নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাহিত্য, সংস্কৃতি, কবিতা এবং সমসাময়িক সামাজিক বিষয়াদি নিয়ে গঠনমুলক লেখা লেখি ও মুক্ত আলোচনা

ডঃ এম এ আলী

সাধারণ পাঠক ও লেখক

ডঃ এম এ আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরশ পাথর প্রাপ্তি :পর্ব-১ মানুষসহ জীববৈচিত্র বাঁচাতে বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘরের পুণরুজ্জীবন প্রসঙ্গ

২২ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৩০


পরশ পাথর পাওয়ার কাহিনী কোন স্বপ্ন বা গল্প নয়, এটা আমার জীবনে ঘটে যাওয়া একটি জলজ্যান্ত সত্য ঘটনা,পরশ পাথরটি পেয়ে হারানোটাও ছিল আরো মর্মান্তিক ।পরিবারের বয়স্ক লোকজন ছাড়া কাছের দুনিয়ার আর কেও এ কাহিনী এখনো জানেনা। পরিবারের গুরুজনরা নীজেরাও এ কাহিনী কাওকে বলেননি আর আমাকেও বলেছিলেন একাহিনী যেন কাওকে না বলি। এর কারণ হিসাবে বলেছিলেন হারানো পাথরতো আর খুঁজে পাবনা তবে মুল্যবান পরশ পাথরটি শ্পর্শ করার ফলে এর কিছু সুফল আমি পেতে পারি।এটাও বলেছিলেন কারো কাছে বললে আমার কথা কেও বিশ্বাসতো করবেইনা বরং হাসি মস্করা ও বিদ্রুপ করবে। এর ফলে আমার জীবনে নাকি ভয়ংকর ভয়ংকর অনেক বিপদ ঘটতে পারে । প্রথম বিপদটাই নাকি আসবে বন্ধু বান্ধবদের নিকট হতে বিবিধ ধরনের বিদ্রুপ তথা বুলিয়িং এর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে না পেরে স্কুলের লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে থেকে নীজের জীবনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে পারি। কি ভয়ংকর কথা, সেই বয়সে সোনা দানার মুল্য কতটুকু তা জানতামনা ,তাই এর প্রতি কোন আকর্ষন ছিলনা। তবে পরশ পাথর প্রাপ্তির কথা কাওকে বললে স্কুলের লেখা পড়া ছেড়ে দেওয়ার বিপদের কথাটি মনের ভিতর গেথে যায়। ছোট কালে ছড়ার বইয়ে ও গুরুজনদের কাছ হতে শুনে এসেছি,লেখাপড়া করে যে গাড়ী ঘোড়া চড়ে সে। তাই যে তথাকথিত পরশ পাথর পেয়েও হারিয়েছি আর হারানো পাথরটি দেখতে সুন্দর হলেও যার গুনাগুণের কোন বিষয়ই আমি চাক্ষুষ দেখিনি, সেই পাথরের কথা বন্ধুদের কাছে বলে নীজের বিপদ ডেকে না আনার জন্য গুরুজনদের সাবাধান বাণী এতদিন যতন করে মেনেই চলেছি।

এবার জীবনঘাতি করুনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হসপাতালের কেবিনে অসহায়ের মত নাকে মুখে অক্সিজেনর মুখোষ পরে অন্তিমের পানে ধাবিত হওয়ার সময় দেহ মনে চরম যন্ত্রনা ভোগ করতে হয়েছে। করুনা ভাইরাসের ছোবলের যে কি যন্ত্রনা তা ভুক্তভোগী ছাড়া কেও বুঝবেনা । করুনা ভাইরাসের ছোবল যন্ত্রনা অনুভুত হত মাথার চুলের গোড়া হতে শুরু করে পায়ের আঙ্গুলের ডগা পর্যন্ত । শ্বাস কষ্টে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার সাথে বিরামহীন কাশি , প্রতিটি কাশির সাথে গলায়,বুকে ও তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা, মনে হত এই বুঝি জীবন গেল,ডাক্তার নার্স এসে ইনজেকশন দিয়ে ব্যথা ও কাশীর প্রকোপ বন্ধ করে যাওয়ার পরে ঘুমে একটু চোখ বন্ধ হলেও কিছুক্ষনেই মধ্যেই আবার কাশীশুরু হয়ে তিব্র মাথা ব্যাথা নিয়ে ঘুম ভেঙ্গে যেত । মনে হতো বুকের ভিতর যেন কাশীর একটি সফট ওয়ার ইন্সষ্টল হয়ে আছে যার মুল কাজ হলো ঘুমানোর সাথে সাথেই যেন অটোমেটিক্যলী কাশি শুরু হয়ে যায় । শরীরের এমন কোন অঙ্গ প্রতঙ্গ নেই যেখানে প্রচন্ড ব্যথা হতোনা। জ্বরের ফলে মুখে নেই খাওয়ার রুচী ,নাওয়া খাওয়া ঘুম বন্ধ, প্রাতক্রিয়া কি জিনিষ তা ভুলেই গিয়েছিলাম ।

আত্মীয় স্বজনসহ কোন ভিজিটরস আসতে পারছেনা কাছে। স্বাস্থসেবীগন মুখোশ পরে কিছুক্ষন পরে পরে এসে ব্লাড প্রেসার , হার্টবিট ও অক্সিজেন প্রেসার লেভেল চেক করে যাচ্ছেন । ফ্যাল ফ্যাল করে তাঁদের দিকে কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে কেমন দেখলেন জিজ্ঞেস করলে সংক্ষিপ্ত জবাব কন্ডিশন স্টেবল ,নো চেঞ্জ। আশা নিরাসার কোন বাণী নেই তাদের চোখে মুখে। ব্যথা যন্ত্রনায় মাঝে মাঝে বেহুশ, মাঝে মাঝে হুশ এ নিয়েই হাসপাতাল বেডে শুয়ে কাট ছিল দিন। মাঝে মধ্যে ব্যথার প্রকোপ একটু কমে হুশ আসলে বাল্যকাল হতে শুরু করে হালনাগাদ জীবনের অনেক স্মৃতিকথাই মনের পর্দায় উঠত ভেসে। সে সময় অনেক কাহিনীর ভীরে ভুলে যাওয়া পরশ পাথর প্রাপ্তি প্রক্রিয়া ও তার পরবর্তী মর্মষ্পর্শী ঘটনার কিছু স্মৃতিকথা মনে পড়ত । কেবলি মনে হত, যা হয় তা হবে, হায়াত না থাকলে মরেইতো যাব, তবে আর কেন মুরুব্বীদের সাবধানবাণী মেনে নিয়ে মুখ বন্ধ করে চলা? তাছাড়া দাদা দাদী মা বাবা প্রয়াত হওয়ার পর এখন আমিই পরিবারের বয়োজেষ্ট, বাহ্যত জবাবদিহীতার তেমন দায় নেই। তা ছাড়া লেখাপড়া যৎসামান্য যাই করেছি, গাড়ী ঘোড়া চড়েছি তার থেকে ঢের বেশী । তাই মনে হয়েছিল কি আর হবে , এবার সুযোগ পেলে জীবনে ঘটে যাওয়া একটি বেদনা বিদুর ঘটনার সাক্ষী পরশ পাথর প্রাপ্তির কাহিনীটা জীবনের শেষ ট্রেনটা ধরার আগে সকলের কাছে বলেই যাব। তাছাড়া জীবনের দীর্ঘ চলার পথে কত রুপের পরশ পাথরতুল্য জিনিষ/বিষয়ের সাথেই না পরিচিত হয়েছি। সেসব প্রেক্ষিতেই ভাবছি লাল রঙের একটি পরশ পাথর প্রাপ্তির কাহিনীর সাথে বিবিধ ধরনের পরশ পাথরের কাহিনী নিয়ে এই নিরানন্দ ও ভয়ংকর করুনার দিনগুলিতে সরস/নিরস কিছু আলোচনা সামুর পাতায় পর্বাকারে রেখে যাব। সে ভাবনা হতেই লেখাটির অবতারনা। লেখাটি যদি একজন পাঠকের কাছেও ভাল লাগে তাহলেও লেখাটি স্বার্থক হয়েছে বলে মনে করব।

লাল রঙের গোলাকার পরশ পাথরটি প্রাপ্তির প্রক্রিয়ার শুরু সেই বাল্যকালে ছোট একটি মাটির ঘর বানাতে গিয়ে ।আমি তখন পঞ্চম শ্রেণীর বার্ষীক লিখিত পরীক্ষা শেষ করেছি। আমাদের মডেল প্রাইমারী স্কুলে সেসময় একটি সৃজনী পরীক্ষা হতো। তখন অবশ্য এই পরীক্ষাটির নাম ছিল ‘হাতের কাজের পরীক্ষা’। এই পরিক্ষার জন্য ঘরে বসে যে কোন একটি সৌখিন কারু কাজ করে নিদৃষ্ট দিনে স্কুলে নিয়ে যেতে হতো । মাটির পতুল,কাঠের পুতুল ,কাগজের ফুল,কাঠের ছোট নৌকা,বাশের ঝুরী , পাটের দরির শিকে, নকশী করা হাত পাখা মোট কথা বাড়ীতে বসে নীজ হাতে করা সৌখিন যে কোন উদ্ভাবনীমুলক সৃজনশীল কাজই ছিল এই পরীক্ষার বিষয় বস্তু । এই সৃজনী পরীক্ষার জন্য কি তৈরী করা যায় সেটা ভাবতে ভাবতেই একদিন পার হয়ে গেল । অনেক ভেবে অবশেষে ছোট একটি মাটির ঘর বানাব বলে মনস্থ করলাম । আমাদের এলাকায় সেসময় খুব সুন্দর সুন্দর মাটির ঘর তৈরী হতো। মাটির ঘরগুলি ছিল খুবই মজবুত এবং বলতে গেলে এয়ার কন্ডিশন্ড ,শীতকলে ঘরের ভিতরে গরম এবং গ্রীস্মকালে ঘরের ভিতরটা থাকত শীতল ।

মাটির ঘরের দেয়ালগুলি বিশেষভাবে তৈরী শক্ত মাটির ফাউন্ডেশনের উপর দাঁড় করানো এবং দেয়ালের পুরুত্ব ছিল প্রায় ১৮ থেকে ২৪ ইঞ্চির মত । ঘরের ভিতরটাকে ঠান্ডা রাখার জন্য অনেকেই শনের(খরকুটা জাতীয় শক্ত উদ্ভিদ) ছাউনী কিংবা কুমারের হাতে তৈরী পোড়ামাটির টালী দিয়ে ঘরের চালের ছাউনী দিতেন । অনেকে নীজেরাই মাটির ঘর তৈরী করতেন । যাদের সমার্থ ছিল তারা দক্ষ কারিগরের দ্বারা মাটির ঘর তৈরী করতেন । আমাদের বাড়ীতে সে সময় একটি বেশ বড় মাটির ঘর তৈরী করা হয়েছিল দক্ষ কারিগরের হাত দিয়ে । সে সময় আমি খুবই মনযোগ দিয়ে দেখেছি কারিগরেরা কিভাবে ঘরের জন্য মাটি তৈরী করে এবং তৈরী মাটিকে কিভাবে ছোট ছোট কাদামাটির ঢেলার মত করে একটির উপর আরেকটি বসিয়ে দেয়াল তৈরী করে। ঘর তৈরীর জন্য কারিগরেরা প্রথমেই সন্ধান করত ঘরের জন্য নির্ধারিত জায়গার আশে পাশে এটেল মাটি পাওয়া যায় কিনা । তারপর সে মাটিকে পঁচিয়ে ছানা করার জন্য ঘরের কাছে প্রায় ২০ফুটX১০ফুট আকারের ছোট একটি খাদ/গর্ত তেরী করত । তারপর সেই খাদে এটেল মাটি ভরে পরিমান মত পানি মিশিয়ে তার উপরে কারিগরের কয়েকজন যোগালী দিনমান লাফালাফি করে কিংবা গরু/মহিষ জুরে দিয়ে কাদামাটির ছানা তৈরী করত ।

কাদামাটির ছানাকে ভালমত পঁচানোর জন্য দিন পনের সময় দিয়ে পরে কারিগর এসে কাদামাটি হাতে নিয়ে টিপে টিপে পরখ করে দেখতো সেটা মাটির ঘরের দেয়াল তুলার উপযুক্ত হয়েছে কিনা । তিনি যখন বুঝতেন মাটি উপযোগী হয়েছে তখন দলের অন্যান্য যোগালীদেরকে নিয়ে এসে ঘরের দেয়াল তোলার কাজে লেগে পরতেন । ঘরের দেয়াল তোলার কাজটিও সপন্ন হতো ধাপে ধাপে । প্রথমে মালিকের চাহিদা মত ঘরের আকারের মাপ জোক অনুযায়ি দেয়ালের ফা্উন্ডেশনের জন্য প্রায় ২/৩ ফুট গভীর গর্ত করা হত। ঘরের নীচের মাটির কোয়ালিটি ভাল না হলে ফাউন্ডেশনের জন্য তৈরী গর্ত ভরাট করা হতো বিশেষভাবে তৈরী পঁচনো কাদামাটি দিয়ে। কাদামাটি দিয়ে ভুমি লেভেল পর্যন্ত মাটি ভরাটের পর দিন পনের সময় দেয়া হতো ফাউন্ডেশনের মাটি শুকানোর জন্য। শীতমৌসুমের শেষের দিক হতে শুরু করে বর্ষাকাল আসার পুর্ব সময়টিই ছিল মাটির ঘর তৈরীর উপযুক্ত সময় । সেই ছোটকালে ঘটা কাহিনীর কোন ছবি নেই বলে অবস্থাটি দেখানোর জন্য মাটির গর্ত/খাদ তৈরী,মহিষ দিয়ে মারিয়ে কাদামাটি তৈরী ও দেয়াল উঠানো দৃশ্যের একটি ধার করা ছবি নীচে তুলে দেয়া হলো ।
ছবি -১: মাটিতে গর্ত/খাদ তৈরী,মহিষ দিয়ে কাদামাটি তৈরী এবং দেয়াল উঠানোর দৃশ্য

ভুমি লেভেল থেকে প্রায় ১৮ ইঞ্চি হতে ২৪ ইঞ্চি পুরু দেয়াল উপরের দিকে উঠনো হতো ধাপে ধাপে । দেয়ালের জন্য পঁচানো মাটি বসানোর কাজটিও ছিল বেশ টেকনিক্যাল।খাদে পঁচানো কাদামাটির ছানা বেশ আঠালো হয়ে যেত । ঘরের দেয়াল তৈরীর জন্য করিগরের সাথে কয়েকজন যোগালীর একটি দল থাকত।।একজন যোগালী কোদাল দিয়ে কেটে মাটি উঠাত ।কোদালের এক কোপে প্রায় ৫ কেজি সমান একতাল মাটি উঠে আসত । মাটি কাটার সময় যোগালীগন খাদ হতে ঘর পর্যন্ত লাইন করে দাঁড়িয়ে যেত । খাদ থেকে কোদালী কর্মী মাটি কাটার পরে অন্য আর একজন নরম মাটির ডেলাটি হাতে তুলে নিয়ে ছুড়ে দিত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা পরের যোগালির দিকে। সে ঐ নরম মাটির ডেলা দুহাতে আলতো করে ধরে বিশেষ ভঙ্গিমায় ছুড়ে দিত পরের জনের দিকে। সে আবার নরম মাটির ঢেলাটি লুফে নিয়ে ছুড়ে দিত পরের জনের দিকে। মাটির ঢেলাটি ছন্দময় তালে এমনতর ভাবে লুফালুফি খেলতে খেলতে মহুর্তেই পৌঁছে যেতো শেষ প্রান্তে থাকা কারিগরের হাতে। কারিগর দেয়াল তোলার জায়গায় দাঁড়িয়ে মাটির ঢেলাটি মাথার উপর তুলে জোড়ালো ভাবে একটি হু শব্দ করে দেয়ালে বসিয়ে দিত খুব শক্ত করে। দুর হতে দেখে মনে হতো দেয়ালে মাটি বসানো যেন একটি ছন্দময় মাটির ঢেলার লুফালুফি খেলা। খানিক বিরতি/বিশ্রাম নিয়ে এভাবে মাটি ফেলে ফেলে দেয়াল তুলার কাজ এগিয়ে যেত । খাদে যে পরিমান পঁচানো মাটির ছানা তৈরী করা হত তা দিয়ে প্রায় দুই হতে তিনফুট উচু দেয়াল তোলা যেতো। দেয়ালটি ঠিকমত খাড়াখাড়িভাবে উপরের দিকে উঠছে কিনা তা একটি লম্বা মোটা সুতার মুখে পাথর বেধে উপর হতে নীচে ফেলে পরখ করে দেখা হতো, ঠিক যেমন এখনকার রাজমিস্ত্রিগন ইটের দেয়াল সুজাসুজি উপরের দিকে উঠছে কিনা পরীক্ষা করে দেখেন।

দেয়ালটিকে ৩/৪টি ধাপে উপরের দিকে উঠানো হতো । তাই পরবর্তী প্রতিটি ধাপেই একই নিয়মে মাটি পঁচানো থেকে শুরু করে মাটি ফেলে দেয়াল তোলা হতো। দেয়ালের দুই পাশে বের হয়ে থাকা এবরো থেবরো মাটিকে সাইজমত রাখার জন্য আরো কিছু টেকনিক্যাল কাজ করা হতো । যথা দেয়ালের মাটি নরম থাকা সময়কালীনই চাপাতি সাইজের বড় একটি ভোজালী বা ধান কাটার জন্য কাচির মত দেখতে বড় সাইজের কাচি দিয়ে দেয়ালের দুদিকের এবরো থেবরো মাটি ছেটে ফেলা হতো। দেয়াল তুলার কারিগর ঘরের মালিকের সাথে পরামর্শ করে মাপ আনুযায়ী দরজা জানালা ও ভেনটিলেটরের জন্য জায়গা বাদ রেখে কাদামাটি বসাত। নির্ধারিত মাপ অনুযায়ী দরজা ,জানালা ও ভেনটিলেটর পর্যন্ত দেয়াল উঠে গেলে কাঠের মোটা তক্তা দিয়ে বিম বসানো হতো । ঘরে সিলিং বসানো ও ছাউনীর টানা দেয়ার জন্য ব্যবহৃত হতো পুরাতন তাল গাছের ফালি, এটা এমনই শক্ত যেন অব্যয় অক্ষয়।

মাটির ঘরের জন্য কোন পিলার দিতে হতোনা । মাটির ঘরের জন্য দেয়াল তুলে সিলিং ও চালার জন্য টানা বা ধনে বসানো পর্যন্তই ছিল মাটির ঘরের দেয়াল তুলার কারিগরের কাজ । তারপর ঘরের চালা বা ছাউনী তৈরী ও স্থাপন , দরজা জানালা তৈরী ও ফিট করার কাজটি সম্পন্ন করত সুতার তথা কাঠ মিস্ত্রীগন । তবে দরজা জানালা ও ঘরের চাল(ছাদ) বসানোর কাজ শেষ হলে দেয়ালের ফিনিসিং কাজের জন্য বিশেষভাবে দক্ষ আরেক দল কারিগর নিয়োগ করা হত । তারা মাটির সহিত তুষ মিশিয়ে দেয়ালে লেপ দেয়ার উপযোগী মাটি তৈরী করত । দেয়ালের এবরো থেবরো মাটি হাতুরী ,বাটাল .ছেনী ও শাবল দিয়ে ছেটে ফেলা হত । তারপর দেয়ালের গায়ে তুশমিশ্রিত মাটি দিয়ে খুব যত্ন করে মসৃন একটি প্রলেপ দেয়া হত । বৃষ্টির হাত হতে দেয়ালকে রক্ষার জন্য নীচের অংশে অনেকেই আলকাতরার প্রলেপ দিতেন, পারলে ঘরের দক্ষিন পুর্ব দুদিকে বারন্দা দিয়ে দেয়ালকে বৃষ্টির হাত হতে রক্ষা করাসহ ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হত। অনেকে শুকনো দেয়ালে ফুল, পাখী, লতা পাতার বাহারী নক্সা তৈরী করাতেন।

অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে জীবনের এই প্রান্তে এসে যখন ছোট বেলার মাটির ঘর তৈরীর স্মৃতিচারন করছি তখন জীবন চলার পথে চারিদিকে দেখা ও জানা কিছু কথামালা প্রসঙ্গক্রমে উঠে আসছে লেখার ভিতরে । পথের পাচালীর মত সে সব কথা বাদই বা দেই কি করে। তাই মনে হল লিখে যাই থাকনা আরো কিছু কথা ও ছবি কাগজের পাতা ভরে । এগুলিতো কোন কালে রূপান্তরিত হলেও হতে পারে পরশ পাথরে ।

হ্যাঁ, যে কথা বলছিলাম, মাটির ঘরে অনেকেই নকশা তৈরী করার কাজ করে । মাত্র মাস চারেক আগে চ্যানেল আই অন লাইন নিউজ পর্টালে দেখেছিলাম ‘মাটির ঘরে জীবনের রঙ’ সেখানে বলা হয়েছে তেভাগা আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেত্রী ইলা মিত্রের স্মৃতিবিজড়িত যশোহর জেলার নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের টিকইল গ্রামে ঐতিহ্যগতভাবেই প্রায় ৯০ ভাগ বাড়িতে টিকে আছে মাটির ঘর।
ছবি -২ : শৈলকুপা উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামের পৈত্রিক বাড়ির পাশে ইলা মিত্র

আলোচনার এ পর্যায়ে তেভাগার মত একটি ঐতিহাসিক আন্দোলনের বিষয়ে দুএকটি কথা না বলে সামনে যাই কি করে । বাংলার গ্রামীণ সমাজে বৃটিশ শাসনের আগ পর্যন্ত ভূমির মালিক ছিলেন চাষীরা। মোগল আমল পর্যন্ত তারা এক-তৃতীয়াংশ বা কখনো কখনো তার চেয়েও কম ফসল খাজনা হিসাবে জমিদার বা স্থানীয় শাসনকর্তার মাধ্যমে রাষ্ট্রকে প্রদান করতেন। বৃটিশ শাসন আমলে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা প্রচলনের ফলে চাষীদের জমির মালিকানা চলে যায় জমিদারদের হাতে। এ সময় জমিদার ও কৃষকদের মাঝখানে জোতদার নামে মধ্যস্বত্বভোগী এক শ্রেণীর উদ্ভব ঘটে। এরা পত্তনি প্রথার মাধ্যমে জমিদারদের কাছ থেকে জমি পত্তন বা ইজারা নিত। ফসল উৎপাদনের সম্পূর্ণ খরচ কৃষকেরা বহন করলেও যেহেতু তারা জমির মালিক নন সে অপরাধে উৎপাদিত ফসলের অর্ধেক তুলে দিতে হতো জোতদারদের হাতে। জমিদার-জোতদারদের এই শোষণ কৃষকের মনে বিক্ষোভের জন্ম দেয়। এই বিক্ষোভকে সংগঠিত করে ১৯৩৬ সালে গঠিত হয় 'সর্ব ভারতীয় কৃষক সমিতি'। ১৯৪০ সালে কৃষক প্রজাদরদী ফজলুল হক মন্ত্রিসভার উদ্যোগে বাংলার ভূমি ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব দেয় 'ফাউন্ড কমিশন’।
ছবি - ৩ : অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ( পাকিস্তানের প্রকৃত স্থপতি এবং লাহোর প্রস্তাবের ঘোষক)

এই কমিশনের সুপারিশ ছিল জমিদারি প্রথার উচ্ছেদ করে চাষীদের সরাসরি সরকারের প্রজা করা এবং তাদের উৎপাদিত ফসলের তিনভাগের দুইভাগের মালিকানা প্রদান করা। এই সুপারিশ বাস্তবায়নের আন্দোলনের জন্য কৃষক সমাজ ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে। চল্লিশের দশকে এসব আন্দোলনেও ইলা মিত্র নেতৃত্ব দেন। তিনভাগের দুইভাগ ফসল কৃষকের এই দাবি নিয়ে বেগবান হয় তেভাগা আন্দোলন। ১৯৪৬-১৯৪৭ সালে দিনাজপুরে কমরেড হাজী দানেশের প্রচেষ্টায় সূচিত হয় এক যুগান্তকারী তেভাগা আন্দোলন। চল্লিশের দশকের এই আন্দোলনে ইলা মিত্রও নেতৃত্ব দেন । জনদরদী এ সকল নেতা নেত্রীদের প্রতি রইল হৃদয় নিংরানো শ্রদ্ধাঞ্জলী।

যাহোক, নক্সা করা মাটির ঘরের পুর্ব কথায় ফিরে আসি। টিকাইল গ্রামের প্রতিটি মাটির ঘরের দেয়ালগুলো অসাধারণ আল্পনায় চিত্রিত। ফুল, লতা-পাতা, গাছ, নদী, নৌকা, পাখি, আকাশ, মানুষ – কী নেই তাদের আলপনার উপাদানে।
ছবি-৪ : অসাধারণ আল্পনায় চিত্রিত টিকাইইল গ্রমের একটি মাটির ঘর

বংশ পরম্পরায় বাড়ির দেয়ালে আল্পনা আঁকার এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছেন ওই গ্রামের নারীরা।ঘরের কাজের ফাঁকে তারা রঙিন করে তুলেছেন গোটা একটি জনপদ।
ছবি -৫ : মাটির ঘরে রং-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা নকশার কারিগর টিকোইল গ্রামের নারীরা

আমরা সকলেই জানি অতি প্রাচীনকাল থেকেই এ দেশের গ্রামেগঞ্জে বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে মাটির ঘরের প্রচলন ছিল। গ্রামের মানুষের কাছে মাটির ঘর ছিল ঐতিহ্যের প্রতীক । গ্রামের বিত্তশালীরা অনেক অর্থ ব্যয় করে মজবুত দোতলা মাটির ঘর তৈরি করতেন।জীবনের প্রথমভাগে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষনা প্রতিষ্ঠানের গবেষনা সহযোগী হিসাবে কর্মসুত্রে একটি ভিলেজ স্টাডি কর্মসুচীর আওতায় দিনাজপুর,রংপুর, নওগা, রাজশাহী ,বগুড়া, ও যশোহরের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে গিয়ে কাজ করার সময় অনেক সুন্দর সুন্দর মজবুত মাটির ঘর চোখে পড়েছে। কথা প্রসঙ্গে মাটির বাড়ির মালিকগন বলেছেন ছোটখাট ভূমিকম্পেও নাকি তাদের মাটির ঘরের খুব বেশি ক্ষতি হয় না । কোন কোন মাটির ঘর এক থেকে দেড়শ’ বছরেরও বেশী পুরানো। উল্লেখ্য বিশেষভাবে তৈরী এটেল কাদামাটিকে অভিনব কৌশলে দেয়ালে বসানোর ফলে দেয়ালের মাটি এমনই শক্ত হয় যে এর মধ্যে গায়ের জুড়ে খন্তা, কোরাল, শাবল চালালেও সামান্যতম পরিমান মাটি কাটা পরেনা ।শক্ত দেয়ালের মাটিতে উই পোকা কিংবা ইদুর দাঁত বসাতে পারেনা।দেশর উত্তরাঞ্চলে বিশেষ করে রাজশাহী ,বগুরা, রংপুর ও দিনাজপুরে প্রায় শত বছরেরো বেশী পুর্বে তৈরী অনেক মাটির ঘর এখনো আছে বহাল তবিয়তে।
ছবি-৬ রাজশাহী অঞ্চলের একটি মাটির ঘর

বিশ্ব বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতার ভ্রমন বিবরণী হতে জানা যায় অতি প্রাচীনকাল থেকেই এ দেশের গ্রামগঞ্জে মাটির বাড়ির প্রচলন ছিল। এখনো রাজধানী ঢাকার উপকন্ঠে বাড্ডা হয়ে সাঁতার কূল ইউনিয়ন পেরোলেই বেরাইদ ইউনিয়নের বেরাইদ গ্রামে দেখা যাবে শত শত পরিবারের লোকজন বাস করেন মাটির ঘরে। মাটির ঘরগুলোর বেশির ভাগই শত বছরের পুরনো। এত বছরে ছোটখাটো ভূমিকম্প অনেকবার হয়েছে। তবে ঘরগুলোর কোনো ক্ষতি হয়নি, যদিউ রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে অনেক ঘরেরই দেয়ালের বহিরাঙ্গন বেশ ক্ষতিগ্রস্ত আছে বলে দেখা যায় ।অর্থের অভাবে গ্রামবাসী মাটির ঘরে থাকেন এমন নয়। গ্রামের অনেক সচ্ছল পরিবারও পাকা ভবনের পাশেই মাটির ঘরেই আছেন সুখে-শান্তিতে।
ছবি-৭ : পাকা দালানের পাশেই বেরাইদের মাটির ঘরের ছবি

প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে গ্রাম বাংলায় অনেক অবস্থা সম্পন্ন মানুষই টিনের ঘরে বসবাস করতেন এবং এখনো করেন । স্বাধীনতা পুর্বকলীন সময়ে গ্রামীন এলাকায় সিদেল চোরের বেশ উপদ্রব ছিল। যেসব ঘরে টিনের বেড়ার নীচে কমপক্ষে এক ফুট ইটের গাথুনী ছিলনা সেসব ঘরে সিদেল চোরেরা খুব সহজেই সিধ কেটে ঢুকে যেতে পারতো । সিদেল চোরদের হাত হতে নিরাপদ থাকার জন্য অনেকই মাটির ঘর তৈরীর জন্য ঝুকে পরতেন।
ছবি-৮ : টিনের ঘরের বেড়ার নীচে সিদেল চোরের কাটা সিদ (সুত্র: গুগলের ছবি জগতের পাবলিক ডোমেইন )

আবহমান বাংলার ক্লাসিক চোর হলো সিদেল চোর। নাটক, সিনেমা গল্পে আমরা এদের উপস্থিতি দেখতে পাই। সারা গায়ে তেল মেখে হাতে খুন্তি নিয়ে ঘরের বেড়ার নিচের মাটি সরিয়ে এক শিল্প করে এই চোরেরা চুরি করে। অবস্থাসম্পন্ন লোকদের বাসাবাড়ী শক্ত মাটির দেয়ালের কিংবা ইটের দেয়ালের পাকা ঘর হয়ে যাবার ফলে আজকাল এই চোরদের ঘরের সিদ কেটে চুরির ঘটনা তেমন ঘটে না। তবে ডারউইন সাহেবের বিবর্তন তত্ব অনুসরণ করে সিধেল চোরেরা অবশ্য এখন বিবর্তিত হয়ে গেছে। বিবর্তনের ব্যপারটি বিবিধ ধরনের, তবে বড় আকারের বিবর্তন ঘটে গেছে তেল মারামারির ব্যাপারটায়। আগের সিদেল চোররা নিজেদের গায়ে তেল মাখত গর্তে ঢুকা, বের হওয়া, ধরা পড়লে পিছলে বের হয়ে যাবার জন্য আর এখনকার চোরেরা বিবর্তনের ফলে তেল মারে অন্যকে, যেন চুরির রাস্তা সুন্দর, মসৃন আর বাধাবিহীন থাকে। আগে যারা সিদেল চোর ধরার দায়িত্বে ছিল তাদের অনেকেই বিবর্তিত হয়ে বড় মাপের বর্ণচোরা সিদেল চোরে পরিনত হয়েছে। দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড ও জনকল্যান এই ধরনের চোরের কারণে হচ্ছে বাধাগ্রস্ত ।

আজকের এই আধুনিকায়নের যুগে সৌখিন মাটির ঘরের প্রচলন কমে গেলেও গ্রাম বাংলায় দরিদ্র জনগোষ্টির অনেক মানুষই এখনো অতি সাধারন মানের খর কোটার ছাউনী দেয়া জীর্ণ শীর্ণ মাটির ঘরেই বসবাস করছেন। স্যাঁত স্যাঁতে ঘরের মেঝে, আলো বাতাশ চলাচলের জন্য নেই কোন জানালা, হালকা ভাঙ্গাচুরা মাটির দেয়াল, নেই কোন বৃষ্টির পানিরোধক প্রলেপ বা বারান্দা, একটুখানি বৃষ্টি হলেই ঘরের ভিতর গড়িয়ে পরে পানি, ফি বছর তাদের ঘরের দেয়াল বা খর কোটার ছাউনি মেরামত/পরিবর্তন করতে হয় । অস্বাস্থকর ছোট একটি ঘরে গাদাগাদি করে পরিবারের ছোট ছোট ছেলেমেয়েসহ প্রায় ৪/৫ জন বসবাস করে,অভাব অনটনের সাথে অস্বাস্থ্যকর ঘরে বসবাস করে রোগ শোক তাদের নিত্য দিনের সাথী। এত কিছুর পরেও তাদের ইমিউনিটি সিসটেম সম্ভবত খুবই সবল ,তাইতো এই মহামারী করুনা ভাইরাসের কালে তাদের আক্রান্ত হওয়ার খবর তেমন একটা এখনো সংবাদ মাধ্যমে দেখা যায়না।রেডিও টিভি ও অন্যান্য প্রচার মাধ্যমে করোনাক্রান্ত ও মৃত্যুর যে সমস্ত খবর ভেসে আসে তাতে দেখা যায় মন্ত্রী মিনিষ্টার, শিল্পপতি ও তাদের পিতামাতা স্ত্রী সন্তানাদি, বড় বড় সরকারী আমলা, সামরিক বেসামরিক বাহিনীর লোকজন, চিকিৎসক,অধ্যাপক, সাংবাদিক ও স্বাস্থ সেবক/সমাজকর্মীর সংখাই বেশী(এর মধ্যে অবশ্য অনেকেই করোনাক্রান্ত রোগীদের সেবাকার্যে নিয়োজিত ছিলেন, এ সমস্ত করোনাক্রান্ত ও মৃত সকলের জন্য রইল সহমর্মীতা ও শ্রদ্ধাঞ্জলী।
ছবি-৯ : খর কোটার ছাউনী দেয়া গ্রাম বাংলার একটি জীর্ণ শির্ণ মাটির ঘর

যাহোক, সৌখীন মাটির দোতলাই হোক আর পর্ন কুটীরই হোক, ঐতিহ্যময়ী মাটির ঘরের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে আদিম আবাসন রীতির নানা প্রাকৃতিক সুবিধা, যা ইট বা টিনের তৈরি আবাসনের তুলনায় অবশ্যই উত্তম। কালো মাটির ঘরেই লুকিয়ে আছে শ্যামল সুখের ধরা। হয়তবা এ কথাটি মনে করেই কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ তার পুজা গানে বলেছেন-
এই-যে কালো মাটির বাসা শ্যামল সুখের ধরা--
এইখানেতে আঁধার-আলোয় স্বপন-মাঝে চরা ॥
এরই গোপন হৃদয় 'পরে ব্যথার স্বর্গ বিরাজ করে
দু:খে-আলো-করা ।।

পৃথিবীর বেশীরভাগ মানুষ তথা মুসলমান, খ্রিস্টান ও ইহুদীদের মৃতদেহ মাটির ঘর কবরেই দাফন করা হয়। মাটির ঘরই তার শেষ আশ্রয়স্থল । যে ঈমানদারীর সহিত ভাল আমল করে যেতে পারবে তার চীর নিদ্রার জন্য শয়ন কক্ষের মাটির ঘরটি ততই সুন্দর ও ভাল থাকবে ,সেরকম মাটির ঘরেই তখন মনে হবে স্বর্গ বিরাজ করে ।
ছবি - ১০ : চীর শয়নের জন্য মাটি কেটে একটি কবর তৈরীর ছবি (সুত্র গুগলের পাবলিক ডোমেইন হতে )

