নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখালেখি

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মজৈবনিক উপন্যাসঃ স্বপ্ন বাসর (পর্ব-১)

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৪:৪০


আত্মজৈবনিক উপন্যাসঃ স্বপ্ন বাসর
হৃদয়ের কাছাকাছি সেই
প্রেমের প্রথম আনাগোনা
সেই হাতে হাতে ঠেকা-সেই আধো চোখে দেখা
চুপি চুপি প্রাণের প্রথম জানাশোনা-

১৯৭১ সালের এপ্রিল মাস। গ্রামের বাড়ি থেকে দাদাজান লোক মারফত আব্বাকে খবর পাঠিয়েছেন সপরিবারে গ্রামে চলে যেতে। আমার জন্মের মাত্র তিন মাস পরে আব্বা আমাদের দুই ভাই ও এক বোনসহ মাকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে রাজশাহী শহরে চলে আসেন এবং ওকালতি পেশার সূত্রে শহরে স্থায়ী হয়ে যান। সেটা ১৯৫৫ সালের ঘটনা। এরপর আমার আরো তিনটি ভাইয়ের জন্ম হয়। অর্থাৎ আমরা ছিলাম পাঁচ ভাই এক বোন। শহরে থেকে আমাদের লেখাপড়া, আব্বার প্র্যাকটিস ও অন্যান্য কারণে গ্রামের বাড়ির সাথে আমাদের যোগাযোগ কমে যায়। যোগাযোগ কমে যাওয়ার আর একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল যাতায়াত ব্যবস্থার দুর্দশা। আমাদের গ্রামের নাম ছিল মধুপুর। রাজশাহী শহর থেকে দূরত্ব কুড়ি বাইশ মাইলের বেশি নয়। কিন্তু রাজশাহী থেকে নওহাটা পর্যন্ত ছয় সাত মাইল রাস্তা ঘোড়ার গাড়িতে যাওয়া সম্ভব হলেও নওহাটা থেকে মধুপুর পর্যন্ত অবশিষ্ট চৌদ্দ পনের মাইল রাস্তা ছিল সম্পূর্ণ কাঁচা ও ভাঙ্গাচোরা। এই দুর্গম রাস্তায় স্রেফ পায়ে হেঁটে অথবা গরুর গাড়িতে চড়ে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় ছিল না। গাড়োয়ান পাকা না হলে এই রাস্তার এবড়ো খেবড়ো গর্তে পড়ে অনেক সময় গরুর গাড়িও উল্টে যায়।

এ যুগে যান্ত্রিক যানবাহনের কারণে কুড়ি বাইশ মাইল রাস্তা তেমন কোন দূরত্ব মনে হয় না। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থার বেহাল অবস্থার কারণে সে যুগে আমাদের গ্রামের বাড়ি ছিল প্রকৃতপক্ষেই এক দুর্গম অজ পাড়াগাঁয়ে। প্রতি বছর ধান ওঠার সময় হলে মা একবার গ্রামে যেতেন। কাঁচা রাস্তায় গরুর গাড়িতে ঝাঁকুনি খেতে খেতে যাতায়াত করে কোমরের ব্যথা নিয়ে বাড়ি ফিরে দু’দিন বিছানায় শুয়ে থাকতেন তিনি। বলতেন, ‘আর যাবো না বাবা’। কিন্তু পরের বছর ধান ওঠার সময় দাদার বাড়ি থেকে লোক এলে তিনি আবার ঠিকই চলে যেতেন। শ্বশুর বাড়ির প্রতি তাঁর একটা টান ছিল সব সময়। আব্বা তাঁর পেশাগত ব্যস্ততার কারণে গ্রামে খুব কমই যেতে পারতেন। আর আমার বয়স যখন মোটে তিন চার বছর, তখন মায়ের সাথে আমরা ভাই বোনরা একবার দাদার বাড়ি গিয়েছিলাম-যা মায়ের কাছেই শোনা। কিন্তু অত ছোটবেলার স্মৃতি আজ আর আমার মনে পড়ে না।

দাদাবাড়ি থেকে আমার চাচারা কালে ভদ্রে শহরে আসতেন। তবে দাদাবাড়ির কামলা-কিষাণ, চাকর-বাকরদের কেউ না কেউ গাছের আম কাঁঠাল, পুকুরের মাছ, চাচীদের হাতে বানানো পিঠে-পুলি এসব নিয়মিত পৌঁছে দিয়ে যেত। আমার নিজের দাদী আমার জন্মের অনেক আগেই মারা গেছেন। তবে সৎ দাদী এত ভালো মানুষ ছিলেন যে তাঁকে কখনোই আমাদের সৎ দাদী বলে মনে হয়নি। আমার আব্বা এবং এক ফুপুকে জন্ম দিয়ে আমার নিজের দাদী মারা যান। আমার তিন চাচার জন্ম সৎ দাদীর গর্ভে। কিন্তু আব্বা এবং ফুপুর প্রতি চাচাদের সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ দেখলে কারো এক মুহূর্তের জন্যেও মনে হবে না যে এরা ভিন্ন ভিন্ন মায়ের সন্তান। আব্বা ছিলেন দাদাজানের বড় সন্তান। সেই হিসাবে গ্রামের বাড়িতে আব্বার অবস্থান ছিল সবার উর্দ্ধে। চাচারা আব্বার এই অবস্থানকে পুরোপুরি সম্মান করে চলতেন।

আমার জন্মের কয়েক বছর পর বসন্ত রোগে দাদাজানের দুই চোখ অন্ধ হয়ে যায়। চাচারা বিষয় সম্পত্তি বুঝে নেওয়ার পর দাদাজান ঘর থেকে বিশেষ একটা বের হতেন না। মা প্রতি বছর গ্রামে গেলে তাঁকে কাছে বসিয়ে দাদাজান আমাদের খোঁজ খবর নিতেন। আর মা ফিরে আসার সময় বাড়ির চাকর বাকর দিয়ে ফলমূল, লাউ-কুমড়া, কলার কাঁদি, পুকুরের মাছ, জমির আখ, আতপ চাল, পিঠে-পুলি এমনকি বাড়ির পোষা মোরগ মুরগি পর্যন্ত বেঁধে গরুর গাড়ি বোঝাই করে দিতেন। এগুলো যাতে ঠিকমতো পৌঁছানো হয় সে ব্যাপারে মায়ের সাথে আসা লোকের ওপর দাদাজানের কড়া নির্দেশ থাকতো। দাদাজানের ধারণা ছিল শহরে তাঁর নাতি নাতনিরা এসব ঠিকমতো খেতে পায় না। এসব যে শহরেও কিনতে পাওয়া যায় এবং তাঁর নাতি নাতনিরা হরদম খায়, সে কথা মা কোনদিন দাদাজানকে বোঝাতে পারেননি। দাদাজানের এক কথা, তিনি যতদিন বেঁচে আছেন ততদিন তাঁর বড় ছেলের সংসারে এসব যাবে। চাচা চাচীরাও দাদাজানের সাথে একমত। গরুর গাড়ি বোঝাই করে দিতে পারলে তারাও খুশি।

