নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।
আজকে আমরা ওয়াশিংটন, ডিসির রুজভেল্ট আইল্যান্ড পার্কে বেড়াতে যাবো। এই পার্কটি ওয়াশিংটন, ডিসিতে হলেও পর্যটকদের কাছে কম পরিচিত একটা জায়গা। যদিও ওয়াশিংটন, ডিসি ওয়াশিংটন মনুমেন্ট এবং লিঙ্কন মেমোরিয়ালের মতো আইকনিক ল্যান্ডমার্কের জন্য বিখ্যাত কিন্তু এই শান্তিপূর্ণ এবং মনোরম দ্বীপ পার্কটি শহরের কোলাহল থেকে ভিন্ন ধরণের একটা স্থান৷
আইল্যান্ডে কি ভাবে যাবেন:
ভার্জিনিয়া এবং ওয়াশিংটন, ডি.সির মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত পোটোম্যাক নদীর মধ্যে এই দ্বীপ পার্কটি অবস্থিত। দ্বীপ হলেও রুজভেল্ট আইল্যান্ড পার্কটিতে নানাভাবে সহজেই এবং সুবিধাজনকভাবে প্রবেশ করা যায়। ভার্জিনিয়া থেকে একটি সুন্দর ফুট ব্রিজ দ্বীপটিকে মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত করেছে। এই ফুট ব্রিজ পার হয়ে দ্বীপে প্রবেশ করতে হয়।
দ্বীপ পার্কের পরিকল্পনা এবং নকশা:
দ্বীপটি প্রকৃতি দ্বারা বেষ্টিত একটি শান্ত মরূদ্যানের মত। পার্কটি ১৯৬৭ সালে আমেরিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতাদের একজন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টকে সম্মান জানাতে উৎসর্গ করা হয়েছিল। এই পার্কে নীল এস্টার্ন দ্বারা ডিজাইন করা প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের ১৭ ফুট উঁচু একটি ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য আছে।
প্রকৃতির সাথে মিল রেখে পার্কটিকে এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে চারিদিকে ঘন জঙ্গল, জঙ্গলের ভিতর দিয়ে আঁকাবাঁকা পথ কখনো নদীর তীর ঘেঁষে আবার কখনো গহীন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে চলে গেছে। এছাড়াও আছে বোর্ডওয়াক। এতে আপনি জলাভূমির মধ্যে দিয়েও হাঁটতে পারবেন। হাঁটতে হাঁটতে দেখতে পাবেন বিভিন্ন প্রজাতির পাখি এবং বন্যপ্রাণী।
প্রকৃতি এবং বন্যপ্রাণী:
রুজভেল্ট আইল্যান্ড পার্ক প্রকৃতি প্রেমী এবং পাখি পর্যবেক্ষকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান। আপনি বনপথ দিয়ে ঘুরাঘুরি করার সময় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি যেমন হেরন, পেঁচা, কাঠঠোকরা আরো নানান ধরণের পাখি দেখতে পাবেন। বনফুল সহ যত্ন করে লাগানো নানান ফুল এবং প্রাকৃতিক ভাবে জন্ম নেয়া নানান দেশীয় গাছ সহ বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদ দেখতে পাবেন। বৈচিত্র্যময় গাছগুলি সারা বছর ধরে রঙের একটি শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্যের জন্ম দেয়।
পার্কের অন্যতম আকর্ষণ হল পূর্ব দিকের জলাভূমি এলাকা। এখানে আপনি বিভিন্ন ধরণের জলজ উদ্ভিদ এবং এমনকি কচ্ছপগুলিকে ভাসমান গাছের কাণ্ডে বসে সূর্যস্নান করতে দেখবেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশের কারণে এই দ্বীপ পার্কটি একটি আদর্শ পিকনিকের স্থান হিসাবে বিবেচিত হয়। অনেকই আসে শহরের কোলাহল থেকে মুক্ত হয়ে রিলাক্স করতে এবং প্রকৃতির মাঝে বসে বই পড়তে।
