নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নরসুন্দা নদের হাওয়া

আফরোজা সোমা

নরসুন্দা নদের হাওয়া

আফরোজা সোমা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুফিয়া কামাল: \'তাহারেই পড়ে মনে\'

২০ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯

আজ ২০শে জুন। কবি সুফিয়া কামালের জন্মদিন। তাঁকে স্মরণ করে এই লেখা।

‘‘


আলো হাতে জন্ম নিলো নবাব-নন্দিনী:



সময় তখন মুক্তি উন্মুখ। ভারতবর্ষে টলে উঠেছে ব্রিটিশ রাণীর আসন। স্বদেশী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। একদিকে, পরাধীন ভারতে বেজেছে রাজনৈতিক পরিবর্তনের সুর, অন্যদিকে, সামাজিক ক্ষেত্রেও শুরু হয়েছে নব জাগরণ। তবে হ্যঁ, এত্তো ঘটনার মধ্যেও ভারতীয় নারীর জীবন তখনো পর্দা-প্রথার কঠিন শিকলে বাঁধা। তখনো তাদের মেলেনি বিদ্যা শিক্ষার সামাজিক অনুমতি। এই অন্ধকারে আলো হাতে একা একাই লড়ে যাচ্ছেন নারী মুক্তির অগ্রদূত বেগম রোকেয়া। সেই সময়, সেই পরাধীন, অবিভক্ত; মুক্তি উন্মুখ ভারতের পূর্ব বাংলার বরিশালে এক নবাব পরিবারে জন্ম নেয় একটি শিশু। বড় হয়ে এ শিশুই একদিন হয় রোকেয়ার মতো পরিবর্তনের আরেক অগ্রদূত; হয়ে উঠে প্রতিবাদের আগুন ঝরা নাম; সুফিয়া কামাল।


সুফিয়া কামালের জীবন, আমৃত্যু সংগ্রামেরই জীবন। যখন তিনি মায়ের কোলে শিশু, তখনই তার বাবা নিরোদ্দেশ হয়ে যান। তাঁর মা দুই ছেলে, মেয়ে নিয়ে আসেন বাবার বাড়ি। কঠোর ও রক্ষণশীল পরিবেশে তিনি লালিত হন। কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পান নি সুফিয়া। তাঁর সারা জীবনই ছিলো শিকল ভাঙার গান।


জন্ম ও নাম সমাচার:



সেকালের জমিদারিতে পূন্যাহ বলে একটি বিশেষ পর্ব অনুষ্ঠিত হতো। এমনি এক পূন্যাহ অনুষ্ঠানের দিন, ৫ই আষাঢ় ১৩১৮ সালে (২০ জুন, ১৯১১) মঙ্গলবার বেলা তিনটায় সুফিয়া খাতুনের জন্ম। সুফিয়ার নানা ছিলেন দরবেশ। এই নামটি সেই দরবেশ নানারই দেয়া। সুফিয়ার ডাক নাম ছিলো হাসনা বানু। আরব্য উপন্যাসের হাতেম তাই এর কিচ্ছা শুনে এ নাম রেখেছিলেন তার নানী। আর বড় ভাইয়ের কাছে সুফিয়ার নাম ছিলো হাচুবানু। কেউ কেউ বলতো হাসু বানু। কৈশোরে সুফিয়ার বিয়ে হয় মামাতো ভাই, সৈয়দ নেহাল হোসেনের সঙ্গে। সাহিত্য জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে স্বামীর নামানুসারে সুফিয়া পরিচিত হয়ে উঠেন সুফিয়া এন হোসেন নামে। পরবর্তীতে বিজ্ঞানী কামালউদ্দীন আহমদ খান এর সাথে বিয়ের পর তাঁর নাম হয় সুফিয়া কামাল।


বাল্যজীবন ও প্রাথমিক শিক্ষা
:


নবাবী ঐশ্বর্যের মাঝে কাটে সুফিয়ার বাল্য জীবন। সুফিয়া কামালের নিজের বর্ণনায়:


