নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনটা যদি তুষারের মতো...

আখেনাটেন

আমি আমাকে চিনব বলে বিনিদ্র রজনী কাটিয়েছি একা একা, পাই নি একটুও কূল-কিনারা কিংবা তার কেশমাত্র দেখা। এভাবেই না চিনতে চিনতেই কি মহাকালের পথে আঁচড় কাটবে শেষ রেখা?

আখেনাটেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সরল-গরল কথা: রাজনৈতিক অভিলাষের পিশাচ নৃত্য!!!

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১:০৮


দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেল অনেকগুলো দশক—৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ৭৫-এর টালমাটাল অবস্থা, ৯০-এর গণঅভ্যুত্থান—প্রতিবারই মনে হয়েছে এ যেন এক নতুন যুগের শুরু। কিন্তু সময় তার অমোঘ নিয়মে এগোলেও, ইতিহাসের ঘরবাড়ির ফাটলগুলো বোধহয় একই জায়গায় রয়ে গেল। এ যেন বারবার একই নাটকের পুনঃমঞ্চায়ন—অভিনেতারা বদলায়, মুখোশ বদলায় কিন্তু পটভূমি একই।
এবার আবার সেই পুরনো গপ্পো: ক্ষমতার অদৃশ্য সুতোয় বাঁধা রাজনীতি, লণ্ডভণ্ড চোরাগলি আর জনগণের হতাশার দীর্ঘশ্বাস। ৩৬’র বিজয় আর ৩২’র ধুলোতে মিশে যাওয়া দেখে মনে হয়, একদিকে নবচেতনার আলো, অন্যদিকে পশ্চাদপদ রাজনীতির ‘পিশাচ নৃত্য’। আমরা কি তাহলে আবারও অন্ধকারের কূপে পড়ে হারিয়ে যাব, নাকি যুগে যুগে শত্রু-শত্রু খেলা দেখে অভ্যস্ত জনগণ এবার ঘুরে দাঁড়াবে? প্রবাদে বলে—‘গোড়ায় গলদ থাকলে আগায় ফলদ হয় না।’ আমরা কি সেই গলদের মূলোৎপাটন করতে পেরেছি, পারছি, পারব?



৩৬’র বিজয় ও ৩২’র ধুলোতে মিশে যাওয়া কী একই সুতায় গাঁথা, নাকি অন্য কিছু ঘাপটি মেরে ছিল?

৩২ কেন ভেঙে ফেলা হলো—অনেকে বলবেন সরল যুক্তি: ‘শেখের বেটি দিল্লীতে বসে ঘটি-বাটি নিয়ে সাড়ে ১৫ বছরের চিরাচরিত খাসলতে সব ‘ভজকট’ করে ফেলেছে’। সাথে বড়দা-কেও একটা শিক্ষা দেওয়া হলো। তিনি তো আছেন জেদি শিশুর ভূমিকায়—গোয়েন্দা ব্যর্থতার গ্লানি সইতে না পেরে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশে বিচিত্র গুপ্তকর্মে লিপ্ত। যেন এক ইঁচড়েপাকা বেয়াদ্দপ পিচ্চি ললিপপ না পেয়ে রাস্তা-ঘাট চিৎকারে মাতিয়ে ফেলছে! সাউথ ব্লকের চাণক্যরা যখন ময়দানে ব্যর্থ, তখন রাস্তায় চেঁচিয়ে কাজ উদ্ধার করা ছাড়া আর কী-ই বা করার থাকে? সে যাহোক-এবার আসা যাক অন্য কারণগুলির সন্ধানে:

