নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ছন্নছাড়া যাযাবর, আমার নেই কোন ঘর।

দেশের মালিক

পরের জায়গা পরের জমি ঘর বানাইয়া আমি রই, আমিত সেই ঘরের মালিক নই।

দেশের মালিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সরকারি হাসপাতালগুলোর এ কেমন সেবা???

৩০ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪০

গত ২৮মে ছিল নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে দিবস নিয়ে অতটা ভাবিনা। কিন্তু গত ২৮মে ঘটেগেল এক লোমহর্ষক ঘটনা সে জন্য বিষয়টি নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে পারলামনা।

মঙ্গলবার দিন সকালে অনেকটা আচমকাই মায়ের ফোন, কি রে তুই কই? আমি একটু বাইরে কী হয়েছে? তিনি প্রতউত্তরে তারাতারি বাড়িতে আয় বলেই কেদে ফেললেন। আমার ছোটবোন প্রেগনেন্ট ছিল। বুঝতে পারলাম জটিল কোন সমস্যা দেখা দিছে। তাই আর মূহুর্ত দেরি না করে গাড়িতে উঠলাম। এবং একঘন্টার মধ্যেই পৌছে গেলাম আমাদের স্ট্যান্ডে। বাসথেকে নেমে মাকে ফোন দিতেই বলেলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে। কথামতো সেখানে গেলাম। গিয়ে দেখি যা ভেবেছি তাই। কিন্তু খটনা লাগে রিপোর্ট অনুযায়ী তার সন্তান পৃথিবীতে আসার কথা আরো একমাস পরে। কিন্তু আজকে কেন? জিজ্ঞেস করতেই তারা জানাল আমি ওসব বুঝব না। ওকে দুনিয়ার সব কিছু না বুঝাই ভালো। তাই ব্যার্থ চেষ্টা না করে বসে বসে নতুন অতিথির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। আর কিছুক্ষন পর পর ভেতর থেকে কান্নার চিৎকার আর কান্নার আওয়াজ শুনতে লাগলাম। এক আত্নীয়কে জিজ্ঞেস করলাম। এখানে আবার কোন চিকিৎসা হয় নাকি? তিনিও অভয় দিয়ে বললেন তারাতো নিয়মিত চিকিৎসা করছেন। তাহলে এতো দেরি কেন? তাছাড়া ওর (বোনের) এতো কষ্ট হচ্ছে কেন? জানতে চাইলে কর্তব্যরত নার্সরা বললেন তার প্রথমবার তো তাই একটু দেরি হচ্ছে। কোন সমস্যা নেই। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে গেলেও অবস্থার কোন উন্নতি না হলে তাদের পুনরায় জিজ্ঞেস করতেই তাদের একই উত্তর এবং সেই সাথে ঝাড়ি আমরা এত অস্থির হয়ে পড়েছি কেন??



যাক তার পরও কোন উচ্চবাচ্য করলাম না। কিন্তু বিপত্তি বাধল যখন দেখলাম বোনটা আমার গত রাত থেকে ব্যাথার যন্ত্রনায় মারা যাওয়ার উপক্রম হলো। তখনআমাদের চেচামেচিতে ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো। নার্সরা জানাল এই রোগীর চিকিৎসা এখানে সম্ভব নয়। তারা পারবেনা। ডউটি ডাক্তারের কাছে গেলে উনি জানালেন, তিনি নাকি রোগীর ব্যাপারে কিছু জানেইনা। এমনকি তাকে কেউ বলেওনি যে এখানে ডেলিভারি রোগী আছে। অথচ আমার বোন ছাড়াও সেখানে আরও দুইজন রোগী অপেক্ষমান ছিল। পরে শুনেছি দ্বিতীয় মহিলার সন্তানটি মারা গেছে। ডাক্তারকে চাপ দিতেই উনি এসে নার্স এবং আয়াদের ধমক দিতেই তারা রোগী ভর্তির কথা অস্বীকার করলেন। তারা বললো আমরা নাকি রোগী ভর্তিই করিনি। আমাদের পাল্টা প্রশ্ন তাহলে সকাল থেকে এতক্ষন পর্যন্ত আপনারা চিকিৎসার নামে শুধু স্যালাইন দিয়ে কিসের চিকিৎসা করলো। এই বলেই কান্নাকটি আর ঝগড়ার রোল পরে গেলো সেখখানে। যা্হোক তখন আমাদের হাতে সমই বলতে কিছুই ছিলনা। ডাক্তার বললেন বাচ্চা এখন এমন পরিস্থিতিতে চলে এসেছে যে এখন বাচ্চার মাকে নড়াচড়া কারানোও খুব রিস্কি। কিন্তু উপায় নেই তাকে বাচাতে হলে অন্যকোন প্রাইভেট হাসপাতালে নিতে হবেই।