সামু ব্লগ বাড়ীটিকে কিভাবে আরো সুন্দর ও উন্নত করা যায় তা নিয়ে আমরা সকলেই বেশ সচেতন। সামু ব্লগবাড়ীকে সুন্দর ও উন্নত করার বিষয়টি বেশ গুরুত্বপুর্ণ তাতে কোন সন্দেহ নেই। সেকারণে এতদসংক্রান্ত গুরুত্বপুর্ণ পোষ্টগুলি বিশেষ নির্বাচিত পাতায় কিংবা স্টিকি হয়ে ঝুলে ঝুলে থাকে বেশ কিছুদিন। এ জন্য সামুকে সাধূবাদ জানাই । অন্যদিকে আমাদের দেশের ঐতিহ্যময় মাটির বাড়ীঘর যে হারিয়ে যাচ্ছে কালের গর্ভে সে বিষয়ে সামুর ব্লগার সহ পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষনের লক্ষে আলোচনার সুযোগটি অবারিত রাখার জন্যও সামুর প্রতি কৃতজ্ঞতার সীমা নেই ।তবে কথা উঠতে পারে বর্তমানে জীবনঘাতি করুনাভাইরাসের কারণে জনজীবন যেখানে বিপর্যস্ত সেখানে এই জরাজীর্ণ সাধারণ মাটির ঘর নিয়ে ভাবনার সময় কোথায় । একথায় যুক্তি আছে, তবে মহামারী করোনার হাত হতে হয়ত আমরা রক্ষা পাব অচীরেই, অপেক্ষায় আছি শুধু একটি পরশ পাথর প্রাপ্তি তথা কার্যকরী করোনা ভেকসিন আবিস্কারের দিকে। এই পরশ পাথর সন্ধানের বিষয়টিও বিস্তারিতভাবে উঠে আসবে এ লেখাটির কোন এক পর্বে। কিন্তু ইতোমধ্যে দেশের গ্রামাঞ্চলে যে হারে ইটের তৈরী ঘরবাড়ী তৈরী হচ্ছে ও সেই ইটের যোগান দেয়ার জন্য যত্র তত্র অপরিকল্পিত ভাবে ইটভাটা গড়ে উঠছে তার ভয়াবহ পরিনতির কথা ভেবে আতংকিত না হয়ে পারা যায় না ।
ছবি- ১১ : গ্রামাঞ্চলে গড়ে উঠা পরিবেশ দুশনকারী ইটভাটা

ইট পোড়ানোর জন্য বিপুল পরিমান পাকৃতিক গাছপালা জ্বালানী হিসাবে ব্যাবহারের ফলে বিপুল পরিমান জৈব পাকৃতিক সম্পদের অপচয়ের পাশাপাশি ইটভাটার কালো ধোয়ায় এলাকার জীববৈচিত্র বিপন্ন হওয়াসহ জনস্বাস্থের জন্য সুদুর প্রসারী স্থায়ী ক্ষতির পরিমান বহুলাংশে বেড়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই ইটভাটার কালো ধোয়ার প্রভাবে গ্রামীন এলাকার আম কাঠালসহ বিভিন্ন গাছের ফলন কমে যাচ্ছে।
শুধু গ্রমাঞ্চলইবা কেন শহড়াঞ্চলের উপকন্ঠে থাকা ইটভাটাগুলিও পরিবেশ ও জনস্বাস্থের উপর মারাত্বক বিপর্যয় সৃস্টি করে চলেছে ক্রমাগতভাবে ।
ছবি- ১২ : শহড়াঞ্চলে গড়ে উঠা পরিবেশ দুশনকারী ইটভাটা

এখানেই শেষ নয়, আমরা সকলেই জানি বর্তমানে ব্যবহৃত নির্মাণ উপকরণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত উপকরণ হলো ‘ইট’। ইট মানেই ইটভাটায় পুড়িয়ে প্রস্তুত করা নির্মাণসামগ্রী। বাংলাদেশে সনাতনী ও আধুনিক অটোমেটিক ইটের কারখানাসহ সব জায়গাতেই কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে উর্বর মাটি ব্যবহারে কৃষি জমি নষ্টের পাশাপাশি জ্বালানি কাঠের ব্যবহারে বন উজাড় এবং কয়লা ও গ্যাসের ব্যবহারেও জাতীয় সম্পদের অপচয় হচ্ছে। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, বাংলাদেশ প্রতিবছর শতকরা এক ভাগ কৃষি জমি হারাচ্ছে, যার দ্বিতীয় প্রধান কারণ, ইটের কাঁচামাল ও ইটের ভাটা। এই ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরেই খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হবে। বিভিন্ন সমীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রতিবছর কমবেশি দুই হাজার পাঁচশ কোটি ইট তৈরি হচ্ছে। এই ইট তৈরিতে প্রতি বছর ১৮ হাজার হেক্টর কৃষিজমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে ( এখানে অবশ্য কথা উঠতে পারে মাটির ঘরের জন্যওতো ফসলের মাটি ব্যবহার হবে। এক্ষেত্রে বলা যায় মাটির ঘরের জন্য কৃষকের বাড়ীর পাশে গর্ত করে যে মাটি তুলে নেয়া হবে সে সকল গর্ত বা খাদে কৃষক/ভুমি মালিক মাছের চাষ করতে পারে । অন্যথায় খুব কম সময়ের মধ্যেই এইসব ছোট গর্ত বৃস্টি ধোয়া মাটি বা গৃহস্থালী আর্জনায় ভরে যাবে)। তাই মাটির ঘরের জন্য ব্যবহৃত উর্বর ফসলী জমির মাটি ক্ষয়ের তুলনায় ইটভাটার ক্ষতির পরিমান অনেক বেশী । অপর দিকে প্রায় ৮০ লাখ টন কাঠ ও কয়লা পুড়ছে ইটভাটার জন্য যা থেকে পরিবেশে আনুমানিক ২ কোটি টন কার্বন নির্গত হচ্ছে।পরিবেশ অধিদপ্তরের এক সমীক্ষায় দেখা যায় রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণের উপকরনের শতকরা ৫৮ ভাগই আসে ঢাকা শহরের আশপাশের প্রায় ১২০০ ইটের ভাটা থেকে, যা শুধু ঢাকা শহরেই প্রতিবছর কমবেশি ১২৫০ জন শিশুর মৃত্যুর কারণ বলে মনে করা হয়(সুত্র : Click This Link) ।

এমতাবস্থায় নির্মাণ উপকরণ হিসেবে ইটকে কোনো বিবেচনাতেই ভালো উপকরণ বলা যায় না।ইটের বিকল্প হিসাবে ইদানিং কংক্রিট ব্লকের দিকে জোকে পরার প্রবনতা দেখা যাচ্ছে । সিমেন্ট, বালু ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ৪/৫ মিলি মিটার সাইজের পাথরের কণা বা ডাস্ট সমন্বয়ে কংক্রিটের ব্লক তৈরি করা হচ্ছে ।ম্যানুয়েল, মেকানিক্যাল বা হাইড্রোলিক মেশিন ব্যবহার করে এই ব্লক তৈরি করা যায়। পরিবেশ বান্ধব পাকা ঘর বিশেষ করে বহুতল বাড়ী ঘর/ভবন নির্মানের জন্য এই কংক্রিটের ব্লক একটি বিকল্প হতে পারে । তবে সম্পুর্ণ দেশীয় উকরণ মাটি ও গাছ পালা দিয়ে যেখানে গ্রামীন বাংলায় সুলভে মাটির ঘর নির্মান করা যায় সেখানে কংক্রিটের ব্লক ব্যাবহার যথেষ্ট ব্যয় বহুল হবে।গ্রামীন দরিদ্র জনগন এটা এফর্ড করতে পারবেনা ।
ছবি-১৩: কংক্রিটের ব্লক তৈরী করে এমন একটি প্লান্টের ছবি

বিবিধ কারণে ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি বাড়িঘর এদেশ হতে ক্রমেই বিলীন হতেছে । মাটির তৈরি ঘর নির্মাণের কারিগর যারা র্দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় দক্ষতা অর্জন করেছিলেন তারা নতুন ঘর নির্মাণ না হওয়ায় যেমনি নিরুৎসাহিত হচ্ছেন, তেমনি নতুন কারিগরও গড়ে উঠছে না। তাই ইদানিং দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা যথা ব্রাক (BRAC) এবং ব্যক্তি উদ্যোগে গড়া দুএকটি এনজিও সংগঠন দেশের বিভিন্ন স্থানে দৃষ্টিনন্দন কিছু মাটির ঘর তৈরীতে সহায়তা করছেন । সরকারী পর্যায়ে কি করা হয়ছে ও কি করা যেতো কিংবা এখনোবা কি করা যায় সে বিষয়গুলি একটু পরেই এ পোষ্টের লেখায় উঠে আসবে । ইত্যবসরে বেসরকারী পর্যায়ে কি করা হচ্ছে তার কিছু দৃশ্য দেখে নেয়া যাক ।
ছবি- ১৪: মাটির তৈরী দীপশিখার মেটি স্কুল : স্থপতি আনা হারিঙ্গার একটি অনন্য সৃষ্টি

ছবি-১৫: বাঁশের খুটিতে টানা দেয়া মাটির তৈরী দীপশিখার মেটি স্কুলের একটি নান্দনিক দৃশ্য

দীপশিখা মেটি স্কুলটি দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার মঙ্গলপুর ইউনিয়নের রুদ্রাপুর গ্রামে অবস্থিত। ২০০৫ সালে রুদ্রাপুর গ্রামে মেটির মাটির স্কুলঘর নির্মাণ শুরু হয়। জার্মানির এক দাতাসংস্থা একাজে অর্থায়ন করে। অস্ট্রিয়ার লিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থী ও দীপশিখা প্রকল্পের কর্মীরা ইমারতটি নির্মাণের সাথে যুক্ত ছিলেন। জার্মান স্থপতি অ্যানা হেরিঙ্গার ও এইকে রোওয়ার্গ এই ইমারতটির নকশা করেন। ইমারতটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে মাটি, খড়, বালু , বাঁশ, দড়ি, খড়, কাঠ, টিন, রড, ইট ও সিমেন্ট। মাটি ও খড় মেশানো কাদা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এর দেয়াল । মাটির তৈরি স্কুলঘরের এই দোতলা ভবনটির আয়তন ৮,০০০ বর্গফুট, নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৭ লাখ টাকা। প্রতি বর্গফুটে খরচ হয়েছে ২১২ টাকা ।২০০৭ সালে বিদ্যালয়টির ভবন আগা খান ফাউন্ডেশনের সেরা স্থাপত্য পুরস্কার ও এর স্থপতি কারি স্টোন নকশা পুরস্কার জিতেছেন।

এছাড়াও ঢাকার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ আর্কিটেকচারের ৮ জন শিক্ষার্থী সেসাথে অস্ট্রিয়ার লিনজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য শিল্পকলা বিভাগের ৫ জন শিক্ষার্থী দীপশিখা প্লকল্পের আওতায় দিনাজপুরের মেটি মাটির স্কুলের উন্নতমানের মাটির ঘর নির্মানের কারিগরী কলাকৌশলের ধারাবাহিকতায় ওখানকার প্রত্যন্ত গ্রাম রুদ্রাপুরে স্থানীয় কারিগরদের সাথে যৌথভাবে টেকসই আধুনিক স্থাপত্য ডিজাইনের পারিবারিক মাটির ঘরও নির্মান করেছেন। উপযুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক, কারিগরী ও আর্থিক সহায়তা পেলে উন্নত মানের দৃষ্টি নন্দন দোতলা মাটির ঘর যে নির্মান করা যায় তারও একটি সফল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন অস্ট্রিয়ার লিনজ বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীগন । উন্নতমানের মাটির ঘর তৈরীতে তাঁদের উদ্ভাবিত মডেলটি সারা দেশে সম্প্রসারিত করা যায় । নীচে তাঁদের তৈরীকৃত একটি পারিবারিক দোতলা মাটির ঘরের ছবি দেখনো হল।
ছবি-১৬:ব্র্যাক ও লিনজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের সহযোগীতায় নির্মিত একটি দোতলা পারিবারিক মাটির ঘর

ছবি-১৭ : ব্র্যাকের সহায়তায় নির্মিত দোতলা মাটির ঘরের একটি ছবি (সুত্র : গুগল ইমেজের পাবলিক ডোমেইন


মাটির ঘরের উন্নয়নে বৈদেশিক কিছু কর্মসুচীর উদাহরন

এখানে প্রসঙ্গক্রমে গ্রামীন চীনে উন্নত মানের মাটির ঘর নির্মাণ (Building with Earth) প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় কারিগরদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কিছু তথ্য চিত্র কথা তুলে ধরা হলো । চীনের গ্রামাঞ্চলের লোকেরা কয়েক হাজার বছর ধরে মাটির ঘরে বাস করে আসছে । দেশটিতে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি এবং দ্রুত নগরায়ণের ফলে কংক্রিট এবং ইটের নকশার কৌশলের কাছে ট্রেডিশনাল ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘরের মান্দাতা আমলের ট্রেডিশনাল নির্মাণ কৌশল বিদুরিত হয়ে বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছিল । মাটির ঘরগুলি গ্রামীণ দারিদ্র্যের প্রতীক হয়ে উঠে এবং মাটির ঘর তৈরীর কারিগর সম্প্রদায়ের দক্ষতা ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছিল। যেমনটা বাংলাদেশেও ঘটছে ।
ছবি- ১৮: চীনে বিলপ্তপ্রায় ঐতিহ্যমন্ডিত মাটির ঘরের একটি ছবি

এমনি এক যুগ সন্ধিক্ষনে বিলুপ্তপ্রায় মাটির গৃহকে পুলরুজ্জীবিত করার জন্য Wu Zhi Qiao Charitable Foundation (WZQCF) নামে একটি চাইনীজ সংগঠন এগিয়ে আসে।তারা Building with Earth নামক একটি প্রকল্পের আওতায় মাটির ঘর তৈরীর কাজে নিয়োজিত স্থানীয় কারিগরদেরকে ব্যয় শাস্রয়ী টেকসই ও ভুমিকম্প প্রতিরোধি আকর্ষনীয় মাটির ঘর নির্মানের বিষয়ে প্রশিক্ষন দিয়ে দক্ষ কারিগর হিসাবে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষন কর্মসুচী বাস্তবায়ন করে ।

চীনের গ্যানসু প্রদেশের মাঞ্চা ভিলেজে ২০১১ সালে একটি মাটির ঘরের ভিলেজ সেন্টার তৈরিসহ ৩২ টি প্রোটোটাইপ মাটির ঘরের বাড়ী নির্মাণের মাধ্যমে প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় । প্রকল্পটির আওতায় স্থানীয় কারিগরদেরকে শক্ত টিকসই ও দৃষ্টিনন্দন মাটির ঘর নির্মাণ কৌশল গুলির উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয় ।
ছবি-১৯: চীনে গ্রামীন মাটির ঘর নির্মানকারী কারিগরদেরকে ব্যবহারিক প্রশিক্ষন দেয়ার দৃশ্য

ছবি -২০ : চীনের মাঞ্চায় ও পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে নতুন মাটির ঘরবাড়ি তৈরি করে তাদের অর্থ উপার্জনের সুযোগ করে দেযার দৃশ্য

ছবি-২১ : প্রকল্পের আওতায় মাটির তৈরী ভবনে ভিলেজ সেন্টার তৈরীর দৃশ্য

দারিদ্রের প্রতীক আর নয়, মাটির ঘরগুলি তাদের সমস্যা সমাধানের অংশ হয়ে উঠছে।
মাঞ্চা গ্রামে শুরু হওয়া প্রকল্পের সাফল্যের মডেলটি অল্প সময়ের মধ্যেই চীনের আরো ১৭ টি প্রদেশের ২৩ টি বিভিন্ন অঞ্চলে প্রসারিত হয়েছে।
প্রকল্পটির তার সাফল্যের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১৯ সনে world-habitat-award অর্জন করে।

এখানে প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে বাংলাদেশে গৃহহীন পরিবারসমূহকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে “আশ্রয়ণ” নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিন (০৩) টি ফেইজে আশ্রয়ণ প্রকল্প (৯১৯৭ - ২০০২), আশ্রয়ণ প্রকল্প (ফেইজ – ২) (২০০২ - ২০১০), আশ্রয়ণ – ২ প্রকল্প (২০১০ - ২০১৯) মোট ২,৯৮,২৪৯টি পরিবার পুনর্বাসন করা হয়, তন্মধ্যে আশ্রয়ণ – ২ প্রকল্পের মাধ্যমে ১,৯২,৩৩৬টি পরিবার পুনর্বাসন করা হয়েছে। বর্ণিত প্রকল্পের সাফল্য ও ধারাবাহিকতায় ২০১০-২০১৯ (সংশোধিত) মেয়াদে ২.৫০ লক্ষ ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে সুত্র : http://www.ashrayanpmo.gov.bd/
গৃহহীন পরিবারদের জন্য নিন্মের ছবির মত গৃহ তৈরী কেরে দেয়া হয়েছে । চিত্র দুটিতে দেখা যায় বিভিন্ন স্থানে তাদের জন্য যে গৃহ নির্মান করে দেয়া হয়েছে তা মুলত ইটের তৈরী পাকা ঘর ও টিনের ঘর। একথা অবশ্য অস্বীকার করার উপাই নেই যে উপকূলীয় বাসিন্দাদের কাছে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, দুর্যোগের কারনে নির্বাসনই যখন খোলা আকাশের নীচে বাধের উপর পুর্ণবাসন, তখন তাদের জন্য ইটের তৈরী মজবুত গৃহ নির্মানের বিকল্প নেই ।
ছবি-২২ : নির্বাসনই যাদের পুর্ণবাসন

এমতাবস্থায় আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় গৃহহীনদের জন্য ইটের গৃহ কিংবা টিনের ঘর নির্মান অবশ্যই প্রসংসার যোগ্য ।
ছবি -২৩ : আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় গৃহহীনদের জন্য প্রকল্প

তবে প্রকল্পটি প্রনয়নের সময়ে প্রকল্পের পরিকল্পনাবিদ ও স্থপতিবিদগন যদি দেশে বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘরকে নতুন প্রাণ দেয়ার লক্ষ্যে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কিংবা এনজিওদের প্রচেষ্টায় যেভাবে পরিবেশ বান্ধব দেশীয় উককরণ দিয়ে টিকসই দৃষ্টিনন্দন মাটির ঘর নির্মানের মডেল তৈরী করা হয়েছে তা একটু আমলে নিয়ে যথাযথ পর্যবেক্ষন, পরিক্ষন ও মুল্যায়ন করে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় দেশের সম্ভাবনাময় স্থান সমুহে( বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে)কিছু টিকসই মাটির ঘর তৈরী করে গৃহায়নের ব্যবস্থা করতেন তাহলে সরকারীভাবে বিলুপ্তপ্রায় মাটির ঘর কে শুধু পূণরুজ্জীবিতই নয় এর বিকাশও করতে পারতেন তরান্বিত।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য প্রায় ৩৩ বছর আগে তৈরী নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের আলিপুর গ্রামে রয়েছে ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মিত ১০৮ কক্ষের বিশাল একটি মাটির বাড়ী । বিশাল এই বাড়িটির দৈর্ঘ্য ৩০০ ফুট এবং প্রস্থ ১০০ ফুট।পায়ে হেঁটে একবার বাড়ির চার ধারে ঘুরে আসতে সময় লাগে ৭-৮ মিনিট।
"প্রতিদিন দুর-দূরান্ত থেকে এ বাড়িটি দেখার জন্য লোকের সমাগম ঘটে।এখানে ক্লিক করে ১০৮ কক্ষের মাটির তৈরী বাড়ীটিদেখে আসতে পারেন ।
ছবি-২৪ : ১০৮ কক্ষের মাটির তৈরী বাড়ী

এরকম বাড়ীর আদলেও আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীনদের জন্য উন্নত মানের টিকসই ও ব্যয়সাস্রয়ী পরিবেশ বান্ধব মাটির ঘর নির্মান করে বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘরকে পুনরুজ্জীবিত করা যেতে পারতো।যাহোক, কি আর করা ,খনার বিখ্যাত বচনের কথাই মনে পরে গতস্য শোচনা নাস্তি .অর্থাত যা চলে গেছে তার জন্য অনুশোচনা করতে নেই। তবে তাই বলে কি আর হয়, দেখা যায় আশ্রয়ন প্রকল্প চলমান আছে এখনো। গত ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ তরিখে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) কতৃক ৩ হাজার ৯৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ ব্যয় আশ্রয়ন-৩ (১ম সংশোধিত) চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে( Click This Link )। প্রকল্পটির উপর সাংবাদিকদেরকে ব্রিফিংকালে পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানাধীন চর ঈশ্বর ইউনিয়নের ভাসানচরে এক লাখ বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের নাগরিকদের বসবাসের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও বনায়ন করা এবং দ্বীপটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা।ইতোমধ্যে প্রকল্টির আওতায় ভাষান চরে এক লাখ রোহিঙ্গা উদ্ধাস্তুকে আশ্রয় দানের জন্য নিন্মের দৃশ্যের মত পুর্ত নির্মান কাজ করা হয়েছে । একথা সত্য যে সামুদ্রিক ঝড় জঞ্ঝা জলোচ্ছাস ঘুর্ণীঝরের ঝুকির মুখে থাকা ভাষান চরের মত জায়গায় এরকম পাকা ঘর নির্মানের বিকল্প নেই। তবে মাটির ঘর উযযোগী উপযুক্ত স্থানে আশ্রয়ন প্রকল্প -৩ এর আওতায় কিছু সুন্দর সুন্দর মাটির ঘর তৈরীর সুযোগ একটা আমরা হারিয়েছি!
ছবি-২৫ : ভাষান চরে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত আশ্রয় কেন্দ্র

ধারনা করি দেশের বিভিন্ন স্থানে লক্ষ লক্ষ গৃহহীনদেরকে গৃহদান করার জন্য আশ্রয়ন প্রকল্প- ৪, আশ্রয়ন প্রকল্প- ৫ ইত্যাকার নামে প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়তবা চলতেই থাকবে ।তাই অতীতে বার বার আমরা সুযোগ হারালেও ভবিষ্যতের আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও অস্ট্রিয়ার লিনজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ব্র্যাক ও দীপশিখার মত এনজিও সংগঠনের মাটির ঘর প্রকল্প, এবং বিদেশী যথা চীনের মাটির ঘর পুনরুজ্জীবন তথা Building with Earth এর মত প্রকল্প/ কর্মসুচীর সফল অভিজ্ঞতার আলোকে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় সরকারী পর্যায়ে ব্যয়সাস্রয়ী ও পরিবেশ বান্ধব মাটির ঘর নির্মানের কর্মসুচী নেয়া যেতে পারে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন সমাজের হতদরিদ্র, তৃণমুল , ঝরঝঞ্জা ও নদীভাঙ্গন কবলিত গৃহহীন মানুষদের জন্য গৃহায়নের সুযোগ সৃস্টি হতে পারে অপরদিকে বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘরকে পুণরুজ্জীবিত করা যেতে পারে ।

সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগ ও ব্যক্তি পর্যায়ে মাটির ঘরকে পুরুজ্জীবিত করার লক্ষে কতিপয় প্রস্তাবনা

সরকারী উদ্যোগ

মোট ২৪ পৃষ্ঠায় লিখিত জাতীয় গৃহায়ন নীতিমালা ২০১৬ এর মুখবন্ধে বলা হয়েছে সমসাময়িক গবেষণা ও প্রকাশনা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের নগর এলাকায় ২০১৫ সাল নাগাদ ১ কোটি ইউনিট গৃহের প্রয়োজন হবে এবং পরবর্তীতে প্রতি বছরে অন্তত ১০ লাখ ইউনিট করে নতুন গৃহ নির্মাণের প্রয়োজন পড়বে । সে হিসাবে ২০২০ এসে দেশে প্রায় ১.৫০ কোটি ইউনিট গৃহের প্রয়োজন আর এর সিংহভাগই প্রয়োজন হবে শহড়াঞ্চলে। শহড়াঞ্চলে যে আর কোন কালেই কাঁচা মাটির ঘর তৈরী হবেনা সেকথা হলফ করে বলা যায়। হেলে পড়ুক ,ধ্বসে পড়ুক কিংবা আগুনে পুড়ে মরুক তারপরেও অবস্থা দৃষ্টে দেখা যায় শহড়াঞ্চলে এমনকি সেখানকার ২/১কাঠা জমির উপরেও আকাশচুম্বী পাকা দালান কোঠা নির্মানকে কেও কোনমতেই ঠেকিয়ে রাখতে পারবেনা।তাই ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘরকে কার্যকরীভাবে পুণরুজ্জীবিত করতে হলে দৃষ্টি দিতে হবে গ্রামীণ এলাকার দিকেই ।

জাতীয় গৃহায়ন নীতিমালা ২০১৬ তে বর্ণিত তথ্য মতে দেশের শতকরা ৭২ ভাগ লোক গ্রামাঞ্চলে বসবাস করেন এবং মোট গৃহের শতকরা ৮১ ভাগ গ্রামে অবস্থিত । গ্রামীণ জনগণ সাধারণত নিজেদের উদ্যোগে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে আসছেন । প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় এলাকায় কিছু ঘরবাড়ি ও আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ এবং উপকরণাদি সাহায্য হিসেবে বিতরন করার মাধ্যমেই সরকারি উদ্যোগ সীমাবদ্ধ রয়েছে । জাতীয় গৃহায়ন নীতিমালা ২০১৬ পুস্তিকায় দেখা যায় নীতিমালার সিংহভাগ জুড়েই রয়েছে শহড়াঞ্চলের গৃহায়ন সংক্রান্ত কথামালা । জাতীয় গৃহায়ন নীতিমালা অবশ্য গ্রামীণ এলাকায় শুধু করা হবে করা হবে মর্মে গতবাধা কিছু কথামালা রয়েছে। গ্রামীন গৃহায়নের বিষয়ে গতবাধা কথামালার মধ্যে বিশেষ প্রনিধানযোগ্য চুম্বক কথাগুলি নিন্মরূপ:

ধারা ৪.৫.১: গ্রামীণ জনগণের জন্য উপযুক্ত নির্মাণ উপকরণ সহজলভ্য করা হবে একইসাথে পরিবেশ সংরক্ষণে অবাধ বৃক্ষ নিধন ইট-ভাটার জ্বালানি ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ধারা ৪.৫.২ : দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনে পরিবেশ বান্ধব ও ব্যয় সাশ্রয়ী মজবুত ও উপযোগী নির্মাণ পদ্ধতি উদ্ভাবন এবং বাজারজাতকরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ধারা ৪.৫.৪ : সকল এলাকায় ও সর্বস্তরের বিশেষ করে নিম্নবিত্ত এবং দুর্গত জনগণ যাতে প্রাথমিক নির্মাণসামগ্রী ও ইমারত নিজেরাই অনেকাংশে তৈরি করতে পারে সেজন্য কারিগরি দিক নির্দেশিকা মুলক পুস্তিকা ও উপযুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক কর্মশালার ব্যবস্থা করা হবে।
ধারা ৪.৫.৭ : গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কৃষি ও শিল্প খাতের বর্জ্যকে লাগসই প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নির্মাণ উপকরণ তৈরি ও তা ব্যবহারে উৎসাহিত করা হবে।
ধারা ৪.৮.৫: গ্রামীণ জনগণের গৃহ নির্মাণ, মেরামত, পরিবর্তন, পরিবর্ধন , প্রয়োজনে বিনাসুদে ও সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে।
ধারা ৪.১১.৯: ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন প্রকারের গৃহ নির্মাণ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড বি এন বি সি ( BNBC) এর যথাযথ অনুসরণ নিশ্চিত করাসহ গৃহায়ন নীতিমালা, ভূমি ব্যবহার নীতিমালা ইত্যাদি প্রয়োগের জন্য আইনগত বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করা হবে।

এমতাবস্থায় গ্রামীণ এলাকায় মাটির ঘর পুনরুজ্জীবনের জন্য সরকারকে নতুন করে কিছুই আর ভাবতে হবেনা,শুধু নীতিমালায় বর্ণিত ‘হবে’ কথাগুলিকে কঠোরভাবে আন্তরিকতার সাথে বাস্তবায়ন করতে হবে । তাহলে মাটির ঘরকে পুনরুজ্জীবনের জন্য যা করার তা বেসরকারী পর্যায়ে ব্যক্তি উদ্যোগেই করা সম্ভব হবে।

খ) বেসরকারী ও ব্যক্তি উদ্যোগ

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলেই মাটির ঘরের প্রচলন বেশী।ইদানিং শহরাঞ্চলে বসবাসকারী দেশের বিত্তশালী এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা প্রায় কোটি খানেক প্রবাসী বঙ্গসম্তান শিকরের টানে গ্রামাঞ্চলে তাঁদের পৈত্রিক নিবাসে বেশ সৌখীন বাড়ীঘর নির্মান করছেন ।তাঁদেরকে ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর নির্মানে আগ্রহী করার জন্য যদি জাতীয় গৃহায়ন নীতিমালা ২০১৬ এর আলোকে যথোপযুক্ত কর্মসুচী গ্রহণ ও প্রনোদনা দেয়া যায় তাহলে তাঁরা নিন্মের বর্ণনা ও ছবি অনুযায়ী প্রেজটিজিয়াস ও সৌখীন মাটির ঘর নির্মানে উৎসাহী হবেন বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

এটা অনস্বীকর্য যে আমাদের দেশের সামর্থবান বেশিরভাগ মানুষই সকলপ্রকার আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন একটি বিলাসবহুল আবাস খুঁজছেন, । ধীরে ধীরে এই প্রবণতা অফ-গ্রিডের জীবনযাত্রার (off the grid” refers to living autonomously without reliance on a utility for power) দিকে ধাবিত হচ্ছে। টেকসই জীবনযাত্রার দিকে ধাবিত হওয়ার সময় তাঁরা শক্তি-দক্ষ (energy-efficient ও ব্যয়সাস্রয়ী বিকল্পগুলি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিবেন এটাই স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে তাঁরা নান্দনিকভাবে আনন্দদায়ক এবং ব্যয়সাস্রয়ী বিভিন্ন ধরনের মাটির ঘর নির্মাণের বিষয়টি গুরুত্বের সাথেই ভেবে দেখবেন বলে আশা করা যায়।

মাটির ঘরের পুনরুজ্জীবনের জন্য বেসরকারী পর্যায়ে বাস্তবায়ন যোগ্য কিছু পদ্ধতি

১) সনাতনী কাদামাটির ঘর : এ বিষয়ে পোষ্টে বর্ণীত বিবরণ ও ছবিতে দেখানো কাদামাটির ঘরের মডেলের আদলে মাটির গৃহ নির্মানের জন্য অনুপ্রাণিত করা যেতে পারে ।

২) নিন্মের বিবরন ও ছবিতে দেখানো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুসৃত পদ্ধতি যথা কব- হাউস( Cob –House ) , পিটানো মাটির (Rammed earth) ঘর , চাপানু মাটির ব্লকের ঘর compressed earth block (CEB), মাটিশ্রয় কাঠামোর ঘর (earth sheltered house) প্রভৃতি ধরনের মাটির ঘর নির্মান করা যেতে পারে । নীচে এদের সচিত্র কিছু বিবরণ দেয়া হল :

কব- হাউস ( Cob –House ) জাতীয় মাটির ঘর

কব- হাউজগুলি মাটি, বালি এবং খড়ের মিশ্রণে তৈরী ।একারণে ইট বালু এবং কংক্রিটের সংমিশ্রনে তৈরী ঘরের তুলনায় কব-হাউজগুলি অনেক বেশী পরিবেশ বান্ধব ঘর ।কব-হাউজের স্থায়িত্বতা প্রসঙ্গে কারো মনে যদি কোন সন্দেহ থাকে, তবে তার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে ইজরাইলে খননকৃত পুরার্কিত্তির মধ্যে প্রায় ১০০০০ বছর আগেকার গৃহের একটি সন্ধান পাওয়া গেছে যার মধ্যে এখনও কব-হাউজে ব্যবহারের মত মাটির উপাদানগুলির অস্তিত্ব বিদ্যমান রয়েছে বলে দাবী করা হয়েছে।
ছবি-২৬: A 10,000-year-old house uncovered outside of Jerusalem

কব-হাউজ নির্মাণ পর্ব ও এর কিছু সুন্দর মডেল দেখার আগে, আসুন এটির নির্মাণের সুবিধাগুলি একবার দেখে নিই।

কব- হাউজ নির্মানের সুবিধা সমুহ

১) গৃহ নির্মান ব্যয় কম
২) স্বাস্থ্যকর গৃহাভ্যন্তর
৩) এনার্জি ইফিসিয়েন্ট
৪) দীর্ঘ স্থায়ী এবং ভুমিকম্প প্রতিরোধক
৫) সয়ংক্রীয় শীতাতপ ক্ষমতা সম্পন্ন
৬) উই পোকা, ঘুন ও ফায়ার প্রুফ
৭) শব্দ নিরোধক
ছবি-২৭ : একটি কব-হাউজ এর নির্মাণ পর্ব

ছবি-২৮ : যুক্তরাজ্যের ঈষ্ট ডেভনে অবস্থিত একটি গ্রান্ড ডিজাইন কব-হাউজের ছবি

ছবি-২৯ : পরিবেশ বান্ধব ও টিকসই একটি ছোট কব-হাউজ এর ছবি

বি-৩০ : একটি কব-হাইজের বসার ঘরের ইন্টেরিয়র ডিজাইন

ছবি -৩১ : একটি কব-হাইজের শয়ন কক্ষের ইন্টেরিয়র ডিজাইন

ছবি- ৩২ : একটি কব-হাইজের রান্নাঘরের ইন্টেরিয়র ডিজাইন

উল্লেখ্য যে জার্মানির মতো অত্যাধুনিক একটি দেশের মানুষজনও খর কুটা দিয়ে তৈরি ঘরে বসবাস শুরু করেছে। মাটি, কাদা, খড় এর মত সহজলভ্য উপকরণ কাজে লাগিয়ে আধুনিক বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে জার্মানিতে। প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতেই এই বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ছবি-৩৩ : জার্মানিতে খর কুটা ও মাটির তৈরী বাড়ি

ছবি-৩৪ : মাটির দেয়াল ও খড়ের ছাদ বিশিষ্ট দোতলা বাড়ি


পিটানু মাটির (Rammed earth) ঘর

পিটানু মাটি, যা পর্তুগিজ ভাষায় তাইপা , স্পেনীয় ভাষায় টপিয়াল বা টপিয়া, ফরাসি ভাষায় পিসা (ডি টেরি) এবং চীনা ভাষায় হংটি নামে পরিচিত, প্রাকৃতিক কাঁচামাল ব্যবহার করে ভিত্তি, মেঝে এবং দেয়াল নির্মাণের কৌশল । পাকৃতিক উপকরণ যথা মাটি , খড়ি, চুন বা পাথরের নুড়ি প্রভৃতি উপকরন এতে ব্যবহৃত হয় । এটি একটি প্রাচীন পদ্ধতি যা টেকসই বিল্ডিং পদ্ধতি হিসাবে সম্প্রতি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
পিটানু মাটির ব্লক তৈরির সময় মাটির ভিজা মিশ্রণটির মধ্যে বালি, নুড়ি, কাদামাটি এবং স্ট্যাবিলাইজার (চুন ) উপযুক্ত অনুপাতে মিশানো হয় ।ব্লকগুলি তৈরীর সময় নিন্মরূপভাবে ফ্রেম বা ছাঁচ ব্যবহার করা হয় ।
বি- ৩৫ : ভিত্তির উপর দাঁড়ানো ফ্রেম বা ছাঁচের ভিতর পিটানু মাটির দেয়াল তোলার সনাতনী মডেলের দৃশ্য

