নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখালেখি

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মজৈবনিক উপন্যাসঃ স্বপ্ন বাসর (পর্ব- ১৫)

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:১৫



আত্মজৈবনিক উপন্যাসঃ স্বপ্ন বাসর (পর্ব-১৪)

আমার আঁখিজল কেহ না বোঝে
অবাক হয়ে সবে কারণ খোঁজে
কিছুতে নাহি তোষ-এ তো বিষম দোষ
গ্রাম্য বালিকার স্বভাব ও যে।

মেজ চাচীমার একজোড়া কানের দুল ছিল, তার একখানা হারিয়ে গেছে। এ ঘটনা আমাদের মধুপুর আসার মাসখানেক আগের। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তা’ উদ্ধার করা যায়নি। এখন সেই দুল নাকি আবার ফিরে পাওয়া গেছে। এ নিয়ে সকাল থেকে বাড়িতে হৈ চৈ।

আমি সবে ঘুম থেকে উঠেছি। আলেয়া ভীষণ উত্তেজিত হয়ে আমার ঘরে ঢুকে বললো, ‘মেজভাই, তাড়াতাড়ি এসো। দেখে যাও কী কাণ্ড হয়েছে।’ ক’দিন থেকে বৃষ্টি বাদলা না থাকায় আলেয়ার মুডও বেশ চাঙ্গা।
চোখ মুছতে মুছতে ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি, মেজ চাচা রান্নাঘরের সামনে দাঁড়িয়ে মেজ চাচীমাকে খুব ধমকাচ্ছেন। জানা গেল আজ সকালে ঢেঁকিতে ধান কুটে চাল বানানোর জন্য মেজ চাচীমা দু’কাঠা ধান গোলা থেকে বের করে উঠানে ঢালার পর সেই ধানের ভেতর থেকে হারিয়ে যাওয়া কানের দুল বেরিয়ে এসেছে। হারানো দুল ফিরে পেয়ে মেজ চাচীমা আনন্দে আত্মহারা হয়ে মেজ চাচাকে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। মেজ চাচা দুল দেখে খুশি হওয়ার বদলে রেগে বোম্। তাঁর ধারণা, এর আগে তাঁর স্ত্রী দু’কানে দুল পরে পটের বিবি সেজে গোলা থেকে ধান বের করার সময় একখানা দুল কান থেকে খুলে গোলার ভেতর পড়ে গেছে, যা তিনি টের পাননি। এদিকে এই হারানো দুল উদ্ধারের জন্য কী না করা হলো! অহেতুক যাকে তাকে সন্দেহ করা হলো, চাকর বাকরকে ধমকা ধমকি করা হলো, গুনিন আনা হলো, মন্ত্র পড়ে শুকনো চাল খাওয়ানো হলো, বাটি চালান দেওয়া হলো, আয়নাতে কাউকে না দেখেও ঝাপসা ঝাপসা একজনকে দেখা যাচ্ছে বলে হাউ কাউ করা হলো। গুনিন লিঙ্গ পরিচয় ঘোষণা করে জানালো, ঝাপসা মুখটি একজন মেয়েলোকের। বাড়ির মেয়েলোকদের মুখ শুকিয়ে গেল।