শহরের অবস্থা তখন খুব খারাপ। পাকিস্তানী মিলিটারিরা প্রতিদিন গুলি করে লোক মারছে। বিহারীরা চাকু ছুরি রামদা হাতে দিনের বেলা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরছে আর ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলে শ্লোগান দিচ্ছে। পাকিস্তানী সৈন্যরা রাজশাহী পুলিশ লাইন জ্বালিয়ে দিয়েছে। বহু পুলিশকে হত্যা করেছে। উর্দুভাষী বিহারীদের সাথে নিয়ে তারা হিন্দুদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে, নির্বিচারে লুটপাট ও ধর্ষণ করেছে। শহরে সারা রাত কারফিউ থাকে। দিনে দু’চার ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়। সেই সুযোগে শহরের বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে গঞ্জে পালিয়েছে। অনেকে পদ্মা নদী পার হয়ে পালিয়ে গেছে ভারতে। স্কুল কলেজ দোকানপাট সব বন্ধ। দিনের বেলাতেও শহরটা খাঁ খাঁ করে। আব্বা ভেবে চিন্তে গ্রামে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।

রাজশাহী শহরে তখন একটা ঘোড়ার গাড়ির স্ট্যান্ড ছিল। কিন্তু শহরের ভয়াবহ অবস্থার কারণে স্ট্যান্ডে কোন গাড়ি পাওয়া গেল না। ঢাকা-রাজশাহী রুটে স্বাভাবিক সময়ে দু’তিনটা বাস চলতো। তবে কাছাকাছি দূরত্বে যাতায়াতের জন্য সে সময় বাস তো দূরের কথা, ঘোড়ার গাড়ি ছাড়া কোন যন্ত্রচালিত যানবাহনের ব্যবস্থা ছিলনা। সকাল আটটা থেকে চার ঘণ্টা কারফিউ প্রত্যাহারের সুযোগে আব্বা গ্রাম থেকে আসা লোকটিকে সাথে নিয়ে অনেক ঘুরে শহরের চণ্ডীপুর এলাকায় দুই কোচোয়ানের খোঁজ পেলেন। কিন্তু মিলিটারির ভয়ে তারা গাড়ি নিয়ে শহর থেকে বেরুতে রাজী নয়। আব্বা তাদের অনেক বোঝালেন। বললেন, ‘শুধু নওহাটা পর্যন্ত পৌঁছে দাও বাবা’।

ওরা কিছুতেই রাজী হয়না। শেষে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া পাওয়ার লোভে ওরা রাজী হয়ে গেল। কাপড় চোপড় আর প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র একটা বড় ট্রাঙ্কে ভরে বাড়ি ঘরে তালা দিয়ে আমরা সবাই ঘোড়ার গাড়িতে উঠে বসলাম। মা আর বড় বোনের পরনে কালো বোরখা। আমরা ছয় ভাইবোন গুটিসুটি মেরে দুই গাড়িতে আব্বা আর মায়ের সাথে ভাগাভাগি করে বসলাম। বড়ভাই বি,এ, ক্লাসের ছাত্র আর আমি সবে এস,এস,সি, পাশ করে কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েছি। আমাদের এই দুই ভাইকে নিয়েই আব্বার যত চিন্তা। মিলিটারিরা নাকি যুবক ছেলেদের দেখলে মেরে ফেলছে। ঘোড়ার গাড়ি ঠিক করতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়েছে। কারফিউ বিরতির বাকি দুই ঘণ্টার মধ্যে আমাদের যেভাবেই হোক নওহাটা পৌঁছাতে হবে। সেখানে পৌঁছাতে পারলে অনেকটা নিরাপদ হওয়া যায়। কারফিউ শুরু হয়ে গেলে মিলিটারিদের গাড়ি রাস্তায় নেমে আসবে। তখন বিপদ হতে পারে। দ্রুত গাড়ি ছোটানোর জন্য আব্বা কোচোয়ানদের তাগাদা দিলেন। তবে আল্লাহ সহায়। নওহাটা পর্যন্ত যাওয়ার পথে কোন বিপদ হলো না। আব্বা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন।

নওহাটা একটা ছোট গঞ্জ বিশেষ। বারানই নদের তীরে এর অবস্থান। আত্রাই নদীর শাখা হওয়ায় নৌপথে বারানই নদ দিয়ে ধান, পান, আখ, পাটসহ বিভিন্ন রকম মালামাল এই গঞ্জের হাটে আনা নেওয়া করা হয়। সেখানে পৌঁছে দেখি, আমাদের তিন চাচা ছই তোলা দুটো গরুর গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছেন আমাদের জন্য। মালপত্র ঘোড়ার গাড়ি থেকে নামিয়ে গরুর গাড়িতে তোলা হলো। আমরা গরুর গাড়িতে উঠে বসলাম। তারপর ভাঙ্গাচোরা ধুলিময় কাঁচা রাস্তায় আমরা রওনা হলাম মধুপুরের উদ্দেশ্যে। চাচারা দু’জন চাকরসহ গাড়ির সাথে সাথে হেঁটে চললেন। আমার তখন একটাই ভাবনা, এই চৌদ্দ পনের মাইল রাস্তা চাচারা হেঁটে যাবেন কিভাবে? কষ্ট হবে না? আব্বাকে সে কথা বলতেই তিনি মুচকি হেসে বললেন, ‘এসব ওদের অভ্যাস আছে বাবা। তোমরা শহরে থাকো তো, তাই বুঝবে না। আমি স্কুলে পড়ার সময় রোজ দুই দুই চার ক্রোশ রাস্তা হেঁটে যাওয়া আসা করতাম। গ্রামে কী আর শহরের মতো বাড়ির কাছে স্কুল থাকে? দাদার বাড়ি গেলে সব বুঝতে পারবে।’
বড় চাচা আব্বার কথা শুনতে পেয়ে বললেন, ‘আমরা তো এর চেয়ে বেশি হেঁটে সপ্তাহে দু’তিন দিন হাট করি বাবা। আমাদের সাথে কিছুক্ষণ হেঁটে দেখ, মজা পাবে।’
মজা পাওয়ার জন্য আমরা ভাইবোনরা গরুর গাড়ি থেকে নেমে চাচাদের সাথে হাঁটতে শুরু করলাম। কিন্তু একটু পরেই মজা ফুরিয়ে গেল। সবাই হাঁপিয়ে গেলাম। ঘেমে নেয়ে অস্থির। সব ছোট ভাইটা পা হড়কে পড়ে গেল। বড় ভাইয়ের স্যান্ডেলের ফিতা ছিঁড়ে গেল। চাচারা হেসে খুন। আমাদের সবাইকে আবার গরুর গাড়িতে তুলে বসিয়ে দেওয়া হলো। গাড়িতে বসে আমি বড় চাচাকে উদ্দেশ্য করে বললাম, ‘চাচা, এই গাড়িগুলো কী ভাড়া করা?’
বড় চাচা বললেন, ‘ভাড়া করা হবে কেন? বাড়ির গাড়ি।’
মা বললেন, ‘ওদের তো দাদার বাড়ি যাওয়া আসা নাই। জানবে কোত্থেকে?’
আমি একটু চুপ করে থেকে বললাম, ‘তাহলে আপনারা এত কষ্ট করে হেঁটে হাটে যান কেন চাচা? গরুর গাড়িতে গেলেই তো হয়!’
‘পোষায় না বাবা। গাড়ি যতক্ষণে এক ক্রোশ যাবে, আমরা ততক্ষণে হেঁটে দু’ক্রোশ চলে যাবো।’
‘এক ক্রোশ মানে কত মাইল চাচা?’
‘দু’মাইল।’
‘ও’ আমি মনে মনে ভাবলাম কত কিছু জানা নেই আমাদের। আমরা শহুরে মানুষ, গ্রামের জীবন সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানি না।