‘‘আমার প্রথমে স্মরণে জাগে ঐশ্বর্যের সমারোহ। বর্তমানে পাঁচতলা বাড়ির সমান উঁচু দোতলা বাড়ির বিরাট দরওয়াজা। আবলুস কাঠের চিক্কন সরু কারু কাজের উপর রোদ পরলে চক চক করে উঠত।... শায়েস্তাবাদ পরিবার তখন মানে-সম্মানে, ধনে-জনে, ঐশ্বর্যে, শিক্ষায়-সহবতে, তাজিম-তওজ্জায় বিখ্যাত। অন্দর মহলে পুরোপুরি মোগলাই আদব কায়দা, হালচাল, শিক্ষা-সংস্কৃতি,। বাইরে ইঙ্গবঙ্গ, ফ্যাশান, কেতাদুরস্ত হালচাল। মামারা ব্যারিষ্টার, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, নিমকের দেওয়ান, পুলিশের বড়কর্তা।’’


শায়েস্তাবাদের নবাব পরিবারের কথ্যভাষা ছিলো উর্দু। অন্দর মহলে মেয়েদের আরবী ফারসী শিখার ব্যাবস্থা থাকলেও সেখানে বাংলার কোনো স্থান ছিলো না। সুফিয়া বাংলা শেখে মায়ের কাছে। সর্বভারতে প্রসিদ্ধ ছিলো তাঁর বড় মামার লাইব্রেরী। মায়ের উৎসাহ ও সহায়তায় এই লাইব্রেরি হতে চুরি করে বই পড়তো; বাংলা শেখার চেষ্টা করতো শিশু সুফিয়া। এতো বড়া লাইব্রেরী; দেশে বিদেশের এতো সব খবরা খবর রাখার পরো মামা ছিলেন নারী শিক্ষার ঘোর বিরোধী।

বাড়িতে কর্মচারিগণ সুর করে পুঁথি পড়তেন। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সুর করে মিলাদ পড়ানো হতো। এই মিলাদের সুর, পুঁথি পাঠের ছন্দ সুফিয়ার মনকে দোলা দিয়ে যেতো। ছোটো কাল থেকেই সুফিয়ার মধ্যে ছিলো বাংলা ভাষার প্রতি আকর্ষণ ও মমত্ববোধ।


সে সময় সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের মেয়েদের স্কুলে যাবার কোনো রীতি ছিলো না। সকালে উঠে ছেলেরা মসজিদ মক্তবে যেতো আরবি পড়তে। মেয়েরা যেতো মা-দাদীর সঙ্গে রান্নাঘরে নাস্তা বানাতে। এ রকম পরিবেশে বাড়ির ছেলেদের সাথে কোনো মেয়ে স্কুলে যাওয়ার বিষয়টি কেউ কল্পনাও করতে পারতো না। কিন্তু সুফিয়া ছিলো ছেলে বেলা থেকে-ই ব্যাতিক্রম। সে বায়না ধরলো, স্কুলে যাবেই। অবশেষে, পায়জামা-আচকান পরিয়ে, মাথায় টুপি দিয়ে রীতিমতো ছেলে সাজিয়ে সুফিয়াকে স্কুলে পাঠালেন অভিভাবকেরা। পুরনো সে দিনের কথা তাঁর নিজের ভাষায় জানা যাক:


‘‘মনে পড়ে, ভাইদের সঙ্গে স্কুলে যাওয়ার বায়না ধরেছিলাম- ‘ আমিও বাংলা পড়তে যাবো।’ পায়জামা-আচকান আর টুপি পড়ে অর্থাৎ ছেলেদের পোশাকা গায়ে চাপিয়ে পেয়ারীলাল মাষ্টারের স্কুলে গিয়েছি কিছুদিন। আর যখন ভাইয়েরা শহরে গেলেন পড়তে, তখনই স্কুল জীবন শেষ আমার।’’


বাস্তবে স্কুলে যাওয়া আর সম্ভব হলো না কোনোদিন। তবে বাড়িতেই চলতে থাকে পাঠ। বাংলার মতো ইংরেজীতেও দক্ষ হয়ে উঠতে থাকে সে। তাঁর নিজের বর্ণনায়:


‘‘ আমার পড়াশুনার আগ্রহ দেখে এক মামা, ভাইয়া এবং মামাতো ভাইয়ারা ওখানকার লাইব্রেরি থেকে বই পাঠাতেন নিয়মিত। স্কুলের অনেক পাঠ্যবইও আমি পড়তে লাগলাম। বড়ভাই, মামাতো ভাইয়ারা ছূটিতে বাড়িতে এলেই হৈ চৈ আর আনন্দ হতো। আর সে সঙ্গে চলতো স্কুল স্কুল খেলা। ছোটো বেলার সেই আনজু, রুবী, ময়না সবাই মিলে প্রকান্ড হল ঘরকে স্কুল বানিয়ে পড়তে বসতাম। দেয়ালকে বানানো হতো ব্ল্যাকবোর্ড। ঘন্টাও বাজানো হতো। ভাইয়ারা আমাদের পড়াতেন। বাংলা, ইংরেজী, অংক সবই পড়ানো হতো। ইংরেজী পরীক্ষায় আমি একশ এর মধ্যে একশ পেতাম। ভাইয়ারা আমাদেরকে পুরষ্কার দেবার ব্যাবস্থা করলেন। সে পুরষ্কার হলো ‘সন্দেশ’ পত্রিকার গ্রাহক করে দেয়া। ভাইয়ার বৃত্তির টাকায় প্রথম আমার নামে ‘সন্দেশ’ পত্রিকা এলো। সেদিন ছিলো খুব খুশির দিন।’’


বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এতো উন্নতি সে সময় হয় নি। এখনকার ছেলেমেয়েরা জন্মের পর থেকে রেডিও, টিভি, ভি সি আর দেখতে অভ্যস্ত। কিন্তু সুফিয়া কামালের শৈশবে এগুলো কল্পনাও করা যেতো না। যে ‘কলের গান’ এখন পুরোনো বলে অচল, সে কলের গান শুনেই তারা বিস্ময়ে হতবাক হতো। এ কালের ছেলে মেয়েদের কাছে সে কালের অবস্থা কল্পনা করাও কঠিন। সুফিয়া কামাল কয়েকটি পঙক্তিতে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রতি তুলনার এই চিত্র:


‘‘আমাদের যুগে আমরা যখন খেলেছি পুতুল খেলা

তোমরা এ যুগে সে বয়সেই লেখাপড়া করো মেলা

আমরা যখন আকাশের তলে উড়ায়েছি শুধূু ঘুড়ি

তোমরা এখন কলের জাহাজ চালাও গগন জুড়ি’’


বেগম রোকেয়ার সাথে প্রথম সাক্ষাৎ:



মাত্র সাত বছর বয়সে কলকাতায় বেগম রোকেয়ার সাথে প্রথম সাক্ষাৎ। প্রথম সাক্ষাতে সুফিয়াকে বেগম রোকেয়া তাঁর স্কুলে ভর্তি করে নেয়ার আকাঙ্খা প্রকাশ করেন। কিন্তু বাস্তব সমস্যার কারণে তা সম্ভব হয় নি। এই বিষয়ে শোনা যাক সুফিয়া কামালের মুখে:


‘‘বেগম রোকেয়ার সাথে আমার যখন দেখা হয়, তখন আমি ছোট, ৭ বছর বয়স। আম্মাকে ফুফু ডাকতেন বেগম রোকেয়া, রক্তের সম্পর্ক কি-না জানি না, তবে কুটুম্বিতা ছিলো।... আম্মাকে বলেন, ‘ওকে পড়াবেন।’ আম্মা বলেন, আমি তো কোলকাতায় থাকি না। আমি তো এসেছি, আবার মাস পরেই চলে যাবো।... নয়তো তোমার স্কুলে দিতাম পড়তে।... আজও মনে হয়, যদি পারতাম লেখাপড়া করতে, যদি পারতাম মুক্ত ভুবনে বিচরন করতে, তবে পারতাম লিখতে মনের মতো সুন্দর করে।’’


শঙ্খের মাঝে সমুদ্রের গান:



হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের শিক্ষিত, সংস্কৃতিমনা মানুষদের অবাধ যাতায়াত ছিলো সুফিয়ার মামার বাড়ি। এই রকম এক পরিবেশে, কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি গল্প পড়ে সুফিয়ার মনে নতুন ভাবের উদয় হয়; তাকে পেয়ে বসে লেখার নেশা। এ বিষয়ে জানা যাক সুফিয়া কামালের নিজের লেখা থেকে:


‘‘নিত্য-নতুন অতিথি আসা-যাওয়া নিত্য নতুন বইয়ের খবরও কিছুটা অন্দর মহলে গিয়ে পৌঁছে। নতুন দুনিয়ার খবর কানে আসতো। প্রথম মহাযুদ্ধের শেষ, স্বদেশী আন্দোলনের পূর্ণজোয়ার। হিন্দু- মুসলমানের মিলিত স্বপ্ন দেশ স্বাধীন করা। নিজের অধিকার বুঝে নেয়া। তখনও শৈশব কাটেনি। তবুও কীসের একটা আবেগ এসে মনকে দোলা দিতো। এমনি কোনো বর্ষামুখর দিনে মুসলিম সাহিত্য পত্রিকায় প্রকাশিত কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘হেনা’ পড়েছিলাম বানান করে। প্রেম, বিরহ, বিচ্ছেদ, মিলন এসবের মানে কি তখন বুঝি? তবুও যে কী ভালো, কী ব্যাথা লেগেছিলো তা প্রকাশের ভাষা কি আজ আর আছে?’’