ছবি- ৩৬ : ভিয়েতনামের সাবট্রপিক্যল জলবায়ুতে একটি সাধারণ পিটানু মাটির ব্লকের বাড়ি তৈরির কৌশল
ছবি-৩৭: পিটনু মাটির ব্লকে তৈরী চীনের মহাপ্রাচীরের একটি অংশের ছবি ছবি

ছবি- ৩৮ : পিটানু মাটিরতৈরী ব্লকে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার Osoyoos এ Nk'Mip Desert সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটির দেয়ালের ছবি
ছবি- ৩৯ : স্পেনের প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকায় নির্মিত একটি পিটানু মাটির ঘর( Rammed Earth House)

পিটানু মাটির তৈরী এই আধুনিক ডিজাইনের ঘরটি স্প্যানের প্রত্যন্ত এলাকার একটি গ্রাম আয়ার্বেতে অবস্থিত। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে এই অঞ্চলের লোকজনের গ্রামীণ এলাকা হতে শহড়ে অভিবাসনের ফলে ঐlতিহ্যবাহী সনাতনী মাটির ঘরের স্থাপত্য কৌশল অদৃশ্য হয়ে যায়। এই ঘরটি ঐ অঞ্চলের সম্প্রদায়ের আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য নির্মান করা হয় ।গৃহটি ঐ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ও সাংস্কৃতিক স্থাপত্য শৈলীর সাথে যুক্ত টেকসই ইমারত সম্পর্কে কৌতূহল জাগ্রত করার চেষ্টা করে। প্রকল্পটি পুরাতন স্থানীয় মাটির বিল্ডিংগুলির প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন , নান্দনিক ডিজাইন এবং স্থানীয় উপকরণ ব্যবহারের দিকে অনুপ্রাণিত করেছে।

চাপানু মাটির ব্লক compressed earth block (CEB)

চাপযুক্ত আর্থ ব্লক বা সংকীর্ণ মাটি ব্লক নামে পরিচিত বিল্ডিং উপাদানটি প্রাথমিকভাবে ভিজা মাটি থেকে তৈরি হয় , যাকে পরে উচ্চ চাপে সংকোচিত হয়ে ব্লকে পরিনত হয় । সংকুচিত আর্থ ব্লকগুলি মোটামুটি শুকনো অজৈব সাবসয়েল, যা প্রসারণহীন কাদামাটি এবং নির্মান সমষ্টির(বালু, নুড়ি, চূর্ণ পাথর, ছোট ছোট দানাযুক্ত কণার খনিজ উপাদান) উপযুক্ত মিশ্রণকে একটি যান্ত্রিক প্রেস ব্যবহার করে মাটির ব্লকে পরিনত করা হয় । ব্লকগুলিকে যদি কোনও রাসায়নিক বাইন্ডার যেমন পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের সাথে মিশিয়ে স্থিতিশীলতা দেয়া হয় তবে তাদেরকে সংকোচিত স্থিতিশীল আর্থ ব্লক (সিএসইবি) বা স্থিতিশীল আর্থ ব্লক (এসইবি) বলা হয়।
এধরনের কমপ্রেসড আর্থ ব্লকের সাহয্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই গৃহ নির্মান চলছে। আমাদের দেশেও কংক্রিট মাটির ব্লকের প্রচলন শুরু হয়েছে, যা এই পোষ্টের উপরের অংশে চিত্রসহকারে বর্ণিত হয়ছে।
ছবি –৪০ : টেক্সাসের মিডল্যান্ডে একটি সিইবি প্রকল্পের আওতায় কমপ্রেসড মাটির ব্লকে নির্মানাধীন একটি ঘরের ছবি


মাটিশ্রয়ী কাঠামোর ঘর (earth sheltered house)

এটি এমন একটি ঘর বা পুরা একটি বাড়ী যা মাটির দেয়ালের বিপরীতে মাটির ছাদের নীচে বা পুরোপুরি ভূগর্ভে সমাধিস্থ হয়। মাটির আবরন তাপীয় ভর হিসাবে কাজ করে, অন্দরের বায়ু তাপমাত্রা বজায় রাখা সহজ করে এবং গরম বা শীতল করার জন্য শক্তির ব্যয় হ্রাস করে। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি, বিশেষত পরিবেশবাদীদের মধ্যে মাটির নীচে আশ্রয় কাঠামোর ঘর তুলনামূলকভাবে জনপ্রিয় হয়েছিল। এ ধরনের ঘর মানুষের নীজ আশ্রয়স্থল হিসাবে মাটির উপরে ঘর তৈরীর কৌশল না শেখা পর্যন্ত প্রাচীন কাল হতেই এধরনের মাটিশ্রয়ী কাঠামোর ঘরেই তথা গুহাবসী হয়ে বসবাস করে আসছিল । ইদানিং আনবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ সমুহে যেরকম যুদ্ধের দামামা বেজে উঠছে তাতে মনে হয় আমাদেরকে এমনতর গুহাবাসীই হতে হবে! তাই এধরনের মাটিশ্রয়ী ঘর তৈরীর প্রেকটিস শুরু করে দেয়াই মনে হয় ভাল।
ছবি-৪১ : পোষ্টের প্রচ্ছদে দেখানো বাড়ীটি সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত একটি earth sheltered house

এখানে প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে দেশের বিত্তশালী অনেকেই গ্রামীন এলাকায় প্রাসাদোপম ইট বালু সিমেন্ট রডের সংমিশ্রনে বিদেশী দামী উপাদানে সৌখীন দৃষ্টিনন্দন বাড়ী তৈরী করছেন ।
এখানে ক্লিক করে দেখতে পারেন বগুড়ার-নিভৃত-গ্রামে-বহু-কোটি-টাকার-শ্বেতপাথরের প্রাসাদোপম একটি বাড়ী
ছবি- ৪২ : সিলেটে তিন শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি বাড়ী

উল্লেখ্য, 'কাজি ক্যাসল' নামে এই বাড়ীটির স্বত্বাধিকারী ব্যবসায়ী মাহতাবুর রহমান বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ড আল-হারামাইন পারফিউমস গ্রুপ অব কম্পানিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক।নীজ দেশে এমন একটি দৃষ্টি নন্দন বাড়ী তৈরীর জন্য এই সফল ব্যবসায়ীর প্রতি রইল সাধুবাদ। এইসমস্ত বিত্তশালী লোকজন যদি নীচের চিত্রের মত অথবা অন্য কোন ডিজাইনের মাটির ঘর তৈরী করেন তাহলে দেশের বিলুপ্ত প্রায় ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর পুণরুজ্জিত হতে পারে অনায়াসেই।
ছবি ৪৩:সুইস স্থপতি Peter Vetsch প্রণীত ডিজাইনে সুইজারল্যান্ডের ডিয়েটিকন সিটি উপকন্ঠে আর্থ হাউস এস্টেট ল্যাটেনস্ট্রেস


পরিশেষে বলতে চাই দেশের ঐতিহ্যমন্ডিত মাটির ঘর প্রসঙ্গে পোষ্টে বর্ণিত বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ও সম্ভাবনার বিষয়গুলিকে আমলে নিয়ে এখন সময় এসেছে বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যমন্ডিত মাটির ঘরকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে যথোপযুক্তভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দানসহ, প্রয়োজনীয় কারিগরী ও আর্থিক সহায়তা দেয়া। আর এ লক্ষ্যে প্রয়োজন বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ তাদের বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘরকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য যে সকল আধুনিক নির্মাণ কৌশল ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাটির ঘরকে ব্যয়সাস্রয়ী, টিকসই, দৃষ্টিনন্দন, বিলাসী ও পরিবেশ বান্ধব গৃহায়ন ব্যবস্থায় পর্যবেসিত করেছে তা নিবীরভাবে পর্যবেক্ষন,পরিবিক্ষন ও মুল্যায়ন করে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে যথোপযুক্ত কর্মসুচী গ্রহন করা। দেশ বাচাও,দেশের ফসলের মাটি বাঁচাও,পরিবেশ বাচাও, মানুষ বাচাও, ঐতিহ্য বাচাও, এটাই হোক আজকের দিনের দৃঢ় প্রত্যাশা। কামনা করি সর্বক্ষেত্রে সোনা ফলানো মাটিই হোক এদেশের পরশ পাথর।

এতক্ষন সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

লেখাটির পরের পর্বে আমার পরশ পাথর প্রাপ্তির পরবর্তী পর্যায়গুলি দেখার জন্য আমন্ত্রন রইল


ছবি সুত্র :কৃতজ্ঞতার সহিত পাবলিক ডোমেইনে থাকা গুগল ছবি সম্ভার
প্রাসঙ্গিক কথা ও ছবি সুত্রগুলির লিংক পোষ্টের যথাস্থানে দেয়া হয়েছে ।



মন্তব্য ১৩৩ টি রেটিং +৩২/-০

মন্তব্য (১৩৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৯

জুন বলেছেন: করোনার একই অঙ্গে এত রূপ! বিগত প্রায় ছমাস কোভিড-১৯ নিয়ে অনেক আলাপ শুনেছি, ছবি দেখেছি, খবর পড়েছি,অনেক মন্তব্য, অনেক পোষ্ট করেছি। কত কিছু! মাঝে মাঝে রোমাঞ্চকর লাগত, স্যালুট দিয়েছি তাদের যারা জীবন বাজি রেখে করোনা রুগীদের সেবা দিচ্ছে। কিন্তু যখন আমারই আপনজন, অত্যন্ত কাছের এবং স্নেহের ভাইবউ ১০ দিন ধরে কোভিডের সাথে আশা নিরাশার অসাধারণ এক যুদ্ধ শেষে মৃত্যুবরণ করল, আমার সব উপলব্ধি বিশাল এক ঝাঁকুনি খেল। সব অভিজ্ঞতাকে এক দুঃস্বপ্নে পরিণত করে দিল। অক্সিজেন,শুধুমাত্র অক্সিজেন, বাচাতেও অক্সিজেন মারতেও অক্সিজেন। জীবনের শেষ মুহূর্ত গুলো ভেন্টিলেশানের সাথে কেমন ছিল? তিন দিন আগে যখন কিছুটা ভাল, মানে সিভিয়ার থেকে ক্রিটিকাল, দুর থেকে তার স্বামী দেখতে গেলে হাতের ইশারায় সরে যেতে,পালিয়ে যেতে বলছিল, হয়ত চাইছিল তার স্বামী সন্তান যেন সঙ্ক্রামিত না হয়। যখন কাছে ডাকার কথা তখন মন চাইলেও দূরে সরে যেতে বলা, এ এক নতুন পরিস্থিতি। আচ্ছা তখন কি সে বুঝতে পেরেছিল কিছু? কীইবা ভাবছিল?। কোন দিন কেউ জানবেনা। এটাই সবচাইতে বেদনার। সবাইকে নিয়ে করোনা মৃতের সৎকার এখন কল্পনাতীত। বেচে থাকতেই মরণের বিচ্ছেদ রেখা টেনে দিতে হয়। সুতরাং মানব জাতির এই নতুন উপলব্ধি জানতে চাইলে, বুঝতে চাইলে বোধহয় শেষ থেকেই শুরু করতে হবে?
করোনায় সম্প্রতি মারা যাওয়া আমার আদরের ছোট জাকে নিয়ে আমার স্বামী লিখেছে। আপনিও করোনার মুখ থেকে ফিরে এসেছেন তাই প্রাসঙ্গিক বলে উপরে তার স্ট্যাটাসটা শেয়ার করলাম ডঃ এম এ আলী। আমি সারাক্ষণ এই কাজ সেই কাজ করি, ব্লগিং ও করি কিন্ত সবসময় আমার মনে পরে পরীর মত সুন্দরী আমার সেই ছোট বোন মাটির ঘরে কেমন করে শুয়ে আছে?
পরে আবার আসবো আপনার বাস্তবের মাটির ঘর নিয়ে বলতে।

২২ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


দোয়া করি আপনার স্নেহের ভ্রাতৃবধুকে আল্লাহ বেহেস্তবাসী করুন ।
সকল মৃত্যুই বেদনাদায়ক তবে নাগালের ভিতরে থেকেও করুনার
কারণে প্রিয়জনদের কাছ হতে বিচ্ছিন্ন থেকে দুনিয়া থেকে কারো চলে
যাওয়ার কষ্ট স্বজনদের কাছে খুবই বেদনা দায়ক । সহানুভুতি থাকল
আপনার পরিবারের সকলের প্রতি ,দোয়া করি আল্লাহ যেন শোক
ভুলার তৌফিক দেন ।

আপনার পতির মুল্যবান লেখাটি দেখার সৌভাগ্য হবে কি ?
কিভাবে দেখা যাবে জানালে বাধিত হব ।

আমার লেখাটিতে আপনার ফিরে আসার অপেক্ষায় রইলাম ।

শুভেচ্ছা রইল

২| ২২ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অসাধারণ একটি পোস্ট।

২২ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


পোষ্টটি অসাধারণ অনুভুত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছা রইল

৩| ২২ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৭

জুন বলেছেন: আমি হয়তো আপনাকে বুঝাতে পারিনি। আমার মন্তব্যের বোল্ড করা অংশটুকুই আমার স্বামীর লেখা স্ট্যাটাস যা এখানে আপনাকে কপি করেছি। আমার হাসবেন্ডকে ভীষণ সন্মান আর শ্রদ্ধা করতো মেয়েটি। কোথায় চলে গেল অল্পদিনের মাঝে ভাবতেও কষ্ট হয়।

২২ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:২০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



আপনার লেখায় কোন ভুল হয়নি বরং আমারই ভুল হয়েছে।
আমি মনে করেছি তিনি হয়ত আরো বিস্তারিত করে কিছু লিখছেন
আমি সেটাই দেখতে আগ্রহী হয়েছিলাম ।

৪| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:০০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: পোস্টখানা প্রিয়তে নিয়ে গেলাম। এখন প্রশ্ন হলো এসব মাটির ঘর কতটুকু টেকসই । কাদা বা ক্লে পানির উপস্থিতিতে সমপ্রসারিত হয় নরম হয় আবার শুকনো মৌসুমে পাথরের মত শক্ত হয়ে যায় ।টানা প্রবল বর্ষণে সেগুলো ধ্বসে গেলে সমূহ বিপদ হতে পারে। এসব বিষয়ে সন্তোষজনক দৃঢ়তা উপলব্ধ হলে তো মাটির ঘর দারুন একটা বিষয় । মাটির ঘর প্রচন্ড গরমেও যথেষ্ট আরামদায়ক হয়। আপনার সুদীর্ঘ পোস্ট খানা পড়ে সময় অপচয় হয়নি বলতে পারি। পড়ে দারুন ভালো লাগলো ।

২২ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:৩৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
পোষ্টটি প্রিয়তে নেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন ।
সেলিমভাইআপনি স্থায়িত্বতা নিয়ে ভাল প্রশ্ন করেছেন ।
দেশের অনেক স্থানেই সনাতনী পদ্ধতিতে গড়া মাটির ঘর
এমনকি দোতলা মাটির ঘর ছোটবড় ঝড় ঝাপটা বন্যাবদল
ও ভুমিকন্পের মাঝেও শতবছর ধরে টিকে আছে।
পৃথিবীর অনেক দেশই এখন পোষ্টে বর্ণিত পদ্ধতিতে
টিকসই উন্নত মনের মাটির ঘর তৈরী করছে।
আমি এখানে দেশী বিদেশী উদাহরণ টেনে শুধু
সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছি। বলেছি দেশের
বিশেযজ্ঞ পর্যায়ে বিষযটিকে গুরুত্বের সাথে
বিবেচনা করে দেখার জন্য ।

অনেক শুভেচ্ছা রইল

৫| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:১২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: অসাধারণ লিখেছেন। ভাই আপনি সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন আমাদের মাঝে। মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট অনেক হামদান। আলহামদুলিল্লাহ। আমার ছোট্ট চাচাও কোবিড১৯ আক্রান্ত হয়েছিল। আল্লাহ ওনাকেও হেফাজত করেছে। এই কয়টি দিন বিদেশের বাড়িতে নিজের চাচা সহ নিকটতম কিছু বন্ধু বান্ধবের আক্রান্ত হওয়ায় অনেক ভীতির মধ্যে ছিলাম। চাচার অসুস্থতার কথা দেশে কাউকে জানাইনি। কি যে এক ভয়াবহতার মধ্যে গেল কয়টা দিন এরি মধ্যে দেশের অবস্থাও দিনকি দিন অনেক খারাপ যাচ্ছে। এই সময়ে আপনার নান্দনীক সেই মাটির ঘরের ইতিহাস ও চীরস্থায়ী ঘরটির ছবি সহ যাবতীয় তথ্য প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এক বসায় পড়ে নিতে এতোটুকু কষ্ট হয়নি। আপনি বরাবরই অনেক মূল্যবান পোস্ট করে থাকেন।

২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:০১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



আপনার চাচা ও অন্যদের অসুস্থতার কথা শুনে মর্মাহত ,
দোয়া করি উনারা যেন পুরাপুরি সুস্থ হয়ে উঠেন ।
হ্যাঁ দেশের অবস্থা এখনো ভিতিকর ।
পোষ্টটি একদমে পাঠ করেছেন
শুনে আমার পরিশ্রমকে
স্বার্থক মনে করছি ।

শুভেচ্ছা রইল

৬| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:৩০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এরেই বুঝি বলে পরশ পাথর সন্ধান...... ;)

আহারে তাহার খোঁজে কত কথাই না হলো,
ইলামিত্র, তেভাগা আন্দোলন, শেরে বাংলা... থেকে
আশ্রায়ন প্রকল্প, মাটির ঘর ষংস্কৃতির পুনরূজ্জীবনে দেশী বিদেশী গবেষনা...

সবইতো হলো- পরশ পাথরও শেষ পর্যণ্ত ভারতীয় সিরিয়াল ফলো করলো ;)
হা হা হা

আচ্ছা, তবে তাই হোক
ঝুলে রইলাম, পর্বান্তরে তাহারে পাইব বলে :)

+++

২৩ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:০৪

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:

পরশ পাথর কি এতই সহজ জিনিষ এর সন্ধনতো একটু লম্বাই হবে।
চলার পথে দেখা জিনিষ মারিয়ে গেলে সেটি পাব কেমন করে ।
তাই একটি একটি নুরী হাতে তুলে নিতে হবে পরখ করে ।
পরশ পাথর বিবিধ প্রকার, তরলাকার হতে মুনুষ্যকার পর্যন্ত
এর বিস্তার । তাই পরশ পাথর প্রাপ্তি পর্যন্ত হবে আরো অনেক
কাহিনীর বিস্তার ।

এটা ভারতীয় সিরিয়াল হবে কিনা জানিনা তবে হবে আলী
সিরিয়াল । পরশ পাথর পাওয়া পর্যন্ত সাথে থাকুন ।

শুভেচ্ছা রইল


৭| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:১২

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: এই পোষ্টটি আমার কাছে অসাধারন । ছোট বেলা কেটেছে মাটির ঘরে।আমাদের গ্রামের সকল ঘরই ছিল মাটির।

২৩ শে জুন, ২০২০ ভোর ৪:৩১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


পোষ্টটি অসাধারণ অনুভুত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
আমিউ ছোট বেলা, কিশোর বেলাও এখনো দেশের বাড়িতে গেলে
প্রায় শতবছরের পুরনো মাটির ঘরে থাকি ।
আপনাদের গ্রামের মাটির ঘরগুলি কি এখনো আছে ?
জানালে বাধিত হব ।

শুভেচ্ছা রইল

৮| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:৫৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: কি করে মন্তব্য করব বুঝতে পারছি না। এতগুলো ইউনিক বিষয় নিয়ে আপনি আলোচনা করেছেন যে এক কথায় অসাধারণ।++++
পোস্টে লাইক একটা নয় গোটা দশেক দিতে পারলে খুশি হতাম।

শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা আপনাকে।

২৩ শে জুন, ২০২০ ভোর ৪:৩৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:

এই পোষ্টের ভুমিকাতে বলেছি এটি যদি একজন
পাঠকের কাছেও ভাল লাগে তাহলে আমার
পরিশ্রম স্বার্থক হয়েছে বলে ভাবব । এখন
আপনার কাছ হতেএত এত ভাল লাগার
কথা শুনে আমি পুলকিত ও অনুপরানীত।

শভেচ্ছা রইল

৯| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:১৩

নতুন বলেছেন: আমাদের গ্রামের বাড়ীতে এমন একটা ঘর করবো ঠিক করেছি। মাটির ঘর কিন্তু আধুনিক সুবিধা সহ এবং রিসাইকেল জিনিস ব্যবহার করে।

২৩ শে জুন, ২০২০ ভোর ৪:৪৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



দেশর বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘরকে পুণরুজ্জীবিত
করার জন্য আপনার ইচ্ছার কথা শুনে আনন্দিত হলাম।
রিসাইকেল নির্মাণ উপাদানের ব্যবহার মাটির ঘরের
পুণরুজ্জিবন কর্মসুচীকে আরো বেগবান করবে নিস্দেহে।
আপরার এই প্রচেষ্টার সফল বাস্তবায়ন অভিজ্ঞতা
ও পদ্ধতি নিয়ে সামুতে পোষ্ট দিলে আরো অনেকে
উৎসাহিত হবেন বলে দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি।

শুভেচ্ছা রইল

১০| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৩৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এতো বড় লেখা!! তাই সাহস করে পড়ি নি। (আমি অলস মানুষ) ছবিগুলি দেখেছি।

২৩ শে জুন, ২০২০ ভোর ৬:২৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


তবুতো আপনি মন্তব্যের ঘর পর্যন্ত এসেছেন ।
ছবি দেখে কেমন লাগল জানতে পারলে ভাল হত ।
শুভেচ্ছা রইল

১১| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:১০

রাজীব নুর বলেছেন: মাটির ঘর আমার খুব পছন্দ।
এখনও কিছু কিছু গ্রামে মাটির ঘর দেখা যায়।

একদিন আমার বন্ধুকে বললাম, দোস্ত মাটির ঘরে থাকতে মন চায়। শুনেছি মাটির ঘরে নাকি গরম লাগে না। মাটি দিয়ে বানানো বলে খুব ঠান্ডা হয়।
দোস্ত বলল, তোর মাটির ঘরে থাকার স্বাদ মিটবে।
আমি বললাম, কিভাবে?
দোস্ত বলল, তুই মরে গেলে তো মাটির ঘরেই তোকে রেখে আসবো।

২৩ শে জুন, ২০২০ সকাল ৭:২৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



মাটির ঘর খুব পছন্দ শুনে ভাল লাগল ।
মাটির ঘরে যাওয়ার জন্য আপনার ইচ্ছার কথা শুনে
আপনার দোস্ত তো আপনাকে সুজা রাস্তা দেখায়ে দিছে্।

নিমন্ত্রন রইল গায়ে আমাদের ছোট মাটির ঘরে যাওয়ার
জসিমউদ্দিনের মত এত সুন্দর করে হয়ত বলতে পারবনা
তুমি যাবে ভাই যাবে মোর সাথে আমদের ছোট গাঁয়
গাছের ছায়ায় লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়;
মায়া মমতায় জড়াজড়ি করি মোর গেহখানি রহিয়াছে ভরি,
মায়ের বুকেতে, বোনের আদরে, ভায়ের স্নেহের ছায়,
তুমি যাবে ভাই- যাবে মোর সাথে আমাদের ছোট গাঁয়।
ছোট গাঁওখানি- ছোট নদী চলে, একপাশ দিয়া, কালো জল তার


সেই মতন ছোট নদীর পারে আমাদের গায়ের মাটির ঘরে
আরামের সহিতই পারিবেন সপরিবারে বেড়াতে। যাবেনতো ?

শুভেচ্ছ রইল

১২| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৪৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: লেখা পড়ে শিখলাম আর ছবি দেখে জানলাম। আমাদের এলাকায় আগে অনেক মাটির ঘর ছিল। এই লেখা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তে হবে ।

২৩ শে জুন, ২০২০ সকাল ৭:৩৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


আপনাদের এলাকায় মাটির ঘরগুলি কি এখনো আছে্?
এলাকার মানুষের অবস্থার পরিবর্তনের সাথে মাটির ঘর
কি বিলুপ্তির পথে । নিশ্চয়ই ইটের তৈরী বাড়ীঘর উঠছে
দেদারসে । তাতে করে ইটভাটার কারণে পরিবেশের
উপর কি ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। ক্ষতি হলে তা রোধে
এলাকার মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরী প্রয়োজন।

১৩| ২৩ শে জুন, ২০২০ ভোর ৪:১৫

কল্পদ্রুম বলেছেন: দীপশিখা মেটির স্কুল খুব সুন্দর।কব হাউজ নিয়ে আমি এর আগে ইউটিউবে কয়েক ঘন্টা খরচ করে এদের নানান রকম ডিজাইন দেখেছিলাম।নির্মাণশৈলী খুবই মুগ্ধকর।পোস্ট প্রিয়তে রাখছি।পরে পুরোটা পড়ে আবার মন্তব্য করবো।

২৩ শে জুন, ২০২০ সকাল ৮:০১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




পোষ্টটি প্রিয়তে নেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন ।
কব-হাউজ মডেলটি আমারো খুব প্রিয় ।
এধরনের মাটির ঘর নির্মানের জন্য নির্মাণ প্রকোশলীদের
মনযোগ দেয়া খুব প্রয়োজন ।পরিবেশবাদীরাও বিষয়টি
ভাল করে ভেবে দেখতে পারেন । ইট ভাটর ক্ষতিকর
প্রভাব হতে দেশের মানুষ ও পরিবেশকে বাঁচাতে হবে ।
আপনার মুল্যবান মন্তব্যের দিকে চেয়ে থাকলাম ।

শুভেচ্ছা রইল

১৪| ২৩ শে জুন, ২০২০ ভোর ৫:০১

জোবাইর বলেছেন: ৭১'এর মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে পাকহানাদেরকে পরাজিত করে বীরের বেশে এ দেশের স্বাধীনতা নিয়ে ফিরে এসেছিলেন। এবার মানব সভ্যতাকে বিপন্ন করা শক্তিমান ও অদৃশ্য করোনা ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করে জিতে সুস্থ হয়ে বীরবেশে ব্লগে ফিরে আসায় আপনাকে হৃদয় নিংড়ানো সশ্রদ্ধ অভিনন্দন!

ইহকালের এবং পরকালের মাটির ঘর নিয়ে আপনার তথ্যসমৃদ্ধ বিবরণ এবং সুচিন্তিত মতামতসহ দীর্ঘ লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। করোনার আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত শরীরের অদৃশ্য দাগ না শুকাতেই এ ধরনের সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে এত বড় একটি লেখা আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

একসময় আমাদেরও বড় আকারের মাটির ঘর ছিল। এটি নির্মিত হয়েছিল ৫০'এর দশকে। আমার বাল্যকাল কেটেছে এই মাটির ঘরে। অনেক ঝড়, সাইক্লোন, বন্যা মোকাবেলা করে ঘরটি প্রায় ৫০ বছর ঠিকেছিল। ভালোভাবে যত্ন-পরিচর্চা করলে হয়তো আরো অনেক বছর ঠিকানো যেতো। আমার বাবার আমলের সেই ঘর ভেঙে আমরা পাকা ঘর বানিয়েছি মাত্র বছর দশেক আগে। মাটির ঘরের সুবিধা ও অসুবিধা দুটিই আছে।

অসুবিধাগুলো হলো:
♦ বর্ষাকালে মাটির ঘর স্যাঁতস্যাতে হয়ে যায়।
♦ মাটির ঘরের দেয়াল এত বেশি চওড়া যে কামরা ছোট হয়ে যায়।
♦ মাটির ঘর করতে এখন খরচ বেশি পড়ে। এর থেকে কম খরচে সেমিপাকা ঘর করা যায়।
♦ মাটির ঘরের সাথে মাটির ঘর করার কারিগররাও এখন বিলুপ্ত প্রায়! ঘর করার জন্য এখন কারিগর পাওয়া যায় না।
♦ মজবুত মাটির ঘর তৈরি করতে দীর্ঘ সময়ের দরকার। মানুষ এখন সবকিছু ঝটপট চায়।

স্বাস্থ্য ও পরিবেশবান্ধব মাটির ঘর তৈরি করতে জনগনকে উৎসাহী করতে হলে সরকার ও এনজিওগুলোকে বিভিন্ন রকমের সাহায্য-সহযোগীতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে এবং কারিগরদের পুরানো ধ্যান-ধারণার সাথে আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রন ঘটাতে হবে। যা-ই হোক, পরশ পাথরের সূচনা পর্বে বেশি কিছু বলতে চাইনা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকুন, শরীরের প্রতি যত্ন নেবেন।

২৩ শে জুন, ২০২০ সকাল ৯:৩৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


অভিনন্দন সাদরে গৃহীত। হ্যাঁ আপনাদের দোয়ায় ও আল্লার অশেষ রহমতে এই প্রাণঘাতি করোনাসহ মুক্তিযুদ্ধের সময় বেশ কয়েকবার নির্ঘাত মৃত্যুর হাত হতে ফিরে এসেছি ।

মাটির কিছু সুবিধার কথা যতার্থ্‌ই বলেছেন। তবে পরিবেশ বান্ধব টিকসই ও ব্যয়সাস্রয়ী যেসমস্ত নির্মাণ শৈলি ও প্রযুক্তি যথা কব -হাউজ , রেমড আর্খ হাউজ , পিটানো মাটির ঘর,চাপানো মাটির ঘর ,অবলম্বন করে পৃথিবীর বভিন্ন দেশ মাটিরঘর নির্নের দিকে
ঝুকছে সেগুলি অনুসরণ করে সেসাথে দেশের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে মাটির ঘরের অসুবিধা সমুহ মোকাবেলা করা যেতে পারে । এ ক্ষেত্রে আপনার মুল্যবান মন্তব্যের এ অংশটুকু গুরুত্বের সহিত বিবেচনার অবকাশ রাখে
স্বাস্থ্য ও পরিবেশবান্ধব মাটির ঘর তৈরি করতে জনগনকে উৎসাহী করতে হলে সরকার ও এনজিওগুলোকে বিভিন্ন রকমের সাহায্য-সহযোগীতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে এবং কারিগরদের পুরানো ধ্যান-ধারণার সাথে আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রন ঘটাতে হবে
শুভেচ্ছা রইল

১৫| ২৩ শে জুন, ২০২০ ভোর ৫:৫৬

মা.হাসান বলেছেন: এটি হাজী দানেশ সাহেবের বসত বাড় ছবিটি অক্টোবর ২০১৮তে তোলা, এখন আরো খারাপ দশায় আছে অনুমান করি।



আমার আপন চাচার শ্বশুরবাড়ি দোতলা, মাটির তৈরি । আমার মা ষাটের দশকে বাড়িটি যেমন দেখেছেন, এখনও বাড়ির অবস্থা প্রায় এক রকম, তবে কবে এটি তৈরি হয়েছিলো জানা নেই। বাড়িটি এখনো খুব ভাল অবস্থায় রয়েছে। সাধারণ লেপা পোছা ছাড়া মেইনটেনেন্স খরচ কম (বারান্দার বাঁশের খুটি বদলাতে দেখেছি, চাল হয়তো কয়েক বছর পর কিছু মেরামত প্রয়োজন হয়)।

ছোটবেলায় মহিষ দিয়ে মাটি ছানা দেখেছি, কেন করা হতো এটা জিজ্ঞেস করার মতো বয়স তখনও হয়নি । আপনার পোস্ট থেকে জানতে পারলাম মাটির ঘর তৈরি করার আগে এরকম ছেনে নেওয়া আবশ্যক।

মাটির ঘর তৈরীর জন্য সাধারণত আঠালো মাটি ব্যবহার করা হয়, এ ধরনের মাটি কৃষি কাজের জন্য খুব বেশি উপযুক্ত নয় ( তবে বিভিন্ন ফল ও কাঠের গাছ লাগানো যায়) এ কারণে মাটির ঘর তৈরি করা হলে এতে কৃষি জমির ক্ষতি হওয়ার কথা না । কিন্তু ইটের ভাটায় পলি মাটির টপ সয়েল ব্যবহার করা হয়। উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলো থাকে টপ সয়েলে। এই ক্ষতি পূরণ হতে অনেক বছর সময় লাগে। যার কারণে ইটের ভাটায় মাটি দেওয়া হলে এটা কৃষির জন্য অনেক বড় ক্ষতির কারণ।



ইটের ভাটার ধোঁয়ার কারণে ও ফসলের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। এটা আমার নিজের বাগানের, গত মাসে তোলা। আশপাশের সব বাগানেই একই অবস্থা। এই বাগান থেকে আনুমানিক ৩০০ গজ দুরে একটা ইট ভাটা আছে।

আমাদের দেশে অনেক মানুষের মধ্যে কিছু ভ্রান্ত ইগো থাকে যে গ্র্যাজুয়েট হতে হবে, বা পাকা বাড়িতে থাকতে হবে। এই সমস্ত কারণে মাটির বাড়ি এখন খুব একটা দেখা যায়না , গ্রাম দেশেও এমনকি সামর্থ একটু কম থাকলেও, ঋণ করে পাকা বাড়ি করতে হবে এই রকম ধারণা প্রায় সকলেরই। কেউ মাটির বাড়ি বানাতে চাইলে কারিগর পাওয়া মুশকিল।

নিঃসন্দেহে মাটির বাড়ি অনেক আরামদায়ক। এছাড়া অগ্নি প্রতিরোধেও জন্য এটা অনেক বেশি সহায়ক (ছনের চাল হলে আলাদা কথা)। সরকারের উচিত ইটভাটার উপরে প্রচুর ট্যাক্স আরোপ করা যাতে ইটের বাড়ি তৈরিতে মানুষ নিরুৎসাহিত হয়।

হাইরাইজ বিল্ডিং এর জন্য মাটির ঘর প্র্যাকটিকাল সলুশন নয়। ঢাকার মতো শহর যেখানে লক্ষ লক্ষ লোক থাকে সেখানে হাইরাইজ বিল্ডিং থাকবে এটা স্বাভাবিক। এর জন্য, আপনি যেমন বলেছেন, ব্লক ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্লক তুলনামূলকভাবে পরিবেশের জন্য বেশি সহনীয়।

ট্রেন ধরতে চাইলে সবচেয়ে সহজ উপায় হল আগের ট্রেন মিস করা। আপনি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছেন, করোনার বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছেন, কামনা করি, আন্তরিকভাবে, আগামী ২০-২৫ বছর আপনি ক্রমাগতভাবে ট্রেন মিস করতে থাকুন। চলে যাওয়া একটি প্রাকৃতিক বিষয়। যখন যাওয়া একান্তই প্রয়োজন হবে তখন না হয় যাওয়া যাবে, তাড়ার কি আছে!

অসাধারণ পোস্ট। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

২৩ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


হাজি মোহাম্মদ দানেশ এর বাড়িটিসহ ইটভাটার ক্ষতিকর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ফলগাছের ছবি দিয়েপোষ্টটিকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন ।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দলনে নেতৃত্বদানকারী যে ক'জন বরেণ্য ব্যক্তির নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে তাঁদের মধ্যে হাজি মোহাম্মদ দানেশ অন্যতম। ঠাকুরগাঁও তথা বৃহত্তর দিনাজপুরের মেহনতি মানুষের মুক্তির সংগ্রামে আজীবন নিজেকে উৎসর্গ করেছেন এই বিপ্লবী নেতা।তি ১৯৮৬ সালের ২৮ জুন ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর প্রতি সন্মানার্থে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে।

মাটির ঘরের বর্তমান অবস্থা ও এর সম্ভাবনার বিষয়ে মুল্যবান মন্তব্য রেখেছেন । মাটির ঘরের জন্য মাটি ব্যবহারের ফলে ফসলের জমির তেমন ক্ষতি হবেনা মর্মে আপনার দেয়া তথ্য মাটির ঘর পুর্ণজ্জীবনের জন্য কর্মসুচী গ্রহনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপুর্ণ বাধা অতিক্রমে সহায়তা করবে ।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল



১৬| ২৩ শে জুন, ২০২০ সকাল ৮:৪৫

মনিরা সুলতানা বলেছেন: প্রথমত: শুভেচ্ছা নিন কোভিড-১৯ এর একজন যোদ্ধা হিসেবে !
এমন ভয়ংকর পরিস্হির মুখ থেকে ফিরে এ ধরনের গবেষনা পোষ্ট কেবল আপনার পক্ষেই সম্ভব !! অসাধারন ! ভাইয়া !!

