![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মুয়াবিয়ার আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত পরিত্যাগকারী রাসুলের(সাঃ) শিয়া।শিয়া মানে অনুসারী।আমি আল্লাহর অনুসারী,রাসুলের(সাঃ) অনুসারী।ডঃ তিজানী সামাভী বলেন,শিয়ারা রাসুলের(সাঃ) সুন্নত পালন করছে।
উপসংহার
তাওহিদ: ইসলামী বিশ্বাসের মৌলিক এবং অপরিহার্য শর্ত
খলিফাদের মতাবলম্বীরা আল্লাহকে যেভাবে উপলব্ধি করেন
১. আল্লাহর মানুষের মতো মুখমন্ডল, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং ইন্দ্রিয় আছে!
২. তিনি একটি সিংহাসন দখল করে থাকেন এবং তিনি আকারে এতো বিশাল যে তাঁর আসনের সবদিকেই চার আঙ্গুল বেশি বি¯তৃত থাকেন।
৩. এই সিংহাসনটি আটটা পাহাড়ী ছাগলের পিঠের উপর অবস্থিত।
৪. কেউ উটের পিঠে চড়লে যেরকম শব্দ হয়, এই সিংহাসনও আল্লাহর ওজনের ভারে সেরকম শব্দ করে।
৫. কখনো কখনো তিনি সবচেয়ে নীচের স্তরের বেহেশতে নেমে আসেন এবং তাঁর সৃষ্টিকে প্রার্থণা করতে উৎসাহিত করেন।
৬. তিনি শেষ বিচারের দিন দর্শন দেবেন। প্রথমে অপরিচিত রূপ নিয়ে, তারপর পরিচিত রূপ নিয়ে।
৭. বিশ্বাসীদের মধ্যে কয়েকজন তাঁকে চিনতে পারবে, যখন তিনি তাঁর পায়ের গোছা উন্মুক্ত করবেন।
৮. আল্লাহ বিশ্বাসীদের প্রত্যেকের সাথে আলাদাভাবে দেখা করবেন, সাক্ষাত করবেন এবং বেহেশতে তাদের সাথে কথা বলবেন।
ইবনে খুজাইমাহ হলেন এই মতাবলম্বীদের মাঝে একজন শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ। তিনি এইসব ধারণাকে সমর্থন করে, এমন কিছু হাদীস সংকলন করে তাঁর বইতে উল্লেখ করেেেছন, আর সেই বইটার নাম দিয়েছেন ‘তাওহিদ’!
বুখারী তাঁর লেখা “সহী বুখারী”-তে এমন কিছু হাদীস উল্লেখ করেছেন, আর সেই অধ্যায়টার নাম দিয়েছেন ‘তাওহিদের অধ্যায়’!
এছাড়া মুসলিমও তাঁর “সহী মুসলিম”-এ এই হাদীসগুলির উদ্ধৃতি দিয়ে অধ্যায়টির নাম দিয়েছেন ‘ঈমানের অধ্যায়’।
এইসব হাদীসের উৎস প্রধানত আবু হুরায়রা এবং তাঁর ইহুদী গুরু কা’ব আল আহবার। তাঁদের দু’জনকেই ইহুদী বিশ্বাসগুলি দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে। সেজন্য আমরা বলতে পারি যে এই হাদীসগুলি আসলে ইসরাইলিয়াত-এর প্রভাবে পড়েছে। খলিফাদের মতাবলম্বীরা আল্লাহর শরীর ধারণ করার এই মতবাদটিকে পৃষ্ঠপোষকতা করে গেছেন। আর তাঁরা কোরানের বেশির ভাগ আয়াতেরই আক্ষরিক অর্থ করেছেন, যেখানে রূপক অর্থের গুরুত্বটা বেশি।
আহলে বায়াত (আঃ)-এর অনুসারীদের ব্যাখ্যা
আহলে বায়াত (আঃ) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে আল্লাহর সদৃশ কিছুই নেই। তিনি এক পরম সত্ত্বা। তাঁর কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বা ইন্দ্রিয় নেই। কোনো অবস্থান বা সীমাবদ্ধতা তাঁর উপর আরোপ করা যায়না।
