নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কবিতা এবং সমসাময়িক

কবি আলমগীর গৌরিপুরী

আ‌মি নি‌জে‌কে একজন ক‌বি দাবী ক‌রি । কারন ক‌বিতা আমার প্রা‌ণের স্পন্দন , ত‌বে গল্প আমার ম‌নের খোরাক ।

কবি আলমগীর গৌরিপুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কামাল আতাতুর্ক থেকে এরদোগান

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৫৮

ধর্ম বলতে কিছুই নেই, ধর্ম হল মানুষকে শাসন করার একটা পদ্ধতি মাত্র। কোন জাতির উন্নতির জন্য ধর্মমুক্ত হওয়া ছাড়া কোন পথ নেই। তাই আজ থেকে আমার রাষ্ট্রকে ধর্ম মুক্ত হিসাবে ঘোষনা করলাম। আমরা কোন ধর্মের অনুসারী নই। আমরা ধর্ম নিরপেক্ষ। আজ থেকে দেশের শাসন চলবে সেকুলারিজমের উপর । আমার দেশে কোন ধর্মের প্রাধান্য নেই।

এই কথা ঘোষনা দিয়েছিলেন তুরস্ককের (আতাতুর্ক) জাতির পিতা মোস্তফা কামাল পাশা। তিনি আধুনিক তুরস্কের প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন। কামাল আতাতুর্ক নামে বিশ্বব্যাপি পরিচিত তিনি। ১৯২২ সালে অটোম্যান সম্রাজ্যের পতন করে ১৯২৩ সালে সেকুলার রাষ্ট্রের অভিযাত্রা শুধু করেন মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক । ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত (তাহার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত) তিনি সেকুলারিজম প্রতিষ্টার জন্য সংগ্রাম করেন গেছেন। সেকুলারিজমকে কামালিজম ও বলা হয়।

তৎকালীন শিক্ষা ব্যবস্থা তিন শ্রেণীতে বিভক্ত ছিল, সুলতানি, ধর্মীয়, আর সাধারণ শিক্ষা।

>তিনি পুরাতন সকল প্রকার শিক্ষা পদ্ধতির মুলোৎপাঠন করে সেকুলার শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন।
>সেকুলার স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
> নারীদের কে মুক্তভাবে চলার জন্য নির্দেশ দেন, সকল প্রকার ধর্মীয় বিষয়কে নিষিদ্ধ করেন। নারীদের হিযাব নিষিদ্ধ করেন।
> উলঙ্গ ছবি আকা, পেইন্ট করাকে বৈধ ঘোষনা করেন।
>তুরস্ককে ধর্ম নিরপেক্ষ আধুনিক রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষনা দেন।
তাহার মৃত্যুর সত্তর বছর পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত ছিল।
এই সত্তর বছরে দশজন রাষ্ট্রপতি তার নীতিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন।

কিন্তু ধর্মীয় অনুভূতি হল আত্মার উপলব্দি। সত্তর বছরে মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠে সেকুলারিজমের প্রতি। সেকুলারিজমকে শেষ করার আন্দোলনে সত্তর বছরে তুরস্কের অনেক ধর্মীয় নেতা জীবন উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু তুরস্কে ধর্মীয় শাসন ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা থামেনি।

১৯৭২সালে এই সেকুলার বিরোধী আন্দোলনের সাথে যোগ দেয় "মারমারা বিশ্ববিদ্যালয়ের "ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা" বিভাগের মেধাবী ছাত্র রিসেপ তাওয়েব এরদোগান। রিসেপ তাওয়েব এরদোগান ১৯৫৪ সালে ২৬ শে ফেব্রুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৭২ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত "ন্যাশনাল স্যালভেশন পার্টির" ব্যানারে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় প্রচারনায় সংগঠনের একজন সংক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। কিন্তু ১৯৮১ সালে "স্যালভেশন পার্টি" সেকুলার সরকার কতৃক নিষিদ্ধ হয়। নিষিদ্ধ হওয়ার একবছর পর "ওয়েলফেয়ার পার্টি" প্রতিষ্টা হয়। এখানেও তিনি সংক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এই সংগঠন ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বর্তমান ছিল। ১৯৯৪ সালে ২৭ শে মার্চ "রিসেপ তাওয়েব এরদোগান" ওয়েলফেয়ার পার্টি থেকে "ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হয়"। কিন্তু ১৯৯৮ সালে আবার ওয়েলফেয়ার পার্টি সেকুলার সরকার কতৃক নিষিদ্ধ হয়। বিকল্প হিসাবে ১৯৯৮ সালে "ভিড়চু পার্টি"র ব্যানারে বিভিন্ন সামাজিক কাজ শুরু করেন।
১৯৯৮ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সারা তুরস্ক ব্যাপি ব্যাপক দাওয়াতি কাজ করেন। সমাজের প্রত্যেক স্তরের মানুষের কাছে গ্রহণ যোগ্যতা অর্জন করতে শুরু করে। স্কুল, কলেজ,মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাজার হাজার ইসলামীজমের কর্মী তৈরি হয়।
২০০১ সালে ভিড়চু পার্টিও নিষিদ্ধ হয়। তারপর ২০০১ সালে তিনি "জাস্টিক এন্ড ডেবোলপমেন্ট পার্টি" প্রতিষ্টা করেন।

এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। "জাস্টিক এন্ড ডেবোলপমেন্ট পার্টি" তুরস্ক ব্যাপী ব্যাপক গ্রহণ যোগ্যতা পায়। জনগনের সমর্থনের সুবাদে ২০০৩ সালে "রিসেপ তওয়েব এরদোগান" তুরস্কের ৩৬ তম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হয়। এবং তুরস্কের ইতিহাস থেকে "সিঙ্গেল পার্টি" রাজনীতির অবসান ঘটে। ২০০৩ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সফলতার সহিত প্রধানমন্ত্রীর দায়ীত্ব পালন করেন। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ছিল "আহমেদ গুল"
২০১৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি তুরস্কের ১২তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হয়। বর্তমানে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়ীত্বপালন করছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে "রিসেপ তওয়েব এরদোগান"
সেকুলার সরকার কতৃক "ধর্মীয় আইনকানুন পালনের উপর যে নিষেজ্ঞা ছিল তা তুলে নিয়েছেন। এবং বলেছেন সবাই সবার ধর্ম স্বাধীন ভাবে পালন করতে পারবে, ধর্মীয় শিক্ষায় আর কোন বাধা নেই।
তুরস্ককে আধুনিক মুসলিম দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করেছেন।
এই সংস্কারের জন্য তার রাজনৈতিক দল "জাস্টিক এন্ড ডেবোলপমেন্ট পার্টি" কাজ করে যাচ্ছে।
"রিসেপ তওয়েব এরদোগান'' ইতিহাস পরিবর্তনের জীবন্ত উদাহরন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:০৮

সাদী ফেরদৌস বলেছেন: এই কামাল কে নিয়ে ইসলামের মহান কবি নজরুল একটা কবিতাও লিখেছিলেন " কামাল পাশা " নামে " তুনে কামাল কিয়া ভাই "

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:১৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


কামাল ছিল বড় রাজনীতিবিদ।

৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:২৬

কবি আলমগীর গৌরিপুরী বলেছেন: হো , রাজনীতিবিদ ছিল, এবং কামালিজমের প্রতিষ্টাতাও ছিল,
কামালিজম মানে সেকুলারিজম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.