আমার জ্ঞান হওয়ার পর এই প্রথম গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। রাস্তার দু’পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মাটি আর টিনের তৈরি ঘর বাড়ি থেকে নারী পুরুষ ছেলে মেয়ে সবাই বের হয়ে অবাক চোখে দেখছে আমাদের। পরিচিত কাউকে দেখলে চাচারা বলছেন, ‘বড় ভাইজানের পরিবার। রাজশাহী থেকে আসছে।’ আব্বাকে যারা চেনে, তারা সসম্মানে সালাম দিয়ে সরে যাচ্ছে। সরকার বাড়ির বড় ছেলে। মধুপুরসহ আশে পাশের গ্রামগুলোর লোকজনের কাছে সরকার বাড়ির অনেক সম্মান। এই এলাকার মধ্যে লেখাপড়া শিখে একমাত্র আব্বাই উকিল হয়েছেন, সম্মান পাওয়ার সম্ভবত সেটাও একটা কারণ। কেউ কেউ অতি উৎসাহে গরুর গাড়ির পিছে পিছে চাচাদের সাথে হাঁটতে হাঁটতে আসছে। এটা সেটা জিজ্ঞেস করছে। শহরের খবর কী জানতে চাইছে। চাচারা ওদের বোঝাচ্ছেন, ‘ভাইজান এখন ক্লান্ত। এখন এসব কথা থাক। সন্ধ্যের পর বাড়িতে এসো, সব জানতে পারবে।’

মাঝে মাঝে অনিচ্ছা সত্ত্বেও গাড়ি থামাতে হচ্ছে। কারণ আর কিছুই না। বিভিন্ন বাড়ি থেকে ঘোমটা টানা মহিলারা মুড়ির মোয়া, বাতাসা আর ঠাণ্ডা পানি হাতে গাড়ির কাছে এসে দাঁড়াচ্ছে আর মাকে সালাম দিয়ে বলছে, ‘ছেলেপুলেগুলোর মুখ শুকিয়ে গেছে ভাবী। ওদের একটু পানি খাওয়ান।’
আমরা ভাইবোনরা তো কাউকেই চিনি না। আব্বা এবং মা তাদের কাউকে কাউকে চিনতে পারছেন। যেমন আব্বা হয়তো কাউকে বলছেন, ‘এই তুই গফুরের ব্যাটা আলতাফ না?’ মা হয়তো কাউকে বলছেন, ‘তুমি তো ময়নার মা, তাই না?’ সরকার বাড়ির বড় ছেলে ও বড় বউ তাদের চিনতে পারছে তাতেই তারা খুশি। অথচ তারা আমাদের আত্মীয় স্বজন কেউ না। আমরা ভাইবোন অবাক হয়ে সব দেখছি।

গফুরের ছেলে আলতাফ গরুর গাড়ির সাথে হাঁটতে হাঁটতে আসছে আর আব্বার কাছে একটা আবদার করছে। ছেলেমেয়ে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে তার মতো গরিবের বাড়িতে বসে একটু জিরিয়ে নিতে হবে আর দু’টা ডালভাত খেতে হবে। বেলা গড়িয়ে গেছে, নিশ্চয় ছেলেমেয়েদের ক্ষিধে পেয়েছে। আলতাফের সামান্য এই আবদার শেষে পীড়াপীড়িতে পরিণত হলো। আব্বা বললেন, ‘না রে আজ থাক। আর একদিন হবে। শহরের যা অবস্থা, কতদিন যে গাঁয়ে থাকতে হবে কে জানে?’
চাচারা গাড়োয়ানদের তাগাদা দিয়ে বললেন, ‘চল্ চল্।’

আমাদের মধুপুর গ্রামে ঢোকার পর এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা হলো। সে যুগে মোবাইল ফোন ছিল না। অথচ শুধু মুখে মুখে প্রচার হতে হতে আমাদের গাঁয়ে আসার সংবাদ জানতে কারো আর বাঁকি নাই। সবাই সালাম দিয়ে আব্বার কাছে শহরের খবর জানতে চাচ্ছে আর ছেলে বুড়ো নারী পুরুষ প্রায় মিছিলের মতো করে আমাদের গাড়ির সাথে সাথে আসছে। চাচারা যথাসম্ভব তাদের সামাল দিচ্ছেন আর গাড়োয়ানদের দ্রুত গাড়ি চালানোর জন্য ধমকা ধমকি করছেন। এভাবে দাদাবাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে সন্ধ্যে পার হয়ে গেল। সকাল দশটার দিকে রাজশাহী থেকে রওনা দিয়ে আমরা দাদার বাড়ি পৌঁছালাম সন্ধ্যের পর।
সেখানে পৌঁছানোর পর আর এক মহাযজ্ঞ। বাড়িসুদ্ধ মানুষ গম গম করছে। চাচীমারাসহ প্রতিবেশি ও দূর দূরান্ত থেকে আসা মহিলারা কেউ মায়ের পা ছুঁয়ে সালাম করছে, কেউ মাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। আমরা ভাইবোনরাও তাদের জড়িয়ে ধরা ও কান্নাকাটির শিকার। এদের মধ্যে কারা যে আমাদের আত্মীয় আর কারা অনাত্মীয় বোঝা মুশকিল। দাদাজান ভেতর বাড়ির একটা ঘরের বারান্দায় কাঠের হাতলওয়ালা চেয়ারে বসেছিলেন। আব্বা ও মা গিয়ে তাঁকে পা ছুঁয়ে সালাম করলেন। আমাদের ভাইবোনদের সবাইকে নিয়ে যাওয়া হলো দাদাজানের কাছে। মা আমাদের এক এক করে তাঁর কোলের কাছে নিয়ে এলেন এবং নাম বলতে থাকলেন। অন্ধ দাদাজান তাঁর দু’হাত দিয়ে আমাদের স্পর্শ করে বিড় বিড় করে দোয়া পড়তে লাগলেন। এরপর দাদীর পালা। তিনি আমাদের জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন। কান্নার ফাঁকে ফাঁকে তাঁর ফোকলা মুখের টুকরা টুকরা কথাবার্তা শুনে বোঝা গেল, মহাবিপদ থেকে উদ্ধার পেয়ে আমরা যে সহি সালামতে আমাদের বাপের বাস্তুভিটায় ফিরে আসতে পেরেছি এই আনন্দে তাঁর এই ক্রন্দন।

