![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মুয়াবিয়ার আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত পরিত্যাগকারী রাসুলের(সাঃ) শিয়া।শিয়া মানে অনুসারী।আমি আল্লাহর অনুসারী,রাসুলের(সাঃ) অনুসারী।ডঃ তিজানী সামাভী বলেন,শিয়ারা রাসুলের(সাঃ) সুন্নত পালন করছে।
অধ্যায় ৭
আল্লাহর “বাসস্থান”
মুসলিমদের মধ্যে যারা আল্লাহর শরীর ধারণ করাকে বিশ্বাস করেন
ধর্মীয় বিশ্বাসের মধ্যে এই ধারণাটা অনেক প্রাচীন হলেও মুসলিমদের মধ্যে, বিশেষ করে ওয়াহাবি ও সালাফিদের মধ্যে এই ধারণাটার প্রবল প্রভাব রয়েছে। প্রথমে আমরা এদের বিশ্বাস ও ধারণা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো। তারপর আহলে বায়াত (আঃ)-এর শিক্ষার সাথে সেগুলোকে তুলনা করবো।
যেহেতু আল্লাহর উপর তাঁরা মানুষের অনেক বৈশিষ্ট্যই আরোপ করেছেন, তাই তাঁরা আল্লাহর জন্য একটি বাসস্থানও নির্ধারণ করেছেন। এর উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে তাঁরা আরো একটি ধারণার জন্ম দেন যে আল্লাহ চলাফেরা করেন, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যান, স্থান পরিবর্তন করেন।
আল্লাহর বাসস্থান ও চলাফেরা সম্পর্কে খলিফাদের মতাবলম্বীদের বর্ণনা
১. আবু হুরায়রা বর্ণনা দিয়েছেন যে নবীজী (সঃ) বলেছেন: “রাতের কোনো এক অংশে, সম্ভবত শেষ তৃতীয়াংশে, আল্লাহ প্রথম বেহেশতে নেমে আসেন এবং ঘোষণা দেন: ‘কেউ কি এখন আমার কাছে প্রার্থণা করবে, যাতে তার প্রার্থণা পূরণ করতে পারি? কেউ কি কিছু চাইবে যাতে তাকে সেটা দিতে পারি? তাঁকে কে ধার দেবে, যে ম্বয়ংসম্পূর্ণ এবং সুবিচারক?”২৮
২. আবু হুরায়রার দেয়া এরকম আরেকটি বর্ণনায় হারুন বিন সাইদ যোগ করেছেন: “তারপর আল্লাহ তাঁর হাত বাড়িয়ে বলবেন, ‘তাঁকে কে ধার দেবে, যার কোনো অভাব নেই আর যে অত্যাচারী নয়?’ ”২৯
বুখারীও আবু হুরায়রার উদ্ধৃতি দিয়ে এই হাদীসগুলি তাঁর লেখা বইয়ের ‘তাওহিদ’, ‘দাওয়াত’ ও ‘তাহাজ্জুদ’ অধ্যায়গুলিতে উল্লেখ করেছেন। শুধু তিনি একাই নন। ইবনে মাজাহ, তিরমিজি এবং আবু দাউদও এই হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে এটাই প্রমান করতে চেয়েছেন যে আল্লাহ সশরীরে আকাশ থেকে নীচে নেমে আসেন।
৩. ইবনে খুজাইমাহ আবু হুরায়রার উদ্ধৃুতি দিয়ে বলেছেন:
“নবীজী (সঃ) বলেছেন: ‘সকাল এবং বিকেলের নামাজের সময় ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ায়। তখন একদল ফেরেশতা উপরে চলে যায়, আরেক দল পৃথিবীতে নেমে আসে। রাতে যেসব ফেরেশতা পৃথিবীতে ছিলো, আল্লাহ তাদের জিজ্ঞাসা করেন: ‘তোমরা চলে আসার সময় আমার ভৃত্যরা কোন অবস্থায় ছিলো?’ ফেরেশতারা উত্তর দেয়: ‘আমরা যখন পৃথিবীতে গিয়েছিলাম, তারা আপনার প্রার্থণা করছিলো। আর আমরা যখন চলে আসি, তখনও তারা আপনার প্রার্থণা করছিলো।’
