![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নবম শতকের পূর্বে বর্তমান রাশিয়া , ইউক্রেন ও আশে পাশের দেশ নিয়ে যে শাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল তা ছিল অনেকটাই ঝুকিপূর্ণ এবং নাজুক । কেননা পুনঃপুন শত্রুর আক্রমণে বিপর্যস্ত হতে থাকে রাষ্ট্রটি । সে সময় শাসন ব্যবস্থা ক্রিয়ভ থেকে নিয়ন্ত্রিত হত ।
কিন্তু নবম শতকের পর থেকে হটাত করেই পরিস্থিতি পরিবর্তিত হতে থাকে । তৎকালীন রাশিয়া অধ্যুষিত রাষ্ট্র টি হটাত করেই আমূলে বদলে গিয়ে জয়ী হতে শুরু করে । পরবর্তী নবম শতক থেকে ১৬শ শতক পর্যন্ত তৎকালীন সময়টাকে "পিরিয়ড অব কিবসিয়া রুসচ" (৯-১৬ শতক ) বলা হয় ।
কিন্তু হটাত করেই পরাজয়ের বৃত্ত থেকে আমূল পরিবর্তনের কারন কি ? নবম শতকের মাঝামাঝি সময়কার এ অঞ্চলের শাসক ছিলেন ভ্লাদিমির (প্রথম) । তিনিই প্রথম অনুধাবন করেন কোন রাষ্ট্রকে জয়ী হতে হলে অবশ্যই একতাবদ্ধ হতে হবে । কিন্তু প্রশ্ন ছিল একতা হবে কীসের ভিত্তিতে ?তিনি খেয়াল করেন বিশাল এ অঞ্চলের মানুষ ঐতিহ্যগত বা সংস্কৃত ভাবে ভিন্ন কিন্তু এর চেয়েও বড় সমস্যা হচ্ছে ধর্মের ভিন্নতা । পরবর্তীতে ভ্লাদিমির (প্রথম) ৯৮৮ সালে এ অঞ্চলে অর্থোডক্স ধর্মের প্রথা চালু করেন , যার মূলে ছিল এক ঈশ্বরে বিশ্বাস । এর ফলে পরিস্থিতি আমূলে পাল্টে যেতে থাকে । কেননা সকল অংশের ধর্ম যখন এক ,তখন আদর্শ টাও এক হয়ে দাঁড়ায় । আর আদর্শ মিলে গেলে সবাই এক হবে সেটা তো জানা কথা । আর একতাই বল সেটা সর্বজন স্বীকৃত । তাই পরবর্তীতে নিজেদের এ আদর্শিক মিলনের ফলে সমস্ত অঞ্চলকে তারা নিজেদের ভাবতে শুরু করে এবং এতদ অঞ্চলের যেকোনো অংশের উপর হামলাকে একতাবদ্ধ হয়ে মোকাবিলা করে ।এর ফলে তারা নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যেকোনো কর্মকাণ্ডে একতাবদ্ধ হতে পেরেছিলো এবং একটি সু সংগঠিত রাষ্ট্র গঠন করতে পেরেছিল ।
পরবর্তীতে জার শাসন আমল ও সোভিয়াত ইউনিয়নের মাঝামাঝি পর্যন্ত এ শাসন ব্যবস্থা টিকে ছিল , কিন্তু কমিউনিস্ট এর প্রভাব ও রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার কারনে রাশিয়া আস্তে আস্তে তাঁর ধর্ম বিশ্বাস থেকে একটু একটু করে সরে আসতে থাকে এবং এর অনিবার্য পরিনতি বরন করতে হয় বিংশশতাব্দীর শেষের দিকে সোভিয়াত ইউনিয়নের ভাঙ্গনের মধ্য দিয়ে ।
জীবন তথা রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ধর্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি , কেননা ধর্ম থেকে দূরে সরে যাওয়া মানে আপনি একটা জাতির বিশ্বাস থেকে দূরে সরে গেলেন ,সেখানেই সমস্যা টা দানে বাধে । বর্তমান চীন কে নিয়ে আমি কিছু টা হলেও শঙ্কিত । আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বা রাজনীতি নিয়ে যারা একটু হলেও পড়াশোনা করেন , তারা নিশ্চয় জানেন পরবর্তী শতকে চীন হতে যাচ্ছে বিশ্ব মোড়াল । কিন্তু ধর্মের দিক থেকে দেশটিতে একতা না থাকায় দেশটি রাষ্ট্রের যে কোন সংকটময় অবস্থায় ভেঙ্গে যেতে পারে , সোভিয়াত ইউনিয়ন যার বড় প্রমান ।
তবে জগতের সবাই এক হবে সেটা চিন্তা করাও বাতুলতা । তাই যুগে যুগে বিশ্বাসীদের সাথে অবিশ্বাসীদেরও ডানা পালা মেলবে সেটাই স্বাভাবিক ।ধর্মের সাথে সাথে বিধর্মের ও সৃষ্টি হবে । স্রষ্টা বা ধর্মের অবিশ্বাসই থেকেই নাস্তিকতার সৃষ্টি , আর এ ধারনার শুরুটাও বেশ পুরনো ।ঈশ্বরে অবিশ্বাসের শুরু মোটামুটি খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ বা সপ্তম শতকে ইউরোপ আর এশিয়ায় । মুলত সে সময় ঈশ্বর অবিশ্বাস টা তারা নিজেদের মধ্যেই রাখত বা খুব ফলাও করে প্রচারে পক্ষপাতি ছিল না । তার পর সময়ের সাথে সাথে নাস্তিকতা নিয়ে মানুষের আগ্রহ বাড়তে থাকে । তাতে জ্বালানী দেয় কোপার্নিকাস । কিন্তু হটাত করেই নাস্তিকতা বা ঈশ্বরে অবিশ্বাস ফুলে ফেপে উঠে উনবিংশ শতাব্দিতে । ডারইউন দাড় করায় বিবর্তনবাদ ,যা প্রমান করতে চায় ঈশ্বর বলে কিছু নেই ।এর ফলে এত দিন ধরে চুপচাপে থাকা অবিশ্বাসীরা এক হতে থাকে । ডারইউন তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে বিশ্বাসী দের বিশ্বাসে আঘাত হানার মোক্ষম অস্রও তারা পেয়ে যায় । কফিনে শেষ পেরেক ঢুকায় ফ্রয়েড । মার্ক্স সেটাকে বাণিজ্যে কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলে পুজিবাদি সমাজ ।Friedrich Nietzsche বলে উঠে "God is dead" । এর পর থেকেই নাস্তিকরা বিজ্ঞানের বিভিন্ন যুক্তি স্থাপন করে ধর্মকে অসাড় করে দেওয়ার কৌশলে লিপ্ত হয় এবং আস্তে আস্তে এটা পৃথিবী ব্যাপী ছড়িয়ে পরতে থাকে ।
কিন্তু বর্তমানে সমস্যা টা নাস্তিকতায় নেই , সমস্যাটা নাস্তিকতাকে তারা আলাদা একটা রীতি বা সংস্কৃতি হিসেবে প্রকাশ করতে চাচ্ছে সেখানে , যেখানে তারা প্রমান করতে চাচ্ছে ঈশ্বর নেই । অর্থাৎ ঈশ্বরহীনতায় তাঁদের বিশ্বাস , আর বিশ্বাস থেকেই ধর্মের উৎপত্তি । তার মানে দাঁড়াচ্ছে নাস্তিকতাকে তারা একটা ধর্ম হিসেবে উপস্থাপন করতে চাচ্ছে । এখানেই সমস্যাটা , আপনি যখন আপনার বিশ্বাস কে স্থাপন করতে যাবেন , তখন অন্যের বিশ্বাসে আপনাকে অনাস্থা স্থাপন করতে হবে এবং প্রমান করতে হবে আপনিই সেরা । সেখান থেকেই অন্য ধর্মে আক্রমন টা আসসে ।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সব ধর্ম বাদে কেন ইসলাম সব চেয়ে বেশী আক্রমণের শিকার হচ্ছে ?
কারন অন্য ধর্মাবলম্বীর কেউ তাঁদের এ আক্রমণকে পাত্তা দিচ্ছে না , এখন আপনি যদি বারবার কারো সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন কিন্তু কোন রেসপন্স না পেলে আপনার উৎসাহ এমনেই ভাটা পরবে ।কিন্তু বেশীরভাগ মুসলমানই অত্যন্ত ধর্মভীরু এবং ধর্মের এ সকল ইস্যুতে খুব সেন্সেটিভ হওয়ায় নাস্তিকরা এধর্মের উপরেই মূল টোপ টা ফেলছে আর অধিকাংশ মুসলমানরাই বিষয় টা না বুঝে এমন সিচুয়েশন ক্রিয়েট করছে , যা ওদের কাজকে অনেক সহজ করে দিচ্ছে । আর এ জন্যই মুসলমান নাস্তিক দের পরিচিত এত বেশী । সাল্মান রুসদি , তসলিমা নাসরিন রা যার জলজ্যান্ত প্রমান ।
তবে মৃত্যু কখনোই সমস্যার সমাধান হতে পারে না , কলম কে কলম দাড়াই মোকাবেলা করা উচিৎ ।অভিজিৎ রায় হত্যার বিচার তাই অবশ্যই হওয়া উচিৎ ।
যুক্তিকে যুক্তি দিয়েই প্রতিস্থাপিত করতে হবে ।তাই ইসলামিক স্কোলার দের উচিৎ বিষয় টা কে অনুধাবন করে সে অনুযায়ী কাজ করা ।
এ ধরনের হত্যা কাণ্ড দেশের আইন ব্যবস্থার উপরও আঙ্গুল তুলে , তাই সরকারের উচিৎ অপরাধীকে খুজে বের করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত করা আর তা না হলে এমন দিন বেশি দূরে নয় যেদিন দেশের শাসন ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙ্গে পড়বে ।
২| ০২ রা মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২২
চাঁদগাজী বলেছেন:
"কিন্তু বেশীরভাগ মুসলমানই অত্যন্ত ধর্মভীরু "
এটাও আজগুবি কথা
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২০
চাঁদগাজী বলেছেন:
"কিন্তু কমিউনিস্ট এর প্রভাব ও রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার কারনে রাশিয়া আস্তে আস্তে তাঁর ধর্ম বিশ্বাস থেকে একটু একটু করে সরে আসতে থাকে এবং এর অনিবার্য পরিনতি বরন করতে হয় বিংশশতাব্দীর শেষের দিকে সোভিয়াত ইউনিয়নের ভাঙ্গনের মধ্য দিয়ে । "
-তাই?