টিনের ছাউনি দেওয়া পুরু মাটির দেয়ালের অনেকগুলো ঘর চওড়া বারান্দাসহ প্রায় আধা-বৃত্তাকারে ঘিরে আছে এক বিশাল উঠানকে। উঠানের এক প্রান্তে লম্বা চওড়া বিরাট রান্নাঘর। অন্য প্রান্তে পাশাপাশি দুটো ধানের গোলা। দাদাজানের এত বড় পরিবার এখনও একান্নবর্তী। রান্নাঘরে ভোর থেকে রান্না বান্না শুরু হয়, সন্ধ্যে পর্যন্ত চলতে থাকে। বাড়ির সদস্যদের খাওয়া দাওয়ার কোন নির্দিষ্ট সময় নাই। যে যখন আসে খেয়ে দেয়ে চলে যায়। তা’ ছাড়া বাড়ির কামলা কিষাণ চাকর বাকর এরা তো আছেই। সারাদিন চুলায় আগুন জ্বলতে থাকে। এখন সেখানে আমাদের জন্য স্পেশাল রান্না বান্না হচ্ছে। বাড়ির মুরগি জবাই করা হয়েছে। মাছ ভাজা হচ্ছে। লোহার কড়াই ভর্তি দুধ জ্বাল দেওয়া হচ্ছে। বাড়ির গাইয়ের টাটকা দুধের মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। সরকারের নাতি নাতনিরা রাতে দুধভাত খাবে। ইতিমধ্যে ভুট্টার খই, চিঁড়েভাজা, মুড়ি মুড়কি, খাগড়াই আর দই নাড়ু দিয়ে আমাদের নাস্তা খেতে দেওয়া হয়েছে। গ্রামের মানুষ সন্ধ্যের পর পরই রাতের খাওয়া সেরে ফেলে। আজ আর এ বাড়িতে সেটা হচ্ছে না। আজ এ বাড়ির লোকেদের বোধহয় খাওয়া দাওয়া সারতে অনেক রাত হবে।

বাড়ির ভেতরে অনেক হারিকেন আর কুপিবাতি জ্বালানো হয়েছে। উঠানের মধ্যে মাদুর, খেজুরের পাটি আর শতরঞ্জি বিছানো হয়েছে। সেখানে সামনের দিকে বসেছেন বাড়ির পুরুষ সদস্য ও আত্মীয়স্বজনরা, পেছনের দিকে পাড়া পড়শি ও অন্যান্যরা। তাদের মুখোমুখি একটা কাঠের চেয়ারে বসে শহরের অবস্থা বর্ণনা করছেন আব্বা। শ্রোতাদের মধ্যে থেকে ঘন ঘন ‘উফ্’, ‘আহ্’ ‘সর্বনাশ’ ইত্যাদি নানারকম আর্তধ্বনি শোনা যাচ্ছে। এদিকে মা বারান্দায় বসে আমাদের সাথে আত্মীয় স্বজনের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন।
‘এ হলো তোদের বড় চাচীমা, এ হলো মেজ চাচীমা আর এ হলো তোদের ছোট চাচীমা। সালাম কর।’
চাচীমারা বোধহয় অপেক্ষাতেই ছিলেন। সালাম করার আগেই আমাদের সবাইকে বুকের মধ্যে টেনে নিয়ে গালে চুমু দেওয়া শুরু করলেন তাঁরা।
‘ও ভাবী, এই সোনার টুকরারা কত বড় হয়ে গেছে, আল্লারে! কতদিন তোমাদের দেখিনি বাবা।’
‘আর এই যে মেয়েটাকে দেখছিস’ একটা তের চৌদ্দ বছর বয়সের মেয়েকে দেখিয়ে মা বললেন, ‘এ হলো তোদের বড় চাচার মেয়ে আলেয়া।’
মেয়েটার কপালে চুমু দিয়ে তাকে নিজের কাছে টেনে নিলেন মা। তারপর বললেন, ‘আর ওই পিচ্চি দু’টা আলেয়ার ছোট ভাই। আর এই এরা হলো দুই ভাই এক বোন। তোদের মেজ চাচার। আর ঐ যে বাঁশের খুঁটি ধরে ভ্যাদ ভ্যাদ করে কাঁদছে, ওটা তোদের ছোট চাচার একটাই ছেলে। তোদের বংশে মেয়ে কম, ছেলেই বেশি।’
চাচীমারা তাদের ছেলেমেয়েদের ছাগল ঠেলার মতো করে ঠেলে এনে আমাদের বড় তিন ভাই বোনের পা ছুঁয়ে সালাম করালেন। লক্ষ্য করে দেখলাম, একমাত্র আলেয়া ছাড়া আর সবারই নাক দিয়ে সর্দি ঝরার বয়স। আরো কিছু আত্মীয় স্বজনের সাথে আমাদের পরিচয় করানো হলো। পরিচয় শেষে তারা মাকে কেন্দ্র করে বারান্দায় গোল হয়ে বসে গল্প শুরু করে দিল। মা হলেন তাদের কারো ভাবী, কারো বড়মা আবার কারো বৌমা। মা এ বাড়ির বড় বউ। গ্রামে যাতায়াত থাকায় তাঁকে কমবেশি সবাই চেনে। সুতরাং গল্প জমে উঠতে সময় লাগলো না। আমার বোন আর ছোট তিন ভাই মায়ের সাথেই বসে থাকলো। বড়ভাই উঠানে চাচাদের পাশে গিয়ে বসলেন। আর আমি নিজের অবস্থান ঠিক করতে না পেরে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে লাগলাম। হঠাৎ করে ভিন্ন এক পরিবেশে এসে পড়ায় আমার মন খারাপ হয়ে গেছে।