এই হাদীসটা সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইবনে খুজাইমাহ বর্ণনা দেন:
“এই হাদীসটা পরিষ্কারভাবেই বলছে যে আল্লাহ বেহেশতের উপরে আছেন। সেজন্য ফেরেশতারা পৃথিবীতে এসে তারপর আবার উপরে তাঁর কাছে ফিরে যায়। যারা (জামিয়াহ) বিশ্বাস করে যে আল্লাহ বেহেশতে আছেন, আবার পৃথিবীতেও আছেন, তারা আসলে মিথ্যাবাদী। কারন তাদের ধারণা যদি সত্যি হতো, তাহলে ফেরেশতারা পৃথিবীতে বা নীচের স্তরে কোথাও আল্লাহর সাথে দেখা করতো। আল্লাহ এই জামিয়াহদের চিরকালের জন্য অভিশপ্ত করুন।”
দারামি-ও এই ব্যাখ্যাটিকে সমর্থন করেছেন। তিনি কোরানে উল্লিখিত “নাজালা” (যার আক্ষরিক অর্থ “নেমে আসা”) শব্দটাকে নিয়ে তাঁর যুক্তিটা খাড়া করেছেন। তিনি বলেছেন:
“কোরানের অনেক জায়গাতেই এরকম আয়াত পাওয়া যাবে। প্রত্যেকটা আয়াতই খুব পরিষ্কারভাবে বলছে যে আল্লাহ উপরের বেহেশত থেকে নীচের পৃথিবীতে এই পবিত্র কোরান পাঠিয়েছেন। তাদের (জামিয়াহ) বিশ্বাসের মতো আল্লাহ যদি সব জায়গায় থাকতেন, তাহলে তিনি বলতেন “আমি কোরান এনেছি” অথবা “আমি কোরান হাজির করেছি”। আয়াতগুলিতে একবারে স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছে অবতীর্ণ করার কথা। তার অর্থ আল্লাহ উপরে অবস্থান করছেন। এই আয়াতের আর কোনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই।”৩০
আল্লাহ যে আকাশের উপরে কোথাও অবস্থান করছেন, দারামি তাঁর এই বিশ্বাসটাতে একেবারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন। আমাদের নবীজী (সঃ)-এর মেরাজে গমন সম্পর্কে বলতে গিয়ে দারামি বলেন:
“নবীজী (সঃ) তাঁর উপরে ওঠার অভিজ্ঞতাটা বিশ্বাসীদের কাছে বলছিলেন যে কিভাবে তাঁকে এক বেহেশত থেকে আরেক বেহেশতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। এভাবে তাঁকে সবচেয়ে দূরে ‘সিদরাতুল মুনতাহা’-য় (যার আক্ষরিক অর্থ ‘সবচেয়ে দূরের একাকী গাছ’) নিয়ে যাওয়া হয়। যদি প্রতিপক্ষদের (জামিয়াহ) বিশ্বাসটাই সত্যি হতো যে আল্লাহ সর্বব্যাপী, তাহলে এই বোরাকের মাধ্যমে নবীজী (সঃ)-এর উপরে ওঠার কি প্রয়োজন ছিলো? নবীজী (সঃ)-কে কেনো বেহেশতে নিয়ে যাওয়া হলো? কার কাছে? আপনারা (জামিয়াহরা) বিশ্বাস করেন যে আল্লাহ সব জায়গায় আছেন, এমনকি নবীজী (সঃ)-এর ঘরের মধ্যেও আছেন, তাঁদের মধ্যে কোনো পর্দাও নেই। তাহলে নবীজী (সঃ) উপরে যাবেন কেনো?”