এরপর অনেক কষ্টে জীবনের রিস্ক নিয়ে গেলাম পাশের েএকটি প্রাইভেট ক্লিনিকে। সেখানে গিয়ে দেখি সকালে সরকারি হাসপাতালে যে ডাক্তার ডিউটিতে ছিলেন তখন উনি সেখানে কর্তব্যরত।

তাকে বিষয়টি জানাতেই তিনি বললেনে আমিতো ২টা পর্যন্ত সেখানে ডিউটিতে ছিলাম কই এই রোগীর কথাতো কেউ আমাকে বলেনি। তাছাড়া ওর তো এখনো ১মাস বাকি আছে। বুঝলাম নার্স আর আয়ারা সামন্য কয়টা টাকার জন্য আমাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। যাইহোক তিনি বললেন এখন আর সময় নেই। এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। সরকারি হাসপাতালের নার্স আর আয়াদের প্রচেষ্টায় বাচ্চা এখন এমন পর্যায়ে চলে এসেছে যে তাকে আর বাচানো সম্ভব নয়।েআর যদি বাচ্চা বেচে থাকে তবে তার সাইজ ও ওজন অনেক কম হবে। তবুও ডাক্তারের হাতে পায়ে ধরার পর তিনি বললেন দ্রুত সিজার করাতে হবে। আমরা আর কাল বিলম্ব না করে টাকার দিকে না তাকিয়ে সায় দিতেই ডাক্তাররা তাদের কাজ শেষ করলেন। অবশেষে দিন শেষে আমাদের টেনশনের সমাপ্তি ঘটিয়ে অপারেশনের মাধ্যমে আমাদের কোলে এলো ফুটফুটে এক মানব শিশু। শুকরিয়া সেই মহান আল্লাহ তায়ালার যিনি বাচ্চা এবং তার মা উভয়কেই সুস্থ্য রেখেছেন।



আমাদের যখন এই অবস্থা তখন আমার ডিজিটাল যুগের এনালগ মোবাইলটি টু টু করে বেজে উঠল। খুলে দেখি সরকারি তথ্য লেখা সমৃদ্ধ একটি মেসেজ। মেসেজটি খুলে দেখি সেখানে লেখা.,, আগামীকাল ২৮ মে জাতীয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস, আসুন আমরা ,,,,,,ইত্যাদি ইত্যাদি। মেসেজটা পরে হাসব না কাদবো। নাকি কাউকে গালি দিবো কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। তবে এই প্রথম কোন একটি দিবস আমাকে খুব বেশি ভাবিয়ে তুলল।



পরিশেষে একটি কথাই বলতে চাই। একটি দিন নয়, প্রতিদিনের জন্য প্রতিমূহুর্তের জন্য চাই নিরাপদ মাতৃত্ব। কারণ আপনার আমার সামান্য ভুলের জন্য ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ বিপদ। বিপন্ন হতে পারে অনেকের জীবন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:০২

মেমননীয় বলেছেন: সরকারি হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়া উচিৎ।
কারন সেখানে সেবার চেয়ে কষ্টই বেশী দেয়া হয়!

২| ৩১ শে মে, ২০১৪ ভোর ৫:৪৬

সকাল হাসান বলেছেন: আপনার বোন এবং বোনের বাচ্চার সুস্থতা কামনা করছি। ভালো থাকুক তারা।

৩| ৩১ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:০৭

দেশের মালিক বলেছেন: ধন্যবাদ .,,সকাল হাসান ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.