এখন সেই দুল যদি ধানের গোলা থেকে উদ্ধার হয় তো মেজ চাচার মাথা ঠিক থাকে কী করে? তাই তিনি মেজ চাচীমার চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করছেন। আর মেজ চাচীমা রান্নাঘরে চুলার সামনে বসে কেঁদে লুটোপুটি খাচ্ছেন।
আব্বা ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে উল্টো ধমক দিলেন মেজ চাচাকে। বললেন, ‘হয়েছে। অনেক হয়েছে। এখন চুপ কর্। মানুষের ভুল ভ্রান্তি হয় না? এ নিয়ে এত কথা কিসের?’
মেজ চাচা রণে ভঙ্গ দিলেন। কেঁচোর মতো নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে কেটে পড়লেন তিনি। সরকার বাড়ির বড় বউ আমার মা। তিনিই বা পিছিয়ে থাকবেন কেন? দুম দাম করে হেঁটে এসে রান্নাঘরের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি কষে ধমক দিলেন মেজ চাচীমাকে, ‘তুই কেন খামোখা ভ্যাদ ভ্যাদ করে কাঁদছিস? স্বামী একটু বকা ঝকা দিল কি দিল না, কেঁদে অস্থির! চুপ কর্, চুপ কর্ বলছি!’
কড়া ব্রেক কষে গাড়ি থামার মতো মেজ চাচীমার কান্নাকাটিও হঠাৎ করে থেমে গেল। যেন কিছুই হয়নি এমনভাবে চুলার ওপর গরম কড়াইতে তেল ও পেঁয়াজ কুচি ঢেলে খুন্তি দিয়ে নাড়তে লাগলেন তিনি। বড় ও ছোট চাচীমা চোরা দৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকিয়ে দ্রুত নিজ নিজ কাজে চলে গেলেন। চাকর বাকর সব মুহূর্তের মধ্যে উধাও। বাড়িতে যে সকাল বেলা কিছু একটা হয়ে গেল , তা’ যেন আলেয়া জানেই না। সে চাপকল থেকে এক জগ পানি এনে আমার হাত মুখ ধোয়ার জন্য বারান্দায় রেখে গামছা আনতে গেল।

আমার এই মেজ চাচীমা মানুষটা একটু আউলা কিসিমের। প্রায়ই এটা সেটা হারান। কখন কোথায় কী রাখেন মনে করতে পারেন না। এজন্য তাঁকে প্রচুর হেনস্থা হতে হয়। নিজের প্রতিরক্ষার জন্য মেজ চাচীমার একটাই অস্ত্র। জন্মসূত্রে পাওয়া আদি ও অকৃত্রিম কান্না। এ বস্তুটি মানুষের মন নরম করার জন্য সম্ভবত এক অব্যর্থ ওষুধ। মার খেয়ে দাগী চোরও যদি কেঁদে ফেলে তো মানুষের মন নরম হয়ে যায়। মেজ চাচীমা তাঁর আউলা স্বভাবের জন্য এ বাড়িতে যেমন সবচেয়ে বেশি সমালোচনার পাত্রি, তেমনি আবার মোক্ষম সময়ে হাউ মাউ করে কেঁদে ফেলার মতো অতুলনীয় নৈপুণ্যের কারণে এ বাড়িতে তিনি সবচেয়ে বেশি সহানুভূতি প্রাপ্ত সদস্যাও বটে। একইসাথে এমন বিচিত্র বিফল ও সফল মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

সেদিন ছিল শুক্রবার। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ না পড়লেও শুক্রবারে গ্রামের মসজিদে গিয়ে জুম্মার নামাজ পড়া আমাদের জন্য ছিল বাধ্যতামূলক। দাদাজান, আব্বা, তিন চাচা ও চাচাদের ছেলেরাসহ আমরা পাঁচ ভাই, বাড়ির কামলা-কিষাণ সবাইকে দল বেঁধে মসজিদে যেতে হয়। জুম্মার দিন কোন খাতির নাই। মসজিদে যাওয়ার আগে আলেয়া আমাদের সব ভাইয়ের গায়ে আতর মাখিয়ে দেয়। আতরের ভুর ভুর করা গন্ধে বাড়িতে ঈদ ঈদ ভাব চলে আসে।