এরপর কোলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রবাসী পত্রিকায় রবীন্দনাথ ঠাকুরের একটি কবিতা পড়ে কবিতার প্রতিও মোহগ্রস্থ হয়ে পড়েন। এসময় মহিলাদের মধ্যে বেগম রোকেয়া, বেগম সারা তাইফুর ও বেগম মোতাহারা বানু প্রমুখের লেখা দেখে তাঁর মনে হলো তিনি নিজেও লিখতে পারবেন। কিন্তু সে সময় নবাব পরিবারের কোনো মেয়ের পক্ষে এ কাজটি সহজ, স্বাভাবিক ছিলো না। একে তো রক্ষনশীল। তারউপরে বড় মামার রক্ত চক্ষুকে ফাঁকি দিয়ে কখনো দরজা বন্ধ করে, কখনো বা খাটের নিচে লুকিয়ে চললো তার লেখা লেখা খেলা। কবির ভাষায়:


‘‘কী গোপনে, কতো কুন্ঠায়, ভীষন লজ্জায় সেই হিজিবিজি লেখা, ছড়া, গল্প, কিন্তু কোনোটাই কি মনের মতো হয়। কেউ জানবে , কেউ দেখে ফেলবে বলে ভয়ে ভাবনায়, সে লেখা কতো লুকিয়ে রেখে আবার দেখে দেখে নিজেই শরমে সংকুচিত হয়ে উঠি।’’


তখন কি কেউ আন্দাজ করেছিলো, শঙ্কের ভেতর যেমন শোনা যায় সমুদ্রসঙ্গীত, তেমনি এ শিশুর মাঝেও বেড়ে ওঠছে ভবিষ্যতের নেতা; দিন বদলের স্বাপ্নিক!


‘ শৈশব-খেলা সাঙ্গ হয়েছে এসেছে কিশোর বেলা’:


দিনে দিনে দিন গড়িয়েছে মেলা। সুফিয়াও ধীরে ধীরে পা রাখেন কৈশোরে। ১৯২৩ সনে মাত্র ১২ বছর বয়সে মামাতো ভাই সৈয়দ নেহাল হোসেনের সাথে বেগম সুফিয়ার বিয়ে হয়। সে সময় ১২ বছর বয়সও কম নয়। সাধারনত মেয়েরা আট নয় বছরে শ্বশুর বাড়িতে চলে যেতো। মেয়েদের নিয়ে এ যেনো রীতিমতো অভিভাবকদের পুতুল খেলা। সুফিয়া কামাল শিশুকালে মোচার খোলার তরীতে পুতুল সাজিয়ে ‘কালাবদর’ এর জলে ভাসিয়ে শ্বশুর বাড়িতে পাঠানোর যে খেলা খেলেছেন, কৈশোরে পদার্পনের সাথে সাথে তাঁদের নিয়েই যেনো শুরু হয় অভিভাবকদের পুতুল পুতুল খেলা। সুফিয়া কামালের কবিতা থেকে উদ্ধৃতি পড়া যাক:


‘‘কালা বদরের জলে ভাসাইয়া মোচার খোলার তরী

কাঁদিয়া ফিরেছি, শ্বশুর বাড়িতে পুতুল বিদায় করি।

শৈশব-খেলা সাঙ্গ হয়েছে এসেছে কিশোর বেলা

আমাদের খেলা ঘুচায়ে খেলেছে মায়েরা নতুন খেলা।’’


বিয়ের পর বেগম সুফিয়া, সুফিয়া এন হোসেন নামে পরিচিত হয়ে উঠেন এবং স্বামীর প্রেরণায় আরো বেশি লেখালেখিতে জড়িয়ে পড়েন। সুফিয়ার প্রথম লেখা ‘সৈনিক বধু’ প্রকাশিত হয় বিয়ের পর, সুফিয়া এন হোসেন নামে।


কাজী নজরুল ইসলামের সাথে পরিচয়:


সুফিয়ার ছোটো মামা ঢাকায় থাকতেন। কাজী নজরুল ইসলাম তখন ঢাকায়। সুফিয়ার মামা কাজী নজরুল ইসলামের সাথে দেখা করেন এবং সুফিয়ার কিছূ কবিতা তাঁকে পড়তে দেন। কবিতা পড়ে নজরুল মুদ্ধ হন এবং ঢাকায় ‘অভিযান’ পত্রিকায় কবিতা ছাপার ব্যাবস্থা করে দেন। তারপর নজরুল কোলকাতায় ফেরত গিয়ে ‘সওগাত’ পত্রিকায় লেখার আহ্বান জানিয়ে সুফিয়াকে চিঠি লেখেন। এরপর থেকে ‘সওগাত’ পত্রিকায় শুরু হয় তাঁর লেখালেখি এবং এর মধ্য দিয়েই লেখক সমাজে গড়ে উঠে তার কবি পরিচিতি।


‘হারায়ে গিয়েছে সুরবাঁধা মোর বাঁশী’:



স্বামীর মৃত্যু, হতাশা, দুঃসময় এবং শিক্ষকতার নতুন জীবন-- সব মিলিয়ে তিরিশিরে দশকের গোড়াতেই তার শুরু হয় এক কঠিণ অধ্যায়।


১৯৩২ সালে সুফিয়ার জীবনে নেমে আসে নিদারূন বিষাদের ছায়া। ছন্দোময় জীবনে শুরু হয় ছন্দপতন। স্বামী নেহাল হোসেন আক্রান্ত হয় দুরারোগ্য ক্ষয় রোগে। বোম্বে, মাদ্রাজ, নৈনিতাল ঘুরে, হাওয়া বদল করেও কোনো লাভ হলো না। মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়সে মারা যান নেহাল হোসেন।


স্বামীর অকাল মৃত্যুতে সুফিয়ার জীবনে নেমে আসে দুর্যোগ, দুর্ভোগ। ইতোমধ্যে, কালাবদর নদীর ভাঙনে শায়েস্তাবাদের নবাবী সম্পত্তিও প্রায় শেষ। সুফিয়ার বড় ভাই ওয়ালী তখনো ছাত্র। পরিবারে উপার্জনক্ষম কেউ নেই। বছর খানেক আগে বড় মামাও ইন্তেকাল করেছেন। এমন দুঃসময়ে আপনজনেরাও আর আপন রইলো না। অপমানে, অবহেলায় বেদনায় নীল হলেন সুফিয়া। তার মানসিক এই অবস্থার প্রকাশ ঘটলো কবিতায়:


‘‘এই বালুচরে হারায়ে গিয়েছে সুরবাঁধা মোর বাঁশি’

‘কালাবদরে’র কালো ঢেউয়ে ধুয়ে নিয়ে গেছে মোর হাসি।’’


এই দুঃসময়ে সুফিয়া কোলকাতায় পারি দেন। শিক্ষকতার কাজ নেন কোলকাতার কর্পোরেশন স্কুলে। যদিও সুফিয়ার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিলো না কিন্তু তার ছিলো অদম্য চেষ্টা। চেষ্টা দিয়েই তিনি সকল সমস্যাকে জয় করেছেন।


এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন কবি আব্দুল কাদির, কবি খান মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন, কবি জসিম উদ্দীন এবং ‘সওগাদ’ পত্রিকার সম্পাদক নাসিরউদ্দিন।


‘‘হয়েছে শুরু বসন্তের পুষ্প সমারোহ’’:


এক কন্যা সন্তানসহ নিজের জীবিকা অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে করতে একসময় সুফিয়ার শরীর ভেঙ্গে পড়ে। সেই দুঃসময়ের আঁধার চিরে সুফিয়ার জীবনে আসে বিরাট পরিবর্তন। এ সময়েই ১৯৩৯ সালের ৮ এপ্রিল সুফিয়া আবারো বিয়ে করেন। স্বামী কামাল উদ্দীন খান। শুরু হয় নতুন সংসার। কামাল উদ্দীন খানকে বিয়ের পর সুফিয়া পরিচিত হয়ে ওঠেন সুফিয়া কামাল নামে। কামাল উদ্দীন খান সুফিয়ার কবি প্রতিভাকে সম্মান করতেন। দুঃসময়ে, হতাশায়, বিষন্নতায় ব্যাহত হয়েছিলো সুফিয়ার সাহিত্যচর্চা। বিয়ের পর ধীরে ধীরে কেটে যায় সেই বিষন্নতা। সুফিয়ার লেখাতেও জেগে উঠে নতুন প্রাণ। হতাশার কথা ভুলে তিনি লেখেন আনন্দ বার্তা:


‘‘কখন হয়েছে শুরু বসন্তের পুষ্প সমারোহ-

কেটে গেছে শিশিরের ব্যথা ঘন কুয়াশার মোহ

বুঝি নাই- ছিলাম উন্মনা। ’’



ঢাকায় আগমন, সমাজ সেবায় আত্মনিয়োগ:



১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর সুফিয়া কামাল ঢাকায় চলে আসেন। লেখালেখির সুবাদে সুফিয়া কামালের নাম আগে থেকেই জানতেন তখনকার প্রখ্যাত নারী নেত্রী লীলা রায়। সুফিয়া কামাল ঢাকায় এসেছেন জেনে লীলা রায় নিজোদ্যোগে তাঁর সাথে দেখা করেন। সে সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে গঠিত হয় ‘শান্তি কমিটি’। সুফিয়া কামালও জড়িত হন এই কমিটিতে।


১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন সুফিয়া কামালকে দারুন ভাবে আলোড়িত করে। ভাষা আন্দোলনের পক্ষে তখন তিনি লেখালেখি করেন।


ভাষা আন্দোলনের পর ১৯৫৪ সালে যুক্ত ফ্রন্ট নির্বাচনের সময় ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের প্রতি সুফিয়া কামাল পূর্ণ সমর্থন দেন। শুধু রাজনৈতিক-সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ড নয়। সামাজিক, অর্থনৈতিক দাবি আদায়ের আন্দোলনেও সুফিয়া কামাল অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। যুক্তফ্রন্ট সরকারের সময় নুন ও তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে দলমত নির্বিশেষে সকল স্তরের মহিলারা মন্ত্রী আতাউর রহমানকে রাস্তায় ঘেরাও করেন। পূর্ব পাকিস্তানে এই প্রথম প্রকাশ্যে রাস্তায় মহিলাদের আন্দোলন। এই আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সুফিয়া কামাল।


১৯৫৮ সালে সামরিক শাষন জারি, অত্যাচার, ভয়ভীতি এবং নিষিদ্ধ রাজনীতির থমথমে পরিবেশে আসে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী। এ সময় বাঙালীর সাহিত্য-সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে প্রকাশ ঘটে আরেক নতুন সুফিয়া কামালের ।


১৯৬৫ সালের কথা। পাক-ভারত যুদ্ধ শেষ হয়েছে। তাসখন্দে জেনারেল লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর সাথে জেনারেল আইয়ূব খানের যুদ্ধবিরোধী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে কিছুদিন আগেই। ঢাকায় ছাত্র সমাজের মাঝে তীব্র অসন্তুষ দানা বেঁধে উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অশান্ত। এরই ভেতরে আইয়ূব খান ঢাকায় এলেন ছাত্রদের ঠান্ডা করতে। তিনি ক’জন বুদ্ধিজীবিকে ডাকলেন তাদের সাথে আলোচনা করবার জন্যে। এদের মধ্যে ছিলেন সুফিয়া কামাল। কীভাবে সমস্যার সমাধান হতে পারেÑ এই নিয়ে জানতে চাইলেন জেনারেল। মুখ খুললেন সুফিয়া। বললেন: আপনি তো এদেশের প্রেসিডেন্ট। তাসখন্দে গিয়ে এতো বড় একটা সমস্যার সমাধান করেছেন। দেশের ছাত্রদের ব্যাপারে এটা তো তেমন কোনো সমস্যাই না। আপনি সব শুনুন এবং এর একটা সমাধান করে দিয়ে যান।


আইয়ূব খান উদ্ধত কন্ঠে সুফিয়া কামালের জবাব দিলেন: ‘‘ ওধার তো সব ইনসান হ্যায়, এ ধার তো সব হায়য়ান’’ ( ওদিকে তো সব মানুষ, এদিকে তো সব জানোয়ার।) আইয়ূবের এই কথার জবাবে সুফিয়া বললেন: ‘‘আপ তো হায়য়ানকা প্রেসিডেন্ট হো’’ (আপনি তো জানোয়ারদেরই প্রেসিডেন্ট।)


১৯৬৯ এর বৈরি পরিবেশে, গণঅভ্যুথানের প্রস্তুতিপর্বে আন্দোলনরত সংগ্রামী ছাত্র সমাজকে সাহস ও প্রেরণা জুগিয়েছেন সুফিয়া কামাল।



মুক্তিযুদ্ধ এবং আমাদের বিবেকমাতা— সুফিয়া কামাল:


সুফিয়া কামালের সাহস ও দেশপ্রেমের সর্বোচ্চ প্রকাশ পাওয়া যায় একাত্তরে দিনগুলোতে। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর মাত্র দুই দিন আগে ২৩ মার্চ-এ, প্রেসিডেন্ট হাউসে বৈঠকে সুফিয়া কামালের অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ আলোচনা এবং মানসিক দৃঢ়তা দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন স্বয়ং ইয়াহিয়া।


মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন নজর বন্দী। এ সময় পাকিস্তান বাহিনী তার ওপর কড়া নজর রাখে। দূরবীন দিয়ে সারাক্ষণ নজরে রাখা হয় তাঁর বাড়ি। এরই মাঝে জুলাই মাসে খবর রটে যায় যে, সুফিয়া কামালকে হত্যা করেছে পাকিস্তান সেনা বাহিনী।


এ খবরে পাকিস্তানের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ে এবং জান্তা সরকার বাধ্য হয়ে প্রচার করে যে, সুফিয়া কামাল বেঁচে আছেন। তাঁকে হত্যা করা হয় নি।


তাঁর দুই মেয়ে লুলু ও টুলুকে যুদ্ধে পাঠিয়ে তিনি থাকেন ধানমন্ডিতে; নিজ বাসভবনে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা গোপনে তার সাথে যোগাযোগ রাখতো। রেশন কার্ড দিয়ে চাল-ডাল তুলে তিনি জমা রাখতেন নিজের বাসায়। আর বাড়ির পেছনের দেয়াল ডিঙিয়ে এসে খাদ্যদ্রব্য নিয়ে যেতেন মুক্তিযোদ্ধারা ।


মুক্তিযুদ্ধের একবারে শেষের দিকে এসে যখন বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করার তালিকা করা হয়, তখন সে তালিকায় নাম ছিলো সফিয়া কামালের। সে সময় সুফিয়া কামালকে হত্যার উদ্দেশে ময়মনসিংহ থেকে রাজাকার আনা হয়। কিন্তু সুফিয়াকে হত্যা করতে এসে তারা নিজেরাই মুক্তিযোদ্ধার হাতে নিহত হয়।


সংগঠন ও সাংগঠনিক কর্মকান্ড:


সেই ১৯৪৮ সালে ‘শান্তি কমিটি’ দিয়ে সুফিয়া কামালের সাংগঠনিক জীবনারাম্ভ। তারপর থেকে সারাটি জীবন তিনি কাটিয়েছেন সংগঠন থেকে সংগঠনে। বিভিন্ন সংগঠনের আন্দোলন সংগ্রামে, মানুষের অধিকার আদায়ের মিছিলে তিনি ছিলেন সবার আগে।


পূর্ব পাকিস্তান মহিলা সমিতি, ঢাকা শহর শিশু রক্ষা সমিতি, ওয়ারী মহিলা সমিতি, ছায়ানট, ধানকন্যা, নারী কল্যান সংস্থা, মহিলা সংসদ, মহিলা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনসহ আরো অনেক সংগঠনের তিনি ছিলেন সভানেত্রী।


সাহিত্য কর্ম:


সুফিয়া কামালের প্রথম গল্প গ্রন্থ ‘কেয়ার কাঁটা’ প্রকাশিত হয় ১৯৩৭ সালে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সাঁঝের মায়া’ প্রকাশিত হয় ১৯৩৮ সালে। এছাড়াও তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ হলো— মায়া কাজল (১৯৫১), মন ও জীবন (১৯৫৭), উদাত্ত পৃথিবী ( ১৯৬৪), অভিযাত্রিক (১৯৬৯), মৃত্তিকার ঘ্রাণ (১৯৭০)।


তাঁর লেখা শিশুতোষ গ্রন্থ— ইতল বিতল (১৯৬৫), নওল কিশোরের দরবারে (১৯৮১)। এগুলো ছাড়াও তার সাহিত্য কর্মের মাঝে আছে আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ, ভ্রমন কাহিনী এবং একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা নিয়ে বই ‘একাত্তরের ডায়েরী’ (১৯৮৯)।


পুরষ্কার:


সর্বপ্রথম ১৯৫৯ সালে ‘বুলবুল ললিত কলা একাডেমী’ পুরষ্কার পান তিনি। ১৯৬১ সালে পাকিস্তান সরকার তাকে ‘তঘমা-ই-ইমতিয়াজ’ পুরষ্কার দেয়। কিন্তু সুফিয়া কামাল সে পুরষ্কার প্রত্যাখ্যান করেন।