এই বর্ণনায় প্রভাবিত হয়ে খলিফাদের মতাবলম্বীরা কোরানের ব্যাখ্যা করেছেন এমনভাবে, যেনো আল্লাহরও মানুষের মতো শরীর আছে। আর দারামি তাঁর বইয়ে একটা অধ্যায়ের শিরোনাম দিয়েছেন “আল্লাহর নেমে আসা”। সেখানে তিনি বলেছেন:
“কোরানের অনেক আয়াত দিয়েই আল্লাহর ‘নেমে আসা’-কে প্রমান করা যায়। তার মধ্যে রয়েছে:
“তারা শুধুমাত্র এই প্রতীক্ষায় রয়েছে যে, আল্লাহ ও ফেরেশতাগন মেঘের ছায়ায় তাদের কাছে উপস্থিত হবেন।”
(সুরা আল বাকারা: আয়াত ২১০)
কোরানের আরো একটি আয়াত বলছে:
“এবং যখন তোমার প্রতিপালক উপস্থিত হবেন, এবং সারিবদ্ধভাবে ফেরেশতাগণ।”
(সুরা ফাজর: আয়াত ২২)
তারপর দারামি ব্যাখ্যা করেন:
“শেষ বিচারের দিনে সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের বিচার করার জন্য নেমে আসবেন। যিনি এভাবে একদিন বেহেশত থেকে নেমে আসতে পারেন, তিনি অবশ্যই প্রত্যেক রাতে এক বেহেশত থেকে আরেক বেহেশতে ভ্রমণ করতে পারেন।”
আহলে বায়াত (আঃ)-এর অনুসারীদের ব্যাখ্যা
আহলে বায়াত (আঃ)-এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী আল্লাহর চলাফেরা করা, স্থান পরিবর্তন, উপরে ওঠা বা নেমে আসা, এগুলো পুরোপুরি অপ্রাসঙ্গিক। আহলে বায়াত (আঃ)-এর অনুসারীরা বলেন যে এই বৈশিষ্ট্যগুলি থাকবে সৃষ্টি করা জিনিসের। যিনি সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা, তাঁর এই বৈশিষ্ট্যগুলি থাকবেনা।
ইমাম রিজা (আঃ)-কে একবার কোরানের এই আয়াতটা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলো:
“এবং যখন তোমার প্রতিপালক উপস্থিত হবেন, এবং সারিবদ্ধভাবে ফেরেশতাগণ।”
(সুরা ফাজর: আয়াত ২২)
ইমাম (আঃ) বললেন: “আল্লাহর উপর চলাফেরা করা, পৌঁছানো, প্রস্থান করা, উপস্থিত হওয়া বা অনুপস্থিত থাকার মতো বৈশিষ্ট্যগুলি আরোপ করা যাবেনা। এই আয়াতটা আল্লাহর কর্তৃত্বের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এখানে বলা হচ্ছে যে তাঁর আদেশেই সবকিছু উন্মোচিত হবে।”৩১
সাইয়্যিদ আবুল আজিম আল হাসানি একটি বর্ণনায় আবু ইব্রাহীম বিন আবি মাহমুদ-এর উদ্ধৃতি দিয়েছেন যে তিনি ইমাম রিজা (আঃ)-এর কাছে সেই হাদীসটি সম্পর্কে প্রশ্ন করেন, যেখানে বলা হয়েছে যে আল্লাহ প্রতি রাতে একেবারে নীচের বেহেশতে নেমে আসেন।
ইমাম (আঃ) বললেন: “আল্লাহ তাদের অভিশপ্ত করুন, যারা এই পবিত্র শব্দগুলির সঠিক অবস্থান পরিবর্তন করে। আল্লাহর কসম! এরা যেভাবে বলছেন, নবীজী (সঃ) কথাগুলো সেভাবে বলেননি। তিনি যা বলেছিলেন, সেটা হলো: ‘আল্লাহ, যিনি সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত, তার নির্দেশে একজন ফেরেশতা প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে সবচেয়ে নীচের বেহেশতে নেমে আসে, আর শুক্রবারের রাতে ফেরেশতা আসে প্রথম তৃতীয়াংশে। তারপর আল্লাহ সেই ফেরেশতাকে ঘোষণা করতে নির্দেশ দেন:
“কেউ কি আছে, যে প্রার্থণা করবে আর আমি তাকে দান করবো?
যে অনুশোচনা করবে আর আমি তাকে মাফ করে দেবো?
যে ক্ষমা প্রার্থণা করবে আর আমি তাকে ক্ষমা করে দেবো?
যে ভালো কাজ করতে চায়, সে সামনে আসো,
যে পাপ করতে চায়, সে নিবৃত্ত হও।”
“ফেরেশতা এই কথাগুলো সকাল হওয়ার আগে পর্যন্ত ঘোষণা করতে থাকে। তারপর ভোর হয়ে গেলে সেই ফেরেশতা বেহেশতে ফিরে যায়। এটাই হলো সঠিক বর্ণনা যেটা আমার পূর্বপুরুষগণ নবীজী (সঃ)-এর মুখে শুনেছেন।”৩২
নবীজী (সঃ)-এর মেরাজে গমণ
ইউনুস বিন আবদ আল রহমান বর্ণনা করেছেন যে তিনি ইমাম মুসা বিন জা’ফর আল খাদিম (আঃ)-কে প্রশ্ন করেছিলেন:
“আল্লাহ কেনো নবীজী (সঃ)-কে বেহেশতে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন? কেনো সেখান থেকে সবচেয়ে দূরের ‘সিদরাতুল মুনতাহা’-য় নিয়ে গেলেন? যখন তিনি নবীজী (সঃ)-কে সম্বোধন করে তাঁর সাথে কথা বললেন, তখন কেনো আলোর পর্দা সরালেন? কেনো তিনি এসব করলেন, যখন তাঁর উপর কোনো বাসস্থান আরোপ করা হয়না?”