আমাদের বিক্রমপুরের টিনের ঘরের রাজত্ব ; কত বৈচিত্রে যে ধরা দেয় এখানকার ঘরগুলো। আমি বৈবাহিক সূত্রে নওঁগা যাবার পর মাটির ঘরের থাকার সৌভগ্য অর্জন করেছি। আমার নিজের আগ্রহে কিছুটা জেনেছি ও । মাটির চমৎকার একটি দ্বিতল ভবনের স্বপ্ন দেখি ।

বিভিন্ন সূত্র উল্লেখ্যে আপনার এই পোষ্ট দারুন তথ্যবহুল ।


ধন্যবাদ ভাইয়া চমৎকার পোষ্টের জন্য।

২৩ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:১০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



পোষ্টটি অসাধারণ অনুভুত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ । কোভিড-১৯ এর যোদ্ধা হল স্বাস্থ্যকর্মী হিসাবে কর্মরত আমার গিন্নী ও ডাক্তার মেয়ে । তারা বলেছিল আমাদের সংক্রমিত হ য়ার সম্ভাবনা বেশী । পরিবারের চারজনই আক্রান্ত হয়েছিলাম । ছেলেমেয়ের উপর দিয়ে সামান্য গেছে।গিন্নী ও আমার উপর দিয়েই গেছে বেশী। গিন্নীর বিষয়ে সবাই আশায়ই ছেড়ে দিয়েছিল ।যাহোক,আল্লার রহমতে ও আপনাদের সকলের দোয়ায় এখন সকলেই সুস্থ আছি ।

হ্যাঁ বিক্রম পুরের টিনের ঘর গুলি বৈচিত্রময় । আমার স্কুলজীবনের বন্ধুদের অনেকেরই পৈত্রিক বাড়ী বিক্রমপুরে ।তাদের সাথেবিক্রম পুরেগিয়ে দেখেছি। পরবর্তীতে কর্মসুত্রে দোহার এলাকায় যাতায়াতের ফলে দেখেছি সেখানকার বৈচিত্রময় টিনের বাড়ী ঘরগুলি ।জাপানীপ্রবাসী বিক্রমপুরের প্রবসীগন সেখানে নির্মান করেছেন দৃষ্টিনন্দন টিনের বাড়ী।

শুনেছি বিশাল এলাকা নিয়ে বিস্তৃত বিক্রমপুরে অতীতে নাকি অনেক মাটির তৈরী ঘর ছিল । বিক্রমপুরের পশ্চিমে পদ্মানদী, উত্তর ও পূর্বে ধলেশ্বরী নদী এবং দক্ষিণে আড়িয়াল খাঁ ও মেঘনা নদীর সংযোগস্থল।তাই ক্রমাগত নদী ভাঙ্গনের ফলে প্রাচীন বিক্রমপুরের অনেক এলাকা এবং এর পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শণসমূহ প্রায় পুরোটাই কালের আবর্তে বিলীন হয়ে গেছে।
সেসময়কার মাটিরঘরগুলিও হয়ত তলিয়ে গেছে । এখনকার বিক্রমপুরের বালু মাটি ভাল কোন মাটির ঘর তোলার
জন্য উপযোগী নয় ।

নওগাঁয় আপনার শ্বশুর বাড়ীতে মাটির চমৎকার একটি দ্বিতল ভবনের স্বপ্ন অচিরেই বাস্তবয়ীত হোক এ কামনা রইল ।

ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য ।

শুভেচ্ছা রইল

১৭| ২৩ শে জুন, ২০২০ সকাল ৯:১২

নতুন নকিব বলেছেন:



আলী ভাই,
সশ্রদ্ধ সালাম। আপনার অতুলনীয় ধৈর্য্য, অনির্বচনীয় একাগ্রতা আর অনিঃশেষ ত্যাগের ফসল এরকম একেকটি অসাধারণ পোস্ট। লাইকসহ প্রিয়তে।

অনেক ভালো থাকুন। পরের পর্বের অপেক্ষায় ইনশাআল্লাহ।

২৩ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:১৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



নকিব ভাই,
ওয়ালাইকুম সালাম ।
পোষ্টটি প্রিয়তে নেয়ায় কৃতজ্ঞতা জানবেন ।

পরের পর্বের সাথে থাকার কথা শুনে খুশী হলাম ।

১৮| ২৩ শে জুন, ২০২০ সকাল ১০:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্ট ' লাইক'সহ "প্রিয়"তে!
নিজের মন্তব্য পরে, আগে অন্যের মন্তব্যগুলো পড়ে নিলাম, নিজেরটা আরো পরে।
জোবাইর এবং মা.হাসান এর চমৎকার মন্তব্য দুটো ভাল লেগেছে। তাদেরকে এ গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২৩ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:২৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


পোষ্ট প্রিয়তে নেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন ।
জোবাইর এবং মা.হাসান এর চমৎকার গঠনমূলক মন্তব্য দুটি
অবশ্যই গুরুত্বের সাথে প্রনিধানযোগ্য ।

শুভেচ্ছা রইল

১৯| ২৩ শে জুন, ২০২০ সকাল ১০:০৯

রোকসানা লেইস বলেছেন: মাটির তৈরি ঘরের বর্ণনা পড়তে পড়তে শেষ হচ্ছিল না। মনে হলো একটা বই পড়ছি। অনেক কিছু জানা হলো।
দেশে উত্তরবঙ্গে এবং ইণ্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গে রাজস্থানের দিকে কিছু মাটির তৈরি বাড়ি দেখেছি।
তবে আপনার বর্ণনার দোতলা মাটির বাড়ি এবং সুন্দর মাটির তৈরি বাড়ি গুলি আগে দেখা হয়নি। রাজস্থানের বাড়িগুলো খুব সুন্দর ছবি আঁকা।
প্রকৃতি বান্ধব মাটির বাড়ির ধারনা শুধু নয় ব্যবহার ফিরে এলে খুব ভালো লাগবে। বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের আনাচে কানাচে নানা জায়গায় মাটির বাড়ি ব্যবহারের ধরনাটি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
করোনার ভয়াবহ থাবা থেকে বেড়িয়ে এসেছেন দীর্ঘায়ু হন। আরো সুন্দর সুন্দর আইডিয়ার নানান লেখা লিখে সমৃদ্ধ করুন আমাদের। সুস্থ থাকুন ।

২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:১৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


মাটির ঘরের বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন শুনে খুশী হলাম ।
বাংলাদেশের মত ভারতেও প্রচুর মাটির ঘর রয়েছে ।ভারতের গ্রমীণ এলাকার প্রায় এক তৃতীয়াংশ ঘরই মাটির ঘর ।
আপনি ঠিক্ই বলেছেন ভারতের উত্তরাংশের রাজ্য রাজস্থানের থর মরু ভুমি এলাকায় সুন্দর সুন্দর মাটির ঘর রয়েছে।

শুধু মাটির বাড়ীই বা কেন, তাল তাল মাটির হাড়ি মাথায় নিয়ে ভারসাম্য বজায় রেখে রাজস্থানী মেয়েদের নৃত্যও সুন্দর ।


প্রকৃতি বান্ধব মাটির বাড়ির ধারনা শুধু নয়, ব্যবহার ফিরে এলে খুব ভালো লাগবে মর্মে আপনার কামনাটুকু বাস্তবায়ন হোক এটা আমাদেরও একান্ত চাওয়া ।

শুভেচ্ছা রইল

২০| ২৩ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:১৭

মলাসইলমুইনা বলেছেন: আলী ভাই,

খুবই ভালো লাগলো আপনার এই লেখাটা। লম্বা ট্রেন জার্নিও বোরিং লাগে কখনো কখনো । কিন্তু আপনার ট্রেন সমান লম্বা লেখাটা একটুও বোরিং লাগলো না পড়তে । চমৎকার ! হ্যা নানা কারণেই এখন মাটির বাড়িগুলো হারিয়ে যাচ্ছে দেশের থেকে । আসলে আমার মনে হয় বিকল্প কাঁচামালগুলো সহজপ্রাচ্য ও দামে কম হওয়াই মাটির ঘর এখন আর না বানাবার কারণ । আপনার মেনশন করা কোনো একটা সোর্স দেখছিলাম ।সেখানে বলা হচ্ছে " প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির ঘরের ক্ষতি হয় বলে বর্তমান সময়ে দীর্ঘস্থায়ীত্বের কারণে গ্রামের মানুষরা ইট-সিমেন্টের বাড়ি নির্মাণে আগ্রহী হচ্ছেন।ভূমিকম্প বা বন্যা না হলে একটি মাটির বাড়ি শত বছরেরও বেশি স্থায়ী হয়।" মাটির ঘরের স্থায়িত্বের ব্যাপারটা এখন আবহাওয়ার সাথেও জড়িয়ে গেছে । যে ঘন ঘন বন্যা হয় এখন দেশে । তাছাড়া ডিস্প্রোপোরশনেট বৃষ্টিপাতও মনে হয় দেশের কিছু এলাকার মানুষকে এই ধরনের বাড়ি বানাতে নিরুৎসাহিত করছে । ব্রিটিশ কলম্বিয়ার যেই বাড়িটার কথা আপনি বলেছেন সেটা নিয়ে দেখছিলাম ইন্টারনেটে । ব্রিটিশ কলোম্বিয়ায় বছরে গড় বৃষ্টিপাত কানাডার সবচেয়ে বেশি প্রায় ১৫০০ মিলিমিটার ।কিন্তু আমাদের দেশের রাজশাহী যেখানে সবচেয়ে কম বৃষ্টি হয় সেখানেও গড় বৃষ্টিপাত ১৬০০ মিলিমিটারের বেশি । আর প্রচন্ড বৃষ্টিপাত আর বন্যাতেইতো মাটির ঘর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পরে ।তাই মনে হয় এখন গ্রামের মানুষ আগ্রহ হারিয়েছে মাটির ঘরের ওপর । আরেকটা জিনিস অবশ্য জানা হলো না এখনো । মাটির একটা বাড়ি বানাবার সাথে টিনের দোচালা বানাবার খরচের পার্থক্য কেমন হয় এখন দেশে ? আমার মনে হয় খরচ প্রায় সমান সমান ।সেই ক্ষেত্রে টিনের ঘর বানাবার সময় লাগবে অনেক কম। টিনের ঘর বানাবার ব্যাপারটাও সিজনাল না ।সেটাও হয়তো এই ঘরগুলোর প্রতি গ্রামের মানুষের আগ্রহের একটা কারণ । যাহোক, অনেক নতুন জিনিস জানলাম ।

চমৎকার লেখার জন্য শুভেচ্ছা নিন । আর আপনি এখন পুরো সুস্থ্য জেনেও খুব খুশি হলাম ।

২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:১৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



আমার ট্রেন সমান লম্বা লেখাটি পাঠে একটুও বোরিং লাগেনি শুনে খুশী হলাম । লেখাটির আকার তিনহাজার অক্ষর পার হওয়ার পরে মনে মনে ডিজাইন করা সাইজের অর্ধেকো হয়নি দেখে আশংকা করেছিলম এত লম্বা লেখা কেও পড়বেননা , তার পরেও লিখে গেছি, লেখাটির ভিতরে এক জায়গায় নীজেও বলেছি এই লম্বা লেখাটি পুরাটা পড়ে অন্তত একজনও যদি বলেন যে লেখাটি ভাল লেগেছে তাহলে মনে করব আমার পরিশ্রম স্বার্থক হয়েছে।

আপনি ঠিকই বলেছেন গৃহ নির্মানের বিকল্প কাঁচামালগুলো সহজপ্রাপ্য ও দামে কম হওয়াই মাটির ঘর এখন আর না বানাবার কারণ । সে সাথে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির ঘরের ক্ষতি হয় বলে বর্তমান সময়ে দীর্ঘস্থায়ীত্বের কারণে গ্রামের মানুষরা ইট-সিমেন্টের বাড়ি নির্মাণে আগ্রহী হচ্ছেন এটাও সত্য কথা । এর সাথে যুক্ত করা যায় আরো কিছু কারণ, যথা মাটির ঘরকে অনেকেই মনে করেন দারিদ্রের প্রতিক । দরিদ্ররাই মাটির ঘরে বাস করে এটাই এক সময় ছিল গ্রাম বাংলায় প্রচলিত ধারনা । দরিদ্রদের একটি কামনা বাসনা ছিল তারা টিনের ঘরে বাস করতে পারলে জাতে উঠবেন ।আমার মনে পরে ষাটের দশকে ছোট কালে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আমার এক চাচার ইলেকশন ক্যামপেইন চলাকালে চাচার সাথে বাড়ী বাড়ী ঘুরে ভোট চাওয়ার সময় কুড়েঘরে বা খরকুটার ছাউনীর মাটির ঘরে বসবাসকারী দরিদ্রদের বাড়ীতে ভোট চাইতে গেলে তারা বলতেন ভোটের আগে কিংবা পরে তাদেরকে টিনের ঘর তৈরী করে দিতে হবে । চাচা বলতেন আমাকে ভোট দিলে অবশ্যই টিনের ঘর করে দিব । ভোটের আগে অবশ্য অনেককেই ছাতা ,লুংগী ,টর্চ লাইট ও বাড়ীর মা বোনদের জন্য শাড়ী দেয়া হতো । তবে নির্বাচনে পাশের পরে চাচার কাছে কাওকে টিনের বাড়ীর জন্য টাকা চাইতে দেখি নাই , সম্ভবত পাশকরা চেয়ারম্যনের কাছে টিনের ঘরের জন্য টাকা চাইতে ভয় পাইত । আমি দেখা হলে অনেককে বলতাম টিনের ঘরের জন্য চাচার কাছে টাকা চাইতে যাওনা কেন, সে বলত মাথা খারাপ হইছে এখন টাকা চাইতে যাব , তবে সামনের বার ভোট চাইতে গেলে
তখন অবশ্যই টিনের ঘরের জন্য দাবী জনাব ।

যাহোক, অবস্থাটি এখনো বলতে গেলে একইরকম । যারা টিনের ঘরে বা মাটির ঘরে বাস করছেন তারা তাদের স্টেটাস আপগ্রেডের জন্য ইটের তৈরী পাকা বাড়ী বানাবার দিকে ঝোকছেন । বেশীর ভাগই অবশ্য ইটের দেয়াল ঘেরা ঘরের ছাদ বা চাল তুলছেন টিন দিয়েই। অথচ সাধারন একটি টিনশেড পাকা বাড়ির পিছনে অনেক টাকা খরচ করতে হয় ; চালে টিন দিচ্ছে, আবার টিনকে লুকানোর জন্য ও টিনের তাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য, ফলস সিলিং এর পিছনে অতিরিক্ত টাকা খরচ করছে। রূপবান জাতীয় কমদামী টিনের চালের আয়ুষ্কাল বড় জোড় ৫ থেকে ১০ বছর । পাাঁচ বছর না যেতেই টিনে মরিচা ধরা শুরু করে, কয়েক বছর না যেতেই চালের কাঠের ফ্রেমে উইপোকা ও ঘুণপোকার আক্রমন শুরু হয়, আর ১০ বছরে টিন বেয়ে পানি পরা শুরু। তারপর সব পাল্টানোর পালা। আবার সেই একই খরচ!

অপর দিকে ভূমিকম্প বা বন্যা না হলে একটি মাটির বাড়ি শত বছরেরও বেশি স্থায়ী হয়। সমস্যাটি বেশী দেখা যায় এর রুফিং নিয়ে যা টিনের ঘর কিংবা ইটের দেয়াল ঘরের বেলাতেও খাটে। মডার্ন ইঞ্জিনিয়রিং যা করার তাই এর রুফিইং এর বেলাতেই বেশী করতে হবে। মাটির ঘরের স্থায়িত্বের ব্যাপারটা এখন আবহাওয়ার সাথেও জড়িয়ে গেলেও বিভিন্ন পদ্ধতিতে যথা Rammed earth housing বা sun dried earth block অথবা compressed earth bloc পদ্ধতি অবলম্বন দ্বারা এই সমস্যাটির কিছুটা সমাধান সম্ভব। এইপোষ্টের ৪০ন নং ছবিতে টেক্সাসের মিডল্যান্ডে একটি সিইবি প্রকল্পের আওতায় কমপ্রেসড মাটির ব্লকে নির্মানাধীন একটি ঘরের দৃশ্য দেখানো হয়েছে । এধরনের ঘর নির্মানে ব্যয় একটু বেশী হলেও এটা অনেক বেশী পরিবেশ বান্ধব । যাহোক, বাংলাদেশে অনেকের কাছেই এখন টাকা একটা বড় ফেকটর নয়, দুতিনশত কোটি টাকা খরচ করেওঅনেকে বাড়ী নির্মান করছেন , সমস্যাটি হলো মানসিকতা ও মাটির ঘরের প্রতি তাদের দৃষ্টিভংগী । সমাজের বিত্তবানদেরকে যদি বিভিন্ন বিকল্প পন্থা অবলম্বনে টিকসই সৌখীন মাটির ঘর তৈরীর প্রতি অনুপ্রানীত করা যায় তবে তার ডেমনসট্রেশন ইফেক্ট হবে অনেক বেশী । ঐতিহ্যবাহী পরিবেশ বান্ধব মাটির ঘরকে পুনরুজ্জীবিত করা যেতে পারে সকলের সহযোগীতা ও মানসিকতা পরিবর্তনের মাধ্যমে ।

পোষ্টের উপর আপনার মুল্যবান গঠণমুলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ।

শুভেচ্ছা রইল

২১| ২৩ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:৪৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: বিরাট পোস্ট পড়তে পড়তে কিছু কিছু ছোট ছোট স্মৃতিকথা মনের মাঝে ভেসে উঠলোঃ
ছোট বেলায় যখন নানাবাড়ীতে বেড়াতে যেতাম, প্রায়ই সিঁধ কেটে চোরের প্রবেশের কথা শুনতে পেতাম। চাক্ষুষ কোনদিন প্রবেশকৃত চোরের দেখা পাইনি, তবে একবার গিয়ে দেখি আমরা যাবার আগের রাতে চোর সিঁধ কেটে টুকটাক কিছু জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট দিয়েছে। কাটা সিঁধটা তখনও ছিল এবং সেটা দেখে প্রথম রাতে ঘুমাতে যাবার সময় খুব ভয় লেগেছিল। ধরা পড়লে ধস্তাধস্তির সময় যেন চোর গৃহস্থের বেষ্টনী থেকে দ্রুত বের হয়ে যেতে পারে, সজন্য ওরা খালি গায়ে সর্ষের তেল মেখে নেংটি বেঁধে ঘরে প্রবেশ করত। কখনো কখনো নেংটি খুলে গেলে দিগম্বর হয়েই পগার পার হতো! :)
একাত্তরে স্বাধীনতার সপ্তাহ দুয়েক আগে পূবাইলের 'হারবাইদ' নামক স্থানে (আপনার উল্লেখিত 'বেরাইদ' এর নিকটবর্তী এলাকা) বড় ভাই, বড় বোন (একমাত্র বাচ্চাসহ) এবং বোনের শ্বশুর বাড়ীর আত্মীয় স্বজনসহ আশ্রয় নিয়েছিলাম। তখন সেখানে এরকম মাটির ঘরে মেঝেতে খড় বিছিয়ে বিছানা পেতে ঘুমাতাম। খুব ভালো লাগতো মাটির ঘরে থাকতে, গাছ গাছালি আর পুকুর ঘেরা বাড়ীতে।

২৪ শে জুন, ২০২০ ভোর ৬:৪৪

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



আমার পোষ্টই হোক আর আপনার পোষ্টই হোক মন্তব্যের চালাচালিতে মজাই আলাদা । দেখা যায় আমরা উভয়েই পোষ্টে থাকা বিশেষ কোন ঘটনার সূত্র ধরে চলে যেতে পারি প্রায় অর্ধ শতাব্দী পিছনের স্মৃতি কথায় । সেখানে গিয়ে আমরা অনেক মধুর স্মৃতি রোমন্থন করার সুযোগ পাই।পোষ্টের কিংবা মন্তব্যের ঘরে এমন কিছু কথার অবতারণা থাকে যা আমাদেরকে নিয়ে যায় অনেক অনেক পিছনে। আপনার হয়তো মনে থাকতে পারে আপনার অনেক পোষ্টে মন্তব্যের ঘরে আমার অনেক স্মৃতি কথা বলেছি। এখানেও তাই, সিঁদেল চোরের ব্যাপারে আপনার অভিজ্ঞতার কথা খুব সুন্দর করে বর্ণনা করে আমাকেও স্মৃতিকাতর করেছেন ।
এ প্রসঙ্গে আমারও মনে পড়ে তখন বয়স ৭ কি ৮ হবে সে সময় আমাদের বাড়িতে মাটির ঘর বেশ কয়েকটা থাকলেও বড় দাদার আমলের একটি বড় টিনের ঘর ছিল। সেই ঘরের পার্টিশনের এক অংশে থাকতেন আমার বাবা-মা আর পার্টিশন দেয়া পাশের ঘরে আমরা ভাই বোন থাকতাম । আমাদের বাড়ির বাৎসরিক কাজের মানুষ সে আমাদের গাঁয়ের লোক ।সেবার ছিল রমজান মাস, বাবা মাকে মা নিয়ে নানা বাড়িতে গিয়েছেন বিশেষ প্রয়োজনে, দিন কয়েক থাকবেন। সাথে ভাই বোনেরাও বেড়াতে গেছে। ঘর খালী ।খালি ঘরে ভয় পাব বলে আমার সাথে ছিল হাতেম ভাই( বাৎসরিক চুক্তিতে আমাদের বাড়ীর কাজের োক)।
রমজান মাসে আমরা সকলেই সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়তাম এবং ঘুমানোর সময় হারিকেন নিবিয়ে দিতাম। কিন্তু আমার ঘুমাতে অনেক দেরি হত, কারণ আমি না ঘুমিয়ে জেগে থাকার চেষ্টা করতাম। যদি ঘুমিয়ে পড়ি তাহলে ডাকবে না ,সকলে চুপিচুপি আমাকে বাদ দিয়ে সেহেরী খেয়ে ফেলবে ।আমাদের একান্নবর্তী পরিবার, রমজানের ছুটি বলে বিভিন্ন ঘরে বাড়ী ভর্তী মানুষ ( পরিবারের বয়স্ক পুরুষ সদস্যের বেশীরভাগই শিক্ষকতা পেশায় বলে রমজানের ছুটি কাটাতে সকলেই দেশের বাড়ীতে অবস্থান )। সকলে হহমহজচ বলত এই বয়সে এত রোজা রাখার দরকার নাই, সেজন্য আমাকে সেহেরী খাওয়ার জন্য ঘুম হতে ডেকে উঠাত না,কারণ সেহেরী খেতে পারলে পরদিন রোজা রাখবই। সেহেরী খাওয়া যেন মিস না হয় তাই রাতে ঘুমাতে চাইতাম না ।
সে জন্য আমি না ঘুমিয়ে সজাগ ছিলাম । রাত মনে হয় বেশ গভীর, হঠাৎ করে ঘরে কিসের যেন একটি শব্দ পেলাম। খুব ভয় পেয়ে যাই । সেসময় আমাদের এলাকায় সিঁদেল চোরের বড়ই উৎপাত ছিল, সেই ভয়ে আমি ফিসফিস করে হাতেম ভাইকে ডাকতে ছিলাম। বলছিলাম উঠো সেহরির সময় হয়ে গেছে। সে ঘুম জড়িত কন্ঠে বলল না সেহরির সময় হয় নাই এখনো রাত গভীর, ঘুমাও তুমি আমি তোমাকে ডেকে তুলবো। আমি অনেক পীড়াপীড়ি করে তাকে ডেকে তুললাম সে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে রান্না ঘরে যাওয়ার জন্য দরজার কাছে গিয়ে ও বাবারে বলে জুড়ে একটা চিতকার দিয়ে বলল গর্তে পড়ে গেছি। আমি দিয়াশলাই দিয়ে হারিকেন জ্বালিয়ে দেখি ঘরের দরজার চৌকাঠের নীচে একটি বড় গর্তের মধ্যে হাতেম ভাই দাঁড়িয়ে আছে।তার মানে সিদ কেটে ঘরে চোর ঢুকেছে ।আমাদের সারাশব্দ পেয়ে পালিয়ে গেছে । তার আগের দিন বাড়ীতে মারাই করা এক বস্তা ( প্রায় দের মন ) সরিসা রাখা হয়েছিল ঘরের দরজার কাছে, পরের দিন বাজারে বিক্রয় করা হবে বলে।দেখা গেল সরিষার বস্তাটি নেই, আর নেই কয়েক দিন ধরে গাছের খেজুরের রস উঠানের বড় উনুনে জাল দিয়ে দাদীর হাতে তৈরী করা এক মটকি (মাটির ঘরা) ভর্তী প্রায় মন খানেক খেজুরের রসের দানাদার ঝোলা গুর।ঘরে তদন্ত করে দেখা গেল এই দুইটি বিষয় ছাড়া চোরে আর কিছু নিতে পারে নাই , সকলে আমাকে ধন্য ধন্য বলল ,আমার জন্যই নাকি চোরে সুবিধা করতে পারে নাই । ঘরের মুল্যবান অন্য সব জিনিষ রক্ষা পেযেছে। আমি বললাম আমার প্রথম ঢাকেই যদি হাতেম ভাই উঠে যেতো তাহলে চোরে কিছুই নিতে পারতনা। যত দুষ নন্দ ঘোষ ,হাতেম ভাইএর ঘাড়েই চাপল ।সকলেই বলাবলি করল রোজা রমজানের দিন, ঈদ সামনে, সিদেল চোরের উতপাত চারদিকে, এসময় মানুষ কি এমন মরার মত ঘুমায নাকি? আমার বাল্যকালের অনেক দুষ্টামী কর্মের সঙ্গি হাতেম ভাইএর করুন অবস্থা দেখে আমার কান্নাই পাচ্ছিল ।সিদেল চোরদের নিয়ে আরো মঝাদার অভিজ্ঞতার কাহিনী আছে সেসকল অন্যদিন সুযোগ পেলে বলব ।

মুক্তি যুদ্ধের সময় আশ্রয়ের সন্ধানে যাওয়ার পথে মাটির ঘরে খর বিছিয়ে থাকার অভিজ্ঞতাও কিছুটা আছে ।আপনার অভিজ্ঞতার কথা শুনে ভাল লাগল ।

শুভেচ্ছা রইল

২২| ২৩ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৩৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: তখনকার দিনের সিঁধকাটা চোরের গায়ে সর্ষের তেল মেখে গেরস্তের ঘর চুরি করা আর এখনকার দিনের পুকুর কাটা হোয়াইট কলার চোরদের তৈল মর্দন করে সরকারী কোষাগার চুরি করার দার্শনিক মন্তব্যটা বেশ উপভোগ্য হয়েছে। :)

১০ নং ছবিতে ক্ববরের ছবিটি খুব সুন্দর! কিন্তু দেখতে সুন্দর হলে কি হবে, আপনি যেমনটি বলেছেন, ওখানে যিনি থাকবেন, তার দুনিয়ার আমলের উপরই নির্ভর করবে ভেতরটা কতটা সুন্দর থাকবে! আবারো কি সুন্দর একটি দার্শনিক পর্যবেক্ষণ! ক্ববরের পাশে বসা লোকজনের মুখ দেখে তো মনে হচ্ছে ওরা বাংলাদেশের লোক হতে পারে। কোন অঞ্চলের ছবি এটা?

কৃষি জমি নষ্ট করে প্রতিবছর আড়াই হাজার কোটি ইট প্রস্তুত করা এবং সেটা করতে গিয়ে দুই কোটি টন কার্বন নির্গত করে পরিবেশকে অসহনীয়ভাবে দূষণ করার কথাটি ভেবে পিলে চমকে উঠলো! আর এ কারণে প্রতিবছর ১২৫০ জন শিশু শ্বাস কষ্টে মারা যাচ্ছে! কে রুখবে এ মারণঘাতি প্রক্রিয়া?

অস্ট্রিয়ার লিনজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং ঢাকার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীগণ কর্তৃক নির্মিত উন্নতমানের দোতলা মাটির বাসা দেখে মনে আশা জাগলো। আপনার সাথে আমিও এই মডেলটির গোটা বাংলাদেশব্যাপী প্রসার কামনা করি, বিশেষ করে ভবিষ্যতের আশ্রায়ন প্রকল্পগুলোতে।

চীনা মডেলগুলোও পরীক্ষা সমীক্ষা করা যেতে পারে। আর আমাদেরই দেশের নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে নির্মিত ১০৮ কক্ষের মাটির ঘরটি দেখে সত্যিই বিস্মিত হ'লাম!

২৪ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:

হোয়াইট কালার চোরদের চৌর্যকর্ম থামানোবেশ কঠীন ,
একমাত্র সামাজিক সচেতনতা ওসামাজিক ভাবে
তাদেরকে প্রতিরোধ করা যায় ।

ছবিতে থাকা কবরটি ঢাকা জেলার উত্তরাঞ্চলের। মানুষের চীরস্থায়ী আবাস কবরের মাটির ঘরটি সুন্দর করার জন্য আমাদের বেশী প্রয়াস থাকা উচিত অথচ আমরা ক্ষনস্থায়ী নশ্বর জগতের জন্য একটি সুন্দর ঘর বানানোর জন্য কতই না প্রয়াস নেই । ইহজগতে খুব সুন্দর গৃহ তৈরী করে অনেকেই তাতে প্রবেশ করার সময়টুকুও পায়না তার আগেই আজরাইল এসে তার জান নিয়ে নেয়। কথিত আছে মরুভূমির ধুলিগর্ভে হারিয়ে যাওয়া এক অভূতপূর্ব নগরী ইরামে শাদ্দাদ বিন আদ নামের এক ব্যক্তি ছিল ঐ শহরের রাজা, তার নির্দেশেই নির্মিত হয় 'ভূস্বর্গ'। কিন্তু ভুস্বর্গ নির্মাণকারী সাদ্দাত সে ভুস্বর্গে প্রবেশ করতে পারেনি।

অবাক করা ব্যাপার, কেবল উপকথার পাতাতেই নয়, ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কুরআনেও উল্লেখ আছে এ নগরীর, "তুমি কি ভেবে দেখনি তোমার প্রতিপালক আ'দ জাতির ইরামে কী করেছিলেন? তাদের ছিল সুউচ্চ সব স্তম্ভ, যেমনটি পৃথিবী কোনোদিন দেখেনি আগে।" (কুরআন, সুরা ফাজর, ৮৯:৬-৯)

কুরআনের 'ভেবে দেখনি' কথা থেকে ধরে নেয়াই যায় যে, আরবরা ভালো করেই জানত ইরাম নগরীর কথা, সেটা উপকথাতেই হোক, আর ধ্বংসস্তূপ দেখেই হোক। অনেক গবেষক খুঁজে বের করতে চেষ্টা করেছেন , এ নগরী নিয়ে উপকথার ফাঁকে ফাঁকে হোক আর অন্যত্রই হোক- কী কী বলা রয়েছে। আর কী কাহিনীই বা জড়িত আছে এর সাথে?
শিল্পীর কল্পনায় ইরাম নগরী; Source: Ancient Origins

কথিত আছে, হযরত নুহ (আঃ) এর পুত্র শামের ছেলেই আ'দ। তার পুত্র শাদ্দাদ আ'দ জাতির প্রতাপশালী রাজা ছিল, যার স্বপ্ন ছিল দুনিয়াতে স্বর্গ নির্মাণ করা। ইসলামি বর্ণনা অনুযায়ী, এ জাতির প্রতি পাঠানো হয় আরবীয় নবী হুদ (আ)-কে । কুরআনে তার নামে আলাদা সুরাই রয়েছে। কুরআন বলছে, আ'দ জাতির ইরাম নগরীর অবস্থান ছিল 'আল-আহকাফ' এ। যার মানে দাঁড়ায় 'ধুলিময় সমভূমি' কিংবা 'প্রচুর বাতাস বয়ে যাওয়া পাহাড়ের কোলের মরুঅঞ্চল'। বিশেষজ্ঞদের মতে, জায়াগাটি আরব উপদ্বীপের দক্ষিণে, ইয়েমেনের পূর্বাঞ্চল বা ওমানের পশ্চিমাঞ্চলে। আরবিতে এ শহরকে ডাকা হয় 'ইরাম যাত আল ইমাদ' নামে, অর্থ 'স্তম্ভের নগরী ইরাম' । আসলেই আশির দশকে সেই অঞ্চলে একটি ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়, ।

আশির দশকে ইউনেস্কো ইয়েমেনের পাহারী অঞ্চলে অবস্থিত সিবামে অবস্থিত ধংসস্তুপের উপর নির্মিত প্রি ইসলামিক যুগের সান ড্রাইড ইটের উপর নির্মিত টাওয়ার সদৃশ্য বহতল বাড়ি সমৃদ্ধ একটি এলাকাকে ওয়ারল্ড হেরিটেজে তালিকাভুক্ত করে। এখানে https://whc.unesco.org/en/list/192/gallery/ করে এর ছবি গেলারি দেখা যেতে পারে ।

ইবনে কাসিরের আল বিদায়া গ্রন্থ থেকে জানা যায় আ'দ জাতি প্রতাপশালী ও ধনী ছিল, নির্মাণ করেছিল সুউচ্চ সব অট্টালিকা। তারা একসময় একেশ্বেরবাদ বর্জন করে এবং মূর্তিপূজা শুরু করে, যেমন সামদ, সামুদ এবং হারা ছিল তাদের তিন উপাস্য। হুদ (আঃ) অনেক দিন তাদের মাঝে একেশ্বরবাদ প্রচার করেন, আল্লাহ্‌র পথে ডাকেন। কিন্তু তারা না ফেরায় এক ঝড় তাদের ধ্বংস করে দেয়, আর সকাল বেলা জনশূন্য ইরাম পড়ে থাকে। (কুরআন, ৪৬:২৪-২৫)।

উপকথা অনুযায়ী, হুদ (আঃ) শাদ্দাদকে পরকালের বেহেশতের প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু শাদ্দাদ বলল সে নিজে বেহেশত বানাবে দুনিয়াতেই, লাগবে না তার পরকালের বেহেশত। এরপর ইয়েমেনের আদানের কাছে এক বিশাল এলাকা জুড়ে শাদ্দাদের 'বেহেশত' নির্মাণ শুরু হয়। উপকথা অনুযায়ী যার নির্মাণ কাজ শেষ হয় ৫০০ বছরে। হুদ (আঃ) চেষ্টা করেও অবশ্য পৌত্তলিক শাদিদকে আল্লাহর পথে আনতে পারেননি। রাজা হবার পর তার কাছেও হুদ (আঃ) গিয়ে বেহেশতের কথা বললেন। তখন শাদ্দাদ বললো, "তোমার প্রতিপালকের বেহেশতের কোনো দরকার আমার নেই। এরকম একটি বেহেশত আমি নিজেই বানিয়ে নেব।"
ওদিকে বেহেশত বানাবার কাজ এগিয়ে চলে পুরোদমে। চল্লিশ গজ নিচ থেকে মর্মর পাথর দিয়ে বেহেশতের প্রাসাদের ভিত্তি স্থাপন করা হয়। আর তার উপর সোনা-রুপানির্মিত ইট দিয়ে প্রাচীর বানানো হলো। বর্ণিত আছে, কৃত্রিম গাছও শাদ্দাদ বানায়, যার শাখা প্রশাখাগুলো ছিল ইয়াকুত পাথরের, আর পাতাগুলো নির্মিত হয়েছিল 'ছঙ্গে-জবরজদ' দিয়ে। আর ফল হিসেবে ঝুলছিল মণি মুক্তা আর হীরা জহরত। আর মেঝে ছিল চুন্নি পান্নার মতো মূল্যবান পাথরের, সাথে মেশকের ঘ্রাণ। স্থানে স্থানে ঝর্নাধারা ছিল দুধ, মদ আর মধুর। আর চেয়ার টেবিল ছিল লক্ষাধিক, সবই সোনার তৈরি। মোটকথা, এলাহি কাণ্ড, মনোহরী এক দৃশ্য।কী ছিল না শাদ্দাদের বেহেশতে?