ট্রেইল এবং হাইকিং:
শুধুমাত্র ভ্রমণ পিপাসী বা অবসর সময়ে হাটাহাটি বা ফিটনেসের জন্য জগিং যাই হউক না কেন রুজভেল্ট আইল্যান্ড পার্ক একটা আদর্শ জায়গা। পার্কের ভিতরের মূল পথটি উডস ট্রেইল নামে পরিচিত। ফুট ব্রিজটি পার হয়ে দ্বীপে ঢুকার পর উডস ট্রেইল ধরে হাঁটতে থাকলে আপনাকে একেবারে দ্বীপের কেন্দ্রস্থলে নিয়ে যাবে।
আর আপনি যদি দুঃসাহসিক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান তাহলে মূল পথ থেকে বেরিয়ে এসে আপল্যান্ড ট্রেইলটি ধরে অগ্রসর হতে পারেন। এই ট্রেইল দিয়ে হাঁটলে আপনি পোটোম্যাক নদী এবং আশেপাশের ল্যান্ডস্কেপের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে পাবেন। এখন থেকে শহরের স্কাইলাইনের অত্যাশ্চর্য দৃশ্যগুলি দেখতে পাবেন৷
মনকে শান্ত করুন, শিথিলায়ন করুন:
রুজভেল্ট আইল্যান্ড পার্ক শুধুমাত্র প্রকৃতির সাথে সংযোগ স্থাপন করার জায়গা নয় বরং মনকে শান্ত করার একটা জায়গা। চার একর জায়গায় সোয়াম্প ট্রেইল, শান্ত মেমোরিয়াল প্লাজা, ক্যাসকেডিং জলপ্রপাত, প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের বিশাল আকৃতির ভাস্কর্য সব মিলিয়ে প্রকৃতির সাথে মনকে শান্ত এবং শিথিল করার জন্য একটা উপযুক্ত স্থান।
কিছু টিপস:
১. দ্বীপটিতে ভ্রমণের সাথে সাথে একটি পিকনিকের পরিকল্পনা করুন: বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সাথে পিকনিক করার জন্য সাথে খাবার নিয়ে আসুন। পিকনিক উপভোগ করার জন্য একটি ছায়াময় স্থান খুঁজে বের করুন।
২. আরামদায়ক জুতা পরে আসবেন: বিভিন্ন ট্রেইল এবং পথ ঘুরে দেখার সময় হাঁটার জন্য উপযোগী আরামদায়ক জুতা পরুন।
৩. বাইনোকুলার এবং ক্যামেরা: পাখি এবং বন্যপ্রাণী ভাল ভাবে দেখার জন্য এবং ছবি তুলার জন্য দূরবীন এবং ক্যামেরা সাথে নিয়ে আসুন।
৪. ঋতু পরিবর্তন: একেক ঋতুতে দ্বীপটি দেখতে একেক রকম। তাই দ্বীপের পূর্ণ সৌন্দর্য দেখতে বিভিন্ন ঋতুতে আসার কথা চিন্তা করুন।
৫. বন্যপ্রাণীকে সম্মান করুন: মনে রাখবেন যে পার্কটি বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর জন্য একটি প্রাকৃতিক আবাসস্থল। তাই প্রাণী থেকে সম্মানজনক দূরত্ব বজায় রাখুন এবং বন্যপ্রাণীকে বিরক্ত করা এড়িয়ে চলুন।
শেষ কথা:
ওয়াশিংটন, ডিসিতে যখন আসবেন তখন এই দ্বীপ পার্কটি ভ্রমণ করতে ভুলবেন না। রুজভেল্ট আইল্যান্ড পার্কের নির্মল সৌন্দর্য উপভোগ করুন৷ প্রকৃতির সাথে সংযোগ স্থাপন করুন এবং একজন অসাধারণ নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করুন যিনি আমেরিকার ইতিহাসে একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে গেছেন।
ছবি: মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় তোলা।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২৩ রাত ১:১২
রাজীব নুর বলেছেন: ছবি উ লেখা সুন্দর।