রাতে মুরগির ঝোল, ভাজা মাছ আর দুধ কলা দিয়ে ভাত খেয়ে আমরা পাঁচ ভাই বোন ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়ে পড়লাম। শুধু বড়ভাই চাচাদের সাথে বসে গল্প করতে লাগলেন। আর মাকে ঘিরে মহিলাদের গল্পগুজব বোধহয় সে রাতে আর ফুরালো না।
*************************************************
আত্মজৈবনিক উপন্যাসঃ স্বপ্ন বাসর (পর্ব-২)

মন্তব্য ৫৪ টি রেটিং +১৮/-০

মন্তব্য (৫৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:৪৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
জানিনা নেট কেন খুব স্লো যাচ্ছে ।
এখন প্রিয়তে নিয়ে গেলাম ।
নেট সচল হলে আসব ।
শুভেচ্ছা রইল

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:০৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হাঁ, নেট খুবই স্লো আলী ভাই। কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে।

২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:৪২

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
১৯৭১ সনের এপ্রিলের সেই দু;সহ দিনগুলির সাথে কৈশোর ও বাল্যকালের স্মৃতি মাখা লেখাটি পাঠে মুগ্ধ ।
মনকে নিমিশেই নিয়ে যায় স্মৃতির অতলে । মনকে ভাবালুতায় পেয়ে বসে । মনে পড়ে নীজেরো প্রায়
একই রুপ জীবন গাথা । লেখাটির গাথুনী হয়েছে খুবই মঝবুত । লেখাটি যতই আগাবে ততই
মিমুগ্ধ হয়ে পাঠক পাঠে রত হবে , হলফ করে বলতে পারি ।
সে সময় গ্রামীন জনপদের যতায়াত ব্যবস্থা সত্যিই ছিল খুবই করুন । তবে একটি সুবিধা ছিল নদী পথে ।
রাজশাহীর পাশ দিয়ে পবা হয়ে বয়ে যাওয়া বরনাই নদটি মনে হয় সে সময় বেশ নাব্যই ছিল ।

এই নদী পথে যদি আপনাদের দেশের বাড়ী যাওয়ার সুবিধা থাকত তাহলে হয়তবা গরুরগাড়ী ও ঘোড়ার গাড়ীর
ঝামেলা কিছুটা হলেও কমত । শুনেছি নদীটির নাকি এখন খুবই করুন অবস্থা ।
রাজশহী শহড়ের বর্জে নাকি এটার তলদেশ ভরে গেছে , আছে রাবার ড্যাম ,
নাব্যতা বলতে বলতে মনে হয় কিছুই আর নেই ।
নদীর মাছ ও মরে যাওয়ার কথা ।
নদীই মানুষের জীবন , এলাকা বাসীর জীবন ।
নদটির এখনকার অবস্থা জানালে খুশী হব ।
উপন্যাসের কাহিনী এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার
জন্য শুভেচ্ছা রইল ।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:১৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সেই সময় বারানই নদের নাব্যতা ভালো ছিল। তবে নদী পথে যাওয়া সম্ভব ছিল না। কারণ বারানইয়ের যেখানে আমাদের নামতে হতো, সেখান থেকে মধুপুর গ্রামে যেতে হলে প্রায় একই পরিমান ভাঙ্গাচোরা রাস্তা আমাদেরকে আবার গরুর গাড়িতে চড়েই যেতে হতো। মাঝখান থেকে নদীপথে যাওয়াটা হয়ে যেত আমাদের জন্য বাড়তি যাত্রা।
এখন তো বারানই প্রায় মৃত একটা নদ। কোন নাব্যতা নেই। আপনি যেমনটি বলেছেন, একজ্যাক্ট সেই অবস্থা।

ধন্যবাদ ভাই ডঃ এম এ আলী।

৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:০০

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: চমৎকার লাগলো। শুভকামনা।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:০৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই স্বপ্নবাজ সৌরভ।

৪| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন।
ঘটনা কি ৭১ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে??

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: দয়া করে ধারাবাহিকভাবে পর্বগুলো পড়তে থাকুন। আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। আগে বলে দিলে মজা নষ্ট হয়ে যায়।


ধন্যবাদ ভাই রাজীব নুর।

৫| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৫৫

মিথী_মারজান বলেছেন: এত সুন্দর প্রথম পর্ব, পরেরগুলো না-জানি আরো কতটা আকর্ষণীয় হবে!
নিঃসন্দেহে একটা চমৎকার সিরিজ পেতে যাচ্ছি আমরা।
পরবর্তী পর্ব তাড়াতাড়ি দেবেন প্লিজ...।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:২২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: এই উপন্যাস ২০১১ সালে প্রকাশিত হবার পর ফোনে, মেসেজে এবং সরাসরি সাক্ষাতে প্রায় সকল পাঠকই একটা কথা বলেছেন যে, শুরু করার পর উপন্যাসটি শেষ না করে তারা উঠতে পারেননি। বইটি পড়ার পর অনেকেই একটানা ঘোরের মধ্যে ছিলেন কয়েকদিন। হার্ড কপি পড়ার পর আবেগাপ্লুত হয়ে একজন ব্লগার চমৎকার একটি ক্রেস্ট উপহার পাঠিয়েছেন আমাকে। আরো অনেক কিছু ঘটেছে। নিজের ঢোল নিজের দ্বারা পেটানো হয়ে যাবে বলে সেসব আর বলছি না এখানে।

পরবর্তী পর্ব আগামী কালই পাবেন ইনশাআল্লাহ। ধন্যবাদ বোন মিথী_মারজান।

৬| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:২৫

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: স্মৃতিময় ৭১, গ্রামের মানুষের মাঝে কিছুদিন সরলতা ছিল কিন্তু দিনে দিনে তা কমে আসছে। মনমুগদ্ধকর বর্ণনা।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই তারেক_মাহমুদ।

৭| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৭

ঢাবিয়ান বলেছেন: আগের দিনের মানুষেরা আসলেই অন্যরকম ছিল।আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে স্বার্থপরতা, হিংসা ছিল না, যে কারনে সম্পর্কগুলো ছিল অতি আপন। আজকের যুগে এমন সম্পর্ক বিরল হয়ে পরছে দিন দিন।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: এই উপন্যাসে সেই সময়টাকেই ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। পরের পর্বগুলো পড়লে আরো অনেক কিছু জানতে পারবেন।


ধন্যবাদ ভাই ঢাবিয়ান।

৮| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: দয়া করে ধারাবাহিকভাবে পর্বগুলো পড়তে থাকুন। আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। আগে বলে দিলে মজা নষ্ট হয়ে যায়।


ধন্যবাদ ভাই রাজীব নুর।

ওকে।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।

৯| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:২৮

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: হেনা ভাই আপনার স্বপ্নবাসর উপন্যাসটি পড়ার খুব ইচ্ছে ছিল।আপনি সেই ইচ্ছেটা পুরনের ব্যবস্থা করে দিলেন তার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
প্রিয়তে রাখলাম নিরিবিলি সময় করে পড়ব।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৮

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: বিকল্প ব্যবস্থা করা ছাড়া উপায় ছিল না ভাই। আপনার আগ্রহের জন্য অশেষ ধন্যবাদ ভাই মোস্তফা সোহেল।

১০| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৫

শুভ_ঢাকা বলেছেন: ঝরনার জলের মত স্বচ্ছ সহজ সরল মাধর্য্যময় ভাষায় উপন্যাসটি লিখা। আগে পড়েছি বলে বলতে পারছি। সহজভাবে লেখা সহজ নয়। তারজন্য সহজ সরল মনও দরকার।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আপনি তো হার্ড কপিই পড়েছেন। ব্লগে ধারাবাহিকভাবে উপন্যাসটি আপনার না পড়লেও চলবে। তাই না?