উকথা হতে জানা যায় বেহেশতের ফটক দিয়ে ঢুকবার জন্য হাজার হাজার সেনা নিয়ে অগ্রসর হলো শাদ্দাদ। তিন হাজার গজ দূরে এসে তার বাহিনী অবস্থান নিল। এমন সময় অদ্ভুত এক হরিণের দিকে তার নজর পড়ল। বাহিনীকে থামতে বলে নিজেই রওনা দিল হরিণটি ধরবার জন্য।কিন্তু হরিণের দেখা আর মেলেনি। এক বিকট অশ্বারোহী তার পথ রোধ করে দাঁড়ালো, যেই না শাদ্দাদ তার বাহিনীর কাছ থেকে সরে এলো। অশ্বারোহী বললেন, "এই সুরম্য প্রাসাদ কি তোমাকে নিরাপদ রাখবে?"শাদ্দাদ জিজ্ঞেস করল, "তুমি কে?""আমি মালাকুল মাউত। মৃত্যুর ফেরেশতা।""
এখানে কী চাও?""এখনো বোঝোনি? আমি তোমার জান কবজ করতে এসেছি।"শাদ্দাদ নিষ্পলক চোখে রাকিয়ে রইল, তার স্বপ্ন পূরণ না করেই চলে যেতে হবে? "আমাকে অন্তত একবার আমার পরম সাধের বেহেশত দেখতে দাও?"আযরাঈল (আঃ) বললেন, "আল্লাহর অনুমতি ছাড়া এক মুহূর্ত বাড়তি সময়ও তোমাকে দিতে পারি না। আমার উপর নির্দেশ এখুনি তোমার জান কবজ করা।""তাহলে ঘোড়া থেকে নামি আমি।""না, ঘোড়াতে থাকা অবস্থাতেই তোমার জান কবজ করতে হবে আমার।"

শাদ্দাদ এক পা মাটিতে পা রাখতে গেলো। কিন্তু সেটি মাটি স্পর্শ করবার আগেই আযরাঈল (আঃ) দেহপিঞ্জর থেকে আত্মা বের করে নিলেন। আর জিব্রাঈল (আঃ) এর প্রকাণ্ড এক শব্দ করলেন যাতে দুনিয়ার 'বেহেশত' উড়ে গিয়ে পরে রইল ধ্বংসস্তূপ।আলিফ লায়লা থেকে শুরু করে থ্রিলারের পাতা, কত জায়গাতেই ইরাম নগরীর সরব উপস্থিতি, নেই কেবল ইতিহাসের পাতায়।

মাটির নীচে মানুষের জন্য চিরস্থায়ী কবরপ্রসঙ্গে কত কথাই না বলা হল প্রসঙ্গক্রমে ।

ভাল থাকার শুভ কামনা রইল

২৩| ২৩ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৫৪

মাহমুদ রহমান (মাহমুদ) বলেছেন: আরেকটি অসাধারণ পোষ্ট।জীবনে সম্ভব হলে মাটির ঘর বানানোর ইচ্ছে আছে। মাটির ঘরের মত আরাম আর কিছুতে নাই।
পোষ্টটি স্টিকি করলে আমার মনে হয় অনেকেরই নজরে আসবে এবং এ বিষয়ে মানুষের ভাবনা চিন্তাটাও
পরিস্কার হবে অনেকের কাছে।
ভালো থাকবেন আলী ভাই।

২৪ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২২

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
সত্যিই মাটির ঘরের মত আরাম আর কিছু নেই ।
বাল্য এবং কিশুর কালটিতে বাস করেছি মাটির ঘরেই ।
আপনার দাবীর প্রতি ধন্যবাদ ,পোষ্ট স্টিকি করার
দায়িত্ব সামু কতৃপক্ষের । তাঁদের বিজ্ঞ বিবেচনায়
যে কোন পোষ্টকে স্টিকি করতে পারেন ।

শুভেচ্ছা রইল

২৪| ২৩ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:১৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: মাটির ঘরের ছাদগুলোতে সৌর বিদ্যুতের অবকাঠামো নির্মাণের সম্ভাবনা কতটুকু কস্ট-ইফেক্টিভ হবে??
কব-হাউজের সবগুলো ছবি খুব সুন্দর এবং আকর্ষণীয়!

একজন জার্মান মহিলা কর্তৃক আমাদের দেশের যশোর অঞ্চলের কোথায় যেন মাটির ঘরের পরিবেশ বান্ধব, আধুনিক রেস্ট হাউস নির্মাণের অগ্রগতি আমি বেশ মনযোগের সাথে ২০১৩-১৪ সালের দিকে লক্ষ্য করেছিলাম, ফেইসবুকের মাধ্যমে। অনেকদিন ধরে আর সেটার কোন খবর রাখিনি। হয়তো ফেইসবুকে তাদের ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে কোন কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছি, সে কারণে হতে পারে।

পিটানু মাটির এবং চাপানু মাটির ব্লকগুলোও খুব আগ্রহোদ্দীপক এবং সুন্দর। আর্থ-শেল্টার্ড হাউসগুলোও। আশাকরি, 'কাজী ক্যাসল' এর সত্ত্বাধিকারীর মত আরও অন্যান্য ধনাঢ্য সৌখিন লোকজন এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করে দৃষ্টিনন্দন ঘরবাড়ী নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।

পাখি নীড় বাঁধে স্রষ্টার শিখিয়ে দেওয়া আপন আপন কৌশলে। এজন্য বাবুই আর বুলবুলি পাখির নীড় দেখতে একরকম নয়। মানুষও ঘর বাঁধে আপন আপন রুচি ও নান্দনিকতাবোধের উপর ভিত্তি করে, অবশ্যই সেখানেও স্রষ্টা প্রদত্ত জ্ঞানের উপর নির্ভর করতে হয়। তাই মানুষের তৈরী ঘরবাড়ীর আকৃতি প্রকৃতিও ভিন্নরূপ হয়ে থাকে। তবে যে কোন ঘর বা আশ্রয়ের পূর্বশর্ত হচ্ছে তা টেকসই এবং প্রাকৃ্তিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে নিরাপদ হওয়া, আবহাওয়ার তারতম্যের প্রেক্ষিতে অনুকূল হওয়া, আরামদায়ক হওয়া। দু'দন্ড বিশ্রামের জন্য উপযুক্ত হওয়া। মানুষের জীবনটা তো এক হিসেবে দু'দন্ডই বটে!

২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:৪৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


আপনার বিজ্ঞ মন্তব্যগুলির সুত্র ধর আমাকে আরো অনেক তথ্য জানার স্পৃহা বাড়িয়ে দেয় ।
মাটির ঘরগুলিতে পৃথক ভাবে সৌর বিদ্যুত স্থাপন করার বিশেষ প্রয়োজন নেই সেটা কারিগরী দিক দিয়ে ফিজিবল ও আর্থিক দিকদিয়ে ভায়াবল হবেনা ।তার থেকে ভাল হবে যেসমস্ত গ্রামে জাতীয় গ্রিড হতে এখনো বিদ্যুত নেয়া সম্ভব নয় সেখানে মিনিগ্রিড তৈরী করে বিদ্যুতের চাহিদ্ মিটানো । বিষযটি এই লিংকে গিয়ে দেখা যেতে পারে।

সেখানে দেখা যাবে একটি গ্রামে ২২ টি সৌর প্যনেল নিয়ে একটি মিনিগ্রিড তৈরী করে সেখানে উৎপন্ন বিদ্যুতকে ব্যটারীতে সঞ্চিত করা হয় ।ব্যটারীসঞ্চিত বিদ্যুত প্রামের বাজার, কৃষিসেচ ও প্রায় ৫০০ বাড়ী ঘরের বিদ্যুত চাহিদা পুরণ করে। বিশ্বব্যাংক এ ধরনের মিনিগ্রিড তৈরীতে সহায়তা করছে । ।মাটির গৃহে বসবাসকারীগনও এই মিনিগ্রিডের বিদ্যুত ব্যবহার করছেন বলে দেখা যায় ।

পিটানোমাটির এবং চাপানোমাটির ঘর সহ পাখি নীড় বাঁধে স্রষ্টার শিখিয়ে দেওয়া আপন আপন কৌশল প্রসঙ্গে আপনার বলা কথাগুলি ভাল লেগেছে।

শুভেচ্ছা রইল

২৫| ২৩ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:১৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: এ চমৎকার পোস্টটিকে স্টিকি করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আমিও বিনীত অনুরোধ রাখছি।

২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:০১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


যে অনুরোধটি করেছেন কামনা করি তাতে
ফুল চন্দন পরুক আপনার কলমের মুখে ।

২৬| ২৩ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:২৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
পোস্টের কল্যানে মাটিরঘরসহ অন্যান্য ঘরও দেখা হলো।

এক কথায় অনবদ্য।

২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:০৪

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:

পোষ্টটি অনবদ্য অনুভুত হওয়ারজন্য ধন্যবাদ ।

অফুরান শুভেচ্ছা রইল

২৭| ২৩ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:৩১

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: একই টপিকের উপর বৈচিত্রময় ছবি দেখতে আসলেই ভালো লেগেছে। মাটির ঘর দেখেছি বিস্তর, রাত কাটানোর অভিজ্ঞতাও আছে। তৈরি করার প্রক্রিয়া জানলেও আগা-গোড়া পুরটা তৈরি হতে দেখিনি। আলপনা গ্রামের খবর জানি, দেখতে যাওয়ার ইচ্ছেও আছে সযোগ হলে।

২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:০৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



আপনার ব্লগ বাড়িতেও খুব সুন্দর সুন্দর বৈচিত্র্যময় অনেক ছবি দেখি। দেশী বিদেশি ফুলের ফরিচিতি ও বৈজ্ঞানিক নাম সহ দেয়া আপনার পোষ্টগুলি আমার খুবই ভাল লাগে । এখন প্রকৃতিতে থাকা পরিচিত দৃশ্যগুলিও আপনার পোষ্টে সুন্দরভাবে ফুটে উঠে মাটির ঘরে থাকার অভিজ্ঞতা আছে জেনে ভালো লাগলো । আলপনা গ্রামের খবর জানেনঁ ও দেখতে যাওয়ার কথা শুনে খুশি হলাম ।সেখানকার সুন্দর সুন্দর ছবিগুলো নিয়ে এসে পোস্ট দিলে দেখবো ইনশাল্লাহ।

ভালো থাকুন এই কামনা রইল

২৮| ২৩ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:০০

পুলক ঢালী বলেছেন: প্রথমেই স্রষ্টাকে ধন্যবাদ দেই তিনি আপনাকে কোভিড-১৯ এর আক্রমন থেকে রক্ষা করেছেন।
আপনার পোষ্ট মানেই গবেষনা পত্র। আপনার এই পোষ্ট পড়ে কিছুটা স্মৃতিকাতরতায় ভুগলাম।
উত্তরবঙ্গে আমার এক বন্ধুর গ্রামের বাড়ীতে অনেকবার যাওয়া এবং থাকার সুযোগ হয়েছিল। ঐ গ্রামের প্রতিটি বাড়ীই মাটি দিয়ে তৈরী করা ছিল। আপনার বর্ননা কৃত পদ্ধতি এবং উপকরন ওখানে দেখেছিলাম।
ঐ বাড়ী ছিল প্রায় ৭০ বৎসর পুরনো { তালগাছের বহিরাংশ দিয়ে তৈরী করা ছাদ অর্থাৎ সিলিং এর উপর কড়িকাঠ (তালগাছের দন্ড) ঘন করে বসিয়ে তার উপর মাটি দেওয়া এবং ওয়ালের বাহিরে বর্ধিতাংশের উপর ফ্রেম করে টিনের চালের ছাউনি দেওয়া।} অথচ দেখে বাড়ীর বয়স আন্দাজ করা সম্ভব ছিলনা একবার লেপলেই নুতন হয়ে যেতো। মাঝে মনে হয় দুবার টিন বদল করতে হয়েছিল আর কোন কঠিন বা খরুচে রক্ষনাবেক্ষনের প্রয়োজন ছিল না।
শীতের সময় উত্তরবঙ্গে তীব্র শীত পড়তো কিন্তু দরজা জানালা বন্ধ করলে শীতের তীব্রতা বোঝা যেতো না বা অনুভূত হত না। গরমের সময় ঘরে ঢুকলে একটা গা জুড়ানো শীতল আবহ অনুভূত হতো।
সাওতালদেরকে মাটির ঘর বানাতে দেখেছি। এক পরত বা ষ্টেপ মাটি দেওয়ার পর বিরতী দিত এবং পরদিন বড় বড় ছুড়ি দিয়ে মাটিতে ছেও (গভীর করে স্ট্যাবিং) দিত পরে যখন মাটি শুকাতো স্কুইজ করার কারনে স্টাবিৎ এর জায়গায় বেশ বড় বড় ফাটল সৃস্টি হতো এই পরিকল্পিত ফাটল তৈরীর কারনে ব্লক ব্লক আকৃতি নিয়ে মাটি শুকিয়ে ইটের মত শক্ত হয়ে যেতো পরে ঐ ফাটলে মাটি ভরাট করে উপরের দিকে পরের স্টেপ তৈরী করে পুরো দেওয়াল তৈরী করতো। উত্তর বঙ্গের মানুষ ঝড় জল বন্যা তেমন একটা দেখতোনা, কিন্তু বিগত কিছু বৎসর যাবৎ হঠাৎ করে অকাল বন্যায় উত্তর বঙ্গ তলিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে।
এটা মনে হয় প্রাকৃতিক কারনে নয় মানুষের সৃস্ট, এর ফলে ঐতিহ্যবাহী প্রায় এ্যান্টিক ক্যাটাগরীর অসংখ্য মাটির ঘর
ধ্বসে পড়েছে।
এখন মাটির বদলে পরিবেশ নষ্ট করে তৈরী করা ইটের গাথুনী দিয়ে তৈরী করা বাড়ীতে ছেয়ে যাচ্ছে।
মাটির ঘরে থাকা মানে পরিবেশ বান্ধব মাটির কাছাকাছি থাকা। এই সংস্কৃতি এখন বিলীন হওয়ার পথে।

সুন্দর একটি পোষ্ট দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাল থাকুন সুস্থ্য থাকুন।

২৫ শে জুন, ২০২০ সকাল ৮:২০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের সকলের দোয়ায় কোভিড-১৯ এর আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি, এজন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

উত্তরবঙ্গে আপনার বন্ধুর গ্রামের বাড়িতে যাওয়া এবং মাটির ঘরে থাকার সুযোগ হয়েছিল শুনে ভালো লাগছে। ঠিকই বলেছেন ওই এলাকায় অনেক বাড়ির বাইরের চেহারা দেখে তার বয়স আন্দাজ করা বেশ কঠিন ছিল। কারণ ঘরের বাহিরের ক্ষয় হয়ে যাওয়া অংশ একবার লেপলেই নতুন হয়ে যেত, আর খুববেশী ক্ষয় হয়েযাওয়া মরচে পড়া চালের টিন বছর দশেক পরে পরে বদলে দিলে নতুনের মতোই হয়ে যেতো । উত্তরবঙ্গের তীব্র শীতের সময় মাটির ঘর গুলো আরামদায়ক তাতে কোন সন্দেহ নেই।

সাওতাল এলাকায় মাটির ঘর বানাতে আমিও দেখেছি। আজ থেকে প্রায় চল্লিশ বছর আগে উত্তর বঙ্গের গ্রাম গুলিতে একটি ভিলেজ স্টাডি প্রকল্পের জন্য কাজের সময় সাঁওতাল এলাকায় আমি অনেকবার গিয়েছি, তাদের সাথে মিসেছি, কথা বলেছি । চেষ্টা করেছিলাম কিছু সাওতাল ভাষা শিখতে , পারিনি কারণ তাদের ভাষার একটা নিজস্ব উচ্চারন আছে, সেটা রপ্ত করতে পারিনি । সে সময় রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা ডাকবাংলোতে কিছুদিন থাকার সময় ডাকবাংলোর সামনে দিয়ে সাঁওতাল পরিবারের মেয়েরা মাথায় ঝাকি নিয়ে সেখানকার তিস্তা নদীর শুকনো পারে গিয়ে শামুক-ঝিনুক কাঁকড়া কুইচ্চা , খরগোস ,বেজী শিকার করত । বিকালে নদীর পারে ঘুরতে গিয়ে দেখেছি কিভাবে তারা শিকার করে । তাদের সাথে কথা বলে দেখেছি ঘরে বাইরে সারাদিন তারা মাটির সাথে থেকেই ভাল আছে।

এখন শুনতেছি বদরগঞ্জের নিকট শ্যামপুর সুগার মিলের আখচাষের জমি নিয়ে নাকি সাওতালদের সাথে বিরোধ চলছে ,এনিয়ে সেখানে বিপুল উত্তেজনা বিরাজমান , তারা পুলিসি হয়রানির স্বীকার হয়েছে বলেও সংবাদ মাধ্যমে দেখা গেছে । এদেশের কৃষক প্রজা মুক্তির জন্য বৃটিশ আমলে অনুষ্ঠিত তেভাগা আন্দোলনে যাদের ভুমিকা ছিল আজো তাদের নীজের পৈত্রিক জমি ফিরে পাওয়ার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে । এর থেকে বড় অফছোছের বিষয় আর কি হতে পারে ।

যাহোক, ঘরের দেয়াল তোলার সময় এক পরত বা ষ্টেপ মাটি দেওয়ার পর বিরতী দিত এবং পরদিন বড় বড় ছুড়ি দিয়ে মাটিতে ছেও (গভীর করে স্ট্যাবিং) দিত পরে যখন মাটি শুকাতো স্কুইজ করার কারনে স্টাবিৎ এর জায়গায় বেশ বড় বড় ফাটল সৃস্টি হতো এই পরিকল্পিত ফাটল তৈরীর কারনে ব্লক ব্লক আকৃতি নিয়ে মাটি শুকিয়ে ইটের মত শক্ত হয়ে যেতো পরে ঐ ফাটলে মাটি ভরাট করে উপরের দিকে পরের স্টেপ তৈরী করে পুরো দেওয়াল তৈরী করতো। পনারবলা এ বিবরণ অনুযায়ীআমিউ দেখেছি আআমাদের এলাকায় কারিগরের মাটির দেয়াল তোলার সময় এমনটি করত । আপনার বলা এই গুরুত্বপুর্ণ বিবরনটুকু আমার পোষ্টের মুল লেখার মধ্যে যুক্ত করে দিতে চাই, যদি আপনার আপত্তি না থাকে ।

মাটির ঘরে পরিবেশ বান্ধব মাটির কাছাকাছি থাকার সংস্কৃতি এখন বিলীন হওয়ার পথে থাকলেও একে ফিরিয়ে আনা যায় মানসিকতার পরিবর্তন ও মাটির ঘর নির্মানের জন্য উদ্ভাবিত নতুন আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে ।

পোষ্টটি পাঠে সুন্দর গঠনমুলক মন্তব্য রেখে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ ।

শুভেচ্ছা রইল

২৯| ২৩ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:২২

শায়মা বলেছেন: মাটির ঘর
পৃথিবীতে এত সুন্দর কিছু আর নেই এমনই মনে হত আমার ছেলেবেলায় ছবি আঁকতে গিয়ে। কোনো বাড়ি বা ঘর আঁকতে গিয়ে আমি কখনও ইট পাথরের বিল্ডিং এ সৌন্দর্য্য পাইনি যা পেয়েছিলাম একখানি ছোট্ট মাটির ঘর পাশে কলা গাছ বা ঝোঁপঝাড়ের ছবিতে। তাই রাস্তায় ছুটে চলার সমায় গ্রামের মাটির বাড়িগুলি এবং সেখানে ঘটে যাওয়া দৃশ্যাবলীতে আমি কল্পনায় হারাতাম।

মাটির বাড়ি তৈরীতে এত কিছু আয়োজন আমার জানা ছিলোনা ভাইয়া। আমার মত অনেকেরই মনে হয় জানা নেই।তবে সিঁধেক চোর যে মাটির ঘরের সিঁধ কাটে সে খবর আমি জানি।

জীবনের শেষ আশ্রয়স্থল মাটির ঘর বা হাসন রাজার ভাষায় মাটির পিঞ্জিরা বটে সেখানেই সবাই ঘুমাবো আমরা পরম শান্তিতে একদিন.......

এই পোস্ট স্টিকি হলে আসলেও অনেকেরই যেমন অনেক কিছুই জানা হত তেমনই অনেকেই হয়ত ইট কাঁঠা পাথরের জঞ্জাল সরিয়ে আবারও উৎসাহিত হত মাটির ঘর বা বাড়ি নিয়ে নতুন করে ভাবতে......

২৫ শে জুন, ২০২০ সকাল ৯:৪৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



ছোট্ট কয়টি মাটির খেলা ঘর, পাশে ঝোঁপঝাড় আর কলা পাতা ছায়া রোদ্দুর ,উঠানে বাচ্চা ছেলে মেয়েদের পিকনিক। এমনটি হলে কেমন লাগত তুমিই বল ।

মাটির বাড়ি তৈরীর আয়োজন একেবারে কমনা । এর চারিদিকে ছন্দময় শিল্প । ঘরের দেয়ালে আলপনা হতে ঘরের চারকোনা ছনের চাল পর্যন্ত । কবি নজরুলও চুয়ডাঙ্গার কার্পাশ ডাঙ্গায় কিছুদিন ছিলেন এমন একটি মাটির ঘরে ।

কার্পাস’র ভৈরব নদের তীরে
কবি বসে লিখেতেন কবিতা
কলসী ডুবে যায় ও লিচু চোর
এ ছাড়াও আছে কিছু স্মৃতি মধুর।

দোয়া কর আপু ,জীবনের শেষ আশ্রয়স্থল মাটির ঘরে সকলেই যেন ঘুমায় পরম শান্তিতে ।
পোষ্ট স্টিকি হলে ক্যচাল প্যাচাল বেশী হয় তাই স্টিকি না হওয়াই ভাল মনে হয় । এখানেই যে পাঠক ভিউ হয়েছে তা স্টিকির থেকে কম কিসে ।

আপু দেখ চেষ্টা করে ছোট মাটির ঘরে তোমার টেরাকোটা হয় কিনা ।

শুভেচ্ছা রইল




৩০| ২৩ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:৩২

তারেক ফাহিম বলেছেন: পুরোটা পড়তে পারিনি, শ্রদ্ধেয়।

প্রিয়তে রাখলাম।

অনেক কিছু ফুটে এসেছে লিখায়।

২৫ শে জুন, ২০২০ সকাল ১০:০০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



প্রিয়তে রাখায় কৃতজ্ঞতা জানবেন ।
লেখাটি একটু বড় হয়ে গেছে ।
পড়তে একটু সময় লাগবে।
যদি পড়া হয় তাহলে মতামত
জনালে খুশী হব ।

মাটিরঘরকে পুণরুজ্জিবনেরজন্য
সরকারী বেসরকারী (এনজিউ )
পর্যায়ে বাস্তবায়ন যোগ্য একটি
পুর্ণাঙ্গ প্রকল্প প্রস্তাবনা প্রনয়নের
একান্ত ইচ্ছে আছে।এ কারণেই
লেখাটির কলেবর বড় করেছি,
যাতে অন্তত কিছু দিক তুলে
ধরতে পারি লেখাটিতে ।তাই
এর উপর সামুর বিজ্ঞ ব্লগারদের
মতামত আমার কাছেখু বই
গুরুত্বপুর্ণ ।

শুভেচ্ছা রইল

৩১| ২৩ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৩:০৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: প্রিয়তে রাখলাম
পড়বো সময় করে
অনেক দিন পর আপনাকে দেখলাম
কেমন আছেন স্বপরিবারে?

২৫ শে জুন, ২০২০ সকাল ১০:১০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



প্রীয়তে রাখায় কৃতজ্ঞতা জানবেন ।
শুধু প্রিয়তে রাখলে চলবেনা ।
আআপনার ছবির হাত খুবই সুন্দর ।
ফুল ফল গাছ পালার সাথে চলারপথে
আপনার ক্যামেরায় স্মার্ট ফোনে তোলা
সুন্দর সুন্দর মাটির ঘরের ছবিও দেখতে
চাই ।

এখন সপরিবারে ভাল আছি।
আপনার সোনা মনিরা এখন
কেমন আছে্ । করোনার দিনে
ঘরে বসে নিশ্চ্য়ই নতুন নতুন
ছবি আঁকছে । তাদেরকে
সুন্দর সুন্দর মাটির ঘরের
ছবি আঁকতে বলবেন ।
পোষ্ট দিলে দেখব।

শুভেচ্ছা রইল

৩২| ২৩ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৪:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্টে আবার এলাম শুধু মাত্র মন্তব্য গুলো পড়তে।

২৫ শে জুন, ২০২০ সকাল ১০:১৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


এখানে মন্তব্য পড়লে পোষ্ট আকারের
সমান বিজ্ঞ গুণী ব্লগারদের ৩০/৪০টি
মন্তব্য পড়া হয়ে যায় ।প্রতিটি মন্তব্য্‌ই
মুল্যবান ও গঠনমুলক । সাথে থাকুন
আমার ভাল লাগবে ।
শূভেচ্ছা রইল

৩৩| ২৩ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:২২

আহমেদ জী এস বলেছেন: ডঃ এম এ আলী,




প্রথম দু'টো প্যারা পড়েই লাইক দিয়ে রেখেছি। এরকমটা আমার ব্লগ জীবনে প্রথম, সবটা না পড়েই লাইক দেয়া, করোনাপোলব্ধির উল্লেখ থাকায়।
রাত অনেক, তাই ঘুমঘুম চোখে আপনার এই বিশাল পোস্টটিতে মনযোগ দিতে পারবোনা বলে কালকের জন্যে তুলে রাখলুম।

২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:০৪

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:





আপনার ব্লগ জীবনের প্রথম একটি কাজের সুফল ভোগী হতে পেরে নীজকে সৌভাগ্যমান ও গর্বিত অনুভব করছি।।
ইতোমধ্যে এই পোষ্টের বিষয়ে আপনার দেয়া সুন্দর ও বিজ্ঞ মন্ত্যব্যের ঘরে গিয়ে আমার যা কিছু কথা আছে বলব।

শুভেচ্ছা রইল

৩৪| ২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:৪১

সোহানী বলেছেন: অশেষ আগ্রহ নিয়ে পড়তে শুরু করলাম এইবার বুঝি সত্যিই পরশ পাথরটা জুটেই যাবে..... জাস্ট ফান। আমি জানি আপনি কেমন সিরিয়াস মানুষ।

আপনার করোনা অভিজ্ঞতা আমাকে থমকে দিয়েছে। কষ্টকর অভিজ্ঞতার কথা আগেও শুনেছি কিন্তু এরকম যে কষ্ট তা বুঝিনি। আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে রক্ষা করুক। আপনি আমাদের মাঝে ফিরে এসে আপনার সে অনুভুতি শেয়ার করছেন তা জন্য আল্লাহর কাছে শোকর। আপনি আরো অনেক অনেক দিন এভাবে আমাদের মাঝে থাকেন।

প্রসঙ্গ মাটির ঘর, জীবনে একবারেই গাজিপুরের এক গ্রামে বান্ধবীর বাসায় বেড়াতে যেয়ে মাটির ঘরে থাকার সুযোগ পেয়েছিলাম এক রাত। এছাড়া আর কোন অভিজ্ঞতা নেই এ জীবনে। আপনার রিখা আমার আগ্রহ বাড়িয়ে দিল।

তবে ইটের ভাটা পোড়া নিয়ে আমার অনেক কিছু বলার আছে। সরকার চাইলেই এমন সর্বোনাষের হাত থেকে পরিবেশ বাচাঁতে পারে। শুধু দরকার একটু কঠোর হওয়া।

চমৎকার লিখা আর মন্তব্যগুলো অনেক অনেক ভালোবাসা।

২৬ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:২৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা সত্যিই পরশ পাথর একটি পেয়েছিলাম ।সে কথা জানতে হলে ধৈর্য ধরে আরো দুটি পর্ব পেরিয়ে যেতে হবে । লেখা চলছে ধীর গতিতে , করোনার কারণে দুর্বলতাহেতু লেখা লেখিতে বেশ স্লো হয়ে গেছি ।

কায়মনোবাক্যে দোয়া করি আমার মত করোনা অভিজ্ঞতা যেন কারো না হয় । দোয়া করবেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যেন লিখে যেতে পারি ।

জীবনে একবারের জন্য হলেও বান্ধবির বাড়ীতে গাজীপুরে মাটির ঘরে থেকেছেন শুনে ভাল লাগল । আমার শিশুকাল , বাল্যকাল কৈশোর পুরাটাই কেটেছে মাটির ঘরে । দোয়া করবেন চীর নিদ্রাটাও যেন কাটাতে পারি মাটির ঘরে ইহজগতের নেক আমলগুলিকে সাথে নিয়ে ।

সময়ের আবর্তনে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে চিরায়ত গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। হারিয়ে যাচ্ছে মাটির ঘর। আগে প্রতিটি গ্রামে নজরে পড়তো সুদৃশ্য অসংখ্য মাটির ঘর। আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রাম বাংলার সেই সরল-সহজ জীবন ও কৃষ্টি এখন প্রায় বিলুপ্ত। শহুরে জীবনে অভ্যস্থ হয়েও গ্রাম বাংলার মাটির ঘরের বাড়ির কথা মনে পড়ায় বাচ্চাদেরসহ পরিবারের সকলকে গ্রামীণ পরিবেশের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়াসহ মাটির ঘরে থাকার অভিজ্ঞতার জন্য আসার দাওয়াত রইল ।

সবখানেই পাবেন মাটির স্পর্শ। আম কাঠাল বাগনের ছায়ায় ঘেরা ঘরগুলো সব মাটির তৈরি।হলফ করে বলতে পারি ঘরের ভেতরে ঢুকলেই প্রশান্তিতে ছেয়ে যাবে মন । বিভিন্ন ঘরগুলো সব মাটির তৈরি ঘরের ভিতরের দেয়ালে রয়েছে আকর্ষণীয় চিত্রকর্ম ।

গ্রামের যে খাবারগুলো খেতে পছন্দ করেন সেগুলোও পাবেন। লাল চালের ভাত, চিনিগুঁড়া চালের খুদের চচ্চড়ি, চাপা শুঁটকিসহ কয়েক পদের ভর্তা ( যদি শুটকী খাওয়ার অভ্যাস থাকে তবে তা হবে , নাহলে শুটকীর কোন গন্ধও পাবেন না), পাঁচ মিশালী সবজি, তিনপদী ডাল, মাছ, দেশি মুরগির মাংস, রাজহাঁস। থাকবে ফুলপিঠা, পাটি পিঠা, ভাপা পিঠা, নক্সীপিঠা, মেরা পিঠা, তালের পিঠা, পুলি পিঠা । থাকবে দইয়ের লাচ্ছি আর মৌসুমি ফলের জুসের সাথে দেশীয় ফল ।ডেজার্ট হিসাবে থাকবে মিষ্টি দই ,রসগুল্লা , চমচম, পাটালি গুরের সন্দেস আর লালমোহন । মাটির ছোট কলসিতে রাখা খাবার পানি। মাটির গ্লাসেই পানি খাওয়ার ব্যবস্থা। খাবারও পরিবেশন করা হবে মাটির পাত্রে ও প্লেটে । রান্নাও করা হবে মাটির চুলায় কাঠের লাকরির আগুনে ।এতসব মাটির ছোয়া গ্রামীণ অভিজ্ঞতা আর কোখায় পাবেন?।

যদিও কানাডায় A dream home made of mud এবং Ontario Rammed Earth House জাতীয় মাটির ঘর তৈরী শুরু হয়েছে অনেক আগেই ।তথাপি বাংলাদেশে আম কাঠাল বাগানের ছায়া ঘেরা সর্বত্রই মাটির ছোয়া এমনটি পাবেন না কোথায়। বাংলাদেশে গেলে শুধু একটু আওয়াজ দিবেন , পৃথীবীর যে প্রান্তেই থাকি নিমন্ত্রিত অতিথি আপ্যায়নের সুব্যস্থা করে দিব
ইনসাল্লাহ ।

দেশের ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘরকে পুণরুজ্জীবিত করার মাধ্যমে ইট ভাটার তান্ডব কমাবার জন্যইতো এই পোষ্টের মাধ্যমে আমার প্রচেষ্টা । আধুনিক প্রযুক্তির মাটির ঘর নির্মানের মাধ্যমে পরিবেশ বিধ্বংসী ইটভাটার অগ্রযাত্রাকে অনেকটা প্রতিরোধ করা যাবে বলে বিশ্বস করি ।

শুভেচ্ছা রইল

৩৫| ২৪ শে জুন, ২০২০ ভোর ৪:০৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:

ডঃ এম এ আলী ভাই,
প্রথমে আমার নিজের কথা দিয়ে শুরু করি - গ্রামের বাড়িতে আমাদের দুটো বাড়ি, দুই বাড়ির একই নাম সত্তেও এই দুই বাড়ির আরেকটি নাম আছে পুরান বাড়ি আর নুতন বাড়ি। সঙ্গত কারণে আমরা এখন নতুন বাড়িতে থাকি সমস্যা হচ্ছে যে কারণে বাড়ি করা আর এতো বাড়ি বাড়ি করে মাথা গরম করার কোনো প্রয়োজন ছিলো না কারণ বাড়িতে থাকার মানুষ নেই। সবাই দেশের নানা অঞ্চলে এবং বাদবাকি প্রবাসে। অযথা জায়গা জমি নষ্ট, অযথা অর্থ নষ্ট এবং বাড়ি দুটোই খালি বলা চলে।

চলো চলো ঢাকা চলো আন্দোলনে ঢাকায় চিকিৎসা শিক্ষা অথবা শুধু মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে বেড়ানো আর শপিংয়ের জন্য অসংখ্য পরিবার ভাড়া করা বাসায় ঢাকায় থাকেন। যা অযথা ও অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করি। এবার ফরেন কারেন্সির টান পরবে এরা হয়তো এবার ঢাকা ছাড়তে পারেন।

সমগ্র বাংলাদেশে ব্রিকফিল্ড (পোড়া মাটির ইট) গুলো চলছে বাড়ি করার চাহিদার উপর। বাড়ি করার চাহিদা না থাকলে ব্রিকফিল্ড আগামী কাল না হোক আগামী মাসে বন্ধ হতে বাধ্য। ইদানিং ব্লক (সিমেন্ট দিয়ে তৈরি ইট) ব্যবহার হচ্ছে তাতে পরিবেশের কতোটুকু ভালো হচ্ছে সঠিক জানিনা কারণ বাড়িতে দরজা জানালায় যে পরিমান গ্লাস ফিটিং হচ্ছে তাতে পরিবেশের তাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া বাড়ি করতে রড/ষ্টিল লাগছে যা রি-রোলিং মিলে পরিবেশের বারোটা বাজিয়ে পঁচা নষ্ট লোহা লক্কর, স্ক্র্যাপ, বিলেট, ইনগট গলানো হচ্ছে।

মাটির ঘর বাংলাদেশের নানান এলাকায় আছে তাও এগুলো বেশ পুরাতন। ঢাকার আসেপাশেই আছে গাজীপুর সাভার সহ নারায়নগঞ্জ, নরসিংদি, কেরানিগঞ্জ বেশ বাড়িঘর আছে এবং ঢাকার ভেতর বেরাদিয়া, মেরাদিয়া, পূবাচল, মিরপুর শিয়ালবাড়ি, মিরপুর আলবদি, আমিনবাজার এইসব এলাকাতেও আছে - সমস্যা হচ্ছে নতুন করে কেউ হয়তো মাটির ঘর আর করেন না। আর যারা একান্ত করেন তারা সৌখিন বাড়ির মালিক বাগানবাড়িতে একটি মাটির ঘরও করে রাখেন। মাটির ঘর তৈরিতে খরচ অনেক কম, তাছাড়া আরামদায়ক ও খুব সহজে মেরামতযোগ্য কিন্তু মানুষের সৌখিনতা এমন পর্যায়ে চলে গেছে মানুষ এখন ফ্লাট বাসায় থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

ঢাকায় আমাদের বাড়ির পূর্ব পাশের ভবনটি একটি রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানের এপার্টমেন্ট হাউজ, ভবনে সম্ভবত ১৮-২০ টি এপার্টমেন্ট আছে সেই ১৮-২০ টি এপার্টমেন্ট নিয়ে মালিক সমিতিও আছে, তাদের মধ্যে আছে সভাপতি, সহ-সভাপতি থেকে শুরু করে যতো ধরনের পদবি থাকে সব। বাসার ছাদে তারা বছরের নানা সময়ে জমকালো অনুষ্ঠান করেন, অনুষ্ঠানের নামে নারী - পুরুষের চিৎকার চেচামেচি গানবাজনা ডিজে শেষে হুটোপুটি করে খাবার দাবার - এটাই এখনকার সোসাইটি ও তাদের চাহিদা। - কে থাকবে মাটির ঘরে?

