আব্দুল্লাহ্ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কারবালার কাফেলা

০৬ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:৫৩

ফোরাত নদীতে কোনো বাঁধ ছিল না। কিন্তু ৭ই মহররম, কমান্ডার উমর ইবনে সা’দ তার বিশাল বাহিনী নিয়ে নদীর প্রবেশপথগুলো আটকে দিলো। ফোরাতের পানি আর ইমাম হোসাইন (রা) এর কাফেলার মাঝে দাঁড়িয়ে গেলো ত্রিশ হাজার সৈন্যের একটি সেনা ব্যূহ। পিপাসা, ক্লান্তি, এবং ধীরে ধীরে মৃত্যুর হাহাকার শুরু হলো কাফেলার ভেতরে। এর চার দিনের মাথায় তারা হোসাইন (রা) - এর অর্ধমৃত কাফেলার উপর পূর্ণশক্তিতে আঘাত হানে।

ইমাম হোসাইনের সৎ ভাই আব্বাস ইবনে আলী তাঁর দলবল নিয়ে সেনা প্রহরা ভেদ করে পানি আনতে যান রাতের বেলায়। আশা করেছিলেন, আঁধারে সা’দের বাহিনী খেয়াল করবে না। কিন্তু ইয়াজিদের সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল তাদের গোয়েন্দা বিভাগ। কুফার বিদ্রোহীদের সঙ্গে ইমাম হোসাইন (রা) এর চিঠি চালাচালি থেকে শুরু করে তাঁর মক্কা থেকে কুফা যাত্রার প্রতিটি পদক্ষেপই ইয়াজিদের সেনারা জানত।

মুসলিম ইবনে আকিল আগে কুফায় আসেন হোসাইনের পরিকল্পনা সহযোদ্ধাদের বোঝাতে। উদ্দেশ্য ছিল কুফার নেতাদের নিয়ে জনমত গড়ে তোলা। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী হোসাইন (রা) মক্কা থেকে রওনা দেন পরিবারসহ, যাতে প্রমাণ হয় তিনি যুদ্ধ নয়, ন্যায়ের সংলাপে যাচ্ছেন। স্ত্রীরা, সন্তানরা, শিশু এবং বৃদ্ধরাও ছিলেন কাফেলায়।

কিন্তু দক্ষ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কুফার গভর্নর ইবনে জিয়াদ মুসলিম ইবনে আকিল এবং তাঁর কুফার সমর্থকদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার ও হত্যা করেন। এদিকে হোসাইন (রা) পরিকল্পনামাফিক যাত্রা করেন এবং কারবালা প্রান্তরে পৌঁছে পড়েন সা’দের অবরোধে। সেই অবরোধে, রাতের আঁধারেও সেনাপ্রহরা ফাঁকি দেওয়া ছিল আব্বাস ইবনে আলীর জন্য অসম্ভব। অবরোধ ভেদ করে পানি আনতে গিয়েই তিনি শহীদ হন।

ইমাম হোসাইন (রা) - এর কাছে ইয়াজিদের দাবি ছিল একটাই - স্বীকৃতি। শূরা পদ্ধতি বাতিল করে পরিবারতন্ত্রের মাধ্যমে খিলাফত দখল করেছিল ইয়াজিদ, যা অনেকেই মেনে নেয়নি। সীমাহীন দুর্নীতি, ব্যক্তিগত ভোগ-বিলাস, দমন - পীড়নের শাসন পোক্ত করতে হোসাইনের স্বীকৃতি তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

কারবালা প্রান্তরে, হোসাইন (রা) - এর শিশু পুত্র আলী আসগর যখন পানির অভাবে ডিহাইড্রেশনে মারা যাচ্ছিলেন, তখনও তাঁর সামনে ছিল ইয়াজিদের পক্ষ অবলম্বনের প্রস্তাব। তিনি এবং তাঁর দল রাজি হননি। দশম দিনে ইবনে জিয়াদের নির্দেশে সা’দ বিশাল বাহিনী নিয়ে যুদ্ধ শুরু করেন। ইয়াজিদের হুকুম ছিল: স্বীকৃতি না দিলে হোসাইনের কেউ যেন বেঁচে না ফেরে। আর শুধু পানি ছাড়া মরলে সেটা বিদ্রোহ দমন বলে চালানো যাবে না। প্রায় একশ জন নারী, পুরুষ ও শিশু - অর্ধমৃত, পানিশূন্য, ক্ষুধার্ত তাঁদের উপরে হামলে পড়লো ত্রিশ হাজার সৈন্য। হোসাইন (রা) - এর কোলে থাকা অবস্থায় শিশু আলী আসগর তীরবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।

শেষের দিকে হুর ইবনে ইয়াজিদ নামে একজন কমান্ডার ইবনে জিয়াদের দল ত্যাগ করে ইমাম হোসাইনের দলে যোগ দেন। তিনিও দশম মহররমে সা’দের বাহিনীর হাতে শহীদ হন।

ইয়াজিদের দশা আজকের ই জরাইল এর মত। বা যেকোন ফ্যাসিস্ট সরকারের মতই। দেশের বড় বড় মানুষদের কাছে তার একটাই দাবি - ‘আমার সব অপকর্ম মেনে নাও, বিবৃতি দাও। না হলে আয়না ঘরে যাও, ঘুম হয়ে যাও, বিদ্রোহী হও, বোমা খাও, মরে যাও।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৭:৫২

ওমর খাইয়াম বলেছেন:



এসব ইতিহাসে সমস্যা আছে। সামন্তবাদের সময় আরবদের নতুন রাজ্যে অনেক সমস্যা ছিলো, সেগুলো সঠিকভাবে লেখার মতো সঠিক মানুষ ছিলো বলে মনে হয় না।

২| ০৭ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৭:৫৮

ওমর খাইয়াম বলেছেন:




ইতিহাস যদি সত্য হয়, বুঝা যাচ্ছে যে, মুসলমানেরা শুরু থেকে অমানবিক ছিলো।

৩| ০৭ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: সময়ের স্রোতে ইতিহাসও বদলে যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.