নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপির মোদিপ্রেমে নাখোশ হেফাজত

২৯ শে মে, ২০১৪ সকাল ৭:৪৬

বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং ২০০২ সালে হাজার-হাজার মুসলমানের প্রাণঘাতী গুজরাট-দাঙ্গার নেপথ্য নায়ক হিসেবে অভিযুক্ত ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল হিসেবে পরিচিত তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। সদ্য অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদি বলেছিলেন, তার দল ক্ষমতায় গেলে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণ করা হবে; ভারতে অভিবাসী বাংলাদেশিদের স্যুটকেসসহ সে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হবে। সেই মোদির দল রাষ্ট্রক্ষমতায় আসায় বিএনপির অতি উল্লাসে নাখোশ কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামসহ দেশের ধর্মভিত্তিক দলগুলো। বিএনপির জোটবন্ধু ও স্বজন হিসেবে পরিচিত এসব দলের শীর্ষনেতাদের মতে, মুসলমাননিধনের রক্তের দাগ যার হাতে এখনও লেগে আছে, তার বিজয়ে বিএনপির উল্লাস মুসলমানদের হেয় করারই নামান্তর। এ কারণে বিএনপির প্রতি অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে কওমিভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে।

মোদি ও তার দলের জয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে হেফাজতের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতা ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার সহসভাপতি শায়খুল হাদিস আল্লামা আশরাফ আলী বলেন, ইসলামের দৃষ্টিতে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর চড়াও হওয়া পুরোপুরি নিষেধ। মোদি বাবরি মসজিদ ভেঙে ইসলাম ও মানবতার দৃষ্টিতে ভয়াবহ অন্যায় করেছিলেন। এবারও নির্বাচনি প্রচারণাকালে তিনি বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের ঘোষণা দেন। তাই ধারণা করা যায়, তিনি তার আগের অবস্থান থেকে সরে আসেননি। এসব অন্যায় কাজ সত্ত্বেও তার প্রতি যারা দুর্বলতা দেখাচ্ছেন, কিংবা তার বিজয়ে পরম উল্লাস করছেন, তারা নিঃসন্দেহে গর্হিত কাজ করছেন। এটি আপত্তিজনক।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি ও হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরী শাখার আমির আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী এ বিষয়ে বলেন, মোদির বিজয়ে কারুরই উল্লসিত কিংবা বিমর্ষিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। কারণ প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে ভারত তাদের স্বার্থ থেকে অতীতে একচুলও নড়েনি, ভবিষ্যতেও নড়বে না। তবে তিনি এ-ও মনে করেন, রাজ্যের পরিবর্তে যেহেতু বর্তমানে পুরো দেশের দায়িত্বভার মোদির হাতে, সেহেতু তার আগের অবস্থান পরিবর্তিত হতেও পারে।

হেফাজতের নীতিনির্ধারণী নেতা ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব আল্লামা জাফরুল্লাহ খান বলেন, যাদের হাত মুসলমানের রক্তে রঞ্জিত, কণ্ঠে এখনও রামমন্দির নির্মাণের স্বপ্নকল্পনা, তাদের বিজয়ে উল্লসিত হওয়ার ন্যূনতম কারণও নেই। যারা উল্লসিত হয়েছেন, তারা কোনও না কোনওভাবে গুজরাট-দাঙ্গায় মুসলমানদের প্রাণহানিতে নিশ্চয় খুশি হয়েছিলেন। নয়তো মোদির বিজয়ে তারা উল্লসিত হবেন কেন?

জাফরুল্লাহ খানের মতে, মোদির বিজয় সাক্ষ্য দেয়, ভারতের নাগরিকরা এখনও সাম্প্রদায়িকতাকে লালন করে, বিশ্বাস করে। বাংলাদেশের মতো অসাম্প্রদায়িক চেতনায় তারা বলীয়ান হতে পারেনি। সাম্প্রদায়িক মোদির উত্থানে যারা খুশি, বুঝতে হবে তারাও আচরণগত দিক থেকে সাম্প্রদায়িক।

বাবরি মসজিদ ভাঙার প্রতিবাদে লংমার্চে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হেফাজতের শীর্ষনেতাদের অন্যতম অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক। মোদি ও তার দলের নির্বাচনি জয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, উল্লসিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। তবে আওয়ামী লীগ সরকারকে এত দিন একচেটিয়া সমর্থন দিয়ে গেছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ভারতের সরকার। এখন বিজেপি ক্ষমতায় আসায় আওয়ামী লীগ হয়তো এতটা শক্ত সমর্থন পাবে না। উপরন্তু বিএনপি-জামায়াত সম্ভবত ভেবেছে, কংগ্রেসের যেমন আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভূতি রয়েছে, তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিজেপিরও হয়তো আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ বিএনপি-জামায়াতের প্রতি সহানুভূতি থাকবে।

খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ মুনতাসির আলী বলেন, সত্য হচ্ছে এই যে, গত ৪০ বছরে ভারতে যে দলই ক্ষমতায় এসেছে; তাদের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষানীতি অক্ষুণœ রাখতে বাংলাদেশের সঙ্গে কোনও আপস করেনি। ফলে বিএনপি কিংবা অন্য কোনও দলের উল্লসিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি। কারণ নরেন্দ্র মোদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেও তার কট্টরপন্থী হিন্দুইজম ও ধর্মীয় উন্মাদনাময় মানসিকতা এ অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য বিপদ-সংকেত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হেফাজতের এক শীর্ষনেতার ভাষায়, বিজেপি ক্ষমতায় আসায় বিএনপি-জামায়াতের যে উল্লাস, তা রাজনৈতিক স্টান্টবাজি। বাংলাদেশের বিষয়ে মোদি, র (ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা) কিংবা মোসাদ (ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা)Ñ কারও বা কোনও সংস্থার দৃষ্টিভঙ্গিই পরিবর্তিত হয়নি, হবেও না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.