১। কর্মজীবনে ভয়ঙ্কর এক রহস্য ঘাটতে গিয়ে এক বোকামীতে আমি প্রবল অসুস্থ হয়ে পরেছিলাম, দুইদিন অচেতন থেকে তারপর শুরু হয় ঘোর লাগা দিনরাত। তিন দিনের দিন দেখা দেয় জলবসন্ত। পাঁচ দিনের দিন আমার আব্বা ও চাচা সিএমএইচ থেকে আমাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান, আমাদের এলাকায় কবিরাজ শান্তিনাথ বাবুর বাড়িতে নিয়ে যেতেন সপ্তাহে দুইদিন শান্তিনাথ বাবুর বাড়ি মাটির ঘর ছিলো, ভোর সকাল পাঁচটার দিকে নিয়ে যেতেন বেলা ৮/৯ টার দিকে তিনি বিদায় দিতেন, মাটির ঘরে মুক্তার পাটিতে শুয়ে থাকতাম। আমি দীর্ঘ ৩৫ দিনে পুরোপুরি সুস্থ হই। আপনাকে মজার একটি তথ্য দেই, কবিরাজ শান্তিনাথ বাবুর মাটির ঘরটি ছিলো - সূর্য দীঘল বাড়ি।

২। কর্মজীবনে পার্বত্য চট্টগ্রামের এক জেলার ফরেস্ট রেঞ্জে একবার সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত আমরা ৯ জনের একটা টিম শুধুমাত্র অপেক্ষার কাজ করেছি - সেই অপেক্ষাগার হিসেবে যেই দুইটি ঘর আমরা ব্যবহার করেছিলাম তা ছিলো - “মাটির ঘর” টকটকে লাল মাটির ঘর। অনেকটা টেরাকোটা পোড়া মাটির মতো লাল রঙের।

৩। সপরিবারে মুধুপুর ভাওয়াল গড়ে একাবর পিকনিকে গিয়ে মাটির ঘরে বেতেন খাটে দেড় ঘন্টা ঘুমিয়েছিলাম - আমার জীবনের আরামদায়ক ও শ্রেষ্ট ঘুমের মধ্যে একটি ছিলো সেই মাটির ঘরে ঘুম।



৪। পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে প্রচুর মাটির ঘর আছে, কং মসিজিদ নামে সম্পূর্ণ মাটির একটি মসজিদ আছে আইভোরি কোস্টে - পূর্বে এই অংশটি ছিলো মালি’তে। নিরাপত্তা জনিত কারণে পশ্চিম আফ্রিকার মাটির ঘরগুলোর ভেতর কখনো প্রবেশ করিনি। যদিও মাটির ঘরগুলো স্থানীয় গরিব দুঃখী পরিবারদের তারপরও যেখানে নিরাপত্তার স্কেল শূন্যর কোটায় সেখানে সব সময় আতঙ্ক কাজ করে।

৫। আমাদের পুরান বাড়ির সন্নিকটে টিলার মতো উঁচু আমাদের বাড়ির সকলের মাটির ঘর। সেখানে শুয়ে আছেন আমার প্রাণপ্রিয় আব্বা, আমার সকল চাচাজান, আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষক আমার দাদীজন ও আমার দাদাজান সহ আমাদের ৩৭০ বছরের সকল পূর্বজ। - একদিন তাদের কাছে আমাকে ফিরে যেতে হবে এই মাটির ঘরে। আমি যখনই বাড়িতে যাই এই মাটির ঘরের সামনে দাড়াই - হয়তো সবাই আমাকে চেনেন না, আমার দাদাজান ও দাদীজান হয়তো তাদের কাছে আমার পরিচয় দেন, আমার কথা বলেন। আমি সালাম জানাই --- --- ---

আমার জীবনে অসংখ্যবার মাটির ঘরে থাকার সুযোগ হয়েছে, এই স্মৃতি ভুলে যাবার নয়। ডঃ এম এ আলী ভাই, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার লেখার কারণে আজকে সেই স্মৃতি মনে করতে পেরেছি। আপনার কাছে আমি কৃতজ্ঞ আমাকে সেই সুন্দর স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।

অনেক সুন্দর লেখা পোস্ট দিয়েছেন। বয়ষ হয়েছে ৪ নম্বরের লাইনগুলো লিখতে গিয়ে কখন যে চোখে জল এসেছে নিজেও জানিনা। গত চার মাস যাবত আমি গ্রামের বাড়ি যাই না - বাসা বাড়ির বাইরেও যাই না। জীবন আঁটকে আছে চার দেয়ালের রুমে। ব্লগে অতি শীঘ্রই মজার একটি পোস্ট দিবো আমি নিশ্চিত পড়ে আনন্দ পাবেন।

নিজের যত্ন নিবেন, সময়মতো খাওয়া দাওয়া করবেন। আপনার জন্য রইলো অনেক অনেক দোয়া ও ভালোবাসা, আপনি ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন।

২৬ শে জুন, ২০২০ সকাল ৮:৩৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




বিবিধ কারণে দেশে আমাদেরো দুটি বাড়ী। একটাকে আমরা বলি দাদার বাড়ী আরেকটিকে বলি নতুন বাড়ী । দুটো বাড়ীই খালি ,ঘরে ঘরে তালা মারা , শুধু দুটিবাড়ীতেই একটি ঘরে দুজন কেয়ার টেকার থাকে তার পরিবার নিয়ে। বাড়ী দেখা শুনা করা ছাড়া কোন কাজ নেই তাদের। বাপ দাদার কবর জিয়ারত আর যার যার প্রয়োজনে সেলিং অফ পেটারনেল প্রপারটির জন্য পরিবারের এবসেন্টি সদস্যা দেশের বাড়ীতে যায় কালে ভদ্রে । তবে গ্রামের নব্য ধনীরা বিশেষ করে ইটালী প্রবাশিরা প্রতিযোগীতা করে গ্রামে অনেক দুতলা তিনতলা আলীসান ইট কংক্রিটের দালান তুলে গ্রামটিকে নিউ টাউনে পরিনত করে ফেলেছে । যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি ও ঢাকার কাছে হওয়ায় জমির দাম আকাশ চুম্বি। বছর বিশেক আগে যে জায়গা কেও কিনার কথা চিন্তাও করতনা সে জায়গা এখন সোনার চেয়েও দামী ।কাঁচা মাটির ঘরে কেই বা এখন আর থাকতে চায় । তাই আমি ঠিক করেছি এই নব্যধনীদের কাছে আধুনিক সুন্দর ডিজাইনের মাটির বাড়ী তৈরীর একটি প্রতিযোগিতা লাগিয়ে দিব। এলাকায় দালান তোলার জন্য ইটের বড় প্রয়োজন । সেকারনে এ গ্রামের এক প্রান্তে গড়ে উঠেছে বেশ কটি ইট ভাটা । আর এসকল ইট ভাটার কারণে মানুষের ফসলের জমি পরিনত হয়েছে পুকুরে বা ডোবায় । এ সমস্ত পুকুরে না জমে পানি না হয় মাছের চাষ ,ইট ভাটার কারণে ফসলি জমি, গাছপালা আর ফলবান বৃক্ষ সকলি প্রায় বিনাস।

হ্যা সত্যিই এবার প্রবাসী কারেন্সিতে টান পড়লে মানুষ গ্রামের দিকে ছুটবে মিছিল করে। এছাড়াও করুনার কারণে বাড়ীওয়ালার নোটিশ খেয়ে লক্ষাধিক পরিবার নাকি ছুটছেন গ্রামের দিকে ।এখন হয়ত রব উঠবে ফিরিয়ে দাও আমায় সে অরন্য।

সমগ্র বাংলাদেশে ব্রিকফিল্ড (পোড়া মাটির ইট) গুলো চলছে বাড়ি করার চাহিদার উপর। বাড়ি করার চাহিদা না থাকলে ব্রিকফিল্ড আগামী কাল না হোক আগামী মাসে বন্ধ হতে বাধ্য। ইদানিং ব্লক (সিমেন্ট দিয়ে তৈরি ইট) ব্যবহার হচ্ছে তাতে পরিবেশের কতোটুকু ভালো হচ্ছে সঠিক জানিনা কারণ বাড়িতে দরজা জানালায় যে পরিমান গ্লাস ফিটিং হচ্ছে তাতে পরিবেশের তাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া বাড়ি করতে রড/ষ্টিল লাগছে যা রি-রোলিং মিলে পরিবেশের বারোটা বাজিয়ে পঁচা নষ্ট লোহা লক্কর, স্ক্র্যাপ, বিলেট, ইনগট গলানো হচ্ছে”। একথা গুলি বেশ গুরুত্বপুর্ণ । পুরানো লোহা লক্করের কারণে সীতাকুন্ডের শীপব্রেকিংটা শিল্পটিও কোন অংশে কম ক্ষতিকর নয়।পরিবেশের ক্ষতি করছে বিবিধ প্রকারে।


ফ্লাট বাড়ী ও এপার্টমেন্টে থাকার ভয়াবহ পরিনতির বিষয়ে কিছু কথা আছে তবে তা আলোচনা করা হবে আপনার ও জী এস ভাইএর মন্তব্যগুলির উপর প্রতিমন্তব্য দেয়ার কালে। ফ্লাট এপার্টমেস্টছেড়ে মাটির ঘরে থাকবে কি থাকবেনা সে বিষয়টিও উঠে আসবে সেখানে।

১) শান্তিবাবুর –সুর্য দীঘল বাড়ী প্রসঙ্গে মনে পড়ল ষাটের দশকে কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি, পুরুষতন্ত্রের নির্যাতন ও ধনীর শোষণের যাঁতাকলে পিষ্ট গ্রামীণ বাংলাদেশের এক নারীর জীবন সংগ্রামের অনবদ্য দলিল ছিল ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’।বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আবু ইসহাকের উপন্যাস ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’ অবলম্বনে একটি সিনেমাও নির্মিত হয়েছিল । উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু ছিল ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ, ১৯৪৭ এর দেশভাগ, নবগঠিত পাকিস্তান নিয়ে বাংলার মানুষের আশাভঙ্গ, গ্রামীণ সমাজের কুসংস্কার, মোড়ল শ্রেণির মানুষের ষড়যন্ত্র, সর্বোপরি গ্রামীণ নারীর জীবন সংগ্রাম ও প্রতিবাদী চেতনা। বর্তমান সময়ে গ্রামীন মাটির ঘরের বিলুপ্তি প্রতিরোধে সংগ্রামী প্রতিবাদী চেতনার বড়ই প্রয়োজন ।

২)পার্বত্য চট্টগ্রামের এক জেলার ফরেস্ট রেঞ্জে টকটকে লাল “মাটির ঘর” মনে হয় অনেকদিনের পুরানো যা সে অঞ্চলে মাটির ঘরের দীর্ঘ স্থায়ত্বতা প্রমান করে।

৩) সপরিবারে মুধুপুর ভাওয়াল গড়ে পিকনিকে গিয়ে মাটির ঘরে বেতের খাটে শুয়ে দেড় ঘন্টার ঘুম আপনার সারা জীবনের আরামদায়ক ও শ্রেষ্ট ঘুমের মধ্যে একটি হওয়ায় পরিস্কার যে মাটির ঘরেই দেয়া যায় প্রশান্তির ঘুম। মধুপুর ভাওয়াল গড়ে আমার পিকনিকের অভিজ্ঞতা কিন্তু এত মধুর নয়। কলেজে পাঠের সময়কালে একবার পিকনিকে মধুপুর ভাওয়াল গড়ে গিয়ে গড়ের ভিতর গাড়োদের আনারস বাগান থেকে আমাদের দলের এক বন্ধু একটি পাকা আনারস তুলে নিয়েছিল । সেটা দেখে সেখানকার দুই তাগড়া গারো জোয়ান ইয়া বড় এক রামদা নিয়ে তেরে আসল আমাদের দিকে । বলতেছিল আঙগা না দেংগা । চেষমাস মারুঙগা । আমরাতো এটা দেখে দিলাম ভো দৌঁড় । দৌঁড়ে তাদের কাছ হতে কিছু দুরেএসে থামলে একজন গাড়ো এসে জানায় তাদেরকে বললে তারা নীজেরাই অনেক আনারস বাগান হতে তুলে দিত । কেও না বলে অনারস নিলে তাদের খুব লোকসান হয়, তাছাড়া পাকা আনারসের লেজের শুকনা পাতাগুচ্ছ দিয়ে তারা মাথার টুকুর বানিয়ে উতসবে পার্বনে পরিধান করে । তাই আনারস তাদের কাছে খুবই প্রিয় পবিত্র বস্তু।

৪)অপনি ঠিকই বলেছেন পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলিতে প্রচুর মাটির ঘর আছে এবং সেগুলি বেশ পুরানো দিনের । ইন্টারনেটে সার্চের সময় এগুলির দুএকটি দেখেছি ।তবে পোষ্টের কলেবর বড় হয়ে যাচ্ছে বলে সেদিকে আর যাইনি । এখানে আইভরি কোষ্টের মাটির তৈরী বিখ্যাত গ্রান্ড কং মসজিদটির ছবি দিয়ে পোষ্ট টিকে আরো পুর্ণতা দেয়ার জন্য ধন্যবাদ ।আমার পরিবারের ঘনিষ্ট দুজন সদস্য জাতিসংঘের শান্তিবাহিনীর সদস্য হিসাবে আইভরি কোষ্টে কাজ করেছেন। তাদের কাছেও শুনেছি সেখনকার মাটির ঘরের কথা ।

৫) মাটির ঘরে শুয়ে থাকা আপনার পরিবারের প্রায় চার/পাঁচ জেনারেসনের পুর্ণাত্মাদের প্রতি রইল ছালাম ও তাঁদের প্রশান্তির জন্য দোয়া। হ্যা একদিন তাদের কাছে আমাদের সকলকেই যেতে হবে ।তবে দোয়া করবেন সে যাওয়া যেন হয় শান্তির যাওয়া । আমার কবর পাশে দাঁড়িয়ে রোদন করোনা শীর্ষক সামুতে আমার একটি কবিতা আছে ।তাছাড়া আই ওয়ান্ট টু ডাই আনলেমেনটেড, আমার কবরে কোন নাম ফলক আমি চাইনা ।

আমার পোষ্টের কল্যানে আপনার মধুর স্মৃতি চারনের কথামালা আমাকে প্রিত করেছে।করোনার কারণে আপনার গৃহবন্ধি নিরানন্দ জীবন নিরাপদে আনন্দে কাটুক এ কামনা রইল । আপনার মজাদার পোষ্টের অপেক্ষায় রইলাম ।

শুভেচ্ছা রইল

৩৬| ২৪ শে জুন, ২০২০ ভোর ৬:৫১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আপনি জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন। করোনাকে জয় করে জীবনকে ফিরে পাওয়া মানে জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হওয়া। করোনাকালীন সময়টায় আপনার কষ্টগুলো খুব ব্যথিত করেছে। আরো বহু বছর আপনি বেঁচে থাকুন, আপনার লিখনী দিয়ে ব্লগকে সমৃদ্ধ করুন এই প্রত্যাশা রইলো। জীবনের পরশ পাথর আসলে জীবন-ই। নিজেকে কঠিন পরিস্থিতি কিংবা কঠিন অসুখের সময় মানিয়ে নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাটাই একজন মানুষের সবচেয়ে বড় পাওয়া। করোনাকে জয় করে আপনি সেই কাঙ্খিত পরশ পাথরের সন্ধান পেয়েছেন। মাটির ঘর/স্থাপনা নিয়ে চমৎকার তথ্যবহুল লিখা। এখন গ্রামে মাটির ঘর চোখে পড়ে না তেমন একটা। এজন্য মাটির ঘর তৈরীর কারিগরও নেই। তবে, মানুষের জীবনবাতি নিভে যাওয়ার পর স্থায়ী নিবাসের ঘর/কবর তৈরীর কারিগর আগেও ছিলেন, এখনো আছেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন। এই ঘর তৈরীর নকশা সময়-টাকার গরমে খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।

আমার ছোট্ট একটা অভিমত, লেখার দ্বিতীয় অংশ দিয়ে আরেকটি পোস্ট লিখলে মনে হয় ভালো হতো। আর এই অংশটি আরেকটু এক্সক্লুসিভ হলে পাঠকদের পড়তে কম সময় লাগতো। এটা আমার একটি অভিমত মাত্র। আশা করি, বেয়াদবী নেবেন না। ভালো থাকুন, স্যার।

২৭ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৩২

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



আল্লার অশেষ রহমতে ও আপনাদের দোয়ায় আর স্বাস্থ্যসেবকদের একনিষ্ট সেবার কল্যানে জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়ে আপনাদের মাঝে ফিরে আসতে পেরেছি,এজন্য শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা জানাই সকলকে ।

দোয়া করবেন জীবনের বাকী অধ্যায়গুলিতে আমার প্রতি আপনার সুপ্রত্যাশা পুরণে যেন প্রত্যয়ী হতে পারি ।

ঠিকই বলেছেন জীবনের পরশ পাথর আসলে জীবন-ই। নিজেকে কঠিন পরিস্থিতি কিংবা কঠিন অসুখের সময় মানিয়ে নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাটাই একজন মানুষের সবচেয়ে বড় পাওয়া। আপনার মুল্যবান এ কথামালার সাথে সহমত ।

মাটির ঘর/স্থাপনা নিয়ে লেখাটি চমৎকার তথ্যবহুল অনুভুত হয়েছে শুনে অনুপ্রাণীত হলাম । মাটির ঘরে বাস করা এখনো গ্রামবাংলায় দারিদ্রের প্রতিক, তাই এখন সকলেই চায় টিনের কিংবা ইটের দেয়াল ঘরে বাস করে নিজেদের স্টেটাস বাড়াতে । এছাড়া গ্রামে মাটির ঘর নির্মানের জন্য চাহিদা কমে যাওয়ায় ভাল কারিগরও পাওয়া যায়না । তাছাড়া উন্নত মানের মাটির ঘরের দেয়ালের চেয়ে পাঁচ ইঞ্চি ইটের দেয়ালের কদর এখন অনেক বেশী, নির্মাণ ব্যায় ওতুলনামুলকভাবে বেশ কম । দুই নম্বর ইট আর ভেজাল সিমেন্ট , স্ট্যান্ডার্ড ১/৪ বালু সিমেন্ট মিশ্রনের পরিবর্তে১/৮ সিমেন্ট/ বালু মিশ্রনে ইটের গাথুনী ও দেয়ালের আস্তর সাথে বাজারে সয়লাব কমদামী রূপবান মার্কা হালকা কাগজ সদৃশ টিনের চাল দিয়ে তৈরী ইটের তেরী পাকা বাড়ীগুলি শুধু যে ঝুকিপুর্ণ ( প্রচন্ড খরা গ্রীস্মের দাবদাহে তেতে উঠা এরকম ঘরগুলিতে দিবারাত চলে ফ্যানের পাখা ,লোডশেডিং হয় নিত্য সঙ্গি) ঘরগুলি তাইই নয়, এটা পরিবেশ ক্ষতিকারী ইট ভাটার বিকাশকে জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পেতে সহায়তা করছে।

মাটির উপরে মাটির ঘর তৈরীর পরিমান ও ঘর তৈরীর কারিগর কমলেও মাটির নীচে ঘরের সংখ্যা বাড়ছেই আশংকাজনক হারে বিশেষ করে এই ভয়ংকর করোনার দিন গুলিতে। আপনার উপলব্দি যতার্থ মানুষের জীবনবাতি নিভে যাওয়ার পর স্থায়ী নিবাসের ঘর/কবর তৈরীর কারিগর আগেও ছিলেন, এখনো আছেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন। এই ঘর তৈরীর নকশা সময়-টাকার গরমে খুব একটা পরিবর্তন হয়নি । এখানে উল্লেখ্য যে ঈমানদারীর সহিত ইহকালে যারা সৎআমল করে যাবেন তাদের কবরটি হবে চীর শান্তিময় ও নক্সা ও ডিজইনেও অপরূপ।

আপনি খুবই ভাল অভিমত রেখেছেন লেখার দ্বিতীয় অংশটি দিয়ে আরেকটি পর্ব লিখলে ভালো হতো। সে অংশটুকু আরেকটু এক্সক্লুসিভ হত । এখানে লেখার কলেবর বড় হয়ে যাওয়ায় অনেক কথাই বলতে পারিনি, অন্য পর্বে হলে আরো বিস্তারিতভাবে লেখা যেতো । পরশ পাথর প্রাপ্তির বিষয়ে পরবর্তী পর্বগুলিতে আপনার মুল্যবান অভিমতটি মাথায় রেখেই লিখব।

ভাল থাকার শুভ কামনা রইল

৩৭| ২৪ শে জুন, ২০২০ সকাল ৮:৪৯

সুপারডুপার বলেছেন:



ডঃ এম এ আলী ভাই, ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘরের পুণরুজ্জীবন প্রসঙ্গে আপনার পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইয়ামেনের সিবামে মাটির অনেক বহুতল (৫- ৮ তলা) ভবন আছে (নিম্নে ভিডিও UNESCO : Old Walled City of Shibam)। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশে ঐ ধরণের বাড়ি বানানোর দক্ষ রাজমিস্ত্রি পাওয়া যাবে না।

২৭ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:০২

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘরের পুণরুজ্জীবন প্রসঙ্গে পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনুভুত হওয়ার কথা শুনে ভাল লাগল । ইয়ামেনের সিবামে মাটির অনেক বহুতল (৫- ৮ তলা) ভবন থাকা সংক্রান্ত ভিডিও UNESCO : Old Walled City of Shibam) সংযুক্ত করায় পোষ্টটিকে সমৃদ্ধ করেছে । উল্লেখ্য আশির দশকে ইউনেস্কো ইয়েমেনের পাহারী অঞ্চল সিবামে অবস্থিত ধংসস্তুপের উপর নির্মিত প্রি ইসলামিক যুগের অদলে নির্মিত টাওয়ার সদৃশ্য বহতল বাড়ি সমৃদ্ধ একটি এলাকাকে ওয়ারল্ড হেরিটেজে তালিকাভুক্ত করেছে । এখানে unesco সিবাম ফটোগ্যলারীতে ক্লিক করে এর অনেক ছবি দেখেছি । বিষয়টির সাথে কোরানে উদ্ধৃত কতক কালামের যুগ সুত্র পাওয়া যায় । বিষয়টি শ্রদ্ধেয় খায়রুল আহসান ভাই এর ২২নং মন্তব্যের প্রতিউত্তরে কিছুটা তুলে ধরা হয়েছে ।

আপনার দেয়া ভিডিউর নীচে থাকা ছবি লিংকে গিয়ে তার সুত্র ধরে সিবাম প্রজেক্ট এ গিয়ে বিস্তারিত দেখে এসেছি ।

কথা হচ্ছে সমস্যা শুধু বাংলাদেশে ঐ ধরণের বাড়ি বানানোর জন্য দক্ষ ও অভিজ্ঞ রাজমিস্ত্রির অভাবই নয় এর উপকরনেরও রয়েছে অভাব ।
আর্কিটেকচার অফ মাড লিংকে গিয়ে দেখা যাবে এধরনের মাটির ঘর তৈরী নির্মাণ স্থাপত্যকৌশল , প্রয়োজনীয় উপকরণ ও তা প্রক্রিয়া করনের কিছু চিত্র । সেই প্রাচীন মাটির ঘরগুলি কিভাবে নির্মাণ করা হতো এবং সঠিক কিধরনের মাটির উকরণ ব্যাবহার করা হতো ও তা প্রক্রিয়াকরণ সম্পর্কে তেমন কিছু জানতে পারিনি । তবে অধুনা এধরনের যে মাটির তৈরী বহতল ভবন গুলি তৈরীর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে তাতে দেখা যায় সেখানে সহজপ্রাপ্য চুনাপাথরকেই নিন্মে দেখানো চুল্লীতে পুড়ে তারপরে ভিডিউতে দেখা পদ্ধতিতে প্রক্রিয়া করণ করে কথিত মাটির বহুতল ভবন নির্মান করছে ।

চুল্লীর লেলিহান শিখার সাথে উঠে আসা কালো ধোয়ায় আকাশ বাতাস বিষাক্ত করে তুলে ।
চুনাপাথরকে সর্বনিম্ন ২৪ ঘন্টা পোড়ানো হয় এবং পরে ঠান্ডা করা হয়। পাথরগুলির উপরে জল ডালা হয় যা রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। তারপরে মেনুয়েলী বড় মুগর দিয়ে পিটিয়ে চুনামাটির পেষ্ট তৈরী করা হয় । চুনাপাথর পুড়া ধোঁয়াগুলি হয় বেশ বিষাক্ত এবং চুনযুক্ত পেষ্টগুলি অত্যন্ত কস্টিক। আর এধরনের মাটির ঘর তেরীতে প্রায় এক বছর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যায় । ইত্যাদি অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় ইয়েমেনের মাটির বহুতল ভবন তৈরীর মডেল, প্রযুক্তি ওউপকরণ প্রক্রিয়াকরন এখন আর পরিবেশ বান্ধব নয়। তবে কাঁচা মাটি দিয়ে কব-হাউজ জাতীয় প্রযুক্তিতে মাটির ঘর নির্মাণ ইদানিং জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। বিষয়টি আমাদের অনেক গুণী ব্লগারদের কথাতেও পরিস্ফুট ।

মুল্যবান তথ্য সমৃদ্ধ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ।

শুভেচ্ছা রইল

৩৮| ২৪ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: ডঃ এম এ আলী,



করোনা জয়ী এক সামু ব্লগারকে অভিনন্দন।


মাটি ছেনে ছেনে ধাঁপে ধাঁপে তোলা মাটির ঘরের মতোই যে বিশাল পরিধিতে গৃহায়ন থেকে শুরু করে, মহাপ্রস্থান গৃহ সহ সিঁধেল চোর, তেভাগা আন্দোলনের বসতঘর তৈরী করে দিয়ে ব্লগের মাটির ঘরখানায় যে জীবনের রং মেখে গেলেন তা শুধু অতুলনীয়ই নয়, দুষ্প্রাপ্যও বটে।
এ যেন পৃথিবী জুড়ে পরিবেশ সংরক্ষনকারী পদ্বতিতে তৈরী পরিবেশবান্ধব গৃহায়নের খন্ডিত এক একটি উপাখ্যান।
জীবনের শেষ ট্রেনটা ধরার আগে পরবর্তী ট্রেনের যাত্রীদের জন্যে ছবিসহ নান্দনিকতার যে মাটিশ্রয়ী গৃহটি গেঁথে তুলেছেন তা ব্লগে পরশপাথর তুল্য একটি সম্পদ হয়েই রইলো। শুধু ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখা!

বদলে যাওয়া পরিবেশের ধরন, বৃষ্টিপাতের লাগামহীন আচরণ, বন্যার অকাল বোধন সবটা মিলিয়ে আমাদের দেশে এখন মনে হয় মাটির ঘরের বদলে স্থান স্বল্পতার কারনে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই উলম্ব গৃহায়নের বিকল্প নেই। অনেক ঋদ্ধ ব্লগারই তেমনটা বলে গেছেন আগেই। তবে কারিগরদের পুরানো ধ্যান-ধারণার সাথে আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রন ঘটিয়ে, অনেকটা পরশপাথরকে সযতনে আগলে রাখার মতোই গ্রামাঞ্চলে মাটির ঘরের পুরোনো সংস্কৃতিকে ধরে রাখা যেতেই পারে।


তুলনাবিহীন দারুন পরিশ্রমী লেখা। লাইকড।

২৭ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:৩২

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




আপনার মত সর্বজন শ্রদ্ধের গুণী মানুষের মুখে এ পোষ্টের উচ্চকিত প্রসংসা বাণী শুনে আমি খুব্ই অনুপ্রানিত ।

বদলে যাওয়া পরিবেশের ধরন, বৃষ্টিপাতের লাগামহীন আচরণ, বন্যার অকাল বোধন সবটা মিলিয়ে আমাদের দেশে এখন মনে হয় মাটির ঘরের বদলে স্থান স্বল্পতার কারনে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই উলম্ব গৃহায়নের বিকল্প নেই। এ বক্তব্যের সাথে
সহমত । তবে টিকসই উলম্ব গৃহ নির্মানের বিষয়ে কিছু আলোচনার অবকাশ আছে । পরবর্তী মন্তব্যসমুহে মাটির ঘর প্রসঙ্গে আপনি ও ঠাকুরমাহমুদের কিছু মন্তব্য প্রতিমন্তব্য রয়েছে । বিষয়টা সেখানে আলোচনা করব বলে এখনকারমত তুলে রাখলাম ।

তবে কারিগরদের পুরানো ধ্যান-ধারণার সাথে আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রন ঘটিয়ে, অনেকটা পরশপাথরকে সযতনে আগলে রাখার মতোই গ্রামাঞ্চলে মাটির ঘরের পুরোনো সংস্কৃতিকে ধরে রাখা যেতেই পারে। মুলত এ ধরনের চিন্তা ভাবনা থেকেই মাটির ঘর প্রসঙ্গে এ পোষ্টে এতসব কথা বলা । মাটির ঘরের পুরানো ঐতিহ্য দিছুটা হলেও ধরে রাখার বিষয়ে দেখা যায় সামুর গুনী ব্লগারদের প্রায় সকলেই সহমত প্রকাশ করেছেন , বিষয়টি খুবই ইতিবাচক তাতে কোন সন্দেহ নেই।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল

৩৯| ২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:১৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আহমেদ জী এস ভাই, উক্ত পোস্টে আমার মন্তব্যটি পড়ার জন্য অনুরোধ করছি। পোস্ট লাইক সহ প্রিয়তে রেখেছি। উক্ত পোস্টের শেষের দিকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করবো যা আমার জীবনের স্মৃতি। ধন্যবাদ ডঃ এম এ আলী ভাই।

২৭ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:৪২

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


আহমেদ জী এস ভাই, উক্ত পোস্টে আমার মন্তব্যটি পড়ার জন্য অনুরোধ করছি এই টুকু পাঠে একটু কনফিউস্ড হয়ে গিয়েছিলাম ।সেই উক্ত পোষ্ট যে এই পোষ্ট তা পরে আহমেদ জী এস ভাই এর মন্তব্য হতে বুঝতে পারলাম। আপনার পরবর্তী মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কিছু অলোচনা হবে বিধায় এখানে আর কিছু বলা হলোনা।

শুভচ্ছা রইল

৪০| ২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:০৫

আহমেদ জী এস বলেছেন:





@ ঠাকুরমাহমুদ

এই পোস্টে আপনার মন্তব্যটি আমি মন্তব্য করার আগেই পড়েছি। ওই মন্তব্যে আপনি মাটির ঘরের কিছু উপযোগিতার কথা বলেছেন। অবশ্যই মাটির ঘরের ঠান্ডা মেঝেতে শোয়া বিশেষ করে শীতল পাটিতে, আবেশ জাগানো মাদকময় ঘুম হয়। শরীর ঠান্ডা থাকে। অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।
কিছু কিছু জায়গাতে এখনও মাটির ঘর আছে এটা সত্য।

কিন্তু এই পোস্টে গৃহায়নের কথা মাথায় রেখে মাটির ঘরের পূণরুজ্জীবনের কথা বলা হয়েছে। বাংলা দেশের সীমিত বসতস্থলের ( আবাসিক ) কারনে শহর অঞ্চলে মাটির ঘর এখন অযৌক্তিক । কারন মানুষ বাড়ছে "নাফ নদীর বানের লাহান"। সীমিত আবাসিক জায়গার কারনেই এই বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিন্ন ভিন্ন , আলাদা আলাদা করে গৃহ নির্মান সম্ভব নয়। তাহলে চাষের জমি সব যাবে ঘরবাড়ী তোলার রাক্ষসী ক্ষুধার পেটে। তাই এখন মানুষের গৃহায়নে হরাইজন্টাল স্প্রেড এর সুযোগ নেই-ই বলতে গেলে । সেক্ষেত্রে লংজিচুডিনাল ( আকাশমুখী ) বাড়ী নির্মান সময়ের দাবী , সেটা সরকারী ভাবেই হোক আর বেসরকারী লেভেলেই হোক। নইলে এতো পরিবারকে জায়গা দেবেন কোথায় ? যে হারে মানুষ শহর ও শহরতলীমুখো হচ্ছে তাতে আগামী কয়েক বছরে আবাসিক এলাকার তীব্র সংকট দেখা দেবে যার আওয়াজ আপনিও অনেক আগে থেকেই শুনতে পাচ্ছেন।

তবে যাদের নিজস্ব বাগানবাড়ী টাইপের জমি ফেলে রাখা আছে সেখানে শখের বশে মাটির ঘর বানানো যেতেই পারে কিন্তু তা তো
বিশাল সংখ্যক গৃহহীন মানুষের গৃহসংস্থানের সুযোগ করে দেবেনা।

আশা করি আমার মন্তব্যে "বদলে যাওয়া পরিবেশের ধরন, বৃষ্টিপাতের লাগামহীন আচরণ, বন্যার অকাল বোধন সবটা মিলিয়ে আমাদের দেশে এখন মনে হয় মাটির ঘরের বদলে স্থান স্বল্পতার কারনে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই উলম্ব গৃহায়নের বিকল্প নেই।" কথাটি কেন বলেছি, বোঝাতে পেরেছি।

এই সুবাদে শ্রদ্ধেয় ডঃ এম এ আলীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আপনার মন্তব্যের কারনে তার এই পোস্টের ঘরটি ব্যবহার করতে পারার জন্য।

ভালো থাকুন দু'জনেই।

২৮ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৩৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