পাওয়ার পলিটিক্স ও ৫ আগস্ট পরবর্তী নাট্যমঞ্চ

৫ই আগস্টের পর ছাত্র-জনতা তথা এই স্বৈরাচার পতনের মূল স্টেকহোল্ডার বৈষম্যবিরোধীরা ২০২৫-এ এসেই নানাবিধ কারণে অনেকটাই কোনঠাসা হয়ে পড়েছিল। ক্ষমতার গন্ধ-স্বাদে দিল-মাতোয়ারা বিএনপি’র নানা আঙ্গিকে অসহযোগিতা, দ্রব্যমূল্যকে নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারা, ২৪’র চিহ্নিত শহীদ ও আহতদের যথাযথভাবে সাহায্য না করার অভিযোগ, জুলাই ম্যাসাকারের বিচারিক কার্যক্রম গতি না পাওয়া, দুর্নীতিগ্রস্ত টাকাওয়ালা আওয়ামী গোষ্ঠীর অনেকেই চোখের সামনে দিয়ে দেশ ত্যাগ ইত্যাদি কারণে সাধারণ জনগণও অনেকটাই বিতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও এর পেছনের শক্তি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার উপর।

আর মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে উপস্থিত হয়েছে বিএনপির ঘ্যানঘ্যানানি তথা ‘নির্বাচন দাও, নির্বাচন দাও’। আর ‘শিয়ালের মতো চতুর’ জামায়াতে ইসলামী পেছন থেকে নানারকম কলকাঠি নেড়ে নানাবিধ পদ-পদবী বাগিয়ে নেওয়া ও সম-মনাদের সঙ্গে নিয়ে দেশের ইসলামী শাসন কায়েমের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে মেয়েদের ঘরবন্দি করার পাঁয়তারা। বিরাট আকৃতি-প্রকৃতির ধর্মীয় জজবাওয়ালারা ভেড়ার পালের মতো স্যোসাল মিডিয়াতে হৈচৈ। এর কিছু ভেড়া রাস্তা ঘাটে নেমে নানাজনকে হেনস্তা--বিশেষ করে মিডিয়ার সাথে জড়িত ফিমেইল আর্টিস্টদের। এধরনের উগ্রতা দেশের আপামর খেটে খাওয়া জনগণ ভালোভাবে নেয় নি, নিচ্ছে না, নিবে না--সে অন্য বাস্তবতা।

এমতবস্থায়, কোনঠাসা ছাত্র-জনতা ও তাদের মাস্টারমাইন্ড-দের দাত-মুখ খিঁচিয়ে শক্তি দেখানোর দরকার ছিল নিজেদের অস্তিত্বের জন্যই। টিয়া পাখির দিল্লী থেকে বাকবাকুম সেই সুযোগ এনে দিল। এছাড়াও ইদানিং গলা চড়িয়ে চলা বিএনপিকেও একটা কোভার্ট লেসন দেয়া গেল যে, হরু ঠাকুররা এখনও মরে নাই? ফলেই দুই হ্যামিলিওনের বাঁশিওয়ালার সুরে হুক্কাহুয়া তুলে…তাহাঁদের সাথে ‘জজবাওয়ালারাও’ বুঝে কিংবা না বুঝে…ময়দানে শক্তি প্রদর্শন…!

শত্রু-শত্রু খেলা ও লাত্থালাত্থির মহড়া

অন্যদিকে শত্রু শত্রু খেলায় ব্যাকফুটে থাকা সাড়ে পনের বছরের মাখনখোররা নতুন করে মাঠে মহড়া দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেটাকেও তো দমাতে হবে… যদিও আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের অবস্থা হয়েছে, গ্রামের কাদামাটির মাঠে চটের বস্তা দিয়ে বানানো ফুটবলের মতো। লাত্থায়ে বস্তা খুলে গেলে আবারও কোনো রকমে পেচিয়ে আবার লাত্থাও। এই লাত্থালাত্থিতে সমানতালে হাজির হয়েছে পুলিশ, ছাত্র-জনতা, বিএনপি ও জামাত-শিবির। এই করুন অবস্থায় হাসিনার দিল্লী থেকে গায়েবী ভাষণ অনেকটা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো অবস্থা তৈরি করেছে সাড়ে ১৫ বছরের হালুয়া-রুটি-খোরদের।

কারণ টিয়া পাখির অমোঘ সেই বাণী শুনার পর ‘বস্তা ফুটবল’র আরেক দফা উষ্টানি খাওয়ার পালা চলছে এবং ভবিষ্যতে পুনরায় যে চলবে সেটার আগাম বার্তাও সেই ৩২’র ভাঙ্গন। এই জিহাদী জজবা কি আখেরে সুফল নাকি কুফল বয়ে আনবে তা সময় বলে দেবে? তবে আওয়ামী পালের গোদাদের জন্য যে কুফল তা নিশ্চয় আর খোলাসা করে বলতে হবে না! অবস্থা এমন যে, মহারাণীর মুখ খোলা মানে শেখডোমের আর একটু সর্বনাশ! কিয়েক্টা অবস্থা!

