নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Alaukika Disari

https://www.facebook.com/alaukika.disari

Alaukika Disari › বিস্তারিত পোস্টঃ

''ভাংতি''

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:০৯



গোধূলি রাঙ্গা আকাশটা আস্তে আস্তে রুপালী চাঁদের আলোয় ভরা সন্ধ্যেয় যখন পুরোপুরি নিমজ্জিত ঠিক তখনই ভ্রম কেটে গেলো শাফিয়ানের। সে যে বিকেল থেকে সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা অবধি বারান্দায় শুয়ে আছে এটা বুঝতে পারলো ভ্রম কেটে যাওয়ার পর প্যান্টের পকেট থেকে মোবাইলে কয়টা বাজে এটা চেক করার পর। এতোটা আনমনা গোছের কেউ না শাফিয়ান, তবুও আজ হয়ে গেলো। স্বভাবত রাতের বেলা মাঝে মাঝে চোখ বুজে জেগে থেকে আনমনা জগতে ঘোরাঘুরি করে সে কিন্তু আজ আস্ত দুটো চোখ দিয়ে তাও আবার বিকেল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত আকাশের দিকে চেয়ে থেকে আনমনা হল। কিছুটা বেকুব বেকুব অনুভূতি হয় আনমনা ভাব টা কেটে যাওয়ার পর।

সটাং করে শার্ট টা পরে বাসার নীচের দোকান থেকে একটা মার্লবোরো সিগারেট জালিয়ে গলির রাস্তার একপাশে বসে আছে। একটা রিকশা এসে থামলো ওর কয়েক গজ সামনে। হঠাৎ বাদানুবাদের চেঁচামেচিতে কি হল দেখতে উঠে দাঁড়ালো এবং রিকশার সামনে গেলো শাফিয়ান, গিয়ে বুঝলো ভাংতি থাকা না থাকা নিয়ে বাদানুবাদ আসলে। রিকশাওয়ালা কে জিজ্ঞাসা করলো সে, “কি হইছে মেয়েছেলের সাথে চেঁচামেচি করো কেন? তোমার রুচি নাই?” রিকশাওয়ালা জবাব দেয়, “কি কমু মামা কন? হ্যায় তিরিশ টাকার ভাড়া দিতে পাসশো টেহার নোট দেয়, হারাদিনে টিপ মাইরা দুইশো পজ্জন্ত কামাই নাই, কাইজ্জা কি সাধে করি মামা?” ঠিক তখনই মেয়েটি রিকশাওয়ালার মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে শাফিয়ান কে বলে, “মেয়েছেলে মানে কি? রুচি নাই মানে কি? এই যে দেবদাস চটাং চটাং করে কথা বলতে আমিও জানি, মুরোদ থাকলে পাঁচশো টাকা আমাকে ভাংতি করে এনে দিন।”

মেয়েটার কথা শুনে বিষম খেলো শাফিয়ান, জামানা যে বদলাচ্ছে এটা গত এক বছরে ঘরে টিকটিকির তেলাপোকার জীবন যাপন করে সে বুঝতে পারে নিই। অগত্যা সে মেয়েটির কাছে থেকে টাকা নিয়ে পাশের পরিচিত কনফেকশনারি থেকে ভাংতি করে এনে দিল। মেয়েটি ভাংতি টাকা নিয়ে রিকশা ভাড়া চুকিয়ে বুকিয়ে হাটা ধরলো, শাফিয়ান পিছন থেকে মেয়েটি কে ডেকে বলল, “এই যে মিস চটাং চটাং আদব লেহাজ তো জানেন না দেখছি, আমার থ্যানক্স কই?” মেয়েটি তখন বলল, “ওহ সরি দেবদাস সাহেব, আপনাকে বিশাল আকৃতির ধন্যবাদ”।

ধন্যবাদ দিয়ে আবার হাটা যখন ধরল মেয়েটি ঠিক তখনই শাফিয়ান বলল, “স্বাগতম মিস চটাং চটাং, প্রতিদিন ঠিক এইসময়ে রিকশা করে আসবেন কিন্তু পাঁচশো টাকার নোট নিয়ে, ভাংতি করে দিতে যে এতো মধুর আনন্দ লাগে আগে জানতাম না”। এই কথা শুনে মেয়েটি হৃদয়ে সূচ ফোটানো হাসি শাফিয়ান কে উপহার দিয়ে চলে গেলো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.