নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।
শ্বাসরুদ্ধকর ব্যাটারি পার্ক নিউ ইয়র্ক সিটির ব্যস্ত মহানগরীর মধ্যে একটি শান্ত স্থান। এই পার্কটি ম্যানহাটনের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। এটা একটি ঐতিহাসিক পার্ক। এই পার্কটির আনুষ্ঠানিক নাম হচ্ছে দ্য ব্যাটারি। এই পার্কটির সমৃদ্ধ ইতিহাস, সবুজ ল্যান্ডস্কেপ এবং মনোমুগ্ধকর ওয়াটারফ্রন্ট দৃশ্যের মুগ্ধ করে।
ইতিহাসের মাধ্যমে হাঁটা:
নিউ ইয়র্ক সিটির গোড়াপত্তনের সময় থেকে ব্যাটারি পার্কের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। মূলত ১৭ শতকের শেষের দিকে এই স্থানটিকে একটি প্রতিরক্ষামূলক দুর্গ হিসাবে নির্মাণ কর হয়। সমুদ্রপথে আক্রমণ থেকে নিউ ইয়র্ক সিটিকে রক্ষা করার জন্য এখানে এটি আর্টিলারি ব্যাটারি স্থাপন করা হয়। এখন থেকে এই পার্কার নাম হয়েছে ব্যাটারি পার্ক। আস্তে আস্তে এই স্থানটিকে একটি বিনোদনমূলক স্থানে রূপান্তর করা হয়েছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী জুড়ে এই পার্কটি অসংখ্য ঐতিহাসিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে। তাই এই পার্কটি নিউ ইয়র্ক সিটির বিকাশের একটি জীবন্ত সাক্ষী।
ক্যাসেল ক্লিনটন জাতীয় স্মৃতিসৌধ:
পার্কের প্রসিদ্ধ ল্যান্ডমার্কগুলির মধ্যে একটি হল ক্যাসেল ক্লিনটন ন্যাশনাল মনুমেন্ট। ১৯ শতকের গোড়ার দিকে ডিজাইন করা এই বৃত্তাকার বেলেপাথরের দুর্গটি বর্তমানে একটি বিনোদন স্থান। আগে এটা অভিবাসন প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র এবং সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। নিউ ইয়র্ক সিটি গড়ে উঠার পিছনে অভিবাসীদের বিরাট ভূমিকা আছে। আর এই অভিবাসন প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র দিয়েই হাজার হাজার অভিবাসী আমেরিকাতে প্রবেশ করেছে। এই অভিবাসন কেন্দ্রটি আমেরিকার অভিবাসীদের ইতিহাসের একটা স্মারক চিহ্ন হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে।
উদ্যান:
ব্যাটারি পার্কের মধ্যে দিয়ে হাঁটার আনন্দ আলাদা অনুভূতির সৃষ্টি করে। পার্কার ভিতর এমন ভাবে ফুলের বাগান বানানো হয়েছে যে হাঁটার সময় মনে হবে সবুজ গালিচার উপর দিয়ে হাঁটছেন। আবার সবুজ গালিচার মাঝে মাঝে ফুলের বাগান। নিউ ইয়র্ক সিটির ব্যস্ততার মাঝে ফুল এবং সবুজের সমারোহ শরীর ও মনের মধ্যে প্রশান্তি নিয়ে আসে। পার্কের পরিবেশগত বৈচিত্র্য আনার জন্য দেশীয় গাছ এবং গুল্মের একটি বনাঞ্চল সৃষ্টি করা হয়েছে। শহরের মধ্যেই গভীর বনের ছায়া।
সীগ্লাস ক্যারোসেল:
বাচ্চারা এই ক্যারোসোলটিই বেশ আনন্দ পায়। মাছ আকৃতি বাহনে চড়ে যেন সমুদ্র ভ্রমণ। কাঁচ এবং লাইট দিয়ে এমন একটা আবহ তৈরি করা হয়েছে যে ক্যারোসোলটিতে চরলে মনে হয় মাছের পিঠে করে সমুদ্র ভ্রমণ করা হচ্ছে। মনে হবে মাছগুলি যেন সমুদ্রের পানির নিচ দিয়ে যাচ্ছে।