দেশী ডিপ স্টেটের সূক্ষ্ম কারসাজি

ক্ষমতার নেপথ্যে ‘ডিপ স্টেট’ নামক এক অদৃশ্য হিমবাহ সর্বদা সক্রিয়। এই শ্রেণি সকল সময়ে, সকল অবস্থায় ‘বৈয়ামের খাঁটি ঘি’ খেতে ওস্তাত। ২৪’র পরিবর্তনে মনে হচ্ছে তারা তাই করছে। এদের বেশিরভাগই যেহেতু এক সময় আমলাগিরি নামক জমিদারি করে এসেছেন, ফলে তারা ভালো করেই জানেন কোথায় কী পরিমাণ ঘি ঢাললে আগুনের লেলিহান শিখা অধিক আলু পোড়ানোর ব্যবস্থা করবে। আর সেই আলু ভক্ষণপূর্বক টরেন্টো কিংবা সিডনিতে অবস্থান করা গেদির মা’র জন্য আরেকটা দক্ষিণমুখী বারান্দাওয়ালা, পশ্চাদদিকে বিরাট লন-সহ বাংলো খরিদ করা যাবে!

এই গোষ্ঠীটাও আবার চাঙ্গা হচ্ছিল। এদেরকেও একটা ম্যাসেজ কিংবা শিক্ষা দেয়া গেল। যদিও এরা সর্ব অবস্থায় ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থাকবে। তবে এবার কিছু বাইম-মাছ জালে আটকা পড়েছে। ভবিষ্যতে আরো পড়ার অপেক্ষায় রয়েছে। যত বেশি সময় এ অন্তর্বতী সরকার ক্ষমতায় থাকবে তত বেশি তাদের সমস্যা। ফলে তারাও চাইবে বিএনপিকে পেছন দিক থেকে গুতো দিতে আর মির্জাকে বলতে--’নির্বাচন দাও, নির্বাচন দাও’! বুড়ো বয়সে মানিকের মতো অন্ডকোষের অঙ্গহানি কিংবা চৌদ্দ শিকের ভেতরে ঘানি টানতে কার ভালো লাগবে!



পুরনো কাসুন্দি: বদলেছে কিছু? নাকি ‘যে লাউ, সেই কদু’?

তবে ভাবতে অবাক লাগে, পূর্বের সকল প্রকার অনাচার, অযাচার, অব্যবস্থাপনা, অপরিকল্পনা, অন্যায়, অন্যায্যতা মাথায় নিয়ে সবই এখনও আগের মতোই চলছে অনেকটা।
এখন কি কোনো সরকারী প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গিয়ে ভিন্ন চিত্র দেখছেন কেউ?
এখন কি দেশ সাধু বাবার আস্তানায় পরিণত হয়েছে?
এখন কি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে আর দাম কম-বেশি করছে না?
এখন কি বিএনপি-জামাতের ক্যাডাররা আওয়ামী ক্যাডারের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছে না?
এখন কি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নত ধারায় নেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে?
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কী কোনো পরিবর্তন চোখে পড়ছে?
ভূমি অফিসে কী তেনারা আর শুয়োরের মতো ঘোঁত ঘোঁত করে না?
বেসরকারি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা সামান্য অবসরের টাকার জন্য আর জুতার তলা ক্ষয় শেষে পায়ের তলার রক্তও ঝরাচ্ছে না?
এখন কি আর ঢাকার গণপরিবহনের ‘ওবিল’ নামক শয়তান ‘কাবিল’ আর দেখা যায় না?
এখন কি আর রাস্তায় চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য চোখে পড়ছে না?
এখন কি আর শমজান্তা শমসের ইনকম্পিটেন্ট আমলারা পালের গোদার মতো জায়গা দখল করে গ্যাট হয়ে বসে নেই?


