![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
থাকি আমি নিজের ভুবনে, এক হেঁটে বেড়ানো আমার নেশা। যোজন যোজন দূরের নখত্রলোক আমার আবাস।
সুচিন্তাকে আজ পরীর মত লাগতেছে।এমনিতেই সে দেখতে অনেক সুন্দর, দুধে আলতা চেহারা তার উপর ক্রিম মেখে মেখে পার্লারের মেয়েরা একেবারে ইরানিপুতুল গুলোর মত সাজিয়েছে তাকে।পার্লারে যতক্ষণ সে ছিল জিন্দা লাশের মত এককোণে তাকিয়ে ছিল, একটা কথাও বলেনি।
মোহাম্মদপুরের এক কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ে হচ্ছে তাদের,কালুয়া হাসিব সব ঠিক ঠাক করে রেখেছে।সে বিয়ের জন্য যে শাড়িটা পরেছে সেটি কালুয়া হাসিব নিজে জার্মানি থেকে কিনে এনেছে।
আর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিয়ে হয়ে যাবে, বর যাত্রী চলে এসেছে।দমকল বাহিনী যেমন সাইরেণ্ট দিতে দিতে আসে ঠিক তেমনি হাসিবের বাবাও চাইনা একটি ব্যান্ড দল পেয়েছিল এবং সেটিকেই একটি পিকাপে চড়িয়ে বাজাতে বাজাতে নিয়ে এসেছে বিয়ে বাড়িতে। বাংলাদেশের ব্যান্ডগুলো মূলত ঢিক-ঢাস হয় কিন্তু চাইনা ব্যান্ডগুলো নামের মতই চিংচং করতেছিল।এত কষ্টের পরও এই শব্দ শুনে সুচিন্তা অন্যদের সাথে না হেঁসে পারেনি।
অর্ণব একটি রিক্সায় করে আগারগাও থেকে সেই কমিউনিটি সেন্টারে উদ্দেশ্যে রউনা দিল।টাকা যোগার করতে পারেনি সে।সে যখন কমিউনিটি সেন্টারে পৌছায় তখন সেখানে কেউ ছিলনা।সে সোজাসুজি সুচিন্তার বাড়িতে চলে যায়, কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারে যে তার বিয়ে আলাদা যায়গায় হচ্ছে।তাই একটি রিক্সা নিয়ে তাড়াতাড়ি করে রউনা হল।বিশাল এক জামে আটকা পরেছে সে, দুরদুর করে এত ঠাণ্ডার মদ্ধেও সে ঘামছে।নাহ আর না, সে রিক্সা রেখেই এক লাফ দিয়ে গন্তব্যের দিকে দৌড়াতে শুরু করলো।সে দৌড়াচ্ছে, আর পিছন থেকে রিক্সাওয়ালা টাকা নেওয়ার জন্য চিৎকার করতে করতে দৌড়াচ্ছে।
ভার্সিটির কোন এক বিকেলে সুচিন্তা ফুচকার দোকানে বসে ফুচকা খাচ্ছিল সেদিন।হুট করেই আগুন্তকের মত ২২ টা লাল গোলাপ এনে সুচিন্তার হাতে গুঁজে দিয়ে হুট করেই চলে গেল ছেলেটি।যাওয়ার সময় শুধু একটি কথায় বলে গেল, “অনেক দিন ধরে অপেক্ষায় ছিলাম কবে আমার ২২ তম জন্মদিন আসবে, আজ এলো। আমি তোমাকে ভালোবাসি। ” খুব বেশি ভালোবাসে অর্ণব সুচিন্তাকে, তাই কোনভাবেই তাকে অন্যের হতে দিবেনা। সে তার সর্বোচ্চ গতি দিয়ে দৌড়াচ্ছে।
আজ শুক্রবার, ছুটির দিন।এইদিনে অর্ণব ভোর ৬ টায় ব্যায়াম, হাঁটাহাঁটি করতে বের হয়।প্রতিদিনের মত ব্যায়াম করে আজ সে পার্কের ব্রেঞ্চে বসে আছে আর ঘামছে। হঠাৎ করেই দূরে তাকিয়ে সে হতভম্ব হয়ে গেল।দূরে একজন মহিলা এবং একজন পুরুষ হাটতেছে।এইটা দেখেই অর্ণব হঠাৎ কল্পনায় হারিয়ে গেল।
সেদিন দৌড়াতে দৌড়াতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল তার, সে যখন বিয়ে বাড়িতে পৌঁছায় তখন সুচিন্তাকে গাড়িতে উঠিয়ে ফেলেছিল তারা। গাড়ির জানালা দিয়ে সেদিন দুঃখ-কষ্টে ভেঙ্গে পড়া সুচিন্তার মুখ দেখেছিল সে।সেইদিনের পর থেকে কোনদিন আর সুচিন্তার সামনে যায়নি সে। সেইদিনই আত্মহত্তা করতে গিয়েছিল অর্ণব, গাড়ির নিচে ঝাপও দিয়েছিল কিন্তু না সে মরেনি।দীর্ঘদিন কোমায় থাকার পর সে বেঁচে উঠে।
সেই পুরুষ এবং মহিলাটা অর্ণবের কাছে এসে বসলো। অর্ণব কেন জানি আজ কাঁপছে।
কেমন আছো?মহিলাটি জিজ্ঞেস করলো অর্ণব কে।
ভালো আছি সুচিন্তা, তুমি কেমন আছো?
সুচিন্তা প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বললো, সন্তান কয়টা?
অর্ণব শুধু একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, হে দুই সন্তান। চোখের কনা দিয়ে অশ্রু গরিয়ে পড়লো অর্ণবের কিন্তু মোটা চশমার ফ্রেমের জন্য তা দেখতে পেলোনা সুচিন্তা। সুচিন্তাকে না পাওয়ার পর থেকে কোনদিন বিয়ে করেনি অর্ণব, এই কথা শুধু সে জানে। আর কেউ জানেনা,সুচিন্তাকেউ কোনোদিন জানতে দিবেনা সে,কোনদিনই না।
*দর্শক আমিও আপনাদের মত কল্পনা করি যে, সুচিন্তার সেদিনের বিয়েটা কোন কারনে ভেঙ্গে গেসলো এবং অর্ণব এবং সুচিন্তার বিয়ে হয়, তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করে। কিন্তু না এইটা শুধু মাত্র গল্প, উপন্যাস আর সিনেমায় সম্ভব। বাস্তবতাটা যে অনেক কঠিন, তাই না চাইলেও আমাদের একে মেনে নিতে হয়। *
২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৬
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: অনেক অনেক ভাল লাগা রইল---- গল্পে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪২
সপ্নচূর আকাশচারী বলেছেন: ধন্যবাদ উৎসাহ দেওয়ার জন্য, আপনাদের ভালো লেগেছে জেনে নিজেকেও এখন ভালো লাগতেছে। @নিলতিমি @ লাইলী আরজুমান খানম লায়লা
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৪১
নীলতিমি বলেছেন: