![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পরের জায়গা পরের জমি ঘর বানাইয়া আমি রই, আমিত সেই ঘরের মালিক নই।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যানে জানতে পারলাম খবরটি। যে আগামী ২৯ জানুয়ারি মিরপুরের ইনডোন স্টেডিয়ামে সুপারমম বেবি অলিম্পিয়াড শুরু হচ্ছে। সেখানে নাকি অংশ নেবে ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুরা। খবরটি শুনে অবাকই হলাম। এটা আবার কি ধরনের অলিম্পয়াডরে বাবা। তবে দেশীয় বহুজাতিক কোম্পানিটির ফেসবুক পেজে দেয়া বিজ্ঞাপনটি থেকে কিছুটা ধারনা নেয়ার চেষ্টা করলাম। বুজলাম গেমটা শিশুদের জন্য হলেও এখানে মুলত খেলবে শিশুদের মায়েরা। অর্থাৎ রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া থেকে পুরস্কার পাওয়া পর্যন্ত মহা নায়কের ভুমিকায় থাকবে বাচ্চার মায়েরা। ইভেন্টটির টিভিসির মিনিং অনুযায়ি সামির মায়েরা।
আর আমার ভয়টা ঢুকল সেখানেই। কারন আমার ৫ বছর বয়েসি ভাগ্নের নামও সামি। তার মানে সেও সুযোগ পেতে পারে এই অলিম্পিয়াডে মানে তার মা অর্থাৎ আমার বোন অংশ নিতে পারবে তাতে।
আমার উদ্বেগটা বাড়ল এ কারনে যে, আমি আমার বোনকে হারে হারে চিনি। সে এই প্রতিযোগিতায় যুক্ত হতে এবং জয়ী হতে যা যা করার দরকার করবে। মানে প্রথমে রেজিস্ট্রশনের জন্য তার একটিভিটিস এর ভিডিও বানাবে। এর জন্য সে নির্ঘাত ভাগ্নেটাকে পাকা অভিনেতা বানিয়ে ছাড়বে। বাচ্চারা খেলাধুলা বা দুষ্টুমি করে স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক নিয়মেই। কিন্তু যখন নাকি সেটা কোন প্রতিযোগিতার জন্য ধারন করা হবে। বিশেষত সেই প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করবে তাদের মায়েরা তখন বাচ্চাদের উপর কতটা চাপের ও মানসিক নির্যাতনের হতে পারে সেটা একবার ভেবেছেন কি। কারন গনমাধ্যম বিশেষ করে সম্প্রচার মাধ্যমের কর্মী হওয়ায় আমা নিজেও অনুভব করি স্বাভাবিক একটা ডায়লগ রেকর্ড করতেও কতবার সেটা ভুল হয়। এবং যথার্থ শব্দটা ডেলিভারি করতে কি পরিমান পরিশ্রম করতে হয়। আর অভিনয়তো আরো দুরহ বেপার।
যাই হোক আমিও চাই আমার ভাগ্নেটা সেরাদের সেরা হোক। তার মা ও চায়। কিন্তু আমাদের দুয়ের চাওয়ার মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। আমি বিষয়টাকে স্বাভাবিক ভাবে নিলেও আমার বোন অর্থাৎ বাচ্চার মা বিষয়টা সিরিয়াসলি নিবে। সে এটাকে তার মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখবে। কারন এই সুযোগটাই তাকে সেলিব্রেটি বানিয়ে দিবে। সারা দেশ বাসি তাকে এক নামে চিনবে...যে ওই যে আসছে অমুকের মা। আমাদের মতো আকামলা সাংবাদিকরা তার ইন্টারভিউর জন্য তার পিছে পিছে ঘুড়বে, রিক্সাঅলা ভাড়া নিবেনা, পার্লারে গেলে তার বিলের উপর ৫০% ডিসকাউন্ট সহ আরো কতকি সুবিধা। আর পাশের বাসার ভাবিদের মুখ পোড়াতো যাবেই। ওফ ভাবতেই রোমাঞ্চিত হচ্ছে সে। এর জন্য তার সোনামনিটাকে শুধু সামান্য কষ্ট করতে হবে। আরে এতে কষ্টেরইবা কী আছে। আমার ভাগ্নেটাও কিন্তু চ্যাম...সে রোজ হরলিকস খায়, কমপ্ল্যান খায়।
তবে আমি জানি সে কম্প্লান খাক আর যাই খাক প্রতিযোগিতা ইজ প্রতিযোগিতা। সেটা অত সোজা না।
তাই ভাগ্নের এ আশু অগ্নিপরীক্ষার কথা ভেবে দিল আমার আতকে উঠছে।
আরে সে তরতর করে বেড়ে উঠলেও কি মানসিক চাপ সইবার মতো ক্ষমতা তার বেড়েছে কিনা? তার বিকাশ ঠিকমতো হচ্ছে কিনা? শুধু হাতে পায়ে লম্বা হলে আর পরীক্ষায় প্রথম হলেইতো মেধাবি হয়না।
কিন্তু আমার আক্ষেপটা হলো মুনাফালোভি বণিকেরা তাদের মার্কটিং এর জন্যকি অন্যকোন আইডিয়া খুজে পেলনা। শিশুদের আনন্দময় শৈশবে তার লুলোপ দৃষ্টি না দিলে কি হতোনা??
আমার জানামতে যে কোম্পানিটি এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে তারা বেবি ডায়াপার বিক্রি করে। আর ৫ বছর বয়েসি একটা বাচ্চার কি ডায়াপার পড়ার বয়স আছে??
যাই হোক অনেকক্ষন বকবক করলাম। জানি আমার এ বকবকানিতে কোন কাজ হবেনা। করপোরেট মহাগর্জনের কাছে আমার এ আওয়াজ ক্ষুত্র মশা কিংবা মাছির প্যান প্যান ভ্যান ভ্যানের চেয়ে বেশি কিছু নয়।
তবু আমি আসা করবো যারা কথা বললে কাজ হয়, যার অর্ডারে এ মহা গর্জনও বন্ধ হতে পারে সেই মহামান্য আদালতের কাছে বিনয় করবো তারা যেন স্বপ্রনোদিত হয়ে, আমার ভাগ্নে এবং বাংলাদেশর তাবৎ শিশুদের আনন্দময় শৈশব নিশ্চত করতে ব্যাবস্থা নেয়।
২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:২৯
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: পুরোটাই ব্যবসা
৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০৯
বিপরীত বাক বলেছেন: যা খুশি করুক, চলুক।
আমাদের এই মগের মুল্লুক।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:১৬
ফেরদাউসুর রহমান বলেছেন: আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ ধারা থেকে অসুস্থ ধারায় নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াগুলো মতো এটিও একটি প্রক্রিয়া| ধন্যবাদ বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য|