সবগুলোর উত্তর একটাই…মহামানবেরা তাঁদের পবিত্র চরিত্রের বিন্দু পরিমাণ আপগ্রেডেশন করে নাই। বরঞ্চ কোনো কোনো জায়গায় তাঁদের খায়েসের হার ‘জেব্রা থেকে জিরাফ’র গোলার আকৃতিতে রূপ নিচ্ছে বলে অনেকে মনে করেন।



অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিথিলতা ও বৈষম্যবিরোধীদের জড়তা

এখন বৈধ প্রশ্ন হচ্ছে, এই বিষয়গুলো অন্তর্বতীকালীন সরকারের অ্যান্টেনায় ধরা পড়ছে না কেন? তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম ধরা পড়ছে না? তাহলে এ ধরনের অযোগ্য লোকগুলো এসব পদ দখল করে রেখেছে কেন? আবার যদি ধরে নেই, উনারা সবই জানেন, তাহলে তার অ্যাকশন ও আল্টিমেইট রেজাল্ট কোথায়? আবার ধরুন, বৈষম্যবিরোধীরা যতটা না নিজের পদ-পদবী ও নয়া দল করার ধান্ধায় নিমজ্জিত ততটা শক্তি কেন এসব অনাচার দমনে সর্বশক্তি নিয়োগ করছে না?

টিয়া পাখির লিগাসি অনাচার যে এখনও বিদ্যমান সেই ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার জন্য কঠোর হুশিয়ারি ও তার বাস্তব প্রয়োগে তাদের শিথিলতা কেন?

এই ‘কেন’র উত্তর নেই? আছে শুধু আমজনতার একটি দীর্ঘশ্বাস! ‘যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ’—এই প্রবাদের সত্যতা প্রায়ই প্রমাণিত হয়, যা আমরা আর বিশ্বাস করতে চাই না। কিন্তু ৫ আগস্টের পর যে আত্মবিশ্বাস জন্মেছিল—“এবার বুঝি দৃশ্যপট বদলাবে,” তা ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে দিগন্তের কুয়াশায় মিলিয়ে যাচ্ছে।

অথচ আমাদের সামনে কী অপার এক সুযোগ এসেছিল? রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনাকে চিরজীবনের জন্য কবর দেওয়ার। কী নিদারুন অবহেলা, অযত্নে কিংবা উপরের সারিতে বড় বড় পদে বসে থাকা কিছু ধূর্ত মানুষের চতুরতার কাছে মার খেয়ে যাচ্ছে সোনার বাংলাদেশ? এ বড় আপসোসের বিষয়!



পাকিস্তানপন্থী বনাম ভারতপন্থী ন্যারেটিভ: কবে শেষ হবে এই বিতর্ক?

এখনও আমাদের পাকিস্তানপন্ত্রী কিংবা ভারতপন্থী বয়ান (ন্যারেটিভ) নিয়ে ফেরি করতে হচ্ছে? অথচ ৫-ই আগস্টের পর সকলের হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশপন্ত্রী--স্রেফ অ্যান্ড স্রেফ বাংলাদেশপন্থী!

শিক্ষা ব্যবস্থার যে কংকালসার অবস্থা তা ঢেলে সাজাও; গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী চিন্তাধারার বিকাশ হোক শিক্ষার প্রধান পাথেয়--এ লক্ষ্যে দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের একাট্টা হওয়ার দরকার ছিল শুরুতেই। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে যে আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত করে বিদেশমুখী করে রেখেছিল টিয়া পাখি তা থেকে বের হওয়ার জন্য দরকার ছিল চৌকশ কিছু কর্মকর্তার ভিশনারি পদক্ষেপ। দেশের শাসন ও বিচারব্যবস্থাকে সিস্টেমের মধ্যে আনতে দরকার ছিল অসম্ভব কিছু সৎ ও নিষ্ঠাবান মানুষের কর্মদক্ষতা। এভাবে সকল সেক্টরে শুরুতেই প্রতিঘাত করা যেত একেবারেই ইনিশিয়াল স্টেজে।

