নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইসলাম,রাজনীতি

আসুন আমরা ২টি ভারী বস্তু আল্লাহর কুরান ও রাসুলের(সাঃ) পরিবারকে(আঃ) অনুসরন করি।

আল-মুনতাজার

আমি মুয়াবিয়ার আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত পরিত্যাগকারী রাসুলের(সাঃ) শিয়া।শিয়া মানে অনুসারী।আমি আল্লাহর অনুসারী,রাসুলের(সাঃ) অনুসারী।ডঃ তিজানী সামাভী বলেন,শিয়ারা রাসুলের(সাঃ) সুন্নত পালন করছে।

আল-মুনতাজার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামের পবিত্রতা সংরক্ষনে নবী পরিবারের (আঃ) ভুমিকা

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৮

সূচনা (২)

আক্ষরিক ও রূপক



অন্য যে কোনো ভাষার মতো আরবী বা ফারসিতে ব্যবহৃত কোনো শব্দ যদি তার মূল বা শাব্দিক অর্থ প্রকাশ করে, সেটাকে বলা হয় প্রকৃত বা আক্ষরিক শব্দ। যেমন, আমরা বলি, "চোরটার হাত কেটে ফেলা হয়েছে”। এখানে “হাত” শব্দটা দিয়ে সত্যিকারের হাতকেই বোঝানো হয়েছে। কিন্তু বাক্য অলংকরণের জন্য যদি কোনো শব্দ ব্যবহার করা হয়, আর সেটা যদি শব্দটার মূল অর্থ প্রকাশ না করে, সেটাকে বলা হয় অলংকৃত বা রূপক শব্দ। যেমন, অনেক সময় “হাত” শব্দটা দিয়ে “প্রভাব” বোঝানো হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, “এই ঘটনাতে তার হাত আছে”। এখানে “হাত” বলতে সত্যিকারের হাতকে না বুঝিয়ে বোঝানো হচ্ছে যে, ঘটনাটাকে সে প্রভাবিত করেছে। শব্দের এমন ব্যবহার প্রত্যেক ভাষার সাহিত্যকর্মেই পাওয়া যাবে। এমন ব্যবহার বাক্যের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে।



কোরানের অনন্য অসাধারণ আয়াতগুলির মাঝেও আমরা এমন রূপক শব্দ দেখতে পাই। উদাহরণস্বরূপ:



“তুমি তোমার হাত তোমার গলায় আবদ্ধ করে রেখোনা, অথবা সেটা সম্পূর্ণ প্রসারিত কোরোনা। তাহলে তুমি তির®কৃত ও নিঃস্ব হয়ে পড়বে।”

(সুরা বনি ইস্রাইল/আল ইসরা: আয়াত ২৯)



এই আয়াতটাতে একেবারে স্পষ্টভাবেই বোঝা যাচ্ছে যে এখানে “হাত” শব্দটা দিয়ে সত্যিকারের হাতকে অথবা “গলা” শব্দটা দিয়ে সত্যিকারের গলাকে বোঝানো হচ্ছেনা। এই আয়াতটার অর্থ হলো:



“কৃপণ হয়োনা, অথবা অপব্যয়ী হয়োনা। তাহলে তির®কৃত ও নিঃস্ব হয়ে পড়বে।”



এরকম আরেকটা উদাহরণ দেয়া যায় ”সীরাত” শব্দটা দিয়ে। আরবী “সীরাত” শব্দটার অর্থ “রাস্তা” অথবা “পথ”। কোরানের প্রথম সুরা আল ফাতিহায় আমরা দেখি:



“আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করো। তাদের পথ, যাদেরকে তুমি অনুগ্রহ দান করেছো। তাদের পথ নয়, যারা ক্রোধ নিপতিত ও পথভ্রষ্ট”

(সুরা আল ফাতিহা: আয়াত ৫-৭)



এই আয়াতেও এটা পরিষ্কার যে “পথ” বলতে এখানে সত্যিকারের পথকে বোঝানো হচ্ছেনা। এখানে বলা হচ্ছে:



“আমরা যেনো নবী-রাসুলদের দৃষ্টান্ত অনুসরন করে আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে পারি। তাদের দৃষ্টান্ত যেনো অনুসরণ না করি , যাদের উপর আল্লাহ অসন্তুষ্ট।”





উপসংহার

আরবী ভাষার উপরে যারা বিশেষজ্ঞ, তারা সবাই এটা মানবেন যে সুরা আল ইসরার ২৯ নং আয়াতে “প্রসারিত হাত” বলতে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বোঝানো হয়নি। এখানে “প্রসারিত হাত” বলতে “অপব্যয়” বোঝানো হয়েছে। একই ভাবে সুরা আল ফাতিহা-য় “সীরাত” বলতে ধূলা বালিতে ঢাকা কোনো রাস্তাকে বোঝানো হয়নি। এখানে আধ্যত্মিক পথ বা নবী-রাসুলদের দৃষ্টান্ত অর্থাৎ ইসলাম ধর্মকে বোঝানো হয়েছে।



বিভিন্ন খলিফাদের আমলে যেসব বিশেষজ্ঞ ও পন্ডিত ব্যক্তি ছিলেন, তাঁরাও উপরের এই ব্যাখ্যাগুলোর ব্যাপারে একমত। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হলো, যখন কোরানের অন্যান্য কিছু আয়াতে আল্লাহর “হাত” অথবা “দৃষ্টি”-র কথা বলা হয়, তখন তাঁরা বলেন যে এই শব্দগুলো দিয়ে সত্যিকারের হাত বা চোখকে বোঝানো হয়েছে। তাঁরা বলেন যে এই আয়াতগুলোতে আল্লাহর শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বোঝানো হয়েছে। আহলে বায়াত (আঃ)-এর অনুসারীরা এই শব্দগুলিকে রূপক অর্থে বিবেচনা করেন।