আজ জুম্মার নামাজ শেষে দক্ষিণ পাড়ার দবিরউদ্দিন পরামানিক তাঁর মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে উপস্থিত সকল মুসল্লিকে দাওয়াত দিলেন। পরের শুক্রবার তাঁর মেয়ের বিয়ে। মধুপুরে এই এক রেওয়াজ। ছেলে বা মেয়ের বিয়ে ঠিক হলে জুম্মার দিন মসজিদে গিয়ে দাওয়াত দিতে হয়। সচ্ছল গৃহস্থের ছেলেমেয়ের বিয়েতে গ্রামের সবাইকে দাওয়াত দেওয়া এখানকার দীর্ঘদিনের সামাজিক রেওয়াজ। মসজিদে জুম্মার দিন দাওয়াত দিলে মোটামুটি গ্রামের সবাইকে দাওয়াত দেওয়া হয়ে যায়। অবস্থাপন্ন দু’চারটি গৃহস্থবাড়ি ছাড়া অন্যান্যদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আর বলে আসতে হয় না। অনগ্রসর অজ পাড়াগাঁয়ে এমন একটা ব্যবস্থা আমার কাছে মন্দ মনে হলো না। বাড়ি ফিরে আলেয়াকে ব্যাপারটা বলতেই সে অবাক হয়ে বললো, ‘ওমা, মরিয়মের বিয়ে ঠিক হয়ে গেল? জানিনা তো!’
আমি বললাম, ‘মরিয়মকে তুই চিনিস?’
আলেয়া হেসে বললো, ‘এইটুকু গ্রামে কে কাকে চেনে না বলো? মরিয়ম তো আমার সই। খুব ভালো মেয়ে। তোমরা আসার আগে ওর সাথেই তো সারাদিন ঘুরে বেড়াতাম।’
‘এখন বেড়াস না কেন?’
আলেয়া মাথা নিচু করে বললো, ‘তাহলে তোমাকে সঙ্গ দেবে কে?’
আমি আলেয়ার হাত ধরে একটু আড়ালে নিয়ে গেলাম। তারপর নিচু স্বরে ছড়া কেটে বললাম,
“লাজের কথা বলবো কি লো সই
মনের মানুষ ঢং করেছে
আমার মনেও রং ধরেছে
তোর সাথে যে যাবো আমি, সময় মেলে কই?”

‘মেজভাই!’ আলেয়া বিস্মিত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে ধীরে ধীরে লজ্জায় লাল হয়ে গেল। হতচকিত অবস্থার সাথে লজ্জার সংমিশ্রণে তার চেহারা হলো দেখার মতো। সে কোন রকমে বললো, ‘এসব গ্রাম্য ছড়া তুমি শিখলে কোত্থেকে?’
পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী তাৎক্ষণিকভাবে ছড়া কেটে কথা বলায় আমার যৎসামান্য পারদর্শিতা ছিল। কিন্তু সে কথা আর তাকে বললাম না। শুধু বললাম, ‘প্রেমে পড়লে মানুষ কবি হয়ে যায়, জানিস না?’
অল্প বিদ্যা ও স্বল্প বুদ্ধির গ্রাম্য মেয়ে। প্রেম ও কবিতার মধ্যে সম্পর্কের কথা সে জানবে কোত্থেকে? হতভম্ব আলেয়া আমার সামনে থেকে পালাতে পারলে বাঁচে। ‘ভাত খেতে এসো’ বলে সে সত্যি সত্যিই ছুটে পালালো।

পরামানিকের তিন মেয়ের মধ্যে মরিয়ম সব ছোট। তার বড় দু’বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। গ্রাম্য ভাষায় ‘মায়ের কোল মুছা’ এই ছোট মেয়েটির বিয়েতে পরামানিক আয়োজনের কোন ঘাটতি রাখলেন না। মসজিদে সার্বজনীন নিমন্ত্রণ দেবার পরেও সরকার বাড়িসহ গ্রামের অবস্থাপন্ন বাড়িগুলিতে তিনি নিজে গিয়ে নিমন্ত্রণ দিয়ে এলেন। মানী লোকেদের এভাবে বিশেষ দাওয়াত দেওয়াটাও নাকি এই এলাকার নিয়ম।
সরকার বাড়িতে এসে পরামানিক দাদাজানের পা ছুঁয়ে সালাম করে বললেন, ‘বাপজান, আমার বাপ ইন্তেকাল করার পর থেকে আপনিই কিন্তু মরিয়মের দাদা। নাতনির বিয়েতে না গেলে সে বড় কষ্ট পাবে। আপনাকে কিন্তু যেতেই হবে বাপজান।’
আব্বার দুই হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে পরামানিক বিনয়ের সাথে বললেন, ‘ভাইজান, আপনি তো অনেক দিন গ্রামে থাকেন না। এবার যখন আছেন, তখন ভাবী ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই গরিবের বাড়িতে এসে দুটো ডাল ভাত খেয়ে আমার মেয়ে জামাইকে একটু দোয়া করে যাবেন।’
পরামানিক সরকারদের চেয়ে মোটেই অসচ্ছল গৃহস্থ নন। অথচ সরকার বাড়িতে এলে তিনি বিনয়ের অবতার। এমনভাবে কথা বলেন যেন তিনি সরকার বাড়ির দয়া দাক্ষিণ্যেই বেঁচে আছেন। তিনি আমার মায়ের চেয়ে বয়সে বড় হলেও মায়ের পা ছুঁয়ে সালাম করলেন। তারপর হাত কচলে বললেন, ‘ভাবীজান, আপনি আমার ভাবী হলেও ভাবী, মা হলেও মা। আপনি না গেলে কিন্তু আপনার এই দেবরের গলা দিয়ে ভাত নামবে না। মেয়েটা আমার বড় কষ্ট পাবে।’

এভাবে বাড়িসুদ্ধ সবাইকে বিয়েতে যাওয়ার জন্য অপরিসীম তোয়াজ করে পরামানিক চলে গেলেন। বড়ভাই পরামানিকের ব্যবহার ও কথাবার্তায় মুগ্ধ। তিনি বড় চাচাকে বললেন, ‘লোকটা খুবই ভালো। এত করে বলছে, বিয়েতে আমাদের সবার যাওয়া উচিৎ।’
বড় চাচা হেসে বললেন, ‘বিয়েতে তো যেতেই হবে। গ্রামে সমাজ আছে না! তবে ঐ যে তুমি বললে লোকটা খুব ভালো, পরামানিককে তোমরা চেন না বলেই বললে। ও লোক মোটেই ভালো নয়। আমাদের দক্ষিণ পাড়ার জমির সীমানা আইল ভেঙ্গে ফেলে গত বছর সে সালিস বৈঠক, মামলা মোকদ্দমা কত কী করেছে তা’ তো জানো না। তোমার আব্বা সবই জানেন। আমাদের বংশে একজন উকিল আছে দেখে পরামানিক সরকার বংশের সম্পত্তি নিয়ে বেশি তেলেসমাতি করতে সাহস পায় না। কিন্তু এই বদমাশ গ্রামের কত গরিব মানুষের জমি জমা খাবলা মেরে কেড়ে নিয়েছে, তা’ জানো?’
বড় চাচা একটু থেমে বললেন, ‘ভীষণ মামলাবাজ লোক। কারো সাথে একটু খিটিমিটি হলেই মিথ্যে মামলা ঠুকে দেয়। বিস্তর টাকা পয়সা থাকায় গরিব মানুষ ওর সাথে পেরে ওঠে না।’
আমার বড় বোন অবাক হয়ে বললেন, ‘বলেন কী চাচা? দেখে তো মনে হয় ফেরেশতার মতো মানুষ।’
বড় চাচা বললেন, ‘চালাক লোক। দুশমনকে বসার জন্য বড় পিঁড়ি এগিয়ে দেয়।’
আব্বা বড় বোনকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘এসব হলো ভিলেজ পলিটিক্স। তোমরা বুঝবে না মা।’
আলেয়া অনেকক্ষণ থেকে কিছু বলার জন্য উস খুস করছিল। এবার সুযোগ পেয়ে সে বললো, ‘পরামানিক চাচা মাটির মানুষ। আমার সাথে দেখা হলে মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে।’

