![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
থাকি আমি নিজের ভুবনে, এক হেঁটে বেড়ানো আমার নেশা। যোজন যোজন দূরের নখত্রলোক আমার আবাস।
মেয়েটা ঘন ঘন শ্বাস নিচ্ছে আর মনে মনে হাজারটা গালি দিচ্ছে তার মামাকে।পারলে ঠাস করে একটা থাপ্পর মেরে দিবে তার সামনে বসা ছেলেটিকে।
কিটকিটে কালো রঙের একটা ছেলে বসে আছে তার সামনে,কথা বললেই কেবল ফিকে হলুদ রঙয়ের দাঁতগুলো বুঝা যাচ্ছে তার। বাকি বাদ গায়ের রঙ আর আলকাতরার মধ্যে কোন পার্থক্য নাই,মনে মনে ভাবছে সুচিন্তা।
ছেলে কোটিপতি বাপের একমাত্র সন্তান, উত্তরায় ১৫ তলা ২ টা ফ্ল্যাট আছে, মোহাম্মদপুরে ৫ তলা ৪ টা বাড়ি,বসুন্ধরা সিটিতে ১১ ফ্ল্যাট বুকিং দেওয়া আছে তার নামে।তার উপর সাভারে ২ টা গার্মেন্টস কারখানা, সিলেটে ১ টা চায়ের বাগান আরো হিসাবহীন বহুত জিনিস আছে তার,নামে এক কথায় শিল্পপতি।
এই ছেলে পাওয়া আর আমাবস্যায় চাঁদ খুঁজে পাওয়া নাকি একই কথা এমনটিই মনে করে তার বাড়ির লোকজন।তাই এক কথায় রাজি হয়েগেছে ছেলের পস্তাবে।ছেলে নিজে পছন্দ করেছে সুচিন্তাকে।
দেখতে সুচিন্তা একেবারে পরীর মত সুন্দর, গায়ের রঙ উজ্জ্বল ফর্সা আর চোখের মণির রঙ বেগুনী।
আপনার যদি কোন পছন্দ আছে? হঠাৎ করেই জিজ্ঞেস করলো ছেলেটি সুচিন্তাকে।
পছন্দ থাকলে কি আর না থাকলে কি, তার মত গরীব ঘরের মেয়ের কথার কি কোন দাম আছে নাকি?
সুচিন্তা মনে মনে আজ অনেক খুশি, আজ তার বিয়ে।বিয়ের দিনে মেয়েরা সাধারণত একটু নার্ভাস থাকে কিন্তু সে মোটেও আজ নার্ভাস না। যে মেয়ে বিয়ে না করার জন্য সুইসাইড করতে চেয়েছিল হঠাৎ করে এতো হাঁসিখুশি দেখে তার মামা একটু চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই বড় আসবে। সেই কালো কিটকিটে রঙের বর, যার কিনা ঢাকা শহরে অনেক বাড়ি-গাড়ি এক কথায় শিল্পপতি আরকি।নাম হাসিব খান, লোকে হাসিব সাহেব নামে ডাকে।সুচিন্তার মামা তাদের সিলেটের চায়ের বাগানের কেয়ারটেকার।
সুচিন্তা ঢাকা ভার্সিটির কোন এক ভেকেশনে সিলেট বেড়াতে গিয়েছিল এবং সেখানেই হাসিব তাকে দেখে এবং প্রথম দেখাতেই তার মামার কাছে প্রস্তাব পাঠালে তার মামা সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান।বাব-মা মরা মেয়েটা যে এতো লক্ষির কপাল নিয়ে জন্মেছে তা চিনি চান্তাও করতে পারেননী।
অর্ণব সব প্ল্যান করে রেখেছে, তার স্টুডেন্টের মা আজ তাকে আগামী মাসের বেতন অগ্রিম দিতে চেয়েছে। টাকাটা পাওয়া মাত্র সে রঙধনু পার্লারে চলে যাবে এবং বিয়ের জন্য সুচিন্তার সেখানে বিকাল ৪ টায় থাকার কথা।সুযোগ বুঝেই তার দিবে ছুট এবং বিয়ে করে ফেলবে।