কিন্তু কথায় আছে না, ‘কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ, পাকলে করে ট্যাঁস ট্যাঁস’। ক্ষমতায় থাকা গোষ্ঠীর নানারকম অদূরদর্শী পদক্ষেপে ও মসনদে বসতে যাওয়া প্রধান বিরোধী দলটির ক্ষমতার জন্য লালায়িত অবস্থা এবং সুচতুর ধর্মীয় লেবাসধারী রাজনৈতিক গোষ্ঠীটির পশ্চাদ্মুখী টানে--সেই লক্ষ্য এখন সুদূর পরাহত। বাঁশ পেকে এখন ঝুনা হয়ে গেছে। এখান থেকে মনে হচ্ছে না আর ভালো কিছু বের হবে? ক্ষমতার লোভ আর চতুর রাজনৈতিক কৌশল সব সম্ভাবনাকে ফিকে করে দিচ্ছে।

তাই ৩৬’র ম্যাসাকার কিংবা ৩২’র ভাঙ্গন কিছু মানুষকে ব্যাথাতুর কিংবা আনন্দ দিলেও সবকিছু ‘যে লাউ, সেই কদু’র অবস্থা থেকে বের হওয়া যে হচ্ছে না তা আমজনতা আধা বিশ্বাস থেকে এখন বিশ্বাস করতে শুরু করেছে। তবে সময় এখনও ফুরে যায় নি!

দেশ এখনো দ্বিধাবিভক্ত—হাদু পাকিস্থানপন্থী নাকি নাদু ভারতপন্থী, সেই ন্যারেটিভ নিয়ে তরজা চলছে। কিন্তু আসল কথা— বাংলাদেশপন্থী হওয়া উচিত ছিল সবার, একাত্তরের চেতনা আর ৫ আগস্টের মুক্তির মঞ্চে দাঁড়িয়ে! আপনি আসলে কোনটি--সেই বয়ান বা ন্যারেটিভের উপরই নির্ভর করছে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ? সেটা কী জ্ঞানভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হবে নাকি কুসংস্কারভিত্তিক পশ্চাদপদ-দুর্বৃত্তায়িত বাংলাদেশ হবে? হাতিয়ার কিন্তু আপনার হাতেই রয়েছে? উঠাও আওয়াজ!!!

************************
@আখেনাটেন/ফেব্রুয়ারি-২০২৫

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১:৩২

কামাল১৮ বলেছেন: দিন বদলের কথা বলে কেউ আসেনি সবাই এসেছে যার যার এজেন্ডা নিয়ে।জনগনের পক্ষের দল এখনো গড়ে উঠেনি।অপেক্ষার পালা কবে শেষ হবে কেউ জানে না।

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৩:০৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমার মনে হচ্ছে সামনের নির্বাচনে কোন দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। একাধিক দল মিলে সরকার গঠনের প্রয়োজন হতে পারে। আর যদি বিএনপি একাই ক্ষমতায় যায় সেই ক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের লোকজন হাফ ছেড়ে বাঁচবে। তখন বিএনপির মূল বাণিজ্য হবে অর্থের বিনিময়ে আওয়ামীলীগের মামলা দুর্বল করা এবং কিছু ছাত্রলীগের ছেলেপেলেকে দলে টানা। ধীরে ধীরে আওয়ামীলীগকে রাজনীতির মাঠে তারাই নিয়ে আসবে। তবে আওয়ামীলীগের বড় বড় দাগী নেতারা আর রাজনীতি করতে পারবে না। তারপরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যা সাধারণত হয়, বিএনপি তার সময়ের শেষ দিকে জনপ্রিয়তা হারাবে। পরের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ কিছু আসন পেতে পারে। তবে খুব বেশী পাবে না, কারণ আওয়ামীলীগের হাল তখন ধরবে এমন নেতারা যারা দলের ঐক্য ধরে রাখতে হিমশিম খাবে। শেখ পরিবার আওয়ামীলীগের সাথে থাকতে পারবে না। তারা থাকলে দল টিকিয়ে রাখতে সুবিধা হলেও ভোট পাবে না। শেখ হাসিনা আমৃত্যু ভারত থেকে তার বাণী দিতে থাকবে। ভারত এক সময় হাল ছেড়ে দিবে এবং বাংলাদেশ সরকারের সাথে সমঝোতায় আসবে। বিএনপির ভোট সেই নির্বাচনে কমে যাবে এবং পরের বার এককভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার সক্ষমতা হারাবে। তখন সরকার গঠনের জন্য ইসলামী দলগুলির সাথে বিএনপিকে জোটে যেতে হতে পারে।