ধন্যবাদ প্রিয় শুভ_ঢাকা।

১১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৫

শুভ_ঢাকা বলেছেন: আপনি তো হার্ড কপিই পড়েছেন। ব্লগে ধারাবাহিকভাবে উপন্যাসটি আপনার না পড়লেও চলবে। তাই না?

হক কথা। বিশেষ করে আমার মত পাঠক যারা কদাচিৎই বইপত্র পড়ায় অভ্যস্ত। আমি নীরবে নিভৃতে আসি বা আসবো পাঠকের প্রতিক্রিয়া অভিব্যক্তি জানার জন্য। যেমন এই পর্বে এখন পর্যন্ত মন্তব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মন্তব্য হল ডঃ এম এ আলীর দ্বিতীয় কমেন্ট-টি যা আমার কাছে একটা বাড়তি পাওনা। ঠিক বুঝাতে পারলাম কি না জানি না।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: বুঝতে পেরেছি ভাই। আপনাকে ধন্যবাদ।

১২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: তোমরা শহরে থাকো তো, তাই বুঝবে না। আমি স্কুলে পড়ার সময় রোজ দুই দুই চার ক্রোশ রাস্তা হেঁটে যাওয়া আসা করতাম। গ্রামে কী আর শহরের মতো বাড়ির কাছে স্কুল থাকে? দাদার বাড়ি গেলে সব বুঝতে পারবে।’ এটা আশ্চর্য হওয়ার মতো কোন ঘটনা হলো? আমাদেরই এক মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ৪০ করে ৮০ মাইল হাটতেন। উনার কাছে এটা ডাল-ভাত। :P

নিজের ঢোল নিজের দ্বারা পেটানো হয়ে যাবে বলে সেসব আর বলছি না এখানে। যুগ পাল্টে গিয়েছে। আপনাদের সেইসব দিন এখন আর নাই। এখন নিজের ঢোল নিজেকেই পেটাতে হয়। অন্যের আশায় বসে থাকলে বসে থাকাই সার হবে! :)

দারুন লাগছে। মনে হচ্ছে, চোখের সামনে সবকিছু দেখতে পারছি। তবে, আমি কিছুটা সৌভাগ্যবান। ছোটবেলায় মামা-খালাদের বিয়েতে পাল্কি চলতে দেখেছি। আমাদের গ্রামের বাড়ীতে তখন রিকসা কিছুটা চললেও গরুর গাড়ী আর পায়ে হাটাই ছিল প্রধান ভরসা। হ্যা, নৌকাও ছিল অন্যতম বাহন।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: এই উপন্যাসে এক ধরনের ভিজুয়াল এফেক্ট আছে। পড়লে মনে হবে আপনি মুভি দেখছেন। আজ থেকে প্রায় পঞ্চাশ বছর আগের অনগ্রসর গ্রামীন সংস্কৃতি আজকের প্রেক্ষাপটে তুলনা করে পড়লে আরও অনেক কিছু জানতে পারবেন।

আমাদেরই এক মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ৪০ করে ৮০ মাইল হাটতেন। উনার কাছে এটা ডাল-ভাত।
ভালোই বাঁশ দিলেন উনাকে। ফাঁপা কলস বাজে বেশি।

ছোটবেলায় মামা-খালাদের বিয়েতে পাল্কি চলতে দেখেছি। আমাদের গ্রামের বাড়ীতে তখন রিকসা কিছুটা চললেও গরুর গাড়ী আর পায়ে হাটাই ছিল প্রধান ভরসা। হ্যা, নৌকাও ছিল অন্যতম বাহন।
হাঁ, আগে তো এরকমই ছিল যাতায়াত ব্যবস্থা। তবে আমাদের মধুপুর গ্রামে যাতায়াত করা রীতিমতো হরিবল ব্যাপার ছিল। বিশেষ করে রাস্তার অবস্থা ছিল ভয়ঙ্কর।
ধন্যবাদ ভাই ভুয়া মফিজ।

১৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫২

করুণাধারা বলেছেন: খুবই আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। ভাষা ঝরঝরে এবং বর্ণনাভঙ্গী সরল। সবচেয়ে ভালো লাগলো পুরো কাহিনীর মধ্যে মানুষের মনে ছড়ানো মায়া- মমতা আর ভালবাসার ছবি। বহুদিন পর এমন একটা কাহিনী পড়লাম! আসলে সেই যুগের মানুষের মনে দয়া মায়া বেশি ছিল (আজকাল মনে হয় মানুষের দয়াময়া ক্রমশ কমে যাচ্ছে)। আমার ছোটবেলাতেও দেখেছি পাড়া-প্রতিবেশী বা দূর সম্পর্কের আত্মীয়রাও দেখা হলে গভীর মমতায় জড়িয়ে ধরতেন; তাদের আন্তরিকতার পরশ স্পষ্ট বোঝা যেত। আজকাল কোথায় গেল মানুষের মাঝে থেকে ভালবাসা আর অন্তরিকতা!!!

পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করি প্রতি পর্বে আগের পর্বের লিংক জুড়ে দেবেন।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:১৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আমার ছোটবেলাতেও দেখেছি পাড়া-প্রতিবেশী বা দূর সম্পর্কের আত্মীয়রাও দেখা হলে গভীর মমতায় জড়িয়ে ধরতেন; তাদের আন্তরিকতার পরশ স্পষ্ট বোঝা যেত। আজকাল কোথায় গেল মানুষের মাঝে থেকে ভালবাসা আর অন্তরিকতা!!!