ইমাম (আঃ) উত্তর দিলেন: “অবশ্যই আল্লাহর উপর কোনো বাসস্থান বা অবস্থান আরোপ করা যায়না। তিনি সময়ের অধীন নন! তিনি নবীজী (সঃ)-কে উপরে নিয়ে গিয়েছিলেন ফেরেশতাদের এবং যারা বেহেশতে আছেন তাদের সম্মানে, যাতে তারা সবাই নবীজী (সঃ)-কে সম্মান দেখাতে পারেন। এছাড়াও তিনি নবীজী (সঃ)-কে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর মহান সৃষ্টির কিছু অংশ দেখানোর জন্য, যাতে করে নবীজী (সঃ) পৃথিবীর মানুষকে সেই কথাগুলো বলতে পারেন। এরা যেভাবে আল্লাহর উপর মানুষের বৈশিষ্ট্য আরোপ করেছেন, ব্যাপারটা সেরকম নয়। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর! এরা যেভাবে তাঁর শরীক বানাচ্ছে, তিনি তার অনেক উপরে অবস্থান করেন।”৩৩
আবু বাসির-এর একটি বর্ণনায় ইমাম জা’ফর সাদিক (আঃ) তাওহিদ সম্পর্কে আহলে বায়াত (আঃ)-এর অবস্থান নিয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন:
“আল্লাহ, যিনি সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত, তাঁর উপরে কোনো বাসস্থান বা অবস্থান আরোপ করা যায়না। চলাফেরা করা, জড়তা, স্থান পরিবর্তন, এসব বৈশিষ্ট্যের কোনোটাই তাঁর উপরে আরোপ করা যায়না। কারন তিনিই হলেন সময়, স্থান, চলাফেরা, জড়তা, এসবের সৃষ্টিকর্তা। তারা যা বলে, আল্লাহ সেগুলোর চাইতে অনেক উপরে।”৩৪
ইমাম জয়েন আল আবেদিন (আঃ) একবার তাঁর ছেলে জায়েদ-এর প্রশ্নের উত্তরে কোরানের কিছু আয়াতের সঠিক ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। এই আয়াতগুলির আক্ষরিক অর্থ গ্রহন করলে মনে হতে পারে, আল্লাহর একটি অবস্থান বা বাসস্থান আছে। আসুন আমরা আয়াতগুলি পর্যালোচনা করি।
১. নবী মুসা (আঃ) বললেন:
“হে আল্লাহ! আমি তাড়াতাড়ি তোমার কাছে আসলাম, তুমি সন্তুষ্ট হবে সেইজন্য।”
(সুরা তা-হা: আয়াত ৮৪)
২. “তোমরা আল্লাহর দিকে ধাবিত হও।”
(সুরা আল যারিয়াত: আয়াত ৫০)
“ইমাম (আঃ) বলেন: এই আয়াতগুলিতে এমন কোনো জায়গার কথা বলা হয়নি যে মুসা (আঃ) একটা জায়গায় তাঁর প্রভুর সাথে দেখা করতে গেছেন, অথবা আমরা একটা জায়গার উদ্দেশ্যে দৌঁড়ানো শুরু করবো। এগুলো হলো বাক্যালঙ্কার যার মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে আল্লাহর সন্তষ্টি লাভের জন্য তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে যাওয়া।”
তারপর তিনি আরো উদাহরণ দেন:
১. “ফেরেশতা এবং রুহ আল্লাহর দিকে উর্ধ্বগামী হয়....”
(সুরা আল মা‘আরিজ: আয়াত ৪)
২. “পবিত্র বাণীসমূহ তাঁর দিকেই উত্থিত হয়, এবং তিনি সৎকর্মকে উন্নীত করেন।”
(সুরা ফাতির: আয়াত ১০)
“এই দুই আয়াতেই আক্ষরিক অর্থ ধরলে আল্লাহ উপরে অবস্থিত বেহেশতের মধ্যে কোনো জায়গার কথা বোঝাচ্ছেন। এই ‘উপরের দিকে যাওয়া’- এটার সমার্থক হলো - ‘আল্লাহর পথে অগ্রসর হওয়া’।৩৫
পবিত্র কোরানে এমন অনেক সম্বন্ধসূচক পদ ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে মূল বিশেষ্যটাকে উল্লেখ করা হয়নি। জারকাশি তাঁর লেখা “আল বুরহান ফি উলুম আল কুরআন” বইটিতে লিখেছেন:
“বলা হয়ে থাকে যে কোরানে এরকম প্রায় হাজারখানেক আয়াত আছে যেখানে সম্বন্ধসূচক পদের মূল বিশেষ্যটা উল্লেখ করা হয়নি। আরবীতে বাক্য লেখার এই রীতিটা বিশেষজ্ঞরাও মানেন এবং তারাও প্রয়োজনে এভাবে লেখেন।”
উদাহরণ হিসেবে আমরা কোরানের একটা আয়াত দেখতে পারি:
“যে জনপদে ছিলাম, তাকে জিজ্ঞাসা করো ...”