আওয়ামীলীগ এখন হুমকি, ধামকি দিচ্ছে কারণ তারা ভালো করেই জানে যে এই নির্বাচনে তারা ফেল মারবে। পরের নির্বাচনের আগে তারা দল গঠনের চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু শেখ পরিবার ছাড়া দলের ঐক্য ধরে রাখা মুশকিল হবে। এমনকি সেই ক্ষেত্রে আওয়ামীলীগ ভাগ হয়ে যেতে পারে। আওয়ামীলীগে কোন ভালো নেতা খুঁজে পাওয়া যাবে না যে দলের হাল ধরতে পারবে। আর ভালো লোক থাকলেও শেখ পরিবারের না হওয়ার কারণে তাকে অনেকেই মানবে না। আদর্শ না থাকার কারণে আওয়ামীলীগ দলটাকে টিকিয়ে রাখাই কষ্টকর হবে।

আওয়ামীলীগের সুযোগ আসতে পারে যদি বিএনপিও আওয়ামীলীগের স্টাইলে ফ্যাসিসট বা চরম স্বৈরাচারী হয়ে ওঠে। সেই ক্ষেত্রে ইসলামী দল, ছাত্ররা এবং আওয়ামীলীগ মাঠে নামার সুযোগ পাবে। অনেক কিছুই নির্ভর করবে এই নির্বাচনে কারা ক্ষমতায় আসবে তার উপরে এবং কিভাবে তারা দেশ চালাবে তার উপরে। অন্য দলগুলি চরম ব্যর্থ এবং জালেম হলে আওয়ামীলীগের সুযোগ আসতে পারে।

এই দেশের সাধারণ জনগণও দুর্নীতিগ্রস্ত। তাই দুর্নীতি এই দেশ থেকে দূর করা কঠিন। তবে এটা সম্ভব হতো যদি কোন কঠোর এবং সৎ শাসক আমরা পেতাম। সেটার কোন সম্ভবনা দেখা যাচ্ছে না। এই দেশের মূল সমস্যা জনগণের অসততা এবং দুর্নীতি। ক্ষমতাধরদের অসততা এবং দুর্নীতির কথা নাই বা বললাম।

জুলাইয়ের বিপ্লব/ অভ্যুত্থান থেকে আমি বেশী কিছু আশা করি না। কারণ মূল প্রাপ্তি ছিল শেখ হাসিনার উচ্ছেদ। বড় বাধা কেটে গেছে। বাকি বাধাগুলি দূর হতে অনেক সময় লাগবে। জনগণ ঠিক না হলে আশু কোন সমাধান নাই। এই দেশের জনগণ আঘাত পেলে ঐক্যবদ্ধ হয়, অন্যথায় দলাদলি, কামড়া কামড়ি করে। ১৯৭১ সালে আঘাত আসার কারণে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। এই বারের জুলাইয়ের আঘাত ১৯৭১ এর তুলনায় কম মাত্রার ছিল। যে কারণে ৬ মাসেই পাবলিক ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে দেশ চালানোর জন্য ফেরেশতা বা ফেরেশতার দল পাওয়া যাবে না। এই সব ভেজাল পাবলিক দিয়েই চলতে হবে। কিন্তু আমরা জনগণ চাই নেতা হবে ফেরেশতা। যার কারণে আমরা সহজেই অধৈর্য হয়ে পড়ি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.