এই কারনে আমরা এখন এই দুই ভিন্নমতের বিভিন্ন যুক্তিগুলো তুলনা আর পর্যালোচনা করবো। আমরা আরো দেখবো কিভাবে এই দুই মতেরœ বিশেষজ্ঞরা কোরান ও হাদীসের আলোকে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্যাখ্যা দিয়েছেন।



আমরা এখানে খলিফাদের মতাবলম্বীদের ভেতর থেকে একজনের বই এবং আহলে বায়াত (আঃ)-এর মতাবলম্বীদের ভেতর থেকে একজনের বই বেছে নিয়েছি। দুইটা বই-ই আল্লাহর একত্ববাদ নিয়ে আলোচনা করেছে। আমরা খলিফাদের মতাবলম্বীদের ভেতর থেকে বেছে নিয়েছি ইবনে খুজাইমাহ-এর লেখা “তাওহিদ”। অন্যদিকে আহলে বায়াত (আঃ)-এর মতাবলম্বীদের ভেতর থেকে বেছে নিয়েছি শেখ সাদুক-এর লেখা “তাওহিদ”। বই দুইটি নিয়ে আলোচনা করার আগে আমরা এই দুই জ্ঞানী ও গুণী ব্যাক্তির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরছি, যাতে করে আমরা এই দু’জনের খ্যাতি আর সম্মান অনুধাবন করতে পারি।





খলিফাদের মতাবলম্বীদের দৃষ্টিতে ইবনে খুজাইমাহ

খলিফাদের মতাবলম্বী ইসলামী বিশেষজ্ঞরা ইবনে খুজাইমাহ-কে বেশ কিছু বিশেষণে অভিহিত করেছেন। যেমন:

ক্স ইমাম উল আইমাহ (ইমামগণের ইমাম)।

ক্স আল আফিজ আল কাবীর (ইসলামী বিজ্ঞানের তত্ত্বাবধায়ক বা কোরানের হাফেজদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ)।

ক্স আল মুজতাহিদ আল মুতলাক (শ্রেষ্ঠ আইনজ্ঞ)।

ক্স বাহরুল উলুম (বিজ্ঞানের সমুদ্র)।

ক্স রাসুল মুহাদ্দিতিন (হাদীসবেত্তাগণের নেতা)।

ক্স হাবর উল উলামা আল আমিলিন ((বিদ্বান মানুষদের বিজ্ঞ পরামর্শদাতা)।

ক্স কাতাবুল উলামা (শিক্ষিতদের কেন্দ্র)।



মুহাম্মদ বিন ইসহাক খুজাইমাহ নিসাবুরি ২১৩ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করেন। ৩১১ হিজরীতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সহী বুখারী ও সহী মুসলিম সহ অনেক জায়গাতেই বিশেষজ্ঞরা তাঁর উদ্ধৃতি দিয়ে বিভিন্ন হাদীসের বর্ণনা দিয়েছেন। পাশাপাশি এটাও বলা হয়ে থাকে যে ইবনে খুজাইমাহও বেশ কিছু হাদীসের বর্ণনা দিতে গিয়ে সহী বুখারী ও সহী মুসলিম থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন।



ইবনে খুজাইমাহ ধর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বেশ কিছু বিশ্লেষণাত্মক ও গবেষণাধর্মী উত্তর লিখেছিলেন। এছাড়াও তিনি ১৪০ টি বই রচনা করেছেন, যার ভেতরে অন্যতম হলো সহী এ ইবনে খুজাইমাহ। অনেক বিশেষজ্ঞ তাঁর লেখা এই বইকে সহী বুখারী বা সহী মুসলিম-এর তুলনায় উন্নত ও উঁচুমানের বলে মনে করেন। তিনি শাফি মতাবলম্বী ছিলেন।



আমরা এখানে তাঁর লেখা “তাওহিদ” বইটি নিয়ে আলোচনা করবো। এই বইটি সম্পাদনা করেছেন কায়রো-র আল-আজহার ইউনিভার্সিটির মুহাম্মদ খলীল হারাস। ১৩৭৮ হিজরীতে কায়রোর-র আল-আজহার ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে বইটি প্রকাশিত হয়।





আহলে বায়াত (আঃ)-এর মতাবলম্বীদের দৃষ্টিতে শেখ সাদুক

শেখ সাদুক-এর আসল নাম আবু জাফর মুহাম্মদ বিন আলী বিন হুসাইন বিন বাবাওয়াহ কুম্মি। তিনি ৩৮১ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন। সাদুক একজন বিখ্যাত ইসলামী বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তাঁর লেখা বইয়ের সংখ্যা প্রায় ২০০টি।



আমরা এখানে তাঁর লেখা “তাওহিদ” বইটি নিয়ে আলোচনা করবো। এই বইটি সম্পাদনা করেছেন সৈয়দ হাশিম হুসাইনি তেহরানী। ১৩৮১ হিজরীতে তেহরান থেকে বইটি প্রকাশিত হয়।



আমরা প্রধানত এই দুইটি বই নিয়েই আলোচনা করবো। পাশাপাশি আমরা সহী বুখারী এবং সহী মুসলিম থেকেও কিছু উদ্ধৃতি দেবো। এছাড়াও আহলে বায়াত (আঃ)-এর মতাবলম্বীদের ভেতর থেকে মজলিসি (মৃত্যু ১১১১হিজরী) কর্তৃক সম্পাদিত বিহার উল আনওয়ার থেকেও উদ্ধৃতি দেবো।

চলবে.............

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.