আলেয়ার কথা শুনে বড়রা সবাই হো হো করে হেসে উঠলেন। বড় চাচা বললেন, ‘তুই ঠিকই বলেছিস। তোর পরামানিক চাচা আসলেই মাটির মানুষ। তা’ নাহলে গরিবের মাটি কেউ গিলে খায়? মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে বলে মেয়ে আমার কী খুশি! যা ভাগ্ এখান থেকে। আহাম্মক কোথাকার!’
কথার মধ্যে ভুল কী হলো আলেয়া বুঝতে পারলো না। বাপের ধমক খেয়ে সে শুকনো মুখে উঠে চলে গেল। আমি ওদের বাপ বেটির কথা শুনে আর হাসি থামাতে পারি না। হাসি হলো সংক্রামক রোগের মতো। আমার দেখাদেখি বাড়ির সবাই হাসতে লাগলো। ছোট চাচীমা আলেয়ার হয়ে ওকালতি করে বললেন, ‘ছোট মেয়ে, এত প্যাঁচ ঘোচ বোঝার মতো কী ওর বয়স হয়েছে? শহরে গিয়ে সংসার করতে লাগলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’ বলে তিনি হাসি হাসি মুখ করে আমার দিকে তাকালেন। আমি মাথা নিচু করে উঠে ঘরে চলে গেলাম।
আলেয়া আমার বিছানার চাদর বদলে দিয়ে কাপড় চোপড় গুছিয়ে আলনায় রাখছিল। আমাকে দেখে সে মুখ বাঁকা করে বললো, ‘পুরুষ মানুষ যে মেয়ে মানুষের মতো এত হাসতে পারে জীবনে প্রথম দেখলাম।’
আমি হাসি চেপে রেখে বললাম, ‘তোর জীবন আর কয় দিনের? আরো কত কী দেখবি!’
আলেয়া গোমড়া মুখে ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল, আমি ওর একটা হাত ধরে নিজের দিকে টেনে আনার চেষ্টা করলাম। কিন্তু সে এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে বললো, ‘আজ সারাদিন তুমি আমার সাথে কথা বলবে না।’
‘কাল থেকে বলতে পারবো তো?’
আলেয়া কঠিন চোখে কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর গজর গজর করতে করতে বেরিয়ে গেল ঘর থেকে।
*****************************************************
আত্মজৈবনিক উপন্যাসঃ স্বপ্ন বাসর (পর্ব-১৬)

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:৫৯

ইসিয়াক বলেছেন: সুপ্রভাত প্রিয় লেখক ।
পড়ে মন্তব্যে আসছি ..

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:৫৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সুপ্রভাত।

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:১৮

ইসিয়াক বলেছেন: চাল পড়া খাওয়া । জুম্মারদিনের নামাজ আতর মাখা ........পুরনো স্মৃতি দারুণভাবে ফিরে এলো ।
আমারো একজন চাচী ছিলেন ঝগড়াটে টাইপে .....।যেই দেখতেন ঝগড়ায় হেরে গেছে অমনি কান্না জুড়ে দিতেন তারপর আর কি বলবো ......।ভালো লাগছে।
আজ একটু বিস্তারিত মন্তব্য করলাম ।
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সর্বদা।
শুভকামনা জানবেন।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:০১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আমার সুস্থতার জন্য যারা দোয়া করেন, তাদের সবাইকে আল্লাহ যেন ভালো রাখেন এই দোয়া করি। আল্লাহ আপনাকেও সুস্থ রাখুন, ভালো রাখুন।
মোবাইলে বিস্তারিত মন্তব্য লেখা খুব সমস্যা। কষ্ট করে লেখার দরকার নাই। নিয়মিত উপন্যাসটি পড়ছেন, এটাই যথেষ্ট।

ধন্যবাদ ভাই ইসিয়াক।

৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:০০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



বিমুগ্ধ হয়ে পাঠ করলাম ।
গ্রামে পরামানিকদের মত লোক থাকবেই ।
এদেরকে তারাই ভাল চিনবে যারা তাদের কাছে ধরা খেয়েছে।
আলেয়ার পক্ষে এই সময়ে এদের স্বরূপ সহজে চিনার কথা না ।
সে সরল মনে যা দেখে সকলি তার কাছে সরল হয়েই ধরা দেয়।
আলেয়ার আজকের গজর গজর কাল আপনাক কেমন
আছর করে দেখার অপেক্ষায় রইলাম ।
শুভেচ্ছা রইল