সুচিন্তাকে তার ছোট খালা পার্লারে নিয়ে যাওয়ার জন্য রিক্সায় উঠালো, এই মুহূর্তে তার মামা তাদের রিক্সার সামেন এসে হুট করে সুচিন্তার পাশে বসে পড়লো।
চল মা, তোকে আমি পার্লারে নিয়ে যাবো।
মামার মুখে এই কথাটা শুনা মাত্র সুচিন্তার মুখ ফ্যাঁকাসে কালো রঙের হয়ে গেল।
সুচিন্তা নামটা রেখেছিল তার বাবা।যেদিন সুচিন্তার জন্ম হয় সেদিনই তার বাবার ডুবাই যাওয়ার ভিসা হয়ে গিয়েছিল,সেজন্যই মূলত তার নাম এরুপ রেখেছিল।
সে,তার মা এবং সুচিন্তা মিলে খুব ছোট্ট একটি পরিবার ছিল তাদের।তার বাবা ডুবাই যাওয়ার পর হঠাৎ একদিন শুনে যে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় তার বাবা মারা গেছে। গাড়ি এক গিরিখাদে গিয়ে পড়েছিল তাই লাশ উদ্ধার করে দেশে পাঠানো সম্ভব হয়নি। সুচিন্তার মামা আজম খন্দকার অনেক চেষ্টা করেছিল লাশ দেশে আনার।সব সরকারি অফিস, দপ্তর, দূতাবাস প্রতিদিনই একবার করে হানা দিয়েও যখন কোন কাজ হয়নি তখন একদিন শুনে যে তার বোন গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে।প্রেম করে বিয়ে করেছিল তার বোন জামাই,অত্যধিক ভালোবাসতো সুচিন্তার মা তার বাবাকে।হইতো স্বামী হারানোর কষ্টো আর সহ্য করতে পারেনি।১ বছরের বাচ্চাকে কোলে পীঠে করে তখন থেকেই সুচিন্তার মামা বড় করে এবং পণ করে জীবনো কাউকে প্রেম করে বিয়ে করতে দিবেনা।কিন্তু প্রকৃতির চক্রাবর্তে সুচিন্তাও প্রেমে পড়ে যায় অর্ণবের।
সুচিন্তা ফ্যাঁকাসে মুখে তার মামার সাথে পার্লারে যাচ্ছে।রিক্সাওয়ালা মনে হয় কিছু খাইনি তাই এতো আস্তে আস্তে যাচ্ছে যে মনে হয় তারা গরুর গাড়িতে চড়েছে। তার মামা জোরেই একটি ধমক দিয়ে দিল রিক্সাওয়ালাকে।
এদিকে অর্ণবের স্টুডেন্টের দাদা হঠাৎ করে আজ অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল।টাকা আনতে গিয়ে স্টুডেন্টের দাদাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে নিয়ে যায়। সে অনেক ক্ষণ ধরে বলতে চাচ্চে তার স্টুডেন্টের মাকে টাকার কথা। কিন্তু পরিস্থিতি এমন গম্ভীর যে সে কিছুতেই বলতে পারছেনা।
এদিকে সুচিন্তা পার্লারের সামনে গিয়ে দেখে কেউ নেই,তাহলে অর্ণব কি তাকে ধোঁকা দিল?তার মুখটা এতটাই মলিন হয়ে গেল যে, এক্ষুনি কেঁদে ফেলবে আরুপ অবস্থা।চলবে......।
২| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৩৭
কায়েস বলেছেন: ভাল্লাগছে ☺ চলুক ...
৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:২৮
সপ্নচূর আকাশচারী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:২৮
সপন সআথই বলেছেন: songe achi, cholte thakuk