শ্রদ্ধেয় আহমেদ জী এস ভাই, নীচে বোল্ড করে দেখানো আপনার বক্তব্যের সাথে আমি একন্তভাবে সহমত পোষন করি।
বাংলা দেশের সীমিত বসতস্থলের ( আবাসিক ) কারনে শহর অঞ্চলে মাটির ঘর এখন অযৌক্তিক । কারন মানুষ বাড়ছে "নাফ নদীর বানের লাহান"। সীমিত আবাসিক জায়গার কারনেই এই বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিন্ন ভিন্ন , আলাদা আলাদা করে গৃহ নির্মান সম্ভব নয়। তাহলে চাষের জমি সব যাবে ঘরবাড়ী তোলার রাক্ষসী ক্ষুধার পেটে। তাই এখন মানুষের গৃহায়নে হরাইজন্টাল স্প্রেড এর সুযোগ নেই-ই বলতে গেলে । সেক্ষেত্রে লংজিচুডিনাল ( আকাশমুখী ) বাড়ী নির্মান সময়ের দাবী , সেটা সরকারী ভাবেই হোক আর বেসরকারী লেভেলেই হোক।

আপনার এই মন্তব্যটি ঠাকুরমাহমুদ ভাইকে এড্রেস করা হলেও আপনার মুল্যবান কথামালা সমৃদ্ধ মন্তব্যটি আমার দৃষ্টি আকর্ষন করেছে । ঠাকুরমাহমুদ ভাই আপনার মন্তব্যটি দেখেছেন ও তাঁর কথা তিনি এই পোষ্টে মন্তব্যের ঘরে বলেছেন । আমি তাঁর মন্তব্যটিও দেখেছি। দুটো মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে প্রয়োজন অনুযায়ী হরাইজনটাল ও ভার্টিকেল বসতবাড়ী নির্মানের বিষয় দুটিকে সমন্বয় করে কিছু কথা বলতে গিয়ে ( সাথে প্রাসঙ্গিক চিত্রসহ )দেখি এর কলেবর একটি পুর্ণাঙ্গ পোষ্টের থেকেও বড় হয়ে যাচ্ছে। তাই এত বড় মন্তব্য না লিখে সে কথাগুলি নিয়ে একটি পৃথক পোষ্ট দিব ভাবছি । হয়ত দিন দুয়েকের মধ্যে এটাকে আরো একটু মেরামত করে পোষ্ট দিতে পারব। পোষ্ট দেয়ার পরে আপনাকে অবগত করব । অনুগ্রহ করে দেখে যাওয়ার জন্য অগ্রীম আমন্ত্রন রইল ।

আমার পোষ্টের মন্তব্যের ঘর ব্যবহারের জন্য আপনার প্রতিও ধন্যবাদ রইল ।

ভাল থাকার শুভ কামনা রইল

৪১| ২৫ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:০৭

পুলক ঢালী বলেছেন: আপনার বলা এই গুরুত্বপুর্ণ বিবরনটুকু আমার পোষ্টের মুল লেখার মধ্যে যুক্ত করে দিতে চাই, যদি আপনার আপত্তি না থাকে ।
শ্রদ্ধেয় জনাব ডঃ এম এ আলী।
আপনার গবেষনা মূলক এমন মূল্যবান একটি পোষ্টে এই অর্বাচীনের সামান্য একটি বিবরনকে গুরুত্ব দেওয়ায় আমি সম্মানিত বোধ করছি। বিবরনটুকু যোগ হলে আমি বরং কৃতার্থ বোধ করবো।
ভাল থাকুন সুস্থ্য থাকুন।

২৮ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৪৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




সদয় সন্মতি দানের অন্তরের অন্তস্থল হতে ধন্যবাদ ।
আরো অনেক মন্তব্য থেকেমুল্যবান কথা নিয়ে পোষ্টটি
এডিট করার সময় আপনার বলা কথাগুলিকে পোষ্টেযুক্ত করে নিব ।

শুভেচ্ছা রইল


৪২| ২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৩০

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আহমেদ জী এস ভাই,আপনাকে খুব প্রয়োজন মনে করে আমার মন্তব্যটি পড়তে বলেছি, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যটি পড়ার জন্য। আহমেদ জী এস ভাই, আপনি ১০০ তে ১০০ সঠিক বলেছেন জনসংখ্যার যেভাবে বাম্পার ফলন হয়েছে এখন বাংলাদেশে হয়তো ৪০ তলা বিশিষ্ট কন্ডোমিনিয়াম বিল্ডিং দরকার পরবে আগামী ১০-২০ বছরের মধ্যে। আমার কেনো জানি মাঝে মাঝে মনে হয় বাংলাদেশের জনসংখ্যা সম্ভবত ২৫ কোটি মানুষ হবে! - আমার ধারণা ভুল হতে পারে তবে খুব বেশী ভুল হবার কথা না।

ডঃ এম এ আলী ভাই, আমি উল্লেখ করেছিলাম আমি আরেকটি মন্তব্য করবো। তাই প্রসঙ্গে ফিরে আসি -
১৯৭১ এর সংগ্রামে পালাতে পালাতে আমরা তিতাস নদীর তীরে কুমার গ্রামের কুমার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম, আমরা যেই বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম সেই বাড়ির ঘরগুলো ছিলো মাটির ঘর এছাড়া সেই কুমার গ্রামের অধিকাংশ ঘর ছিলো মাটির ও ছনের ঘর। মাটির ঘরগুলোর বেশ উঁচু ও চালা ছিলো ছনের তৈরি। আমাদের এলাকায় তিতাস নদীর তীরে সে সময়ে কুমার গ্রাম ছিলো। সেই কুমার গ্রামের অবশিষ্ট কিছু বাড়ি এখনো আছে। আপনার এই পোস্টের কারণে আজ ১৯৭১ এর ভয়ঙ্কর দুর্দিনের কথা, মনে পরেছে আমাদের আশ্রয়দাতা বলাই কুমার বাবুর কথাও - সে আরেক গল্প হয়তো ব্লগে কোনো একদিন লিখবো।

***আপনি মন্তব্য উত্তর যথানিয়মে দিবেন এখানে কোনো সমস্যা নেই। আপনি আমার মন্তব্য পড়েছেন এটিই মুখ্য বিষয়। আপনি আমার ভাই হয়ে আপনি যদি আমাকে এই কথা বলেন তাহলে কোথায় যাই বলুন? আপনাকে একটি বিষয় বলি “ভয় মানুষকে ক্ষয় করে দেয়” - এটি আমার বেহেস্তবাসী দাদীজানের কথা। আপনি ভুলে যান আপনি অসুস্থ ছিলেন, আপনি ভুলে যান আপনার করোনা হয়েছিলো। আপনি ভুলে যান সব। মনে রাখলে মন দুর্বল হবে। ভুলে গেলে ভালো থাকবেন। - ভাই সাহেব আপনি কি আমার কথা বুঝতে পারছেন?

ডাক্তারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী খাওয়া দাওয়া করুন, ইউটিউবে খুব ভালো ইয়োগা করার ক্লাস আছে আপনার পছন্দমতো ইয়োগা করুন। জবরদস্ত মারপিটের মুভি দেখুন। কিল বিল পার্ট -১, ২ দেখতে পারেন। মজাদার ছবি। আমি এমনিতে ভালো রান্না জানি করোনা লকডাউনে প্রমাণ হয়েছে আমি পূর্বজনমে সম্ভবত বাবুর্চি ছিলাম!

ভাই হাসি খুশি থাকুন, আমি পরবর্তী বেশ কিছু পোস্ট দিবো মজাদার পোস্ট। পড়ে অবস্যই আনন্দ পাবেন, মন খারাপ করার মতো লেখা আর আপাতত লিখছি না। চিন্তামুক্ত থাকুন, পৃথিবী শান্ত হবে। পরম করুণাময় আল্লাহপাক আমাদের উপর তার রহমতের হাত প্রসারিত করবেন।

ফি আমানিল্লাহ।

২৮ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:০৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


আপনার এই মন্তব্যের প্রথম অংশটি আহমেদ জী এস ভাইকে এড্রেস করা হলেও আপনার মুল্যবান কথামালাগুলি আমার দৃষ্টি আকর্ষন করেছে । আমি আহমেদ জী এস ভাই এর মন্তব্যও দেখেছি। আপনাদেরদুজনের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আমার কিছু কথা বলতে গিয়ে( সাথে প্রাসঙ্গিক চিত্রসহ )দেখি এর কলেবর একটি পুর্ণাঙ্গ পোষ্টের থেকোও বড় হয়ে যাচ্ছে বলে দেখতেপাই । তাই এত বড় মন্তব্য এখানে না লিখে সে কথাগুলি নিয়ে একটি পৃথক পোষ্ট দিব ভাবছি ।হয়ত দিন দুয়েকের মধ্যে এটাকে আরো একটু মেরামত করে পোষ্ট দিতে পারব। পোষ্ট দেয়ার পরে আপনাকে অবগত করব । অনুগ্রহ করে দেখে যাওয়ার জন্য অগ্রীম আমন্ত্রন রইল ।
আআপনার কথা মত হাসিখুশী থাকার চেষ্টা করছি । কিন্তু দেশে বিদেশে থাকা আত্মিয়স্বজন ও পরিচিত জনদের নিকট হতে যে সকল আর্থিক ও শারিরিক দুরাবস্থা সংক্রান্ত খবর নিত্য টেলিফোনে পাচ্ছি তাতে আনন্দ মহুর্তেই বিষাদে পরিনত হয়ে যায়।

হ্যাঁ, মুক্তিযুদ্ধকালীন চরম দু:সময়ে পরপোকারী কুমার বাবুর গল্প শুনতে পারলে ভাল লাগবে ।

যাহোক, করোনার এই ভয়ংকর দিনগুলিতে ভাল ও নিরাপদ থাকার শুভ কামনা রইল।

৪৩| ২৫ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:২৯

করুণাধারা বলেছেন: প্রথমেই আল্লাহকে শুকরিয়া জানাই কোভিড১৯ এর সাথে যুদ্ধে আপনাকে জয়ী করার জন্য। আমার মনে হয় এই যুদ্ধ জয়ের আপনার  মনোবল প্রধান ভূমিকা পালন করেছে!

অসাধারণ এক পোস্ট উপহার দিয়েছেন! দীর্ঘ সময় নিয়ে পড়লাম। এমন একটি পোস্ট লিখতে কত সময় লাগতে পারে ধারণাও করতে পারিনা... কত রকমের মাটির ঘরের সাথে যে পরিচয় হলো!

ইটভাটা পরিবেশের ভয়ানক ক্ষতি করছে, সেজন্য ইটের বিকল্প তৈরি করা দরকার। আমাদের দেশে বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট বলে একটা প্রতিষ্ঠান এ নিয়ে কাজ করছিল, শুনেছিলাম ইটের বিকল্প হিসেবে পরিবেশ বান্ধব উপাদান দিয়ে তারা বাড়ি নির্মাণের সামগ্রী তৈরি করেছে, কিন্তু সেটা কি জানা হয়নি। আরব দেশে দেখেছি তারা বালি দিয়ে ব্লক তৈরি করে সেগুলো বাড়ি নির্মাণে ব্যবহার করে। এটা তীব্র গরম থেকে ঘরের ভেতর কে ঠান্ডা রাখে। মাটির বাড়ির ভেতরে নিশ্চয়ই এমন শীতল হয়। সেভাবে কখনো মাটির বাড়ি দেখা হয়নি, শুধু একবার গাজীপুরে এক রিসর্টে এরকম একটা চমৎকার মাটির বাড়িতে কয়েক ঘণ্টা কাটিয়েছিলাম।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও নাকি মাটির বাড়ি খুব পছন্দ করতেন। শান্তি নিকেতনে তার একটি মাটির বাড়ি ছিল, নাম শ্যামলী।



শ্যামলী

যেসব চমৎকার মাটির বাড়ির ছবি দিয়েছেন, দেখে খুব মনে হচ্ছে, এমন একটা বাড়িতে যদি থাকতে পারতাম!!! তা আর হবার উপায় নেই, এই ইট পাথরের জঙ্গলে আটকা পড়ে গেছি।

চমৎকার লেখাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।


২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৩৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



বিলম্বিত উত্তর দানের জন্য দু:খিত । করোনায় আক্রান্তের পরে শারিরিক দুর্বলতারকারণে লেখালেখিতে স্লো হয়ে গেছি।
পুর্বের মন্তব্যগুলির জবাব লিখতেও বেশ সময় নিয়েছে ।
দীর্ঘ সময় নিয়ে ধৈর্য ধরে পোষ্টটি পাঠের পরে অসাধারণ হয়েছে শুনে খুবই খুশী হলাম । বিভিন্ন ধরনের মাটির ঘরের সাথে পরিচিত হতে পেরে পেরেছেন শুনে ভাল লাগল। আমার পরের পর্ব পড়ার সময় বিভিন্ন ধরনের মাটির ঘরের পরিচিতি বেশ কাজে লাগবে।
আপনি যতার্থই বলেছেন ,ইটভাটা পরিবেশের ভয়ানক ক্ষতি করছে, সেজন্য ইটের বিকল্প তৈরি করা দরকার। আমাদের দেশে বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট বলে একটা প্রতিষ্ঠান এ নিয়ে কাজ করছিল,

হাউজিং ও রিসার্চ ইনসটিটিউটের Click This Link এই সাইটের মৃত্তিকা বিভাগ ও ফটোগ্যলারিতে গিয়ে দেখতে পারেন তারা কি করেছে সে,খানে আমি তেমন কিছু দেখতে পেলাম না । তবে তাদের গবেষনা বিভাগের তথ্য হতে জানা যায় বাংলাদেশ হাউজিং এন্ড রিসার্চ ইনসটিটিউট ইটের বিকল্প হিসেবে পরিবেশ বান্ধব উপাদান দিয়ে বাড়ি নির্মাণের জন্য কিছু সামগ্রী তৈরি করেছে। ইটের বিকল্প বালু সিমেন্ট কনক্রিট ব্লক দিয়ে বাড়ী তৈরি বিষয়ে কিছু কাজ তারা করেছে । এককভাবে মাটির ঘর নিয়ে কোন কাজ করেছেকিনা তা জানা যায়নি ।
তবে তারা নরওয়ে ভিত্তিক পলি বাংলাদেশ নামক প্রতিষ্ঠান হাউসিং বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর সহায়তায় পলি কনক্রিটের বাড়ি নির্মাণ ও পর্যবেক্ষণের জন্য এইচ বি আর আই প্রাঙ্গণে একটি পরীক্ষামূলক বাড়ি নির্মাণ করেছে যা ভূমিকম্প সহনীয় ও পরিবেশ বান্ধব।তবে এ ধরনের বাড়ী তৈরীর খরচ কিন্তু কম নয় ।

এছাড়া রেমড আর্থ ( Rammed earth যার নাম আমি দিয়েছি পিটনু মাটির ব্লক )সম্পর্কে একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিল বলে জানা যায় । পিটানো মাটির ব্লক দিয়ে এ পোষ্টে ১৪ নং ছবিতে দেখানো মাটির মেটে স্কুল ভবনটি নির্মিত । বাংলাদেশের জন্য এটা বলতে গেলে নতুন। ইউরোপ আফ্রিকা সহ অন্যান্য দেশে এ প্রযুক্তিতে বাড়ি নির্মাণ করা হয়ে থাকে। অস্ট্রিয়ার লিনজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ হাউজিং এন্ড রিসার্চ ইনসটিটিউট Hand Workshop on Rammed Earth Structure and Architecture শীর্ষক একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিল বলে জানা যায় ।উক্ত কর্মশালায় বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ৭০ জন অংশগ্রহণ করেন । রেমড আর্থ দিয়ে কিভাবে বাড়ি তৈরি করা যায় তা কর্মশালায় শেখানো হয় ।বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে কিভাবে এ দিয়ে বাড়ি তৈরি করা যায় সে বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা হচ্ছে বলেও জানা যায় ।
আমারো বিশেষ আগ্রহ এই পদ্ধতিতে দেশে মাটির ঘর নির্মাণের ।

আপনি ঠিকই বলেছেন আরব দেশে বালি দিয়ে ব্লক তৈরি করে সেগুলো বাড়ি নির্মাণে ব্যবহার করে যা তীব্র গরম থেকে ঘরের ভেতরকে ঠান্ডা রাখে। শুধু মাটির তৈরী বাড়ির ভেতরটা অবশ্য এর থেকেও বেশী শীতল হয় । গাজীপুরে মাটির ঘরের রিসোর্টে আমিও একদিন কিছুটা সময় কাটিয়েছি । সেটা খুবই সুন্দর ।

মনে হয় শান্তি নিকেতন ঘুরে এসেছেন । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মাটির বাড়ি খুবই পছন্দ করতেন। শান্তি নিকেতনের মাটির বাড়ি শ্যামলী খুবই সুন্দর । এই সুন্দর বাড়ীটির একটি ছবি দিয়ে পোষ্টটিকে উচ্চ মাত্রায় নিয়ে গেছেন ,সেজন্য ধন্যবাদ । শান্তিনিকেতনে পুণশ্চ ও তালধ্বজ নামে আরো দুটি মাটির বাড়ী আছে । ‘তালধ্বজ’ নামের অনন্য সুন্দর গোলাকৃতির এই মাটির বাড়িটি শান্তিনিকেতনের সৌন্দর্যকে এক অন্য মাত্রা প্রদান করেছে। একটি তালগাছকে কেন্দ্র করে অপূর্ব পরিকল্পনায় এই বাড়িটি নির্মিত। তালগাছের পাতাগুলি 'ধ্বজা'র মত করে বাড়িটির উপরে শোভিত বলেই এর নাম "তালধ্বজ"।


মাটির ঘরে থাকা কোন কঠীন কাজ নয় ।একটি চমৎকার মাটির ঘর তৈরী করে তাতে শান্তিতে থাকুন, ইটকাঠের বাড়ীর পাশে ছোট একটা মাটির ঘর তুলুন । এই পোষ্টের ৭ নং ছবিতে দেখেন বেরাইদের লোকজন কিভাবে ইটের তৈরী দালানের পাশে মাটির ঘরে আছে সুখেশান্তিতে , আর যদি তাও না হয় তবে মাটির ঘরে বেড়ায়ে যাওয়ার জন্য নিমন্ত্রন রইল ।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল




৪৪| ২৫ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩২

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আপনি একজন মৃত্যুঞ্জয়ী কোভিড১৯ জয় করে আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন আপনাকে অভিনন্দন। চমৎকার প্রত্যুত্তরে ধন্যবাদ । দেশে সাইসমিক মাইক্রোজোনেশন করা দরকার যে কোন স্থাপনা নির্মান করার আগে। বাড়ি ঘর করলে তো অবশ্য করা দরকার । মাটির ঘরের ভর অনেক টিনের বাড়ির তুলনায়। আরেকটা বিষয় গুরুত্পূর্ণ সেটা হলো ইলিভেশন সার্ভে ।

২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৪৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



বিলম্বিত উত্তর দানের জন্য দু:খিত ।
করোনায় আক্রান্তের পরে শারিরিক দুর্বলতার কারণে লেখা লেখিতে অনেক স্লো হয়ে গেছি।
পুর্বের মন্তব্যগুলির জবাব লিখতেও বেশ সময় নিয়েছে ।

দেশে মাটির ঘর কেন সকল ধরনের গৃহ নির্মাণের বিষয়ে আপনার করা এই মন্তব্যের কথাগুলি খুবই মুল্যবান ও গুরুত্বপুর্ণ । দেশে সাইসমিক মাইক্রোজোনেশন করা দরকার যে কোন স্থাপনা নির্মান করার আগে। বাড়ি ঘর করলে তো অবশ্য করা দরকার । মাটির ঘরের ভর অনেক টিনের বাড়ির তুলনায়। আরেকটা বিষয় গুরুত্পূর্ণ সেটা হলো ইলিভেশন সার্ভে ।

বিষয়টি আমি খুবই গুরুত্বের সাথে নিয়েছি। আমার পরের পর্বে মাটির ঘর নির্মাণ প্রসঙ্গে এ বিষয়টি ফোকাল পয়েন্ট হিসাবে উঠে আসবে । তাই এটা নিয়ে এখানে আর বিস্তরিত আলোচনায় গেলাম না । পরের পর্বটি দু এক দিনের মধ্যেই সামুতে প্রকাশ করব । এসে দেখার জন্য সবিনয় অনুরোধ রইল ।

শুভেচ্ছা নিবেন ।

৪৫| ২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:০৪

মুক্তা নীল বলেছেন:
এমন সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্যবহুল ও পরিশ্রমী পোস্টের জন্য
আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই ।
অনেক কিছুই নতুন জানলাম এবং সেই সাথে মাটির ঘরের
খুঁটিনাটি যে সমস্ত বিষয় আপনি উপস্থাপন করলেন তাতে
আমার যা আগ্রহ ছিল তা অনেকটাই স্পষ্ট হলো।
অনেক বছর আগে সিলেটের মালনিছড়া টি গার্ডেনের
ফ্যাক্টরিতে গিয়েছিলাম । সেখানে আশেপাশে কিছু মাটির
ঘর দেখে কৌতূহলবশত আমি সেখানে একজন মালির ঘরে কিছুক্ষণ বসে ছিলাম এবং তিনি আমাকে আপ্যায়নও
করেছিলেন । আমার মনে আছে মাটির ঘরের এত সুশীতল
অনুভূতি আর আপ্যায়ন যা জীবনে কখনো ভুলার নয়।
আপনার এত বড় সুবিশাল পোস্ট এবং কিছু মন্তব্য প্রতিমন্তব্য অবশ্যই শিক্ষনীয় ।
মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় আপনি সুস্থ হয়ে আমাদের
সকলের মাঝে ফিরে এসেছেন এটা পরম আনন্দের,
আপনি সবসময় ভালো ও সুস্থথাকুন এই দোয়া করি।


২৯ শে জুন, ২০২০ সকাল ৭:১৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



আল্লার রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় করোনার হাত হতে সুস্থ দেহে ফিরে আসতে পেরেছি, সেজন্য শুকরিয়া জানাই বিধাতার পরে আর আপনাদের সকলের প্রতি জানাই কৃতজ্ঞতা ।

মাটির ঘর নিয়ে আমার অনেক চিন্তা ভাবনা । পরের দুনিয়ার মাটির ঘরতো বটেই এ দুনিয়াতেও চাই দেশের অবহেলিত,চরম দারিদ্রের মধ্যে মাটির ঘরে বসবাসকারী মানুষজনজন আরামে স্বচ্ছন্দে বাস করুক, তারা পাক আরামদায়ক বাসস্থানের ঠিকানা ।

আপনি বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের বৃহত্তম এবং সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত মালনীছড়া চা বাগানের মালীর মাটির ঘরে কৌতুহল ভরে কিছুটা সময় কাটিয়েছেন । বাগানের চা শ্রমিকদের থাকার জন্য মাটির লেপ দেয়া বেড়ার ঘর আর খরকুটার ছাউনি দেয়া ঘরগুলি বাইরে দেখে দেখায় খুব সুন্দর ।

চা বাগান মালিকদের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ শ্রমিক-কর্মচারীদের নাই বৃটিশ আমলেও ছিলনা এখনো বলতে গেলে নেই । জানিনা আপনি মালিক পক্ষের কেও কিনা । তবে আপনি কৌতুহলের বসে হলেও নীজ চোখে দেখেছেন তাদের ঘরের ভিতরটা , দেখেছেন তাদের দারিদ্রতার চিহ্নগুলি আর কিছুক্ষন অবস্থান করার কালে নিশ্চয়ই কান পেতে শুনেছেন তাদের দৈনতার কথা। ঝড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ,রোদে পুরে ,ঠান্ডায় জমে গিয়ে তারা শ্রমিক হিসাবে চা বাগানের পরিচর্যাকরাসহ বাগানের কচি চাপাতা তুলে আনে বাগান মালিক ও আমাদের জন্য । তিনটি কুড়ী একটি পাতার এককাপ চা আধুনিক মানের চা কফি হাউজে আমরা যে দাম দিয়ে কিনে খাই তার সমানও পারিশ্রমিক একজন চা শ্রমিক সারা দিনমান কাজ করে পায়না ।
বাপ দাদাদের কাছে শুনেছি বৃটিশ আমলে দেশে যখন চা পাতা দিয়ে পানীয় তৈরী করে বাজারজাত করন করা শুরু হয়
তখনকার ব্রিটিশ বিজ্ঞাপনে শোভা পেত -
“ইহাতে নেই কোনো মাদকতা দোষ ,
ইহা সেবনে চিত্ত হয় পরিতোষ”।

অথচ চা বাগানের শ্রমিকেরা দিনমান কাজ করে চা পান না করে দিনমান কাজ করে তাদের চিত্ত পরিতোষ করত সন্ধার পরে তাদের উপার্জনের সিংহভাগ দিয়ে মাদক জাতীয় পানীয় সেবন করে । তাদেরকে রাখা হতো ঘোরের মধ্যে, চা বাগান ছেড়ে যেন চলে না যায় । অবশ্য এখন তাদের অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে । তারপরেও মাটির জীর্ণ কুটিরে বসবাসকরী চা শ্রমিকদের সর্বাঙ্গীন মঙ্গলের জন্য আমাদের অনেক কিছুই করা আছে।

এই পোষ্টের কল্যানে ঘরের অনেক খুটিনাটি জানতে পেরেছেন শুনে ভাল লাগল ।

শুভেচ্ছা রইল




৪৬| ২৬ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:২২

সুপারডুপার বলেছেন:



@মাহমুদ ভাই ,

ভবিষ্যতে বাংলাদেশে টিনের বাড়ির পরিবর্তে পরিত্যাক্ত শিপিং কন্টেইনার ব্যবহার করে বাড়ি বা আশ্রয়কেন্দ্র বানানোর কি সম্ভবনা আছে? শিপিং কন্টেইনার ব্যবহার করে বিল্ডিং কেমন হতে পারে তা বোঝানোর জন্য নিম্নে জার্মানির প্রথম কন্টেইনার হোস্টেলের একটা ভিডিও দিলাম।

Quirky Hotels: shipping containers | DW English

২৯ শে জুন, ২০২০ সকাল ৭:২৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




মন্তব্যটি মাহমুদ ভাইকে এড্রেস করে হলেও এটা আমার দৃষ্টি আকর্ষন করেছে ।
ভিডিউতে শিপিং কনটেইনারে বসবাসের চিত্র দেখলাম । বিষয়টি আমার মনযোগ
আকর্ষন করেছে। এটা নিয়ে আরো কিছু কিছু পড়াশুনার আগ্রহ সৃস্টি হয়েছে।
ধন্যবাদ মুল্যবান তথ্য সম্বলিত ভিডিও লিংকটি এখানেসংযোজিত করার জন্য ।

শুভেচ্ছা রইল

৪৭| ২৬ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৫৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




সুপারডুপার ভাই, এ বিষয়ে আমার খুবই সামান্য ও অল্প ধারণা। বাংলাদেশে কন্সট্রাকশন কোম্পানিগুলো তাদের ওয়ার্কারদের জন্য ডরমিটরি করছেন ২০ - ৩০ বছর ধরে শিপিং কন্টেইনার দিয়ে। এছাড়া বাংলাদেশে সাময়িক অফিস করেছেন বিদেশী এনজিওগুলো শিপিং কন্টেইনার দিয়ে - আর কোথাও ব্যবহার হয়েছে কিনা আমার সঠিক জানা নেই বা ধারণা নেই বলতে পারেন।

শিপিং কন্টেইনার ষ্টিলের হওয়ার কারণে বেশ গরম হয়ে পরে তাতে করে এসি কানেকশন প্রয়োজন পরে আর বাংলাদেশে এসি ব্যয় সবাই বহন করেন না বা করতে পারেন ও না।

দেশের বাইরে ওয়ার্কারদের ডরমিটরি শিপিং কন্টেইনার দিয়ে করে থাকে, তাছাড়া জাতিসংঘ মিশনে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে প্রচুর মিলিটারি বেইজ শিপিং কন্টেইনার দিয়ে করা আছে। আমি নিজেও শিপিং কন্টেইনারে থেকেছি। তাই এ্টুকু জানি কন্টেইনারে হাউজ খুব সুন্দর ও আরামদায়ক। ইউটিউবে শিপিং কন্টেইনারের সুন্দর সুন্দর প্রচুর বাড়ির ডিজাইন আছে।

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ সুপারডুপার ভাই।

২৯ শে জুন, ২০২০ সকাল ৭:৪৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



এই সুবাদে শিপিং কনটেইনারে বসবাস সংক্রান্ত অনেক ইন্টারেসটিং তথ্য জানা হল ।
এইপোষ্টে আপনার পুর্বেকার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ধারনা হয়েছিল আপনি শান্তি মিশনে
কোস্টারিকায় কিছুদিন ছিলেন, এখন ধারনাটি বাস্তবতা পেল।এয়ার ফোর্সের অফিসার
আমার ছোট বোনের বর শান্তি মিশনে কোস্টারিকায় বছর খানেক নিয়োজিত ছিল।
শিপিং কনটেইনারে বসবাসের বিষয়ে অনেক কিছু জানানোর জন্য আপনাদের
দু'জনের প্রতিই রইল ধন্যবাদ ।

ভাল থাকুন এ কামনাই করি ।




৪৮| ২৭ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৩৬

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: পরশ পাথর পাওয়া পর্যন্ত সাথে থাকুন ।
........................................................................
লেখাটির সার্থকতা এখানেই, যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি
তাহলে,এর থেকে রিসার্চ করে উন্নতমানের মাটির ঘর করা সম্ভব ।

......................................................................................
আমি মাটির ঘর প্রচুর দেখেছি, প্রয়োজনে থাকতেও হয়েছে, কিন্ত
এমন ভাবে লেখা যায় চিন্তা করিনি, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।

২৯ শে জুন, ২০২০ সকাল ৮:১৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




ধন্যবাদ স্বপ্নের শঙ্খচিল,মাটির ঘর নিয়ে এমন সুন্দর করে
মাত্র কয়েক লাইনে মুল্যবান হৃদয়গ্রাহী একটি মন্তব্য দেয়ার জন্য ।
মাটির ঘরে থেকে কেমন লেগেছে ভাব প্রকাশ করলে আরো ভাল লাগত ।
মাটির ঘর কি তার পুর্ব গৌরব ফিরে পাবে? নাকি হরিয়ে যাবে কালের গর্ভে?
কে দিবে তাকে প্রাণ , কে ধরিবে হাল , আছে কার হিম্মত , হে জোয়ান
হও অগুয়ান সোনার বাংলার মাটিকে গড় পরশ পাথরে , এর পরশে যেন
সর্বত্রই সোনা ঝরে ।

শুভেচ্ছা রইল

৪৯| ২৭ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৩৭

সুপারডুপার বলেছেন:



মাহমুদ ভাই, আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

স্টিলের তাপ পরিবাহিতা (thermal conductivity) থেকে দেখা যায় এটা ভালো ইনসুলেটর হিসেবে কাজ করতে পারে না। তাই গ্রীষ্মকালে কন্টেইনারের ভিতরে খুব গরম হয় এবং শীতকালে খুব ঠান্ডা হয় । যদি কনটেইনারে ভিতরে মাটি, কংক্রিট, কাঠ, ফাইবার ব্যবহার করে ইনসুলেশন করা হয় , বাহিরে গরম ভিতরে ঠান্ডার কারণে তাপমাত্রার পার্থক্য থেকে স্টিলে মরিচা ধরতে পারে। এই সমস্যার সমাধান হতে পারে যদি কনটেইনারের বাহিরে ইনসুলেশন করা হয়। কিন্তু তখন কন্টেইনারের বাহিরের সৌন্দর্য নষ্ট হবে।

শিপিং কন্টেইনার ব্যবহার করে বাসা নির্মাণে আরো কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যেমনঃ

১) বাসার আকারের সীমাবদ্ধতা
২) ব্যয়বহুল স্টিল দিয়ে শিপিং কন্টেইনার একটার উপর আরেকটা যুক্ত করে বিল্ডিং মজবুত করতে হয়
৩) বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য পরিবহনে ব্যবহৃত কন্টেইনার বাসা নির্মাণে ব্যাবহার করলে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থেকে যায়।

7 reasons why shipping container homes are a SCAM


হাতের কাছে যে ম্যাটেরিয়াল পাওয়া যায় তা ব্যবহার করে বাড়ি নির্মাণ করলে পরিবহন খরচ বেঁচে যায়। যদি শিপিং কন্টেইনার অনেক দূর থেকে পরিবহন করে নিয়ে আসা লাগে তখন বাসা নির্মাণের খরচ বেড়ে যায়। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে যদি হাতের কাছেই পরিত্যাক্ত শিপিং কন্টেইনার পাওয়া যায় তখন শিপিং কন্টেইনার ব্যবহার করে বাড়ি বানালে খরচ কমবে।

আমার মতে স্থানভেদে ব্যয় বিশ্লেষণ করে দেখা উচিত, কোন ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করে বাসা বানালে সবচেয়ে কম খরচে মজবুত, সুন্দর ও পরিবেশ বান্ধব বাসা সম্ভব, সেই ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করেই বাসা বানানো উচিত।

২৯ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




মন্তব্যটি মাহমুদ ভাইকে এড্রেস করে হলেও এটাো আমার দৃষ্টি আকর্ষন করেছে ।
ভিডিউতে শিপিং কনটেইনারে বসবাসের চিত্রটি মনযোগ দিয়ে দেখলাম । বিষয়টি
দারুনভাবে আমার মনযোগ আকর্ষন করেছে। এটা নিয়ে আরো কিছু পড়াশুনার
আগ্রহ সৃস্টি হয়েছে। আপনার সুত্র ধরে বিষয়টি নিয়ে আরো একটু নারাচারা করে
কিছু গুরুত্বপর্ণ তথ্য পেয়েছ যা আমার পরবর্তী পর্বে প্রতিফলিত হবে, পর্বটি প্রকাশ
হলে জানান দিব । এসে দেখে গেলে বাধিত হব ।

ধন্যবাদ মুল্যবান তথ্য সম্বলিত ভিডিও লিংকটি এখানেস সংযোজিত করার জন্য ।

৫০| ২৭ শে জুন, ২০২০ সকাল ৯:০৮

মিরোরডডল বলেছেন: আহা কি ভয়াবহ কষ্টের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন , অনুমান করতে পারছি ।
আমার ব্রিথিং ডিফিকাল্টি আছে । জীবনে এমন সময় অনেকবার এসেছে যখন মনে হয়েছে হু নোজ এটা হয়তো শেষ নিঃশ্বাস । আসলেই খুব কষ্টদায়ক এটা । আপনি ও আপনার পরিবারের জন্য শুভকামনা । অনেক কঠিন সময় পার করেছেন করোনায় । আগামী সময়গুলো সুন্দর কাটুক ।

মাটির ঘর নিয়ে লেখা অনবদ্য হয়েছে । আলী ভাইয়ের পোষ্ট মানেই ফুল অভ ইনফরমেশন । ছোটবেলায় গ্রামে দেখেছি মাটির ঘর যেগুলো এখন বিলুপ্তির পথে । উত্তরাঞ্চলে যে এখনও মাটির ঘরের এমন প্রচলন জানা ছিলোনা । গৃহহীনের জন্য প্রকল্পগুলোর কথা জেনে খুব ভালো লাগলো ।

সবচেয়ে ভালো লেগেছে কব-হাউসগুলো ছবি ২৮ থেকে ৩৪ । আমি মুগ্ধ ! এতো কিউট ! শুধু কি মাটির ঘর, মাটির চুলার রান্নাও যে কি মজা ! অন্যরকম একটা ঘ্রাণ । জীবনের প্রয়োজনে অনেক সময় অনেক কিছুই মেনে নিলেও আমি বেসিক্যালি একজন নেচার লাভার । ন্যাচারাল যেকোনো কিছুই আমাকে অনেক বেশী আকর্ষণ করে । মাটির ঘর মানেই যেন শান্তি শান্তি । আবারও ফিরে আসুক মাটির ঘর । আপনার এই অন্য রকম স্বপ্ন দেখাটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে ।

ইচ্ছে করে
ইচ্ছে করে অন্য একটা আকশ দেখি
একই মাটির ওপর অন্য দিক দিগন্ত
অন্য সময় আসুক এবার ইচ্ছে করে
আমার দেশে
সবার দেশে
সবার ঘরে

২৯ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



হ্যাঁ করোনাক্রান্তের দিনগুলি ভয়াবহই গেছে, আল্লর অশেষ রহমতে ও আপনাদের সকলের দোয়ায় সে সাথে স্বাস্থ্যসেবীদের নিরলস ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় করোনার হাত হতে রক্ষা পেয়ে সুস্থ দেহে ফিরে আসতে পেরেছি।বিধাতার প্রতি শুকরিয়া ও অন্যান্য সকলের প্রতি জানাচ্ছি কৃতজ্ঞতা ।

মাটির ঘর নিয়ে লেখা অনবদ্য ও ইনফরমেটিভ হয়েছে শুনে ভাল লাগছে । ছোটবেলায় দেখা গ্রামগুলিকে বিলুপ্তির হাত হতে রক্ষার লক্ষে জনসচেতনতা সৃষ্টিই লেখটির অন্যতম উদ্দেশ্য । । উত্তরাঞ্চল থেকেই বিলুপ্তপ্রায় মাটির ঘরের পুণরুজ্জীবন কর্মকান্ড শুরু হয়ে গেছে , এই পোষ্টে ১৪ নং ১৫ নং ছবিতে তার কিছুটা দেখানো হয়েছে । গৃহহীণদের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্পগুলি প্রসংসার যোগ্য । গৃহহীণদের জন্য বাসস্থানের আরো কিছু ভাবনা আমার পরের পর্বে উঠে আসবে ।

কব-হাউসগুলো আসলেই দেখতে খুবই সুন্দর, পরিবেশ বান্ধবতো বটেই, সৌখীন বাড়ীঘর নির্মানকারী বিত্তবনেরা বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন। এ ধরনের কব-হাউজের প্রতি আপনার মুগ্ধতার কথা শুনে আমি অপ্লুত, এই মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ুক সর্বত্র।! ঠিকই বলেছেন মাটির চুলায় কাঠের লাকরিতে রান্নাও খুবই মঝা । সেজন্যতো মাটির চুলায় বারবিকিউ জাতীয় খাবার তৈরীর ধুম পরে যায় পাশ্চাত্তের দেশ গুলিতে , সামারে ঘরের বাইরে বাগানে বসে বারবিকিউ রান্নার জন্য বাজারে মাটির চৃলার কদর বাড়ে ।

আপনার মত একজন ন্যারাল লাভারকে মাটির ঘর প্রলুব্ধ করবে এটাই স্বাভাবিক । মাটির ঘরের জন্য আপনার কামনা/স্বপ্ন বাস্তবে ধরা এ কামনা রইল ।

এ মন্তব্যটি লিখার সময় লিংকে দেয়া গানটি পুরাটাই কয়েক বার শুনেছি, গানের সুর ও লিরেক অপুর্ব ।সুন্দর এই গানটির লিংক এখানে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
গানের সুরে সুরে আমারো ইচ্ছে করে অন্য একটা আকাশ দেখি, ইচ্ছে করে অন্যরকম একটা ফুল ফুটুক, ইচ্ছা করে ঘরে এবং বাইরে সবাই সুখে থাকুক , ইচ্ছে করে যেকোন ঘরেও হোক সকলেই যেন শান্তিতে থাকে, ইচ্ছা করে সবার দুহাত উঠুক ভরে, ইচ্ছা করে সবার রান্না ঘরে ভাতের সুবাস ছড়াক, ইচ্ছে করে কেও না খেয়ে মরুক ভাতের অভাবে, আরো শত শত ইচ্ছে করে, ছোট্ট এ পরিসরে সে সব কথা বলি কি করে!