সত্যিই তাই। সেই দিন আর এই দিনের মধ্যে অনেক পার্থক্য। মানুষের হারিয়ে যাওয়া নৈতিকতা ও মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনার জন্য লেখালেখি করি। হয়তো লিখে মানুষের মায়া মমতা ও আন্তরিকতা ফিরিয়ে আনা কঠিন কাজ। তবু আশা নিয়ে চেষ্টা করি।

ধন্যবাদ করুণাধারা।

১৪| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:১১

প্রামানিক বলেছেন: এই উপন্যাসের পুরো ঘটনাটিই হেনা ভাইয়ের বাস্তব জীবন কাহিনী, হেনা ভাইয়ের অনুমতি না নিয়েই সত্য কথাটি বলে গেলাম। বাস্তব জীবন কাহিনীও যে মুখোরোচক উপন্যাস হতে পারে এই লেখাটিই তার প্রমাণ।

এই উপন্যাসটি ২০১৩ সালেই পড়েছিলাম। রাত দশটায় শুরু করে রাত তিনটার দিকে শেষ করেছিলাম। রাত জেগে একটানে পুরো উপন্যাসটি পড়তে এতটুকুও ক্লান্তি লাগে নি। উপন্যাসের শেষে এসে পরের কাহিনীগুলো জানতে খুব ইচ্ছা হয়েছিল। হেনা ভাইকে টেলিফোন করে সে কাহিনী জানার জন্য প্রশ্ন করলেও নতুন ভাবি আসার কারণে পুরানো স্মৃতি নিয়ে আর ঘাটাঘাটি করেন নাই বলে সংক্ষিপ্ত উত্তর দিয়েছিলেন।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:১৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: প্রামানিক ভাই, আপনি চমৎকার মন্তব্য করেছেন। বাস্তব জীবন কাহিনীও যে মুখোরোচক উপন্যাস হতে পারে এই লেখাটিই তার প্রমাণ। এই মন্তব্যের চেয়ে বড় পুরস্কার আর কী হতে পারে? খুব ভালো লাগলো ভাই।

আপনাকে ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই।

১৫| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:২৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জম্পেশ সিরিজের দারুন শুভারম্ভ :)

করুনাধারা আপুর সাথে সহমত।
শুরুতেই মজা ধরিয়ে দিলেন । অপেক্ষায় প্রহর যেন দীর্ঘ না হয় ;)

++++++

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৩২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: প্রতিদিন একটি করে পর্ব দেওয়ার চেষ্টা করবো। অনিচ্ছাকৃত ব্যতিক্রম ঘটলে ক্ষমা করবেন।


ধন্যবাদ ভাই বিদ্রোহী ভৃগু।

১৬| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৪৬

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: গল্প মসৃণ গতিতে এগুচ্ছে!
চাচাতো ভাই বোনদের ভেতর আলেয়ার নাম এল প্রথমে।
সামনে আলেয়াকে নিয়ে কোন টুইস্ট আছে বলে মনে হচ্ছে। :P :P

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:২৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হাঁ লিটন ভাই, আপনি ঠিকই ধরেছেন। আগামী কালের পর্বটি পড়লে আরও পরিস্কার হবেন। আপনি নিজে একজন উঁচু মাপের লেখক তো, তাই অনুমান করতে ভুল হয়নি।


ধন্যবাদ ভাই গিয়াস উদ্দিন লিটন।

১৭| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৭

মা.হাসান বলেছেন: ঐসময় রাজশাহী শহরে কি বিহারীরা ছিল?
আমার বাবা-মা সৈয়দপুর শহরে আটকা পড়েছিলেন। আপনার বর্ননা শুনে আমার মায়ের শহর ছেড়ে গ্রামে পালানোর বর্ননার কথা মনে পড়ে গেল। তবে দূরত্বের কারনে আমার বাবা-মায়ের সৈয়দপুর থেকে নিজেদের গ্রামে যেতে সময় লেগেছিল কয়েকদিন। আমার বাবা ছিলেন বাড়ির ছোট ছেলে।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:৪০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হাঁ, রাজশাহী শহরে ওই সময় বহু বিহারী ছিল।


ধন্যবাদ ভাই মা, হাসান।

১৮| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৩০

ওমেরা বলেছেন: এটা তো শুধু গল্প নয় আপনার জীবন কাহীনি । টুক টাক শুনেছিও আগে তাই পড়ব তো অবশ্যই।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:৪২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আরে, ওমেরা বুবু যে! তুমি কেমন আছো?

১৯| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:০৭

কাতিআশা বলেছেন: খুব ভালো লাগছে পড়তে..একদম জীবন্ত হয়ে ভাসছে প্রতিটি ঘটনা, দৃশ্য গুলো!++++++++++++

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:৪৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ কাতিআশা।

২০| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:২৬

মুক্তা নীল বলেছেন:
অসাধারন একটি কাহিনী পড়ছি মনে হচ্ছে যেনো পাশে বসে কেউ বলছেন। সম্পর্কের শ্রদ্ধাবোধ , রাস্তাঘাট ও গ্রামের বাড়ি বর্ণনা এবং সর্বোপরি আন্তরিকতা সবমিলিয়ে দারুন ভালোলাগছে
পড়তে।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:৪৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: পরের পর্বগুলিও পড়বেন আশা করি।


ধন্যবাদ মুক্তা নীল।

২১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৩:৩৯

অন্তরন্তর বলেছেন: হেনা ভাই আপনার উপন্যাস যদি আবার নতুন করে ছাপাতেন তবে বই আকারে সংগ্রহ করে রাখতে পারতাম। তারপরও ব্লগে যেহেতু আপনি এখন পুরো উপন্যাসটা দিচ্ছেন আশা করি পড়তে অসুবিধা হবে না। ১৯৭১ পটভূমি উপন্যাস পড়তে শুরু করতেই দেখি ১ম পর্ব শেষ হয়ে গেল।এখন আবার অপেক্ষা করতে হবে দ্বিতীয় পর্বের। অসুবিধা নেই হেনা ভাই। চলুক------

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:৫০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: অনিবার্য কারণে উপন্যাসটির ২য় মুদ্রণ সম্ভব হয়নি। এই পর্বে দেওয়া লিঙ্ক খুলে পড়লে কারণটি বুঝতে পারবেন। আপাতত কষ্ট করে ব্লগেই পড়ুন।

ধন্যবাদ অন্তরন্তর।

২২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:১১

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপনি নিজে একজন উঁচু মাপের লেখক হাইটের কথা বলছেনতো !! =p~ =p~

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: না, না লিটন ভাই। হাইট নয়। আপনার লেখা না পড়ে তো কথাটা বলিনি। ব্লগে হাতে গোনা কয়েকজন মানসম্মত লেখকদের মধ্যে আপনি একজন।

আর চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিত রায়ের মতো কাজ ও শারীরিক গঠন দু'দিক থেকে বিবেচনা করলে আপনি অবশ্যই উঁচু মাপের। হাঃ হাঃ হাঃ।

২৩| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৩০

আহমেদ জী এস বলেছেন: আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম ,




বেশ সাবলীল লেখার ভেতর থেকে সামান্য হলেও উঁকি দিয়ে গেছে মুক্তিযুদ্ধের মুখখানি - মানুষের আতঙ্ক,সেই ভয়াল সময়ের কিছু খন্ডচিত্রের আবহ।
আর সেকালের মানুষদের ভালোবাসার-আন্তরিকতার- পরকেও আপন করে কাছে টেনে নেবার যে ছবি আঁকলেন তাও এ যুগের যান্ত্রিক প্রজন্মের কাছে এক বিস্ময় হয়েই থাকবে, মনে হবে রূপকথা।

পড়ছি...................