ওয়াটারফ্রন্ট দিয়ে হাঁটা:
ব্যাটারি পার্কার প্রান্ত ঘেঁষে সমুদ্রের তীর ধরে পায়ে চলার পথ। এখন দিয়ে হাঁটলে বা দাঁড়ালেই নিউ ইয়র্ক হারবার, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি এবং এলিস আইল্যান্ডের শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য দেখা যায়। যখন কেউ এখন থেকে শহরের আকাশরেখার বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকা লেডি লিবার্টির মহিমা দেখতে থাকে তখন সমুদ্রের হাওয়া সারা শরীরে স্পর্শ করে শরীর এবং মন জুড়িয়ে দিবে। এখানে সূর্যাস্তের দৃশ্য সত্যিই অবিস্মরণীয় এবং ফটোগ্রাফি উৎসাহীদের জন্য নিখুঁত একটি পটভূমি।
অলস সময় কাটানোর নানা কার্যক্রম:
ব্যাটারি পার্ককে নান কিছু করে বা কোন কিছু না করেই সময় কাটানো যায়। এখানে উন্মুক্ত দাবা খেলা চলছে। যারা দাবা খেলায় উৎসাহী তারা এখানে যে কারো সাথে দাবা খেলতে পারেন। কেউ যদি দাবা খেলায় সিরিয়াস হন তাহলে এখানে সিরিয়াস দাবা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন। অথবা কোন বন্ধুত্বপূর্ণ দাবা খেলায় যোগ দিতে পারেন। কারো যদি কোন কিছু করার ইচ্ছা না থাকে তাহলে খুব সুন্দর করে সাজানো লনে বন্ধু অথবা পরিবারের সাথে পিকনিক করতে পারে। পার্কটিতে সবসময় নানান মৌসুমি ইভেন্ট, কনসার্ট এবং পারফরম্যান্সের আয়োজন করে। ইচ্ছা হলে টিকেট কেটে এইগুলি উপভোগ করা যায়।
স্ট্যাচু অফ লিবার্টি এবং এলিস দ্বীপে ভ্রমণ:
কেউ যদি স্ট্যাচু অফ লিবার্টি এবং এলিস দ্বীপে ভ্রমণ করতে চায় তাহলে ব্যাটারি পার্ক হল স্ট্যাচু অফ লিবার্টি এবং এলিস দ্বীপের প্রবেশদ্বার। স্ট্যাচু অফ লিবার্টি এবং এলিস দ্বীপে যাওয়ার ফেরিগুলি এখন থেকেই ছেড়ে যায়। কেউ যদি অভিবাসীদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে এবং নিউ ইয়র্কের বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীর ভাবে উপলব্ধি করতে চায় তাহলে এখন থেকে ফেরিতে করে এলিস দ্বীপে যেতে পারে।
কেউ যখন ব্যাটারি পার্কের মনোমুগ্ধকর ল্যান্ডস্কেপের মধ্য দিয়ে ঘুরে বেড়ায় এবং এর ঐতিহাসিক চিহ্নগুলি দেখে তখন সে এর অনন্য নির্মলতা এবং শহুরে প্রাণবন্ততায় মুগ্ধ হয়। নিউ ইয়র্ক সিটিতে এই লুকানো রত্নটি দেখার সুযোগ কেউ মিস করবেন না। এটি ম্যানহাটনের ব্যস্ত রাস্তার মধ্যে প্রশান্তি একটি মরূদ্যান।
ছবি: আমার মোবাইল ফলের ক্যামেরায় তোলা।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:০৮
শেরজা তপন বলেছেন: আপনি ভাল লিখেন। লিখার পাশাপাশি ব্লগারদের পোস্টে নিয়মিত মন্তব্য করলে তাঁর উৎসাহ পাবে আপনার লেখাও বেশ মনযোগ নিয়ে পড়বে।
নিয়মিত লিখলে এই পারস্পারিক সম্পর্কটা খুব জরুরী।