শুভেচ্ছা রইল

৫১| ২৭ শে জুন, ২০২০ সকাল ৯:১৩

মিরোরডডল বলেছেন: *****আকাশ*****

২৯ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




এটা যে টাইপিং এরর সেটা খুব সহজেই বুঝা গেছে ।
মন্তব্যের ঘরে লিখে প্রকাশের পর তা এডিট করার
সুযোগ না থাকায় বেশ বিরম্বনাতেই পড়তে হয় লেখককে।
তাই মন্তব্যটি প্রকশিত হওয়ার পুর্বে এর এডিটের
সুযোগ থাকা প্রয়োজন বলে মনে করি।

৫২| ২৭ শে জুন, ২০২০ সকাল ১০:২৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার জীবনের চাহিদা কম। ছোট এবং অল্পতেই সন্তুষ্ট। ৩৩ কিংবা ৩৪ নম্বর ছবির বাড়ী দুটোর যেকোন একটা হলেই চলবে। :)

২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৪৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



যার জীবনে চাহিদা যত কম , তার জীবন তত বেশি সুখের। অতিরিক্ত পাওয়ার লোভ, ভবিষ্যতে কারণ হয়ে ওঠে দুঃখের ।
তাই আপনার মত গুণী ও জ্ঞানী মানুষ যে ছোট ও অল্পতেইসন্তুষ্ট থাকবেন সেটাইতো স্বাভাবিক । আমার মেয়ে সব সময়
কথায় কথায় বলে ইষ্ট ওয়েষ্ট, বাংলার মাটি ইজ বেষ্ট, তার কাছে বাংলাদেশের সবকিছুই সেরা । সে যে সোনা,সোনা নয়
সোনার চেয়েও খাটি, সে যে আমার দেশের মাটি। সে রকমভাবে ঈষ্ট ওয়েষ্ট ঘুরা আপনার মত ব্যক্তিত্বর কাছে ৩৩ কিংবা
৩৪ নং ডিজাইনের মাটির ঘর পছন্দ না হয়ে যায় কোথায় । আপনাদের উত্তরবঙ্গ মাটিরঘরেরজন্য বিখ্যাত,সেখান হতেই শুরু হয়েছে আধুনিক স্থাপত্যশৈলী অনুসরনে মাটির ঘর তৈরী প্রক্রিয়া। বিষয়টি বাংলাদেশ হাউজিং ও রিসার্চ ইনস্টিটিউট বেশ গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। এ বিষয়ে উপরে করুনা ধারার মন্তব্য(৪৩ নং) ও আমার প্রতিমন্তব্যে কিছুটা উঠে এসেছে ।

শুভেচ্ছা রইল

৫৩| ২৭ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:১০

মিরোরডডল বলেছেন: @খায়রুল আহসান
আমার চাহিদা আরও কম । আমি ওনারশিপ চাইনা ।
আপনি নিয়ে নেন, হলিডে কটেজ হিসেবে মাঝে মাঝে আমাকে থাকতে দিলেই হবে :)
৩৪ নম্বর নেবেন । ওটা সুপার কিউট ! :)

২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:৩৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



@ খাইরুল আহসান
উপরের ৫৩ নং মন্তব্যের প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষন করছি ।
ঘরগুলি যিনি খুশি তিনি নেন , আমার বলার কিছু নেই, আগেও ছিলনা,
শুধু চেয়ে চেয়ে দেখব । কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক হলেও হৈমন্তি শুক্লার কন্ঠে
গাওয়া এই সুন্দর গানটি শুনুন
আমার বলার কিছু ছিলনা

৫৪| ২৮ শে জুন, ২০২০ ভোর ৬:০৩

সুপারডুপার বলেছেন:



আর্কিওপটেরিক্স -এর একটি পোস্টে দেখলাম আপনি বিভিন্ন লেখা ও করুচীপুর্ণ ছবির এডলিংকের সমস্যায় আছেন। এই সমস্যার সমাধানে আপনি গুগল ক্রোমে adblock plus ও adblock for youtube (ইউটিউব ভিডিও তে এড দেখাবে না ) এক্সটেনশন ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

How to Install AdBlock for Chrome!

২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:৫০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


ধন্যবাদ উপকারী ভিডিউ লিংটি দেয়ার জন্য ।
এটা প্রয়োগ প্রয়োগ করার পরে করুচিপুর্ণ এডগুলি আসা দেখা যায় বন্ধ হয়েছে,তবে এদের যে ক্ষমতা কোন ফাক ফোকর দিয়ে
আবার ডুকে না গেলেই হয় । কিন্তু দুনিয়ার কিছু নাম করা অন লাইন নিউজ পেপারের সংবাদ সক্রান্ত বিষয়গুলি এখনো ভেসে উঠে ডান দিকে ।এটা মনে হয় ঐ সমস্ত সাইটে ভিজিট করার সময় পুরা রিপোর্ট পাঠের পুর্বে এলাউ আথবা ব্লক করার অপসনের ব্লক বাটনে চাপ না দিয়ে সংবাদটি পুরাটা পড়ার জন্য এলাউ অপসেনে ক্লিক করার ফল হলেও হতে পারে । যাহোক,এটা তেমন ক্ষতিকর নয় ,দুনিয়ার গুরুত্বপুর্ণ আপ-টু-ডেট সংবাদ দেখতে পারি ।

শুভেচ্ছা রইল

৫৫| ২৯ শে জুন, ২০২০ সকাল ৮:৩৩

সোহানী বলেছেন: দাওয়াত কবুল মানে .... পারলে এক্ষুনি ছুটে যাবো।

গ্রামীন পরিবেশে অবশ্যই জীবন কেটেছে। আমার বাবা দাদা মা নানা সবারই বড় হওয়া গ্রামে। ছোটবেলায় কয়েকবার যেতাম কিন্তু বড় হবার পর সেটা সম্ভব হতো না। তাই একবার সবাই খুব ঘটা করে গেছিলাম এবং তা নিয়ে পোস্টও দিয়েছিলাম ব্লগে। কিন্তু আমার বাচ্চারা সেভাবে যেতে পারেনি। সেভাবে নেবারও সুযোগ ছিলনা।

তবে খাবারের যে তালিকা দিয়েছেন আমার মাথা খারাপ হবার জোগাড়। এ জীবনে এতো খাবার খাইনি বা পাইনি। যদিও আমি মোটেও ভোজন রসিক নই। খাওয়া নিয়ে আমার খুব উচ্ছাস নেই। কিন্তু আপনার খাবারের তালিকা দেখে ভীমড়ি খাওয়ার জোগাড়!!!! B-)) ..............

তবে আমার এখনকার গ্রাম ভালোলাগে না। চারপাশে এতো আলো, আধাপাকা বাড়ি বা পূর্ণ দালান.... প্রায় শহর। আগে যখন যেতাম তখন গ্রামে বিদ্যুত ছিল না। সন্ধার পর উঠোনে মাদুর পেতে কাকা ফুফুরা সবাই গোল হয়ে বসে গান ধরতো। তারপর সেখানে মুড়ি গুড় চা চলতো। সকাল হলে মাটির হাড়িতে খেঁজুরের রসের পায়েস বসতো মাটির চুলায়। দিনের বেলায় পুকুর পাড়ে বাগঘুটি খেলতো সবাই। আমরা এ মাঠ ও মাঠ করে আম জাম পেয়ারা কুড়াতাম। আর প্রতি রোজায় গ্রামের লোকজনকে বাবা খাওয়াতো গরু জবাই করে। কলাপাতায় গরুর মাংস, ভাত, ডাল আর সিন্নি (গুড়ের পায়েস) দেয়া হতো গ্রামের সাধারন মানুষদের। কেউই দাওয়াতী নয়, যার ইচ্ছে এসে খেয়ে যেতো সারাদিন ভরে।

স্মৃতিতে সেসব দৃশ্য চোখ বন্ধ করলেই ভেসে উঠে।

২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৩৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



সবি বলে দিয়েছেন , আমার বলার আর কিছু নাই্ ।
জোনাকিরা বলে জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো নতুন
করে আলো জ্বালার দরকার তেমন নাই ।
আমার আলোয় পথ দেখে হাজার প্রজাপতি,
দিন শেষে আমার আলোই হয়ে যায় কুড়ে
ঘরের বাতি ।মাটির ঘর বলে আমাতেই হবে
অবশেষে সকলের গতি।

শুভেচ্ছা রইল



৫৬| ২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: @সোহানী, কেউই দাওয়াতী নয়, যার ইচ্ছে এসে খেয়ে যেতো সারাদিন ভরে - বাহ, আপনার বাবার এই মহানুভবতার কথা জেনে মুগ্ধ হ'লাম। আর আপনি ঠিকই বলেছেন, এখন আর গ্রামে গিয়ে বিদ্যুতের আলোতে রাতে চলাফেরা করতে ভাল লাগে না। তার চেয়ে সেই বাঁশের তরজার (বেড়ার) ফাঁক দিয়ে ঘরে প্রবেশ করা ছিঁটে ফোঁটা জ্যোৎস্নার স্নিগ্ধ আলো কতই না ভাল ছিল! শীতের রাতে ভোরের দিকে টিনে শিশির পড়ার শব্দও শোনা যেতো, কোন কারণে ঘুম ভেঙে গেলে, কান পেতে রাখলে!

২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৫৪

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:

আরো কিছু কথা মনে হয় বলার ছিল :)

কোথাও একটি বড় ভুল করেছি বলে মনে হয়!

শুভেচ্ছা রইল

৫৭| ০১ লা জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ইলা মিত্রের ছবি সম্বলিত অনুচ্ছেদ পর্যন্ত পড়া হয়েছে। বাকিটা এক বা একাধিক বারে পড়ার জন্য প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম। আপনার যে কোন লেখাই প্রচুর তথ্য ও গবেষণা সমৃদ্ধ বিধায় পড়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় ও মানসিক স্থিরতা প্রয়োজন হয়। আপাতত লেখার বিষয়ে কোন মন্তব্য করছি না। পড়া শেষ হলে মন্তব্য করবো ইনশাআল্লাহ।

ধন্যবাদ ডঃ এম এ আলী।

০১ লা জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় হেনা ভাই ,

আপনার মুল্যবান মতামতের অপেক্ষায় থাকলাম ।

শুভেচ্ছা রইল

৫৮| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ রাত ১:০২

সোহানাজোহা বলেছেন:
ছবি: টুইটার থেকে সংগ্রহ করা

আমাদের গ্রামে গ্যাস নেই, যদিও আমরা গ্যাসের দেশের মানুষ। বাড়িতে এলপি গ্যাসে রান্না হয় আর মাটির চুলাতেও রান্না হয়। মাটির চুলা পাকের ঘরে আছে দুইচোখা চুলা একটি, আর একচোখা চুলা একটি। আর পাকের ঘরের বাইরে আছে চারচোখা চুলা একটি, তাতে বাড়িতে ধান সিদ্ধ করার জন্য ব্যবহার হয়, এছাড়া বাড়িতে আত্মীয় পরিজন আসলে তাতে রান্না হয়।

মাটির চুলার সাথে আমাদের ঘরের সকলরে যে ভালোবাসা মিশে আছে তা দীর্ঘদিনের। বোঝজ্ঞান হওয়ার পর থেকে দেখছি বাড়িতে এই তিনটি মাটির চুলা। মেরামত করে করে চলছে - চলছে। ২০ - ৩০ বছর তো আধুনিক কোনো চুলা থাকার কথা না। মাটির চুলা যেগুলো গ্রামের বাড়িতে দেখছি তার বয়ষ কম করে হলেও ৪০ বছর হবে।

দেশ বিদেশের বিখ্যাত ব্রান্ডেড বেকারির ব্রেড রুটি খেয়েছি কিন্তু গ্রামের বাড়ির গনগনে আগুনের চুলা থেকে নামানো রুটির সাথে কখনো তুলনা করা যায় না। এই গনগনে আগুনে রুটির সাথে মিশে আছে আমাদের গ্রামের বাড়ির ভালোবাসা, ৪০ বছরের পুরোনো আমার দাদীজানের হাতের ভালোবাসা। আমার মা এই চুলাকে খুব যত্ন করেন। কারণ এই বাড়িতে এই চুলাতে আমার দাদীজান রান্না করেছেন। দাদীজান এখনো বাড়িতে গেলে নিজের হাতে দুধ গরম করেন, চা তৈরি করেন। - মাটির চুলাতে তিনি রান্না করে আনন্দ পান।

আমাদের পুরোনো বাড়ির মাটির চুলার বয়ষ প্রায় ৭০ বছর। এখনো টিকে আছে খুব সুন্দর ভাবেই আছে। প্রতি তিন-চার মাস অন্তর কাদা মাটি করে চুলার ভেতরে ও বাইরে একবার লেপ দিয়ে নিতে হয়।

আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।



০৬ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৪৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




মাটির চুলার ছবিটি খুবই সুন্দর ,অনেকক্ষনধরে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখলাম।
আপনার গ্রামের বাড়ীর মাটির চুলার বিবরণ পাঠে ভাল লাগল ।
আপনাদের গ্রামের বাড়ীতে মাটিরঘর ছিল কিনা জানতে
ভাল হতো ।

আমাদের গ্রামে বাড়িতে এখনো মাটির চুলায় কাঠের লাকরী দিয়ে রান্না করা হয় । আর পাকের ঘরের বাইরে ছিল তিনমোখা বড় মাটির চুলা। চুলাগুলি বেশ গর্ত করে করা হত । এই চুলায় তুষ এবং খরকে জ্বালানী হিসবে ব্যবহার করে ধান সিদ্ধ করা হত । বাহিরের ঐ চুলাতে শীতকালে খেজুরের রস জাল দিয়ে গুড় তৈরী করা হতো।

মাটির চুলাগুলির আয়ু বেশ লম্বা , একবার তৈরী করলে অনেক বছর ধরে এগুলি ব্যবহার করা যেতো । আমার মনে আছে
একটি চুলা কয়েক বছর ব্যবহারের পর সেটা মাটি চাপা দিয়ে বন্ধ বন্ধ করে দেয়া হত । একটু দুরে আরেকটি নতুন তিনমোখা চুলা তৈরী করা হত । বন্ধ করা চুলায় লাগিয়ে দেয়া হতো পুইশাক । তাতে পুইশাক এত প্রচুর হতো যে নীজেরা খাওয়ার পরেও পাড়া প্রতিবেশিদের কাছে বিলানো যেতো মনের সুখে।

গুগল ছবি ইমেজ থেকে সংগৃহীত

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল

৫৯| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:১০

নজসু বলেছেন:



একটি লেখার পিছনে আপনি যে কতো পরিশ্রম করেন তা প্রত্যেক পাঠকই অনুধাবন করতে পারেন।
আপনার কষ্টের বিনিময়ে আমারা সাধারণ পাঠক উপকৃত হই। জানতে পারি অনেক কিছু।
দোয়া করি, মহান আল্লাহ আপনাকে নেক হায়াত দান করুন। আমিন।

০৬ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৪৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




কামনা করি আল্লাহ আপনার দোয়া কবুল করুন ।
আপনার মনমাতানো কথামালায় আমি আপ্লুত ।

আপনার জন্য রইল শুভ কামনা ।

৬০| ০৬ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:৪২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: এই লেখাটি তৈরি করতে আপনাকে যে পরিমান পড়াশুনা ও পরিশ্রম করতে হয়েছে , ভেবে আমার গায়ে জ্বর চলে আসছে। অসুস্থ শরীরে এরকম একটি মাস্টারপিস লেখা তৈরি করা আমার পক্ষে এ্যাবসলিউটলি ইমপসিবল। শুধু আমি না, ব্লগের অনেক ভি আই পি ব্লগারের পক্ষেও সম্ভব না।
যাই হোক, টপ টু বটম পুরো লেখাটি পড়ে আমি সোঁদা মাটির গন্ধের মতো হারিয়ে যাওয়া এক অতি পরিচিত ঘ্রানের সন্ধান পেলাম। উত্তরাঞ্চলের মানুষ হবার কারণে মাটির ঘরের সাথে আমার ভালোই পরিচয় আছে। এরকম একটি মাটির ঘরেই আমি জন্মেছিলাম। আমার বাপ চাচারা সবাই মাটির ঘরের মানুষ। যদিও দীর্ঘদিন যাবত আমরা ইট কাঠ পাথরের খাঁচায় বন্দী। আপনার এই লেখা পড়ে ফিরে গিয়েছিলাম সুদুর অতীতে। এক ধরনের নস্টালজিয়া ঘিরে ধরেছিল আমাকে।

এই ধরনের মাস্টারপিস লেখা আসলে প্রিন্ট মিডিয়ার কন্টেন্ট। ব্লগে এখন পাঠক সংখ্যা অনেক কমে গেছে। তাই আপনার শ্রম ও জ্ঞানের যথাযথ মুল্যায়ন হবার সুযোগ এখানে সীমিত। তারপরেও আমাদের জন্য কষ্ট করে আপনি লেখাটি পোস্ট দেওয়ায় ব্যক্তিগতভাবে আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ। লেখাটি প্রিয়তে নিলাম।

ধন্যবাদ ডঃ এম এ আলী।

০৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৩০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



আবার এসে মুল্যবান মতামত রেখে যাওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় হেনা ভাই ।

আপনি ঠিকই অনুভব করেছেন, এই লেখাটি তৈরি করতে আমাকে যথেষ্ট পড়াশুনা ও পরিশ্রম করতে হয়েছে , তবে তা ব্লগের ভি আই পি ব্লগারদের মুল্যবান গুণ সমৃদ্ধ লেখার তুলনায় কিছুই না , যাহোক আপনার প্রসংসায় আমি আপ্লুত ।

আপনার সেই ধারাবাহিক উপন্যাসে পড়েছিলাম আপনার দাদার বাড়ীতে সুন্দর মাটির ঘর রয়েছে ওমাটির ঘরেই আপনার জন্ম, তাই আপনি যে আমার লেখাটি পাঠে সোঁদা মাটির গন্ধে হারিয়ে গিয়ে এক অতি পরিচিত ঘ্রানের সন্ধান পাবেন তাতে আমি নিশ্চিত ছিলাম । উত্তরাঞ্চলের মানুষ হবার কারণে মাটির ঘরের সাথে আপনার ভালোই পরিচয় আছে সেটাও আমি বিলক্ষন বুঝতে পেরেছিলাম । দীর্ঘদিন ধরে ইট কাঠ পাথরের খাঁচায় বন্দী হলেও আপনার মনে যে মাটির ঘরের প্রতি নাড়ীর টান থাকবে ও তা আপনাকে টানবে তাকি আর বলার বাকি রাখে। তাইতো যে কোন উপায়ে প্রায় হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘরকে
টিকিয়ে রাখার জন্য আপনার মত বিজ্ঞ কথা সাহিত্যিকের অপরিসীম ক্ষমতা রয়েছে । আপনার বিভিন্ন লেখায় মাটির ঘরের
সৌন্দর্যের পাশাপাশি এর পরিবেশ বান্ধব কথাগুলি কোন না কোন ভাবে উঠে আসলে মাটির ঘর পুণরুজ্জীবিত হবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ।

লেখাটি প্রিয়তে নেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন ।

ভাল থাকার শুভ কামনা রইল

৬১| ১১ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:২০

অন্তরন্তর বলেছেন: শ্রদ্ধেয় আলী ভাই আমি সাধারণত পোস্টের শেষে মন্তব্য করি কারন পোস্টের সাথে চমৎকার সব মন্তব্য এবং প্রতিউত্তর পড়া যায়। এপোস্টের সব পড়ে মনটা ভরে গেল। এমন পোস্ট আর মন্তব্য হল ব্লগিং।
আমার অনেক আত্মীয়ের বাসায় মাটির ঘরে থাকার সুজুগ হয়েছে জিবনে এবং তা আসলেই খুব আনন্দজনক আর আরামদায়ক। যেভাবে জনসংখ্যা বারছে তাতে আমার মনে হয় ছোট এদেশে হাইরাইজ বিল্ডিং ছাড়া চলবে না। ৩০ বছর আগের আমার গ্রাম আর এখনকার আমার গ্রাম এক নয়, জমির স্বল্পতা তিব্র জনসংখ্যার তুলনায়। এখনত গ্রামগুলোতে হাইরাইজ বিল্ডিং লাগবে বলে মনে হচ্ছে তারপর ভবিষ্যতে আরও সমস্যা আসছে। আর শহরগুলোর কথা নাই বলি কারন বসবাসের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে। ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।

১২ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



নতুন একটি পোষ্টের জন্য লেখার কাজে ব্যস্ত থাকায় মন্তব্যের উত্তর দানে বিলম্বের জন্য দুঃখিত ।
আপনার মন্তব্যের মধ্যে থাকা নীচের কথাগুলি খুবই মুল্যবান ও গুরুত্বপুর্ণ ।
যেভাবে জনসংখ্যা বারছে তাতে আমার মনে হয় ছোট এদেশে হাইরাইজ বিল্ডিং ছাড়া চলবে না। ৩০ বছর আগের আমার গ্রাম আর এখনকার আমার গ্রাম এক নয়, জমির স্বল্পতা তিব্র জনসংখ্যার তুলনায়। এখনত গ্রামগুলোতে হাইরাইজ বিল্ডিং লাগবে বলে মনে হচ্ছে তারপর ভবিষ্যতে আরও সমস্যা আসছে। আর শহরগুলোর কথা নাই বলি কারন বসবাসের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে

দু এক দিনের মধ্যে নিবন্ধকারে প্রকাশিতব্য আমার পরবর্তী পোষ্টে গৃহায়নের বিষয়ে একটি বিস্তারিত আলোচনা থাকবে।
সেটা দেখার জন্য অগ্রীম আমন্ত্রন রইল ।

ভাল থাকার শুভ কামনা রইল


৬২| ১২ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:০৪

মিরোরডডল বলেছেন:
গানের অরিজিনাল ভার্সনটা বেশী সুন্দর । থ্যাংকস এই সুন্দর গানটা শেয়ার করার জন্য ।

১২ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



ঠিকই অনুভব করেছেন , গানের অরিজিনাল ভার্সানটি বেশী সুন্দর ।
প্রায়ই গানটি শুনতে শুনতে আমি কম্পিওটারে লেখালেখির কাজ করি।
শুভেচ্ছা রইল

৬৩| ১২ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩২

জুন বলেছেন: ডঃ এম এ আলী ভাই অনেক দিন ধরেই ভাবি মাটির ঘরে এসে কিছু বলবো কিন্ত আপনি যা লিখেছেন তাতে অন্য কেউ কিছু বলবে সেই সুযোগ রাখেন নি। করোনামুক্ত হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন তার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া জানাই।

মাটির ঘরের সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়েছিল যখন আমি যখন জীবনে প্রথম স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম। সীতাকুন্ডে বাবার কাজের সুত্রে যাওয়া। পাহাড়ের পাদদেশে সেই মাটির স্কুল ছাড়াও আশেপাশের বাড়িগুলোও ছিল মাটির। সেখানকার বেশিরভাগ স্থানীয় মানুষের বাসা বাড়ি মাটির ছিল। তারা সেগুলো লেপে পুছে ঝকঝকে করে রাখতো। সেখানে প্রচুর বাশ বেত পাওয়া যেত তারপরও বেশিরভাগ নিম্নবিত্ত মানুষের বাসা ছিল মাটির। পুরোটা টিন দিয়ে তৈরি ঘর খুব কমই দেখেছি।

আপনার সিদ কাটা শুনে একটা কথা মনে পরলো। আমাদের ছোট বেলায় দুনিয়ার যাবতীয় তথ্যের যোগানদার ছিল আমাদের বাসার গৃহকর্মীরা আর আব্বার সেপাইরা যারা আমাদের বাসার কাজের দায়িত্বে ছিল। যাই হোক নানা রকম গ্রামীণ রূপকথা ছাড়াও অনেক গল্প। সেই তাদের মুখেই শুনেছিলাম চোর নাকি শিং (সিদ) খুড়ে মানুষের বাসায় ঢুকে চুরি করে। একবার আমাদের এলাকায় এক চোর আমাদের সহ পাশাপাশি কয়েকটি বাসায় চুরি করতে চেষ্টা করে। লোকজন টের পেয়ে তাকে ধরতে চেষ্টা করলে সে দিঘিতে ঝাপ দেয়। লোকজন বল্লম দিয়ে আহত করলে পুলিশ ধরে থানায় নিয়ে আসে। থানার ওসি আব্বাকে ডাকে থানায়। একটু পরে আমাদের সিপাই ভাইয়া এসে বলে স্যার আপনাদের থানায় যেতে বলেছে। আমরা তিন ভাই বোন চটপট থানায় গিয়ে দেখি বিশাল দৈত্যাকার এক লোক সারা গায়ে ক্ষত বিক্ষত, চোখ উপড়ানো মাটিতে বসে আছে। সারা শরীর শিকল দিয়ে বাধা লোকটা চা খাচ্ছে সুপ সুপ শব্দ করে আর ওসির সাথে কথা বলছে । আব্বার কাছে গিয়ে দাড়াতেই আব্বা জানালো এই সেই চোর যে গত রাতে আমাদের জানালা ভেঙে ঢুকতে চেষ্টা করেছে। কিন্ত আমার বিস্মিত প্রশ্ন ছিল " আব্বু লোকটার শিং কই"! শিং ছাড়া চোর কি করে হয়!! কথাটা যে সিদ সেটা জেনেছি অনেক পরে ;)
আপনার পোস্টটি অসাধারণ। ভালোলাগা দিয়ে গেছি আগেই। ভালো থাকুন।


১৫ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৬:০৪

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



ছোট্ট একটি নতুন পোষ্টের জন্য লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকায় এখানে আসা হয়ে উঠেনি বলে সুন্দর এই মন্তব্যটির উত্তর দানে
বিলম্বের জন্য দুঃখিত ।

সীতাকুন্ডের মাটির ঘরগুলিকে সুন্দর করে লেপা মুছা করে রাখার কথা শুনে ভাল লাগল । আমি অনেক মাটির ঘরের দেয়ালে আল্পনা আঁকও দেখেছি।
সিং ওযালা সিদেল চোরের গণ্পটি দারুন হয়েছে ,তবে তা মর্মান্তিক । অপরাধীকে ধরে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তুলে না দিয়ে তাকে মানুষের হাতে এমন ভাবে নিগৃহীত হওয়া খুবই কষ্টের বিষয় ।

আপনি দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী পুলিশ বাহিনী পরিবারের একজন সদস্য জেনে ভাল লাগল । আমার ছোটমামাও ছিলেন পুলিশ বাহিনীতে,তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন । পুলিশ বাহিনীর গুরুত্বপুর্ণ পদে থেকে দেশ সেবার পর অবসরকালীন সময়ে শান্তিপুর্ণ জীবন যাপন করছিলেন । দুর্ভাগ্য জনক ভাবে তিনি মাত্র দিন কয়েক পুর্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন ।দোয়া করি আল্লাহ তাঁকে বেহেস্তবাসী করুন ।

আপনি ও আপনার পরিবারের জন্য মঙ্গল কামনা রইল

৬৪| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২০ রাত ২:১৯

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: এই চমৎকার ও মূল্যবান পোস্টটি আগে চোখে পড়ে নি।এক নিঃশ্বাসে পুরোটা পড়ে নিলাম। অনেক তথ্য জানলাম এবং খুবই ভালো লেগেছে পোস্টটি। মাটির ঘরে কখনো থাকা হয় নি।পরিবেশ বান্ধব উপায়ে বাড়ি করার চিন্তা থেকে একবার মাটির ঘর তৈরি করার কথা মাথায় এসেছিলো একবার।কিন্তু বুড়িগঙ্গার তীরবর্তী আমাদের এলাকাটি বন্যাপ্রবণ।প্রতি বছরই বন্যা হয়।তাই মাটির ঘর ঝুঁকিপূর্ণ।এজন্য এই চিন্তা থেকে সরে আসতে হয়েছে আমাদের।
করোনা থেকে সেরে ওঠায় আপনাকে অভিনন্দন।আপনি আরো দীর্ঘজীবন লাভ করুন।শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকুন,শান্তিতে থাকুন।আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

০৩ রা অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



পুরানো একটি পোষ্ট এসে দেখার জন্য ধন্যবাদ।
এক নিঃশ্বাসে পুরোটা পড়েছেন শুনে ভাল লাগল ।

আমার মঙ্গল চেয়ে দোয়া করার জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন ।

শুভেচ্ছা রইল

৬৫| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২৭

স্থিতধী বলেছেন: আপনার করোনাতে ভোগার কথাগুলো ভীতিকর। কিছু মানুষ যদি এর ভয়ঙ্কর রূপটা এভাবে বুঝতে পারতো তবে তারা এখনো ওতটা বেশী ড্যাম কেয়ার ভঙ্গিতে চলতোনা। করোনা যুদ্ধে বিজয়ী হওয়াতে অভিনন্দন । আশা করি আপনি এখন অনেক বেশী সুস্থ বোধ করছেন।

মাটির ঘর একবারই দেখা হয়েছে এখন পর্যন্ত। পেশাগত কাজে উত্তর গাজীপুরে একটু প্রত্যন্ত এলাকার দিকে যেতে হয়েছিলো তখন দেখেছিলাম মাটির ঘর, ছবি তুলেছিলাম। শীতকাল ছিলো, তাই আপনি যেমনটা লিখেছেন আর কি, একটা মাটির ঘর বানানো হচ্ছে সেটাও দেখেছিলাম, প্রক্রিয়ার বিস্তারিত আজ এখানে পড়ে জানতে পারলাম। আমি শহুড়ে হওয়ায় আমার কাছে মাটির ঘড় একটা রোমান্টিকতা। সম্প্রতি একটি খবর প্রচারিত হতে দেখেছিলাম ডিবিসি চ্যানেল এ, উত্তরবঙ্গে বানানো একটি তিন তালা মাটির ঘড় নিয়ে। এটি নাকি ১৯৭৬ সালে তৈরি করা এবং তৎকালীন সময়ে ৭০,০০০ টাকা খরচ করা হয়েছে এর নির্মাণের জন্যে । আপনার পোস্ট টি পড়ে এ খবরটির কথা মনে পড়লো তাই শেয়ার করলাম । আমাদের দেশে বহুতল মাটির ঘড় বেশ দুষ্প্রাপ্য -ই হবে বোধকরি । আজ এই পুরো লেখাটা এক বসায় পড়ে নিলাম। এক এক করে সিরিজের বাকি লেখাগুলো ও পড়ে ফেলবো ইনশাল্লাহ। ভালো থাকবেন ।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



বেশ পুরাতন একটি পোষ্ট দেখার জন্য খুশী হলাম ।
বাকী পর্বগুলিও দেখার ইচ্ছার কথা শুনে ভাল লাগল ।
আপনার দেয়া মাটির ঘরের লিংকটি ফলো করে
আনেকক্ষন লাগিয়ে দেখলাম । আপনার লিংকে
দেয়া তথ্যচিত্রগুলি সময় মুযোগমত মুল পোষ্টে
আপনার প্রতি যথাযথ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ পুর্বক
সংয়োজন করার জন্য প্রবল ইচ্ছা পোষণ করছি ।
আমার দেশের বাড়ীতেও প্রায় শত বছরের পুরাতন
দোতলা মাটির ঘর আছে অক্ষত অবস্থায় ।
এখন কেন? আগের দিনেও ভাল মঝবুত
মাটির ঘর তৈরী বেশ ব্যয় বহুল ছিল ।
পাকৃতিক সুবিধার কারণে উত্তরবঙ্গে
ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর টিকে থাকবে
বলে ধারনা ও বিশ্বাস করি ।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল

৬৬| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১০

মোড়ল সাহেব বলেছেন: ভালো লিখেছেন

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ২:২০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
ব্লগে স্বাগতম ।
পোষ্টটি ভাল অনুভুত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছা রইল ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.