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:০৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আর সেকালের মানুষদের ভালোবাসার-আন্তরিকতার- পরকেও আপন করে কাছে টেনে নেবার যে ছবি আঁকলেন তাও এ যুগের যান্ত্রিক প্রজন্মের কাছে এক বিস্ময় হয়েই থাকবে, মনে হবে রূপকথা।


ঠিকই বলেছেন। প্রায় পঞ্চাশ বছর আগের সময়, গ্রামীন সংস্কৃতি ও মানুষের পারস্পরিক বন্ধন এসব ধরে রাখার জন্যেই এই উপন্যাসটি লেখা।

ধন্যবাদ ভাই আহমেদ জী এস।

২৪| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৯

ফয়সাল রকি বলেছেন: সুন্দর সূচনা... পুরাটাই পড়বো আশাকরি।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৮

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ফয়সাল রকি।

২৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৪৬

আনমোনা বলেছেন: আপনার লেখায় এই প্রসংগ পরে আসবে কিনা জানিনা, তবে হানাদার পাক বাহিনী কি মধুপুরের মত দুর্গম গ্রামেও গিয়েছিলো?

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: না, আমাদের গ্রামে তারা আসেনি। আসলে অতি দুর্গম রাস্তা ঘাটের কারণে তারা আসতে পারেনি। তবে দূরবর্তী যেসব গ্রামের যাতায়াত ব্যবস্থা তুলনামুলকভাবে কিছুটা ভালো ছিল, সেসব গ্রামে গিয়ে তারা বহু মানুষকে হত্যা করেছে এবং বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। পরবর্তী একটি পর্বে এ সম্পর্কে জানতে পারবে।


ধন্যবাদ বোন আনমনা।

২৬| ০২ রা জুন, ২০২০ দুপুর ২:০৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: আর আমি নিজের অবস্থান ঠিক করতে না পেরে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে লাগলাম - এই বাক্যটা পড়ার আগেই আমি বুঝে গিয়েছিলাম আপনার অবস্থাটা এরকমই হবে। একদম পারফেক্ট মিলে গেছে আমার ভাবনা ও আপনার বর্ণনা।
আপনার গল্পের যে সময়টাকে আপনি তুলে ধরেছেন, সে সময়ের আমিও একজন সাক্ষী, এবং আমরা দু'জন হুবহু একই বয়সের না হলেও, দু'জনের বয়সে হয়তো বড়জোর বছর খানেকের এদিক ওদিক ফারাক হবে। কাজেই ঐ সময়ের আপনার শারীরিক, মানসিক ইত্যাদি প্রক্রিয়া/প্রতিক্রিয়া আমারগুলোর মতই হবে, এ কথা বলাই বাহুল্য।
আপনি রাজশাহী ছেড়েছিলেন এপ্রিল একাত্তরে, আমি ঢাকা ছেড়েছিলাম ০৯ মার্চ, ১৯৭১ এ। আপনার গ্রাম মধুপুর, আমার গ্রাম লালমনিরহাট জেলার বিন্যাগাড়ী। আপনাকে ১৪/১৫ মাইল দুর্গম রাস্তা পাড়ি দিতে হয়েছিল গরুর গাড়ীতে, আমাকে মাত্র ২ মাইল, পায়ে হেঁটে। তখনকার দিনে চব্বিশ ঘন্টায় মাত্র তিনটে ট্রেন আমাদের লাইনে চলাচল করতো, দুটো দিনে সকাল বিকাল, একটা রাতে। স্টেশন থেকে বের হবার পর মহিলাদের জন্য গরুর গাড়ী ছাড়া অন্য কোন উপায় ছিল না, পুরুষদের জন্য পদব্রজে কিংবা সাইকেলে। দু'তিনটে গ্রাম মিলে খুঁজলে হয়তো দুই একজনকে পাওয়া যেত, যার একটি মটর সাইকেল আছে, সেটা দিয়েই ওরা মেঠো পথে ধূলো উড়িয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে চলাচল করতো।
পথের যে বর্ণনা দিলেন, এবং চেনা অচেনা গ্রামবাসীদের আন্তরিকতার, তা আমারও পরিচিত দৃশ্য। স্টেশন থেকে নেমে বাড়ীতে না পৌঁছানো পর্য্ন্ত হরেক মানুষের এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে যেতে হতোঃ বাবা, তোমরা অমুকের ব্যাটা নোঁঁয়াও? (বাবা, তুমি অমুকের ছেলে নও?), তোমরা কার ব্যাটা বাহে? (তুমি কার ছেলে বাবা?)
ছাগল ঠেলার মত করে ঠেলে এনে যাদেরকে আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো, তার মধ্যে একটি নাম (সর্দিবিহীন মুখ) আগামীতে এ গল্পের উল্লেখযোগ্য অংশ অধিকার করে থাকতে পারে, তার একটি সূক্ষ্ম আভাস পেলাম। আভাসটি অত্যন্ত সুচারুরূপে গল্পে বিন্যস্ত করা হয়েছে।
পোস্টে সপ্তদশতম প্লাস + +।

০২ রা জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: যেহেতু একই সময়ের ঘটনা, সেহেতু ঘটনা ও পরিবেশের মধ্যে মিল থাকা খুবই স্বাভাবিক। 'স্বপ্ন বাসর' উপন্যাসটি হুবহু সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা। বাস্তব ঘটনাকে উপন্যাসে রূপ দিতে গিয়ে যৎসামান্য পরিবর্তন ও পরিমার্জন করা হয়েছে। তবে তা' খুবই সামান্য। বলতে গেলে পুরো উপন্যাসটাই বাস্তব পটভূমির ওপর লেখা। আশা করি আপনার ভালো লাগবে।
পর্ব অনুযায়ী ক্রমানুসারে পড়লে ১৯৭১-এর আর একটি দৃশ্য দেখতে পাবেন। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার আশঙ্কায় প্রতিমন্তব্য সংক্ষিপ্ত করতে বাধ্য হলাম। ধন্যবাদ খায়রুল আহসান ভাই।

২৭| ১২ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:০০

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: প্রথম পাঠের তীব্র আবেগের অনুভূতিতে ফিরে যেতে আবারো পড়া শুরু করব.......

১৩ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:৩৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ম্যাডাম। দ্বিতীয়বার পাঠে প্রথমবারের মতো ভালো লাগা কাজ করবে কি না জানি না। জানা কাহিনী তো! তবুও পড়ে দেখ। হয়তো ভালো লাগতেও পারে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.