আহলে বায়াত (আঃ)-এর প্রথম থেকে অষ্টম ইমাম পর্যন্ত প্রত্যেকেই অনেক কষ্ট আর যন্ত্রণা সহ্য করেও সেইসব হাদীসগুলিকে সনাক্ত করে গেছেন যেগুলো বিকৃত অথবা মিথ্যাভাবে নবীজী (সঃ)-এর উপর আরোপ করা হয়েছে। তাঁরা আরবী ভাষা ও সাহিত্যে ব্যবহৃত ব্যাকরণের আলোকে কোরানের আয়াতগুলির সঠিক অর্থ আমাদের শিখিয়েছেন। আর তাঁদের এই কথাগুলো বিশ্বস্ততার সাথে লিপিবদ্ধ করে গেছেন আহলে বায়াত (আঃ)-এর বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা। যেমন, শেখ সাদুক লিখেছেন ‘তাওহিদ’ আর আল মজলিসি লিখেছেন ‘বেহার উল আনওয়ার’।
আহলে বায়াত (আঃ)-এর ইমামগণ বেশ কিছু নিয়ম ঠিক করে দিয়েছেন, যার মাধ্যমে আমরা পবিত্র কোরানের আয়াতগুলি বুঝতে পারবো, আর নবীজী (সঃ)-এর হাদীসগুলি যাচাই করতে পারবো।
এভাবে আহলে বায়াত (আঃ), তাঁদের সত্যিকারের সহচরগণ এবং পরবর্তী সময়ের বিশেষজ্ঞদের অক্লান্ত প্রচেষ্টা আর ব্যাখ্যার কারনেই ইসলাম ধর্মে তাওহিদের মূল বিশ্বাসটাকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। এতে করে ইসলামের মতবাদটাও বিশুদ্ধ রয়েছে।
এইসব শিক্ষার ফলে মুসলিমদের ভেতরে নতুন প্রজন্মের আবির্ভাব হয়েছে যারা আল্লাহকে পরিষ্কারভাবে উপলব্ধি করতে পারে, বিভিন্ন নবী-রাসুলদের সত্যিকারের অবস্থান অনুভব করতে পারে এবং কোরান ও হাদীসের সঠিক অর্থ বুঝতে পারে। এই মতবাদের অনুসারীদের আমরা বলছি ‘আহলে বায়াত (আঃ)-এর মতাবলম্বী’। যারা আহলে বায়াত (আঃ)-এর মতবাদ থেকে ভিন্ন মত পোষণ করে, তাদেরকে আমরা বলছি ‘খলিফাদের মতাবলম্বী’।
আহলে বায়াত (আঃ)-এর পথ অনুসরণ করতে পেরে আমরা সৌভাগ্যবান। অবশ্যই তাঁরা আমাদের বহু দেবতার উপাসনা থেকে রক্ষা করেছেন। সেজন্য আমরা ‘জিয়ারাত এ জামেয়া’ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই:
“আপনাদের সালাম, নবুয়তের ঘরের সদস্যদের ও জ্ঞানের ভান্ডারের ধারকদের।
সালাম তাদের, যারা সত্যিকারের নির্দেশনার নেতা, যারা অন্ধকারে উজ্জ্বল আলোর শিখা।
সালাম তাদের, যারা স্বর্গীয় জ্ঞানের ধারক।
সালাম তাদের, যারা আল্লাহর ইবাদত করেন, যারা তাঁর তাওহিদে বিশুদ্ধ।
আল্লাহ আপনাদেরকে মনোনীত করেছেন তাঁর পথের সাহায্যকারী, তাঁর আসমানী কিতাবের ব্যাখ্যাকারী এবং তাঁর তাওহিদের স্তম্ভ হিসেবে।
আপনারাই মানুষকে তার প্রতিপালকের পথে নিয়ে আসেন জ্ঞান ও সদুপদেশ দ্বারা।
যতোদিন বেঁচে থাকি, আল্লাহ আমাকে আপনাদের বন্ধুত্ব, আপনাদের ভালোবাসা এবং আপনাদের ধর্মে অবিচলিত রাখুন।
এবং আমি যেনো আপনাদের অনুসরণ করতে পারি, আপনাদের পথে হাঁটতে পারি, আপনাদের নির্দেশনায় উপকৃত হতে পারি।”
টীকা
১. তাফসির, ইবনে কাসির- ৪/১৭
২. তাবারি (ইউরোপিয়ান এডিশন) -১/৬২-৬৩