(সুরা ইউসুফ: আয়াত ৮২)
এই আয়াতে যে শব্দটা উল্লেখ করা হয়নি, সেটা হলো “আহল”, অর্থাৎ “মানুষ” বা “অধিবাসী”। আল্লাহ এই আয়াতটির মাধ্যমে যেটা বোঝাতে চেয়েছেন, সেটা হলো: “যে জনপদে ছিলাম, তার অধিবাসীদের জিজ্ঞাসা করো।”
এধরনের বাক্যালঙ্কার আরবী সাহিত্যে প্রচুর পরিমানে ব্যবহার করা হয়, আর যেকোনো বুদ্ধিমান পাঠক এর সঠিক অর্থটা বুঝতে পারবেন। এই ধরনের বাক্যালঙ্কারের কথা বলে ইমাম রিজা (আঃ) নীচের আয়াতটির ব্যাখ্যা দিলেন:
“এবং যখন তোমার প্রতিপালক উপস্থিত হবেন .................”
(সুরা ফাজর: আয়াত ২২)
এখানে যে বিশেষ্যটা উল্লেখ করা হয়নি, সেটা হলো “আমর”, যার অর্থ “বিধান” বা “নির্দেশ”। তাহলে আয়াতটির অর্থ দাঁড়ায়: “এবং যখন তোমার প্রতিপালকের বিধান উপস্থিত হবে।”
ইমাম (আঃ) এই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কোরানের দুইটি আয়াতের সাহায্য নিয়েছিলেন, যেখানে “আল্লাহর উপস্থিত হওয়া”-এর সাথে “আমর” শব্দটা উল্লেখ করা হয়েছে।
১. “হে ইবরাহিম! এটা থেকে বিরত হও! তোমার প্রতিপালকের বিধান এসে পড়েছে। তাদের প্রতি আসবে শাস্তি, যা অনিবার্য।”
(সুরা হুদ: আয়াত ৭৬)
২. “আমি তাদের প্রতি জুলুম করিনি, তারাই নিজেদের প্রতি জুলুম করেছিলো। যখন তোমার প্রতিপালকের বিধান আসলো, তখন তারা যে ইলাহসমূহের ইবাদত করতো, তারা তাদের কোনো কাজেই আসলোনা। তারা ধ্বংস ব্যতীত তাদের অন্য কিছু বৃদ্ধি করলোনা।”
(সুরা হুদ: আয়াত ১০১)
এই দুইটা আয়াতেই “আসলো”-এই ক্রিয়াটির সাথে রয়েছে সম্বন্ধসূচক পদ “আমরু রাব্বিকা” অর্থাৎ “তোমার প্রতিপালকের বিধান”। এই আয়াতগুলি থেকেই বোঝা যায় যে “প্রতিপালক আসলেন”- এই কথাটার অর্থ আসলে “প্রতিপালকের বিধান বা নির্দেশ বা আদেশ আসলো।”
“আল্লাহর বাসস্থান আছে” এই ধারণার একটি সাধারণ প্রত্যুত্তর
ইমাম জাফর সাদিক (আঃ) বলেছেন: “আল্লাহ, যিনি সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত, তাঁর উপর অবস্থান, সময়, বা চলাফেরার কোনো বৈশিষ্ট্য আরোপ করা যায়না। এই সবকিছু আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন। তারা যা অনুমান করে, আল্লাহ তার চাইতে অনেক উপরে।”
খলিফাদের মতাবলম্বীরা, বিশেষ করে ওয়াহাবি ও সালাফিরা, তারা আবু হুরায়রার বর্ণনাকে সহী হাদীস বলে গ্রহণ করেছেন। তারা মনে করেন যে আল্লাহর একটা শরীর আছে, আর তিনি একটা সিংহাসনে বসে আছেন। তারপর তারা আরো মনে করেন যে তাদের প্রতিপক্ষ, যারা বিশ্বাস করেন আল্লাহ সব জায়গায় আছেন, এদের বিশ্বাসটা খুবই অযৌক্তিক।
খলিফাদের মতাবলম্বীরা প্রথমে আল্লাহর জন্য একটি সিংহাসন বা চেয়ারের কথা কল্পনা করেছেন। তারপর তাঁরা আল্লাহর জন্য একটা পর্দাও উদ্ভাবণ করেছেন, যার পেছনে আল্লাহ থাকবেন!! আমরা পরবর্তী অধ্যায়গুলোতে এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করবো।
অধ্যায় ৮
পর্দার আড়ালে আল্লাহ!