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:০৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হাঃ হাঃ হাঃ। ২৫০ টাকা কেজি পেঁয়াজের বাজারে কয়েকদিন থেকে আমার মুখে হাসি নাই। আজ আপনার কল্যানে সকাল বেলাতেই একটু প্রাণ খুলে হাসলাম।


ধন্যবাদ ভাই ডঃ এম এ আলী।

৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:০০

ইসিয়াক বলেছেন: আর হ্যাঁ আজকের শেষের অংশটুকু দারুণ রোমান্টিক।
অসম্ভব রকমের বাস্তব বর্ণনা ।
আপনি খুব শক্তিশালী একজন লেখক।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:১০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। লেখকের কাছে পাঠকের সন্তুষ্টি সবার আগে।


আমি অতি সাধারণ মানের একজন লেখক। আমার চেয়ে অনেক ভালো ভালো লেখক এই ব্লগেই আছেন। তাদের নখের যোগ্যতাও আমার নেই। তারপরেও আপনার প্রশংসার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই ইসিয়াক।

৫| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:১৯

সাদা মনের মানুষ বলেছেন:

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:২৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ঠ্যাং খাও। মানে ধন্যবাদ।

৬| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: মেয়েদের গহনা অনেক মূল্যবান। হারিয়ে গেলে ভীষন খারাপ লাগে।
আলেয়া চমৎকার একটা মেয়ে। দারুন মায়াবতি।
ঘরে ঘরে এরকম মেয়ে দরকার।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:২৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই রাজীব নুর।

৭| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:০১

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: যদি আপনি মাথায় হাত রাখেন এবং বসার জন্য পিরে দেন তবে তখন আপনি সমস্ত কিছু নিতে পারবেন কারন মানুসের কাছে তখন ভাল হিসাবে প্রমাণিত ।
একে বলা হয় গ্রামের রাজনীতি এবং বাইরে থেকে তাদের খুব ভাল মনে হলেও এই ধরণের লোকেরা সমাজের পক্ষে খুব ক্ষতিকারক ।
আপনার লিখনি দ্বারা, আপনি আবার গ্রামীণ সংস্কৃতির (চাল পড়া,সবাই একসাথে জুমমার নামাজে যাওয়া,যৌথ পরিবারের সদস্যেদের সম্পর্ক এবং চরিত্র)সমস্ত কিছুর সাথে আমাদের নতুন করে পরিচিত করছেন ।

অবশেষে, আলেয়া ।তিনি আপনার সমস্ত দায় দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত হয়ে চলেছেন দিনে দিনে সীমিত সময়ের মধ্যে।
এবং আপনার হালুয়া হওয়ার :(( জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত ।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:০৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: অবশেষে, আলেয়া ।তিনি আপনার সমস্ত দায় দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত হয়ে চলেছেন দিনে দিনে সীমিত সময়ের মধ্যে।
এবং আপনার হালুয়া হওয়ার :(( জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত ।


আমি প্রস্তুত। হাঃ হাঃ হাঃ।

ধন্যবাদ ভাই মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।

৮| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:১৬

কিরমানী লিটন বলেছেন: খুব ভালোলাগা - চমৎকার পোস্টে ধন্যবাদ।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই কিরমানী লিটন।

৯| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:১৫

মা.হাসান বলেছেন: মেজচাচি কে খুব সরল লোক মনে হলো, তবে তার ভুলো মনের জন্য কারো কারো (গুনিন) কামাই রোজগার হলো, আবার কারো কারো নাজেহাল অবস্থা।
পরামানিক কাকুর মতো লোক মনে হয় আগে সব গ্রামেই থাকতো। এরকম লোকের কথা শুনেছি, তবে গ্রামে থাকা হয় নি বলে সরাসরি এদের কর্মকান্ড দেখার সুযোগ হয় নি।

আজ সারাদিন কথা বন্ধ! আমার তো মনে হয় কথা বন্ধ হয়ে থাকলে আপনার চেয়ে ভাবিই পেট ফুলে বেশি কষ্ট পাবেন । দেখা যাক কাল কি কয়।