৩. তাকফি-র লেখা আল গারাত এবং ইবনে আবিল হাদিদ-এর লেখা আশারহে নাজুল বালাগাহ
৪. মসনদ এ আহমাদ
৫. দাহাবি’র লেখা তাজকিরাতুল হুফফাজ
৬. তারিখ ইবনে কাসির - ৮/১০৯
৭. উসুদ আল গাবাহ - ৩/২৩৪ এবং ফাতহুল বারি - ১/১৬৬
৮. মসনদ আহমাদ হাম্বল - ২/১৯৫,২০২,২০৩,২০৯
৯. ওয়াফত আল আইয়ান
১০. তারিক এ বাগদাদ
১১. জেনেসিস ২, অনুচ্ছেদ ১৭
১২. জেনেসিস ৩
১৩. জেনেসিস ৩২
১৪. জোশুয়া ১১
১৫. সহী মুসলিম - পৃষ্ঠা ২০১৬, ২০১৭
১৬. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ১৫২
১৭. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ১৪৯
১৮. এই তিনটি অর্থ রাগিব-এর লেখা মুফরাদাতুল কুরআন থেকে নেয়া হয়েছে।
১৯. ইবনে খুজাইমাহ-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ৪২
২০. ইবনে খুজাইমাহ-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ৫৩
২১. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ১৫৩
২২. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ১৫৩-১৫৪
২৩. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ১৬০-১৬১
২৪. সুরতী-র তাফসির - ৬/২৫৪
২৫. সুন্নান আবু দাউদ - ৪/২৩১, সুন্নান ইবনে মাজাহ - ১/৬৯, মসনদ আহমাদ হাম্বল - ১/২০৭
২৬. মাকাতিলের তাফসির -১/১২২
২৭. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ৩২৭, ৩২৮
২৮. সহী মুসলিম - পৃষ্ঠা ৫২২
২৯. সহী মুসলিম - পৃষ্ঠা ৫২২
৩০. দারামি-র লেখা আল রাদ আলা আল জামিয়াহ - পৃষ্ঠা ২৪, ২৬, ২৭
৩১. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ১৬২
৩২. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ১৭৬
৩৩. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ১৭৫
৩৪. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ১৮৩-১৮৪
৩৫. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ
৩৬. ইবনে খুজাইমাহ-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ২০২
৩৭. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ১০৯
৩৮. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ১১০-১১২
৩৯. দারামি-র লেখা আল রাদ আলা আল জামিয়াহ - পৃষ্ঠা ৫৩
৪০. তাবারি-র তাফসির - ১১/৭৩, ৭৬ এবং সুরতী-র তাফসির - ৩/৩০৫, ৩০৬
৪১. সহী মুসলিম - পৃষ্ঠা ১৬৩, ইবনে মাজাহ-এর সুন্নান - ১/৬৭, মসনদ এ আহমাদ - ৪/৩৩২, ৩৩৩, তাবারী-র তাফসির - ১১/৭৫, সুরতী-র তাফসির - ৩/৩০৫
৪২. তাফসির কাবীর - ১৭/৭৮, ৭৯
৪৩. আল দার আল মনসুর - ৬/২৯২
৪৪. সাইয়্যিদ কুতুবের লেখা ফি জিলাল আল কুরআন (কায়রো থেকে প্রকাশিত প্রথম সংস্করণ) - ২৯/২০৮-২১০
৪৫. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ১১৭-১১৮
৪৬. সাদুক-এর লেখা তাওহিদ - পৃষ্ঠা ১১৬
শেষ
©somewhere in net ltd.