দারামি তাঁর লেখা বইতে জামিয়াহদের যুক্তি খন্ডণ করতে গিয়ে পুরো একটা অধ্যায় লিখে ফেলেছেন, আর তার শিরোনাম দিয়েছেন: “আল ইহতিজাব”। তিনি সেখানে নবীজী (সঃ)-এর তিনটি হাদীসের বর্ণনা দেন:
১. “জাবির আনসারী বলেছেন: ‘নবীজী (সঃ) বলেছেন যে আল্লাহ সবসময় পর্দার আড়াল থেকে সবার সাথে কথা বলেন।’ ”
এই হাদীসটার সাথে প্রাসঙ্গিক কোরানের আয়াতটা হলো:
“মানুষের এমন মর্যাদা নেই যে আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন ওহীর মাধ্যম ছাড়া, অথবা পর্দার অন্তরাল ছাড়া।”
(সুরা আল শুরা: আয়াত ৫১)
এখানে তারা আক্ষরিক অর্থটা গ্রহণ করেছেন যেটা হলো ‘পর্দা’ বা এক টুকরো কাপড়, যেটা আল্লাহকে মানুষদের থেকে আড়াল করে রেখেছে।
২. আবু মুসা আশারি বর্ণনা করেছেন যে নবীজী (সঃ) বলেছেন: “আল্লাহর পর্দা হলো আগুন!”
৩. জুরারাহ বিন আওফা বর্ণনা করেছেন:
“নবীজী (সঃ) জিবরাইলকে প্রশ্ন করলেন সে আল্লাহকে দেখেছে কিনা। জিবরাইল উত্তর দিলো: ‘হে মুহাম্মদ! আমার এবং তাঁর মধ্যে সত্তরটি আলোর পর্দা রয়েছে। প্রথম পর্দাটির কাছাকাছি গেলেই আমি পুড়ে যাবো।’ ”
এই হাদীসগুলি ছাড়াও আবদুল্লাহ বিন ওমর একটা বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন:
“আল্লাহ তাঁর ভৃত্যদের কাছ থেকে আগুন, অন্ধকার ও আলোর তৈরী একটা পর্দার আড়ালে রয়েছেন।”
দারামি তাঁর উপসংহারে বলেন:
“খলিফাদের মতাবলম্বীরা এখানে উল্লিখিত ‘হিজাব’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ গ্রহণ করেছেন। কোরানের বিভিন্ন আয়াতেও এই শব্দটার উল্লেখ আছে।”
উদাহরণস্বরূপ, সুরা আল শুরা-র যে আয়াতটাতে বলা হচ্ছে “পর্দার অন্তরাল ছাড়া”- সেখানে আসলে রূপকার্থে বোঝানো হচ্ছে যে আল্লাহ মানুষের সাথে এমনভাবে কথা বলেন যেখানে বক্তাকে দেখা যায়না। আল্লাহ এবং তাঁর নবী-রাসুলদের ভেতরে সত্যিকারের কোনো পর্দা নেই। কারন তাহলে আল্লাহর একটা অবস্থানের কথা বলা হবে। ইসলামে আল্লাহর ধারণার সাথে এই বিশ্বাসটির কোনো সামঞ্জস্য নেই।
এরকম আরেকটি আয়াত বলছে:
“না, অবশ্যই সেইদিন তারা তাদের প্রতিপালক হতে পর্দার আড়ালে থাকবে।”
(সুরা আল মুতাফফিফিন: আয়াত ১৫)
ইমাম ফখরুদ্দিন রাজি তাঁর তাফসিরে (৩১/৯৬ ইজিপশিয়ান পাবলিকেশনস) বলেছেন:
“এটা বুঝতে পারা গুরুত্বপূর্ণ যে এই আয়াতটা বলছে, অবিশ্বাসীরা আল্লাহকে দেখতে পাবেনা। তারা পর্দার আড়ালে থাকবে।”