বাংলাদেশে সরকার তাঁকে দেয় ‘একুশে পদক’ (১৯৭৬), এবং রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মান সূচক পুরষ্কার ‘স্বাধীনতা পদক’ (১৯৯৮)। এছাড়াও তিনি অর্জন করেছেন দেশী-বিদেশী অসংখ্য পুরষ্কার।


সুফিয়া কামাল অথবা আমাদের মা:


১৯৯৯ এর ২০ নভেম্বর। সময় সকাল ৮টা ১০ মিনিট। শোকাতুর এক সকালের শুরু। যে সকালে, দিন না ফুরোতেই নেমেছে সন্ধ্যার অন্ধকার। সে নেই! সে নেই? এই না থাকার খবর ঝড়ের বেগে রটে যায় দেশময়। দেশজুড়ে বেদনা, হাহাকার, কান্নার ঢল।


সবাই বিহ্বল। চোখ অশ্রুতে টলমল। তিনি তো বিহ্বল হন নি কখনো। কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নি শোকে। তিনি শিখিয়েছেন অন্যায়ের বিরোদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে। আজ তিনি নেই। ৮৮ বছর বয়সে নিলেন জীবন থেকে ছুটি।... প্রায় শতাব্দির সমান বয়স হয়েছিলো তাঁর। সেই যৌবন থেকে মৃত্যু অবধি নিজ কাজে অটল থেকেছেন। তাঁর জীবনটাও ছিলো যেনো এক সংগ্রাম। বিভিন্ন সময়ে পারিবারিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছেন। ভেঙে পড়েন নি কখনো। আর দেশের কাজে কৈশোরে— স্বদেশী আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন, বেগম রোকেয়ার শিষ্য হিসেবে কাজ করেছেন, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গেও ছিলো তার যোগসূত্র।


বাংলাদেশে ১৯৫২ থেকে সব ধরনের আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন— সুফিয়া কামাল। এদেশের হাজারো আন্দোলনকারীর আশ্রয়; প্রিয় মানুষ; প্রিয় সম্বোধন — ‘খালাম্মা’। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক আন্দোলন কোথায় ছিলেন না তিনি! কিন্তু, এই সকাল বেলায় তিনি নেই!


'অলখের পাথার বাহিয়া' তিনি গেছেন 'চলিয়া ধীরে পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে'। তবু, 'তাহারেই পড়ে মনে' ।



বি. দ্র.: লেখাটি পুরনো। বছর কয়েক আগে তাঁর স্মরণে লেখা হয়।




মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৩

ডার্ক ম্যান বলেছেন: চমৎকার পোস্ট। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
এই মহিয়সী নারীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। তিনি ছিলেন সচেতন একজন নাগরিক। মুক্তিযুদ্ধের সময় ২ কন্যা সাঈদা কামাল আর সুলতানা কামালকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন আহত মুক্তি সেনাদের সেবা করার জন্য।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৭

আফরোজা সোমা বলেছেন: লেখা পড়া এবং মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ, ডার্কম্যান। ভালো থাকবেন। অনেক শুভ কামনা।

২| ২০ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৩

কাবিল বলেছেন: 'অলখের পাথার বাহিয়া' তিনি গেছেন 'চলিয়া ধীরে পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে'। তবু, 'তাহারেই পড়ে মনে'




এই মহিয়সী নারীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৬

আফরোজা সোমা বলেছেন: ধন্যবাদ, কাবিল।

৩| ২১ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৫:৪৮

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: সুন্দর একটি পোষ্ট। অনেক কিছু জানতে পারলাম। ধন্যবাদ।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৫

আফরোজা সোমা বলেছেন: লেখা পড়ার জন্য এবং মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ, তনিমা।

৪| ২১ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১০:০০

রূপা কর বলেছেন: ঊনাকে সালাম

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৫

আফরোজা সোমা বলেছেন: ধন্যবাদ, রূপা কর।

৫| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৬

সজিবুল ইসলাম রকি বলেছেন: আপনার লিখা অনেক ভাল লেগেছা।
ধন্যবাদ।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫২

আফরোজা সোমা বলেছেন: লেখাটি পড়ার জন্য এবং মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ, সজিবুল হক রনি। আর লেখাটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারো ভালো লেগেছে খুব। ভালো থাকবেন। শুভ কামনা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.