মনে হয় সিরিজটি শেষের দিকে আসছে (১৬ পর্বের কাছাকাছি, এরকম আভাস দিয়েছিলেন)। শেষ হয়ে গেলে প্রতিদিন এই রোমান্সের রোমাঞ্চকর বর্ননা থেকে বঞ্চিত হবো।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:০৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আমি দুঃখিত। উপন্যাসটি ১৬ পর্বের নয়, ১৯ পর্বের। আসলে হার্ড কপিতে নাম্বারিং করা নাই তো, তাই সঠিক পর্ব সংখ্যা উল্লেখ করতে পারিনি।

হাঁ, পরামানিক চাচার মতো মানুষ সেই যুগে অধিকাংশ গ্রামেই দেখা যেত। বর্তমান যুগেও আছে, তবে তা' অন্য ফরম্যাটে।

উপন্যাসটি প্রায় শেষের দিকে। শেষের ঘটনাগুলো লিখতে গিয়ে এই আটচল্লিশ বছর পরেও আমার হাত পা কাঁপছে। ভয়ে এই উপন্যাসটি আমি পড়ি না। কিন্তু ব্লগে পোস্ট করার কারণে পড়তেই হচ্ছে। দোয়া করুন, যেন আমি সহি সালামতে পুরো উপন্যাসটি ব্লগে পোস্ট দিতে পারি।

ধন্যবাদ ভাই মা, হাসান।

১০| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৪০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাহ!
বরাবরের মতোই দারুন সাবলীল।
মাঝে ক'দিন পগতে পারিনি কাজের চাপে! আজ সবগুলো একবারেই চেটেপুটে খেয়ে নিচ্ছি ;)
ভালই হল অপেক্ষার বদলে একবারে অনেক গুলো :)

যাই তারপর কি হলো দেখি :)

২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ঠিক আছে। প্রতিদিন পড়া সম্ভব নাও হতে পারে। এটা খুবই স্বাভাবিক। আপনার সুযোগ সুবিধা মত সময়ে পড়বেন।


ধন্যবাদ ভাই বিদ্রোহী ভৃগু।

১১| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫৩

করুণাধারা বলেছেন: একটা কথা জানার ছিল; আপনি সরকার বাড়ির ছেলে, কিন্তু নামের শেষে সরকার নেই কেন?

২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:১৭

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আপনি একটা ভালো প্রশ্ন করেছেন। যৌক্তিক প্রশ্ন। আসলে আমার আব্বা পর্যন্তই সরকার টাইটেলটি ছিল। যেমন আমার আব্বার নাম ছিল আব্দুল হামিদ সরকার, দাদাজানের নাম ছিল ওসমান গনি সরকার, দাদাজানের বাবার নাম ছিল রমজান আলি সরকার। এ পর্যন্ত আমার জানা আছে। এই কারণে গ্রামের মানুষ দাদাজানের বাড়ি বলতে সরকার বাড়ি বুঝতো এবং এই বাড়ি প্রসঙ্গে কথা উঠলে সবাই বলতো 'সরকার বাড়ি'।

কিন্তু আব্বা ও মায়ের যৌথ ইচ্ছায় আমাদের ভাইবোনদের নামের সাথে 'সরকার' টাইটেলটি যোগ করা হয়নি। কেন হয়নি, সে প্রশ্নের কোন সন্তোষজনক উত্তর আমরা বাবা মার কাছ থেকে পাইনি কোনদিন। হয়তো তাদের কাছে টাইটেলটি ব্যাকডেটেড মনে হয়েছে, যা শহরে চলে না অথবা অন্য কোন কারণ থাকতে পারে। আমি ঠিক জানি না। তবে সরকার টাইটেলটি বাদ দেওয়া আমার কাছে ঠিক মনে হয়নি। দাদাজানও এ ব্যাপারে অসন্তুষ্ট ছিলেন বলে শুনেছি। কিন্তু এ নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য হয়নি।

ধন্যবাদ বোন করুণাধারা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.