তারপর তিনি মাকাতিল-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন:
“এই পর্দা দিয়ে বোঝানো হচ্ছে যে, পুনরুত্থানের পর অবিশ্বাসীরা আল্লাহকে দেখতে পাবেনা। তবে বিশ্বাসীরা অবশ্যই আল্লাহকে দেখতে পাবে।”
মালিকি মাজহাবের ইমাম মালিক বিন আনাস বলেছেন:
“যেহেতু আল্লাহ পর্দার পেছনে থাকবেন এবং তাঁর শত্র“দের আড়ালে থাকবেন; তিনি তাঁর বন্ধুদের কাছে তাঁর মর্যাদা প্রকাশ করবেন যাতে তারা তাঁকে দেখতে পারে।”
এছাড়াও মুহাম্মদ বিন ইদরিস, যিনি ইমাম শাফি নামেই বেশি পরিচিত, তিনি বলেছেন:
“যেহেতু আল্লাহ তাঁর ক্রোধের কারনে তাঁর শত্র“দের কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখবেন, এখানে এটাও পরিষ্কার যে তিনি তাঁর বন্ধুদের সামনে তাঁর সন্তষ্টির কারনে নিজেকে প্রকাশ করবেন।”
ইবনে কাসিরও তাঁর তাফসিরে ইমাম শাফি’র এই ব্যাখ্যাটাই গ্রহণ করেছেন।
এবারে দেখা যাক আহলে বায়াত (আঃ) কিভাবে এর ব্যাখ্যা করেছেন।
কোনো পর্দা কি আছে? আহলে বায়াত (আঃ)-এর ব্যাখ্যা:
১. শেখ সাদুক তাঁর লেখা ‘তাওহিদ’ বইটিতে হারিথ আল আওয়ার-এর বর্ণনা করা একটি গল্প বলেছেন। তিনি বলেছেন যে আলী বিন আবি তালিব (আঃ) একদিন বাজারে ঢোকার সময় দেখলেন যে এক লোক তাঁর দিকে পিঠ ফিরিয়ে বলছে: “তাঁর নামে শপথ নিয়ে বলছি যিনি সাত আসমানের উপর পর্দার আড়ালে রয়েছেন।”
তখন আলী বিন আবি তালিব (আঃ) সেই লোকের পিঠে ধাক্কা দিয়ে বললেন: “সাত আসমানের উপর পর্দার আড়ালে কে রয়েছে?”
সেই লোক উত্তর দিলো: “হে আমিরুল মুমিনিন! আমি বোঝাতে চাইছি যে আল্লাহ পর্দার আড়ালে রয়েছেন।”
আলী (আঃ) বললেন: “এটা খুবই ভুল ধারণা। আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির থেকে কোনো পর্দা বা কাপড়ের আড়ালে নেই। তিনি সব জায়গায় আছেন!”
তখন সেই লোকটা আলী বিন আবি তালিব (আঃ)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করলো সে যে পাপ করেছে, এজন্য তার কোনো প্রায়শ্চিত্ত করা প্রয়োজন কিনা।
আলী (আঃ) বললেন: “যদি তুমি স্পষ্টভাবে বুঝতে পারো যে তিনি সব জায়গাতেই তোমার সাথে আছেন, তাহলে সেটাই হবে তোমার প্রায়শ্চিত্ত!”
সেই লোক আবারো বললো: “আমি কি প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য গরীব লোকদের খাইয়ে দেবো?”
আলী (আঃ) বললেন: “সেটার কোনো প্রয়োজন নেই। কারন তুমি যার নামে শপথ করছিলে, সে তোমার প্রতিপালক নয়।”
পর্যালোচনা
ক. উপরের গল্পটাতে আমরা দেখলাম যে এক লোক একবার শপথ নিয়েছিলো যেটা ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে যায়। ইমাম আলী (আঃ) তার ভুলটা ধরিয়ে দিলেন, এবং তার কাছে তাওহিদের সঠিক ব্যাখ্যাটা তুলে ধরলেন। তিনি সেই লোককে বোঝালেন যে আল্লাহ কোনো পর্দার আড়ালে অবস্থান করছেননা। তিনি সব জায়গাতেই আছেন।
খ. যখন সেই লোক ভুল শপথ করার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করতে চাইলো, ইমাম আলী (আঃ) তখন তাকে বললেন যে তার শপথটা তো আল্লাহকে উদ্দেশ্য করে ছিলোনা। সেজন্য তার প্রায়শ্চিত্ত করার প্রয়োজন নেই।
২. শেখ সাদুক তাঁর ‘তাওহিদ’ বইটিতে উল্লেখ করেছেন:
“ইমাম রিজা (আঃ)-কে একবার কোরানের একটি আয়াত নিয়ে প্রশ্ন করা হলো:
“না, অবশ্যই সেইদিন তারা তাদের প্রতিপালক হতে পর্দার আড়ালে থাকবে।”
(সুরা আল মুতাফফিফিন: আয়াত ১৫)
ইমাম (আঃ) উত্তর দিলেন: ‘কোনো বিশেষ জায়গাকে আল্লাহর উপর এভাবে আরোপ করা যাবেনা যে তিনি সেখানে অবস্থান করেন, আর সেখানে একটি পর্দা দিয়ে তিনি নিজেকে তাঁর সৃষ্টি থেকে আলাদা করে রাখেন। এই আয়াতটার অর্থ হলো:
“তারা তাদের প্রতিপালকের আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হবে।”
তারপর ইমাম (আঃ)-কে আরো একটি আয়াত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলো:
“তারা শুধুমাত্র এই প্রতীক্ষায় রয়েছে যে, আল্লাহ ও ফেরেশতাগন মেঘের ছায়ায় তাদের কাছে উপস্থিত হবেন।”
(সুরা আল বাকারা: আয়াত ২১০)
ইমাম (আঃ) বললেন: “এই আয়াতটির আক্ষরিক অর্থটা গ্রহণ করা যাবেনা। যে জিনিসটা মেঘের ছায়ায় উপস্থিত হতে পারে, সেটা হলো আল্লাহর আদেশ বা তাঁর শাস্তি। এটা এক ধরনের বাক্যালঙ্কার যেখানে সম্বন্ধবাচক পদের মূল বিশেষ্যটাকে উল্লেখ করা হয়নি।
তুলনামূলক পর্যালোচনা
পবিত্র কোরানে সুরা আল নিসা-য় আল্লাহ বলেছেন:
“তারা মানুষ হতে গোপন করে, কিন্তু আল্লাহ হতে গোপন করতে পারেনা। অথচ তিনি তাদের সঙ্গেই আছেন, রাতে যখন তারা এমন বিষয়ে পরামর্শ করে, যেটা তিনি পছন্দ করেননা। এবং তারা যা করে, তা সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর জ্ঞানের আয়ত্তে।”
(সুরা আল নিসা: আয়াত ১০৮)
এছাড়াও সুরা মুজাদালা-য় উল্লেখ করা হয়েছে:
“তুমি কি লক্ষ্য করোনা, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে আল্লাহ তার সবকিছুই জানেন? তিন ব্যক্তির মধ্যে এমন কোনো গোপন পরামর্শ হয়না যাতে চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে তিনি উপস্থিত থাকেননা এবং পাঁচ ব্যক্তির মধ্যেও হয়না যেখানে ষষ্ঠজন হিসেবে তিনি উপস্থিত থাকেননা। তারা এর চাইতে কম হোক বা বেশি হোক, তিনি তাদের সঙ্গেই আছেন, তারা যেখানেই থাকুক না কেনো।অতঃপর তারা যা করে, তিনি তাদেরকে কেয়ামতের দিন সেটা জানিয়ে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সকল বিষয়ে সম্যক অবগত।”
(সুরা আল মুজাদালা: আয়াত ৭)
তাহলে আল্লাহর পর্দা কোথায়? কোথায় তাঁরা এই ধারণাটা পেলেন যে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টি থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখবেন? এই ধরনের বর্ণনা থেকেই খলিফাদের মতাবলম্বীদের মনে হয়েছে যে কেয়ামতের দিন আল্লাহ সশরীরে উপস্থিত হবেন!
চলবে........
২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৮
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: কি বুঝাতে চাইছেন আপনি নিজে বুঝছেন কিনা জানিনা। অনেকগুলো আয়াত আর হাদিস এমন কি অনেগুলো ইমাম এর উদ্বৃতির সাথে দেখলাম একটা কি দুইটা আয়াত এর ব্যাখ্যা মিলালেন কিন্তু ভাল কোন তাফসিরের রেফারেন্স ও নাই ।আলি (রাঃ) ই হয় জানি, যখন আঃ দেখতে পেলাম তখন একটু বুঝতে কষ্ট হল।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫০
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: বেশ সময় নিয়ে পড়লাম
অনেক তথ্য নির্ভর পোষ্ট
ভাললাগা +